পহেলা বৈশাখ
আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য মঙ্গল শোভাযাত্রায় হুমকির চিঠি দিয়েছে: র্যাবের মহাপরিচালক
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন বৃহস্পতিবার বলেছেন, আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য মঙ্গল শোভাযাত্রায় হামলার হুমকি দিয়ে চারুকলা ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থীর কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং এটি কোনো জঙ্গিদের হুমকি নয়।
তিনি বলেন, ‘চিঠিটি আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য পাঠানো হয়েছিল। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।’
আগামীকাল বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানস্থলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর রমনা বটমূলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই তথ্য জানান।
পহেলা বৈশাখ উদযাপনের নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যাবের কমান্ডো টিম প্রস্তুত রয়েছে, পাশাপাশি র্যাবের প্রতিটি ব্যাটালিয়ন সারাদেশে বিশেষ গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করেছে।
তিনি বলেন, টিএসসি, শাহবাগ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা বটমূলসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পর্যাপ্ত চেকপোস্ট ও পর্যবেক্ষণ পোস্ট স্থাপন করে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পহেলা বৈশাখে কোনো নিরাপত্তা হুমকি নেই: আইজিপি
র্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে খুরশীদ বলেন, অনুষ্ঠানস্থল র্যাবের সিসিটিভি কভারেজের আওতায় থাকবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে পুলিশ ও বিভিন্ন ইউনিটের পাশাপাশি তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
তিনি বলেন, ‘যারা নববর্ষ উপভোগ করতে চান তারা নিরাপদে এটি উদযাপন করতে পারবেন।’
তিনি বলেন, পালিয়ে যাওয়া দুজনকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। শিগগিরই তাদের গ্রেপ্তার করা হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, সন্ত্রাসীদের দিক থেকে আপাতত কোনো হুমকি নেই।
তবে কেউ যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে সাহস না পায়, সে জন্য আমরা সজাগ ও প্রস্তুত থাকব।
আরও পড়ুন: উৎসাহের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে পহেলা বৈশাখ
কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ঢাবিতে পহেলা বৈশাখ উদযাপিত
পহেলা বৈশাখে কোনো নিরাপত্তা হুমকি নেই: আইজিপি
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, আগামী ১৪ এপ্রিল দেশে উদযাপিত হওয়া বাংলা নববর্ষ পহেলা বৈশাখে কোনো নাশকতার আশঙ্কা নেই। পহেলা বৈশাখে রাজধানীতে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হবে।
তিনি বলেন, সাধারণ পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে।
সোমবার বিকালে রাজধানীর বসুন্ধরা শপিংমলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইজিপি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশনের দেয়া দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ পুলিশ: আইজিপি
আইজিপি বলেন, কোনো হুমকি থাকুক বা না থাকুক, সর্বোচ্চ নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, রমজান মাসে ঢাকা মহানগরীর সব শপিংমলে ইতোমধ্যে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্তরে নিরাপত্তা বলয়ও তৈরি করা হয়েছে।
মানুষ যাতে সহজে শপিংমলে আসা-যাওয়া করতে পারে সেজন্য ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
তিনি বলেন, আমাদের ট্রাফিক পুলিশরা সার্বক্ষণিক রাস্তায় থাকে, যাতে রমজানে নগরবাসীকে রাস্তায় ইফতার করতে না হয় এবং তারা সময়মতো তাদের বাড়িতে পৌঁছাতে পারে।
তিনি বলেন, ঈদ ও পহেলা বৈশাখের আগে মানুষ যাতে কেনাকাটা করতে পারে সেজন্য ঢাকা শহর ছাড়াও সারাদেশের বিভিন্ন মার্কেটে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
এছাড়া আমরা সব মার্কেটে নিরাপত্তা জোরদার করেছি। পুলিশের সকল ইউনিট জনগণকে নিরাপত্তা দিতে একযোগে কাজ করছে।
ব্রিফিংকালে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন-উর রশিদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার বন্ধে পুলিশ কর্মকর্তাদের সক্রিয় হওয়ার আহ্বান আইজিপির
আইন মেনেই পুলিশ বিএনপির ৫৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে: আইজিপি
কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ঢাবিতে পহেলা বৈশাখ উদযাপিত
কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বৃহস্পতিবার বাংলা বছরের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হয়েছে।
তিন স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়েছিল, শান্তিপূর্ণ শোভাযাত্রা নিশ্চিত করতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, সোয়াট ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ নজরদারি করে।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র থেকে শুরু হওয়া শোভাযাত্রা একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়।
আরও পড়ুন: উৎসাহের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে পহেলা বৈশাখ
ভিসি বলেছেন, ‘একটি সম্প্রীতিপূর্ণ, অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক সমাজ গড়তে, এই জাতীয় সাংস্কৃতিক উৎসবগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, এটি একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উৎসব এই উৎসবটি একটি অসাম্প্রদায়িক মানবিক চেতনা দ্বারা উজ্জীবিত হয়। কারণ এতে সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষ জড়িত থাকে। ধর্ম ব্যক্তিগত ব্যাপার হতে পারে। কিন্তু উৎসব সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
তার পক্ষ থেকে খালিদ বলেন, ‘মহামারির কারণে আমরা দুই বছর ধরে আমাদের উৎসবগুলো উদযাপন করতে পারিনি। এই পহেলা বৈশাখ সকল জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য একটি উৎসব। আমি মনে করি আমরা আমাদের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে জঙ্গিবাদ ও অদৃশ্য শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করছি।’
আরও পড়ুন: পহেলা বৈশাখ: বাংলা নববর্ষের উৎপত্তি এবং ইতিহাস
মঙ্গল শোভাযাত্রায় অন্যদের মধ্যে উপ-উপাচার্য (প্রো-ভিসি, শিক্ষা) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল, ভি-সি (প্রশাসন) প্রফেসর মুহাম্মদ সামাদ ও প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানী অংশ নেন।
দু বছর পর ফের বাংলা বর্ষবরণে মেতেছে চট্টগ্রামবাসী
আবারও প্রাণের উচ্ছ্বাসে মেতেছে চট্টগ্রামবাসী। বরণ করছে বাংলা নববর্ষকে। করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর সারাদেশের মত চট্টগ্রামেও পহেলা বৈশাখের কোনো আয়োজন হয়নি। এবার সংক্রমণ কমে আসায় বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে বর্ণাঢ্য আয়োজন। নগরীর ডিসি হিল, সিআরবির শিরীষতলা, শিল্পকলা একাডেমি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ (চবি) বিভিন্ন স্থানে হয়েছে নববর্ষকে বরণ করে নেয়ার নানা আয়োজন।
তবে পবিত্র রমজানের কারণে উচ্ছাসে কিছু ভাটা পরিলক্ষিত হয়েছে। এবার বসেনি মেলা, নেই ভুভুজেলার উৎপাতও। প্রশাসনের বেঁধে দেয়া ১১ নির্দেশনা মেনে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে পহেলা বৈশাখের নানা অনুষ্ঠান। গ্রহণ করা হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিভিন্ন এলাকা সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে। পুলিশ, র্যাবের পাশাপাশি সাদা পোশাকে নিয়োজিত আছেন নিরাপত্তা কর্মীরা। নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে যানবাহন চলাচল। বর্ষবরণ উৎসবের সকল আয়োজনও করা হয়েছে সংক্ষিপ্ত। অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে দুপুরের মধ্যে।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) ভোর ৬টায় ডিসি হিলে নজরুল স্কয়ারে শুরু হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদের আয়োজনে এবার ৪৫তম বৈশাখ বরণের থিম নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘পহেলা বৈশাখ বাঙালির, সবার যোগে জয়যুক্ত হোক’।
বর্ষবরণ করে নিতে ডিসি হিলে দর্শকদের উপচেপড়া ভিড়। বর্ষবরণের ১ম অধিবেশনে ‘সংগীত ভবন, জয়ন্তী, ছন্দানন্দ সাংস্কৃতিক পরিষদ, গুরুকুল সংগীত একাডেমি, সুর-সাধনা সংগীতালয়, গীতধ্বনি, ইমন কল্যাণ সংগীত বিদ্যাপীঠ, সৃজামি সাংস্কৃতিক অংগন, নটরাজ নৃত্যাঙ্গন একাডেমি, স্কুল অব ওরিয়েন্টাল ডান্স, ওডিসি অ্যান্ড টেগোর ডান্স মুভমেন্ট সেন্টার, গুরুকুল, নৃত্যম একাডেমি, ঘুঙুর নৃত্যকলা কেন্দ্র, সঞ্চারী নৃত্যকলা একাডেমি, নৃত্য নিকেতন, দি স্কুল অব ফোক ডান্স, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, স্বরনন্দন প্রমিত বাংলা চর্চা কেন্দ্র ও বিভাস আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র’ সংগঠনের শিল্পীরা সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করছে।
আরও পড়ুন: উৎসাহের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে পহেলা বৈশাখ
এখানে সকাল থেকে চলে পহেলা বৈশাখ বরণ। নাচে-গানে জমজমাট পুরো এলাকা। অনেক দিন পর প্রাণভরে শ্বাস নিতে ছুটে এসেছেন সবাই। বাঙালি নারীর ঐতিহ্য শাড়ি, পুরুষরা পাঞ্জাবি পড়ে এসেছেন অনুষ্ঠানস্থলে। শিশুরা মুখে বা হাতে রং-তুলি দিয়ে আঁকিয়ে নিচ্ছে ‘শুভ নববর্ষ’। গত ৪২ বছর ধরে পহেলা বৈশাখের সবচেয়ে পুরনো আয়োজনটি হয়ে থাকে নগরীর ডিসি হিল এলাকায়। সংগীত ভবন, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, ওডিসি ড্যান্স মুভমেন্টসহ বিভিন্ন সংগঠন নাচ-গান ও আবৃত্তি পরিবেশন করেছে উৎসবে। এসব পরিবেশনা মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করেছেন দর্শনার্থীরা।
সিআরবির শিরীষতলায় সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছে। সেখানেও আসছেন নানান বয়সীরা। তবে এবার সেখানে বলীখেলা হচ্ছে না।
চবি চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে সকাল ১০টায় মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হবে। রমজান মাসের কারণে মঙ্গল শোভাযাত্রা যাবে কাজীর দেউড়ি পর্যন্ত। চারুকলা অনুষদে এবারের আয়োজন চিত্রশিল্পী রশিদ চৌধুরীকে উৎসর্গ করা হয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে চিত্রশিল্পী রশিদ চৌধুরীর স্লোগান ‘শিল্পের প্রয়োজন; বিবেকের জন্য, জীবনের জন্য’কে প্রতিপাদ্য করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক আহমেদ ইকবাল হায়দার বলেন, গত দুই বছর বন্ধ ছিল নববর্ষ বরণের উৎসব। তবে এবার রোজার কারণে সংক্ষিপ্ত পরিসরে উৎসব চলছে।
এছাড়া চবি চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে সকাল ১০টায় মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। রমজান মাসের কারণে মঙ্গল শোভাযাত্রাটি যায় কাজীর দেউড়ি পর্যন্ত।
চারুকলা অনুষদে এবারের আয়োজন চিত্রশিল্পী রশিদ চৌধুরীকে উৎসর্গ করা হয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে চিত্রশিল্পী রশিদ চৌধুরীর স্লোগান ‘শিল্পের প্রয়োজন; বিবেকের জন্য, জীবনের জন্য’কে প্রতিপাদ্য করা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনা সমুন্নত রাখুন: ওবায়দুল কাদের
নিজ নিজ ধর্ম পালনের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী, ধর্মের নামে কোনরূপ বাড়াবাড়ি কোন ধর্মই অনুমোদন করে না। নিজ নিজ ধর্ম পালনের মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে সমুন্নত রাখি।’
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সকালে ওবায়দুল কাদের নিয়মিত বিফ্রিংকালে এসব বলে।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগকে জনগণের প্রত্যাশা ও স্বপ্নের সাথে সঙ্গতি রেখে সকল কার্যক্রম এগিয়ে নেয়াই আজকের দিনের অঙ্গীকার।
তাঁর বাসভবনে ব্রিফিংকালে দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
পড়ুন: উৎসাহের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে পহেলা বৈশাখ
পাশাপাশি পহেলা বৈশাখে আওয়ামী লীগকে সুশৃঙ্খল, সুসংগঠিত, আরও আধুনিক ও স্মার্ট রাজনৈতিক দল হিসেবে এদেশের গণমানুষের স্বপ্ন পূরণে ইতিবাচক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকারও করেন ওবায়দুল কাদের।
এবার বৈশাখ এসেছে রমজান মাসে তাই দেশবাসী জনগণ রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করার পাশাপাশি আবহমান কাল থেকে বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ পহেলা বৈশাখ উদযাপন করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ওবায়দুল কাদের ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে, এমন প্রত্যাশা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে দলকে উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথরেখায়, ইতিবাচক ধারাকে আরও বলিষ্ঠ ও বেগবান করা হবে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রেখে দেশের রাজনীতিতে অসাম্প্রদায়িক চেতনার সুবাতাস ছড়িয়ে দিতে আওয়ামী লীগ বদ্ধ পরিকর।
গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে দেশের সকল গণতান্ত্রিক, দেশপ্রেমিক ও প্রগতিশীল শক্তিকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নানা বাধা অতিক্রম করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলছে, তাই আসুন ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের অব্যাহত অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করি।
পড়ুন: পহেলা বৈশাখ: বাংলা নববর্ষের উৎপত্তি এবং ইতিহাস
উৎসাহের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে পহেলা বৈশাখ
করোনা মহামারির কারণে দুই বছর বিরতির পর পূর্ণ উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) সারাদেশে বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ পালিত হচ্ছে।
ভোরে ছায়ানটের শিল্পীরা রমনার বটমূলে ঠাকুরের বিখ্যাত গান ‘এসো হে বৈশাখ, এসো, এসো’ দিয়ে দিনটিকে স্বাগত জানানোর মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা হয়।
বাংলা নববর্ষ ১৪২৯কে স্বাগত জানাতে রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন জনপ্রিয় ও ঐতিহাসিক স্পটগুলোতে নতুন আশা ও আকাঙ্খা নিয়ে সর্বস্তরের মানুষ ভিড় করছে।
তবে পবিত্র রমজান মাসে পহেলা বৈশাখ পালিত হওয়ায় উৎসবে কিছুটা ভাটা পড়েছে।
মহামারির কারণে গত দুই বছর সীমিত পরিসরে নববর্ষ উদযাপন করতে হয়েছে। এ বছর করোনা পরিস্থিতি শিথিল হওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে নববর্ষ উদযাপন করা হচ্ছে।
পড়ুন: বাঙালি সংস্কৃতি ধারণ করেই আমরা এগিয়ে যাব: মেয়র তাপস
বাঙালি সংস্কৃতি ধারণ করেই আমরা এগিয়ে যাব: মেয়র তাপস
বাঙালি সংস্কৃতিকে ধারণ করেই আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সকালে রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান অবলোকন শেষে গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময়কালে তাপস এই মন্তব্য করেন।
ডিএসসিসি মেয়র শেখ তাপস বলেন, ‘আজ আমরা রমনা বটমূলে সমবেত হয়েছি। রমনা বটমূলের এই বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আমাদের জাতীয় সংস্কৃতির অন্যতম ও অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ। আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্যের সাথে রমনা বটমূলের এই সাংস্কৃতিক মিশেল আমাদেরকে পরিতৃপ্ত করে, বাঙালিত্বে সামগ্রিকতা দান করে। তাই, আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হলে বাঙালি সংস্কৃতিকে ধারণ করেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’
পড়ুন: পহেলা বৈশাখ: বাংলা নববর্ষের উৎপত্তি এবং ইতিহাস
সিয়াম-পূজা জুটির বৈশাখ চমক
ঈদে মুক্তি পাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘শান’। এর আগে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে প্রকাশ হলো এর গান ‘চলো পাখি হই’। প্রসেনের কথায় গানটির সুর ও সঙ্গীতায়োজন করেছেন আহমেদ হুমায়ূন। এতে কণ্ঠ দিয়েছেন বলিউডের দুই জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আরমান মালিক ও পলক মুচ্ছল।
‘শান’-এর পরিচালক এম রাহিম জানান, গানটি মূলত 'শান' এর পক্ষ থেকে দর্শকদের জন্য নববর্ষের উপহার।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রিতে সাধারণত যেকোনো বড় কন্টেন্ট (টিজার, ট্রেলার, গান) সন্ধ্যার সময় প্রকাশ পায়। কিন্তু প্রথা ভেঙে এবার গানটি সকাল ১০টায় ইউটিউবে প্রকাশ করা হলো। কারণ গানটি যেহেতু নববর্ষের উপহার, তাই নববর্ষের দিনের শুরুর ভাগেই গানটি মুক্তি দেয়া।’
সিয়াম ও পূজা জুটির তৃতীয় সিনেমা ‘শান’। পুলিশি অ্যাকশ থ্রিলার গল্প হওয়ায় শুটিংয়ের শুরু থেকেই দর্শকদের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল সিনেমাটি। আজাদ খানের গল্পে ‘শান’-এর চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন যৌথভাবে আজাদ খান ও নাজিম উদ দৌলা। ফিল্মম্যান প্রডাকশনের ব্যানারে সিনেমাটি প্রযোজনা করেছেন ওয়াহিদুর রহমান এবং এম আতিকুর রহমান।
সিনেমায় অভিনয় করেছেন মিশা সওদাগর, ডন, নাদের চৌধুরী, তাসকিন রহমান, সৈয়দ হাসান ইমাম, চম্পা, অরুনা বিশ্বাসসহ অনেকেই।
পড়ুন: ১৮ বছরে পা দিলো শিশুদের প্রিয় সিসিমপুর
সিনেমার ব্যস্ততার মধ্যে বিজ্ঞাপনের শুটিংয়ে জাহারা মিতু
পহেলা বৈশাখ: বাংলা নববর্ষের উৎপত্তি এবং ইতিহাস
নতুন বছরে উষ্ণ এপ্রিলের অন্দরমহলে হালকা ঝড়ো হাওয়ায় আয়োজন চলছে চৈত্র সংক্রান্তির; রূপরেখায় বাংলা নববর্ষ ১৪২৯। ১৪ এপ্রিল তারিখটি বাঙালিদের বিশেষ করে বাংলাদেশের উৎসব প্রিয় বাঙালিদের জন্য একটি আবেগের বিষয়। প্রকৃতির দেখাদেখি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে নতুন করে বছর শুরুর উন্মাদনার আরেক নাম পহেলা বৈশাখ। শুধু ঝড় এলো বলে জীবনের বিপণীগুলো গুটিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌছা নয়, বাঙালির জীবন ও জীবিকার হিসেব-নিকেষ জড়িয়ে আছে গ্রীষ্মের এই প্রথম দিনটির নেপথ্যে। বেশ কয়েক শতাব্দি লেগেছে এই প্রথার ইতিহাস সমৃদ্ধ হতে। চলুন, নতুন করে আবারো হয়ে যাক বাংলা নববর্ষ কড়চা।
বাংলা নববর্ষের সূচনালগ্ন
বাংলা নববর্ষের গোড়াপত্তনের খোঁজে ফিরে যেতে হবে অনেক অনেক আগে অবাংলা অধ্যূষিত এলাকায়। খ্রিস্টপূর্ব ৫৭ অব্দে প্রাচীন ভারতের রাজা বিক্রমাদিত্যের নামানুসারে হিন্দু বিক্রমী পঞ্জিকা প্রণয়ন করা হয়েছিলো। এই পঞ্জি অনুসারে ভারতের পূর্বাঞ্চল, উত্তর পূর্বাঞ্চল ও নেপালের বিভিন্ন অংশে বসবাসরত গ্রামীণ বাঙালি সম্প্রদায়ের মধ্যে নিছক একটি ঋতু উৎসব হিসেবে প্রচলিত ছিলো পহেলা বৈশাখ।
তবে তার আমেজ বাংলা অব্দি পৌছতে চলে এসেছিলো ৫৯৩ খ্রিস্টাব্দ। ৭ম শতকে বাংলা বর্ষের প্রমাণ সময়ে বেশ পরিবর্তন এনে বাংলার বুকে বাংলা দিনপঞ্জির উদ্ভব ঘটান বাংলার প্রথম স্বাধীন নৃপতি গৌড়েশ্বর মহারাজাধিরাজ শশাঙ্ক মহাদেব।
পড়ুন: দুই বছর পর মঙ্গল শোভাযাত্রার জন্য প্রস্তুত ঢাবি
বাংলা পঞ্জিকা ও বাংলা নববর্ষ
ভারতবর্ষে মুঘল শাসনামলে আরবী হিজরী পঞ্জিকা অনুযায়ী কৃষি পণ্যের খাজনা আদায়ের কাজ করা হতো। কিন্তু এই বর্ষপঞ্জি কৃষিকাজের জন্য উপযোগী ছিল না, কারণ চন্দ্র বছরের ৩১ বছর সৌর বছরের ৩০ বছরের সমান। কৃষিকাজ সৌর বছরের হিসাবের ওপর নির্ভর করা সত্ত্বেও চন্দ্র বছরের হিসাবেই কৃষকদের রাজস্ব প্রদানে বাধ্য করা হতো। তাছাড়া চন্দ্র বছরের ৩৫৪ দিন আর সৌর বছর ৩৬৫ বা ৩৬৬ দিনের মধ্যে ১১ বা ১২ দিনের ব্যবধান। ফলে রাজস্ব আদায় সহ অন্যান্য কাজকর্মে প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হতো। এমতাবস্থায় ১৫৮৫ সালের ১০ কিংবা ১১ মার্চ-এ মুঘল সম্রাট আকবর এক ডিক্রি জারির মাধ্যমে প্রবর্তন করেন প্রাথমিক বাংলা সন তারিখ-এ-এলাহী। এই গণনা পদ্ধতির হিসেব কার্যকর হয়েছিলো সম্রাট আকবরের সিংহাসনের অধিষ্ঠিত হওয়া সময় অর্থাৎ ১৫৫৬ সালের ৫ নভেম্বর থেকে। তিনি একটি কর্মপোযোগী, বৈজ্ঞানিক, ও সার্বজনীন বর্ষপঞ্জি প্রণয়নের লক্ষ্যে সে সময়ের বিখ্যাত বিজ্ঞানী ও জ্যোতির্বিদ আমীর ফতুল্লাহ সিরাজিকে নতুন বর্ষপঞ্জি তৈরির নির্দেশ দেন। এভাবে রাজস্ব আদায়ের সংস্কারের পটভূমিতে জন্ম নেয় আধুনিক বাংলা সন। প্রথমে ফসলি সন নামে প্রকাশ পেলেও, পরে তা বহুলভাবে পরিচিতি পায় "বঙ্গাব্দ" বা বাংলা বর্ষ হিসেবে।
পহেলা বৈশাখ উদযাপনকে নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করতে র্যাব সতর্ক অবস্থানে আছে: ডিজি
পহেলা বৈশাখকে সামনে রেখে সারাদেশে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন এই এলিট ফোর্সের মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
র্যাব প্রধান বলেন,‘আমরা জঙ্গি হামলার হুমকি নির্মূল করার ব্যবস্থা নিয়েছি। যদিও তেমন কোনো আশঙ্কা নেই। বিগত বছরের মতো এবারও পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
বুধবার উৎসবের কেন্দ্রস্থল রমনা ও আশপাশের এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত র্যাব বাহিনী সেখানে থাকবে।
তিনি বলেন, উৎসবকে সামনে রেখে সারাদেশে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করেছে র্যাব।
তিনি বলেন, রমনা বটমূল ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্র সরোবর, শিল্পকলা একাডেমি, বিআইসিসি ভবন, নজরুল একাডেমি, উত্তরা মাঠসহ যেসব স্থানে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পহেলা বৈশাখ পালনে পুলিশের ১১ নির্দেশনা
টিএসসি, শাহবাগ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও রমনা বটমূলে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে এবং নিরাপত্তার কারণে পর্যবেক্ষণ পোস্টও বসানো হয়েছে।
এর পাশাপাশি র্যাবের বোমা ডিসপোজাল ইউনিট ও ডগ স্কোয়াড দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো পরিষ্কার করা হবে।
যেকোনো নাশকতা মোকাবিলা বা যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যাবের একটি কমান্ডো দল প্রস্তুত রাখা হবে বলে জানান তিনি।
পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে র্যাবের এয়ার উইং টিম হেলিকপ্টারে টহল দেবে।
সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে গুজব ছড়ানো ঠেকাতে র্যাব সাইবার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থাও নেবে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান দুপুর ২টার মধ্যে শেষ করতে হবে: ডিএমপি কমিশনার
পহেলা বৈশাখের মতো দুর্গাপূজাও সবার উৎসব: শিক্ষামন্ত্রী