শিক্ষক
এক শিক্ষার্থীর জন্য ৩ শিক্ষক!
খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার ময়নাপুর গ্রামে ২৯টি পরিবারের বসবাস। গ্রামের বাসিন্দাদের শিশু সন্তানদের পড়াশোনার সুবিধায় ১৯৯১ সালে গড়ে ওঠে ময়নাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুলটি ২০১০ সালে নিবন্ধিত হয়। ২০১৩ সালে হয় সরকারীকরণ।
কিন্তু বর্তমানে স্কুলটির দ্বিতীয় শ্রেণিতে আছে মাত্র একজন শিক্ষার্থী। তবে প্রতিষ্ঠানটিতে একজন শিক্ষার্থীর বিপরীতে রয়েছেন তিন শিক্ষক। এছাড়া উপজেলার আরও ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ জনের নিচে বলে জানা গেছে।
ডুমুরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ডুমুরিয়া উপজেলার ২১৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে আগের ১১০টির সঙ্গে নতুন জাতীয়করণকৃত ১০৪টি বিদ্যালয়ে ২২ হাজার ৬১৭ জন ছাত্র-ছাত্রী আছে। এর মধ্যে ২১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ জনের নিচে। এর মধ্যে ময়নাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে মাত্র একজন শিক্ষার্থী। ময়নাপুর স্কুল ছাড়াও উপজেলার আরও ২০টি স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ এরও নিচে রয়েছে।
আরও পড়ুন: শিগগিরই দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে টিফিন চালু হবে: প্রতিমন্ত্রী
ময়নাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্বপ্না রানী বলেন, ২৯টি পরিবার নিয়ে আমাদের ময়নাপুর গ্রাম। গত পাঁচ বছর গ্রামে কোনো শিশু জন্ম নেয়নি। এতে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়েনি।
ধীরে ধীরে স্কুলটির শিক্ষার্থী কমে এসেছে জানিয়ে ময়নাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক তাপস কুমার মন্ডল বলেন, ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠার সময় এ স্কুলে ১১৫ জন শিক্ষার্থী ছিল। তখন এ গ্রামে ৪১টি পরিবার ছিল। ২০১০ সালে নিবন্ধিত হওয়ার পর শিক্ষার্থী ছিল ৬৫। তখন এ গ্রামে মাত্র ২৯টি পরিবারে বসবাস ছিল। বাকি ১২টি পরিবার গ্রাম ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যায়। ২০১৩ সালে সরকারীকরণের পর শিক্ষার্থী ৫০-এর নিচে নেমে আসে। এরপর থেকে শিশু না জন্মের কারণে স্কুলে শিক্ষার্থী কমতে থাকে। এ বছর স্কুলে ভর্তি হওয়ার মতো ছয়টি শিশু ছিল। কিন্তু পাঁচ জনের জন্ম নিবন্ধন সনদ নেই। এ কারণে তারা ভর্তি হতে পারেনি। ফলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে ওই একজন ছাত্রই রয়েছে।
আরও পড়ুন: রাণীশংকৈলে অধিকাংশ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই
ডুমুরিয়া উপজেলার ময়নাপুর ক্লাস্টারের পরিবার পরিকল্পনা মাঠকর্মী সাদিয়া আক্তার শোভা বলেন, ময়নাপুর গ্রামে ২৯টি পরিবার রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে এ গ্রামে শিশু জন্মের হার খুবই কম। ২০১৯ সালে দুটি, ২০২০ সালে একটি, ২০২১ সালে একটি ও ২০২২ সালে একটি শিশুর জন্ম হয়। ফলে এ গ্রামে শিশুর সংখ্যা খুবই কম। গ্রামে জনবসতি কম ও পরিবার প্রতি সন্তান থাকায় নতুন শিশু নেয়ায় কম আগ্রহের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।
এদিকে, শিক্ষার্থী কমে আসায় ময়নাপুর স্কুলটি বন্ধ করে দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। ডুমুরিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সিকদার আতিকুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থী সার্ভের পর গত মার্চ মাস ময়নাপুর স্কুলটি বন্ধের জন্য জেলা শিক্ষা অফিসে চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও সিদ্ধান্ত আসেনি।
খুলনা জেলা শিক্ষা অফিসার মো. সিরাজুদ্দোহা বলেন, ওই স্কুলটি বন্ধ করে সেখানকার শিক্ষকদের অন্যত্র বদলির জন্য ঢাকায় চিঠি পাঠিয়েছি। সিদ্ধান্ত বা নির্দেশনা পেলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় ৩৬১ বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার!
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ: পরীক্ষার ১ম ধাপে উত্তীর্ণ ৪০ হাজার ৮৬২
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘সহকারী শিক্ষক’ নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার প্রথম ধাপের ফল প্রকাশিত হয়েছে। ফলাফলে শর্তসাপেক্ষে ২২ জেলায় মোট ৪০ হাজার ৮৬২ জন প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট (www.dpe.gov.bd)- এ পাওয়া যাবে।
মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি এবং পরীক্ষার কেন্দ্র পরে জানানো হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৪ জেলার সম্পূর্ণ (চাপাইনবাবগঞ্জ, মগুরা, শেরপুর, গাজীপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, ঢাকা, মাদারীপুর, মুন্সিগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চট্টগ্রাম, মৌলভীবাজার, লালমনিরহাট) এবং আট জেলার আংশিক (সিরাজগঞ্জ, যশোর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, টাংগাইল, কুমিল্লা, নোয়াখালী) লিখিত পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে শর্তসাপেক্ষে সর্বমোট ৪০ হাজার ৮৬২ জন প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে।
২২ এপ্রিল প্রথম ধাপে ২২ জেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২০ মে ৩০ জেলায় দ্বিতীয় ধাপের পরীক্ষা এবং তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা ৩১ জেলায় ৩ জুন অনুষ্ঠিত হবে।
এ বছর সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রার্থীর সংখ্যা ১৩ লাখ ৯ হাজার ৪৬১। তৃতীয় ধাপে মোট পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা এক হাজার ৮১১টি এবং লিখিত পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে ৬১টি জেলায়।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চার লাখ ২৮ হাজার ৭০১টি শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে।
আরও পড়ুন: ২০২৩ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সব বিষয়ে
৪৭১ শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ
প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকের নিয়োগ পরীক্ষা আগামীকাল থেকে শুরু
আগামীকাল শুক্রবার থেকে সারা দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা-২০২০ এর লিখিত পরীক্ষা শুরু হচ্ছে।
এর মধ্যে ১ম ধাপে ২২ জেলায় ও ২য় ধাপে ২০ মে ৩০ জেলায় এবং ৩ জুন ৩য় ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ৩১টি জেলায়।
বৃহস্পতিবার সচিবলয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ২০২০ উপলক্ষে আয়োজতি সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আগামীকাল ২২ এপ্রিল প্রথমধাপে ২২ জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ১৪ জেলার সব এবং আট জেলার আংশিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ২০ মে দ্বিতীয়ধাপে ৩০ জেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে আট জেলার সব এবং ২২ জেলার আংশিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া তৃতীয়ধাপে ৩১ জেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ১৭ জেলার সব এবং ১৪টি জেলার আংশিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীরা নতুন বইয়ের সাথে ২ হাজার টাকাও পাবে: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০ অক্টোবর ২০২০ সালে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ৩২ হাজার ৫৭৭টি সহকারী শিক্ষকের শূন্যপদে জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কিন্তু করোনা কারণে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। ইতোমধ্যে অবসরজনিত কারণে আরও দশ হাজারেরও বেশি সহকারী শিক্ষকের পদশূন্য হয়ে পড়েছে। এতে করে বিদ্যালয়সমূহে শিক্ষক ঘাটতি দেখা দিয়েছ; যা পাঠদান কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে। এ সমস্যা নিরসনকল্পে মন্ত্রণালয় পূর্বের বিজ্ঞপ্তির শূন্যপদ ও বিজ্ঞপ্তির পরের শূন্যপদ মিলিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়।
তিনি বলেন, সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা পরিচালনার স্বার্থে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর হতে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা পরিচালনা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। প্রতিটি দায়িত্ব সুষ্ঠু ও সুচারুভাবে পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অতীতের অভিজ্ঞতায় আমরা দেখেছি স্থানীয় অসাধুচক্র শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। এবার যেন সেটা না হয় সেটি নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা অপর্যাপ্ত হলে বিভাগীয় কমিশনার/মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে নারী পুলিশসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে। প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় জনবলসহ মেটাল ডিটেক্টর সরবরাহসহ হ্যান্ড মেটাল ডিটেকটর দ্বারা পরীক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশি করা হবে। এক্ষেত্রে নারী পরীক্ষার্থীদের মহিলা পুলিশ দ্বারা তল্লাশির ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জাকির হোসেন বলেন, পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে নির্ধারিত আসন গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষা কেন্দ্রের সকল প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেয়া হবে। এ ছাড়া পুরুষ পরীক্ষার্থী ও মহিলা পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্র যথাসম্ভব পৃথক করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্রের রঙিন ছবি ও স্বাক্ষর এবং রঙিন ছবিযুক্ত হাজির শিটের পরীক্ষার্থীর চেহারা মিলিয়ে দেখা হবে। এছাড়া ওএমআর শিটের পরীক্ষার্থীর চেহারা মিলিয়ে দেখা হবে। কোন পরীক্ষার্থী কোন সেটের প্রশ্ন পাবেন তা পরীক্ষা শুরুর ৫ মিনিট আগে জানতে পারবেন। ভিন্ন সেটে পরীক্ষা দিলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে।
আরও পড়ুন: ২০ রমজান পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা থাকবে: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী
এসময় প্রতিমন্ত্রী লিখিত পরীক্ষার ফলাফল ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমকি ও গণশক্ষিা মন্ত্রণালয়রে সম্মানতি সচবি জনাব আমনিুল ইসলাম খান, প্রাথমকি শক্ষিা অধদিপ্তররে মহাপরচিালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম, প্রাথমিক ও গণশক্ষিা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমকি শিক্ষা অধদিপ্তররে কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২৮ দিন পর হৃদয় মন্ডল ক্লাসে
মুন্সীগঞ্জে বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় মন্ডল ২৮ দিন পর কর্মস্থলে যোগদান করে ক্লাস নিয়েছেন। পরে বিদ্যালয় মাঠে সম্প্রীতি সমাবেশে তাঁকে সম্মান জানানো হয়।
এর আগে বিজ্ঞানের ক্লাসে আলোচনার সূত্র ধরে ১৯ দিন কারাবরণ এবং জেল থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার আরও ৯ দিন অপেক্ষার পর মঙ্গলবার তিনি প্রিয় কর্মস্থলে যোগদান করেন। পরে তিনি রুটিন অনুযায়ী বিজ্ঞান ও গণিতের ক্লাস নেন। প্রিয় শিক্ষক ফিরে আসায় শিক্ষার্থীরাও খুশি। এর আগে ১৩ এপ্রিল বিদ্যালয়ে এসে তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হন তিনি। ১০ এপ্রিল তার জামিন মঞ্জুর হয়।
এই যোগদানকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দুপুরে বিদ্যালয় মাঠে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সম্প্রীতি সভার আয়োজন করে। এতে হৃদয় মন্ডলকে ফুল দিয়ে তার ত্যাগের জন্য সম্মান জানানো হয়।
বিনোদপুর রাম কুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় মন্ডল বলেন, ‘আমি আজ খুব খুশি। আমি আমার প্রিয় প্রতিষ্ঠানে আবার ফিরে আসতে পেরেছি। ক্লাস করতে পারছি। এটি পরম পাওয়া। আমার খুব শান্তি লাগছে। আমি সব ভুলে গেছি। আবার সব নতুন করে আগের মত সবার সঙ্গে সস্প্রীতি রেখে শুরু করেছি।
আরও পড়ুন: জামিনে কারামুক্ত স্কুলশিক্ষক হৃদয় মন্ডল
তিনি বলেন, ‘ছাত্রদের প্রতি আমার কোনো কষ্ট বা ক্ষোভ নেই। ওদের আমি ক্ষমা করে দিয়েছি। কিন্তু কোমলমতি শিক্ষার্থীদের যারা ব্যবহার করেছে, যারা এই ঘটনার পেছনের মাথা তাদের তো শস্তি হওয়া দরকার।’
বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘শিক্ষক হৃদয় মন্ডল আজকে ক্লাসে গেছে। এতে আমি খুব খুশি। যে কুচক্রী মহল এই শিক্ষককে যেভাবে হেনস্তা করতে চেয়েছিল তাতে তারা সফল হয়নি। এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা আজকে যেভাবে তাকে গ্রহণ করেছে এটাই তার প্রমাণ। আমি এক মাস তিন দিন দেশের বাইরে ছিলাম। আমি থাকলে হয়তো এ ঘটনা ঘটতো না। আমার খুব খারাপ লেগেছে আমার অনুপস্থিতির সময়ে এই ঘটনা ঘটেছে।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমার বিদ্যালয়ে যে শূণ্যতা সৃষ্টি হয়েছিল হৃদয় মন্ডল যোগদান করায় সেই শূণ্যতা পূরণ হয়েছে। শিক্ষার্থীরাও খুশি হয়েছে। স্কুলের হাতে গোনা কয়েক শিক্ষার্থীর জন্য আমার স্কুলের সুনামও নষ্ট হয়েছিল। আজকে সমাবেশে আমরা দেখেছি আপামর ছাত্রছাত্রী শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটি, আশপাশের লোকজন সবাই এসেছে। তাদের ভুলটা তারা বুঝতে পেরেছে। আমরা আমাদের হারানো ঐতিহ্য যাতে আবার ফিরিয়ে নিতে পারি সেজন্য সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা কাজ করবো। সেজন্য আমরা যৌথভাবে উদ্যোগ নিয়েছি। ইনশাল্লাহ আমাদের স্কুল আগামীতে আরও এগিয়ে যাবে। ভালো ফলাফল করবে। স্কুলের যে একটা বদনাম হলো সেটা যেন ভবিষ্যতে আর না হয় সেই ফাঁকফোঁকরগুলো আমরা অচিরেই বন্ধ করে দিব।’
মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র হাজী মোহাম্মদ ফয়সাল বিপ্লব বলেন, ‘আজকে সকল শিক্ষক শিক্ষার্থীদের যে মিলনমেলা সেটা অত্র এলাকার এবং স্কুলের দুষ্টদের দমন করতে অবশ্যই সাহায্য করবে। ছাত্র এবং শিক্ষকদের এই ঘটনায় যে জড়তা সৃষ্টি হয়েছিল সেটা কাটানোর জন্য আজকের এই মিলনমেলায় আমরাও একত্রিত হয়েছি।’ তিনি ম্যানেজিং কমিটিকে শিক্ষক হৃদয় মন্ডলের কোয়ার্টার এবং এর আশপাশে সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে দিতে বলেছেন।
গত ২০ মার্চ বিজ্ঞান ক্লাসে আলোচনার অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার পর ২২ মার্চ বিক্ষোভ হয়। পরে গ্রেপ্তার করা হয় শিক্ষক হৃদয় মন্ডলকে। হৃদয় মন্ডল প্রায় ২১ বছর ধরে বিদ্যালয়টিতে বিজ্ঞান ও অঙ্ক পড়ান।
আরও পড়ুন: স্কুলশিক্ষক হৃদয় মন্ডলের মুক্তি দাবি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের
তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা হচ্ছে কাল
এদিকে শিক্ষা অধিদপ্তরের গঠিত এক সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি পাঁচ কর্মদিবস শেষ হলেও রিপোর্ট জমা হয়নি। তবে এক সদস্য বিশিষ্ট এই তদন্ত কমিটির একমাত্র সদস্য সরকারি হরগঙ্গা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল হাই তালুকদার জানান, পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার রিপোর্ট জমা দেয়ার কথা ছিল। তবে বুধবার শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর রিপোর্ট পেশ করা হবে। তবে তদন্তের রিপোর্ট সম্পর্কে কিছু বলতে রাজি হননি তিনি। তবে তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট সকলের সাক্ষ্য গ্রহণ করে প্রকৃত ঘটনাই তদন্ত রিপোর্টে তুলে ধরার চেষ্টা করেন তিনি।
যৌন হয়রানির অভিযোগে খুবির আরেক শিক্ষক বরখাস্ত
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) চারুকলা অনুষদের অধীন ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিনের এক সহকারী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন ২২ শিক্ষার্থী। তাদের প্রত্যেকেরই অভিযোগ বিভিন্ন সময় শিক্ষক বিটপ শোভন ছাত্রীদের মৌখিক ও মানসিকভাবে যৌন হয়রানি করতেন।
গত রবিবার (৩ এপ্রিল) এই শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যদিও সব ঘটনাকেই সাজানো ও ষড়যন্ত্র দাবি ওই শিক্ষকের।
অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম বিটপ শোভন বাছাড়।
এর আগে ২০২১ সালের ২৬ আগস্ট গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক ছোটন দেবনাথের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেন তারই এক সহকর্মী। ৬০ কার্যদিবসে তদন্ত শেষ করার বিধিবিধান থাকলেও সাত মাসেও শেষ করতে পারেনি তদন্ত কমিটি।
আরও পড়ুন: যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় খুবি শিক্ষক কারাগারে
অপ্রীতিকর এসব ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিব্রত বলে জানান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস।
তিনি বলেন, সব কিছু সুচারুভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। সর্বশেষ অভিযোগ পাওয়ার পর ড্রইং এ্যান্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক বিটপ শোভন বাছাড়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগেও বিভিন্ন সময়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় একাধিকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: খুবিতে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ
খুবিতে সশরীরে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু ৩০ জানুয়ারি
ববি'র শিক্ষকের বিরুদ্ধে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ শিক্ষার্থীর
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ করেছেন এক শিক্ষার্থী।
সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সুপ্রভাত হালদারের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৮-১৯ বর্ষের ছাত্র এবিএম মুশফিকুর রহমান।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মুশফিকুর রহমান দুপুর দেড়টার দিকে একাডেমিক ভবনের চার তলা থেকে নিচ তলায় যাচ্ছিলেন। এই সময় পেছন থেকে সহকারী অধ্যাপক সুপ্রভাত হালদার তাকে ডাক দেন। জায়গাটি কোলাহলপূর্ণ থাকায় ওই ডাক শুনতে না পেয়ে নিচতলার উদ্দেশে হেঁটে যায় মুশফিকুর রহমান। এতে সুপ্রভাত হালদার ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে শার্টের কলার ধরে টানাহেচড়া শুরু করে।
আরও পড়ুন: গুগলে ডাক পেলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সায়েম
এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থী এর কারণ জানতে চাইলে সুপ্রভাত হালদার কোনো উত্তর না দিয়ে শার্টের কলার ধরে টানতে টানতে নিজের কক্ষে নিয়ে উপর্যুপরি লাঞ্ছিত করে ও শার্ট ছিড়ে ফেলে।
শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমানের অভিযোগ, সুপ্রভাত হালদার তার কক্ষে নিয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এবং একাডেমিক ক্যারিয়ার ধ্বংসের হুমকিসহ নানাবিধ হুমকি দেন। পরে এ ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. খোরশেদ আলম দেখতে পেয়ে ওই শিক্ষার্থীকে বের করে নিয়ে আসেন।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে হামলার প্রতিবাদে ববি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
এব্যাপারে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. খোরশেদ আলম জানান, দুপুরে আইন বিভাগের ক্লাস চলাকালীন সময়ে ওই শিক্ষার্থীসহ আরও কয়েকজন ক্লাস রুমের বাইরে হৈচৈ করছিলেন। এ ঘটনায় আইন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ওই শিক্ষার্থীদের হৈচৈ করতে নিষেধ করে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। দুজনকেই বিষয়টি বুঝিয়ে মীমাংসা করে দেয়া হয়েছে। তারপরও ওই শিক্ষার্থী সন্ধ্যায় উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ কেন দিয়েছে আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে একাধিকবার চেষ্টা করেও সুপ্রভাত হালদারের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
জৈন্তাপুরে দু'পক্ষের সংঘর্ষে মাদরাসা শিক্ষক নিহত, আহত শতাধিক
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুরে জমি বিকিকিনি নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে মাইকে ঘোষণা দিয়ে প্রায় ৮ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে এক মাদরাসা শিক্ষক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। এ কারণে সিলেট-তামাবিল সড়কে কয়েক ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে লোকজনকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।
রবিবার (৩ এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও লামা শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ ও হাউদপাড়া গ্রামবাসীর মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। থেমে থেকে সংঘর্ষ চলে সোমবার সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত।
নিহত মাদরাসা শিক্ষক সালেহ আহমদ (৫০) উপজেলার হেমু ভাটপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিফত আলীর পুত্র। তিনি একজন কুরআনে হাফিজ ও মাওলানা। তিনি সিলেট নগরীর মেজরটিলা তাহফিজুল কোরআন মাদরাসায় শিক্ষকতা করতেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও হাদপাড়া গ্রামের বাসিন্দা রফিক আহমদ ও শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দা রশিদ আহমদের লোকজনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে রবিবার (৩ এপ্রিল) রাতে তারাবির নামাজের পর উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে মাইকে ঘোষণা দিয়ে রাত ১২টার দিকে হাদপাড়া ও শ্যামপুর গ্রামবাসী হরিপুর বাজারে সংঘর্ষে জড়ায়। সকাল পর্যন্ত থেমে থেমে চলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষ। এ সময় আশপাশের গ্রাম থেকে মুরব্বি ও পুলিশ এসে সংঘর্ষ থামাতে চেষ্টা করেন। সোমবার সকালে স্থানীয় মাদরাসার একদল আলেম দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করতে ঘটনাস্থলে যান। এই দলে ছিলেন সালেহ আহমদ।
আরও পড়ুন: জৈন্তাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিহতের এক স্বজন জানান, সকাল ৭টার দিকে আলেমদের প্রতিনিধি দল যখন ঘটনাস্থলে যায় ঠিক তখন পুলিশ সংঘর্ষ থামাতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে সবাই এদিক সেদিক ছুটতে থাকে। একপর্যায়ে সালেহ আহমদ মাটিতে পড়ে যান। তখন হাদপাড়া গ্রামের লোকজন সালেহ আহমদকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে। পরে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
সিলেট জেলা পুলিশের এএসপি (মিডিয়া) লুৎফুর রহমান সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে রয়েছেন। এছাড়া সিলেট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটও ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন। পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার চেষ্টা করছে পুলিশ।
তবে সোমবার দুপুর ১টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন সিলেট জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান, সিলেট জেলা পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এড. নাসির উদ্দিন খান।
আরও পড়ুন: জৈন্তাপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
খুলনায় শিশুকে যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক আটক
খুলনার খালিশপুরে এক শিশুকে যৌন হয়রানির অভিযোগে এক শিক্ষককে আটক করা হয়েছে। রবিবার দুপুরে উপজেলার বিআইডিসি রোড থেকে তাকে আটক করা হয়।
আটক মো. নাঈম খালিশপুর টিঅ্যান্ডটি মোড় এলাকার বাসিন্দা বাবুল হাওলাদারের ছেলে। তিনি নগরীর নিউমার্কেট এলাকার একটি মাদরাসায় পার্ট টাইম শিক্ষকতা করতেন। এছাড়া খালিশপুর হাউজিং এলাকায় তার একটি কোচিং সেন্টারও রয়েছে।
আরও পড়ুন: সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: কক্সবাজারে প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার ৩, অস্ত্র জব্দ
খালিশপুর খানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন খান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, শনিবার বিকালে কোচিং শেষে সব শিশু বের হলে ভুক্তভোগী ওই শিশুকে আটকে রেখে যৌন হয়রানি করেন নাঈম। পরে শিশুটি তার মায়ের কাছে ঘটনাটি খুলে বললে বিষয়টি জানাজানি হয় এবং সকালে পুলিশ ভিকটিমের পরিবারকে থানায় নিয়ে আসে।
তিনি জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নাঈমকে খালিশপুর বিআইডিসি রোড থেকে আটক করা হয়। এ ব্যাপারে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টা: যুবক গ্রেপ্তার
ইবিতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের হাতাহাতি, শ্রদ্ধাঞ্জলি ভাংচুর
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) স্মৃতিসৌধে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করাকে কেন্দ্র করে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এতে ক্যাম্পাসের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষকদের মধ্যে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
শনিবার সকালে তিন দফায় শিক্ষকদের মধ্যে এই হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের শ্রদ্ধাঞ্জলি বেদি ভাঙচুর করা হয়।
ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ থাকলেও সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
এদিকে, ঘটনার প্রতিবাদে বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালের পাদদেশে মানববন্ধন করে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিট।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া।
আরও পড়ুন: ইবির প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু ২১ মার্চ
পরে শিক্ষক সংগঠন, ছাত্র সংগঠন, হলসমূহ, বিভাগসমূহ একে একে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানায়। শ্রদ্ধা নিবেদনের একপর্যায়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের নাম ঘোষণা না করায় তারা বেদিতে উঠতে চেষ্টা করে। এ সময় সহকারী প্রক্টর ড. শফিকুল ইসলাম তাদের বাধা দেন। এতে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের শহিদুল ইসলামের সঙ্গে সহকারী প্রক্টরের বাগ্ বিতণ্ডা হয়। এ সময় বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী আখতার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দারসহ অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, অধ্যাপক ড. আহসান উল আম্বিয়া, অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ, সহকারী অধ্যাপক আরিফুল ইসলাম, নাহিদ হাসান, হাফিজুল ইসলামসহ প্রায় ২৫ জন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
বাগ্বিতণ্ডার পরে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের শিক্ষকেরা বেদিতে ওঠার চেষ্টা করলে অপর পক্ষ তাদের বাধার সৃষ্টি করলে অন্য গ্রুপের শিক্ষকদের সঙ্গে তাদের হাতাহাতি হয়। এতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন শাপলা ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্র ঘোষিত অংশের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান, অধ্যাপক দেবাশীষ শর্মা, অধ্যাপক মিজানুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক বাকি বিল্লাহ বিকুল, সাজ্জাদ হোসেন, সহকারী প্রক্টর শফিকুল ইসলামসহ প্রায় ১৫ জন শিক্ষক তাদের ওপরে চড়াও হন।
একপর্যায়ে শিক্ষক ইউনিটের ফুলের তোড়া ভেঙে ফেলে তারা। এরপর দুই গ্রুপের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক মূল বেদিতে সবার সামনে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। প্রায় ২০ মিনিটের এ ঘটনায় তিন দফায় হাতাহাতি করেন শিক্ষকরা।
এ সময় শিক্ষক ইউনিটের নেতা–কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আলমগীর হোসেন ভূঁইয়ার কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে ফের বাধা দেয় অপর পক্ষ। পরে তাদের সামনে ধাক্কা দিয়ে শিক্ষক ইউনিটের শিক্ষকদের বেদি থেকে নামিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে তারা। এ সময় প্রক্টর পরিবেশ শান্ত করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে শিক্ষক ইউনিটের শিক্ষকেরা বেদি থেকে নেমে যায়।
আরও পড়ুন: ইবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ, আহত ২০
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু পরিষদ কেন্দ্র ঘোষিত অংশের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাহবুবুল আরফিন বলেন, তাদের জুনিয়র শিক্ষকরা আমাদের সিনিয়রদের সঙ্গে বেয়াদবি করায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এটি পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা। আমরা কেন্দ্রকে জানিয়েছি।
এ ঘটনার পর মানববন্ধনে বঙ্গবন্ধু পরিষদ শিক্ষক ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, ‘শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর অধিকার সবার আছে। আমরা বঙ্গবন্ধুর কর্মী হয়ে আমাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করতে না দিয়ে বিএনপির লোকদের সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনাটি আমরা ভিসিকে জানানোর চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু ভিসি ফোন রিসিভ না করায় আমরা বেদিতেই উপস্থিত প্রো ভিসির কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য গিয়েছিলাম। এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত ঘটনা। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করছি। ’
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমাদের শিক্ষকরা মুখেই বলি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী। স্মৃতিসৌধের বেদিতে যে ঘটনা ঘটেছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। সহকারী প্রক্টরের ভূমিকায় তিনি বলেন, ‘ভিডিও ফুটেজ দেখে এ বিষয়ে আমি বলতে পারব। ’
আরও পড়ুন: ইবিতে বিএড ও এমএড ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
ছাত্রকে বলাৎকারের দায়ে মাদরাসা শিক্ষকের যাবজ্জীবন
খাগড়াছড়িতে এক মাদরাসা ছাত্রকে (১০) বলাৎকারের দায়ে এক শিক্ষককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ভুক্তভোগীর পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বুধবার দুপুরে খাগড়াছড়ির নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. আবু তাহের এই রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্ত হাফেজ মো. নোমান মিয়া ওরফে রোমান (২২) দীঘিনালার ছোট মেরুং এলাকার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে মাদরাসা শিক্ষক গ্রেপ্তার
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে খাগড়াছড়ির দীঘিনালার ছোট মেরুং আল ইকরা হিফজুল কোরআন মাদরাসায় হাফেজ মো. নোমান মিয়া ওই মাদরাসাছাত্রকে (১০) বলাৎকার করে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার একই বছরের ২৩ আগস্ট দীঘিনালা থানায় মামলা করেন।
এরপর ২০১৮ সালের ২২ মে চার্জশিট গঠন করা হয়। মামলা চলাকালীন মোট ১২ জনের স্বাক্ষ্য প্রদান, যুক্তি তর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত এ রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিধান কানুনগো রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, এমন রায় সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
আরও পড়ুন: বিশ্বনাথে শিশুকে বলাৎকারের অভিযোগে কিশোর গ্রেপ্তার