রাঙ্গামাটি
প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় পাহাড়ে উন্নয়নের জোয়ার বইছে: দীপংকর তালুকদার
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছায় পাহাড়ে উন্নয়নের জোয়ার বইছে বলে মন্তব্য করেছেন রাঙামাটির সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার।
তিনি বলেন, ‘দুর্গম এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে শুরু করে রাস্তা-ঘাট, বিদ্যুৎতায়ন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছায় পাহাড়ে উন্নয়নের জোয়ার বইছে।’
রবিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলার চেঙ্গী ব্রিজের পাশে বঙ্গবন্ধু গ্যালারি ও ভাস্কর্য নির্মাণ এবং উপজেলা বাস ভবনের কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
দীপংকর তালুকদার বলেন, পার্বত্য অঞ্চলকে একটি আধুনিক জেলায় রূপান্তর করতে কাজ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে কর্মহীনদের ত্রাণ দিলেন এমপি দীপংকর তালুকদার
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে সাধারণ জনগণের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। আর এইসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বিভিন্নভাবে উপকৃত হবে। দিন দিন আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। পার্বত্য এলাকার সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে হবে।
পার্বত্য এলাকাকে আধুনিক জেলায় পরিণত করতে হলে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: জঙ্গীবাদ প্রতিহত করতে আবারো নৌকায় ভোট দিন: দীপংকর তালুকদার
অনুষ্ঠানে রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী, জেলা পরিষদ সদস্য ইলিপন চাকমা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রগতি চাকমা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলুর রহমান, রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ত্রিদিব কান্তি দাশ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাবসহ উপজেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সেনাসদস্য হত্যার প্রতিবাদে রাঙ্গামাটিতে বিক্ষোভ ও সমাবেশ
বান্দরবানের রুমায় সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমানকে হত্যার প্রতিবাদে রাঙ্গামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ।
বৃহস্পতিবার সকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মো. মজিবর রহমানের নেতৃত্বে শহরের বনরূপা পেট্রোল পাম্পের সামনে এই প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: রাঙামাটি-বান্দরবান সড়কে পর্যটকবাহী গাড়িতে গুলি, আহত ২
এর আগে সকালে রাঙ্গামাটি পৌরসভা চত্ত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বনরূপা পেট্রোল পাম্পের সামনে এসে বিক্ষোভ সমাবেশে মিলিত হয়। এসময় ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে রাঙ্গামাটিসহ বিভিন্ন উপজেলার থেকে আসা পাঁচ শতাধিক মানুষ বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ নেন।
প্রতিবাদ সমাবেশে থেকে বিক্ষোভকারীরা পার্বত্য আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আস্তানায় অভিযানসহ সেনাক্যাম্প পুনঃস্থাপনের দাবি জানান।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘সন্তু লারমার জেএসএসসহ আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির কারণে সাধারণ জনগণ অতিষ্ঠ। সেনাবাহিনীর ওপর হামলায় সার্বভৌমত্বই হুমকির মুখে। দিন দিন সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো অত্যাধুনিক ভারী অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে চড়াও হচ্ছে। তাই পাহাড়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের ধরতে কঠিন ভূমিকা নিতে হবে সরকারকে।’
১৯৭১ সালের মতো আরেকটা মুক্তিযুদ্ধ করে বৈষম্য দূর করে পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলেও হুশিয়ারি দেন বক্তারা।
বক্তারা অবিলম্বে পার্বত্য এলাকায় সন্ত্রাসীদের আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করা এবং সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাকে যারা হত্যা করেছে তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
সমাবেশে পার্বত্য নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির, রাঙ্গামাটি জেলা পার্বত্য নাগরিক পরিষদের সহ সভাপতি নাদিরুজ্জমান, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সোলায়মান, জেলা নেতা কাজী মো. জালাল উদ্দিন জালোয়া, আবু বক্কর মোল্লা, হাবীব আজমসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে মাথায় গুলি চালিয়ে পুলিশ কনস্টেবলের ‘আত্মহত্যা’
উল্লেখ্য, গত ২ ফেব্রুয়ারি রাতে বান্দরবানের রুমা উপজেলার বথিপাড়ায় সেনাবাহিনীর টইল দলকে লক্ষ্য করে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা গুলি চালায়। এ সময় আত্মরক্ষার্থে সেনাবাহিনী পাল্টা গুলি চালায়। সন্ত্রাসীদের গুলিতে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান নিহত হন। মো. ফিরোজ নামের এক সৈনিক আহত হন। পরে ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে তিন সন্ত্রাসীর লাশ উদ্ধার করে সেনাবাহিনী। ঘটনাস্থল থেকে একটি এসএমটি, তিনটি বন্দুক, ২৮০ রাউন্ড গুলিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প অনুভূত
চট্টগ্রাম ও রাঙামাটিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মাঝারি ধরনের ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৪। শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) বিকাল ৪টা ১৪ মিনিটে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
ভূমিকম্পটি ১৫-২০ সেকেন্ড স্থায়ী ছিল বলে জানা গেছে। তবে এতে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: সিলেটে ৪.৪ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার (ইউএসজিএস) তথ্য মতে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল মিয়ানমারের ফালাম। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল পাঁচ দশমিক চার। ভূপৃষ্ঠ থেকে ৫৬.৮ কিলোমিটার গভীরে ছিল এর অবস্থান।
এদিকে, ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় ভূকম্পন কেন্দ্র (ইএমএসসি) প্রথমে ভূকম্পনের মাত্রা রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ১ জানিয়েছিল। পরে তা সংশোধন করে ৫ দশমিক ১ জানানো হয়।
আরও পড়ুন: ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ফের ভূমিকম্প অনুভূত
চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) একটি কটেজ থেকে এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহজালাল হলের বিপরীত পাশের এস আলম কটেজের ২১২ নম্বর রুম থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।নিহত অনিক চাকমা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেরিন সাইন্স বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। তার বাড়ি রাঙ্গামাটি জেলায়।চবি’র শিক্ষার্থীরা জানান, অনিকের রুমমেট না থাকায় গতকাল রবিবার রাতে সে একা ছিল। সকাল ১১ টার পরও তার কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পুলিশ এসে দুপুরে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: রুয়েট শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যুঘটনাস্থলে গিয়ে সার্বিক অবস্থা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের প্রধান আবু তৈয়ব বলেন, আমরা লাশটি উদ্ধার করেছি। ধারণা করা হচ্ছে, রাতে আত্মহত্যা করেছে সে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে।বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. কবির হোসেন বলেন, সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর আত্মহত্যা কি-না সেটা নিশ্চিত হওয়া যাবে।
আরও পড়ুন: অতিরিক্ত মদপানে রুয়েটে শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কাপ্তাইয়ে ১৫ ফুট দীর্ঘ অজগর উদ্ধারের পর অবমুক্ত
রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে বিশালাকৃতির একটি অজগর সাপ উদ্ধারের পর কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্কে অবমুক্ত করা হয়েছে। অজগরটি ১৫ ফুট দীর্ঘ এবং এর ওজন প্রায় ২০ থেকে ২২ কেজি।
বুধবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার চন্দ্রঘোনা ইউনিয়নের রেশম গবেষণা কেন্দ্র এলাকায় সাপটি দেখতে পেয়ে তরনমনি তনচংগ্যা নামে এক ব্যক্তি বস্তাবন্দি করেন এবং বন বিভাগকে খবর দেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা তানজিলুর রহমান গিয়ে সাপটি বন বিভাগের রাম পাহাড় বিটের কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্কে নিয়ে যান। সাপটি বর্তমানে সুস্থ রয়েছে বলেও তিনি জানান।
আরও পড়ুন: ধানখেতে মিলল ১২ ফুট লম্বা অজগর, সুন্দরবনে অবমুক্ত
পরে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনতাসির জাহান এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) গঙ্গা প্রসাদ চাকমার উপস্থিতিতে অজগর সাপটিকে কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্কে অবমুক্ত করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অজগরটি ডার্ক পাইথন প্রজাতির বয়স্ক সাপ। এই ধরনের সাপের আবাসস্থল দিন দিন সংকুচিত হয়ে যাওয়ার কারণে অথবা রাতে খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে এসে পড়েছিল সাপটি।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে ২০ ফুট দীর্ঘ অজগর উদ্ধারের পর অবমুক্ত
সাজেকে অগ্নিকাণ্ড, ৪ রিসোর্ট ও ২ রেস্টুরেন্ট পুড়ে ছাই
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে চারটি রিসোর্ট, দুটি রেস্টুরেন্ট ও একটি বসত বাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে।
এ ঘটনায় আনুমানিক পাঁচ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন সাজেক রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জেরী লুসাই।
আরও পড়ুন: গুলশানে ভবনে অগ্নিকাণ্ড
তিনি জানান, ২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার ভোর রাত সাড়ে ৪টার দিকে অবকাশ রিসোর্ট থেকে প্রথমে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তেই আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পরে অবকাশ রিসোর্ট, সাজেক ইকো ভ্যালি রিসোর্ট, মেঘ ছুট রিসোর্ট, মনটানা রিসোর্ট, মারুতি রেস্টুরেন্ট, জাকারিয়া লুসাইয়ের বাসাসহ নির্মানাধীন একটি রিসোর্ট পুড়ে যায়।
আগুনের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা আগুন লাগার প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। সেনাবাহিনীর সহায়তায় বড় ধরনের বিপদ হতে রক্ষা পাওয়া গেছে। দীঘিনালা থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে কারখানায় আগুন নেভানোর পর ফায়ার সার্ভিস কর্মীর মৃত্যু
তিনি বলেন, ‘গভীর রাতে আগুনের সূত্রপাত হওয়ায় পর্যটকদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, ভয়ে পর্যটকরা ছোটাছুটি শুরু করেন। এখন পর্যন্ত কোন ধরনের হতাহতের সংবাদ পাওয়া যায়নি। সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের দুই ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।’
রাঙ্গামাটিতে ৪১ মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু
দেবীর বন্দনায় মহা ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে সোমবার (১১ অক্টোবর) রাঙ্গামাটির ৪১ পূজামণ্ডপে পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন শুরু হয়েছে।
করোনা পরিস্থিতিতে গত বছর আনুষ্ঠানিকতা কিছু কম হলেও এ বছর পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় সনাতন সম্প্রদায়ের মাঝে উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা গেছে। আর দূর্গোৎসবকে আনন্দমুখর করে তুলতে রাঙ্গামাটি বিভিন্ন পূজামণ্ডপগুলো বর্ণাঢ্য সাজে সাজানো হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি পূজামণ্ডপে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি দর্শনার্থীদের জন্য হ্যান্ড সেনিটাইজারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সকাল থেকে মন্দিরগুলোতে পুরোহিতরা পূজার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি শেষ করেছেন।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা: বাগরেহাটে ৬৩৩ মণ্ডপে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে
এদিকে, গত রবিবার (১০ অক্টোবর) সারাদেশের পূজামণ্ডপগুলোতে মহাপঞ্চমীর আনুষ্ঠানিকতা দুর্গা দেবীর বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। শারদীয় দুর্গোৎসবের প্রাক্কালে এই বোধনের মাধ্যমে দক্ষিণায়নের নিদ্রিত দেবী দুর্গার নিদ্রা ভাঙার জন্য বন্দনাপূজা করা হয়। মণ্ডপে-মন্দিরে পঞ্চমীতে সায়ংকালে তথা সন্ধ্যায় এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
শ্রী শ্রী গীতাশ্রম মন্দিরের পুরোহিত পুলক চক্রবর্তী জানান, ১১ অক্টোবর (সোমবার) মহাষষ্ঠী, ১২ অক্টোবর (মঙ্গলবার) মহা সপ্তমী, ১৩ অক্টোবর (বুধবার) মহা অষ্টমী, ১৪ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) মহা নবমী ও ১৫ অক্টোবর (শুক্রবার) মহা দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে সনাতন সম্প্রদায়ের এই শারদোৎসবের শেষ হবে।
আরও পড়ুন: মাগুরায় ৭১২ মণ্ডপে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি
বিশুদ্ধ পঞ্জিকা অনুযায়ী, দেবী দুর্গা এবার আসছেন ঘোটকে অর্থাৎ ঘোড়ায় চড়ে। ঘোড়া এমন একটি বাহন যা যুদ্ধের সময়ে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ঘোড়ার পায়ের শব্দও যুদ্ধেরই ইঙ্গিত দেয়। তাই পঞ্জিকা মতেই ঘোটকে আগমন মানেই ছত্রভঙ্গের কথাই বলা হয়। অর্থাৎ এই সময়ে যুদ্ধ, অশান্তি, হানাহানির সম্ভাবনা থাকে।
পঞ্জিকা বলছে, মা দুর্গার এবার দোলায় গমন। দোলায় গমনের ফলাফল হল মড়ক লাগা।
রাঙ্গামাটি জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক স্বপন কান্তি মহাজন জানান, রাঙ্গামাটির পূজা মণ্ডপগুলোতে সব ধরনের প্রস্তুতি এর মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আর দর্শনার্থীরা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাক্স পড়ে পূজামণ্ডপে আসেন তার জন্য প্রত্যেকটি পূজামণ্ডপে যারা দায়িত্বে থাকবে তাদের নিদের্শনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ৬ দিন বন্ধ
রাঙ্গামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ আহমেদ জানান, রাঙ্গামাটি পূজা উদযাপন কমিটির সাথে সমন্বয় করে রাঙ্গামাটির ৪১ পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। যাতে করে কোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। আশা করি শারদীয়া দূর্গোৎসব সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে সম্পন্ন হবে।
পাহাড়ে চলছে নবান্নের প্রস্তুতি
রাঙ্গামাটিতে জুমের সোনালী পাকা ধানে ছেয়ে গেছে পাহাড়। শুরু হয়েছে ধান কাটার উৎসব। জুম চাষিদের চোখে মুখে এখন আনন্দ। জুমিয়ারা উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে জুমের পাকা ধান কেটে বাড়িতে তোলা নিয়ে ব্যস্ত দিন পার করছেন। নতুন ধানের গন্ধে পাহাড়ি জনপদগুলোতে তৈরি হয়েছে উৎসবের আমেজ। জুমের ফসল বাড়িতে তোলার পর পর পাহাড়ীদের ঘরে ঘরে শুরু হবে নবান্ন উৎসব।
পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের সনাতনী কৃষিরা পাহাড়ের ঢালে জুম চাষ করে। জুম চাষের প্রস্তুতিকালে প্রথমে ফাল্গুন-চৈত্র মাসে আগুনে পুড়িয়ে জুম চাষের জন্য জমিকে উপযুক্ত করে তোলা হয়। এরপর বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাসে প্রস্তুতকৃত পোড়া জুমের মাটিতে গর্ত খুঁড়ে একসঙ্গে ধান, মারফা, মিষ্টি কুমড়া, তুলা, তিল, ভুট্টাসহ ইত্যাদি বীজ বপন করে জুমিয়ারা। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসেই জুমের ধান পাকা শুরু হয়। ভাদ্র-আশ্বিন মাসে ঘরে তোলা হয় জুমের ফসল।
আরও পড়ুন: আবাদ মৌসুমে সারের দাম বৃদ্ধি, ফরিদপুরে আমন উৎপাদনে শঙ্কিত চাষিরা
জুম চাষিরা জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি বছর জুমের ফসল ভালো হয়েছে। দীর্ঘ কয়েক মাস পরিশ্রম করে তারা এবার ভালো ফসল পেয়েছে এবং জুম ধানের পাশাপশি মিষ্টি কুমড়া, তিল, আদা, হলুদ, ভুট্টা, শিম, মারফা, কাকন, মরিচ, তুলাসহ নানা প্রকার শাক-সবজি চাষ করা হয়ে থাকে। সময় মতো ফসল ঘরে তুলতে পারলে পুরো বছর অনায়াসে কেটে যাবে এমনটাই আশা চাষিদের। আর খাদ্য সংকটে ভুগতে হবে না তাদের।
রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারনের উপ-পরিচালক শষ্য আপ্রু মার্মা জানান, চলতি বছর শুধু রাঙ্গামাটি জেলায় জুম চাষ হয়েছে ৫ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধারা হয়েছে হেক্টর প্রতি ১ দশমিক ৩০ টন। আর বর্তমানে যে উৎপাদন পাওয়া যাচ্ছে তা লক্ষ্যমাত্রা চেয়ে বেশি। দীর্ঘ কয়েক মাস পরিশ্রমের ফলে এবং জুম চাষিরা জুমে সঠিকভাবে সার প্রয়োগ করায় এবার ফলন ভালো হয়েছে। আর পাহাড়ে জুমিয়ারা স্থানীয় জাতের ধানের পাশাপাশি উচ্চ ফলনশীল ধান ও সবজির আবাদ করতে চাষিদের পরামর্শসহ যাবতীয় সুবিধা দিচ্ছে রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
আরও পড়ুন: রূপসা পাড়ে অফ সিজনাল তরমুজের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি
রাঙামাটি-বান্দরবান সড়কে পর্যটকবাহী গাড়িতে গুলি, আহত ২
বান্দরবানের রুমা উপজেলা থেকে ছেড়ে আসা পর্যটকবাহী গাড়ি লক্ষ্য করে দুর্বৃত্তরা গুলি চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এসময় দুই নারী আহত হয়েছেন।
রাঙামাটি-বান্দরবান সড়কের গলাচিপা এলাকায় শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এই গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় সেনা টহল জোরদার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে পাহাড়ি ঢলে নিখোঁজ দুই শিশুর লাশ উদ্ধার, খোঁজ নেই মায়ের
আহতরা হলেন, য়ইসিংনু মারমা ও মেহাইসিং মারমা।
স্থানীয়রা জানায়, শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বান্দরবানের রুমা থেকে রাজস্থলী পোয়াইতি মুখ পাড়ার ১৯ জন পর্যটক ফেরার পথে গলাচিপা এলাকায় হামলার শিকার হন। এ সময় তাদের গাড়ি লক্ষ্য করে একদল দুর্বৃত্ত এলোপাতাড়ি গুলি ছোঁড়ে। এতে দুই নারী আহত হন।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের সুরের জাদুকর মং নু মং
আহত নারীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা খ্রিস্টান হাসপাতলে ভর্তি করা হয়েছে।
চন্দ্রঘোনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মফজল হোসেন খান জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত ও স্বভাবিক রয়েছে। তবে কালকের ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে প্রবাসীর স্ত্রী, ২ শিশু হত্যায় আটক ৬
৯৯৯ এ কল: কাপ্তাই লেক থেকে ৭ পর্যটক উদ্ধার
জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই লেকে আটকে পড়া ইঞ্জিন বোটের এক পর্যটকের ফোন কলে নারী ও শিশু সহ সাত পর্যটককে উদ্ধার করেছে রাঙ্গামাটি সদর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি।
রাজধানীর ধানমন্ডির অধিবাসী সানজিদ আহমেদ ও তার পরিবারের দুই নারী ও এক শিশু সহ মোট সাত জন রাঙ্গামাটি ভ্রমণে যান। বৃহষ্পতিবার তারা ইঞ্জিন বোটে কাপ্তাই লেক ভ্রমণে বের হয়ে কোতোয়ালি থানাধীন বালুখালিতে লেকের বিশাল কচুরিপানার ঝাঁকের আটকা পড়েন।
কচুরিপানার মধ্যেই নৌকার প্রপেলারের পাখা ভেঙে যায়। ফলে অসহায়ের অবস্থায় কচুরিপানার ঝাঁকের মধ্যে আটকে ছিলেন কয়েক ঘণ্টা। শেষে কোনও উপায় না পেয়ে দুপুর পৌনে একটায় সানজিদ আহমেদ ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে তাদের উদ্ধারের অনুরোধ করেন।
আরও পড়ুন: জরুরি সেবা ৯৯৯: সমুদ্রে বিকল নৌযান থেকে উদ্ধার ১৫
৯৯৯ জরুরি সেবা তাৎক্ষণিকভাবে নৌ-পুলিশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে এবং রাঙ্গামাটি সদর নৌ পুলিশ ফাঁড়িতে বিষয়টি জানিয়ে দ্রুত উদ্ধারের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ জানায়। ৯৯৯ পুলিশ ডিসপ্যাচার এস.আই. দীপন কুমার এবং এ.এস.আই মিল্টন বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট নৌ পুলিশ ফাঁড়ি এবং কলারের সাথে যোগাযোগ করে উদ্ধার তৎপরতার আপডেট নিতে শুরু করেন।
সংবাদ পেয়ে রাঙ্গামাটি সদর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর জনাব রাসেল মিয়া এবং এ.এস.আই নাজমুল সহ একটি দল উদ্ধার অভিযানে পরিচালনা করেন। দুপুর দেড়টা থেকে কয়েক ঘন্টা উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে বিশাল কচুরিপানার ঝাঁক ভেদ করে সন্ধ্যার দিকে পর্যটকদের নিরাপদে উদ্ধার করে পলওয়েল কটেজে পৌঁছে দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ৯৯৯ এ কল: নাফ নদী থেকে ৩৮ পর্যটক উদ্ধার
উল্লেখ্য, এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর অপর একটি পর্যটক দল কাপ্তাই লেকে আটকে পড়ে ৯৯৯-এ ফোন করে সহায়তা পেয়েছিলেন।