হামলা
চট্টগ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত প্রবাসীর মৃত্যু
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত এক প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত দুলা মিয়া (৬০) বাঁশখালী থানার বাহারছড়া ইউনিয়নের চাঁপাছড়ি গ্রামের মধ্যম চাঁপাছড়ি এলাকার আবুল খায়েরের ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। সম্প্রতি দেশে ফিরেছিলেন।
আরও পড়ুন: বরিশালে ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার মধ্যম চাঁপাছড়ি গ্রামের আবু নাঈম চৌধুরীর সঙ্গে একই এলাকার হেলাল উদ্দিন চৌধুরীর জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এর জেরে গত ৮ সেপ্টেম্বর উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। একপর্যায়ে লাঠিসোঁটা ও ধারাল অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় হেলাল ও তার সহযোগিরা।
এতে নাঈম চৌধুরীর দুই ছেলে সেলিমুল ইসলাম চৌধুরী (৪৩) ও শরীফ চৌধুরী (২৮) গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে চাচাতো ভাইদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেন দুই ভাই দুলা মিয়া ও নওয়া মিয়া। তাদের ওপরও হামলা চালায় প্রতিপক্ষের লোকজন।
এতে গুরুতর আহত অবস্থায় চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। শনিবার সকালে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুলা মিয়ার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহত দুলা মিয়ার চাচা আবু নাঈম চৌধুরী বাদী হয়ে ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।
তারা হলেন- হেলাল উদ্দিন, আজম উদ্দিন, বাবু মিয়া, মো. জোবায়ের, মো. কায়সার, নুরুন্নবী, নেজাম উদ্দিন, আব্দুল মজিদ, নুরুল আমিন, আব্দুল করিম ও মো. জিহান।
বাঁশখালীর বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মুজিবুর রহমান বলেন, এক সপ্তাহ আগে জমি বিরোধের জের ধরে দুইপক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছিল। দুই পক্ষেই কয়েকজন আহত হয়েছিলেন। আজকে এক পক্ষের একজন মারা গেছেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেছেন। মামলাগুলোতে একপক্ষের সাত জন, অন্য পক্ষের চারজন জামিনে আছেন।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ২৬৮
২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু নেই, শনাক্ত ৮
চট্টগ্রামে ইউএনও-ওসির উপর হামলার ঘটনায় ২মামলা, আসামি ৪০০
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সলিমপুর ইউনিয়নের জঙ্গল সলিমপুরে অবৈধ বসবাসকারীদের উচ্ছেদ চলাকালে দখলদারদের হামলায় ইউএনও ও ওসি সহ ১০ জন আহত হওয়ার ঘটনায় দুইটি মামলা করেছে পুলিশ।
দুটি মামলায় ৩৪ জনের নাম উল্লেখ্য করে আরও ৪০০ জন নারী-পুরুষকে আসামি করা হয়েছে। শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় সীতাকুণ্ড থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শওকত হোসেন বাদী হয়ে দুইটি মামলা দুটি দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে উচ্ছেদ অভিযানে হামলায় ইউএনও-ওসিসহ আহত ১০, আটক ৩
রাতে সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) (তদন্ত) আবু সাঈদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সীতাকুণ্ড থানার পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা দুইটি দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি বিস্ফোরক আইনে এবং আরেকটি পুলিশের কাজে বাঁধা, হামলা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এসব মামলায় ঘটনার দিন আটক সাগর, মুকবুল এবং মনোয়ার বেগম নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলবে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বিকালে সীতাকুণ্ড উপজেলার জঙ্গল সলিমপুরের ছিন্নমূলের ২নং সমাজের বড়ইতলা এলাকায় ১নং খাস খতিয়ানের বি,এস ৩৬০ এবং ৩৬১ দাগের ১০ একর পাহাড়ি জমি উদ্ধার করে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ফেরার পথে অবৈধ দখলদারদের হামলায় আহত হন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কে এম রফিকুল ইসলাম ও সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি তোফায়েল আহমেদসহ ১০ জন।
আরও পড়ুন: বংশী নদী দখল : সাভারের ইউএনওকে হাইকোর্টে তলব
ভারতে প্রশিক্ষণরত অবস্থায় ইউএনও’র মৃত্যু
সীতাকুণ্ডে উচ্ছেদ অভিযানে হামলায় ইউএনও-ওসিসহ আহত ১০, আটক ৩
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরে সরকারি জায়গা দখল করে অবৈধ বসবাসকারীদের উচ্ছেদ অভিযান শেষ করে ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের হামলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কে এম রফিকুল ইসলাম ও সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদসহ ১০ জন আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
এসময় হামলাকারীরা একটি বেসরকারি টেলিভিশনের গাড়িসহ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে।
আহত কয়েকজনকে উদ্ধার করে নগরীর একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এই ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
হামলা ও আহতদের বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আলাউদ্দিন বলেন, হার্ট ফাউন্ডেশনের জন্য বরাদ্দ দেওয়া একটি জায়গা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখলদাররা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করে আছেন। তাদের বেশ কয়েকবার নোটিশ করলেও কিন্তু তারা দখল ছাড়েননি।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে রেলগেটে ৩ পুলিশ সদস্য নিহত: গেটম্যানকে আসামি করে মামলা
তিনি আরও বলেন, ওই স্থান থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে ১০ একর জায়গা উদ্ধার করা হয়। কিন্তু বিকালের দিকে উচ্ছেদ শেষে ফেরার পথে অবৈধ দখলদারদের হামলায় গুরুতর আহত হন ইউএনও, ওসিসহ বেশ কয়েকজন। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত তোফায়েল আহমেদ জানান, হামলার সময় রক্ষা পেতে পুলিশ ৪৬ রাউন্ড গুলি চালায়। হামলাকারী এক নারীরসহ সাতজনকে পুলিশ আটক করেছে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে পরিচালিত এই অভিযানকালে উপজেলার জঙ্গল সলিমপুর মৌজার বি.এস ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত বি.এস ৩৬০ ও ৩৬১ দাগের পাহাড় শ্রেণির এই জমিতে থাকা শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে রেললাইনে থেমে যাওয়া গাড়িতে ট্রেনের ধাক্কায় ৩ পুলিশ সদস্য নিহত
সীতাকুণ্ডে প্রাইভেটকারকে কন্টেইনার লরির চাপা, অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে গেল ৫ যাত্রী
শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলাকারী ১৬ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি চুয়াডাঙ্গায় গ্রেপ্তার
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাণনাশের উদ্দেশ্যে তার গাড়িবহরে হামলাকারী ১৬ বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি আলাউদ্দিনকে (৪৩) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঝিনাইদহ র্যাব-৬ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তার মো.আলাউদ্দিন সাতক্ষীরার কলারোয়া থানার কিসমত ইলিশপুর গ্রামের মৃত মোকছেদ আলীর ছেলে।
র্যাব জানায়, শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাত ২টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঝিনাইদহ র্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মো. ইশতিয়াক হোসাইনের নেতৃত্বে একটি আভিযানিক দল চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থানার মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনা নির্বাচনে হারলে, হেরে যাবে বাংলাদেশ: কাদের
২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া থানা এলাকায় তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র, হাত বোমাসহ তার গাড়ি বহরে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এই হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরার কলারোয়া থানায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনসহ অন্যান্য আইনে পৃথক তিনটি মামলা হয়।
মামলা তিনটির বিচার শেষে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় ২০২৩ সালের ১৮ এপ্রিল সাতক্ষীরার বিশেষ ট্রাইবুনাল-৩ আদালত ওই হামলার সঙ্গে জড়িত আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেন।
মো. আলাউদ্দিন ছিলেন ওই হামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী ও হামলাকারীদের একজন।
আরও পড়ুন: ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছিল শেখ হাসিনাকে হত্যার নীল নকশা: ডেপুটি স্পিকার
চট্টগ্রামে পুলিশ বক্সে বোমা হামলার ঘটনায় জেএমবি সদস্যের বিচার শুরু
পাকিস্তানে গির্জা ও খ্রিস্টানদের বাড়িতে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১২৯
পাকিস্তানে কথিত কোরআন অবমাননার অভিযোগে ক্ষুব্ধ জনতা কয়েকটি গির্জা এবং সংখ্যালঘু খ্রিস্টানদের বেশকিছু বাড়িতে হামলা চালানের ঘটনায় ১২৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পবিত্র গ্রন্থ কোরআন অবমাননা করার অভিযোগে পুলিশ দুই খ্রিস্টান পুরুষকেও গ্রেপ্তার করেছে।
বৃহস্পতিবার দেশটির কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
কোরআন অবমাননার অভিযোগে গত বুধবার(১৬ আগস্ট) দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশের জরানওয়ালা জেলায় তাণ্ডব শুরু করেছিল উত্তেজিত জনতা। যার ফলে খ্রিস্টানরা নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। কারণ জনতা খ্রিস্টানদের উপর দেশের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক আক্রমণ শুরু করেছিল।
নগরীর পুলিশ প্রধান, বিলাল মেহমুদ বলেছেন, অফিসাররা রাজা আমির এবং তার এক বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছে। স্থানীয় মুসলমানরা যাদেরকে কুরআনের একটি পৃষ্ঠা ছিঁড়ে ফেলা ও অন্য পৃষ্ঠাগুলোতে অবমাননাকর মন্তব্য লিখে এবং গ্রন্থটি মাটিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছিল।
আঞ্চলিক পুলিশ প্রধান রিজওয়ান খান বলেছেন, সন্দেহভাজন দাঙ্গাবাজ হিসাবে ১২৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কর্তৃপক্ষ শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সৈন্যদের মোতায়েন করে এবং খ্রিস্টান বাসিন্দারা বৃহস্পতিবার ধ্বংস দেখতে ধীরে ধীরে বাড়ি ফিরে আসে।
শাজিয়া আমজাদ তার পোড়া বাড়ির বাইরে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমরা বাড়িতে বসা থাকতে হঠাৎ শুনতে পেলাম যে জনতার একটি দল আসছে এবং তারা বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে এবং গীর্জায় হামলা করছে।’
তিনি বলেছিলেন, জনতা ঘরের জিনিসপত্র এবং আসবাবপত্র পুড়িয়ে দিয়েছে এবং তার কিছু জিনিসপত্র চুরি হয়ে গেছে। সে তার পরিবারের সঙ্গে নিরাপদ এলাকায় অবস্থান করছিলেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীর শপথ
অন্যান্য খ্রিস্টানরাও অনুরূপ কঠিন পরিস্থিতির বর্ণনা করেছিল এবং বিস্ময় প্রকাশ করেছিল।
আজিম মসিহ তার বাড়ির বাইরে বসে বসে কাঁদছিলেন। যেটি তার রাস্তায় পুড়ে ফেলা কয়েকটি ভবনের মধ্যে একটি ছিল। তিনি বলেন, কিছু দাঙ্গাকারী আসবাবপত্র ও অন্যান্য জিনিসপত্র পুড়িয়ে দেওয়ার পর খ্রিস্টানদের গৃহস্থালির জিনিসপত্র নিতে গাড়ি নিয়ে আসে।
তিনি বলেন,‘কেন তারা আমাদের সঙ্গে এটা করল? আমরা কোনো অন্যায় করিনি।’
স্থানীয় পুরোহিত খালিদ মুখতার বলেছেন যে তিনি বিশ্বাস করেন, জরানওয়ালার ১৭টি গির্জার বেশিরভাগেই আক্রমণ করা হয়েছে এবং তার নিজের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত গীর্জা এবং বাড়িগুলো এক সপ্তাহের মধ্যে মেরামত করা হবে এবং যারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
সারাদেশে সহিংসতাটির নিন্দা জানানো হয়েছে। দাঙ্গাবাজদের গ্রেপ্তার নিশ্চিত করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল-উল-হক কাকার।
আঞ্চলিক পুলিশ প্রধান বলেছেন, জনতা দ্রুত জড়ো হয়ে গীর্জা ও খ্রিস্টানদের বাড়িতে হামলা শুরু করে। দাঙ্গাকারীরা শহরের প্রশাসকের অফিসেও হামলা চালায়, কিন্তু পুলিশ হস্তক্ষেপ করে, ফাঁকা গুলি ছুড়ে এবং মুসলিম আলেম ও মুরব্বিদের সহায়তায় হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিও এবং ফটোতে দেখা যাচ্ছে ক্ষুব্ধ জনতা একটি গির্জার ওপর উঠেছে, ইটের টুকরো দিয়ে ঢিল ছুঁড়ছে এবং আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যায় আরও চারটি গির্জায় হামলা করা হয়, আক্রমণকারীরা জানালা ভেঙে আসবাবের টুকরো বাইরে ফেলে এবং আগুন ধরিয়ে দেন।
অন্য একটি ভিডিওতে, একজন ব্যক্তিকে একটি গির্জার ছাদে উঠে হাতুড়ি দিয়ে বার বার আঘাত করে একটি স্টিলের ক্রস সরাতে দেখা যায়, আর তাকে বাহবা দিচ্ছে জড়ো হওয়া লোকজন।
আরও পড়ুন: 'শান্তি ও স্থিতাবস্থা' বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি চীন-ভারতের
দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো ওই সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল পাকিস্তানের ব্লাসফেমি আইন বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে।
পাকিস্তানের ব্লাসফেমি আইনের অধীনে, যে কেউ ইসলাম বা ইসলামিক ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের অবমাননার জন্য দোষী সাব্যস্ত হলে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। যদিও কর্তৃপক্ষ এখনও ব্লাসফেমির জন্য মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে পারেনি। প্রায়শই শুধুমাত্র একটি অভিযোগ জনতাকে সহিংসতা, বিচারহীনতা এবং হত্যার জন্য উস্কে দিতে পারে।
অধিকার গ্রুপগুলো বলছে, ব্লাসফেমির অভিযোগগুলো ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভয় দেখানো এবং ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল পাকিস্তানকে পূর্ণ তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার ওয়াশিংটনে তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং প্রত্যেকের জন্য ধর্ম ও বিশ্বাসের স্বাধীনতার অধিকারকে সমর্থন করি।’
আরও পড়ুন: কোরআন অবমাননার অভিযোগে পাকিস্তানে খ্রিস্টানদের গির্জায় হামলা
ইরাকে কুর্দি যোদ্ধাদের হামলায় ৬ তুর্কি সেনা নিহত : আঙ্কারা
উত্তর ইরাকে কুর্দি যোদ্ধাদের বুধবার রাতের হামলায় অন্তত ছয় তুর্কি সেনা নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই হতাহতের কথা জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের শেয়ার করা একটি সামাজিক মাধ্যমের পোস্টে জানায়, পরে প্রতিশোধমূলক বিমান হামলায় বৃহস্পতিবার নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি বা পিকেকে-র চার সদস্যও মারা গেছেন।
একদিকে তুরস্ক এবং তুর্কি সমর্থিত গোষ্ঠী এবং অন্যদিকে ইরাক ও সিরিয়ার কুর্দি যোদ্ধাদের মধ্যে মাসব্যাপী উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে সর্বশেষ সহিংসতা এটি।
তুরস্কের মধ্যে এক দশক ধরে বিদ্রোহ চালিয়েছে যাওয়া পিকেকে এবং সিরিয়া ও ইরাকের মিত্র কুর্দি গোষ্ঠীগুলিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে বিবেচনা করে আঙ্কারা। তুরস্ক দাবি করে যে পিকেকে সদস্যরা নিয়মিতভাবে উত্তর ইরাকের আধা-স্বায়ত্তশাসিত কুর্দি অঞ্চলে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পায়।
বাগদাদে ইরাকের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এর আগে, উত্তর ইরাকের কুর্দি অঞ্চলের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে বুধবার ইরাকের সুলায়মানিয়াহ প্রদেশে পিকেকের গাড়ি লক্ষ্য করে পৃথক দুটি তুর্কি ড্রোন হামলায় দুই বিদ্রোহী নিহত এবং চারজন আহত হয়েছে।
তুরস্ক ইরাকের একটি সীমান্ত অঞ্চলে সৈন্য মোতায়েন করে এবং সেখানে পিকেকে অবস্থানগুলোকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে। গত বছর এটি উত্তর ইরাকে পিকেকে-এর বিরুদ্ধে ‘ক্ল-লক’ নামে একটি স্থল ও বিমান অভিযান শুরু করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইরাকি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলেছেন, বৃহস্পতিবারের বিমান হামলা দুহোক শহরের উত্তরে অবস্থানে আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় মার্কিন-সমর্থিত কুর্দি যোদ্ধাদের ওপর আইএসের হামলা
তুর্কি কর্নেল জেকি আকতুর্ক নিহত সেনাদের প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমাদের সৈন্যরা শহীদদের রক্ত মাটিতে ছাড়বে না।একজন সন্ত্রাসী অবশিষ্ট না থাকা পর্যন্ত একই দৃঢ়তার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তুর্কি বাহিনী তাদের লড়াই চালিয়ে যাবে।’
১৯৮৪ সাল থেকে তুরস্কে পিকেকে-এর বিদ্রোহীরা কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা করেছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় হামলায় নিহত ১০, কুর্দি বাহিনীর হাতে ৫২ জঙ্গি গ্রেপ্তার
খুলনায় নারী ফুটবলারদের উপর হামলা: ৩ আসামির জামিন বাতিল
খুলনার বটিয়াঘাটার চার নারী ফুটবলারকে মারধরের কারণে করা মামলা প্রত্যাহার না করলে এসিডে শরীর ঝলসে দেওয়ার হুমকি দেওয়ার ঘটনায় দায়ের হওয়া জিডির সত্যতা পেয়েছে পুলিশ।
তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) সকালে তিন আসামি সালাউদ্দিন খাঁ, তার মা রঞ্জি বেগম ও বোন নুপুর আদালতে জামিন চাইলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন এবং তাদেরকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন খুলনার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. হাদিউজ্জামান।
আদেশের পর কঠোর গোপনীয়তায় তিন আসামিকে জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ।
আরও পড়ুন: খুলনার নির্যাতিত নারী ফুটবলারদের পাশে প্রধানমন্ত্রী
আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেন, হত্যাচেষ্টা মামলার জামিনে থাকা তিন আসামি তাদের জামিনের সকল শর্ত ভঙ্গ করেছে। তারা পরস্পর যোগসাজশে হত্যাচেষ্টা মামলার বাদি সাদিয়া নাসরিন ও অন্য ভুক্তভোগিদেরকে মামলা তুলে না নিলে এসিডে শরীর ঝলসে দেওয়ার হুমকি দেয়। যা পুলিশি তদন্তে প্রমাণিত। বাদি ও অপর ফুটবলারদের নিরাত্তা নিশ্চিত করতেই জামিন বাতিলের আদেশ দেয়া হলো।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই বটিয়াঘাটার তেঁতুলতলা গ্রামে চার নারী ফুটবলারকে মারধর ও গুরুতর আহত করে নুর খাঁ ও তার পরিবারের সদস্যরা।
এ ঘটনায় ৩০ জুলাই বটিয়াঘাটা থানায় চারজনের নাম উল্লেখ করে হত্যাচেষ্টা মামলা করেন ফুটবলার সাদিয়া নাসরীন। পুলিশ নুর খাঁকে গ্রেপ্তার করলেও অপর তিন আসামি আদালত থেকে জামিন ছিলেন।
পরে এসিডে শরীর ঝলসে দেওয়ার হুমকি দিলে সাদিয়া তিনজনকে অভিযুক্ত করে ১ আগস্ট থানায় জিডি করেন।
আরও পড়ুন: খুলনায় নারী ফুটবলারদের উপর হামলা, গ্রেপ্তার ১
দুদকের চার্জশিটে নাম আসায় খুলনার সিভিল সার্জনকে ওএসডি
১৫ অগাস্টকে লক্ষ্যবস্তু করে সাইবার হামলার আশঙ্কা
বাংলাদেশ সাইবারস্পেসের বিরুদ্ধে ১৫ আগস্ট 'ব্যাপক সাইবার-আক্রমণ' শুরু করার জন্য ৩১ জুলাই কিছু ধর্মীয় এবং আদর্শিকভাবে অনুপ্রাণিত গোপন হ্যাকার গ্রুপের একটি ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ সরকারের কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (বিজিডি- ই- গভ সিআইআরটি) সতর্কতা জারি করেছে।
এতে বলা হয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (সিআইআই), ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবা এবং সমস্ত ধরণের সরকারি এবং বেসরকারী সংস্থাগুলোকে আইটি অপারেশন এবং ব্যবসায় ব্যাহত করতে পারে এমন গ্রুপগুলোর সম্ভাব্য সাইবার-আক্রমণের বিষয়ে থাকতে হবে।
হ্যাকটিভিস্ট গোষ্ঠীগুলো থেকে উদ্ভূত ছোট থেকে মাঝারি আকারের সাইবার-আক্রমণের জন্য সমস্ত সংস্থাকে সতর্ক থাকতে এবং তাদের অবকাঠামো রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: প্রতিটি থানায় সাইবার ইউনিট গঠন করা প্রয়োজন: টেলিযোগাযোগমন্ত্রী
সিআইআরটি সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে যে এই গোষ্ঠীগুলো পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের সংস্থাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে চলেছে।
এতে আরও বলা হয়, ‘আমাদের সাম্প্রতিক গবেষণায়, আমরা একই অনুপ্রেরণাসহ বেশ কয়েকটি গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করেছি। তারা অবিরামভাবে বাংলাদেশে সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে সাইবার-আক্রমণ পরিচালনা করছে যা এর কার্যক্রম এবং ব্যবসাকে প্রভাবিত করে।’
আরও পড়ুন: এনআইডি’র তথ্য ফাঁস নিয়ে কাজ করছে সাইবার দল: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
গোষ্ঠীগুলোর প্রাথমিক আক্রমণের কৌশলগুলোর মধ্যে রয়েছে ডিস্ট্রিবিউটেড ডিনায়াল-অফ-সার্ভিস (ডিডিওএস) আক্রমণ, ওয়েবসাইট বিকৃত করা, ওয়েবসাইটের সঙ্গে আপোস করা এবং পেলোড ড্রপ করার জন্য পিছনের দরজা হিসাবে ক্ষতিকারক পিএইচপি শেল ব্যবহার করা।
সিআইআরটি অনুসারে শীর্ষ লক্ষ্যযুক্ত সংস্থার ধরনগুলো হলো সরকার ও সামরিক, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, ব্যাংকিং এবং এনবিএফআই, ফার্মাসিউটিক্যালস, খুচরা ও শিল্প সংস্থা এবংবিদ্যুৎ ও শিক্ষা খাত।
আরও পড়ুন: ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলার সতর্কতা জারি
হামলার প্রতিবাদে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসমাবেশ শুরু
রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশপথে শনিবারের অবস্থান কর্মসূচিতে দলের নেতা-কর্মীদের উপর ‘হামলার’ প্রতিবাদে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসমাবেশ শুরু হয়েছে।
সোমবার বিকাল ৩টার দিকে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জনসমাবেশ শুরু হয়।
আরও পড়ুন:ঢাকায় বিএনপির ৫৪৯ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ১১টি মামলা
দলের দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর মহানগর শাখা এ জনসমাবেশের আয়োজন করেছে।
চারটি ট্রাকের সমন্বয়ে একটি অস্থায়ী মঞ্চ করা হয়েছে। সমাবেশস্থলের চারপাশে প্রায় ৫০টি মাইক স্থাপন করা হয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম জানান, সমাবেশের জন্য স্বল্প সময়ের নোটিশে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তারা।
তিনি বলেন, আমি আশাবাদী জনসমাবেশে ব্যাপক জনসমাগম হবে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আরও পড়ুন: ২.০৩ কোটি জামানত দেখিয়ে ইসিতে বিএনপির অডিট রিপোর্ট জমা
দুপুর ১টা থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে দলটির নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে ভিড় করতে থাকেন।
যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সমাবেশস্থলের চারপাশে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশপথে অবস্থান কর্মসূচিতে দলের নেতা-কর্মীদের উপর হামলার প্রতিবাদে সব মহানগর ও জেলা শহরে জনসমাবেশ করার ঘোষণা দেন মির্জা ফখরুল।
এদিকে, শনিবার ঢাকার প্রধান প্রবেশপথে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি সংঘর্ষ ও সহিংসতায় বিপর্যস্ত হয়েছে, এতে অসংখ্য মানুষ আহত হয়েছে।
বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময় মাতুয়াইল, শ্যামলীসহ বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: ডিবি অফিসে খাবার খাওয়ার ব্যাখা দিলেন গয়েশ্বর
পাকিস্তানে সমাবেশে বোমা হামলায় ৪৪ জন নিহত, আহত প্রায় ২০০
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বাজুর জেলায় রবিবার (৩০ জুলাই) একজন কট্টরপন্থী ধর্মগুরু ও রাজনৈতিক নেতার সমর্থকদের সমাবেশে শক্তিশালী বোমা হামলা করা হয়েছে।
দেশটির পুলিশ ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কমপক্ষে ৪৪ জন নিহত এবং প্রায় ২০০ জন আহত হয়েছে।
সিনিয়র পুলিশ অফিসার নাজির খান বলেন, বাজুর জেলার রাজধানী খারের উপকণ্ঠে মাওলানা ফজলুর রহমানের জমিয়ত উলেমা ইসলাম (জেইউআই) পার্টির কর্মী সম্মেলনে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এপি’র ভিডিওতে দেখা গেছে, বিস্ফোরণের পর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে আহত ব্যক্তিদের ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সমাবেশে আসা ৪৫ বছর বয়সী আদম খান পায়ে ও দুই হাতে স্প্লিন্টারে আঘাত পান।
তিনি বলেন, বিকাল ৪টায় বোমা হামলা হয় এবং তিনি মাটিতে পড়ে যান।
তিনি বলেন, ‘চারপাশে আমি শুধু ধুলো ও ধোঁয়া দেখতে পাই।’
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বন্দুকযুদ্ধে ৩ সেনাসদস্য ও ২ বিদ্রোহী নিহত
কেউ তাৎক্ষণিকভাবে হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে ইসলামিক স্টেট (আইএস) গোষ্ঠী আফগানিস্তানে সীমান্তের বাইরেও হামলা করা শুরু করছে।
খান বলেন, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক এবং মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে।
একটি বাজারের কাছে একটি হলের মধ্যে জেইউআই কর্মী সম্মেলন আয়োজন করা হয়। তবে, সমর্থক সংখ্যা বেশি হওয়ায় বাইরে তাঁবু করা হয়। এসময় দলীয় স্বেচ্ছাসেবকরা অনুষ্ঠানস্থলটি পাহারা দিচ্ছিল।
খাইবার পাখতুনখোয়া পুলিশ প্রধান আখতার হায়াত গন্ডাপুর বলেছেন, প্রাথমিক তদন্তে বলা হয়েছে দলীয় স্বেচ্ছাসেবকদের নিরাপত্তা থাকা সত্ত্বেও একজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী অনুষ্ঠানস্থলে ঢুকে পড়ে।
তিনি বলেন, বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা আলামত সংরক্ষণের জন্য ঘটনাস্থলে চিরুনি অভিযান চালাচ্ছেন।
জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফয়সাল খান জানান, বিস্ফোরণে নিহত ৪৪ জনের লাশ এবং প্রায় ২০০জন আহত ব্যক্তি খারের প্রধান হাসপাতালে রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর এবং তাদের পেশোয়ার এবং পার্শ্ববর্তী জেলা দিরের একটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ, রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি এবং অন্যান্য নেতারা এই হামলার নিন্দা করেছেন। তারা আহত ও শোকাহত পরিবারকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার জন্য কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বর্ষণে নিহত ২৫, আহত ১৪৫
নিহতদের মধ্যে রেহমানের দলের স্থানীয় প্রধান মাওলানা জিয়াউল্লাহও রয়েছেন।
সিনেটর আবদুর রশিদ এবং সাবেক সংসদ সদস্য মাওলানা জামালউদ্দিনও মঞ্চে ছিলেন; তবে তিনি অক্ষত রয়েছেন।
রেহমান সমাবেশে ছিলেন না বলে দলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
দলের আঞ্চলিক প্রধান রাশেদ বলেছেন, হামলাটি নভেম্বরে সংসদ নির্বাচনের আগে জেইউআইকে মাঠ থেকে সরানোর চেষ্টা।
তিনি বলেন, এ ধরনের কৌশল কাজ করবে না।
রেহমানকে তালেবানপন্থী ধর্মগুরু বলে মনে করা হয় এবং তার রাজনৈতিক দল ইসলামাবাদের জোট সরকারের অংশ। আসন্ন নির্বাচনের জন্য সমর্থকদের একত্র করতে সারাদেশে সভা-সমাবেশ করছে দলটি।
তিনি বলেন, ‘এই ঘটনায় আমাদের অনেক সহকর্মী প্রাণ হারিয়েছেন এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন। আমি ফেডারেল ও প্রাদেশিক প্রশাসনকে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করতে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসা সুবিধা দিতে বলব।’
মোহাম্মদ ওয়ালি বলেন, তিনি একজন বক্তার বক্তব্য শুনছিলেন, তখন বিকট বিস্ফোরণে সাময়িকভাবে বধির হয়ে যান।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে কয়লা খনি নিয়ে দুই উপজাতির মধ্যে সংঘর্ষে নিহত ১৫
তিনি বলেন, ‘আমি এক গ্লাস পানি আনতে ওয়াটার ডিসপেনসারের কাছে গিয়েছিলাম, আকস্মিক বোমা বিস্ফোরণের ধাক্কায় আমি মাটিতে পড়ে যাই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা হাসিমুখে সমাবেশে এসেছিলাম। কিন্তু হাসপাতালে গিয়ে শেষ পর্যন্ত কান্নারত আহত মানুষ এবং তাদের প্রিয়জনের লাশ নিয়ে স্বজনদের কাঁদতে দেখেছি।’
বাজুর একটা সময় একটি উপজাতীয় অঞ্চল ছিল, কিন্তু এখন একটি জেলা।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী উপজাতীয় অঞ্চল থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল করার জন্য ব্যাপক অভিযান চালানোর আগ পর্যন্ত ইসলামিক জঙ্গিদের একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল ছিল এটি। জঙ্গিরা এখনও প্রায়ই নিরাপত্তা বাহিনী ও বেসামরিকদের ওপর হামলা চালায়।