পরবর্তীতে র্যাব-৯ শ্রীমঙ্গল ক্যাম্প কমান্ডার এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীমের হস্তক্ষেপে মধ্যরাতে ফের বাসায় উঠতে সক্ষম হয় ওই পরিবার।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপজেলার পূর্ব শ্রীমঙ্গল সুরমাভ্যালি ওয়ার্কশপের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, সিএনজি চালক নুরুল হক (৪৫) সদর ইউনিয়নের ওই এলাকায় বাচ্চু মিয়ার (৫৫) বাসায় ভাড়া থাকেন। করোনার কারণে লকডাউনের মধ্যে আয়-রোজগার না থাকায় স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে কষ্টে দিন পার করছিলেন নুরুল।
বাড়ির মালিক বাসাভাড়ার জন্য তাগাদা দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে বৃহস্পতিবার রাতে ওই বাড়িওয়ালা নুরুল হককে বাসা থেকে বের করে বাসায় তালা ঝুলিয়ে দেন।
এ বিষয়ে শামীম আনোয়ার শুক্রবার রাতে ফেসবুকে নিজের ওয়ালে এ বিষয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন।
তিনি লিখেছেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমি পেরেছি, আমরা শ্রীমঙ্গল র্যাব ক্যাম্প পরিবার পেরেছি।’
মোহাম্মদ নুরুল হক, পেশায় সিএনজি চালক। বাসাভাড়া পরিশোধ করতে না পারায় বাড়িওয়ালা তাকে সপরিবারে বাসা থেকে বের করে ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। এই করোনা পরিস্থিতিতে আয়-উপার্জন না থাকায় বাচ্চাদের মুখেই যেখানে নিয়মিত দুমুঠো ডালভাত তুলে দিতে পারছিলেন না অসহায় নুরুল, সেখানে বাসাভাড়া কোথায় থেকে দিবেন! এক মাসের ভাড়া বকেয়া হয়ে যায়। কিন্তু বাড়িওয়ালা তা মানবেন কেন!! কয়েকদিন ভাড়ার জন্য তাগাদা দিয়েও কাজ না হওয়ায় ঘরে সোজা তালা।
নিরুপায় হয়ে স্ত্রী এবং সকাল থেকে উপোস শিশুসন্তানদের নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছিলেন নুরুল হক। আমি ছিলাম রাত্রিকালীন চেকপোস্টে। সেখানেই এই 'বাস্তুচ্যুত' পরিবারটির সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং তাদের মুখ হতে এই মর্মান্তিক ঘটনা শ্রবণ। আমার নিজের মধ্যে এক ধরনের অপরাধবোধ তৈরি হলো। তবে কি আমার দায়িত্বাধীন এলাকার লোকদের বিপদে আমি যথাযথভাবে সাড়া দিতে পারছি না!!
তাদেরকে আমার সরকারি গাড়িতে তুলে সোজা ক্যাম্পে নিয়ে এলাম। সেখানে বিস্তারিত শুনে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে ডেকে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে নুরুল হককে তার বাসায় তুলে দিয়ে এসেছি। বাড়িওয়ালা আমার কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি যতদিন থাকবে, ভাড়ার জন্য তিনি আর কোনো ভাড়াটিয়াকে চাপ সৃষ্টি করবেন না।