বিচারক
বিচারকের হস্তক্ষেপে ফের ১৭ বছরের পুরনো সংসারে ফিরলেন তারা
পঞ্চগড়ে দাম্পত্য কলহের জেরে ধরে রাগের বশবতি হয়ে স্বামী শাহানুর ইসলাম (৪২) প্রায় ছয় মাস আগে স্ত্রী আকতারা বানুকে (৩৬) তালাক দেন। এতে ভেঙে যায় ওই দম্পতির ১৭ বছরের সংসার।
এদিকে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রী গত ৩০ মার্চ আদালতে যৌতুক ও নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করলে অবশেষে বিচারকের হস্তক্ষেপে পুনরায় বিয়ের মাধ্যমে আবারও সংসার শুরু করলেন তারা।
রবিবার পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মতিউর রহমানের হস্তক্ষেপে বিচ্ছেদ থেকে মুক্তি পান ওই দম্পতি।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে বৃদ্ধ দম্পতিকে নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে দিল পুলিশ
বিচারকের খাস কামরায় মৌলভী ডেকে দুই আইনজীবী ও পরিবারের লোকজনের সামনে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক ১ হাজার টাকা নগদ দেন মোহরানায় তাদের পুনরায় বিয়ে পড়ানো হয়।
জেলার বোদা উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের বারপাটিয়া গ্রামে বসবাস করে আসছেন এই দম্পতি।
আদালত, আইনজীবী ও দম্পতি জানায়, দাম্পত্য কলহের জেরে ১৭ বছরের সংসার জীবনে গত ছয় মাস আগে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। দুই মেয়েকে নিয়ে আকতারা বানু বাবার বাসায় ফিরে যান। ছেলে সন্তান রয়ে যায় বাবার সঙ্গে। এ ঘটনার পর আকতারা বানু স্বামীর বিরুদ্ধে গত ৩০ মার্চ আদালতে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলা করেন। রবিবার আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করেন শাহানুর। তার ইচ্ছে ছিল আদালতেই দেনমোহরের ১ লাখ ১ হাজার টাকা পরিশোধ করবেন। কিন্তু আদালতের এজলাসে জামিন নিতে উপস্থিত হলে নাটকীয়তার মোড় নেয়। তিন সন্তানকে দেখে ওই দম্পত্তি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। জামিন আবেদনের শুনানির সময় বিচারকও তিন সন্তানের মুখ চেয়ে এই দম্পতিকে কলহ ভুলে আবার সংসারে ফেরার অনুরোধ করেন। বিচারকের কথায় কিছুক্ষণ চিন্তা ভাবনা করে ওই দম্পতি আবারও সংসারে ফিরতে সম্মতি জানান। পরে বিচারকের খাস কামরায় আদালত মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল খালেক তাদের বিয়ে দেন। পরে আপোষনামা দাখিলের পর আদালতের আইনী প্রক্রিয়া শেষে তিন সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যান শাহানুর ও আকতারা বানু দম্পতি।
আকতারা বানু বলেন, ‘আমি আমার সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। এখন আমরা আবারও এক সাথে থাকবো। আমি বিচারকের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে নদীতে গোসল করতে নেমে নব দম্পতির মৃত্যু
শাহানুর রহমান বলেন, ‘আমরা সুখে ছিলাম কিন্তু পারিবারিক কাজ কর্ম নিয়ে একটু ঝগড়া বিবাদ হলেই আমার স্ত্রী তার বাবার বাড়িতে চলে যেতো। তাই রাগে আমি স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলাম।’ তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রী আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা করায় আমি আরও রেগে যাই। আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করলে বিচারক আমাকে তিন সন্তানের দিকে চেয়ে আপোষের কথা বলেন। তখন ভেবে চিন্তে আমি আপোষ করার সিদ্ধান্ত নেই।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হাজিজুর রহমান বলেন, খুব সামান্য বিষয়ে তালাক দিয়েছিলেন শাহানুর। এই বিচারে একটি সংসার রক্ষা পেয়েছে। আমরা বাদী বিবাদী আইনজীবীরাও এতে খুশি।
ইফতারি খেয়ে ৯ বিচারকসহ অসুস্থ ৩০, হোটেল মালিকসহ গ্রেপ্তার ৩
পাবনা শহরের একটি রেস্টুরেন্টের ইফতারি খেয়ে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৯ বিচারকসহ ৩০ জন অসুস্থ হয়েছেন। তাদেরকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মালিকসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে বুধবার পাবনা কোর্ট চত্বরে পাবনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এক বিচারকের বিদায় অনুষ্ঠান উপলক্ষে ইফতারি খাওয়ার পর এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন-পাবনা শহরের কাশমেরি ফুড গার্ডেনের স্বত্ত্বাধিকারী হাসানুর রহমান রনি, ম্যানেজার সাব্বির হোসেন ও নাজমুস সাদাত মাসুদ।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে অনলাইন প্রতারক চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার
তাদের বিরুদ্ধে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ এর ৩৩ ধারায় মামলা দায়ের করে রাতেই কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে পাবনার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (এসিজেএম) মো. সাইফুল ইসলাম জানান, তিনি ও তার স্ত্রী ওই ইফতারি খেয়ে খুব অসুস্থ হয়ে বেসরকারি একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। পরে তিনি নিজে বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম জানান, বুধবার সন্ধ্যায় পাবনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের একজন বিচারকের বিদায় অনুষ্ঠান উপলক্ষে ইফতারির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়াসহ তার অধীনস্থ আদালতের সকল বিচারক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সবাই শহরের রূপকথা রোডের কাশমেরি ফুড গার্ডেন থেকে আনা ইফতারি খেলে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন।
আরও পড়ুন: জেএমবির মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার
তিনি জানান, বুধবার রাতে তাদের মধ্যে ছয় জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বাকিরা নিজ নিজ বাসায় চিকিৎসা নেন। পরে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলে পুলিশ ওই রেস্টুরেন্টের মালিক, ম্যানেজারসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়।
বিচারক ও পুলিশের ওপর হামলার উদ্দেশ্যেই দেশে আসেন মনির
বিচারক ও পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনার অভিযোগে মনির আব্দুল রাজ্জাক (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার ক্রাইম ইউনিট। রবিবার রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মনির বাহরাইন প্রবাসী এবং ধর্মীয় উগ্রবাদী সংগঠন গাজওয়াতুল হিন্দের সদস্য।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে ফেনসিডিল জব্দ, গ্রেপ্তার ২
জিজ্ঞাসাবাদে মনির জানিয়েছে, সংগঠনের হয়ে তার মিশন সম্পন্ন করতে বিচারক ও পুলিশের ওপর হামলার উদ্দেশ্যে তিনি ২৮ ফেব্রুয়ারি দেশে আসেন।
সাইবার-ক্রাইম ইউনিট সূত্র জানায়, বাহরাইনে অবস্থানকালে মনির মানুষকে চরমপন্থী কার্যকলাপে উদ্বুদ্ধ করতে ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেন।
তার বিরুদ্ধে ডিএমপির রমনা মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নড়াইলে আনসার আল ইসলামের ২ সদস্য গ্রেপ্তার: র্যাব
২২ বিচারক করোনায় আক্রান্ত, প্রশিক্ষণ কর্মশালা স্থগিত
রাজধানীর জাতীয় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণ নিতে আসা দেশের বিভিন্ন আদালতের সহকারী জজ ও বিচারিক হাকিম পদমর্যাদার ২২ জন বিচারক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তারা সবাই ৪৩ ও ৪৪তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণে অংশ নিতে এসেছিলেন।
বিচারকদের করোনা পজিটিভ হওয়ায় অসামাপ্ত রেখেই দুই মাসের প্রশিক্ষণ কর্মশালা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে এই ২২ বিচারককে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আইসোলশনে রাখা হয়েছে।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) ইনস্টিটিউটের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) মো. গোলাম কিবরিয়া এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: ১ ডিসেম্বর থেকে শারীরিক উপস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ
তিনি জানান, ২২ জন করোনা আক্রান্ত হওয়ায় তাদেরকে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৯ জানুয়ারি দেশের বিভিন্ন আদালতে সহকারি জজ ও বিচারিক হাকিম হিসেবে দায়িত্বপালনকারী ৭০ জন সহকারী জজের দুই মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ শুরু হয়। পৃথক দুটি ব্যাচে ৩৫ জন করে অংশ নেন। প্রশিক্ষণ চলাকালে পাঁচ জন সহকারী জজের করোনা উপসর্গ দেখা দেয়। পরে তাদের করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার প্রতিবেদনে সবারই করোনা পজিটিভ আসে। এরপর প্রশিক্ষণে অংশ নিতে আসা সব বিচারকদের করোনা টেস্ট করা হলে তাদের মধ্যে থেকে আরও ১৭ জনের প্রতিবেদন পজিটিভ আসে। এ পরিস্থিতিতে দুই মাসের প্রশিক্ষণ কর্মশালা অসামাপ্ত রেখেই গত ১৫ জানুয়ারি স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন: ধর্ষণের আসামিকে জামিন দেয়ায় ট্রাইব্যুনালের বিচারককে তলব
রেইনট্রি ধর্ষণ মামলায় বিচারকের পর্যবেক্ষণ নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়াবে
রাজধানীর রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ মামলার রায়ে বিচারকের পর্যবেক্ষণকে একপেশে ও দায়িত্বজ্ঞানহীন উল্লেখ করে এ ধরনের পর্যবেক্ষণ নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়াবে বলে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৮০ জন বিশিষ্ট নাগরিক।
বিবৃতিতে বলা হয়,‘নারীর প্রতি চলমান সহিংসতার বিচার নিশ্চিত করা যেখানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ,সেখানে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পর্যবেক্ষণ সংবেদনশীল হওয়া কাম্য। বিদ্যমান সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে অধিকাংশ নারী আইনের আশ্রয় নেয়ারই সুযোগ পান না এবং মামলা হলেও নারী নির্যাতনের মামলায় অপরাধীর সাজা প্রায় হয় না বললেই চলে। সম্প্রতি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এ রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ মামলার রায় হয়েছে। রায়ে আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাতসহ পাঁচজন আসামিকেই খালাস দেয়া হয়।’
‘গণমাধ্যমের বরাতে আমদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে যে,মামলার বিচারক রায়ের পর্যবেক্ষণে এমন কিছু বিষয়ের উল্লেখ করেছেন যা তাঁর এখতিয়ার বহির্ভূত এবং নারীর সাংবিধানিক অধিকারের সাথে সাংঘর্ষিক। আমরা এ পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাই।’
উল্লেখ্য,এ মামলার শুরু থেকেই অত্যন্ত প্রভাবশালী আসামিদের পক্ষ থেকে প্রচুর চাপ এবং ভুক্তভোগীদের ‘ভিক্টিম ব্লেমিং’সহ নানানভাবে হয়রানির বিষয় মিডিয়াতে এসেছে। আসামিদের আস্ফালন সে সময় পত্র-পত্রিকায় ফলাও করে ছাপা হতো। সেই আসামিদের ক্ষমতার দম্ভই আজ রায়ে প্রতিফলিত হয়েছে বললে অত্যুক্তি হবে না।’
আরও পড়ুন: রেইনট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণ: সাফায়াতের বিদেশযাত্রা স্থগিত
‘রায়ে ভুক্তভোগীদের আগের যৌন সম্পর্কের অভিজ্ঞতা থাকার কারণে তাঁরা 'বিশ্বাসযোগ্য'নন বলে বিচারকের পর্যবেক্ষণ ভিক্টিম ব্লেমিংয়ের শামিল যা হাইকোর্টের নির্দেশনার সরাসরি ব্যত্যয়। আর সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী উচ্চ আদালতের নির্দেশনা মানতে ট্রাইব্যুনাল বাধ্য। আদালতের এ পর্যবেক্ষণের ফলে জনমনে ভুল ধারণা হতে পারে যে, আগে যৌন সম্পর্কের অভিজ্ঞতা থাকা কোনও নারী ধর্ষণের বিচার আশা করতে পারেন না। এর ফলে দেশে নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়বে এবং বিচার প্রাপ্তির সম্ভাবনা আরও ক্ষীণ হয়ে পড়বে বলে আমরা মনে করি। আমরা মনে করি আদালত নারীর বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতা ও ধর্ষণের মতো অপরাধকে স্বাভাবিকীকরণ করেছেন এবং জনমনে এই বিভ্রান্তিকর ধারণা প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছেন যে,ধর্ষণের জন্য নারী নিজেই দায়ী। বাংলাদেশে নারীর উপর সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ইতিহাস অনেক পুরোনো এবং যৎকিঞ্চিৎ যে অগ্রগতি হয়েছে, এহেন পর্যবেক্ষণ তাকে পেছনে ঠেলে দেবে। এ রায় নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়াবে বলে আমরা মনে করি।’
বিবৃতিতে বিশিষ্ট নাগরিকেরা বলেন,‘ধর্ষণের ৭২ ঘন্টার মধ্যে মামলা করার বাধ্যবাধকতা তৈরি করা বা ডাক্তারি প্রত্যয়নপত্র ছাড়া ধর্ষণ মামলা না নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়ার কোনো এক্তিয়ারই এই ট্রাইব্যুনালের নেই। ধর্ষণের মতো ফৌজদারী অপরাধের ক্ষেত্রে ৭২ ঘন্টা নয় বরং ৭২ বছর পরও মামলা করতে পারার অধিকার ভুক্তভোগীদের আছে। অথচ তাঁর এই পরামর্শের কারণে ধর্ষণের শিকার নারীর নিরাপত্তা আরও বেশি সংকটাপন্ন হয়ে পড়বে,যার দায় উল্লিখিত ট্রাইব্যুনালের বিচারকের। এছাড়া মামলা তদন্ত করে আসামির অপরাধ প্রমাণ করা যেমন রাষ্ট্রপক্ষের কাজ,তেমনি যেকোনো মামলার ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা আদালতের কাজ। একটি মামলা দায়ের করে আদালতের সময় নষ্ট করার অভিযোগ তোলা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনে নিযুক্ত ব্যক্তির কাজের প্রতি কোনও দায়বদ্ধতা না থাকার উদাহরণ।’
আরও পড়ুন: ধর্ষণের দুই মামলা: সাফাতসহ ৫ আসামি খালাস
তারা আরও বলেন,‘উল্লিখিত মামলার ক্ষেত্রে প্রভাবশালী আসামিপক্ষের খালাস পাওয়ার কারণ হিসেবে রাষ্ট্রপক্ষের মামলার জন্য যথাযোগ্য প্রমাণ উপস্থাপন না করতে পারার দায়,বাদীদের হতে পারে না। অথচ সকল দোষ দুই ভুক্তভোগীর ওপর চাপানো হয়েছে। উপরন্তু, ভুক্তভোগীদের চরিত্র সম্পর্কে মাননীয় বিচারকের মতামত অত্যন্ত দৃষ্টিকটু এবং যেকোনও নাগরিকের জন্য অসম্মানজনক। এছাড়া দুইজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মামলাকে প্রভাবিত করেছে বলে মাননীয় বিচারকের মন্তব্য জনমনে প্রশ্ন তোলে বাংলাদেশের সমাজ সম্পর্কে তাঁর বাস্তব জ্ঞান সম্বন্ধে,কারণ এ সমাজে ভুক্তভোগী নারীরাই প্রান্তিক এবং নিপীড়নের শিকার। উল্টোটা নয়।’
দেশের আইনের শাসনের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য নাগরিকেরা কয়েকটি দাবির কথা জানান। এগুলো হলো- এই মামলার বিচার প্রক্রিয়ার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করা। ক্ষমতাশালী ও বিত্তশালী অভিযুক্তরা কীভাবে বারে বারে দুর্বল পুলিশি তদন্তের সাহায্যে অপরাধের দায়ভার ও শাস্তি এড়িয়ে যান তার প্রতিকার অতীব জরুরি। বিচারকদের সঠিক ও সময়োপযোগী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে তাঁদেরকে নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষায় আরও দক্ষ করে তোলার ব্যবস্থা করা হয়। সাক্ষ্য আইনের ১৫৫(৪) ধারার বিলুপ্তি।
বিবৃতিতে অনলাইনে সাক্ষরদাতা নাগরিকরা হলেন- ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য মেঘনা গুহঠাকুরতা, নারী আন্দোলন কর্মী শিরীন প হক, নারী আন্দোলন অ্যাক্টিভিস্ট ও লেখক অধ্যাপক মালেকা বেগম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মানবাধিকার কর্মী শাহীন আনাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্মের নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. নাসরিন খন্দকার, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহনাজ হুদা, কানাডার ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের পিএইচডি গবেষক হানা শামস আহমেদ, ইউনিভার্সিটি অফ লন্ডনের স্কুল অফ অরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের প্রফেসরিয়াল রিসার্চ এসোসিয়েট স্বপন আদনান, মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির, অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক বীণা ডি কস্টা, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রিকাল ও কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক নোভা আহমেদ, থাইল্যান্ডের মাহিডন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস স্টাডিজের শিক্ষার্থী রোজীনা বেগম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম, গবেষক ও অধিকারকর্মী মুক্তাশ্রী চাকমা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. আকমল হোসেন, সঙ্গীতশিল্পী ও লেখক অরূপ রাহী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, ঢাকা শিশু হাসপাতালের পেডিয়্যাট্রক নিউরোসায়েন্সের অধ্যাপক ডা. নায়লা জামান খান, লেখক সাদাফ সাজ, মানবাধিকারকর্মী ড. ফস্টিনা পেরেরা, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির উপাচার্য পারউইন হাসান, বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট সালমা আলী, মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন, সাংবাদিক সায়দিয়া গুলরুখ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, লেখক ও গবেষক পার্সা সাঞ্জানা সাজিদ, সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, নারীগ্রন্থ প্রবর্তনার ফরিদা আখতার, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী তবারক হোসেইন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ফাতেমা সুলতানা শুভ্রা, আলোকচিত্রী সালমা আবেদীন পৃথী, পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটের আর্ট কিউরেটর ও শিক্ষক তাঞ্জিম ওয়াহাব, পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইনস্টিটিউটের আলোকচিত্র বিভাগের শিক্ষক খন্দকার তানভীর মুরাদ, নারী অধিকার কর্মী কামরুন নাহার, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শম্পা বসু, দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদক জায়মা ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ড. সাদাফ নূর, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সায়েমা খাতুন, লেখক ও প্রকাশক নাহিদা আশরাফী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মাসউদ ইমরান, লেখক ও অনুবাদক ওমর তারেক চৌধুরী, নৃবিজ্ঞানী ও চলচ্চিত্রকার নাসরিন সিরাজ, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ও অ্যাক্টিভিস্ট মেহ্জাবীন রহমান, থিয়েটার ও পারফরমেন্স শিল্পী ঋতু সাত্তার, শিল্পী মুনেম ওয়াসিফ, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল নোমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সামিনা লুৎফা নিত্রা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদুল সুমন, জে এন ইউ ইন্ডিয়ার পিএইচডি গবেষক নাজনীন শিফা, সাংবাদিক সুস্মিতা পৃথা, আলোকচিত্রী জান্নাতুল মাওয়া, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক পারভীন জলী, উন্নয়ন কর্মী ফারাহ কবীর, সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক জলি তালুকদার, শিল্পী ও সংগঠক বীথি ঘোষ, আলোকচিত্রী সাদিয়া মরিয়ম রুপা, শিল্পী ও সংগঠক অমল আকাশ, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি অব লিবারেল স্টাডিজের অধ্যাপক দীনা সিদ্দিকী, যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব পিটসবার্গের পিএইচডি গবেষক আনমনা প্রিয়দর্শিনী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষক শাশ্বতী মজুমদার, ব্লাস্টের ডেপুটি ডিরেক্টর (মনিটরিং) দিলশানা পারুল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের শিক্ষক মোশাহিদা সুলতানা, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ বরিশাল জেলা শাখার সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী, শ্রমিক ও নারী অধিকারকর্মী এবং আলোকচিত্রী তাসলিমা আখতার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষক নাসিমুল খবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক রুশদ ফরীদি এবং লেখক রেহনুমা আহমেদ।
আরও পড়ুন: ধর্ষণ মামলা: সাংবাদিক শাকিলের আগাম জামিন
বিচারক কামরুন্নাহারের বক্তব্য বিব্রতকর: আইনমন্ত্রী
ঘটনার ৭২ ঘন্টা পরে ধর্ষণ মামলা নেয়া যাবেনা- বিচারক মোছা. কামরুন্নাহারের এমন বক্তব্য বিচারকদের জন্য বিব্রতকর বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক।রবিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এটা একটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি ভুল নির্দেশনা দেয়া। সেক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল, সেজন্য তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সেটাও সম্পূর্ণ আইনানুগভাবে কিন্তু এগিয়ে যাবে। আইনে তার যা সুবিধা…তাকে শোকজ করা হবে। তিনি কেন বলেছেন তার ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। সেটা আইনিভাবে যে প্রক্রিয়া দেয়া আছে, সেটাই তার ব্যাপারেও প্রযোজ্য।’
আনিসুল হক বলেন, ‘কোন ফৌজদারি অপরাধের মামলা করার ব্যাপারে তামাদি বারিত হয় না (মানে ইট ইজ নট বার বাই লিমিটেশন)। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পর ২১ বছর কোন মামলা হয়নি। ১৯৯৬ সালের ২ অক্টোবর এই মামলার প্রথম এফআইআর হয়। মন্ত্রী আরও যুক্তি দেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে পরিস্কারভাবে বলা আছে, বাংলাদেশের কোন নাগরিক বা বাংলাদেশে সাময়িকভাবে অবস্থানরত অপরাপর ব্যক্তির বিরুদ্ধে বা পক্ষে একমাত্র আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। অথচ রেইনট্রি হোটেলে দুই নারীকে ধর্ষণ মামলার বিচারক বলেছেন, ঘটনার ৭২ ঘন্টার পরে মামলা নেয়া যাবে না। তাঁর এই বক্তব্যটি আইন এবং সংবিধানের ৩১ অনুচ্ছেদে দেয়া মৌলিক অধিকার পরিপন্থী। ওই বিচারক আইন ও সংবিধান দুটোই ভায়োলেশন (লঙ্ঘন) করেছেন ‘
আরও পড়ুন: দেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রী একজন আর্কিটেক্ট: আইনমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘এই ভায়োলেশনের তাৎপর্যটা কী? অনেক রায় আছে যেগুলো হয়ত বেআইনি হয়, আপিল বিভাগে গিয়ে স্যাটেসাইড হয়। এখানে তিনি যে কথাটা বলেছেন, সেটার একটা ইপ্লিকেশন আছে, একটা কোইনসিকিয়েন্স আছে। এ কারণেই আজকে বিচার বিভাগের যিনি গার্ডিয়ান, যিনি প্রধান তাঁকে ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। ঠিক সে কারণেই আমি আইনমন্ত্রী হিসেবে গতকাল বলেছিলাম, প্রধান বিচারপতির কাছে এ বিষয়ে চিঠি দিবো।’
আনিসুল হক বলেন, ‘এখন কথা হচ্ছে এটা এত গুরুত্বপূর্ণ কেন- বিজ্ঞ বিচারকরা প্রতিদিনই কিন্তু রায় দেন। রায় কেউ সন্তুষ্ট হয়, কেউ অসন্তুষ্ট হয়। যারা অসন্তুষ্ট হন, আমাদের ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী , সংবিধান অনুযায়ী তারা উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারেন। সর্বোচ্চ আদালত হচ্ছে আপিল বিভাগ। সেই আপিল বিভাগের সাংবিধানিক কিছু বাড়তি ক্ষমতাও আছে। সেগুলো তারা প্রয়োগ করে। রায় দিলেই যে কোন বিচারকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়, তা নয়। তারা মেরিটের উপরে, আইনের উপরে, রায় দেয়ার ব্যাপারে সম্পূর্ণ স্বাধীন।’ ‘কিন্তু এখানে যে ঘটনাটা ঘটেছে সেটা হচ্ছে একজন বিজ্ঞ বিচারক তিনি ওপেন কোর্টে রায় দেয়ার সময় তার পর্যবেক্ষণে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে বলেছেন, ৭২ ঘণ্টা পর কেউ যদি কোন ধর্ষণ মামলা করতে আসে, তাহলে সেই মামলাটা গ্রহণ না করতে। এটাই হচ্ছে আপত্তির জায়গা।’বিচারক কামরুন্নাহারের দেয়া রায় নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি না হয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা লেখেন বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেয়া হয়েছে। কেড়ে নেয়া কথাটার মানে হচ্ছে জোর করে কেড়ে নেয়া। এটা কেড়ে নেয়া হচ্ছে না। এই রকম যদি ঘটনা ঘটে প্রধান বিচারপতির এই ক্ষমতা আছে, তাকে বিচারিক দায়িত্ব থেকে কিছুদিন সরিয়ে রাখা।’বিচারকের পর্যবেক্ষণের কারণে কোন ভুল ম্যাসেজ যাবে কিনা- এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বা নির্বাহী বিভাগ যদি বিচারকের পর্যবেক্ষণের বিষয়ে তাদের বক্তব্য পরিস্কার না করতো, বিচার বিভাগ যদি পদক্ষেপ না নিত, তাহলে রং ম্যাসেজ হয়তো যেত কিন্তু এই পদক্ষেপ নেয়ার পর আমার মনে হয় না রং ম্যাসেজ যাওয়ার কোন সম্ভাবনা আছে।’
আরও পড়ুন: সার্চ কমিটির মাধ্যমেই গঠিত হবে ইসি: আইনমন্ত্রী
৩৭ লাখ মামলার জট, ২০২২ সালে ৬ লাখ কমানোর পরিকল্পনা: আইনমন্ত্রী
আদালতে বসতে পারবেন না সেই বিচারক
৭২ ঘণ্টা পর ধর্ষণ মামলা না নিতে পর্যবেক্ষণ দেয়া সেই বিচারকের ক্ষমতা কেড়ে নিলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোছা: কামরুন্নাহারকে রবিবার (১৪ নভেম্বর) সাড়ে ৯টা থেকে আদালতে না বসার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।
রবিবার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের আলোচনা সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বেগম কামরুন্নাহারকে ফৌজদারী বিচারিক ক্ষমতা সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করে বর্তমান কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট সকাল সাড়ে ৯টার দিকে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১১ নভেম্বর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ মামলার রায়ে অভিযুক্ত পাঁচ আসামিকে খালাস দেন বেগম কামরুন্নাহার। রায়ের পর্যবেক্ষণে তিনি বলেন, ‘৭২ ঘণ্টা পর ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায় না, পুলিশ যেন ৭২ ঘণ্টা পর কোনো ধর্ষণের মামলা না নেয়।’
আরও পড়ুন: পরীমণির রিমান্ড: নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন দুই বিচারক
প্রথমবার জাতিসংঘে শান্তিরক্ষা মিশনে যাচ্ছেন বাংলাদেশি ৪ নারী বিচারক
হত্যা মামলায় চারজনের ফাঁসি: রায় শুনে আদালতে ভাঙচুর, বিচারককে গালাগাল
পরীমণির রিমান্ড নিয়ে দুই বিচারককে আবার ব্যাখ্যা দিতে হবে
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমণির দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় রিমান্ড মঞ্জুর বিষয়ে ঢাকার দুই মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে আবারও ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ জন্য তাদের আগামী ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে।
বুধবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। সেই সাথে পরবর্তী আদেশের জন্য ২৪ অক্টোবর তারিখ রেখেছেন আদালত।
যে দুই বিচারককে ব্যাখ্যা দিতে হবে তারা হলেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস ও আতিকুল ইসলাম। এ ছাড়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাজী গোলাম মোস্তাফাকে ধার্য তারিখের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: পরীমণির গাড়িসহ জব্দ করা ১৬ আলামত ফেরত দেয়ার সুপারিশ
পরীমণির দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফায় রিমান্ড মঞ্জুরের কারণ উল্লেখ করে আগে দেবব্রত বিশ্বাস ও আতিকুল ইসলামের দেয়া ব্যাখ্যা গত ১৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু তাদের দেয়া ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হননি হাইকোর্ট। সেদিন শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট ২৯ সেপ্টেম্বর পরবর্তী আদেশের জন্য তারিখ রাখেন। সে অনুসারে আজ বিষয়টি ওঠে।
পরে তাদের পক্ষে সময় চেয়ে আইনজীবী আবদুল আলীম মিয়া জুয়েল বলেন, ‘২ সেপ্টেম্বর তাদের কাছে ব্যাখ্যা তলব করেন হাইকোর্ট। রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে আদালতে ব্যাখ্যা দাখিল করা হয়। কী কারণে রিমান্ড দেয়া হয়েছে, তা উল্লেখ করা হয়েছে। শেষে বলা হয়েছে, সার্বিক বিবেচনায় দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুরের আদেশে ত্রুটি -বিচ্যুতি...।’
এই পর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘তারা (দুই বিচারক) আমার অফিসে এসেছিলেন। দুজনই তরুণ বিচারক। তারা অনুতপ্ত, দুঃখিত। প্রশিক্ষণের অভাবের কারণে যথাভাবে জবাব লেখা হয়নি। দুজনই আপনাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।’
আদালত বলেন, ‘ক্ষমা; তাহলে তারা (দুই বিচারক) আরেকটি ব্যাখ্যা (রিপ্লাই) দেবেন। এ জন্য সময় দিচ্ছি। বিষয়টি ২৪ অক্টোবর পরবর্তী আদেশের জন্য আসবে।’ এ সময় আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, রিমান্ড মঞ্জুরের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ-নির্দেশনা যেন নিম্ন আদালত মেনে চলেন।
পড়ুন: পরীমণির রিমান্ড: দুই বিচারকের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন হাইকোর্ট
আদালতের আদেশ অনুসারে আজ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে উপস্থিত হন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাজী গোলাম মোস্তাফাকে ধার্য তারিখের মধ্যে (২৪ অক্টোবর) ব্যাখ্যা দিতে বলেন হাইকোর্ট। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মিজানুর রহমান শুনানিতে ছিলেন।
মামলায় জামিন আবেদনের শুনানির দিন দেরিতে নির্ধারণ করা নিয়ে জজ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন পরীমণি।
গত ২৬ আগস্ট হাইকোর্ট পরীমণিকে জামিন না দিয়ে তার আবেদন শুনানি প্রশ্নে রুল জারি করেন। রুলে রাজধানীর বনানী থানায় দায়ের করা মাদক মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমণির জামিন আবেদন আদেশ পাওয়ার দুই দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এছাড়া পরীমণির জামিন আবেদন শুনানির জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করে নিম্ন আদালতের আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়। হাইকোর্টের আদেশের আলোকে গত ৩১ আগস্ট পরীমণিকে জামিন দেন বিচারিক আদালত।
পড়ুন: ফোনে আড়িপাতা রোধে করা রিট খারিজ
এর আগে গত ৫ আগস্ট পরীমণি ও দীপুর চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ। পরে দ্বিতীয় দফায় গত ১০ আগস্ট পরীমণি ও আশরাফুল ইসলাম দীপুর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস। এরপর তৃতীয় দফায় গত ১৯ আগস্ট পরীমণির একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম।
পরে গত ২৯ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের রায় না মেনে মাদক মামলায় আটক চিত্রনায়িকা পরীমণিকে বারবার রিমান্ডে নেয়ার বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টের স্ব-প্রণোদিত আদেশ প্রার্থনা করে একটি আবেদন করা হয়। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও শালিস কেন্দ্রের (আসক) পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন এ আবেদন জানান।
ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২ সেপ্টেম্বর পরীমণিকে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দফা রিমান্ড মঞ্জুরকারী বিচারকদের ব্যাখ্যা ও সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট।
গত ৪ আগস্ট পরীমণিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন র্যাব-১-এর কর্মকর্তা মো. মজিবর রহমান।
তালেবান পাগড়ি পরতে হবে: জয়পুরহাটে বিচারককে চিঠি
‘বাংলাদেশ চলবে তালেবানের অধীনে। বিচার হবে কোরআন সুন্নাহ অনুযায়ী। কোর্টে যাওয়ার সময় বিচারক, আইনজীবী, মুহুরি সবাইকে মাথায় তালেবান পাগড়ি পরতে হবে। আদালতের আশেপাশে পুলিশ থাকবে না।’ বৃহস্পতিবার জয়পুরহাটে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জজ) মো. রুস্তম আলীকে তালেবান গোষ্ঠীর পরিচয়ে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: রূপপুর প্রকল্পের সেনাসদস্যদের হুমকির অভিযোগে ৮ যুবক আটক
জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা এ চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত চিঠির প্রকৃত প্রেরককে খোঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে। বিচারক রুস্তম আলীর পক্ষ থেকে জয়পুরহাট সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
বিচারক রুস্তম আলী এই চিঠির ব্যাপারে পুলিশ সুপারকে অবগত করলে তিনি তখনি বিষয়টি গুরুত্বের সাথে নেন এবং এ ব্যাপারে জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আলমগীর জাহানকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।
জয়পুরহাট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সরকারি কৌশলি (পিপি) অ্যাডভোকেট নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল এ ব্যাপারে বলেন, তালেবান নামধারী গোষ্ঠির বিচারকের উপর নিছক একটি হুমকি মাত্র। তবে এদেরকেও খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করা উচিত।
আরও পড়ুন: হুমকি পেয়ে থানায় জিডি করলেন মুনিয়ার বোন
শুক্রবার এ বিষয়ে ওসি একেএম আলমগীর জাহান বলেন, ওই চিঠিতে দেয়া ঠিকানা অনুযায়ী- জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়নের দুর্গাদহ এলাকায় মো. আশরাফ আলি নামে চিঠির প্রেরকের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। এছাড়া চিঠিটি পড়ে প্রাথমিকভাবে চিঠিটির বক্তব্য এবং লেখা ও ভাষা দেখে ক্লাশ এইট নাইনে পড়া কারও হাতের লেখা হতে পারে বলে মনে হয়েছে।
পার্থ গোপাল বণিকের জামিন: বিচারকের ব্যাখ্যা চাইলেন হাইকোর্ট
রাজধানীর নর্থ রোডের বাসা থেকে ৮০ লাখ টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার বরখাস্ত হওয়া ডিআইজি প্রিজন্স পার্থ গোপাল বণিককে জামিন দেয়ায় বিচারকের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন হাইকোর্ট।
সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে ওই কারা কর্মকর্তারা জামিন প্রদানকারী বিচারক ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেন কোন যুক্তিতে তাকে জামিন দিয়েছেন সে ব্যাপারে তাকে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে পার্থ গোপাল বণিকের অস্বাভাবিক ভাবে জামিন দেয়ার বিষয় নিয়ে চ্যানেল ২৪ এ প্রচারিত প্রতিবেদনের ভিডিও ক্লিপ আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মামলা থেকে অব্যাহতি চান বরখাস্তকৃত ডিআইজি প্রিজনস পার্থ গোপাল
পাশাপাশি বরখাস্ত হওয়া ডিআইজি প্রিজন্স পার্থ গোপাল বণিকের জামিনের বিরুদ্ধে দুদকের করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্ট । আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান ও অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান লিংকন। এর আগে ৮০ লাখ টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার বরখাস্ত হওয়া ডিআইজি প্রিজন্স পার্থ গোপাল বণিককে অস্বাভাবিক ভাবে জামিন দেয়ার বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী মনিরুজ্জামান লিংকন। এছাড়া রবিবার তার জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল আবেদন করে দুদক।
আরও পড়ুন: বরখাস্তকৃত ডিআইজি প্রিজনস পার্থ গোপালের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ
গত ১৯ জুন জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজনস) পার্থ গোপাল বণিক জামিন পান। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ইকবাল হোসেন ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন। পরে জামিন আদেশ নিয়ে তার পরদিনই তিনি জেল থেকে বের হন। অনেকটা গোপনে এবং তড়িঘড়ি করে এই জামিন ও তিনি কারামুক্ত হন।
২০১৯ সালের ২৮ জুলাই সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত দুদকের সেগুনবাগিচার প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের পরিচালক মুহাম্মদ ইউছুফের নেতৃত্বে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় পার্থ গোপাল বণিককে। ঘুষ ও দুর্নীতির কয়েক লাখ নগদ টাকা তার বাসায় রয়েছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে এদিন বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে পার্থ গোপাল বণিকের বাসায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ৮০ লাখ টাকা জব্দ করা হয় এবং তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসা হয়।
আরও পড়ুন: ঘুষ গ্রহণের মামলায় ডিআইজি প্রিজন পার্থ গোপাল কারাগারে
পরে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দুদকের সহকারী পরিচালক ও অনুসন্ধান দলের নেতা মো. সালাউদ্দিন বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
এ মামলায় গত বছরের ৪ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। এ মামলায় হাইকোর্টে একাধিকার জামিন আবেদন করে জামিন না পেলেও অনেকটা গোপনে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
২০১৯ সালের ৩০ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ পার্থ গোপালকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।