স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
জামিনে মুক্তি পেলেন প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইমলাম
অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনের আওতায় গ্রেপ্তারকৃত প্রথম আলো পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার রোজিনা ইসলামকে জামিন দিয়েছে আদালত।
রবিবার ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চূড়ান্ত জামিন শুনানি শেষে তাকে আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত জামিন প্রদানের আদেশ দেয় আদালত।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক রোজিনা অবশ্যই ন্যায়বিচার পাবেন: সিএনএনকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তবে তাকে ৫ হাজার টাকা মুচলেকা ও পাসপোর্ট জমা দেয়ার শর্তে জামিন প্রদান করা হয়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবর তার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হলেও, তাকে তাৎক্ষণিকভাবে জামিন না দিয়ে রবিবার রায় প্রদানের দিন ধার্য করা হয়।
আরও পড়ুন: মন্ত্রী, সচিব বা রোজিনা ইসলাম কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন: তথ্যমন্ত্রী
৪২ বছর বয়সী এই নারী সাংবাদিক অত্যন্ত সুপরিচিত তার অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার জন্য। সোমবার দুপুর থেকে প্রায় ৫ ঘণ্টা তাকে সচিবালয়ে আটকে রাখার পর গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, তার বিরুদ্ধে করোনা টিকা ক্রয় সংক্রান্ত নথিপত্রের অবৈধভাবে ছবি তোলার অভিযোগ করা হয়েছে।
গত সোমবার রাতেই রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩৭৯, ৪১১ ধারা এবং অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট এর আওতায় মামলা দায়ের করে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক রোজিনার বিরুদ্ধে নিপীড়নমূলক মামলা বাতিলে দাবি হিউম্যান রাইটস ওয়াচের
মঙ্গলবার অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টের মামলায় অভিযুক্ত রোজিনা ইসলামকে কারাগারে পাঠায় আদালত। অপরদিকে পুলিশের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদনও বাতিল করে দেয়া হয়। ওইদিন ই তাকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের নারী সেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে আটকে রাখা এবং ৫ ঘণ্টা পর তাকে পুলিশে সোপর্দ করার বিষয়টি তদন্ত করতে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে।
তবে বুধবার রোজিনার বিরুদ্ধে করা মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশের ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রোজিনার মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেল গোয়েন্দা পুলিশ
সাংবাদিক রোজিনাকে হেনস্তার প্রতিবাদ, তার বিরুদ্ধে করা মামলা বাতিল এবং তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে সারাদেশের সাংবাদিকরা মানববন্ধন এবং প্রতিবাদ সমাবেশ করে আসছিল। এরমধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলন বয়কটের ঘটানও ঘটে।
এদিকে এই ঘটনায় জাতিসংঘ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, টিআইব, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ উদ্বেগ ও নিন্দা প্রকাশ করে।
এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফল বাতিল চেয়ে রিট
২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ‘ত্রুটিপূর্ণ’ ফল বাতিল করে নতুন মেধা তালিকা প্রণয়নের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।
বুধবার ফেরদাওস জাহান মারিয়াসহ ৩২৪ পরীক্ষার্থীর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার এ রিট দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: রবিবারের এমবিবিএসের চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষা স্থগিত
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা সচিব, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও পরিচালক এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে আগামী সপ্তাহে এ রিটের শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনজীবী পল্লব।
আরও পড়ুন: মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত চেয়ে রিট খারিজ
এর আগে মঙ্গলবার পরীক্ষার্থীদের পক্ষে এই ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল বাতিল চেয়ে ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার এ নোটিশ পাঠান। কিন্তু নোটিশের প্রেক্ষিতে কোন সাড়া না পেয়ে এই রিট করা হয়।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যবিধি মেনে এমবিবিএস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে: মন্ত্রী
রিটে বলা হয়েছে, গত ৪ এপ্রিল প্রকাশিত ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলে অসংখ্য ভুল এবং বড় ধরনের অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর গত ৭ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত ভর্তি পরীক্ষার নিয়ম অনুযায়ী একজন পরীক্ষার্থী কোনো মেডিকেল কলেজে ভর্তি থাকা অবস্থায় তিনি যদি দ্বিতীয় বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তবে তার মোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৭.৫ নম্বর কর্তন করা হবে। আবার কোনো পরীক্ষার্থী যদি গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে থাকে তাহলে তার ৫ নম্বর কাটা যাবে।
কিন্তু প্রকাশিত ফলে দেখা যায়, অনেক পরীক্ষার্থীর ক্ষেত্রেই এই নিয়মটি পালন করা হয়নি। যেসব পরীক্ষার্থীর ৭.৫ নম্বর কর্তন করার কথা সেখানে মাত্র ৫ নম্বর কর্তন করা হয়েছে। ফলে ওইসব ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ২.৫ নম্বর বেশি দিয়ে মেধা তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। আবার প্রথমবার পরীক্ষায় যেখানে কোনো নম্বর কাটার কথা নয় সেখানে অনেক পরীক্ষার্থীর ৫ নম্বর কর্তন করে মেধা তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।
এবারের ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত পাঠ্যপুস্তক অনুযায়ী অন্তত দুটি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের সঠিক উত্তর ছিল দুটি করে। সেই সঙ্গে অন্তত তিনটি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের কোনো সঠিক উত্তর ছিল না।
সংরক্ষিত জেলা ও উপজাতি কোটার আসন পূরণেও ব্যাপক অসঙ্গতি করা হয়েছে। ঢাকা জেলা কোটা আবেদনকারী পরীক্ষার্থীকে দেখানো হয়েছে মেহেরপুর জেলার পরীক্ষার্থী হিসেবে। উপজাতি কোটায় সংরক্ষিত আসনে অসংখ্য সাধারণ ছাত্রছাত্রীকে নির্বাচিত করা হয়েছে।
এসব ত্রুটি ও অসঙ্গতি রেখে মেধা তালিকা প্রণয়ন করার ফলে হাজার হাজার যোগ্য ও মেধাবী পরীক্ষার্থী মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার মুখে পড়েছেন।
এসব কারণে প্রকাশিত ফল বাতিল করে এবং এসব ত্রুটি ও অসঙ্গতি সংশোধন করে নতুন মেধা তালিকা প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ করলেও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। বরং ত্রুটিপূর্ণ মেধাতালিকার ভিত্তিতেই মেডিকেল কলেজগুলোতে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে আগামী ২২ মে থেকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর ভর্তি কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে।
রিটে বলা হয়, যে ত্রুটিপূর্ণ মেধা তালিকার ভিত্তিতে মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর অর্থই হলো প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীকে বঞ্চিত করা। তাদের আজীবন লালিত আকাঙ্ক্ষা চিকিৎসাকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করা থেকে বঞ্চিত করা। সেই সাথে দেশের সামগ্রিক জনগোষ্ঠীকে স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়া, যা বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭, ৩১, ৩২ ও ৪০ এর পরিপন্থী।
সাংবাদিক রোজিনার গ্রেপ্তারে জাতিসংঘের উদ্বেগ প্রকাশ
অফিসিয়াল সিক্রেসি আইনের আওতায় গ্রেপ্তারকৃত প্রথম আলো পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার রোজিনা ইসলামের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের হেনস্থা ও ঝুঁকিহীন ভাবে কাজ করতে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
মঙ্গলবার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফানি দুজারিক বলেন, ‘আমি দেখেছি...আমরা বাংলাদেশে সাংবাদিক গ্রেপ্তারের খবর দেখেছি। আমরা অবশ্যই এই বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে দেখছি এবং এটি একটি উদ্বেগজনক ঘটনা।’
আরও পড়ুন: সাংবাদিক রোজিনার মুক্তির দাবিতে সাংবাদিকদের মানবন্ধন
জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র জানান, সাংবাদিকদের প্রতি তাদের এই অবস্থান বাংলাদেশ সহ বিশ্বের সকল দেশের জন্যই প্রযোজ্য।
তিনি বলেন, এই করোনা মহামারির মাঝেও বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকরা দারুণভাবে কাজ করে গেছেন। বিশ্বের যেখানেই হোক, তাদেরকে নিজ কাজ সঠিকভাবে করতে দিতে হবে।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক রোজিনার মুক্তি ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে টিআইবি
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার আদালত সাংবাদিক রোজিনাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ। বৃহস্পতিবার তার জামিন শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
রোজিনার মুক্তির দাবিতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন
অফিসিয়াল সিক্রেসি আইনের আওতায় গ্রেপ্তারকৃত প্রথম আলো পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার রোজিনা ইসলামের অনতিবিলম্বে এবং বিনাশর্তে মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন সাংবাদিকরা।
বুধবার সকালে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মানববন্ধনে উপস্থিত সাংবাদিকেরা রোজিনা ইসলামকে হয়রানির বিচার দাবি করেন।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক রোজিনার মুক্তি ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে টিআইবি
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, বরিশাল বিভাগ সাংবাদিক সমিতি, সচিবালয় রিপোর্টার্স ফোরাম, বাংলাদেশ আলোকচিত্র সাংবাদিক সমিতি সহ অন্যান্য সংগঠন এই মানববন্ধনে অংশ নেয়।
মানববন্ধন থেকে রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহরেরও দাবি জানানো হয়।
এদিকে, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি নিজ কার্যালয়ের সামনে একই দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
আরও পড়ুন: প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত
উল্লেখ্য, অবৈধভাবে ‘সরকারি নথি সংগ্রহের চেষ্টা এবং তার ছবি তোলার’ অভিযোগে সোমবার প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কিন্তু গ্রেপ্তার হওয়া সাংবাদিক রোজিনা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আটক হবার পরপরই তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাকে সচিবালয়ে নির্যাতন করা হয়েছে।’
রমনা বিভাগের এডিসি হারুন উর রশিদ জানান, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে ৩৭৯, ৪১১ ধারা এবং অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট এ মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার রোজিনা গ্রেপ্তার
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব ডা. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী রাতে শাহবাগ থানায় মামলা করেন।
মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিক রোজিনাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেয়া হলে, তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন আদালত। বৃহস্পতিবার তার জামিন শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় মৃত্যু প্রায় ৩৪ লাখে
অভিযোগ আছে, ঘটনার দিন সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে ৫ ঘণ্টা আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। পরে রাত পৌনে ১০টার দিকে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
সাংবাদিক রোজিনার মুক্তি ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে টিআইবি
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তি ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই দাবি জানিয়েছে টিআইবি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় রোজিনা ইসলামের প্রতি যে আচরণ করেছে তা শিষ্ঠাচার বহির্ভূত ও স্বাধীন সাংবাদিকতার টুটি চেপে ধরার শামিল।
আরও পড়ুন: প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার রোজিনা গ্রেপ্তার
পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে অনুসন্ধানী প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে দীর্ঘ সময় আটকে রেখে হেনস্তা এবং রাতে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে নথি চুরির মামলা দেওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ(টিআইবি)।
অবিলম্বে রোজিনা ইসলামের নামে দেওয়া মামলা প্রত্যাহার, নিঃশর্ত মুক্তি, ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করে সরকারের সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে বিবেচনাবোধের পরিচয় দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
আরও পড়ুন: প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনাকালে স্বাস্থ্য খাতের ক্রয় থেকে শুরু করে প্রতিটি পর্যায়ে দুর্নীতির যে ভয়াল ও অমানবিক চিত্র জাতির সামনে এসেছে, তার অনেকটাই সম্ভব হয়েছে রোজিনা ইসলামের মতো অকুতোভয় সাংবাদিকদের নিরন্তর প্রচেষ্টা ও নিষ্ঠার কারণে। এই সময়ে এমন ঘটনা মুক্ত সাংবাদিকতার টুটি চেপে ধরারই নামান্তর।
সরকারি নথি চুরির অভিযোগ এনে দীর্ঘসময় ধরে একজন নারী সংবাদ কর্মীকে আটকে রেখে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা রোজিনা ইসলামের সাথে যে ধরনের নিপীড়নমূলক আচরণ করেছেন, তা শুধু শিষ্টাচার বহির্ভূতই নয় তার প্রতি ক্ষোভের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ কী-না এমন প্রশ্ন রেখে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং করোনা সংকট মোকোবেলায় প্রতিষ্ঠানটির সমন্বয়হীনতা, পেশাদারিত্বের যে ঘাটতি ও স্বরূপ রোজিনা ইসলামের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনসমূহে উঠে এসেছে, এটাকে তারই ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া বিবেচনা করাই স্বাভাবিক। এখন পর্যন্ত যারা কিছুটা হলেও নীতি ও নিষ্ঠার সাথে সাংবাদিকতা করছেন, শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মাধ্যমে নিয়মিত জনস্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করছেন, এটা তাদের জন্য দুর্নীতিবাজদের পক্ষ থেকে একটি হুশিয়ারি বার্তা বলে মনে করি। এর রেশ আমাদের ধারণারও বাইরে। ”
''এ ঘটনায় যেভাবে রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তার বিষয়কে টেনে এনে ঔপনিবেশিক আমলের ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট-১৯২৩’ এর ৩ ও ৫ ধারা এবং পেনাল কোডের ৩৭৯ ও ৪১১ ধারায় যেভাবে মামলা দায়ের করা হয়েছে তাতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, “এক্ষেত্রে রোজিনা ইসলামের সাংবাদিক পরিচয়কে কোনোভাবেই বিবেচনা করা হয়নি, বরং তাকে ফাঁদে ফেলে শিক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে পুরো গণমাধ্যমকেই একহাত নেওয়ার অপচেষ্টা করেছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল।”
আরও পড়ুন: সাংবাদিক রোজিনার তাৎক্ষণিক মুক্তি দাবি করেছেন ফখরুল
ড. জামান আরও বলেন, “তথ্য অধিকার আইন পাশ হওয়ার ফলে বাক ও মত প্রকাশের যে আশার আলোটুকু আমরা দেখতে শুরু করেছিলাম অচিরেই ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে নিবর্তনমূলক ৩২ ধারায় ঔপনিবেশিক আমলের ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট-১৯২৩’ সন্নিবেশনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিলো রোজিনা ইসলামের ঘটনার মধ্য দিয়ে তার নগ্ন পরিণতি পেয়েছে। এর নিন্দা জানাবার ভাষাও হারিয়ে ফেলেছি। আমরা কি সামনের দিকে এগোচ্ছি না-কি উল্টো যাত্রা শুরু করেছি? এর শেষ কোথায়! এক শ্রেণির অসাধু, নীতি-নৈতিকতা বিবর্জিত কর্মকর্তা ও উচ্চপদে আসীনদের কাছে সরকার কি ক্রমাগত জিম্মি হয়ে পড়ছে!”
ইতোপূর্বে সাংবাদিক নির্যাতনের একটি ঘটনারও সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হওয়ার যে দৃষ্টান্ত রয়েছে তার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করে টিআইবি গণতন্ত্র, ন্যায়বোধ, সুশাসন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখার স্বার্থে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যমের ভবিষ্যতের জন্য অবিলম্বে রোজিনা ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তি ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের জোর দাবি জানিয়েছে।
প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনাকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত
ঢাকা, ১৮ মে (ইউএনবি)- অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের মামলায় অভিযুক্ত প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার রোজিনা ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। পুলিশের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদনও বাতিল করে দেন আদালত।
মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিক রোজিনাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেয়া হয়। এসময় ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসীম মামলার তদন্তকারীর কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আরিফুর রহমান সরদারের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন নাকচ করে অভিযুক্তকে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দেন।
এছাড়া তার জামিন আবদনের শুনানি আগামী বৃহস্পতিবার দিন হবে বলে ধার্য করেন আদালাত।
আরও পড়ুন: প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার রোজিনা গ্রেপ্তার
অবৈধভাবে ‘সরকারি নথি সংগ্রহের চেষ্টা এবং তার ছবি তোলার’ অভিযোগে সোমবার প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কিন্তু গ্রেপ্তার হওয়া সাংবাদিক রোজিনা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আটক হবার পরপরই তিনি বলেন, ‘আমাকে সচিবালয়ে নির্যাতন করা হয়েছে।’
রমনা বিভাগের এডিসি হারুন উর রশিদ জানান, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে ৩৭৯, ৪১১ ধারা এবং অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট এ মামলা হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব ডা. মো. শিব্বির আহমেদ ওসমানী রাতে শাহবাগ থানায় মামলা করেন।
উল্লেখ্য, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে সচিবালয়ে ৫ ঘণ্টা আটকে রাখার পর রাত পৌনে ১০টায় পুলিশে সোপর্দ করা হয়। অভিযোগ আছে, তাকে মন্ত্রণালয়ের কক্ষে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেন কথা বলতে রাজি হননি।
সাংবাদিক মহলের প্রতিবাদ
এদিকে সাংবাদিক রোজিনাকে সচিবালয়ে হেনস্থার অভিযোগে সোমবার তাৎক্ষণিকভাবে শাহবাগ থানায় জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানান সাংবাদিকরা।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন এবং সম্পাদক ইলিয়াস খান এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
অপরদিকে মঙ্গলবার সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের ঘটনা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ডাকা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) তা বর্জন ঘোষণা দেন।
খুলনা করোনা হাসপাতালের অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপন ‘পত্র চালাচালির’ মধ্যেই সীমাবদ্ধ
খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনের জন্য অর্থসংস্থান পেতে শুধু পত্র চালাচালিতেই চলে গেল তিন মাস।
সর্বশেষ বুধবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন বললেন, নতুন করে নোট দিয়ে কালই কাজ শুরু হয়েছে। এখন আবার এজন্য প্রশাসনিক অনুমোদন পেতে কতদিন লেগে যায় সেটি নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
তবে গত কয়েকদিনের চিত্রে খুলনা করোনা হাসপাতালে করোনা রোগীর চাপ কিছুটা কমতে দেখা গেলেও আবারও রোগী বাড়লে তখন রোগীরা অক্সিজেন সংকটে পড়তে পারে এমন আশঙ্কাকাও সংশ্লিষ্টদের।
আরও পড়ুন: হাসপাতালে অক্সিজেনের সংকট নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
এজন্য পত্র চালাচালির ধীরে চলো নীতির অবসান চায় খুলনাবাসী।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ঢাকা বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার অস্থায়ী গ্রীড হাসপাতালে সরকারি অর্থায়নে সরবরাহকৃত মালামাল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্থানান্তরপূর্বক চালুর উদ্যোগ নেয়া হলে খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালের জন্য একটি লিকুইড অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনের জন্য একটি ট্যাংকসহ অন্যান্য আনুসঙ্গিক মালামাল আনা হয়। কিন্তু সেটি স্থাপনের জন্য প্রয়োজন প্রায় ১ কোটি টাকা। এ টাকার সংস্থান কে দেবে তার কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। এজন্য ট্যাংকটি করোনা হাসপাতালের পাশে অর্থাৎ ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন এন্ড এ্যালায়েড সায়েন্সেস বা পরমানুর সামনে ফেলে রাখা হয়।
আরও পড়ুন: করোনা: ঈদকে সামনে রেখে সরকারের ৬ নির্দেশনা
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে আরও জানা যায়, প্লান্টটি স্থাপনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অপর একটি প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর বা এইচইডি। এজন্য এইচইডি থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পত্র দিয়ে ৯৭ লাখ টাকার একটি প্রস্তাবনা দেয়া হয়। খুলনাসহ অন্যান্য যেসব প্রতিষ্ঠানে বসুন্ধরার মালামাল দেয়া হয় সেগুলো স্থাপনের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে গত ৪ মার্চ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ওই পত্র দেয়া হয়। এতে অবশ্য খুলনাসহ দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের অক্সিজেন প্লান্টসহ অন্যান্য মেশিনারিজ স্থাপনের জন্য সর্বমোট ২ কোটি ১৬ লাখ টাকার প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করা হয়। সেই থেকে পত্র চালাচালি শুরু হয়ে এখনও চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯: দেশে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ও শনাক্ত কমেছে
এইচইডি, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ৪ মার্চ দেয়া এইচইডির পত্রটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে গেলে সেখান থেকে আবার প্রস্তাব পাঠানো হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে। ওই পত্রটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও পরিচালকের (হাসপাতাল ও ক্লিনিক)- স্বাক্ষর হওয়ার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যায় গত ৫ এপ্রিল। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন গত ১২ এপ্রিল আবারও পত্র দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে। ওই পত্রে সংশ্লিষ্ট কাজটি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে(ডিপিএম) বাস্তবায়ন করা যায় কি না সে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বুধবার অর্থাৎ আরও প্রায় এক মাস পর আবারও পত্র দিয়ে জানানো হয় এটি মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারভুক্ত। সুতরাং মন্র্ ণালয়ের প্রশাসনিক অনুমোদন প্রয়োজন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ রোকন উদ্দিন জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ সংক্রান্ত একটি ই-মেইল তিনি বুধবার পেয়েছেন। যার আলোকে তিনি বুধবারই আবার ফাইল প্রস্তুত করে কার্যক্রম শুরু করেছেন। আশা করা যাচ্ছে খুব শিগগরই এ সংক্রান্ত অনুমোদন দেয়া সম্ভব হবে। ফলে খুলনাসহ অন্যান্য যেসব স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে বসুন্ধরা থেকে ফেরত দেয়া সরকারি মালামাল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তা’ হয়তো অচিরেই স্থাপন শুরু হবে।
এ ব্যাপারে খুমেক হাসপাতালের করোনা প্রতিরোধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সমন্বয়কারী বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন-বিএমএ খুলনার সাধারণ সম্পাদক এবং খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মো. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপনের জন্য যে প্রক্রিয়ায় পত্র চালাচালি হচ্ছে সেটি আরও সহজীকরণ করে ঈদের আগেই যাতে কাজটি শুরু করা যায় সে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। কারণ কাজটি যেখানে বেধে আছে সেটি খুবই সামান্য একটি বিষয়। এখানে শুধুমাত্র আন্তরিকতাই যথেষ্ট। যে প্রক্রিয়ায় গেছে তাতে কাজটি হবে এটি ঠিক, কিন্তু কত দ্রুত হবে সেটি বোঝা যাচ্ছে না।
এজন্য তিনি পত্র চালাচালি আরও সহজ করে কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানান।
পত্র চালাচালি এবং পত্রের ভাষা আরও সহজ করে কাজটি দ্রুত করার দাবি জানিয়েছেন খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আব্দুল আহাদও।
তিনি বলেন, অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপন হলে করোনা রোগীদের যেমন চিকিৎসা সহজ হবে তেমনি যেহেতু করোনা হাসপাতালটি আইসিইউ ভবনের জন্য স্থাপন করা হয়েছে সেহেতু করোনার প্রাদুর্ভাব কমলেও আইসিইউ’র জন্যও অক্সিজেন প্লান্টের প্রয়োজন হবে। সুতরাং এটিকে কোনক্রমেই ছোট করে দেখার সুযোগ নেই।
করোনা হাসপাতালের মুখপাত্র ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার বলেন, অক্সিজেন প্লান্ট না থাকলেও বিকল্পভাবে অক্সিজেন সরবরাহ করে রোগীদের সেবা দেয়া হচ্ছে। খুমেক হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার ও পোষ্ট অপারেটিভ কাম আইসিইউ বিভাগের জন্য পূর্বে লিন্ডে অক্সিজেন কোম্পানী যে লিকুইড প্লান্টটি স্থাপন করেছিল সেটিও ডাবল ইউনিটে উন্নীত করে পাইপ লাইনে মাধ্যমে করোনা হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে করোনা হাসপাতালের দোতলায় ২০টি আইসিইউ বেড স্থাপন করা সম্ভব হবে। যেটি আজ থেকে চালু হতে পারে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর (এইচইডি) খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী আশুতোষ কর্মকার বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদনপত্র এইচইডির প্রধান কার্যালয়ে যাওয়ার পর সেখান থেকে নির্দেশনা আসার সাথে সাথেই অক্সিজেন প্লান্ট স্থাপন প্রক্রিয়া শুরু হবে।
মালদ্বীপে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি বাংলাদেশের ডা. নাজনীন আনোয়ার
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. নাজনীন আনোয়ারকে মালদ্বীপের প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচইউ)।
ডা. নাজনীন আনোয়ারের জনস্বাস্থ্য বিষয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে ৩৫ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে।
গত ১৮ এপ্রিল তিনি মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহ শহীদের কাছে তার আনুষ্ঠানিক পরিচয়পত্র উপস্থাপন করেন।
আরও পড়ুন: কোভিড-১৯ টিকা কোনো ‘জাদুর কাঠি’ নয়: ডব্লিউএইচও
তিনিই প্রথম বাংলাদেশি নারী যিনি বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার এই পদে ভূষিত হয়েছেন।
জনস্বাস্থ্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ে গবেষণায় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশংসা সনদ ছাড়াও ডা. নাজনীন আনোয়ারের পেশাগত অভিজ্ঞতার মধ্যে রয়েছে- মানসিক স্বাস্থ্য, স্বাস্থ্য নীতি, পরিকল্পনা এবং সক্ষমতা বিকাশ, অসংক্রামক রোগ, পুষ্টি, ভ্যাকসিন প্রতিরোধযোগ্য রোগ, অক্ষমতা প্রতিরোধ, স্বাস্থ্য গবেষণা এবং উন্নয়ন প্রভৃতি।
তিনি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আঞ্চলিক অফিস, বাংলাদেশে ডব্লিউএইচও’র কান্ট্রি অফিস এবং বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গেও সফলতার সাথে কাজ করেছেন।
আরও পড়ুন: পরবর্তী মহামারি আরও ভয়াবহ হতে পারে: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
অংশীদারিত্বের বিকাশ এবং সম্পদ একত্রিতকরণের মাধ্যমে এই অঞ্চলজুড়ে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ও ক্ষমতাকে জোরদার করার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্ভাবনী পদ্ধতির বিকাশ ও বাস্তবায়নের সুবিধার্থে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তাঁকে এই কৃতিত্ব দেয়া হয়। মানসিক স্বাস্থ্য এবং পদার্থের ব্যবহার নীতি, পরিকল্পনা, কর্মসূচি এবং আইনসভা কাঠামোকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে তার সফল ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে।
আরও পড়ুন: কোভ্যাক্সের সাথে করা চুক্তিকে অগ্রাধিকার দেয়ার আহ্বান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
ডা. নাজনীন আনোয়ার তার বাবা-মা’র ৭ সন্তানের মধ্যে তৃতীয়। তার বাবা মরহুম মাহবুব আলম আনোয়ার ছিলেন চট্টগ্রাম আগ্রাবাদ চেম্বারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি (বর্তমান এফআইসিসিআই, ফরেন ইনভেস্টমেন্ট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ)। দুই ছেলে ও এক মেয়ের জননী ডা. নাজনীন চট্টগ্রামের সেন্ট স্কলাস্টিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম কলেজ এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে’র শিক্ষার্থী ছিলেন।
রাশিয়ার টিকা 'স্পুটনিক ভি’ ব্যবহারের অনুমোদন দিল বাংলাদেশ
দেশে রাশিয়ার টিকা 'স্পুটনিক ভি' জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি।
মঙ্গলবার ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের এক সভায় এই টিকার অনুমোদন দেয়া হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গঠিত জরুরি জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রের ওষুধ, পরীক্ষামূলক ওষুধ, টিকা ও মেডিকেল সরঞ্জামবিষয়ক কমিটি এই অনুমোদন দিয়েছে।
আরও পড়ুন: মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ২১ লাখ টিকা আসছে
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, এই টিকা অনুমোদনের ফলে এখন রাশিয়ার এই টিকা আমদানি ও ব্যবহারে কোন আইনগত বাধা নেই। বাংলাদেশ এই টিকা ক্রয় করতে চাইলে রাশিয়া আগামী মাসে দিতে পারবে।
আরও পড়ুন: করোনার বিরুদ্ধে ২ বছর সুরক্ষা দিতে পারবে রাশিয়ার ‘স্পুটনিক ভি’
তিনি আরও বলেন, সবকিছু ঠিক থাকলে মে মাসের মধ্যেই এই টিকা দেশে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথম ধাপে ৪০ লাখ ডোজ টিকা আসার কথা রয়েছে।
ডিজি বলেন, 'আমাদের একটা পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি কমিটি আছে। এই কমিটি ১২ সদস্য বিশিষ্ট। তারা এই টিকাটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করেছে। আমরা দেখতে পেয়েছি কার্যকরী ক্ষমতা অনেক ভালো। এটি প্রায় ৯১ শতাংশ কার্যকরী। সার্বিক বিবেচনা করে স্পুটনিক ভি টিকাটি জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছি।'
আরও পড়ুন: করোনার ভ্যাকসিন সংগ্রহে রাশিয়াতে চিঠি পাঠানো হচ্ছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, 'আপনারা জানেন এই টিকাটি রাশিয়ায় অনুমোদিত হয়েছে এবং পৃথিবীর প্রায় সাতটি দেশে এই টিকাটি ব্যবহার হয়ে আসছে। এই টিকার সমস্ত ডাটা আমরা পেয়েছি, সরকারিভাবে আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এগুলো আমাদের টেকনিক্যাল এক্সপার্টদের দিয়ে আমরা যাচাই-বাছাই করেছি।'
কোভিড টিকা নেয়ার পর অসুস্থ ইউএনবির প্রতিনিধির চিকিৎসা মনিটরিং করছে মন্ত্রণালয়
করোনার টিকা নেয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়া ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশের (ইউএনবি) বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি বিষ্ণু প্রসাদ চক্রবর্তীর চিকিৎসার সার্বিক মনিটরিং করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।