রাঙ্গামাটি
রাঙ্গামাটিতে বিরল প্রজাতির উড়ন্ত কাঠবিড়ালী উদ্ধার
বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম জীববৈচিত্রপূর্ণ রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলায় বিরল প্রজাতির চারটি উড়ন্ত কাঠবিড়ালী উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার সকাল ১০টায় নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাট এলাকায় ৭নং টিলার পাশে বনের ঝোঁপে কাঠাল গাছে মো. মাহফুজুর রহমানের ছেলে মো. সরোয়ার (১৬) এর হাতে ধরা পড়ে এই উড়ন্ত কাঠবিড়ালী গুলো।
নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিউলী রহমান তিন্নী এবং থানার অফিসার ইনচার্জ সাব্বির রহমানের তত্ত্বাবধানে স্থানীয় বনবিভাগ কর্মকর্তা আব্দুল আজিজের কাছে চারটি কাঠবিড়ালী হস্তান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে বিরল প্রজাতির হলুদ কচ্ছপ উদ্ধার
পরে বুড়িঘাট ৭নং টিলা এলাকার গভীর জঙ্গলে প্রাণীগুলোকে অবমুক্ত করা হয়েছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন বনবিভাগের মো. সফিউল ইসলাম, নেকজান বেগম, কবির হোসেন, আব্দুল কুদ্দুস, গ্রাম পুলিশ ছগির হোসেন, ভিডিপির পিসি মিন্টু মিয়া ও এমদাদুল হক।
এসময় বনবিভাগ কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ বলেন, পাহাড়ে এই প্রাণী এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। এখন আর বনে জঙ্গলে দেখা পাওয়া যায় না বললেই চলে। এটি বিরল প্রজাতির উড়ন্ত কাঠবিড়ালী।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে ধরা পড়ল বিরল প্রজাতির চিতা বিড়াল
তিনি আরও বলেন, পাহাড়ে গাছপালা কেটে বন উজাড় করার ফলে বন্য প্রাণীদের আবাসস্থলের ক্ষতি ও খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। তাই খাদ্যের খোঁজে বিভিন্ন সময় বন্য প্রাণীরা লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় মানুষের হাতে ধরা পড়ে।
লোকালয়ে ঢুকে পড়া প্রাণীরা যাতে মানুষের মাধ্যমে আক্রান্ত না হয় সেদিকে উপজেলা বনবিভাগ কড়া নজর রাখছে বলে জানান তিনি।
ওয়াই সেতু নির্মাণে রাঙ্গামাটির বিচ্ছিন্ন দুই দ্বীপবাসীর স্বপ্নপূরণ
প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিতে রাঙ্গামাটি শহরের রিজার্ভ বাজারে বিচ্ছিন্ন দুটি দ্বীপে বসবাসকারী তিন হাজারের অধিক মানুষের স্বপ্নপূরণ হতে যাচ্ছে।
২০২২ সালের জুন থেকেই আর নৌকায় পারাপার হতে হবে না দুই দ্বীপের বাসিন্দাদের। দীর্ঘ পাঁচ যুগ পর সাড়ে ১৭ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নির্মিত ওয়াই সেতু তাদের ভোগান্তি দূর করবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জুগলিক্যা পাহাড় ও পুরাতনবস্তী দু’টি আলাদা দ্বীপ। দ্বীপ দু’টি কাছাকাছি হওয়ায় নির্মিত সেতু দু’টি দেখে মনে হয়ে যেন-ওয়াই। কাপ্তাই হ্রদের বুকে সেতুটির উভয়পাশ যেনো অপরূপ সৌন্দর্য্যের দৃশ্য।
একদিকে সুভলং ভ্যালি, অন্যদিকে ফুরোমন ভ্যালির নয়নাভিরাম সৌন্দর্য সেতুটিকে দিয়েছে যেন ভিন্ন একমাত্রা। সম্ভবত আসছে দিনগুলোতে আসামবস্তি সেতুর চেয়েও বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠতে চলেছে পুরানপাড়া সেতুটি!
আরও পড়ুন: সেতু আছে, ওঠা-নামার সংযোগ সড়ক নেই!
স্থানীয়রা জানান, ১৯৬০ সালে কাপ্তাই বাঁধ তৈরির পর বাঁধের বাসিন্দাদের পুরাতনবস্তী ও জুগলিক্যা পাহাড় এলাকায় পুনর্বাসিত করা হয়। তখন থেকেই তাদের দীর্ঘদিনের সেতুর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাঙ্গামাটির এমপি দীপংকর তালুকদার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নজরে আনেন।
এরপর ২০১৩ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাঙ্গামাটি সফরে গিয়ে ব্রিজ দু’টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। অবশেষে বাস্তবে তা রূপ নিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ব্রিজ না থাকায় শিক্ষার্থী ও রোগীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ নৌকার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হতো। ব্রিজ দুটি চালু হলে এত বছরের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তুষিত চাকমা বলেন, ‘সেতুর কাজ একেবারেই চূড়ান্ত পর্যায়ে। এখন কিছু মাটি ভরাট ও বারপোল নির্মাণের কাজ চলছে। এক মাসের মধ্যেই শেষ হবে আশা করছি। তারপরই সেতুটি চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।’
রাঙ্গামাটির রিজার্ভ বাজারের সাথে জুগলিক্যা পাহাড় ও পুরাতনবস্তীর সংযোগের জন্য পিসি গার্ডার ফুট ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্পটিতে মোট ব্যয় ১৭ কোটি ৬৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: লাঙ্গলবন্দ সেতু মেরামত, বিকল্প রুট ব্যবহারের অনুরোধ
তিনি আরও বলেন, এটি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের দ্বিতীয় বৃহৎ সেতু। ২০১৩ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে শুরু হয় সেই স্বপ্নের সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০২২ সালের জুনের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করে ব্রিজ দুটি চালু করা হবে। সেতুর দৈর্ঘ্য প্রায় ৪২০ মিটার, প্রস্থ ৪.৫ মিটার।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন করে যাচ্ছেন। আর তাই রাঙ্গামাটির মূল অংশের সাথে যুক্ত হতে যাচ্ছে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ জুগলিক্যা পাহাড় ও পুরাতনবস্তী। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন ও উদ্বোধনের পর ব্রিজ দু‘টি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।
রাঙ্গামাটিতে পোয়াপাড়া বেইলি ব্রিজ ভেঙে ট্রাক খালে
রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলায় শুক্রবার রাতে অতিরিক্ত পাথরে বোঝাই ট্রাকের ভারে পোয়াপাড়া বেইলি ব্রিজ ভেঙে ট্রাক খালে পড়ে যাবার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ট্রাকের চালক ও তার সহকারী আহত হন।
আহতরা হলেন, ট্রাকের চালক জামাল হোসেন (৪০) ও সহকারী বাসুদেব (৪২)।
আরও পড়ুন: নগরকান্দায় বালুভর্তি ট্রাকের ভারে ভেঙে পড়ল বেইলি ব্রিজ
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা টেকনিক্যাল কলেজের ভবন নির্মাণের জন্য অতিরিক্ত পাথর বোঝাই ১০ চাকার ট্রাকটি পোয়াপাড়া বেইলি ব্রিজে উঠে। এরপর বিজ্রের অপর প্রান্তে যাওয়ার আগেই ট্রাকসহ বেইলি ব্রিজটি ভেঙে যায়। ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় কাউখালী উপজেলা থেকে নাইল্যাছড়ির সাথে বর্তমানে সড়কে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ।
কাউখালী উপজেলার কলমপতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যাজাই মার্মা জানান, ৫ থেকে ৭ টন ওজন বহনের সক্ষমতা নিয়ে ১৯৮২ সালের শেষের দিকে নির্মিত বেইলি ব্রিজটি অনেক আগেই জরাজীর্ণ ও চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছিল। ২০০৪ সালে একইভাবে গাছ বোঝাই ট্রাকসহ ভেঙে পড়লে নতুন করে পুনরায় ব্রিজটি তৈরি করা হয়। তবে কয়েক বছর না যেতে ব্রিজটি যান চলাচলে সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে বেইলি ব্রিজ ভেঙে ট্রাক নদীতে, নিহত ৩
রাঙ্গামাটি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহ আরেফিন বলেন, ‘ট্রাকটি অতিরিক্ত ভার বহন করায় সেতুটি ধসে পড়ে। আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে যান চলাচল শুরু করার চেষ্টা করছি। অতিরিক্ত পাথর বোঝাই করে পারাপারের কারণে ব্রিজটি ভেঙে পড়াতে টেকনিক্যাল কলেজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্ততি চলছে।’
রাঙামাটিতে ইউপিডিএফের ৪ সদস্য আটক: অস্ত্র, গুলি উদ্ধার
রাঙামাটিতে বিশেষ অভিযান চালিয়ে ইউপিডিএফের (মূল) সশস্ত্র শাখার চারজন সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। এ সময় তাদের কাছ থেকে অস্ত্র, গুলি ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
শনিবার সকালে রাঙামাটি সদর সেনা জোন এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আটকরা হলেন, সুরেন চাকমা, অসিং চাকমা, অনিল চাকমা, সাইমন চাকমা।
এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি একে-২২ রাইফেল, ৭৭ রাউন্ড এ্যামুনিশন, ম্যাগাজিন, ওয়াকিটকি সেট, সোলার চার্জার, চাঁদা সংগ্রহের রশিদ বই, চারটি মোবাইল সেট, হাত ঘড়ি, ভূয়া আইডি কার্ড, রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান সম্বলিত ব্যানার, নগদ ৬৩ হাজার ৫৯২ টাকা ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: কঠোর লকডাউনে ২১ দফা নির্দেশনা, থাকছে সেনাবাহিনী
বিবৃতিতে বলা হয়, শনিবার ভোর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পার্বত্য অঞ্চলের সশস্ত্র চাঁদাবাজদের ধরতে রাঙামাটি রিজিয়ন সদর জোন কর্তৃক বরকল উপজেলার দুর্গম ছোট কাট্টলী এলাকার গভীর জঙ্গলে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। পরবর্তীতে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বরকল থানায় হস্তান্তর করা হবে।
আটকরা দীর্ঘদিন ধরে রাঙামাটির বিভিন্ন উপজেলায় সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে অস্থিরতা সৃষ্টি করে আসছিল এবং তারা ইউপিডিএফের (মূল) সশস্ত্র শাখার সক্রিয় সদস্য বলে বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
রাঙ্গামাটিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে বৃদ্ধের মৃত্যু
রাঙ্গামাটির লংগদুতে নিজ বাগানের গাছের ডালপালা পরিষ্কার করতে গিয়ে বিদ্যুৎতের তারে স্পৃষ্ট হয়ে আব্দুল খালেক(৭০) নামের এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার বিকালে রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলার পশ্চিম বাইট্টাপাড়া এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটি প্রেসক্লাবের নবগঠিত কমিটির ৯ সদস্যের পদত্যাগ
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, উপজেলার মাইনীমুখ ইউনিয়নের পশ্চিম বাইট্টাপাড়া এলাকায় শুক্রবার বিকালে আব্দুল খালেক নিজ বাগানে গাছের ডালপালা পরিষ্কার করছিলেন। এমন সময় বৃদ্ধের বাগানের ভিতর দিয়ে নিয়ে যাওয়া পার্শ্ববর্তী ব্যক্তি আব্দুল সাত্তারের কাছ থেকে আব্দুল ওহাব মিয়ার বিদ্যুতের সাইড লাইনের (চোরাই লাইন) তারের সাথে লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় ওই বৃদ্ধ। পরে বৃদ্ধকে খুঁজতে গিয়ে নিজ বাগানে নিথর হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন স্বজনরা। লংগদু থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বৃদ্ধের মৃত দেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত ১
লংগদু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আরিফুল আমিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত আব্দুল খালেকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাদতন্তের জন্য রাঙ্গামাটি মর্গে প্রেরণ করা হবে। এব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
লংগদু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাইনুল আবেদীন বৃদ্ধের মৃতদেহ উদ্ধারের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। এসময় তিনি এলাকায় যত বৈদ্যুতিক সাইড লাইন নেওয়া হয়েছে সব লাইন আগামী একদিনের মধ্যে বিচ্ছিন্ন করার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজনদের নির্দেশ দেন।
সাবেক মুখ্য সচিব আব্দুস সামাদের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
বঙ্গবন্ধুর সাবেক একান্ত সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. সৈয়দ আব্দুস সামাদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী এই শোক জানান।
শোক বার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘সাবেক সিএসপি সৈয়দ আব্দুস সামাদ রাঙ্গামাটির এডিসি থাকা অবস্থায় পাকিস্তানি পক্ষ ত্যাগ করে মুজিবনগর সরকারে যোগদান করেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত সৎ, দক্ষ, সাহসী এবং কর্তব্যপরায়ণ একজন সরকারি কর্মকর্তা।’
ভারতের সঙ্গে গঙ্গা পানি চুক্তি এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি চুক্তি স্থাপনে ড. সামাদের অবদানের কথাও প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন। তিনি মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আরও পড়ুন: সাবেক এমপি আফাজ উদ্দিনের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
সাবেক এমপি আব্দুল মান্নানের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
রাঙ্গামাটিতে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত ১
রাঙ্গামাটির সদর উপজেলার মগবান এলাকায় অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এক ব্যক্তি নিহত হবার খবর পাওয়া গেছে।
নিহত বাসিরাম তংচঙ্গ্যা (৬০) সদর উপজেলার মগবান ইউনিয়নের বল্টুগাছ মঈনপাড়া এলাকার বাসিন্দা। রাঙ্গামাটির কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: যাদু শেখানোর নামে হাত পা বেঁধে দুই খুন
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রবিবার ভোরে বাসিরাম তংচঙ্গ্যাকে তার বাসার অদূরে কয়েকজন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে রেখে যায়।
পরবর্তীতে খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর নিহতের স্বজনরা কৌশলে পুলিশকে না জানিয়ে প্রশাসনের অগোচরে নিহতের লাশ ওয়াগ্গা এলাকার দেবতাছড়িস্থ শ্মশান খোলায় দাহ করতে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: যশোরে বাক প্রতিবন্ধী যুবক খুন
কিন্তু স্থানীয় সূত্রে বিষয়টি কোতয়ালী থানা পুলিশ জানতে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়না তদন্তের জন্য রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে কোতয়ালী থানার ওসি মো. কবির হোসেন জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের প্রেরণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় তদন্ত করছে পুলিশ।
কাপ্তাইয়ে জেএসএস-এমএনপি গোলাগুলি, নিহত ১
রাঙ্গামাটির কাপ্তাইয়ে জেএসএস সন্তু গ্রুপের সঙ্গে এমএনপি গ্রুপের গোলাগুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার দুর্গম রাইখালী ইউনিয়নের নারানগিরি বড়পাড়া এলাকা থেকে নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পুলিশের সাথে গোলাগুলি, সন্ত্রাসী আটক
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কাপ্তাই উপজেলার দুর্গম রাইখালী ইউনিয়নের নারানগিরি বড়পাড়া ও মিতিয়াছড়ির আশপাশের এলাকায় সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন মূল জনসংহতি সমিতির সদস্যদের সঙ্গে মারমা ন্যাশনালিষ্ট পার্টির (এমএনপি) সদস্যদের দফায় দফায় গুলি বিনিময় হয়। খবর পেয়ে কাপ্তাই জোনের পানছড়ি (টিওসি) থেকে সেনাবাহিনীর একটি টহল টিম ঘটনাস্থলে যায়। কিন্তু সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে র্যাবের সাথে ‘গোলাগুলিতে ’ যুবক নিহতনিরাপত্তাবাহিনীর সূত্র জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটতে পারে, স্থানীয় লোকজনদের সঙ্গে কথা বলে সেনাবাহিনী নিশ্চিত হয় যে নিহত ব্যক্তি মূল জেএসএসের একজন চিহিৃত সন্ত্রাসী। বর্তমানে উক্ত এলাকা সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি জোরদারের অংশ হিসেবে কাপ্তাই জোন বিভিন্ন এলাকায় টহল কার্যক্রম জোরদার করেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে সেনাবাহিনীর এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে দু’পক্ষের গোলাগুলিতে নিহত ২
চন্দ্রঘোনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছে।। গুলিতে নিহত ব্যক্তি কোন দলের এবং কি নাম তা এখনো সনাক্ত করা যায়নি।
বাঘাইছড়িতে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত ৭৮, সাজেক রেড জোন
বাংলাদেশের অন্যতম পর্যটন এলাকা সাজেকে করোনার পাশাপাশি হঠাৎ করে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় এ পর্যন্ত ৭৮ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। আর সাজেক ইউনিয়নকে ম্যালেরিয়ার রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বেসরকারি সেবা সংস্থা ব্রাকের হিসাব মতে, সাজেকের ৯নং ওয়ার্ডের ত্রিপুরা পাড়া, বড়ইতলী পাড়া, শিব পাড়া, দেবাছড়া, নরেন্দ্র পাড়া, ১নং ওয়ার্ডের মন্দির ছড়া, শিয়ালদহ, তুইচুই, বেটলিং, অরুন কার্বারী পাড়াসহ আশপাশের সব এলাকায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে।
সাজেকের ৭নং ওয়ার্ডের ত্রিপুরা পাড়ায় একই পরিবারের তিনজন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাজেক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নেলসন চাকমা (নয়ন)।
আরও পড়ুন: সাজেকে পর্যটকবাহী মাইক্রোবাস খাদে, আহত ৮
বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইশতেখার আহমদ জানান, গত বছরের তুলনায় এই বছরে ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। গত বছর লকডাউনের কারণে বাঁশ কর্তন ও জুম চাষ বন্ধ ছিল। এ বছর তা বন্ধ না থাকায় ও বিভিন্ন এলাকায় জঙ্গল সৃষ্টি হওয়ায় মশার উপদ্রুব বেড়ে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বেড়ে গেছে।
এনজিও সেবা সংস্থা ব্রাকের হিসাব মতে, এই বছর জুন মাস পর্যন্ত দশ হাজার সন্দেহজনক রোগীর রক্ত পরীক্ষা করে ৬৭ জন ম্যালেরিয়া রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু জুন মাসেই ৪৯ জনের রক্তে ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক মাসে ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা ছিল ২৯ জন।
ডা. ইশতেখার আহম্মেদ জানান, হিসাব মতে উপজেলায় মোট ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা বর্তমানে ৭৮ জন। দুর্গম সাজেক ইউনিয়নকে আমরা ম্যালেরিয়ার রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করেছি। যেখানে ২০১৯ সালে ২৮ হাজার মানুষের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে ১,৩০৬ জনের শরীরে ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়। এছাড়া গত বছর ২৮, ৬৬৭ জন মানুষের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে ২৮৯ জনই ম্যালেরিয়া শনাক্ত হয়েছে। তবে এটি বেসরকারি এনজিও সংস্থা ব্রাকের হিসাব মতে।
তিনি জানান, সাজেকে আমাদের কয়েকটি কমিউনিটি ক্লিনিক করার পরিকল্পনা আছে। সেগুলো বাস্তবায়ন হলে সাজেকসহ আশপাশের জনগণকে খুব সহজে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যাবে। তবে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সরকার ইতোমধ্যে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, কক্সবাজারের রামুসহ ম্যালেরিয়া প্রবণ জেলাগুলোতে ‘মাইক্রো প্ল্যান’ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে সরকারের ম্যালেরিয়া রোগীর সংখ্যা শূন্যের কোঠায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
ব্রাকের রাঙ্গামাটির কো-অরডিনেটর হাবিউর রহমানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: সাজেক সড়কে পর্যটকদের গাড়িতে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতদের হামলা, আটক ৩
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, এ বছর একটানা বৃষ্টিপাত না হওয়ায় মশার প্রজনন বেড়েছে। বৃষ্টিপাত না হলে পাহাড়ের বিভিন্ন ঝিরি ও ছড়ায় পানি জমে মশার প্রজননে সুবিধা হয়। এ ছাড়া ভারতের মিজোরাম রাজ্যে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে সেখান থেকেও ম্যালেরিয়া ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি সন্ধ্যা থেকে মশারি ব্যবহার, আশপাশের ঝোপঝাড় ও নর্দমা পরিষ্কার রাখার পরামর্শ দেন এবং তিনি আরো আশঙ্কা করছেন, পর্যটন এলাকা হওয়ায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়তে থাকলে এক সময় পর্যটকদের মাধ্যমে সারা দেশে ম্যারেরিয়ার জীবানু ছড়াতে পারে। তাই ম্যালেরিয়া নির্মূলের জন্য সকলে সচেতন হয়ে আশপাশের এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
রাঙ্গামাটিতে দুর্বৃত্তের গুলিতে গ্রাম প্রধান নিহত
রাঙ্গামাটির জুরাছড়ির লুলাংছড়িতে দুর্বৃত্তের গুলিতে গ্রাম প্রধান (কারবারী) নিহত হয়েছেন। নিহতের কারবারীর নাম পাত্থুরমনি চাকমা।
রবিবার রাত ৯ টার দিকে নিজ বাড়িতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয় পাত্থুরমনি চাকমা। এই ঘটনায় এলাকায় আতংক বিরাজ করছে।
জুরাছড়ি উপজেলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিউল আজম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, গ্রামে গিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। কে বা কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন:রাঙামাটিতে অফিসে ঢুকে ইউপি সদস্যকে গুলি করে হত্যা
স্থানীয় গ্রামবাসীর সূত্রে জানা যায়, রবিবার রাতে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন তিনি। এ সময় কয়েক জন অস্ত্রধারী তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা তাকে গুলি করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। এই হামলায় তিনি ঘটনাস্থলেই মৃত্যু বরণ করেন।
আরও পড়ুন:রাঙামাটিতে দুই রাজনৈতিক পক্ষের বন্দুকযুদ্ধে নিহত ১
জুরাছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফিউল আযম জানান, আমরা খবর পেয়েছি। লুলাংছড়ির কারবারী পাত্থুরমনি চাকমাকে গুলি করা হয়েছে। সে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু বরণ করে বলে স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে। ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা রওনা হয়েছে। লাশ উদ্ধারের পর ঘটনার বিস্তারিত জানা যাবে।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে পিসিজেএসএস এর কর্মী নিহত
উল্লেখ্য, পার্বত্য অঞ্চলে আঞ্চলিক সংগঠন গুলোর আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চলমান হত্যাযজ্ঞ দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর রবিবার রাতে রাঙ্গামাটির জুরাছড়ির লুলাংছড়িতে কার্বারীকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।