করোনায় মৃত্যু
মানিকগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় ৩ মৃত্যু, শনাক্ত প্রায় ৫০ শতাংশ
গত ২৪ ঘণ্টায় মানিকগঞ্জে ৪১০টি নমুনা পরীক্ষায় ২০৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৪৯ দশমিক ৫১ শতাংশ। একই সময়ে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে একজন ও উপসর্গ নিয়ে দুজন মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় ও জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ বলেন, নতুন আক্রান্ত ২০৩ জনের মধ্যে সিংগাইরে ৬৮ জন, মানিকগঞ্জ সদরে ৪৬ জন, সাটুরিয়ায় ৩৬ জন, শিবালয়ে ২৭ জন, হরিরামপুরে ১২ জন, ঘিওরে সাত জন এবং দৌলতপুর উপজেলার সাত জন আছেন।
পড়ুন: খুলনা বিভাগে করোনায় আরও ৪১ মৃত্যু
তিনি জানান, জেলায় এ পর্যন্ত ৩০ হাজার ৫৮১টি নমুনা পরীক্ষা করে চার হাজার ৭২৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ৯৯২ জন। জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ৭৫ জন।
মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কাজী এ কে এম রাসেল বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তিন জন। তাদের মধ্যে করোনায় এক জন এবং উপসর্গ নিয়ে দুজন মারা গেছেন। আজ দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২৩০ জন। এর মধ্যে পজিটিভ ৯০ জন এবং আইসোলেশনে আছেন ১৪০ জন।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মানিকগঞ্জে প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত ছয় দিনে জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮৭৯ জন। ২৩ জুলাই আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ জন, ২৪ জুলাই আক্রান্ত হয়েছেন ১০৮ জন, ২৫ জুলাই আক্রান্ত হয়েছেন ১৬৯ জন, ২৬ জুলাই আক্রান্ত হয়েছেন ১৭০ জন এবং ২৭ জুলাই আক্রান্ত হয়েছেন ১৯২ জন এবং গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হলেন ২০৩ জন।
পড়ুন: কঠোর লকডাউন: ঢাকার রাস্তায় মানুষ ও যানবাহন বেড়েছে
করোনাতেও কৃষি মন্ত্রণালয়ের এডিপি বাস্তবায়নের হার ৯৮ শতাংশ
এদিকে কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যেও মানিকগঞ্জে মানুষের চলাচল বেড়েছে । নানান অযুহাতে ঘর থেকে বের হচ্ছে মানুষ। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের চেকপোস্ট রয়েছে। কঠোর বিধিনিষেধ মানাতে জেলা প্রশাসন, বিজিবি ও পুলিশের সমন্বয়ে ১৪টি ভ্রাম্যমান আদালত কাজ করছে জেলার বিভিন্ন স্থানে। এরপরও মানুষকে মানানো যাচ্ছে না। নানান অযুহাত দেখিয়ে ঘর থেকে বের হচ্ছে মানুষ।
পাটুরিয়া ফেরিঘাট দিয়ে অনায়াসে যাত্রীরা ঢাকায় যাতায়াত করছে। ফেরিতে গাদাগাদি করে এসে পাটুরিয়াঘাটে নামছে যাত্রী ও বহু মোটরসাইকেল। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলা থেকে আসা এসব মানুষ বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আবদুল লতিফ বলেন, কঠোর বিধিনিষেধ মান্য করাতে জেলায় পুলিশ, র্যা ব ও বিজিবির সমন্বয়ে ১৪টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। ফেরিঘাট এলাকায়ও শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছে। বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিদিন জরিমানাও করা হচ্ছে।
করোনায় সিলেটে ১২ মৃত্যু, শনাক্ত ৬৬০
সিলেট বিভাগে করোনায় আরও ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট জেলায় আট জন, ওসমানী হাসপাতালে দুই এবং সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে একজন করে রয়েছেন বলে জানিয়েছে সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগ।
বৃহস্পতিবার সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় এ বিভাগে আরও ৬৬০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। একই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৬ জন।
নতুন শনাক্তদের নিয়ে বিভাগে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৮ হাজার ৩১৪ জনে। এর মধ্যে সিলেটের ২১ হাজার ১১২ জন, সুনামগঞ্জে ৪ হাজার ৪৫২, হবিগঞ্জের ৪ হাজার ৪০০, মৌলভীবাজারের ৫ হাজার ১৯৮ ও সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩ হাজার ১৫২ জন।
আরও পড়ুন: রামেকে একদিনে করোনায় ১৭ মৃত্যু
এছাড়া নতুন শনাক্তদের মধ্যে ৩১২ জনই সিলেট জেলাবাসী, সুনামগঞ্জের ১৩০, হবিগঞ্জের ৫৩ ও মৌলভীবাজারের ৯১ জন রয়েছেন।এদিকে মারা যাওয়া নতুন ১২ জন নিয়ে বিভাগে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৬৬৭ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৬ জন। সব মিলিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৩৮৯ জন। একইদিনে সিলেট বিভাগে নতুন করে ৩৩৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এনিয়ে বিভাগে করোনা থেকে সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা ২৯ হাজার ৯০৭ জন।
আরও পড়ুন: করোনা পরীক্ষা করতে এসে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন যুবক
অপরদিকে, সিলেটের চার জেলায় র্যা পিড অ্যান্টিজেন টেস্টের মাধ্যমে ১৭৪ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। তাদের মধ্যে সিলেটে ৩৯ জন, সুনামগঞ্জে ৮৮, হবিগঞ্জে ৪৪ ও মৌলভীবাজার জেলায় ৩৩ জন। এছাড়া গত চব্বিশ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগে ১৬৫ জনকে নতুন করে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।
রামেকে একদিনে করোনায় ১৭ মৃত্যু
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে করোনা ইউনিটে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে করোনায় পাঁচ জন ও উপসর্গ নিয়ে আরও ১০ জন মারা গেছেন। এছাড়া করোনামুক্ত হয়েও পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলতায় মারা গেছে আরও দুইজন।
বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, মৃতদের মধ্যে রাজশাহীর চার জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও বগুড়ার এক জন করে, নাটোরের তিন, পাবনার পাঁচ এবং কুষ্টিয়ার দুই জন রয়েছেন। এদের মধ্যে নয়জন পুরুষ ও আট জন নারী।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে করোনা ও উপসর্গে ১৭ মৃত্যু
এ নিয়ে চলতি জুলাই মাসে এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৫৪০ জনে। এর মধ্যে করোনাভাইরাসে মারা গেছেন ১৭২ জন। আর শ্বাসকষ্টসহ করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়ার পর নমুনা পরীক্ষার আগেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৩৩১ জন। বাকি ৩৭ জন মারা যান করোনামুক্ত হয়ে পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলতায়।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ইউনিটে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে ৫২ জন। এক দিনে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৩২ জন। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত করোনা ইউনিটের ৫১৩ বেডের বিপরীতে ভর্তি আছে ৪১৫ জন। এদের মধ্যে আইসিইউতে রয়েছে ১৯ জন।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে করোনা উপসর্গে ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যু
হাসপাতাল পরিচালক জানান, বুধবার দু’টি ল্যাবে রাজশাহী জেলার ৪২৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১২৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ৯০ শতাংশ।
সিলেট বিভাগে একদিনে মৃত্যু ও শনাক্তে নতুন রেকর্ড
সিলেট বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে রেকর্ড ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিভাগে করোনায় একদিনে এতো মৃত্যু এর আগে দেখা যায়নি। সর্বশেষ গত সোমবার একদিনে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এনিয়ে বিভাগে মোট মৃত্যু ৬৫৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
বুধবার সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের বুলেটিনে এ সব তথ্য জানানো হয়েছে।
এছাড়া একই সময়ে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭৩৬ জনের শরীরে। শনাক্তের হার ৩৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের নতুন রেকর্ড। এর আগে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭০৮ জন শনাক্ত হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে করোনা ও উপসর্গে ১৭ মৃত্যু
নতুন শনাক্তদের মধ্যে সিলেট জেলার ৩৪১ জন, সুনামগঞ্জের ১১৬, মৌলভীবাজারের ২২৫ ও হবিগঞ্জের ৫৪ জন রয়েছেন।
সিলেট বিভাগে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৩৭ হাজার ৬৫৪ জন। এর মধ্যে সিলেট জেলায় ২৩ হাজার ৮৭৮ জন, সুনামগঞ্জে ৪ হাজার ৩২২, মৌলভীবাজারে ৫ হাজার ১০৭ ও হবিগঞ্জে ৪ হাজার ৩৪৭ জন শনাক্ত হয়েছেন।
সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হিমাংশু লাল রায় জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ৩৫৪ জন করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠেছেন। এ নিয়ে মোট সুস্থতার সংখ্যা ২৯ হাজার ৫৭৪ জন।
তিনি জানান, বর্তমানে সিলেটে ৩৮৬ জন করোনা রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় একদিনে রেকর্ড ৮৫৩ শনাক্ত, মৃত্যু ৮
এদিকে, সব মিলিয়ে সিলেট বিভাগে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৫৫ জন। তার মধ্যে সিলেট জেলায় সর্বোচ্চ ৫২২ জন মারা গেছেন। সুনামগঞ্জে ৪৮ জন, মৌলভীবাজারে ৫৫ ও হবিগঞ্জে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
খুলনা বিভাগে করোনায় মৃত্যু ৩১
খুলনা বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে কমেছে মৃত্যু ও শনাক্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে শনাক্ত হয়েছে ৮৬৬ জনের। এনিয়ে বিভাগে করোনা শনাক্তে সংখ্যা ৯০ হাজার ছাড়িয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) বিভাগে ৪৬ জনের মৃত্যু এবং ১ হাজার ৪৩৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। বুধবার (২৮ জুলাই) বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পড়ুন: বিশ্বব্যাপী করোনা আক্রান্ত সাড়ে ১৯ কোটি ছাড়াল
স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে খুলনায় জেলায়। বাকিদের মধ্যে যশোরে ৬, কুষ্টিয়ায় ৫, ঝিনাইদহে ৪, মাগুরায় ৩, চুয়াডাঙ্গায় ২, বাগেরহাট ও মেহেরপুরে একজন করে মারা গেছেন।
খুলনা বিভাগের মধ্যে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় চুয়াডাঙ্গায় গত বছরের ১৯ মার্চ। করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে আজ সকাল (২৮ জুলাই) পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৯০ হাজার ৫৪৯ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২ হাজার ২৯৪ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬৫ হাজার ৪৬১ জন।
পড়ুন: চট্টগ্রামে করোনায় আরও ১৭ জনের প্রাণহানি
রামেকে করোনা ও উপসর্গে ১৮ জনের মৃত্যু
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৪ ঘন্টায় সর্বোচ্চ শনাক্ত ৩০২, মৃত্যু ৩
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় সর্বোচ্চ ৩০২ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং তিন জনের মৃত্যু হয়েছে।
মৃতদের মধ্যে সদর হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজন পুরুষ (৬০) ও একজন নারী (৬৫) রয়েছেন। এছাড়া নবীনগর উপজেলায় নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক নারীর (৬৫) মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে করোনা ও উপসর্গে ১৭ মৃত্যু
সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ একরাম উল্লাহ জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় নতুন ৯৫ জনসহ জেলায় সর্বোচ্চ নতুন আরও ৩০২ জন শনাক্ত হয়েছে। জেলায় সংক্রমণের হার ৩৩ শতাংশ ছাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত জেলায় অ্যান্টিজেন ও পিসিআর ল্যাবের রিপোর্টে সর্বশেষ ৬ হাজার ৯১১ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজশাহী হাসপাতালে করোনা ইউনিটে ১৭ জনের মৃত্যু
এ পর্যন্ত জেলায় ৪ হাজার ২৭০ জন সুস্থ হয়েছেন। জেলায় ৯০ জন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
চট্টগ্রামে করোনায় আরও ১৭ জনের প্রাণহানি
চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ৭ জন নগরী বাকি ১০ জন উপজেলার বাসিন্দা। গতকাল মৃতের সংখ্যা ছিল ১৮ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে ৯৩২ জনে।
বুধবার (২৮ জুলাই) জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি ৯টি ল্যাব ও বিভিন্ন এন্টিজেন বুথে সর্বমোট ২ হাজার ৭৯২ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে আরও ৯১৫ জন। তার মধ্যে ৬৪১ জন নগরীর ও ২৭৪ জন বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা। এনিয়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭৮ হাজার ৪৩৬ জনে এসে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ৫৮ হাজার ৯৬৪ জন নগরের বাসিন্দা ও ১৯ হাজার ৪৭২ জন বিভিন্ন উপজেলার।
পড়ুন: বিশ্বব্যাপী করোনা আক্রান্ত সাড়ে ১৯ কোটি ছাড়াল
ল্যাবভিত্তিক প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে (বিআইটিআইডি) ৮৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় চট্টগ্রাম নগরের ১২৫ ও উপজেলার ৫১ জন জীবাণুবাহক পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২০১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে নগরের ৭৪ ও উপজেলার ১০ জনের শরীরে জীবাণুর উপস্থিতি চিহ্নিত হয়। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষায় চট্টগ্রাম নগরের ৭৭ ও উপজেলার ১০ জন জীবাণুবাহক পাওয়া গেছে।
নমুনা সংগ্রহের পরপরই ফলাফল প্রদানকারী এন্টিজেন টেস্টে ৭৯৭ জনের মধ্যে ২৭২ জন জীবাণুবাহক বলে জানানো হয়। এর মধ্যে চট্টগ্রাম নগরের ১০১ জন ও উপজেলার ১৭১ জন। চট্টগ্রাম নগরীতে করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহকারী কয়েকটি কেন্দ্রে এন্টিজেন টেস্ট করা হয়ে থাকে।
পড়ুন: এক সপ্তাহে ৯০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ককে টিকা দিয়েছে ভুটান
রোহিঙ্গাদের টিকা দেবে সরকার: পররাষ্ট্র সচিব
এদিকে বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরন ল্যাবে ২৫৭টি নমুনায় চট্টগ্রাম নগরের ৮৯ ও উপজেলার ১১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। ইমপেরিয়াল হাসপাতালের ল্যাবে ২৪৭ নমুনা পরীক্ষা নগরের ৯৩ জন ও উপজেলার ৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়। আগ্রাবাদের মা ও শিশু হাসপাতালে ৫৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় নগরে ২৪ জন ও উপজেলার ৫ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন। আরটিআরএল ল্যাবে ৪৮ নমুনা পরীক্ষা নগরের ২৭ জন আর উপজেলার ৩ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে। মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ৬০ নমুনা পরীক্ষায় নগরে ৩১ জন ও উপজেলার এক জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন। এছাড়া কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে কেবল ৫৮ টি এবং এর মধ্যে উপজেলার ৮টি করোনা পজিটিভ।
কুমিল্লায় একদিনে রেকর্ড ৮৫৩ শনাক্ত, মৃত্যু ৮
গত ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লায় করোনাকালে একদিনে সর্বোচ্চ ৮৫৩ জন শনাক্ত হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার আগের ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৮৩৬ জন শনাক্ত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় করোনা ও উপসর্গে ১২ মৃত্যু
কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মোবারক হোসেন জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও আটজন মারা গেছেন। নতুন মৃতদের নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৬৮০ জনে পৌঁছছে। তাদের মধ্যে চার জন পুরুষ ও চার জন নারী। তাদের বয়স ৩৫ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে।
আরও পড়ুন: রাজশাহী হাসপাতালে করোনা ইউনিটে ১৭ জনের মৃত্যু
নতুন শনাক্তদের নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত শনাক্তের সংখ্যা ২৬ হাজার ৫১৮ জন। শনাক্তের হার শতকরা ৪১ দশমিক ৩ শতাংশ। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৫ হাজার ১৪৪ জন।
বরিশাল বিভাগে করোনা আক্রান্ত ৩০ হাজার ছাড়াল, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ২০
বরিশাল বিভাগে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৮২২ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এনিয়ে বিভাগে মোট আক্রান্ত ৩০ হাজার ৫৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
এছাড়া, একই সময়ে বিভাগে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে ২০ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৯ জন করোনা আক্রান্ত ছিলেন। বাকিরা উপসর্গে মারা গেছেন। সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টার মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে বরিশাল বিভাগে করোনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৪৩৭ জনে দাঁড়িয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় মৃতদের মধ্যে ১৬ জন বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
পড়ুন: বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ৪১ লাখ ৬৭ হাজার ছাড়িয়েছে
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বাসুদেব কুমার দাস মঙ্গলবার সকালে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, নতুন আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল জেলায় ২৯৩ জন, পটুয়াখালীতে ১১৭, ভোলায় ১২০, পিরোজপুরে ১৩৫, বরগুনায় ৮৮ এবং ঝালকাঠিতে ৬৯ জন রয়েছে।
পড়ুন: করোনা: যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের চিকিৎসা সামগ্রী উপহার
রামেকের করোনা ইউনিটে আরও ২১ মৃত্যু
এদিকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩০০ বেড বিশিষ্ট করোনা ইউনিটে মঙ্গলবার ২৫৭ জন ভর্তি রয়েছেন, যার মধ্যে ১১৭ জনের করোনা পজিটিভ। গত ২৪ ঘণ্টায় এই ইউনিটে ৪৬ নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন।
রামেকের করোনা ইউনিটে আরও ২১ মৃত্যু
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত আরও ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন আরও ১১ জন। সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টার মধ্যে করোনা ইউনিটে এই ২১ জনের মৃত্যু হয়।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, নতুন মারা যাওয়াদের মধ্যে রাজশাহীর সাতজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন, নাটোরের তিনজন, নওগাঁর চারজন, পাবনার পাঁচজন এবং ঝিনাইদহের একজন। এদের মধ্যে ১১ জন পুরুষ এবং ১০ জন নারী।
পড়ুন: করোনা: যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের চিকিৎসা সামগ্রী উপহার
এনিয়ে চলতি মাসে (১ জুলাই থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত) এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৪৭৪ জনে। এর আগে জুন মাসে মৃতের সংখ্যা ছিল ৪০৫ জন।
শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ইউনিটে নতুন রোগি ভর্তি হয়েছে ৫৫ জন। একই সময় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৪০ জন। মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত করোনা ইউনিটের ৫১৩ বেডের বিপরীতে ভর্তি আছে ৩৯৯ জন। এদের মধ্যে আইসিইউতে রয়েছে ২০ জন।
করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন ৩৯৯ জনের মধ্যে ১৭৮ জনের করোনা পজিটিভ রয়েছে। উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছে ১৭৭ জন, যাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও করোনামুক্ত হয়েও পরবর্তী স্বাস্থ্য জটিলাতায় চিকিৎসাধীন ৪৪ জন।
পড়ুন: কুমিল্লায় একদিনে সর্বোচ্চ ৮৩৬ শনাক্ত, মৃত্যু ১০
রামেকে করোনা কেড়ে নিলো আরও ২২ প্রাণ
হাসপাতাল পরিচালক জানান, সোমবার দুটি ল্যাবে রাজশাহী জেলার ৪১৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে ৯৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৫২ শতাংশ। এর আগের দিন রবিবার শনাক্তের হার ছিল ৩০ দশমিক ৭৮ শতাংশ এবং গত শনিবার ছিল ৪৫ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ।