বঙ্গবন্ধু
নির্ধারণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু টানেলের টোল হার
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের টোল হার নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) যানবাহনের শ্রেণি অনুযায়ী টোল হার চূড়ান্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সেতু বিভাগ।
টানেলটি চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে শুরু হয়ে ৩ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ আনোয়ারা উপজেলাকে যুক্ত করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বঙ্গবন্ধু টানেলে মোট ১২ ধরনের যানবাহনের জন্য টোল দিতে হবে। এই টানেলে মোটরসাইকেল চলতে পারবে না। টানেল যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার দিন থেকে এই টোল হার কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন: অক্টোবর-নভেম্বরে দুই ভাগে বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন: সেতুমন্ত্রী
তবে এখনো ট্যানেল খুলে দেওয়া বা আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ হয়নি।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, ৩ দশমিক ৪৩ কিলোমিটার দীর্ঘ বঙ্গবন্ধু টানেলে সর্বনিন্ম টোল ২০০ টাকা। প্রাইভেটকার পারাপারে এই টোল দিতে হবে।
প্রতিবার পিকআপ পারাপারে টোল লাগবে ২০০ টাকা। মাইক্রোবাসের টোল ২৫০ টাকা। ৩১ আসনের কম বাসের টোল ৩০০ টাকা।
৩২ আসনের বেশি বাসের টোল ৪০০ টাকা। ৩ এক্সেল বিশিষ্ট বড় বাসের টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০০ টাকা।
৫ টন পর্যন্ত পণ্য বহনে সক্ষম ট্রাকের টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০০ টাকা। ৮ টনের ট্রাক পারাপারে ৫০০ টাকা এবং ১১ টনের ট্রাকে ৬০০ টাকা টোল দিতে হবে।
৩ এক্সেলের ট্রেইলারে টোল লাগবে ৮০০ টাকা। ৪ এক্সেলের ট্রেইলারে দিতে হবে ১ হাজার টাকা। পরবর্তী প্রতি এক্সেলের জন্য বাড়তি ২০০ টাকা দিতে হবে।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালে পাইপলাইনে ভারত থেকে জ্বালানি তেল আমদানি শুরু: প্রধানমন্ত্রী
এদিকে কর্ণফুলী আমানত শাহ সেতুর তুলনায় যানবাহনের শ্রেণি অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু টানেলে আড়াই থেকে ৬ গুণ টোল দিতে হবে। আমানত শাহ সেতুতে প্রাইভেটকারের টোল ৭৫ টাকা।
সেতুতে ৩১ আসনের কম বাসের টোল ৫০ টাকা। টানেলে তা ৩০০ টাকা। ফলে ১০ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই টানেলকে প্রতিযোগিতায় পড়তে হবে সেতুর সঙ্গে।
বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর নির্মাণ সামগ্রী নিয়ে মোংলায় ভিড়েছে জাহাজ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতুর নির্মাণ সামগ্রী (মালামাল) নিয়ে মোংলা বন্দরে ভিড়েছে বিদেশি জাহাজ এমভি এভার ভেনটেজ। মঙ্গলবার (৪ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে বন্দরের ৫ নম্বর জেটিতে ভিড়ে এ জাহাজটি। দুপুর ২টা থেকে জাহাজের পণ্য খালাসের কাজ শুরু হয়।
এছাড়া খালাসকৃত মালামাল নদীপথে নেওয়া হবে বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর ডিপোতে।
আরও পড়ুন: ১৮ দিন উৎপাদন বন্ধের পর অবশেষে জ্বালানি নিয়ে পায়রা বন্দরে জাহাজ ভিড়েছে
এ জাহাজটিতে বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর ১ হাজার ৯শ ৫২ দশমিক ৪৪২ মেট্রিক টন ওজনের ২৩৯ প্যাকেজ মালামাল (বিভিন্ন ধরনের নির্মাণ সামগ্রী) এসেছে।
বিদেশি এ জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট হক অ্যান্ড সন্স লিমিটেডের খুলনার অপারেশন ম্যানেজার শওকত আলী জানান, বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর মালামাল নিয়ে ২২ জুন ভিয়েতনামের হাইফং বন্দর থেকে মোংলা বন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে আসে পানামা পতাকাবাহী জাহাজ এমভি এভার ভেনটেজ।
তিনি জানান, জাহাজটি মঙ্গলবার বেলা ১১টায় মোংলা বন্দরের ৫নম্বর জেটিতে ভিড়েছে। এরপর এসব মালামাল নদীপথে নেওয়া হবে বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর ডিপোতে। জাহাজটি থেকে মালামাল খালাসে সময় লাগবে তিন থেকে চারদিন।
আরও পড়ুন: শুভেচ্ছা সফরে বাংলাদেশে পৌঁছেছে ফ্রান্স নৌবাহিনীর জাহাজ ‘এফএস সার্কাফ’
ইন্দোনেশিয়া থেকে ৬৪ হাজার টন কয়লা নিয়ে জাহাজ ভিড়েছে মাতারবাড়ীতে
নিজের নয়, দেশের ভাগ্য বদলাতে কাজ করে যাচ্ছি: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজের ভাগ্য বদলাতে নয়, দেশের ভাগ্য বদলাতে কাজ করে যাচ্ছি প্রতিনিয়ত।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা ও ডিজিটাল দেশ গড়তে কাজ করে যাচ্ছি, অপশক্তিরা যতই মাথা চাড়া দিয়ে উঠুক দেশের উন্নয়ন অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
দুই দিনের সফরের প্রথম দিনে শনিবার (১ জুলাই) গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ব্যক্তিগত কাজ রেখে এই বৃষ্টির মধ্যে ছুটে এসেছি শুধুমাত্র আমার এলাকার জনগণের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে এবং তাদের বর্তমান অবস্থা স্বচক্ষে দেখতে।
চলমান দেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে কথা বলার সময় তিনি কোটালীপাড়া টুঙ্গিপাড়াসহ দেশের এক ইঞ্চি জায়গা ও যেন ফাঁকা পড়ে না থেকে সে বিষয়ে জোর দিয়ে বলেন, বৈশ্বিক খাদ্য সংকটের মোকাবিলা করতে নিজেদের কৃষিতে আত্মনিয়োগ করতে হবে।
আরও পড়ুন: আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দিন: গোপালগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী
দেশের আবহাওয়া পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন বৃষ্টি আমাদের জন্য আশীর্বাদ। এই বৃষ্টির পানি মানুষ ও ফসলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। বৃষ্টির পানিতে ফসল উৎপাদন ভাল হয় তাই বৃষ্টি কে আশির্বাদ মনে করতে হবে।
সবশেষে দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে ও আধুনিক বাংলাদেশে বিনির্মাণে সকলের সহায়তা কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে, শনিবার সকাল ৮টায় গণভবন থেকে সড়কপথে গোপালগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী। তিনি ৮টা ৫০ মিনিটে পদ্মা সেতু হয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কোটালীপাড়া পৌঁছান। সফরে তার সঙ্গী হয়েছেন আইসিটি উপদেষ্টা ও ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। এ সময় স্থানীয় নেতাকর্মীরা তাকে স্বাগত জানান। স্লোগানে স্লোগানে বরণ করে নেন আওয়ামী লীগ সভাপতিকে।
পরে তিনটি গাছের চারা রোপণ করে কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ঈদুল আজহা উপলক্ষে স্থানীয় নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
পরে দুপুরে টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের রূহের মাগফেরাত কামনা করে সূরা ফাতেহা পাঠ, দোয়া ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী তার টুঙ্গিপাড়ার নিজ বাড়িতে বিশ্রামে যান। রাতে সেখানে তিনি রাত্রিযাপন করবেন।
আগামীকাল ২রা জুলাই সকাল ৯টায় টুঙ্গিপাড়ায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ঈদুল আজহা উপলক্ষে রোববার সকালে দলীয় নেতাকর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
একইদিন (২রা জুলাই) বিকালে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন।
প্রসঙ্গত, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী এলাকা। এই এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি ৭ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে দুই দিনের সফরে কোটালীপাড়ায় পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ঈদের দিন মুক্তিযোদ্ধাদের ফুল, ফল ও মিষ্টি পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী
মুক্তি পেয়েছেন বঙ্গবন্ধুর ৬ খুনিসহ ২৬ জনকে ফাঁসিতে ঝোলানো ‘জল্লাদ’ শাহজাহান
মুক্তি পেয়েছেন বঙ্গবন্ধুর ৬ খুনিসহ ২৬ আসামির ফাঁসি কার্যকর করা এবং ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ৭৩ বছর বয়সী ‘জল্লাদ’ শাহজাহান ভূঁইয়া।
তিন দশকেরও বেশি সময় কারাভোগের পর রবিবার (১৮ জুন) সকাল দুপুর ১টার দিকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: চাঁদপুর জেলা কারাগারে বিএনপি নেতার মৃত্যু
কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রবিবার (১৮ জুন) দুপুর ১টার দিকে শাহজাহানকে মুক্তি দেওয়া হয়।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, শাহজাহান ১৯৫০ সালের ২৬ মার্চ নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ইছাখালী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষার পর স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
১৯৯২ সালের ৮ নভেম্বর শাহজাহানকে ডাকাতির মামলায় ৫ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানাসহ ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আরেকটি ডাকাতি ও হত্যা মামলায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও আরও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, সব মামলায় তাকে মোট ৪২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এরপর তাকে ১৯৯৫ সালের ২১ নভেম্বর মানিকগঞ্জ থেকে তাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।
কারা কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, শাহজাহান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৬ খুনি, চার যুদ্ধাপরাধী, দুই জেএমবি সদস্য, কুখ্যাত সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদার, শারমিন রিমা হত্যা মামলায় মনির ও খুকুসহ ২৬ আসামির ফাঁসি কার্যকর করেন।
এছাড়া একজন জল্লাদ হিসেবে তার ভূমিকা এবং শৃঙ্খলা প্রদর্শনের জন্য জেল কর্তৃপক্ষ তার কারাবাসের মেয়াদ থেকে ১০ বছর, ৫ মাস এবং ২৮ দিন ক্ষমা করেছিল।
হিসাব অনুযায়ী- শাহজাহান ৩১ বছর ৬ মাস ২ দিন জেল খাটেন।
আরও পড়ুন: কারাগারে ‘চিকিৎসক নিয়োগ বিধিমালা’ চূড়ান্তে ১ মাস সময় দিলেন হাইকোর্ট
চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা হত্যা মামলায় পৌর মেয়র কারাগারে
চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর ও সংঘর্ষ: দুই মামলায় ৫ শতাধিক নেতাকর্মী আসামি
চট্টগ্রাম বিএনপির সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে তারুণ্যের সমাবেশে আসার পথে ছাত্রলীগ-যুবদলের সংঘর্ষের জেরে জামালখান এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুরের ঘটনায় দুটি পৃথক মামলা করা হয়েছে।
নগরীর চকবাজার থানা ও কোতোয়ালি থানায় বৃহস্পতিবার বিকালে পুলিশ ও এক ছাত্রলীগ কর্মী বাদী হয়ে মামলা দুটি করেন। দুই মামলায় মোট ৫৩৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানায় করা মামলায় নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এরশাদ উল্লাহ, নগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোশাররফ হোসেনসহ ৭৮ জনের নাম উল্লেখ করে ১২০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইমরানুস সাজ্জাদ বাদি হয়ে এ মামলা করেন।
অপরদিকে, ছাত্রলীগ-যুবদলের সংঘর্ষের ঘটনায় চকবাজার থানায় মামলা করেন স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মী সাফায়েত হোসেন রাজু। এতে নগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক বাদশাসহ ৬০ জনের নাম উল্লেখ করে ২০০ থেকে ২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবির বলেন, গতকাল বুধবার জামালখান মোড়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙচুরের ঘটনায় ৭৮ জনের নাম উল্লেখ করে ১২০ থেকে ১৫০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪, সেকশন ১৫ (৩) এবং পেনাল কোড ১৪৭/১৪৮/১৪৯/৪২৭/৫০৬ এবং ১৮৬০ ধারায় মামলা করা হয়েছে। হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫ জনকে ঘটনার পর জামালখান মোড় এবং রাতে সাবেক ছাত্রদল নেতা জাসেদুরকে আটক করা হয়েছিল। বাকিদের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুর, ৫ যুবদল-ছাত্রদল নেতাকর্মী আটক
তিনি আরও বলেন, অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।
চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনজুর কাদের মজুমদার বলেন, কলেজ রোডে নাশকতার ঘটনায় ৬০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ২০০ থেকে ২৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ছাত্রলীগের এক কর্মী। তার নাম সাফায়েত হোসেন রাজু। তিনি ছাত্রলীগ কর্মী পরিচয়ের পাশাপাশি সরকারি কমার্স কলেজে অনার্স ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী বলে এজাহারে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুরে সিএমপি সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) আ স ম মাহতাব উদ্দিন জানান, দুই মামলায় বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে আটক করা হবে।
উল্লেখ্য, গতকাল বুধবার বিকালে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল চট্টগ্রাম বিভাগের উদ্যোগে নগরীর কাজীর দেউড়ি চত্বরে ‘দেশ বাঁচাতে তরুণ্যে সমাবেশের’- আয়োজন করে।
বিকাল ৩টার দিকে চান্দগাঁও থেকে সমাবেশে আসা সময় চট্টগ্রাম কলেজের সামনে ছাত্রলীগের কর্মীরা যুবদল ও ছাত্রদলের বাসে হামলা চালায়। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে পাথর নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। পরে যুবদল-ছাত্রদল সমর্থকরা মিছিল নিয়ে কাজীর দেউড়ি যাওয়ার পথে জামালখান এলাকায় সৌন্দর্য বর্ধনে নির্মিত ডা.খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দেওয়ালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্থিরচিত্র সম্বলিত ট্যাম্পার্ড, গ্লাস ও ম্যুরাল ভাঙচুর করে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ ও যুবদলের মধ্যে সংঘর্ষ, আহত ৫
চট্টগ্রামে নাশকতার মামলায় বিএনপির ৪০ নেতাকর্মীর বিচার শুরু
বঙ্গবন্ধুর ২০০ ভাষণ সম্বলিত ‘ভায়েরা আমার’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ভায়েরা আমার’ শিরোনামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ২০০টি ভাষণ সম্বলিত একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেছেন।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকের শুরুতেই মোড়ক উন্মোচন করেন তিনি।
‘ভাইয়েরা আমার’ নামটি প্রধানমন্ত্রীর নিজের দেওয়া। এছাড়া বইটির ভূমিকাও লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভাষণসমগ্রটির সংগ্রহ, সংকলন ও সম্পাদনা করেন প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম। বইটি প্রকাশ করেছে জিনিয়াস পাবলিকেশন্স।
জাতির পিতার এই ভাষণ সমগ্রের প্রধান বৈশিষ্ট হলো এতে এখন পর্যন্ত পাওয়া সকল ভাষণ অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। বইটির ২০০ ভাষণের মধ্যে বাংলাদেশ বেতারের আর্কাইভস থেকে প্রাপ্ত টেপ-সিডি হতে ১০০টিরও বেশি ভাষণ সংগ্রহ করা হয়; যা শ্রুতিলিখনের মাধ্যমে বইটিতে সংযোজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর হাতে বই তুলে দিলেন গাজীপুরের আ.লীগ নেতা আজমত উল্লাহ
প্রতিটি ভাষণের যথার্থতা ও নির্ভরযোগ্যতা যথাযথভাবে যাচাই করা হয়েছে। বইটিতে প্রতিটি ভাষণের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হাইলাইট করে আলাদাভাবে প্রদর্শন করা হয়েছে।
এছাড়া সূচিতে ভাষণের বিষয়বস্তু, সাল ও তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে।
জাতির পিতার ভাষণ শুধু বাংলাদেশেই নয় সমগ্র বিশ্বে এক অমূল্য দলিল।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুবই ভালো: রাষ্ট্রপতি
ভাষণসমগ্রটির ভূমিকাতে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ‘নতুন প্রজন্ম বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুধু পড়া নয়, সেগুলোর মর্মার্থ অনুধাবন করে নিজ নিজ জীবনে অনুশীলন করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন জাতির পিতা সোনার বাংলা গড়তে সোনার মানুষ চেয়েছিলেন। সেই সোনার মানুষ হতে হলে জাতির পিতার আদর্শ ও জীবনাচরণ চর্চা করা অত্যাবশ্যক।
ভাষণসমগ্রটি রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, গবেষক, শিক্ষার্থী, ও আগামী প্রজন্মের জন্য একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত হবে মর্মে মন্তব্য করেন এর সম্পাদক নজরুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: জনপ্রিয় কে-পপ ব্যান্ড বিটিএস নিয়ে চলচ্চিত্রকার অনার্য মুর্শিদের বই
প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের বৈঠক অনুষ্ঠিত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের নিয়মিত বৈঠক শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (৯ জুন) রাজধানীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: বিএনপিকে বাইরের শক্তি ক্ষমতায় বসাতে পারবে না, বরং সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে: প্রধানমন্ত্রী
ট্রাস্টের চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা চলমান প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
ট্রাস্টি বোর্ডের ব্যবস্থাপনা কমিটি পূর্ববর্তী সভার কার্যবিবরণী অনুমোদন করেন এবং জাদুঘর সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করে।
এছাড়া বৈঠকে উপ-কমিটির প্রতিবেদনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়।
সভায় ট্রাস্টের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ৬ দফা দাবির মধ্যেই ছিল স্বাধীনতার প্রেরণা: প্রধানমন্ত্রী
১০-১৫ দিনের মধ্যে বিদ্যুতের সমস্যা শেষ হবে: প্রধানমন্ত্রী
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে বঙ্গবন্ধুর ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিশ্ব শান্তি পরিষদ কর্তৃক ‘জুলিও কুরি শান্তি পদক’ প্রদানের সুবর্ণজয়ন্তী যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন উপলক্ষে শুক্রবার (২৬ মে) নিউইয়র্কস্থ জাতিসংঘ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্থায়ী প্রতিনিধির নেতৃত্বে মিশনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয় এবং বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবিসংবাদিত নেতৃত্ব ও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার অসামান্য অবদান নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনা পর্বে রাষ্ট্রদূত মুহিত তার বক্তব্যের শুরুতেই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, আমাদের স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং তার জীবনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকে তার বিশ্ব শান্তির দূত হয়ে ওঠার বিষয়টি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু নিপীড়িত বাঙালি জাতিকে শোষণের শৃঙ্খল মুক্ত করে ক্ষান্ত হননি, দেশ বা বিদেশে যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘন দেখেছেন, সেখানেই তিনি প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন। এ কারণেই বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তাকে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ জুলিও কুরি আন্তর্জাতিক শান্তি পদকে ভূষিত করা হয়।
আরও পড়ুন: ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপিত
ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধুর জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রাপ্তির সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপিত
ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস মঙ্গলবার যথাযোগ্য মর্যাদায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিশ্বশান্তি পরিষদ কর্তৃক জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রদানের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করেছে।
১৯৭৩ সালের এই দিনে মহান স্বাধীনতার স্থপতি এবং গণতন্ত্র ও শান্তি আন্দোলনের অগ্রদূত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্বশান্তি পরিষদ কর্তৃক জুলিও কুরি শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন।
ঐতিহাসিক এই দিনটি উপলক্ষে বাংলাদেশ দূতাবাস জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার অসামান্য অবদানকে স্মরণ করে এক কর্মসূচি গ্রহণ করে।
রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানের নেতৃত্বে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্তৃক বঙ্গবন্ধু কর্নারে অবস্থিত জাতির পিতার আবক্ষ মূর্তিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দিনের অনুষ্ঠান শুরু হয়।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মস্কোতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সংবর্ধনা সভার আয়োজন
এ উপলক্ষে দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনান ডেপুটি চিফ অব মিশন ফেরদৌসী শাহরিয়ার এবং কাউন্সেলর (পাবলিক ডিপ্লোমেসি) আরিফা রহমান রুমা। এরপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
পরে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবিসংবাদিত নেতৃত্ব এবং বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার অসামান্য অবদান তুলে ধরে এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং স্বাধীনতা অর্জন ও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার অবিস্বরণীয় ভূমিকার কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
২৩ মে বাঙালি জাতির জন্য এক গৌরবময় দিন হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, জাতির পিতা শান্তি ও স্বাধীনতার জন্য তার সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি সবসময় দেশ-বিদেশে শান্তিকামী জনগণকে সমর্থন করেছেন এবং তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত ইমরান বলেন, বিশ্ব শান্তি ও স্বাধীনতা অর্জনে অসামান্য অবদানের জন্য বিশ্ব শান্তি পরিষদ বঙ্গবন্ধুকে তাদের সর্বোচ্চ পুরস্কার জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রদান করে।
তিনি শোষণ-বঞ্চনামুক্ত শান্তিপূর্ণ বিশ্ব এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
মিনিস্টার (ইকনোমিক) মো. মেহেদি হাসানও আলোচনায় অংশ নেন এবং স্বাধীনতা অর্জন ও বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতার দীর্ঘ সংগ্রামের ওপর আলোকপাত করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে শহিদ তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এক বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে কর্মসূচির সমাপ্তি হয়। কর্মসূচি পরিচালনা করেন হেড অব চ্যান্সারি ও কাউন্সেলর (পলিটিক্যাল) মো. মনিরুজ্জামান।
আরও পড়ুন: ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত
জাপানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে জাপানি চিত্রকলা বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠান
বাংলাদেশ-জাপান বন্ধুত্বের ৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর সংগ্রামী জীবন নিয়ে জাপানের টোকিওতে জাপানি চিত্রকলা 'মাঙ্গা' ফর্মের কমিক বই 'ফাদার অব দ্য ন্যাশন বঙ্গবন্ধু' এর দ্বিতীয় প্রকাশনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার জাপানের রাজধানী টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসের অডিটোরিয়ামে এ প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ।
রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ বলেন, 'ফাদার অব দ্য ন্যাশন বঙ্গবন্ধু' বইটিতে ছবি ও বর্ণনার মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য বঙ্গবন্ধুর অবদান সুন্দরভাবে তুলে ধরা হয়েছে। শিশু ও কিশোররা বইটি পড়ার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে যেমন জানতে পারবেন তেমনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস সম্পর্কেও জানতে পারবেন।
বিশেষ অতিথি লেখক ও সাংবাদিক মনজুরুল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এমন কমিক বই আর হয়নি। এই কমিক বই তিন ভাষায় প্রকাশিত হওয়ায় বাংলাদেশের তরুণদের পাশাপাশি জাপানি তরুণদের আকৃষ্ট করবে। এছাড়া ইংরেজি পাঠকদেরও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে সহায়তা করবে। এই বই থেকে অ্যানিমেশন মুভি হলে তা আরেকটি ভিন্ন মাত্রা যোগ করবে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে জাপানি চিত্রকলা 'মাঙ্গা' ফর্মে কমিক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত আইওয়ামা কিমিনোরি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাপান সফরের সময় বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এই মাঙ্গা কমিক বই প্রকাশ করা একটি দারুণ ব্যাপার। এর ফলে জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে আরও একটি ভিন্ন মাত্রা যোগ হলো।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন জাপান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনের বাংলা রেডিও বিভাগের প্রধান শিখা মুরাকামি, বইটির লেখক ও প্রকাশক স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা এম ই চৌধুরী শামীম, বইটির সহ-লেখক শাইন পার্টনারস করপোরেশন জাপানের প্রধান নির্বাহী ইয়েমতো কিয়েতা। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী দিলারা আফরোজ খান রূপা।
শুক্রবার জাপানের রাজধানী টোকিও'র আকাসাকা প্যালেসে জাপান সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার বোনের হাতে বইটি তুলে দেন বইটির লেখক ও প্রকাশক স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা এম ই চৌধুরী শামীম ও বইটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক স্কলার্স বাংলাদেশের সোসাইটির উপদেষ্টা, ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান, বুয়েট গ্র্যাজুয়েটস ক্লাবের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর। এ সময় পাঁচ পর্বে প্রকাশিতব্য বইটির বাকি চার পর্বের প্রকাশ ও প্রকাশনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী তার মূল্যবান দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
বইটি হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন, স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী দিলারা আফরোজ খান রূপা, সহ-লেখক শাইন পার্টনারস করপোরেশন জাপানের প্রধান নির্বাহী ইয়েমতো কিয়েতা, শাইন পার্টনারস করপোরেশনের সিএফও ইয়েমতো এআই, লেখক ও অভিনেতা আল মনসুর বেলাল, তথ্যচিত্র নির্মাতা কায়সার কাদের সেলিম।
গত ৫ এপ্রিল ঢাকায় বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত আইওয়ামা কিমিনোরি। বইটি প্রকাশ করেছে স্কলার্স বাংলাদেশ সোসাইটির সহপ্রতিষ্ঠান এনএস পাবলিশার্স।
প্রকাশনা সহযোগী হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকাস্থ জাপান দূতাবাস ও ম্যাক্স গ্রুপ।
জাপানিদের কমিক ও কার্টুন ধাঁচের চিত্রকলার একটি সৃজনশীল এবং সুপরিচিত ধরন হচ্ছে মাঙ্গা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস মাঙ্গা ফর্মে তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে। বইটিতে বর্ণনা এবং ব্যতিক্রমী ছবির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য জীবন তুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম এবং বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের অবদানের কথা বর্ণনা করা হয়েছে।
জাপানি আর্ট ফর্ম 'মাঙ্গা' চিত্রকলার একটি ব্যতিক্রমী ধারা, যা নিজ বৈশিষ্ট্যে স্বতন্ত্র। এর সঙ্গে পাশ্চাত্য ধারা বা অন্য কোনো ফর্মের সম্পৃক্ততাও নেই। জাপানি কমিকের অত্যন্ত জনপ্রিয় এই ফর্মটি জাপানি চিত্র ও প্রকাশনা শিল্পে স্থায়ী আসন করে নিয়েছে। অভিযান কাহিনি থেকে ফ্যান্টাসি, শিশুপাঠ থেকে বরণীয় ব্যক্তিত্বের জীবনী, লোককথা থেকে শুরু করে আধুনিক বাস্তব ও পরাবাস্তববাদী উপন্যাস, ইতিহাস থেকে শুরু করে রোমাঞ্চ, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী থেকে শুরু করে রহস্যভেদী কাহিনি সবই অল্পকথায় এবং অসনাতন ছবিতে মাঙ্গায় মূর্ত হয়ে থাকে।
‘ফাদার অব দ্য ন্যাশন বঙ্গবন্ধু' বইটি মাঙ্গা ফর্মে বাংলা, ইংরেজী এবং জাপানি ভাষায় প্রকাশের মধ্য দিয়ে চিত্রশিল্পের এই ফর্মটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুপরিচিত হওয়ার প্রয়াস পাবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর সংগ্রামী জীবন সুপাঠ্য আকারে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে অনুষ্ঠিত হলো ৭টি ভাষায় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ প্রতিযোগিতা
বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে জাতিসংঘে শিশু-কিশোর আনন্দমেলা