বন বিভাগ
ফরিদপুরের ভুবনেশ্বর নদ থেকে বিলুপ্তপ্রায় কুমির উদ্ধার
ফরিদপুরের ভুবনেশ্বর নদ থেকে মিঠাপানির বিলুপ্ত প্রায় একটি কুমির উদ্ধার করেছে বন বিভাগের প্রাণী সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা অঞ্চলের উদ্ধারকারী দল।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে ফরিদপুর সদরের আলিয়াবাদ ইউনিয়নের গজারিয়ায় ভুবনেশ্বর নদ থেকে কুমিরটি উদ্ধার করা হয়। কুমিরটি প্রায় ৭ ফুট লম্বা।
উদ্ধারকারী দলটি মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) বিকালেই কুমিরটি নিয়ে সড়কপথে সুন্দরবনের করমজল বণ্যপ্রাণী উদ্ধার কেন্দ্রের উদ্দেশে রওনা হয়।
জানা গেছে, গত বুধবার (১১ অক্টোবর) বিকালে চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের শিকদারডাঙ্গী গ্রামের ভুবনেশ্বর নদে প্রথম কুমিরটি দেখা যায়। বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টার মধ্যে কুমিরটি কয়েকবার ভেসে ওঠে। এতে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: একদিন পর কুড়িগ্রামের চিলমারী নৌবন্দরে ফেরি চলাচল শুরু
আলিয়াবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. বকলুকার রহমান বলেন, কুমির দেখার খবর পেয়ে আমরা থানা ও বন বিভাগকে বিষয়টি জানাই। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এলাকার মানুষকে সতর্ক করে। এলাকার মসজিদ থেকে মাইকিং করেও সতর্ক করা হয়।
খুলনা প্রাণী সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের প্রাণী বিশেষজ্ঞ মফিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, কুমিরটি উদ্ধারে রবিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে ফরিদপুরের সদর উপজেলার পাটপাশা এলাকায় পরিদর্শনে যায় উদ্ধারকারী দল। তবে সেখানে কুমিরের কোন সন্ধান মেলেনি। পরে মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে গজারিয়ায় ব্রিজের নিকট ভুবনেশ্বর নদে কুমিরটি দেখতে পেয়ে উদ্ধার করা হয়।
মফিদুল ইসলাম আরও জানান, উদ্ধার করা কুমিরটি মিঠাপানির বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির কুমির। কুমিরটি প্রথমে সুন্দরবনের করমজল বণ্যপ্রাণী উদ্ধার কেন্দ্রে নেওয়া হবে। পরে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে এ ব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২১ সালের ৯ আগস্ট ফরিদপুর সদরের নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নে পদ্মা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত একটি খাল থেকে আরও একটি মিঠাপানির কুমির উদ্ধার করা হয়। পরে কুমিরটিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে পাঠায় প্রাণী সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ।
২০০০ সালে পরিবেশ সংরক্ষণ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনসারভেশন অব নেচার’- বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে মিঠা পানির কুমির বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন: পশুর নদীতে সিমেন্টের ক্লিংকারবোঝাই লাইটার জাহাজডুবি
ভোলায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরায় ৩৪ জেলে গ্রেপ্তার
শেরপুরে ফের বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার, পরিবেশবাদীদের উদ্বেগ
শেরপুরে ঝিনাইগাতীর ছোট গজনী পাহাড় সংলগ্ন এলাকার ধানখেত থেকে একটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সকালে স্থানীয়দের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে বন্যহাতিটির মরদেহ উদ্ধার করে বন বিভাগ।
বনবিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মকরুল ইসলাম জানিয়েছেন, মৃত হাতিটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ।
ধানখেতে হাতি তাড়ানোর জন্য পেতে রাখা বিদ্যুতের তারের ফাঁদে পড়ে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
এনিয়ে গত পাঁচ মাসে একই এলাকা থেকে দুটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গত কয়েকদিন খাদ্যের খোঁজে বন্যহাতির দল এই এলাকার ধানখেতে আসছিল। এতে ফসল নষ্ট হচ্ছিল। তাই স্থানীয়রা তাদের ফসল রক্ষা করতে বিভিন্ন উপায়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করে। এভাবেই হয়তো হাতি তাড়ানোর জন্য পাতা বিদ্যুতের তারের ফাঁদে পড়ে হাতিটির মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে বন্য হাতির আক্রমণে গ্রাম্য চিকিৎসকের মৃত্যু
বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ইতোমধ্যে বন বিভাগ, প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা, পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
তারা জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের পর হাতিটির মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য হাতিটির শরীরের বিভিন্ন অংশ সংরক্ষণ করে মরদেহটি পুঁতে রাখা হবে।
এদিকে গত পাঁচ মাসে শেরপুরে ঝিনাইগাতী সীমান্তের পাহাড়ী এলাকায় দুটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
ঝিনাইগাতীর কাংশা ইউনিয়ন তাওয়াকুচা বীট এলাকার গত ৬ মে সকালে বিদ্যুতের পাতা ফাঁদে একটি বন্যহাতি মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছিল।
তাছাড়া ঝিনাইগাতীর গজনী অবকাশ এলাকা থেকে ২০২২ সালে ২ জুন বন্যহাতির এক মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারও আগে ওই বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি ঝিনাইগাতীর গজনী সীমান্তের আঠারোঝোরা এলাকা এবং ২০২১ সালের ৯ নবেম্বর শ্রীবরদী সীমান্তের মালাকোচা ও ১৯ নবেম্বর নালিতাবাড়ী সীমান্তের পানিহাতা এলাকার মায়াঘাসি গ্রাম থেকে তিনটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার হয়েছিলো।
আরও পড়ুন: শেরপুরে বন্য হাতির আক্রমণে কৃষকের মৃত্যু
নাগরিক প্ল্যাটফরম ‘জনউদ্যোগ’ এর আহ্বায়ক মো. আবুল কালাম আজাদ, ‘শেরপুর বার্ড কনজারভেশন সোসাইটি’র সভাপতি সুজয় মালাকার এবং ‘সবুজ আন্দোলন’ এর সভাপতি মো. মেরাজ উদ্দিন জানান, আমরা দীর্ঘদিন যাবত গভীরভাবে লক্ষ্য করছি যে গারো পাহাড়ে বন্যহাতির স্বাভাবিক বিচরণে কিছু মানুষ ফসল রক্ষার নামে বাঁধা দিয়ে আসছে। অথচ সরকার হাতি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে আসছে। তারপরও প্রায়ই গারো পাহাড়ে জিআই তারে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে কিংবা বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে বন্যহাতি হত্যা করে আসছে।
তারা আরও জানান, বৃহস্পতিবারও ঝিনাইগাতীর ছোট গজনীর ধানখেতের পাশ থেকে একটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এই হাতিটিকেও হত্যা করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি। এ হাতি হত্যার সাথে যে বা যারাই জড়িত থাকুক আমরা তাদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবী করছি।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র থেকে খালি হাতে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী: ফখরুল
বনভূমি সংরক্ষণে বন বিভাগের কর্মচারীদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, দেশের বন ও বনভূমি সংরক্ষণে বন বিভাগের কর্মচারীদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে।
বুধবার চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিআইপি কক্ষে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে পরিবেশমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন যে শুধু চাকরি করার জন্য নয়, দেশপ্রেমের সঙ্গে দেশের কল্যাণে কাজ করে যেতে হবে। অবৈধ বনভূমি পুনরুদ্ধার ও বনের উন্নয়নে সরকারের উদ্যোগের সঙ্গে সকল শ্রেণির জনগণকে সম্পৃক্ত করে কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, বন সংরক্ষণে বাংলাদেশ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী। তাই দায়িত্বশীলতার সঙ্গে দেশের বন রক্ষায় কাজ করতে হবে।
কোনো ভয়ভীতির কাছে নতিস্বীকার না করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, আইন বিরোধী যেকোনো কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে দমন করতে হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে দূষণমুক্ত করতে সম্ভাব্য সবকিছু করা হবে: পরিবেশমন্ত্রী
পরিবেশ সংরক্ষণে টিলাকাটা ও পুকুর ভরাট বন্ধ করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
সুন্দরবনে বাঘ শুমারি শুরু হতে যাচ্ছে
নানা জটিলতার শেষে এবং অর্থ বরাদ্দ পাওয়ার পর সুন্দরবনে বাঘ শুমারি শুরু হতে যাচ্ছে।
প্রকল্প কর্মকর্তারা বলছেন, দ্রুত অর্থ ছাড়ের চেষ্টা চলছে। অর্থ ছাড় হলে প্রথমেই সুন্দরবনে বাঘ গণনার কাজ শুরু হবে।
বন বিভাগ জানিয়েছে, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প অনুমোদন হয়। তিন বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। প্রকল্পের একটি অংশে তিন কোটি ২৬ লাখ টাকা দিয়ে বাঘ গণনা করা হবে। চলতি অক্টোবর মাস থেকে এই কাজ শুরুর হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অর্থ ছাড় না হওয়ায় প্রকল্পটি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে।
আরও পড়ুন: খুলনা মাতিয়েছে ‘অপারেশন সুন্দরবন’ টিম
সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ও প্রকল্পের পরিচালক আবু নাসের মহসিন বলেন, গত সপ্তাহে পরিকল্পনা কমিশন থেকে ৩ কোটি টাকা ছাড়ের বিষয়টি অনুমোদন হয়েছে। এখন বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় ছাড় করলেই অর্থ পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, অর্থ বরাদ্দ পাওয়ার পর প্রথমেই বাঘ গণনার কাজ শুরু হবে। মন্ত্রণালয়ের কাজে কতো সময় লাগবে তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। এজন্য কোন মাস থেকে বাঘ গণনা শুরু হবে-সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। আশা করছি আগামী বছরের শুরু থেকেই শুমারির কাজ শুরু করা যাবে, সবই নির্ভর করছে অর্থছাড়ের ওপর।
প্রকল্প পরিচালক বলেন, বর্তমানে বাঘ সারা বিশ্বে একটি বিপন্ন প্রাণী। বিশ্বের ১৩টি দেশে তিন হাজার ৮৪০টি বাঘ টিকে আছে।
২০১৮ সালের জরিপ মতে, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ১১৪টি। বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান (২০০৯-২০১৭), ২০১০ সালের বিশ্ব বাঘ সম্মেলনের অঙ্গীকার, দ্বিতীয় টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান (২০১৬-২০২৭) ও গ্লোবাল টাইগার ফোরামের সিদ্ধান্তের আলোকে দেশে বাঘের হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ এবং সুন্দরবনের বাঘ সংরক্ষণ ও এর সংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়।
প্রকল্পের অন্য কাজের মধ্যে রয়েছে-বাঘ যেন লোকালয়ে চলে না আসে, সে জন্য জনবসতি আছে এমন ৬০ কিলোমিটার এলাকায় নাইলনের বেড়া দেয়া হবে। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে বাঘ যেন নিরাপদ আশ্রয় পায় সেজন্য বনের মধ্যে ১২টি মাটির কেল্লা নির্মাণ করা হবে। সুন্দরবনের যে অংশে আগুন লাগার প্রবণতা বেশি, সেসব জায়গায় দুটি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার নির্মাণসহ বনে আগুন লাগলে যাতে তাৎক্ষণিকভাবে তা নেভানো যায় সেজন্য যন্ত্রপাতি, পাইপ ও ড্রোন কিনবে বন বিভাগ।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে আরও ৪ ইকো-ট্যুরিজম সেন্টার চালু হচ্ছে
‘সুন্দরবনকে র্যাবের দস্যুমুক্ত করাই মানসম্পন্ন চলচ্চিত্রের অনুপ্রেরণা’
কুষ্টিয়ায় বিষাক্ত রাসেল ভাইপার সাপ উদ্ধার
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পদ্মা নদী থেকে একটি বিষাক্ত রাসেল ভাইপার সাপ উদ্ধার করে গড়াই নদীতে অবমুক্ত করা হয়। মঙ্গলবার বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার কয়া ইউনিয়নের সৈয়দ মাসুদ রুমী সেতুর নীচে গড়াই নদীতে সাপটি অবমুক্ত করেন উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা বনবিভাগের কর্মকর্তা মো. আরিফুল ইসলাম।
তিনি বলেন,‘পদ্মা নদীতে মাছ ধরা দুয়ার (মাছ ধরার যন্ত্র) জালে বিষাক্ত রাসেল ভাইপার আটকা পড়ে। সকালে খবর পেয়ে বিলপ্তপ্রায় এই সাপটি উদ্ধার করা হয় এবং গড়াই ব্রিজ হিসেবে পরিচিত সৈয়দ মাসুদ রুমী সেতুর নীচে অবমুক্ত করা হয়েছে।'
এদিকে গড়াই নদীতে বিষাক্ত রাসেল ভাইপার সাপটি অবমুক্ত করায় আতঙ্কে রয়েছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।
তারা বলেন, ‘নদীর পাড়ে হাজার হাজার মানুষের বসবাস। এখানকার মানুষ বিভিন্ন প্রয়োজনে নদী ব্যবহার করেন। কিন্তু এখানে এত ভয়ংকর সাপটি ছেড়ে দেওয়া ঠিক হয়নি।’
আরও পড়ুন: শহরে ভয়ংকর রাসেল ভাইপার সাপ, আতঙ্কে চাঁদপুরবাসী
জানা গেছে, উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া গ্রামের জেলে মো. শামিম হোসেন প্রতিদিনই পদ্মায় দুয়ার জালের ফাঁদ পেতে মাছ শিকার করেন। মঙ্গলবার সকালে জাল থেকে মাছ বের করতে যান। জালে মাছের পরিবর্তে সাপ দেখতে পান। প্রথমে তিনি অজগর সাপ মনে করে স্থানীয়দের খবর দেন। পরে বন বিভাগের লোকজন এসে তাকে জানায় এটা বিষাক্ত রাসেল ভাইপার। পরে সাপটিকে বনবিভাগের লোকজন নিয়ে যান।
এ বিষয়ে জেলা বনবিভাগের বনকর্মকর্তা জি এম মোহাম্মদ কবির বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে সাপটি ভারত থেকে পদ্মা নদী হয়ে এসেছে। উদ্ধার করার পর গড়াই নদীতে অবমুক্ত করা হয়েছে। এতে আতঙ্কের কিছু নেই। নদী বেয়ে অন্যত্র চলে যাবে।'
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘এখানে আমাদের কিছু করার নেই। বিষয়টি বনবিভাগের। তারাই ভাল বলতে পারবেন।'
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় সাপের কামড়ে বউ-শাশুড়ির মৃত্যু
সাপের কামড়ে সাপুড়ের মৃত্যু
পর্যটকদের জন্য সুন্দরবন খুলছে ১ সেপ্টেম্বর
বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবন পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে। প্রজনন মৌসুমে বন্যপ্রাণী ও মৎস্য সম্পদের প্রজনন বাড়াতে ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট সুন্দরবনে সব ধরণের মানুষের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বন বিভাগ। একটানা তিন মাস বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) থেকে দেশি-বিদেশি পর্যটকরা সুন্দরবন ভ্রমণ করতে পারবেন।
বন বিভাগের পক্ষ থেকে সুন্দরবনের দর্শনীয় স্থানগুলোকে ভ্রমণ উপযোগী করে তোলা হয়েছে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সুন্দরবন ভ্রমণের জন্য ট্যুর অপারেটরগুলো তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় সুন্দরবনে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ঢল নামবে বলে বন বিভাগ ও ট্যুর অপারেটরদের প্রত্যাশা।
বন বিভাগ বলছে, প্রজনন মৌসুমে ৩ মাস সুন্দরবনে সব ধরণের মানুষের প্রবেশ বন্ধ থাকায় বন্যপ্রাণীরা নির্বিঘ্নে প্রজনন করতে পেরেছে। বনে বিভিন্ন ধরণের বন্যপ্রাণীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সাথে বনের নদী, খালে মাছও বৃদ্ধি পেয়েছে। লোকালয়ের কাছাকাছি এবং বন বিভাগের বিভিন্ন দপ্তরের পাশে হরিণ, বানর, বন্য শুকুর, সাপ, অজগর, ঘুঘুসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণীর প্রায়ই দেখা মিলছে। এমনকি বনের বিভিন্ন এলাকায় বাঘের ডাকও শোনা গেছে।
সুন্দরবন বিশ্বের একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। ১৮৭৮ সালে সুন্দরবনকে সংরক্ষিত বন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সুন্দরবনের মোট আয়াতন ছয় হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার। এর মধ্যে স্থলভাগের পরিমাণ চার হাজার ১৪৩ বর্গকিলোমিটার এবং জলভাগের পরিমাণ এক হাজার ৮৭৩ বর্গকিলোমিটার। সুন্দরবন জীববৈচিত্র সমৃদ্ধ বিশ্বের মধ্যে সমৃদ্ধশালী একটি ইকোসিস্টেম। অসংখ্য উদ্ভিদ ও প্রাণীর আবাসস্থল সুন্দরবন। রয়েল বেঙ্গল টাইগারেরও আবাসস্থল সুন্দরবন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবন।
আরও পড়ুন: জেলে-পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা: নিজস্ব রূপে ফিরেছে সুন্দরবন
সুন্দরবনে বেড়েছে হরিণ শিকার
সুন্দরবনের পশ্চিম বন বিভাগের আওতাধীন খুলনা রেঞ্জে প্রতিনিয়ত হরিণ শিকারির অপতৎপরতা বেড়েই চলেছে। সুন্দরবন রক্ষা করতে বন বিভাগের টহল টিমের সঙ্গে বিশেষ টহল টিম স্মার্ট প্যাট্রল প্রতিনিয়ত দায়িত্ব পালন করলেও অদৃশ্য কারণে হরিণ শিকার কমছে না।
সম্প্রতি কয়রা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর কয়রা গ্রামে পৃথক অভিযান চালিয়ে দুদিনের ব্যবধানে সাত কেজি হরিণের গোশতসহ এক শিকারিকে আটক করেছে কয়রা থানা পুলিশ।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে চিত্রা হরিণ উদ্ধার, সুন্দরবনে অবমুক্ত
জানা গেছে, গত ১৮ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টায় দিকে পাচারকালে কয়রা উপজেলা সদর ইউনিয়নের ৪নং কয়রা গ্রামের বাসিন্দা ৩৮ বছর বয়সী রুহুল আমিন সানাকে চার কেজি হরিণের গোশতসহ আটক করা হয়। এর আগে ১৭ আগস্ট গভীর রাতে তিন কেজি হরিণের গোশত উদ্ধার করেন কয়রা থানা পুলিশ।
এছাড়া গত ৫ জুন সুন্দরবনে অভিযান চালিয়ে জবাই করা দুটি হরিণ, একটি নৌকা ও হরিণ ধরার ফাঁদ উদ্ধার করেন কয়রার হড্ডা বন টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান।
অভিযোগ আছে, বনবিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা চোরা শিকারিদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। তাদের যোগসাজশে এই শিকারি চক্র হরিণের গোশত নিয়ে উপজেলার ৪ ও ৬ নম্বর কয়রা এলাকা দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করে।
আরও পড়ুন: শরণখোলায় ২ হরিণের চামড়া উদ্ধার
পশ্চিম বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. হাসানুর রহমান বলেন, আমাদের টহল টিম নিয়মিত পাহারা দেয়। সুযোগ বুঝে তাদেরকে ফাঁকি দিয়ে এই চক্র হরিণ শিকার চালিয়ে যাচ্ছে। বন বিভাগের সদস্য কম থাকায় তারা সুযোগটা বেশি পাচ্ছে।
এ ব্যাপারে কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবি এম এস দোহা বলেন, কিছু অসাধু কারবারি হরিণ শিকার করে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করছে। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করতে প্রতিনিয়ত কয়রা থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে। সম্প্রতি হরিণের গোশতসহ একজনকে আটক করে বন্য প্রাণী নিধন আইনে মামলা করা হয়েছে।
সুন্দরবনে বাঘ স্থানান্তর করতে চায় বন বিভাগ
বিভিন্ন কারণে সুন্দরবনে বাঘের অবাধ বিচরণ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় নিজেদের মধ্যে আন্তঃপ্রজনন হওয়ায় বাঘ রোগাক্রান্ত ও দুর্বল হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় আন্তঃপ্রজনন রোধ করতে সুন্দরবনের মধ্যে বাঘ স্থানান্তর করতে চায় বন বিভাগ।
এ বিষয়ে প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী জানান, সুন্দরবনের মধ্যে শিপশা, পশুর ও পাঙ্গাশিয়াসহ বড় বড় নদীর কারণে বাঘ আলাদা হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে সুন্দরবনের কিছু অংশে বাঘের ভ্যারাইটি কমে গেছে। ফলে নিজেদের মধ্যে বাঘের আন্তঃপ্রজনন হচ্ছে। আন্তঃপ্রজননের কারণে বাঘ নানা ভাবে দুর্বল এবং রোগাক্রান্ত হচ্ছে। সুন্দরবনের একস্থান থেকে নিয়ে অন্য স্থানে বাঘ স্থানান্তর করা গেলে প্রজননের ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসবে বলে তিনি মনে করেন।
‘বাঘ আমাদের অহংকার, রক্ষার দায়িত্ব সবার’- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে শুক্রবার (২৯ জুলাই) বাগেরহাটে সুন্দরবনের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জ এলাকায় আলাদা ভাবে বিশ্ব বাঘ দিবস পালিত হয়।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, শতবছরে বিশ্বের বনাঞ্চল থেকে বাঘের সংখ্যা এক লাখ থেকে কমে মাত্র চার হাজারের নিচে দাঁড়িয়েছে। বাঘের আটটি উপ-প্রজাতির তিনটি এরইমধ্যে বিশ্ব থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। পাঁচ বছর আগেও বিশ্বের মাত্র ১৩টি দেশে বাঘ ছিল। সেখান থেকে আরও একটি দেশ বাঘ হারিয়েছে। এখন বাংলাদেশসহ মাত্র ১২টি দেশে বাঘের অস্তিত্ব রয়েছে। সারা বিশ্বের বন উজাড়, চোরশিকারি ও পাচারকারিদের কারণে বাঘ মহাবিপন্ন প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বর্তমানে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের আনাগোনা দেখা গেছে। পর্যটক এবং বন বিভাগের সদস্যদের নজরে পড়ছে বাঘ ও তার বাচ্চা। এ অবস্থায় সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার বিচরণের খবর আশার আলো জাগিয়েছে।
বন বিভাগের তথ্যমতে, বাঘের আটটি উপ-প্রজাতির মধ্যে ইতোমধ্যে বালিনীজ টাইগার, জাভানীজ টাইগার ও কাম্পিয়ান টাইগার বিশ্ব হতে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বর্তমানে পাঁচটি উপ-প্রজাতি কোন রকম টিকে আছে। সরকারের বিশেষ অগ্রাধিকার ও আন্তর্জাতিক স্বাক্ষরিত প্রটোকল অনুসারে সুন্দরবনে বাঘ রক্ষার জন্য বন বিভাগ কাজ করছে। ২০১৮ সাল থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত সুন্দরবনে টাইগার অ্যাকশান প্লান নামে ১০ বছর মেয়াদি প্লানের আওতায় বাঘ রক্ষায় কাজ চলছে।
জানা গেছে, দেশে বাঘের একমাত্র আবাসস্থল সুন্দরবন। চোরাশিকারীচক্র ও জলদস্যু-বনদস্যুদের তৎপরতার কারণে কয়েক বছর আগেও সুন্দরবনে অনেকটা হুমকির মুখে ছিল বাঘ। দস্যুরা আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসায়, বিগত কয়েক বছর ধরে সুন্দরবনে দস্যুতা প্রায় শুন্যের কোঠায়। এছাড়া চোরাশিকারিদের তৎপরতাও কমে এসেছে। একারণে সুন্দরবনে বাঘ অনেকটা সুরক্ষিত এবং বাঘের বিচারণ ক্ষেত্র নিরাপদ বলে মনে করছে বন বিভাগ।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে বাঘের পাশাপাশি গণনা করা হবে হরিণ ও শূকর
বন বিভাগ জানায়, ২০১৩-২০১৫ সালে সুন্দরবনে ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে প্রথম জরিপ করে বাঘ পাওয়া গেছে ১০৬টি। দ্বিতীয় বার ২০১৭-২০১৮ একই পদ্দতিতে জরিপ করে সুন্দরবনে বাংলাদেশ অংশে বাঘের ১১৪টি সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়।
জানা গেছে, সুন্দরবনের মোট আয়াতন ছয় হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার। এর মধ্যে স্থলভাগের পরিমাণ চার হাজার ১৪৩ বর্গ কিলোমিটার। বর্তমানে সুন্দরবনের মোট আয়াতনের অর্ধেকেরও বেশি এলাকা সংরক্ষিত বনাঞ্চল। আর গোটা সুন্দরবন জুড়েই রয়েল বেঙ্গল টাইগার কম বেশি বিচরণ করে থাকে।
বন বিভাগের তথ্যমতে, ২০০১ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সুন্দরবনে নানা ভাবে প্রায় অর্ধশত বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে ২২ টি এবং পশ্চিম বিভাগে ১৬টি বাঘের মৃত্যু হয়। এছাড়া ওই সময়ের মধ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যরা ১১টি বাঘের চামড়া এবং বাঘের অঙ্গপ্রতঙ্গ উদ্ধার করে।
বাগেরহাটের শরণখোলা ও মোংলা উপজেলার দেলোয়ার হোসেন, জামাল হোসেন, ইউসুফ আকনসহ কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, সম্প্রতি তারা সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় নদী-খালের চড়ে বাঘের পায়ের ছাপ দেখেছে। মাঝে মধ্যে তাদের কানে বাঘের ডাক ভেসে আসে।
বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী আরও জানান, চোরাশিকারী, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে সুন্দরবনে বাঘ হুমকির মুখে রয়েছে। বাঘের আবাস্থল নিরাপদ রাখতে বন বিভাগ কাজ করছে।
বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীর তথ্যমতে, ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের পর সুন্দরবনে আর বাঘ গণনা হয়নি। সম্প্রতি সুন্দরবন ‘বাঘ সংরক্ষণ’ নামে একটি প্রকল্পের অনুমোদন হলেও এখন পর্যন্ত অর্থবরাদ্ধ পাওয়া যায়নি। অর্থবরাদ্ধ পাওয়া গেলে চলতি বছরের শীত মৌসুমে সুন্দরবনে বাঘ গণনার কাজ শুরু করা হবে। নতুন করে বাঘ গণনা হলে জানা যাবে সুন্দরবনে বাঘের সঠিক সংখ্যা।
বন্যপ্রাণি ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো জানান, গবেষণায় দেখা গেছে, সুন্দরবনে বাঘের ধারণক্ষমতা ২০০টি। বাঘের বর্তমান সংখ্যা থেকে ২০০টিতে উন্নীত করতে বন বিভাগ নানা উদ্যোগ নিয়ে বাস্তবায়ন করছে। বাঘসহ সব ধরণের বন্যপ্রাণির প্রজনন নির্বিঘ্নে করতে জুন, জুলাই ও আগস্ট-এই তিন মাস সুন্দরবনে পর্যটক ও জেলেসহ সব ধরণের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, সর্বশেষ জরিপ অনুসারে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ১১৪টি। তবে সম্প্রতি সুন্দরবনের বিভিন্ন অংশে পর্যটক ও বনের স্টাফরা ছোট বড় বিভিন্ন সাইজের বাঘ দেখেছে। একই সাথে বনের বিভিন্ন এলাকায় বাঘের পায়ের চিহ্ন দেখা গেছে; এতে করে মনে হচ্ছে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ডিএফও মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন আরও জানান, বাঘ শিকারিদের তৎপরতা রুখে দিতে নিয়মিত অভিযানের পাশাপাশি স্মার্ট পেট্রোল চলছে সুন্দরবনে। বন বিভাগের পাশাপাশি সিএমসি, সিপিজি ও বিটিআরসি নিয়মিত সুন্দরবন বাউন্ডারি এলাকায় নিয়মিত টহল দেয়।
বিশ্ব বাঘ দিবস উপলক্ষ্যে বাগেরহাটে সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জ ও শরণখোলা রেঞ্জ এলাকায় পৃথক র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। চাঁদপাই রেঞ্জে বাঘ দিবসের আলোচনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের ডিএফও মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন। প্রধান অতিথি ছিলেন বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে ২১ বছরে ৪০ বাঘের মৃত্যু
বাঘ সংরক্ষণে সুন্দরবনে মানুষের প্রবেশ বন্ধ করতে হবে: পরিবেশ উপমন্ত্রী
মনপুরায় হরিণের মাংসসহ গ্রেপ্তার ২
ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরায় ৮ কেজি হরিণের মাংসসহ দুই শিকারিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে মনপুরার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের চরপিয়ালের সংরক্ষিত বনাঞ্চল থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন-উপজেলার ২নং হাজির হাট ইউনিয়নের দাসের হাট গ্রামের মো. আরিফ ও মো. শাকিল।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে সুন্দরবন থেকে ৩০ কেজি হরিণের মাংস উদ্ধার
পঁচা কোড়ালিয়া বনবিভাগের বিটকর্মকর্তা মো. আব্বাস আলী জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাত ১টার দিকে মনপুরা উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের চরপিয়ালের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অভিযান চালানো হয়। এ সময় জবাই করা ৮ কেজি হরিণের মাংসসহ দুই হরিণ শিকারিকে আটক করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে মনপুরা বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসে এনে মামলা দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: বরগুনায় ৮শ’ কেজি হরিণের মাংস জব্দ, আটক ১
মনপুরা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মঈনুল ইসলাম জানান, শুক্রবার সকালে গ্রেপ্তার দুই শিকারির বিরুদ্ধে বন্য প্রাণীসংরক্ষণ ও নিধন আইনে মামলা করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
সাতক্ষীরায় লোকালয়ে বাঘ, আতঙ্কে গ্রামবাসী
সুন্দরবন সংলগ্ন জনবসতি এলাকায় বাঘের দেখা পাওয়ার পর থেকে শ্যামনগর উপজেলার গোলাখালী দ্বীপে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
রবিবার গ্রামের রফিকুল নামে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন চিংড়ির খামারের কাছে বাঘটিকে ঘুরে বেড়াতে দেখে স্থানীয়রা। বাঘটি সেখানে প্রায় ২০ মিনিটের মতো ছিলো বলে জানা গেছে।
গ্রামের বাসিন্দা ভোলানাথ মণ্ডল বলেন,‘বাঘের ভয়ে কেউ এখন তাদের ঘর থেকে বের হতে সাহস করছে না।’
সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এম এ হাসান বলেন, গ্রাম্য টাইগার রেসপন্স ফোর্স এবং বন বিভাগের একটি যৌথ দল ২৪ ঘণ্টা নজরে রাখছে। তবে গ্রামের বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে বাঘের পাশাপাশি গণনা করা হবে হরিণ ও শূকর