সংসদ
গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচন ১৫ জানুয়ারির মধ্যে হতে পারে: নির্বাচন কমিশনার
গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচন ১৫ জানুয়ারির মধ্যে হতে পারে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা।২০২২ সালের ২২ জুলাই সংসদ সদস্য ও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুর পর এ বছরের ২০ অক্টোবরের মধ্যে সংসদীয় ওই আসনের জন্য নির্বাচন করা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা হয়ে দাঁড়ায়।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন: সিইসি
কিন্তু নির্বাচনের দিন ব্যাপক অনিয়মের কারণে নির্বাচন বাতিল করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরে অনিয়ম খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির সুপারিশের প্রেক্ষিতে একজন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, পাঁচ উপ-পরিদর্শক (এসআই) ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ ১৩৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় নির্বাচন কমিশন।
গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনের প্রার্থীরা হলেন- মাহমুদ হাসান রিপন (আওয়ামী লীগ), এ এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু (জাতীয় পার্টি), অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম (বিকল্প ধারা), নাহিদুজ্জামান নিশাদ (স্বতন্ত্র) ও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান (স্বতন্ত্র)।সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলা নিয়ে গঠিত এ আসনটিতে তিন লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন ভোটার রয়েছেন।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচন বাতিল: ১২৫টি কেন্দ্রের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে ইসি
সংসদে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ কর্পোরেশন-২০২২ বিল পাস
দেশে তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান ত্বরান্বিত করতে সংসদে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ করপোরেশন বিল, ২০২২ পাস হয়েছে।
নতুন আইনটি বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ করপোরেশন অধ্যাদেশ, ১৯৮৫ এর প্রতিস্থাপন করবে, যা আদালত কর্তৃক বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে। কারণ এটি সামরিক একনায়কের শাসনামলে জারি করা হয়েছিল।
বুধবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিলটি উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
বিল অনুযায়ী, এই বিলের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ করপোরেশন নামে একটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করা হবে। করপোরেশনকে পেট্রোবাংলাও বলা যেতে পারে।
করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় ঢাকায় স্থাপিত হবে এবং প্রয়োজনে সরকারের পূর্বানুমতি সাপেক্ষে দেশে ও দেশের বাইরে যে কোনো স্থানে এর কার্যালয় স্থাপন করা যাবে।
করপোরেশনের অনুমোদিত মূলধন হবে ১০ হাজার কোটি টাকা। আগে যা ছিল ২০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন হবে ২০০ কোটি টাকা।
সরকারের অতিরিক্ত সচিবদের মধ্য থেকে করপোরেশনের চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হবে।
বিল অনুসারে, এটি মেয়াদী আমানত হিসাবে যে কোনও তফসিলি ব্যাঙ্কে তার তহবিল জমা করতে পারে বা কোনও সরকার অনুমোদিত সিকিউরিটিতে বিনিয়োগ করতে পারে।
যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে: রেলমন্ত্রী
রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন সংসদে বলেছেন, ট্রেনে পণ্য ও যাত্রীদের নিরাপত্তা বাড়ানোর অংশ হিসেবে রেলওয়েতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
সোমবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তথ্য সংগ্রহের জন্য রেলওয়ে, ট্রেন ও রেলস্টেশনের বিভিন্ন স্পটে সাদা পোশাকের কর্মকর্তা ও বাহিনী মোতায়েন করে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, রেলওয়েতে সহিংসতা, চাঁদাবাজি ও নাশকতা প্রতিরোধের পাশাপাশি রেল যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রেলওয়ে পুলিশকে সতর্ক রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, ট্রেনে চুরি, ছিনতাই এবং বিভিন্ন অপরাধী চক্র যেমন (অজ্ঞান পার্টি এবং মলোম পার্টি) কার্যকলাপ রোধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
তিনি আরও বলেন, চলমান ট্রেনে দুর্বৃত্তদের পাথর নিক্ষেপ বন্ধ করার জন্য বীট পুলিশিং এবং কমিউনিটি পুলিশিং মিটিং এর মাধ্যমে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
নুরুল ইসলাম সুজন রেলওয়ে এবং এর যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আরও কয়েকটি পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন,‘রেলওয়েতে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপগুলো নেয়া হচ্ছে, যাতে মানুষ আরামে ট্রেনে যাতায়াত করতে পারে।’
এদিকে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী সংসদে বলেন, দেশে বস্ত্রের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৭ হাজার মিলিয়ন মিটার।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য কাজিম উদ্দিন আহমেদ এর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, স্থানীয় চাহিদা পূরণে শতভাগ কাপড় এখন দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে। কিন্তু তৈরি পোশাক রপ্তানি ও উচ্চমূল্যের পণ্য উৎপাদনের জন্য বস্ত্র আমদানির প্রয়োজন এখনো রয়েছে।
সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যু এক বিরাট ক্ষতি, সংসদে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যু শুধু আওয়ামী লীগের জন্য নয়, দেশের জন্যও এক বিরাট ক্ষতি কারণ দলের পাশাপাশি জাতির জন্য তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে।
তিনি বলেন, তার (সাজেদা চৌধুরী) মৃত্যু শুধু আওয়ামী লীগের নয়, আমাদের দেশ, জাতি ও আমার জন্যও ক্ষতি।
রবিবার প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে সংসদ উপনেতা মরহুম সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এবং সংসদ সদস্য শেখ এ্যানী রহমান, ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথসহ সাবেক একাধিক সংসদ সদস্য ও বিশিষ্টজনের মৃত্যুতে আনা শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা বলেন।
একাদশ জাতীয় সংসদের ২০তম অধিবেশনের শুরুতে সংসদে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। পরে আলোচনা শেষে সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাজেদা চৌধুরী ১৯৭৫ সালের পর অত্যন্ত দুঃসময়ে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন এবং এগিয়ে নিয়ে যান।
তিনি বলেন, ‘তিনি দলের আদর্শ ও নীতি অনুসরণ করতেন এবং সেই কঠিন সময়ে দলকে সুসংগঠিত রাখার চেষ্টা করেছিলেন।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সাজেদা চৌধুরী প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সামনের সারিতে থাকতেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ তাদের শাসনামলে জিয়াউর রহমান, এইচএম এরশাদ ও খালেদা জিয়া সবার হাতেই নির্যাতিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাজেদা চৌধুরী একজন মুক্তিযোদ্ধা, সমাজকর্মী ও সংস্কৃতিমনা ব্যক্তি ছিলেন।
তিনি বলেন, তার মৃত্যুতে আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সত্যিই একজন নিবেদিতপ্রাণ আত্মাকে হারালাম।
আরও পড়ুন: অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িতদের কোনো স্থান নেই: প্রধানমন্ত্রী
সাজেদা চৌধুরীকে খালা বলে ডাকতেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জীবন চলার পথে সবসময় তাকে পাশে পেয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়ন, নারী নেতৃত্ব, বনায়ন ও পরিবেশসহ জাতির প্রতি তার অবদানের কথা স্মরণ করেন।
রানী এলিজাবেথ-দ্বিতীয় সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ছিলেন গ্রেট ব্রিটেনের জনগণের কাছে মাতৃত্বের প্রতীক।
রানী এলিজাবেথ-২ কমনওয়েলথ দেশগুলোর প্রতিও আন্তরিক ছিলেন। ‘যখনই আমি কমনওয়েলথ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতাম, রানী আমার সঙ্গে কথা বলতেন এবং আমার খোঁজ খবর নিতেন।’
কমনওয়েলথ দেশগুলোতে নারী নেতৃত্বের সংকট, পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব নিয়ে তার উদ্বেগের কথা রানী তার সঙ্গে শেয়ার করেছেন।
তার স্মৃতি স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রানী একবার তাকে বাকিংহাম প্যালেসের বারান্দায় নিয়ে গিয়েছিলেন এবং সমুদ্রে প্লাস্টিকের দূষণ দেখেছিলেন এবং তাকে বলেছিলেন যে দূষণ রোধে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
নিয়ম অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের দুই বর্তমান সংসদ সদস্যের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব গৃহীত হলে সংসদের দিনের কার্যক্রম মুলতবি করা হয়।
ফরিদপুর-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী গত ১১ সেপ্টেম্বর মারা যান এবং সংরক্ষিত নারী আসন-১৯ থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের আরেক সংসদ সদস্য শেখ এ্যানি রহমান গত ১১ অক্টোবর মারা যান।
বাকি পাঁচ সাবেক সংসদ সদস্য হলেন সাবেক হুইপ অধ্যাপক খালেদা খানম (সংরক্ষিত নারী আসন-২৩), গিয়াস উদ্দিন আহমেদ (ময়মনসিংহ-১০), সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন (ঢাকা-৫ ও রংপুর-৬), সাবেক মন্ত্রী আবুল হাসনাত (ঢাকা-৯) ও শাহানারা বেগম (সংরক্ষিত নারী আসন-৪৮)।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলী খান, বিশিষ্ট সাংবাদিক রণেশ মৈত্র ও তোয়াব খান, কিংবদন্তি গীতিকার, পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার, প্রখ্যাত শিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী এবং প্রখ্যাত নাট্যকার মাসুম আজিজসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মৃত্যুতে হাউস গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
এছাড়া সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং পঞ্চগড়ের করতোয়া নদীতে নৌকাডুবি এবং দেশ-বিদেশে সাম্প্রতিক বিভিন্ন দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায়ও সংসদ শোক প্রকাশ করেছে।
শোক প্রস্তাব পাসের আগে এক মিনিট নীরবতা পালন ও মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
এতে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, বেগম মতিয়া চৌধুরী, শাজাহান খান, মুহাম্মদ ফারুক খান, এসএম রেজাউল করিম, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য জিএম কাদের, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কাজী ফিরোজ রশীদ ও মশিউর রহমান রাঙ্গা প্রমুখ।
আরও পড়ুন: মানুষের উন্নত জীবনযাপনের সুযোগ দিতে হবে: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রধানমন্ত্রী
পায়রা সমুদ্রবন্দরে সুযোগ-সুবিধা বাড়াতে প্রকল্পের মোড়ক উন্মোচন প্রধানমন্ত্রীর
হামলা হলে পুলিশের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
পুলিশের ওপর হামলা হলে তাদের আত্মরক্ষা করার অধিকার রয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার সংসদে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ বলেই আক্রমণের মুখে পড়লে নিজেদের রক্ষা করার অধিকার কি তাদের থাকবে না? তাদের (বিএনপির) মন্তব্য দেখে মনে হচ্ছে যে পুলিশের দিকে বোমা, লাঠিসোটা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করার পরও বা তারা বন্দুক হামলার শিকার হওয়ার পরও তারা (পুলিশ) কিছুই করতে পারে না।’
এর আগে বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা সংসদে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশের বিপরীতে ভোলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের দলের সাম্প্রতিক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে হামলা হয়েছে।
তার এই বক্তব্যের জবাবে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির আন্দোলন ও কর্মসূচি যেখানে শান্তিপূর্ণ ছিল, সেখানে পুলিশ কিছুই করেনি।
পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে ঢাকা-দিল্লির বহুমাত্রিক সম্পর্ক বৃদ্ধির প্রত্যাশা
তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলগুলো আন্দোলন করবে এটাই স্বাভাবিক। হ্যাঁ, আমি পুলিশকে বলেছি কিছু না বলার জন্য, এটা ঠিক আছে, কিন্তু পুলিশ প্রথমে কিছুই করেনি। যদি কোনো ব্যক্তি আক্রমণের শিকার হয়, তবে সেই ব্যক্তির সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার রয়েছে।’
বর্তমান সংসদের ১৯তম অধিবেশনে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা তার সমাপনী ভাষণে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ মিছিল ও আন্দোলনের ক্ষেত্রে কেউ কিছু বলবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। যেখানে কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ, সেখানে কেউ কিছু করবে না।’
তিনি বলেন, বিএনপির লোকজন হামলার চেষ্টা করে বা মিডিয়া কভারেজের জন্য পরিস্থিতি তৈরি করে।
মিডিয়া এবং বিরোধী দলগুলোর একটি অংশের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা সাম্প্রতিক সময়ে হতাশা ছড়াচ্ছে যেন সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তবে তারা (সমালোচক) ভালো অবস্থায় আছে।
বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ খাদ্য ঝুঁকিতে নেই। গত ১৬ আগস্ট আইএমএফও তার মূল্যায়নে মন্তব্য করেছে যে বাংলাদেশ কোনো সংকটে নেই।
পড়ুন: শ্রীলঙ্কার মতো সংকট বাংলাদেশে হবে না: প্রধানমন্ত্রী
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে বাংলাদেশের অর্থ পরিশোধে টান পড়তে পারে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
অসুস্থ রওশনকে সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা থেকে সরাতে চায় জাপা
জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতার পদ থেকে রওশন এরশাদকে সরাতে জাতীয় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের অনুরোধ সম্বলিত একটি চিঠি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে দিয়েছে জাতীয় পার্টির সংসদীয় দল।
বর্তমান বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতা জনিত কারণে বিদেশে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।এসময় জিএম কাদের সংসদীয় উপনেতা হিসেবে কাজ করছেন।
পড়ুন: জাতীয় পার্টির মহাসচিব রাঙ্গার বিরুদ্ধে সাতক্ষীরায় মামলা
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নুর নেতৃত্বে জাপা প্রতিনিধি দল স্পিকারের চিঠি দপ্তরে চিঠিটি প্রদান করেন।
চুন্নু বলেন, ‘বিরোধী দলীয় নেতা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ, দীর্ঘদিন ধরে তিনি সংসদে আসতে পারছেন না। জাতীয় পার্টির ২৬ জন সংসদ সদস্যের সংসদীয় দলের ২৩ জনের উপস্থিতিতে ও একটি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এছাড়া অপর একজন টেলিফোনে তার মতামত জানিয়েছেন,পরে তিনি সাক্ষর করবেন।’
চুন্নু বলেন, জাতীয় সংসদ ভবনের জাতীয় পার্টির সংসদীয় দলের কার্যালয়ে এক বৈঠকে বিরোধী দলীয় নেতা পরিবর্তন ও তা স্পিকারের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
রওশন বর্তমানে ব্যাংককে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইসি গঠন: জাতীয় পার্টির সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ শুরু
রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনবে জাতীয় পার্টি: জিএম কাদের
ফজলে রাব্বির প্রশংসায় প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রয়াত সাবেক ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার প্রশংসা করে বলেন, তিনি খুবই জনপ্রিয়, জনগণের বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি ছিলেন। তাই বারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘তিনি টানা কয়েকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এমনকি তিনি দল বদল করেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এর মানে হলো জনগণের কাছে তিনি ব্যক্তিগতভাবে জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য ছিলেন, যা অতুলনীয়।’
সাবেক ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া ও সাবেক পাঁচ এমপি এবং জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুতে শোক প্রস্তাবের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ফজলে রাব্বি দক্ষতার সঙ্গে ডেপুটি স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সংসদ নেতা হাসিনা বলেন, ‘যে কোন রাজনৈতিক নেতার ওপর জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যা তিনি (ফজলে রাব্বি মিয়া) সফলতার সঙ্গে অর্জন করেছিলেন।’
তিনি বলেন, তিনি তার নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নে সর্বদা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতেন। ‘সমাজের উন্নয়নে তিনি বিভিন্নভাবে নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। তার মৃত্যু আমাদের জন্য বিরাট ক্ষতি,’ প্রধানমন্ত্রী বলেন।
শেখ হাসিনা ফজলে রাব্বির মেয়েসহ শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেন।
জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে’র মৃত্যুতে গভীর দুঃখ প্রকাশ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপানের এই নেতা বাংলাদেশের প্রকৃত বন্ধু ছিলেন।
মারা যাওয়া সাবেক সংসদ সদস্যরা হলেন- মুক্তিযোদ্ধা এম আবু সালেহ(গণপরিষদ সদস্য), আব্বাস আলি মন্ডল, আলহাজ্ব মো. করিম উদ্দিন বাশার, মোহাম্মদ শোয়ায়েব ও খুরশিদ আরা হক।
পরে শোক প্রস্তাবটি কন্ঠভোটে পাস হয়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের স্বদেশে মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রী
সংসদে মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বিল পেশ
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে নির্বাচিত এমএনএ এবং এমপিএদের একটি তালিকা তৈরি করবে- মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পক্ষে ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের অংশগ্রহণের কারণে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার কর্তৃক শূন্য ঘোষণা করা আসনের উপ-নির্বাচনে এমএনএ এবং এমপিএ নির্বাচিত ব্যক্তিদের নামও এতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
তালিকাগুলো গেজেট আকারে প্রকাশের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করবে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল।
সোমবার সংসদে পেশ করা জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বিল ২০২২-এর প্রতিবেদনে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
কমিটির সভাপতি শাহজাহান খান প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন।
আরও পড়ুন: অর্থ পাচারকারীদের দায়মুক্তির সমালোচনা সংসদ সদস্যদের
গত ৫ জুন পেশ করা জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল বিল অনুযায়ী কাউন্সিলের প্রাথমিকভাবে রাজাকার, আলবদর ও আল শামস, মুজাহিদ বাহিনী ও শান্তি কমিটির সদস্যদের তালিকা তৈরি করার কথা ছিল, যারা দেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল এবং বিভিন্ন জঘন্য কর্মকাণ্ডে জড়িত থেকে পাকিস্তানি দখলদার সেনাদের সহযোগিতা করে।
বিল অনুযায়ী, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল নামে একটি কাউন্সিল থাকবে; যার প্রধান কার্যালয় ঢাকায় হবে। এটি সরকারের পূর্বানুমতি নিয়ে দেশের যে কোনো স্থানে শাখা স্থাপন করতে পারে।
পরিষদের চেয়ারম্যান থাকবেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী। তবে মন্ত্রণালয়ের কোনো প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী থাকলে তিনি সিনিয়র ভাইস চেয়ারপারসন হবেন। এছাড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব ভাইস চেয়ারপারসন হিসেবে থাকবেন, উপদেষ্টা পরিষদের মহাপরিচালক মনোনীত আটজন এবং কাউন্সিলের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী থাকবেন।
কাউন্সিল প্রতি দুই মাসে অন্তর একটি সভা করবে।
কাউন্সিলের অন্যতম প্রধান কাজ হবে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ বা মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতাসহ স্বাধীনতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত রাজাকার, আলবদর ও আল শামসদের তালিকা তৈরি করা।
উপদেষ্টা পরিষদের নেতৃত্বে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী। উপদেষ্টা পরিষদের অন্য সদস্যরা হবেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টা ও সচিব কর্তৃক মনোনীত পাঁচজন।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: উৎসবের আমেজ ফিরল সংসদে
জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাব গৃহীত
উপদেষ্টা পরিষদের মেয়াদ হবে তিন বছর।
বিশ্বব্যাপী তেল, এলএনজির মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বর্ধিত মূল্যে তেল ও এলএনজি ক্রয় দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
রবিবার জাতীয় সংসদে সিলেট-২ আসনের নির্বাচিত গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ড.মোমেন বলেন, জ্বালানি ও এলপিজির মূল্যবৃদ্ধির কারণে জনগণ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য সরকারি ভর্তুকি বাড়ানো হচ্ছে, যা সামগ্রিক বাজেটের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। এছাড়া বর্ধিত মূল্যে তেল ও এলএনজি আমদানি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ব অর্থনীতিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব বহুমাত্রিক, সেই প্রভাব বাংলাদেশেও রয়েছে।
আরও পড়ুন: আবারও বাড়ল সয়াবিন তেলের দাম
তিনি বলেন, যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসাবে বিলাসজাত দ্রব্য আমদানি নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এরই মধ্যে রেমিটেন্স বাড়াতে কিছু বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। এছাড়া মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান যুক্তিসঙ্গত রাখতে সরকারি কর্মকর্তাদের সব ধরনের এক্সপোজার ভিজিট, স্টাডি ট্যুর, ওয়ার্কশপ ও সেমিনার বন্ধ করা হয়েছে। ব্যাংকারদের ক্ষেত্রেও একই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জানুয়ারিতে বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ব্যারেল প্রতি ৫৬ মার্কিন ডলার ছিল যা এখন ১২০ মার্কিন ডলারের বেশি হয়েছে।
আরও পড়ুন: চলতি বছরে তেলের দাম ৪২ শতাংশ বাড়তে পারে: বিশ্বব্যাংক
বাজেট ২০২২-২৩: উৎসবের আমেজ ফিরল সংসদে
করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণের ফলে বৃহস্পতিবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য অর্থমন্ত্রীর বাজেট প্রস্তাব পেশের সময় সংসদ যেন তার পুরনো পরিবেশ ফিরে পায়।
করোনার স্বাস্থ্যবিধি বলবৎ থাকলেও জাতীয় বাজেটের অডিও-ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা শোনা ও দেখার সময় সংসদ সদস্যদের নিরুদ্বেগ দেখা যায়।
বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এটি বাংলাদেশের ৫১তম বাজেট এবং তার চতুর্থ বাজেট।
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে উন্নয়নের হারানো গতি ফিরিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ নিয়ে নতুন অর্থবছরের জন্য ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট রেখেছেন কামাল।
নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত ব্যয় বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ১৪ দশমিক ২৪ শতাংশ বেশি। এই অর্থের পরিমাণ বাংলাদেশের মোট জিডিপির ১৫ দশমিক ২৩ শতাংশের সমান।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: দেশে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু হচ্ছে
এর আগে সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে বাজেট অনুমোদনের পর বৈধতার জন্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এতে স্বাক্ষর করেন।
তিনি বঙ্গভবন থেকে সংসদ ভবনে আসেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল সংসদ ভবনের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ভবনে একসঙ্গে হেঁটে যান। এ সময় অর্থমন্ত্রীর হাতে একটি মেরুন রঙের ব্রিফকেস ছিল।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ করোনা মহামারির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব বাজারকে অস্থিতিশীল করেছে।
মার্কিন ডলারের ক্রমাগত বৃদ্ধিতে খাদ্য ও জ্বালানির দাম বাড়া অব্যাহত থাকায় অর্থনীতিতে চাপ পড়েছে।
মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে থাকায় অনেক দেশ মন্দার কবলে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে বিশ্বব্যাংক।
নানা চাপের মধ্যেও দেশকে মহামারি-পূর্ব উন্নয়নের ধারায় ফিরিয়ে নিতে এবারের বাজেট পরিকল্পনা তৈরি করেছেন অর্থমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: পাচার হওয়া অর্থ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ
সাধারণত বাজেট পেশের দিন সংসদ ভবনজুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। কিন্তু গত দুই বছরের চিত্র ছিল ভিন্ন।
সংসদ ভবন এলাকায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল এবং প্রধান ভবনে স্বল্পসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী দায়িত্ব পালন করেছেন।
এমনকি অধিবেশনের সময়ও সেই উৎসবের আমেজ দেখা যায়নি দুই বছর ধরে। সর্বত্র কঠোর সতর্কতা ছিল। সংক্রমণ এড়াতে জনসমাবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল।
এবার দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। সংসদের প্রায় সব আসন সাংসদদের দ্বারা পূর্ণ ছিল।
তবে গত দু’বারের চেয়ে এবার অধিবেশন কক্ষে সংসদ সদস্যের সংখ্যা ছিল অনেক বেশি।
গত দুই বছর ধরে সংসদের সদস্যদের তালিকা করে সংসদে স্থান দেয়া হয়।
এবার করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ সনদ পাওয়া সব সাংসদই সংসদে ছিলেন। সংসদ ভবনে ২৬০ জন সাংসদ ছিলেন।
এমপিরা অবশ্য সবাই মাস্ক পরেছিলেন। সংসদ ভবনের প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে এমপি লবিসহ সব প্রবেশপথে স্যানিটাইজার রাখা হয়েছে।
সংসদ ভবনে প্রবেশ করলে প্রত্যেককেই জ্বরের জন্য তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে হয়।
রাষ্ট্রপতি হামিদ গ্যালারিতে তার জন্য নির্ধারিত স্থান বসে বাজেট উপস্থাপন দেখেন। অধিবেশনের শুরুতে রাষ্ট্রপতির উপস্থিতির কথা সংসদকে জানান স্পিকার।
৫ জুন শুরু হওয়া বাজেট অধিবেশনে প্রবেশের জন্য ‘কোভিড নেগেটিভ’ সনদ বাধ্যতামূলক।
২০২০ সালে বাজেট বক্তৃতা দিতে ৪৮ মিনিট সময় নিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। গত বছর বাজেট এক ঘণ্টারও বেশি সময় পেশ করা হলেও তিনি তা পড়েন মাত্র ১৫ মিনিট। বাকি সময় তার বাজেট প্রস্তাব পাওয়ার পয়েন্ট এবং অডিও-ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনায় উপস্থাপন করা হয়।
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২২-২৩: স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ৫.৪ শতাংশ
এবারও তিনি স্পিকারের অনুমতি নিয়ে স্বাগত বক্তব্য দিয়ে অডিও-ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনায় বাজেট পেশ করেন।
শুরুতে প্রায় পাঁচ মিনিট বক্তব্য দেন অর্থমন্ত্রী।
শেষে তিনি দাঁড়িয়ে প্রায় দুই মিনিট কথা বলেন। দুই ঘণ্টা ১০ মিনিটের বাজেট উপস্থাপনায় সব মিলিয়ে মাত্র সাত মিনিট বক্তব্য রাখেন তিনি।
বাজেট পেশের পর অর্থমন্ত্রী অর্থ বিল-২০২২ সংসদে উত্থাপন করেন। এরপর স্পিকার ১২ জুন দুপুর ১২টা পর্যন্ত অধিবেশন মুলতবি করেন।
গত দুই বছরের মতো এবারও বাজেট উপস্থাপনা দেখার জন্য কোনো অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
এর আগে বাজেট পেশের সময় কূটনীতিক ও রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকতেন।
সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাজেট পেশের পর ২০২১-২২ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা হবে।
সম্পূরক বাজেট পাস হবে ১৩ জুন। এরপর সংসদ সদস্যরা নতুন অর্থবছরের বাজেট নিয়ে আলোচনা করবেন।
নতুন অর্থবছরের অর্থবিল পাস হবে ২৯ জুন। বাজেট পাস হবে ৩০ জুন এবং তা কার্যকর হবে জুলাইয়ের প্রথম দিনে।
গত দুই বছর বাজেট অধিবেশন সংক্ষিপ্ত হলেও এবার শুক্র ও শনিবার ছাড়া বাকি সব দিন সংসদ বসবে। গত বছর সংসদ অধিবেশন চলেছিল ১২ কার্যদিবস। আগের বছর ৯ কার্যদিবস এবং এটিই ইতিহাসে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ততম অধিবেশন।
শুক্রবার বিকাল ৩টায় ওসমানী মিলনায়তনে প্রথাগত বাজেট-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেবেন অর্থমন্ত্রী।