‘নিরাপদে ইলিশের প্রজননের’ সুবিধার্থে সরকার গত ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন নদীর অভয়াশ্রমে ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল।
চাঁদপুরের ৭০ কিলোমিটার মেঘনা-পদ্মা নদী এলাকায় এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ ছিল। এসময় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় ২১৮ জন জেলেকে শাস্তিসহ জেলে পাঠানো হয়।
এদিকে এক গবেষণায় দেখা যায়, এ প্রজনন সময়ে অমাবস্যা ও পূণির্মার প্রভাবে ইলিশ মিঠা পানিতে চলে আসে এবং এসময় বেশি ডিম পাড়ে।
চাঁদপুর ফিশারিজ ইনস্টিটিউটের প্রখ্যাত ইলিশ গবেষক ও বিশেষজ্ঞ ড.মো আনিসুর রহমান জানান,ইলিশ সারা বছরই ডিম পাড়ে। এ নিষিদ্ধ সময়ে সাগর থেকে মা ইলিশ পরিভ্রমণ করে মিঠা পানিতে আসে এবং বেশি ডিম পাড়ে,আবার ফিরে যায়। মা ইলিশের এই আসা-যাওয়াটা খুবই গুরুত্বপুর্ণ। এ চলাচলটা নির্বিঘ্ন হতে হবে। এ প্রজনন সময়ে একটি মা ইলিশ গড়ে প্রায় ১০ থেকে ১২ লাখ ডিম পাড়ে।
তিনি আরও বলেন,এবার ৬ অক্টোবর ছিল অমাবস্যা আর ২০ অক্টোবর ছিল পূর্ণিমা। সময়টা যথাযথ ও উপযুক্ত ছিল বলেই মা ইলিশ এ সময়ে প্রচুর ডিম ছেড়েছে। আর এর ফল আমরা এখন পাচ্ছি। নিরাপদে সাগর থেকে মিঠা পানিতে আসা-যাওয়া ও কোন ডিস্টার্ব বা ট্রাফিক জ্যাম ছাড়া মা ইলিশের নির্বিঘ্নে প্রজনন ও ডিম ছাড়ার জন্য আমাদের নদীগুলোর অভয়াশ্রমে কোনও রকম বালু উত্তোলন বা মাছ ধরা মোটেও উচিৎ না। জনস্বার্থে,দেশের স্বার্থে সবাইকে এটা খেয়াল রাখতে হবে।
আরও পড়ুন:যমুনায় মা ইলিশ ধরার দায়ে ১২ জেলের কারাদণ্ড
এ বছর প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দেখা যায়,দেশের বিভিন্ন নদীতে এ বছর বেকর্ড ৫১ দশমিক ৭ শতাংশ ডিম ছেড়েছে মা ইলিশ।অর্থাৎ,গত বছরের চেয়ে এবার দশমিক ৫ শতাংশ বেশি ডিম পেয়েছি আমরা।এর ১০ ভাগ টিকিয়ে রাখতে পারলেই আগামী মৌসুমে আরও ৩৯ হাজার কোটি ইলিশের পোনা নদীতে যুক্ত হবে বলে আশা করা যায়। সেই লক্ষ্যে সরকার চলতি মাসের ১লা নভেম্বর থেকে আগামী জুন মাস (২০২২)পর্যন্ত ৮ মাস নদীতে জাটকা ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করেছে।এজন্য নদীতে প্রচার-প্রচারণাও চলছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে,জাটকা রক্ষা করতে পারলে আগামী মৌসুমে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে পৌনে ৬ লাখ মেট্রিক টনে পৌঁছাবে।