গৃহকর্মী
চট্টগ্রামে আনসার ও নির্বাচনী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গৃহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে গৃহকর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগে দুই সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী ওই নারী বাদী হয়ে এ মামলা করেন।মামলায় উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম এবং সাবেক উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. হুমায়ুন কবিরসহ চারজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে।ভুক্তভোগী ওই নারী জানান, উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা মো. সাইদুল ইসলাম এবং সদ্য সাবেক উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. হুমায়ুন কবির উপজেলা কমপ্লেক্সের অদূরে একটি বাসায় থাকতেন। সেখানে তিনিসহ দুজন নারী গৃহকর্মীর কাজ করতেন। গত ২৭ মার্চ বেলা ৩টা নাগাদ অপর গৃহকর্মীর মাধ্যমে তাকে মোবাইলে ফোনে ওই বাসায় ডেকে পাঠানো হয়। তিনি সেখানে গেলে উপজেলা আনসার-ভিডিপি অফিসার সাইদুল ইসলাম ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির তাকে সংঘবদ্ধধর্ষণ করে। এরপর ভুক্তভোগী ওই নারীকে ঘটনা প্রকাশ করলে প্রাণনাশের হুমকি ও অর্থের লোভ দেখানো হয়।
ভুক্তভোগী নারী আরও বলেন, এ ঘটনার পর থেকে তাকে ঘর থেকে বের হতে দেয়া হয়না। আনসার সদস্যদের মাধ্যমে তাকে পাহারা দেয়া হয়। তবে আনসার সদস্য মোহাম্মদ সেলিমের মাধ্যমে তার চিকিৎসা বাবদ তিন দফায় ২২ হাজার টাকা পাঠায় ওই দুই কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে সস্ত্রীক সাবেক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে দুদকের আরও মামলা
পরে কৌশলে তিনি বাসা থেকে বের হয়ে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার গিয়ে নিজের চিকিৎসা করান এবং উপজেলা পরিষদে গিয়ে চেয়ারম্যান হোসাইন মো. আবু তৈয়ব ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেবুন্নাহারকে বিষয়টি অবহিত করেন। তারা ভুক্তভোগীকে ইউএনও মো. সাব্বির রাহমান সানি’র কাছে নিয়ে যান।
এরপর তাদের পরামর্শে বুধবার বিকালে তিনি ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে গিয়ে মৌখিক অভিযোগ করে। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার পুলিশ ওই নারীর অভিযোগটি মামলা হিসেবে নেয়।ফটিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদ ইবনে আনোয়ার জানান, ভুক্তভোগী নারীর লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে এবং ঊর্ধ্বতন অফিসারদের পরামর্শে দুই সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।এদিকে, অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আনসার-ভিডিপি কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম ধর্ষণের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।
অন্যদিকে সাবেক উপজেলা নির্বাচন অফিসার এবং বর্তমানে রামগড় উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির মুঠোফোনে এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: টেকনাফে শিশু আলো হত্যা মামলায় ৬ জনের ফাঁসি
দুদকের মামলায় জামিন পেলেন সম্রাট, মুক্তিতে বাধা নেই
সৌদি আরবে ২০২১ সালে গৃহকর্মী নিয়োগ চুক্তি বেড়েছে
সৌদি আরবে ২০২১ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে গৃহকর্মী নিয়োগে করা চুক্তির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর সময়ে চুক্তি বৃদ্ধির হার ১৫ শতাংশের বেশি ছিল। দেশটির মানব সম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের ‘মুসানেড’ প্লাটফর্ম এসব তথ্য জানিয়েছে।
সৌদি আরব ২০২২ সালে গৃহকর্মী নিয়োগে বেশ কয়েকটি নতুন দেশ যুক্ত করার জন্য ‘মুসানেড’ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন গবেষণা ও মানদণ্ডের ভিত্তিতে নতুন দেশ থেকে পাঠানো গৃহকর্মীদের নিয়োগ দেবে সৌদি সরকার।
আরও পড়ুন: জর্ডানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আসাদুজ্জামান খাঁনের সৌজন্য সাক্ষাত
সৌদি সরকার মূলত আরব পরিবারে গৃহকর্মীদের মানিয়ে নেয়ার সক্ষমতার বিষয়টিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এছাড়া রয়েছে অপরাধের মাত্রা, মহামারি, ভাষা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, প্রত্যাশিত নিয়োগের ব্যয়, বেতন ও অন্যান্য মানদণ্ড।
‘মুসানেড’ এর তথ্য মতে, গেল বছরের অক্টোবরে গৃহকর্মী নিয়োগে ৬৫ হাজার চুক্তি হয়েছে। আর নভেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৬৯ হাজারে এবং ডিসেম্বরে তা আরও বেড়ে ৭৬ হাজার হয়।
প্লাটফর্মটির তথ্য মতে, গেল বছরের ডিসেম্বরে গৃহকর্মী পাঠাতে ১২ হাজারের বেশি চুক্তি করে তালিকার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। এরপরে পাকিস্তান ১১ হাজারের বেশি চুক্তি করে দ্বিতীয় স্থানে এবং প্রায় ১১ হাজার চুক্তি করে ভারত তৃতীয় স্থানে রয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি কর্মীদের প্রশংসা লিবিয়ার চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্সের
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন: জলবায়ু অর্থায়ন ও প্রযুক্তি সহায়তার নিশ্চয়তা চায় ঢাকা
খুলনায় গৃহকর্মী হত্যার মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
খুলনায় গৃহকর্মীর গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। রায়ে আসামি শেখ খুরশিদুল আলম ওরফে রুবেলকে যাবজ্জীবন সশ্রম করাদণ্ড ও ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত -৩ এর বিচারক মাহমুদা খাতুন এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি পলাতক ছিলেন। তবে মামলার অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র পক্ষ অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুরে হত্যা মামলায় বাবা-ছেলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
আদালতের সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে ফুলতলা উপজেলার দামোদার গ্রামের দক্ষিণপাড়ার কাশেম ঢালীর মেয়ে হালিমা খাতুন সোনাডাঙ্গার আরামবাগ আব্দুল কুদ্দুসের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ নেয়। তখন থেকে হালিমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে ওই বাড়ির ছেলে রুবেল। এক সময় হালিমা অন্তঃসত্ত্বা হলে তার গর্ভপাত করোনো হয়।
ঘটনায় রুবেলকে বিয়ের জন্য চাপ দেয় হালিমা। ক্ষিপ্ত হয়ে ঘটনার দিন ২০১০ সালের ১৬ জুন রুবেল হালিমাকে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। আশপাশের মানুষ তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। মৃত্যুর আগে পুলিশের কাছে জবানবন্দি দেয় সে। এ ব্যাপারে সোনাডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) টিপু লাল দাস বাদী হয়ে মামলা করেন।
তদন্ত শেষে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা একই বছরের ৪ অক্টোবর চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আরও পড়ুন: নড়াইলে হত্যা মামলায় একজনের ফাঁসি ও অপরজনের যাবজ্জীবন
কালীগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের বাড়ি থেকে গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে স্কটল্যান্ডপ্রবাসী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের বাড়ি থেকে এক গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।রবিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার কাকিনা বাজার এলাকায় প্রবাসী শিক্ষক ড. মোজাম্মেল হকের বাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
মৃত গৃহকর্মী শাহিনুর বেগম টাঙ্গাইলের মধুপুরের রাধাপাল গ্রামের বাসিন্দা।
জানা যায়, বাড়ির মালিক স্কটল্যান্ডের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে কর্মরত। তিনি কাকিনা উত্তরবাংলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংগঠন চ্যারিটি ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান। বর্তমানে কাকিনার বাড়িতেই অবকাশ যাপন করছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ২০ বছর ধরে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগো শহরের অধিবাসী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অর্থনীতিবিদ ড. মোজাম্মেল হকের কাকিনাস্থ বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করছেন ওই নারী। তিনি প্রতিদিনের মতো গত শনিবার রাতের কাজ শেষ করে নিজের রুমে ঘুমিয়ে পড়েন। রবিবার সকালে তার কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে অন্য গৃহকর্মীরা জানালা ভেঙে তার লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ দুপুরে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় কালীগঞ্জ থানায় অপমৃত্যু মামলা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রসুল বলেন, মৃত গৃহকর্মীর শরীরে তেমন কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। তাই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
রাজধানীতে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে নারী গ্রেপ্তার
রাজধানীর কলাবাগান এলাকায় গৃহকর্মীর ওপর নির্যাতনের অভিযোগে সামিয়া ইউসুফ সুমি নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব)।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহকর্মীর নাম মোছা. ফারজানা, তিনি বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
শুক্রবার র্যাব-২ এর অধিনায়ক লে.কর্নেল আবু নাঈম মো. তালাত স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করে
জানানো হয়,গ্রেপ্তার সামিয়া ইউসুফ সুমি কলাবাগান এলাকার শেখ ইউসুফ আলীর মেয়ে এবং তারিকুল ইসলামের স্ত্রী।
আরও পড়ুন: পাওনা টাকার জন্য নির্যাতনে আহত যুবকের মৃত্যু, নবনির্বাচিত ইউপি সদস্যসহ গ্রেপ্তার ২
এতে আরও জানানো হয়, গত ১৭ জানুয়ারি র্যাব-২ জানতে পারে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের একটি বহুতল ভবনে একজন গৃহকর্মীকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। নির্যাতনে গুরুতর অসুস্থ ওই গৃহকর্মীকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। র্যাব-২ এর কর্মকর্তাগণ ভুক্তভোগীকে পরিদর্শন করতে গেলে, সেখানে উপস্থিত ভুক্তভোগী ফারজানার বাবা মো. বেলাল হোসেন তার মেয়ের ওপর নির্যাতনের বর্ণনা দেন এবং জানান তিনি কলাবাগান থানায় একটি মামলা করেছেন। এই তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-২ এর দল অভিযান চালিয়ে আসামি সামিয়া ইউসুফ সুমিকে গ্রেপ্তার করে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, পরবর্তীতে জানা গেছে ফারজানা গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করার সময় সামান্যতম ভুলের কারণে সুমি প্রায়ই তাকে মারপিট ও জখম করতেন। গত ১৭ তারিখ সুমির মারপিটে ফারজানা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এঘটনার প্রেক্ষিতে ফারজানার বাবা সুমিকে আসামি করে কলাবাগান থানায় একটি মামলা করেন।
আরও পড়ুন: শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতন, গৃহকর্তী আটক
সিরাজগঞ্জে চুল কেটে গৃহবধূ নির্যাতন: স্বামীসহ গ্রেপ্তার ৩
শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতন, গৃহকর্তী আটক
মাগুরার শিশু গৃহকর্মী আকলিমাকে নির্যাতনের অভিযোগে বৃহস্পতিবার লিপি খাতুন নামে এক গৃহকর্তীকে আটক করেছে পুলিশ।
শিশু আকলিমা মাগুরা সদর উপজেলার বাহারবাগ গ্রামের কুবাদ শেখের মেয়ে।
মাগুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুরুল আলম জানান, আকলিমার এক প্রতিবেশি ঢাকায় বাসায় কাজ করতে পাঠায়। ওই বাসায় প্রায় ১৮ মাস তাকে নির্মম নির্যাতন করা হয়।
মাগুরা সদর হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তার ওপর নির্মম নির্যাতনের বর্ণনা দিচ্ছিলেন নির্যাতনের শিকার শিশু আকলিমা। সারা গায়ে আঘাতের ক্ষত আর কঙ্কালসার শরীর নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয় সে।
আরও পড়ুন: গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে সিআইডি কর্মকর্তার স্ত্রী গ্রেপ্তার
আকলিমার দাদি মনোয়ারা বেগম জানান, প্রতিবেশি বাবু বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি তার শিশু সন্তানকে দেখাশোনার কাজের কথা বলে আকলিমাকে ঢাকার মিরপুর ২ এর বাসায় নিয়ে যান। বিনিময়ে প্রতি মাসে এক হাজার টাকা ও তার ভরণপোষণ দেয়ার কথা বলে তারা। দীর্ঘ ১৮ মাস ঢাকাতে থাকা অবস্থায় মাঝে মাঝে ফোনে কথা হলেও আকলিমা ভালো আছে বলে জানানো হয়। এ অবস্থায় গত বুধবার তাকে মাগুরাতে নিয়ে আসে গৃহকর্তা বাবু শেখ। এরপর তার শরীরের কঙ্কালসার অবস্থা দেখেন তারা।
হাসপাতালের বেডে নির্যাতনের শিকার শিশু আকলিমা জানায়, তাকে কাজে নেয়ার পর থেকে গৃহকর্তার স্ত্রী লিপি খাতুন সামান্য কারণে হাতের কাছে যখন যা পেয়েছে তায় দিয়েই তাকে মারধর করত। এমনকি নজর দেয়ার অপবাদে তাকে শিশুর বমি করা ভাতও রুটির সঙ্গে জোর করে খাইয়ে দেয় তারা। বিভিন্ন সময়ে শিশুটির প্রসাবও জোর করে খাওয়ানোসহ মাঝে মাঝে তাকে বাথরুমে আটকে রাখা হতো বলে জানায় সে।
মাগুরা২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রফিকুল আহসান জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে শিশুটি ভর্তি হয়। এ সময় তার শরীরে দীর্ঘ ধরে নির্যাতনের একাধিক চিহ্ন পাওয়া গেছে। শিশুটি অভুক্ত থাকায় পুষ্টিহীনতায় ভুগছে বলেও জানালেন তিনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত লিপির স্বামী বাবু বিশ্বাসের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে নির্যাতনের কথা অস্বীকার করে।
শিশুটির দাদার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে হাসপাতালে শিশুটির খোঁজখবর নেন মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম।
আরও পড়ুন: গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে সিরাজগঞ্জে কলেজ শিক্ষিকা গ্রেপ্তার
পরে রাতেই অভিযুক্ত মাসুদুর রহমান বাবু শেখের মাগুরা কলেজ পাড়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বাবু বিশ্বাসের স্ত্রী লিপি বেগমকে আটক করে পুলিশ। বাবু বিশ্বাস মৃত মশিউর রহমান বকুলের ছেলে।
বাবু শেখ মিরপুর-২ এর একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন। বাবুকে আটকের চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানান ওসি।
সাভারে ভবনের ছাদ থেকে পড়ে গৃহকর্মীর মৃত্যু
সাভারে একটি নয়তলা ভবনের ছাদ থেকে পড়ে এক গৃহকর্মীর মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) রাত ৯টার দিকে সাভারের শিমুলতলা আরআরপি গার্ডেন নামের একটি ভবনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রাজিয়া সুলতানা (১৪) সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানার চন্ডিপুর গ্রামের রাজু সরকারের মেয়ে। সে আরআরপি গার্ডেন ভবনের ১৫/১ ফ্লাটে আজমল হোসেনের বাসায় প্রায় ৬ বছর ধরে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে আসছিল বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুনঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জে মসজিদের ছাদ থেকে পড়ে মসুল্লির মৃত্যু
সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওবায়দুল ইসলাম জানান, রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে রাজিয়া আত্মহত্যা করেছে। তবে তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া নিহতের পরিবারকে খবর দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ খুলনায় নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার
পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
দুই মামলায় কারাগারে নায়িকা একা
গৃহকর্মীকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর এবং মাদকদ্রব্য আইনে করা পৃথক দুই মামলায় চিত্রনায়িকা একার রিমান্ড ও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
পুলিশ রবিবার তাকে ঢাকা চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রট আদালতে হাজির করে। এরপর হাতিরঝিল থানায় হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর ও মাদকদ্রব্য আইনে করা পৃথক দুই মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে তিন দিন করে ছয় দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশ। অন্যদিকে তার আইনজীবী জামিন আবেদন করেন।
শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রট মোহম্মদ জসিম রিমান্ড ও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে শনিবার তার বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) হাতিরঝিল থানায় দুটি মামলা হয়েছে। নির্যাতনের অভিযোগে তার গৃহকর্মী বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।
অপর মামলাটি একার বাসায় মাদক পাওয়ার অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে করেছে।
এদিন সন্ধ্যায় গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে চিত্রনায়িকা একাকে আটক করে হাতিরঝিল থানা পুলিশ। এ সময় তার বাসা থেকে পাঁচ পিস ইয়াবা, পঞ্চাশ গ্রাম গাঁজা এবং অর্ধেক বোতল কেরু মদ জব্দ করা হয়।
জানা গেছে, একার বাসায় তিন মাস ধরে কাজ করেন এক গৃহকর্মী। এক মাসের বেতন দিলেও দুই মাসের বকেয়া বেতন চাইতে গেলে ইট দিয়ে আঘাত করে গৃহকর্মীকে আহত করেন নায়িকা একা।
শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ওই গৃহকর্মী থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ বলেন, ‘৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে পুলিশের মোবাইল টিমের সদস্যরা সেখানে গিয়ে দেখে, ওই গৃহকর্মী বাসার নিচে বসে কান্নাকাটি করছেন। এলাকার লোকজন বাসা ঘেরাও করে রেখেছে। পুলিশ দরজা ভেঙে একার বাসায় ঢোকে। প্রায় তিন মাস ধরে ওই বাসায় কাজ করতেন গৃহকর্মী। বকেয়া বেতন দেয়া নিয়ে তাকে মারধর করা হয়েছে। তার হাত, পা ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
আরও পড়ুন: গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে নায়িকা একা গ্রেপ্তার
গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে নায়িকা একা গ্রেপ্তার
গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে ঢালিউড অভিনেত্রী একাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ । শনিবার রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নির্যাতিত গৃহকর্মী হাজেরা (৩০) ওই এলাকায় নায়িকা একার অ্যাপার্টমেন্টসহ বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করেন।
হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) গোলাম আজম জানান, শনিবার বিকেলে হেল্পলাইন ৯৯৯ এ ফোন করে নির্যাতনের ঘটনার কথা জানানো হয়। এরপর পুলিশ আহত হাজেরাকে অ্যাপার্টমেন্ট থেকে উদ্ধার করে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়।
পুলিশ সূত্র জানায়, হাজেরার মাথায় ও হাতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
আরও পড়ুন: পরিমণির মামলায় জামিন পেলেন নাসির-অমি
হাজেরার স্বামী জানান, একা শনিবার নতুন বাড়িতে উঠার ব্যাপারে সাহায্য করার জন্য হাজেরাকে তার অ্যাপার্টমেন্টে রাত্রি যাপন করতে বলেন। কিন্তু সে রাজী হয়নি। তখন একা রেগে গিয়ে তাকে পরের দিন থেকে আসতে না বলেন। এই সময় হাজেরা তার পাওনা চায়। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে একা ভারী বস্তু দিয়ে হাজেরাকে আঘাত করতে থাকে। তার চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা পুলিশকে খবর দেয়।
পরিদর্শক আজম জানান, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
আরও পড়ুন: আমাকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে: পরীমণি
চট্টগ্রামে গৃহকমী নির্যাতন, নারী চিকিৎসক গ্রেপ্তার
চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁওয়ে গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে নাহিদা আক্তার রেনু নামে এক নারী চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কিশোরী গৃহকর্মীকে অমানবিক নির্যাতনের পাশাপাশি মাথার চুল কেটে দেয়ারও অভিযোগ উঠেছে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।
নির্যাতনের শিকার তসলিমা আক্তারেরর (১৫) বাড়ি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায়। তার বাবার নাম আব্দুল গণি।
আরও পড়ুন: গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে সিরাজগঞ্জে কলেজ শিক্ষিকা গ্রেপ্তার
ভিকটিম কিশোরীর পুরো শরীরেই নিযাতনের চিহ্ন রয়েছে। চোখ মুখ থেকে শুরু করে গলা, হাত-পিঠ শরীরের কোনও অংশেই বাদ যায়নি নির্যাতন থেকে। কোনও কারণ ছাড়াই লাঠি দিয়ে পেটানো হতো তাকে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার রাতে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তারকৃত চিকিৎসক নাহিদা আক্তার রেনু (৩৪) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ৪৮ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি চমেক হাসপাতালে কর্মরত আছেন।
আরও পড়ুন: গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে স্বামীসহ শাবির শিক্ষক গ্রেপ্তার
নির্যাতিতার এক আত্মীয় বলেন, কাজল দেওয়ায় চোখে মেরেছে আর গলায়ও আঘাত করেছে। গলায় দাগও রয়েছে।
নাহিদা আকতার রেনু নামের ওই নারী চিকিৎসকের শিশু সন্তান গৃহপরিচারিকা কিশোরীর মাথায় হাত লাগিয়ে সেই হাত পুনরায় মুখে দেয় বলে জোরপূর্বক তার চুলও কেটে দেওয়া হয়। সবশেষ কাজল দেওয়ার অপরাধে আঘাত করা হয় ওই কিশোরীর চোখে। পরে অভিযোগ পেয়ে পুলিশ গৃহপরিচারিকাকে উদ্ধারের পাশাপাশি নারী চিকিৎসককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে রাজধানীতে দম্পতি আটক
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগ শোনা মাত্র আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। সেখানে গিয়ে ভিকটিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করি। পরে অভিযুক্ত ডাক্তার নাহিদা আকতারকে আটক করে থানায় নিয়ে এসেছি।’
নির্যাতনে অসুস্থ কিশোরীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়েছে। এঘটনায় রাতে গৃহকর্মী তাসলিমার বাবা আব্দুল গণি একটি মামলা দায়ের করেন।