প্রতিবেশীর সাথে বিরোধ নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা এক গৃহবধূকে তদন্তের নামে থানায় ডেকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক উপপরিদর্শকের বিরুদ্ধে। বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় এই ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনায় আদালতে একটি মামলা হয়েছে। অভিযোগে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও অসহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়।
এনিয়ে গত ২৪ মে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নালিশি মামলা করেন হয়রানির শিকার নারী। মামলা আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন বরিশালকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবু শামীম আজাদ।
তবে ঘটনার এক সপ্তাহ পর আজ বিষয়টি জানাজানি হয়। বাদী জানিয়েছেন, পুলিশের চাপের মুখে এতদিন কাউকে জানাতে পারেন নি।
বাদীর আইনজীবী আসাদুজ্জামান হাওলাদার জানিয়েছেন, মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার এজাহার উল্লেখ করা হয়েছে, নগরীর ধান গবেষণা রোড এলাকার বাসিন্দা ওই গৃহবধূ গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালি মডেল থানায় প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তা তদন্তের দায়িত্ব পান কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই আসাদুল ইসলাম। তিনি সাধারণ ডায়েরির তদন্তের জন্য বাদীকে থানায় ডেকে নেন।
২০২০ সালের ১৬ অক্টোবর বাদী থানায় গেলে এসআই আসাদুল নানান অজুহাতে বাদীর সাথে অশালীন আচরণ করে। বাদীর স্বামী এসময়ে এসে পড়লে এসআই আসাদুল ওই নারীকে ছেড়ে দেন।
মামলায় এজাহারে উল্লেখ করা হয়, এ ঘটনার পরপরই বাদী বিষয়টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে মৌখিকভাবে জানালে তিনি ঘটনার বিষয়ে বিচার করবেন বলে আশ্বস্ত করেন। ওসি তখন জানান অভিযোগের বিষয়ে একজন নারী এএসআই তদন্ত করবেন। হয়রানির শিকার নারী ওই এএসআইয়ের সাথে মোবাইলে কথা বলে জানতে পারেন তিনি কিছুই জানেন না। মূলত অসত্য অজুহাতে কালক্ষেপণ করতে চাইছিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়। সেইসাথে থানায় লিখিত এজাহার দিতে চাইলে তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানো হয়। মামলায় থানার সিসিটিভি ক্যামেরা পর্যালোচনা করলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে বলেও বাদী উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুন: ‘পুলিশ সাইবার সাপোর্ট ফর উইমেন’ এ গৃহবধুর অভিযোগে পুলিশ কনস্টেবল গ্রেপ্তার
অভিযুক্ত এসআই আসাদুল ইসলাম বলেন, যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বলেন, 'মামলার বিষয়টি অভ্যন্তরীণভাবে আমরাও খতিয়ে দেখছি।'
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন বরিশাল জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ূন কবির জানান, এখন পর্যন্ত এমন কোনো মামলা পিবিআইতে এসে পৌঁছেনি। মামলার দায়িত্ব পেলে যথাযথ তদন্ত করা হবে।