জেলাকে ‘রেড জোন’ হিসেবে উল্লেখ করে তিনটি এলাকাকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় এনে লকডাউন ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।
রবিবার সকাল থেকে এই আদেশ কার্যকর করা শুরু হয়েছে এবং বিষয়টি মানুষকে জানাতে মাইকিং করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
দুপুরে জেলা প্রশাসক তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানান, পরিস্থিতি বিবেচনা করে করোনার অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে শহরের আমলাপাড়া, জামতলা এবং ফতুল্লার ভূঁইগড়ের রূপায়ন টাউনকে লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে। এই তিনটি এলাকাকে ১৫-২১ দিন পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করা হবে। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর ওপর এই বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে।
তিনি আরও জানান, এসব এলাকায় গণপরিবহন চলাচলও বন্ধ থাকবে এবং কাঁচাবাজার বন্ধ রেখে ভ্রাম্যমাণ বাজারের ব্যবস্থা করা হবে। ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে শুধু কর্মচারী ব্যতীত অন্যান্যদের যাতায়াতে আপাতত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে মানুষের খাবারের চাহিদা পূরণ করতে জেলা প্রশাসন থেকে খাদ্য সামগ্রী সরবরাহ করা হবে। পাশাপাশি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে টেলিমেডিসিন সেবা প্রদানের কথাও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ এবং জেলা পুলিশের করোনা ফোকাল পার্সন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেদি ইমরান সিদ্দিকী।
সিভিল সার্জন জানান, লকডাউন ঘোষিত এলাকাগুলোতে করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ, টেলিমেডিসিন সেবাসহ সব ধরনের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কয়েকটি টিম সার্বক্ষণিকভাবে নিয়োজিত থাকবে। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি অথবা সন্দেহভাজন কোনো ব্যক্তির চিকিৎসার ব্যাপারে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না।
পাশাপাশি লকডাউন শতভাগ কার্যকর করতে জেলা পুলিশ সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থানে থাকবে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেহেদি ইমরান সিদ্দিকী।
তিনি জানান, লকডাউন এলাকার প্রতিটি প্রবেশ পথ সিলগালা করে দেয়া হবে। এলাকার কাউকে বাইরে বের হতে দেয়া হবে না এবং বাইরের কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। লকডাউন পুরোপুরিভাবে কার্যকর করতে পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। কাউকে কোন ধরনের ছাড় দেয়া হবে না বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
এদিকে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, নারায়ণগঞ্জে এ পর্যন্ত সাড়ে তিন হাজার ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এবং মৃত্যু হয়েছে ৮৫ জনের। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন ৯১০ জন।