শাবিপ্রবি
শাবিপ্রবির হল খুলছে সোমবার, অনলাইন ক্লাস শুরু মঙ্গলবার
দীর্ঘ ২৭ দিন পর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) একাডেমিক কার্যক্রম চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আগামী মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগে অনলাইনে ক্লাস শুরু হবে। স্বশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু ২২ ফেব্রুয়ারি। সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে খোলা থাকবে সকল আবাসিক হল।
রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেনের বরাত দিয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন চৌধুরী।
তিনি জানান, ‘সরকারের কোন বিধি নিষেধ না থাকলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে স্বশরীরে ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।’
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহার: ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর আহ্বান
এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন কয়েকশ’ ছাত্রী। ১৬ জানুয়ারি দাবি আদায়ের লক্ষ্যে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে এবং তাঁদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে। পরে এই আন্দোলন উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়।
এ ঘটনায় গত শুক্রবার সিলেট সার্কিট হাউসে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। তাঁরা মামলা প্রত্যাহারসহ শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এ ছাড়া উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিটি শিক্ষামন্ত্রী আচার্যের (রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ) কাছে উপস্থাপন করবেন।
আরও পড়ুন: অবশেষে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় শাবিপ্রবি উপাচার্যের দুঃখ প্রকাশ
শাবিপ্রবি উপাচার্যকে ‘দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার’ পরামর্শ শিক্ষামন্ত্রীর
শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহার: ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর আহ্বান
উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা তাদের বিক্ষোভ প্রত্যাহার করেছেন। সঙ্গে ক্লাস ও পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন।
আন্দোলনের মুখপাত্র মোহাইমিনুল ইসলাম রাজ বলেন, ‘আপনারা সবাই অবগত আছেন গতকাল (শুক্রবার) শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রী আমাদের আমন্ত্রণে শাবিপ্রবিতে এসেছিলেন। মন্ত্রীদের সঙ্গে আমাদের দাবি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। তিনি আমাদের সকল দাবি আন্তরিকতার সঙ্গে শুনেছেন এবং আমাদের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। এজন্য আমরা মন্ত্রীদ্বয়’কে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন: অবশেষে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় শাবিপ্রবি উপাচার্যের দুঃখ প্রকাশ
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা শুক্রবার তাদের ছয় দফা দাবি এবং সারাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বাত্মক উন্নয়নের কিছু প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করেছে। আমরা কর্তৃপক্ষকে রবিবার থেকে আগের মতো ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু করার আহ্বান জানাচ্ছি।
এর আগে ১৬ জানুয়ারি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি পদক্ষেপের জন্য উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ দুঃখ প্রকাশ করেন।
তিনি এক প্রেস বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি সেদিনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় আহত ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মচারীসহ সকলের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা প্রকাশ করছি।
শুক্রবার শিক্ষার্থীদের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি প্রসঙ্গে দীপু মনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হিসেবে ভিসি পদে কাউকে নিয়োগ ও অপসারণের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির। তাদের দাবি রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করা হবে।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি উপাচার্যকে ‘দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার’ পরামর্শ শিক্ষামন্ত্রীর
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা দুটি মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও, আন্দোলনের সময় বন্ধ থাকা শিক্ষার্থীদের মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট এবং নম্বরগুলো কয়েক দিনের মধ্যে পুনরায় সক্রিয় করা হবে বলে জানান তিনি।
দীপু মনি পুলিশের গুলিতে আহত সজল কুণ্ডের যথাযথ চিকিৎসা এবং তার জন্য সরকারি চাকরিতে নিয়োগেরও আশ্বাস দিয়েছেন বলে ব্রিফিংয়ে শিক্ষার্থীরা জানান।
অবশেষে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় শাবিপ্রবি উপাচার্যের দুঃখ প্রকাশ
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ গত ১৬ জানুয়ারি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উপাচার্য দুঃখ প্রকাশ করেন।বিজ্ঞপ্তিতে উপাচার্য বলেন, আমাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ যারা আহত হয়েছেন, তাদের সবার প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা ও সহমর্মিতা প্রকাশ করছি।বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবক হিসেবে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমি আন্তরিকভাবে গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি। উক্ত ঘটনার ধারাবাহিকতায় সৃষ্ট অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী যারা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনের একদিন পর উপাচার্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
ফরিদ উদ্দিন আহমেদ শিক্ষা উপমন্ত্রী, সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তা, আওয়ামী লীগ নেতা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, গণমাধ্যম কর্মীদের ধন্যবাদ জানান, যারা ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছেন।
ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ ও স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনতে সবাইকে ভূমিকা রাখারও আহ্বান জানান ভিসি।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি উপাচার্যকে ‘দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার’ পরামর্শ শিক্ষামন্ত্রীর
শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে সাক্ষাতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ফরিদ উদ্দিনের পদত্যাগের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন।
শাবিপ্রবি উপাচার্যকে ‘দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার’ পরামর্শ শিক্ষামন্ত্রীর
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য হিসেবে ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে নিজ দায়িত্ব পালন করে যেতে পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।শুক্রবার সন্ধ্যায় বৈঠক শেষে এ কথা জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ইশফাকুল হোসেন।সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ে উপাচার্য এবং অন্যান্য শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে আলোচনায় বসেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।ইশফাকুল হোসেন বলেন, মন্ত্রী আলোচনায় শিক্ষকদের প্রতি ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি উপাচার্যকে তার দায়িত্ব পালন করে যেতে বলেছেন।এ সময় কোষাধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রী বলেছেন, উপাচার্যের বিষয়ে শিক্ষার্থীরা যেসব অভিযোগ তুলেছে, তার তদন্ত হচ্ছে। তদন্ত শেষে রাষ্ট্রপতিই সব সিদ্ধান্ত দেবেন। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। দিবসটি যেন যথাথতভাবে পালন করা হয় সে বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।এর আগে বিকেলে সিলেট সার্কিট হাউজে বিশ্ববিদ্যালয়টির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি ভিসিকে অপসারণের সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতির ওপর নির্ভর করে: দীপু মনি
বৈঠক শেষে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের কয়েকটি দাবি মেনে নেয়া হয়েছে। তবে ভিসির পদত্যাগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে আচার্য (রাষ্ট্রপতি)। এ বিষয়টি আচার্যের কাছে তুলে ধরা হবে। অন্যান্য দাবি পূরণ করা হবে পর্যায়ক্রমে।
তিনি বলেন, ‘তাদের (শিক্ষার্থী) যা যা বক্তব্য আছে, পুরো ঘটনা সম্পর্কে তাদের কী বলার আছে, তা সব বর্ণনা করেছে। তাদের সঙ্গে ভালো আলোচনা হয়েছে। আমরা তাদের কথা বুঝতে চেষ্টা করেছি।এরপর মন্ত্রী উপাচার্যের কার্যালয়ে শিক্ষক ও উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে সংক্ষিপ্ত বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকে কিছুই বলেননি দীপু মনি। প্রায় ১৫ মিনিটের আলোচনা শেষে উপাচার্যের বক্তব্যও পাওয়া যায়নি।এরপর মন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের দাবিগুলো যৌক্তিক বলে জানান। সেইসঙ্গে দাবি পূরণে পদক্ষেপ নেয়ার আশ্বাসও দেন।বিকেলে সার্কিট হাউসে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে শিক্ষার্থীরা মোট আটটি দাবি তুলে ধরেন।দাবিগুলো হলো- উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ, ক্লাস-পরীক্ষা চালু, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহার, আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থীর বন্ধ থাকা মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট চালু করা, পুলিশের গুলিতে আহত শিক্ষার্থী সজল কুণ্ডকে এককালীন আর্থিক সহযোগিতা দেয়া ও তার জন্য নবম গ্রেডের চাকরি নিশ্চিত করা, মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হককে ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়া, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে বাজেট বাড়ানো, পরীক্ষা পদ্ধতিতে কোডিং সিস্টেম কার্যকর করা, শিক্ষক নিয়োগে পিএইচডি এবং ডেমো ক্লাসের ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবির নতুন প্রক্টর ইশরাত ইবনে ইসমাইল
শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু ১৩ জানুয়ারি। রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ’ ছাত্রী।
১৬ জানুয়ারি থেকে উপাচার্য ফরিদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন শুরু করেন।
২৬ জানুয়ারি ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের আশ্বাসে তারা এক সপ্তাহের অনশন ভাঙেন। সে সময় সরকারের উচ্চপর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার জন্য জাফর ইকবালের কাছে তারা পাঁচটি দাবি তুলে ধরেন।দাবিগুলো ছিল—উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগসহ ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ ও প্রক্টরিয়াল বডির অপসারণ, ক্যাম্পাসের সব আবাসিক হল সচল রাখার বিষয়ে উদ্যোগ, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের আর্থিক সাহায্য দেওয়া, পাঁচ সাবেক শিক্ষার্থীর জামিন ও অজ্ঞাতনামা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার এবং অনশনরত শিক্ষার্থী ও উপাচার্যের নির্দেশে পুলিশের হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ভার বহন।এর মধ্যে সেদিনই জামিন পান গ্রেপ্তার সাবেক শিক্ষার্থীরা, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার খরচও দেয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। এরপর গত রবিবার ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক পদ থেকে অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমদকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সবশেষ প্রক্টর আলমগীর কবিরকে বৃহস্পতিবার রাতে অব্যাহতি দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি সংকট: সিলেটে পৌঁছেছেন শিক্ষামন্ত্রী
শাবিপ্রবি ভিসিকে অপসারণের সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপতির ওপর নির্ভর করে: দীপু মনি
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি পুনর্ব্যক্ত করার জবাবে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি রাষ্ট্রপতির কাছে পেশ করা হবে, কারণ তিনি চ্যান্সেলর। ভিসি পদে কাউকে নিয়োগ ও অপসারণের ক্ষমতা তার হাতে।
শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিলেটের সার্কিট হাউসে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে তিন ঘণ্টার বৈঠকে মোট আটটি দাবি তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা।
বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, আলোচনার সময় আমরা তাদের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছি। তবে, শিক্ষার্থীদের কিছু দাবি ইতোমধ্যে পূরণ করা হয়েছে। তাদের প্রধান দাবি ভিসির পদত্যাগ বা অপসারণ।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবির নতুন প্রক্টর ইশরাত ইবনে ইসমাইল
দীপু মনি বলেন, ‘কিন্তু একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগ করেন চ্যান্সেলর। তাই আমরা শিক্ষার্থীদের দাবি রাষ্ট্রপতির কাছে তুলে ধরব। তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন।’
তাদের অন্য দাবিগুলো হলো—উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ, ক্লাস-পরীক্ষা চালু, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহার, আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থীর বন্ধ থাকা মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট চালু করা, পুলিশের গুলিতে আহত শিক্ষার্থী সজল কুণ্ডকে এককালীন আর্থিক সহযোগিতা দেয়া ও তার জন্য নবম গ্রেডের চাকরি নিশ্চিত করা, মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হককে ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়া, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে বাজেট বাড়ানো, পরীক্ষা পদ্ধতিতে কোডিং সিস্টেম কার্যকর করা, শিক্ষক নিয়োগে পিএইচডি এবং ডেমো ক্লাসের ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা।
শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন অনু বিভাগের সেক্রেটারিসহ তিন কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেন।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবির প্রথম নারী ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আমিনা পারভীন
উল্লেখ্য, শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু ১৩ জানুয়ারি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী।
১৬ জানুয়ারি বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে উপাচার্যকে মুক্ত করে পুলিশ। এরপর পুলিশ ৩০০ জনকে আসামি করে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে।
১৯ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটা থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী।
২৬ জানুয়ারি অনশন ভাঙার পর জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হকের হাতে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচটি দাবি সরকারের উচ্চপর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার জন্য তুলে দেন। এরপর ৬ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক পদ থেকে অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমদকে সরিয়ে দেয়া হয়।
শিগগিরই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে: শিক্ষামন্ত্রী
দেশে করোনা সংক্রমণ কমতে থাকায় শিগগিরই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, ‘করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন কমছে। আশা করা যাচ্ছে খুব শিগগিরই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে।’
শুক্রবার সকালে সিলেট সার্কিট হাউস মিলনায়তনে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) চলমান সংকট নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শাবিপ্রবির সমস্যা সমাধানে সরকার সব ধরনের চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অধিকারের পাশাপাশি দায়িত্বও রয়েছে। সব সমস্যাই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব।’
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি সংকট: সিলেটে পৌঁছেছেন শিক্ষামন্ত্রী
শুক্রবার বিকাল ৪টায় শাবিপ্রবির চলমান সংকট নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
শাবিপ্রবির মতো সমস্যা প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই হয় উল্লেখ করে জাতীয় উদ্যোগের মাধ্যমে এসব সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এ সময় মতবিনিময় সভায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: শিক্ষামন্ত্রী শাবিপ্রবি যাচ্ছেন শুক্রবার
শাবিপ্রবির সমস্যার শিগগিরই সমাধান হবে: শিক্ষামন্ত্রী
শাবিপ্রবি সংকট: সিলেটে পৌঁছেছেন শিক্ষামন্ত্রী
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) চলমান সংকট নিরসনের জন্য শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি সিলেটে পৌঁছেছেন।
শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে তিনি বিমানযোগে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন। এ সময় সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সংশ্লিষ্টরা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল ইসলাম নওফেল ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদ তার সঙ্গে ছিলেন।
সফর সূচি অনুযায়ী, দীপু মনি সকাল সাড়ে ৯টায় সিলেট সার্কিট হাউসে পৌঁছে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
পড়ুন: শিক্ষামন্ত্রী শাবিপ্রবি যাচ্ছেন শুক্রবার
এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শন শেষে হযরত শাহজালালের মাজার জিয়ারত শেষ করে সিলেট সার্কিট হাউসে যাবেন।
এরপর বিকাল ৩টায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে সিলেট সার্কিট হাউস ত্যাগ করেবেন। বিকাল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত শাবিপ্রবির চলমান সংকট সমাধানের জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধির সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।
পরে রাত ৮টা ২০ মিনিটে একটি ফ্লাইটে করে সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবির সমস্যার শিগগিরই সমাধান হবে: শিক্ষামন্ত্রী
শাবিপ্রবির নতুন প্রক্টর ইশরাত ইবনে ইসমাইল
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) নতুন প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইশরাত ইবনে ইসমাইল। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ পদে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে বর্তমান প্রক্টর গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আলমগীর করীবকে তার পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। এতে ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইশরাত ইবনে ইসমাইলকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
পড়ুন: শিক্ষামন্ত্রী শাবিপ্রবি যাচ্ছেন শুক্রবার
এর আগে গত রবিাবার বর্তমান ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদ অসুস্থ থাকায় তার পদে সমাজ কর্ম বিভাগের অধ্যাপক আমিনা পারভীনকে এ পদে স্থায়ীভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। দায়িত্ব গ্রহণের দিন থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ পদে দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।
এদিকে, শাবি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। ভিসির পাশপাশি ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক এবং প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিও তোলেন তারা। এই দুজনকে সরিয়ে দেয়া হলেও শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবি এখনও পূরণ হয়নি।
পড়ুন: শাবির প্রক্টর আলমগীর কবিরকে অব্যাহতি
শাবিতে ভিসির পদত্যাগ আন্দোলন: রক্তিম হস্তছাপ অঙ্কন
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে এবং ১৬ জানুয়ারি পুলিশি হামলার স্থানে রক্তিম হস্তছাপ অঙ্কন করে।বৃহস্পতিবার আন্দোলনের নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেল সাড়ে ৪টায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান ঘুরে ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি শিক্ষা ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা গত ১৬ জানুয়ারি পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, আন্দোলন-অনশনের সময়ের বিভিন্ন ছবি, প্ল্যাকার্ড এবং পোস্টার নিয়ে অংশগ্রহণ করে। পরবর্তীতে আইআইসিটি ভবনের সামনে ১৬ জানুয়ারি পুলিশের সঙ্গে যেখানে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়েছিল, সেই স্থানে শিক্ষার্থীরা রক্তিম হস্তছাপ অঙ্কন করে।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে আসছেন শিক্ষামন্ত্রীআন্দোলনকারী শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আবেদিন বলেন, ‘আমাদের রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি, আমাদের দাবিগুলো এখনও পূরণ হয়নি। তাই দাবি আদায়ের জন্য আমরা মিছিল করেছি। মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে ১৬ জানুয়ারি ক্যাম্পাসের আইআইসিটি ভবনের সম্মুখের যে স্থানে ভিসির নির্দেশে নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ লাঠি, শটগান, টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালিয়েছিল সেখানে সমস্ত অন্যায্যতা-নিপীড়ন-জুলুমের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের যে চিরন্তন লড়াই তার ইশতেহার হিসেবে রক্তিম হস্তছাপ আঁকা হয়েছে।
এদিকে বন্ধ থাকা আড়াই শতাধিক মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট খুলে দেয়া ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দেয়া দুটি মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।প্রসঙ্গত, গত ১৬ জানুয়ারি প্রভোস্ট বিরোধী আন্দোলনের সময় অবরুদ্ধ ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে মুক্ত করতে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে, এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পুলিশসহ অর্ধশতাধিক আহত হন। হামলার পরপরই প্রভোস্ট বিরোধী আন্দোলন ভিসি বিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়, পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক এবং প্রক্টর বডিরও পদত্যাগ দাবি করেন। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা ১৯ জানুয়ারি থেকে ভিসির পদত্যাগের দাবিতে অনশন শুরু করে এবং ১৬৩ ঘণ্টা ২০ মিনিট পর ২৬ জানুয়ারি অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান এবং সব দাবি মেনে নেয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেন।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবির প্রথম নারী ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আমিনা পারভীন
শিক্ষামন্ত্রী শাবিপ্রবি যাচ্ছেন শুক্রবার
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) যাচ্ছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে শাবি ক্যাম্পাসে যাচ্ছেন তিনি।
সিলেটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুজিবর রহমান বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় শিক্ষামন্ত্রীর এই সফরের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।তিনি জানান, মন্ত্রীর পিএস আমাকে ফোন করে জানিয়েছেন- শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টার দিকে সিলেটের উদ্দেশে রওনা হবেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলবেন তিনি।
আরও পড়ুন: শাবির প্রক্টর আলমগীর কবিরকে অব্যাহতিশাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত হয় গত ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ এনে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন হলের ছাত্রীরা।এই দাবিতে আন্দোলন চলাকালে গত ১৬ জানুয়ারি উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। ওই দিন সন্ধ্যায় পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ করে।লাঠিচার্জের পর দুই পক্ষের সংঘর্ষ বেধে যায়। এরপর রাবার বুলেট এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে উপাচার্যকে মুক্ত করে বাসায় নিয়ে যায় পুলিশ।ওই রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা ও শিক্ষার্থীদের পরদিন দুপুরের মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেন উপাচার্য। এই নির্দেশনা উপেক্ষা করে ওই রাত থেকেই শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবির প্রথম নারী ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আমিনা পারভীনপরদিন থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে টানা অবস্থান নেন তারা। সেখানে অনশনও শুরু করেন ২৮ শিক্ষার্থী। ২০ জানুয়ারি উপাচার্য ভবনের ফটকে ব্যারিকেড দিয়ে বাইরের মানুষের প্রবেশ বন্ধ করে দেন শিক্ষার্থীরা।গত ২৬ জানুয়ারি সকালে শাবির অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হকের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা অনশন ভেঙে উপাচার্যের বাসভবনের ফটকের ব্যারিকেড তুলে নেন।অনশন ভাঙানোর পর অধ্যাপক জাফর ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখানে আসার আগে আমার সঙ্গে সরকারের উচ্চমহল থেকে কথা হয়েছে। তারা আমাকে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তাদের আশ্বাস পেয়েই আমি এখানে এসেছি। আমি তাদের অনুরোধ করব, তারা আমাকে যে কথা দিয়েছেন সে কথাগুলো যেন রক্ষা করেন। আমি আর এই ছাত্রদের ভেতর কোনো পার্থক্য নেই। আমাকে দেয়া কথা না রাখলে সেটা কেবল আমার সঙ্গে না, এই দেশের সমস্ত প্রগতিশীল মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হবে।’অনশন ভাঙার পর জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হকের হাতে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচটি দাবি সরকারের উচ্চপর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার জন্য তুলে দেন।