ভাঙন প্রতিরোধে সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয় করার পরও অসময়ে এই ভাঙন শুরু হওয়ায় জনমনে আতংকের সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যেই শতাধিক ঘরবাড়ি ও বহু জায়গা জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন জানান, ওই এলাকায় প্রতিবছরই অসময়ে এই ভাঙন নতুন কিছু নয়। বর্ষার আগে ওই এলাকার ব্রাহ্মণগ্রাম, আঁড়কান্দি, ঘাটাবাড়ি, ভেঁকা, জালালপুর, চিলাপাড়া ও হাটপাঁচিল, ঘাটাবাড়ী, বাঐখোলা, কুঠিপাড়া, পাঁকুড়তলা গ্রামে তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ নিক্ষেপ করে এ ভাঙন সাময়িকভাবে প্রতিরোধ করা হয়।
বর্ষার পানি নেমে গেলেও আবারো প্রবল বৃষ্টিপাতে বিশেষ করে আঁড়কান্দি ও হাটপাঁচিল এলাকায় প্রায় দেড় কিলোমিটার জুড়ে কয়েকদিন ধরে অসময়ে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে ভাঙনের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। গত বছর ভাঙনে এ অঞ্চলের প্রায় ৪ শতাধিক বাড়িঘর, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ১টি চিকিৎসা কেন্দ্র, ২টি ঈদগাহ মাঠ, ৫০টি তাঁত কারখানা, ৪০০ বিঘা আবাদী জমি, ৩ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক, ১টি কবরস্থান, ১টি শ্মশান ঘাট, ১টি মন্দির ও বহু গাছপালা নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে, জানান তিনি।
ভাঙন প্রতিরোধে এখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এ ভয়াবহ ভাঙন রোধে প্রায় সাড়ে ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের মধ্যে ব্রাহ্মণগ্রাম হতে হাটপাঁচিল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬ কিলোমিটার এলাকায় তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণ, চর ড্রেজিং ও নদী শাসন রয়েছে। এ প্রস্তাবটি প্রি-একনেকে খসড়া আকারে অনুমোদনও হয়েছে। করোনার জন্য এ প্রকল্পটি একনেকে পাস হতে বিলম্ব হচ্ছে। প্রকল্পটি পাস হলেই কাজ শুরু করা হবে।’
এদিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাসের আতংকের চেয়ে বাড়িঘর হারানোর আতংকে বেশি দিশেহারা হয়ে পড়েছে জনগণ। বাঁধ নির্মাণের দাবিতে প্রায় ৫ বছর ধরে মিছিল- মিটিং ও মানববন্ধন করে এখনও কোনো কাজ হয়নি। স্থায়ী তীর সংরক্ষরণ বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরুর অপেক্ষায় থাকলে এসব গ্রাম মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এ ভয়াবহ ভাঙন রোধে এখনই দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন।