স্বাস্থ্যবিধি
লকডাউনের তৃতীয় দিন: ঢাকার বেশিরভাগ রাস্তা নির্জন
প্রথম দুই দিনের তুলনায় দেশব্যাপী 'কঠোর' লকডাউনের তৃতীয় দিনে রাজধানী ঢাকার বেশিরভাগ রাস্তা ছিল নির্জন।
লকডাউনের প্রথম দিনগুলোতে শহরের রাস্তায় রিকশা চলাচল করতে দেখা গেলেও আজ খুব কমই ছিল।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে ঢিলেঢালাভাবে চলছে তৃতীয় দিনের লকডাউন
নিউ এয়ারপোর্ট রোডে কাকলি ও বনানী, গুলশান-১, গুলশান-২, প্রগতি সরণি, মেরুল বাড্ডা ও রামপুরা এলাকায পরিদর্শন করে ইউএনবির সংবাদদাতা বিভিন্ন প্রাইভেট কার ও অন্যান্য ব্যক্তিগত যানবাহন রাস্তায় চলতে দেখেছে।
মহাখালী এলাকার ট্রাফিক পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, ছুটির দিনে ব্যক্তিগত যানবাহনের পাশাপাশি রিকশার সংখ্যাও বেশ কম।
শুক্রবার প্রধান সড়কগুলোতে সকল দোকান এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ দেখা গেছে।
চেকপোস্টগুলোতে আইন প্রয়োগকারীদের প্রথম দু'দিনের মতো মানুষকে আটকাতে হয়নি।
আরও পড়ুন: যেমন গেল লকডাউনের দ্বিতীয় দিন
তবে, জুমার নামাজে বিপুল সংখ্যক মুসলিম অনুসারীদের অংশ নিতে দেখা গেছে। দোকান ও শপিংমল বন্ধ ছিল।
তবে, কাঁচা বাজারগুলো যথারীতি খোলা থাকলেও তারা সরকারি নির্দেশনা লঙ্ঘন করে খোলা জায়গায় বাজার বসায় নি। এছাড়াও, অনেককে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করতে দেখা গেছে।
এদিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০১ জন মারা গেছেন বলে শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো নিয়মিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। এটি ছিল একদিনে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা।
আরও পড়ুন: করোনায় দেশে একদিনে প্রথম শতাধিক মৃত্যু, শনাক্ত ২৩.৩৬ শতাংশ
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভাবে ৪ হাজার ৪১৭ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। বর্তমানে দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭ লাখ ১১ হাজার ৭৭৯ জনে।
করোনার সাম্প্রতিক ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সরকারের দেয়া ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার থেকে সারাদেশে আট দিনব্যাপী কঠোর লকডাউন পালিত হচ্ছে।
গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত করা হয় এবং ১৮ মার্চে দেশে প্রথম মৃত্যু রেকর্ড করা হয়।
লকডাউনের তৃতীয় দিন: উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা খুলনায় এখনো সচেতনতার অভাব
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন ও মাস্ক পরিধান নিশ্চিতে খুলনা জেলা ও খুলনায় অভিযানে ২৭টি মামলায় ১৩ হাজার ৮৫০ টাকা জরিমানা করা হয়।
শুক্রবার খুলনা জেলা ও খুলনা মহানগরে মোবাইল কোর্টের এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
খুলনা জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেতু কুমার বড়ুয়া বলেন, আমাদের টিমটি সোনাডাঙ্গা বয়রা এলাকায় কাজ করছে। অধিকাংশ মানুষ সচেতনতার অভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানছে না বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: খুলনায় মাঠে মাঠে সোনালি ধান কাটার উৎসব
নগরীর ব্যস্ত ময়লাপোতা মোড়ের যানবাহনগুলো চলছিল স্বাভাবিকভাবেই। এমন সময় সাইফুল ইসলাম ব্যবসায়িক কাজে বের হন মোটরসাইকেল নিয়ে। কোন রকম মাস্ক বা স্বাস্থ্যবিধি নেই। মোটরসাইকেলে দু'জন যাত্রী। ঠিক এ সময়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেতু কুমার বড়ুয়ার নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম হাজির। টিমের সামনেই পড়তেই মাস্ক ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় তাকে জরিমানা করা হয় ৫০০ টাকা।
সাইফুল ইসলাম বলেন, 'ব্যস্ততার কারণে মাস্ক পরার কথা মনে ছিল না।'
নিজের ভুলের কথা স্বীকার করে বলেন, 'এটা আসলে আমার সচেতনতার ঘাটতি ছিল। এখন থেকে আর এটা হবে না।'
আরও পড়ুন: খুলনায় করোনায় ৩ জনের মৃত্যু
শুধু সাইফুল ইসলামই নয়, যাদেরকে জরিমানা করা হয় তাদের সবার একই ধরনের বক্তব্য 'ব্যস্ততার কারণে আমি মাস্ক পরতে পারি নাই অথবা স্বাস্থ্যবিধি মানতে পারছি না।'
এর আগে, খুলনা মহানগরীতে দ্বিতীয় দফায় দেয়া লকডাউনের দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার মোট তিনটি টিম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৫৩ মামলায় ১৭ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এছাড়া উপজেলাগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন খুলনা জেলার নিজ নিজ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনাররা (ভূমি)।
এ সময় সাধারণ মানুষকে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের আহবান জানানো হয় এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানলে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে প্রচারণা চালানো হয়। 'সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮' এবং 'দন্ডবিধি, ১৮৬০' এর সংশ্লিষ্ট ধারার বিধান মোতাবেক অর্থদণ্ড করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।
আরও পড়ুন: খুলনায় চলছে কঠোর লকডাউন
খুলনা সদরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস,এম. রাসেল ইসলাম নূর।
তিনি বলেন, খুলনা উচ্চ ঝুঁকির থাকার পরেও মানুষ সচেতন হচ্ছে না। যাদেরকে জরিমানা করা হয়েছে তাদের মধ্যে অধিকাংশই মাস্ক পরছেনা অথবা স্বাস্থ্যবিধি মানছে না।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনায় সহযোগিতা করেন পুলিশ, আনসার ও এপিবিএন সদস্যরা। করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ নিশ্চিতকরণে জেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলেও জানান জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
লকডাউন: সিরাজগঞ্জে স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ৪০ জনকে জরিমানা
সিরাজগঞ্জে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলায় তিন দিনে ৪৬ জনকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ নিয়ে জেলায় ৫৩৯ জনকে জরিমানা করা হলো।
আরও পড়ুন: লকডাউন: সাভারে টিলেঢালাভাবে চলছে প্রথম দিন
সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে কঠোর লকডাউন পালিত হচ্ছে
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জেলা সদরসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে ৬টি ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসব অভিযানে মাস্ক পরিহিত না থাকা, লকডাউনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা, কারণ ছাড়া বাইরে বের হয়ে জটলা পাকানোসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২৪টি মামলা দায়ের হয়েছে।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে সর্বাত্মক লকডাউন চলছে
এসব মামলায় ৪০ জনকে বিভিন্ন পরিমাণে মোট ১৩ হাজার ২০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিদেশগামী প্রবাসী কর্মীদের জন্য বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করছে সরকার
করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে বুধবার থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনের মধ্যে প্রবাসী কর্মীদের বহনের জন্য পাঁচটি দেশে বিশেষ ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বুধবার এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ ইউএনবিকে বলেন, ‘লকডাউনকালীন বিদেশগামী কর্মীদের জন্য ফ্লাইট চালু করা হবে।’
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট চালুর দাবি আটাবের
তিনি বলেন, ‘সৌদি আরব,সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুরের জন্য অতিশীঘ্রই স্পেশাল ফ্লাইট চালু করা হবে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) এ বিষয়ে বিস্তারিত ওয়ার্ক প্ল্যান তৈরি করবে।’
মন্ত্রী বলেন, যে পাঁচটি দেশে আমরা ফ্লাইট চালু করব সে সব দেশ এখনো ওপেন আছে। সে দেশে কোন সমস্যা নেই।
তিনি বলেন, যারা বিদেশকর্মী বা ওয়ার্কার তাদের কীভাবে বিদেশ পাঠানো যায়, আমরা সেটি নিয়ে কাজ করছিলাম। এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে আসল ।
কবে নাগাদ সিদ্ধান্ত হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'ফ্লাইট চালু বিষয়ে সিদ্ধান্ত আপনি ফাইনালই বলতে পারেন। এ বিষয়ে গতকাল এবং আজকে মিটিং এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুধু প্রক্রিয়াটা কী হবে তার সিদ্ধান্ত হবে। আগামীকাল বিকাল ৩টায় আরেকটি মিটিং হবে। যারা এখন বিদেশ যাবেন তাদের বিষয়ে কিছু শর্ত থাকবে। সেখানে সব সিদ্ধান্ত হবে।
বিদেশগামী কর্মীদের প্রক্রিয়াটা কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদেশগামী যাত্রীদের করোনা নেগেটিভ সনদসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে এয়ারপোর্টে আনার দায়িত্ব রিক্রুটিং এজেন্সিসমূহের।
আরও পড়ুন: লকডাউনে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বন্ধ থাকবে: বেবিচক
মন্ত্রী বলেন, 'প্রবাসী কর্মীরা কেবল জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ মিশনের ছাড়পত্র গ্রহণ করে এবং দেশে প্রযোজ্য কোয়ারেন্টাইন শর্ত মেনে কোভিড নেগেটিভ সনদ নিয়ে দেশে আসতে পারবেন।
কতজন কর্মী এখন আটকে আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটির সঠিক সংখ্যা বলা কঠিন। তবে এজেন্সিগুলো বলছে ২৫-৩০ হাজার। আমার ধারণা যখন ফ্লাইট চালু করব তখন দেখবেন আরও অনেকে যাবে, তখন সংখ্যা ১ লাখ হয়ে যেতে পারে।'
এদিকে, অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) সভাপতি মনছুর আহামেদ কালাম ইউএনবিকে বলেন, 'ছুটিতে আসা প্রবাসী কর্মী ও নতুন ভিসা প্রাপ্তদের যাতায়াত সচল রাখার নিমিত্তে লকডাউনের মাঝে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটসমূহ চলাচল রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছি সরকারে কাছে। এ বিষয় গতকাল আমরা সংবাদ সম্মেলন করে আমাদের দাবি জানাই।'
আটাবের সভাপতি বলেন, 'মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী অনেক প্রবাসী ছুটি নিয়ে বা জরুরি প্রয়োজনে বর্তমানে দেশে অবস্থান করছেন এবং তাদের অনেকের ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ হতে চলেছে। তারা এয়ারলাইন্সের টিকিট সংগ্রহ করে কর্মস্থলে গমনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছেন। তাছাড়াও অনেক নতুন কর্মী ভিসা প্রাপ্ত হয়ে কর্মস্থলে গমনের অপেক্ষায় রয়েছেন। নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থলে যোগদান না করতে পারলে নিয়োগকর্তা তাদের অনেকেরই ভিসা বাতিল করবেন।'
তিনি বলেন, 'একজন প্রবাসীর আয়ের ওপর তার পুরো পরিবার নির্ভরশীল। সঠিক সময়ে নিজ কর্মস্থলে গমন করতে না পারার কারণে তাদের কর্মচ্যুতি হলে তাদের পরিবার পথে বসার উপক্রম হবে। তাই ছুটিতে আসা প্রবাসী কর্মী এবং নতুন ভিসাপ্রাপ্ত কর্মীদের সময় মত কর্মস্থলে পৌঁছানোর বিষয়টিও বর্তমান সরকার মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করবেন বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।'
আরও পড়ুন: ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক: বেবিচক
অন্যদিকে, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা)- সাধারণ সদস্যদের ব্যানারে আয়োজিত গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেছেন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্য এসব দেশে এখন করোনার প্রকোপ নেই। শ্রমিক গ্রহণকারী এসব দেশের পক্ষ থেকেও কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। তাই, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এসব দেশে শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করা যুক্তিযুক্ত নয়। এতে হাজার হাজার বিদেশগামী এবং সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তাই, চলমান লকডাউনে বিদেশগামীদের কথা চিন্তা করে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট দেশে বিমান চলাচল স্বাভাবিক রাখার দাবি জানান রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা। প্রয়োজনে বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনা করে হলেও বিদেশগামীদের যথাসময়ে সংশ্লিষ্ট দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রকোপ আকার ধারণ করায় বুধবার থেকে আট দিনের জন্য সর্বাত্মক লকডাউনে বাংলাদেশ। গণপরিবহনের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটও বন্ধ ঘোষণা করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এই অবস্থায় সঙ্কটে পড়েছেন বিদেশগামীরা।
কুড়িগ্রামে হাট বাজারগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির বেহাল অবস্থা
কুড়িগ্রামে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে প্রশাসন থেকে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হলেও হাট বাজারগুলোতে ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। নিরাপদ দুরত্ব না মেনেই ক্রেতারা বাজারগুলোতে ঘোরাফেরা করছেন। বেশ কিছু মানুষ মাস্ক ছাড়াই বাইরে বের হয়েছেন। ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হিমশিম খাচ্ছে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে।
বুধবার সরকার ঘোষিত লকডাউনের প্রথম দিনে বিশেষ করে শহরের জিয়াবাজার, পৌরবাজার, খলিলগঞ্জ বাজার, ত্রিমোহনী বাজারে লেজেগোবরে অবস্থা। এসব এলাকায় অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের মত ক্রেতারা বাজারে ভিড় করছেন। এছাড়াও বিভিন্ন মোড়ে জটলা করে লোকজন রাস্তায় অবস্থান করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ীর শব্দ পেলেই তারা গলিতে গিয়ে লুকাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: ১৪ এপ্রিল থেকে দেশে সর্বাত্মক লকডাউন শুরু; প্রজ্ঞাপন জারি
এদিকে দূর-দূরান্ত থেকে শ্রমিকদের নিয়ে ছেড়ে আসা ট্রাক লকডাউনে আটকে পরায় ভোগান্তিতে পরেছে বাড়ি ফেরা শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার দুপুরে ময়মনসিংয়ের কিশোরগঞ্জ থেকে ৩০জন ইট ভাটার শ্রমিক নিয়ে ছেড়ে আসা একটি ট্রাক (ট-১৩৪১৪৪) বুধবার দুপুর পর্যন্ত কুড়িগ্রাম শহরে আটকে পরেছিল। হোটেল বন্ধ থাকায় পেটে খাবার পরেনি তাদের। অনুমতি ছাড়াই শ্রমিক নিয়ে লকডাউনে শহরে ঢোকায় শাস্তি স্বরুপ গুণতে হয়েছে জরিমানা।
আরও পড়ুন: লকডাউনে ৮টি বিশেষ পার্সেল ট্রেন চলবে: রেলপথ মন্ত্রী
ট্রাকে আসা শ্রমিক ছানোয়ার হোসেন, রায়হান মিয়া ও আফজাল হোসেন জানান, তারা ৬ মাস আগে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের ডাওকিয়া মোড় সাদুল্লা বাজারের কাছে অপু মিয়ার ইট ভাটায় কাজ করছিল। লকডাউনে ভাটা বন্ধ হওয়ায় সর্দার
ট্রাক ভাড়া করে তাদেরকে বাড়ি পাঠায়। তারা জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকাটা থানাধীন তরীরহাট এলাকার বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: লকডাউন: স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সকল প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার নির্দেশ
ট্রাকচালক ফজলু মিয়া জানান, ১০ হাজার টাকা ভাড়ায় মঙ্গলবার দুপুরে ৩০ জন ইট ভাটার শ্রমিককে নিয়ে কুড়িগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছি। প্রশাসনের অনুমতি না নেয়ায় ৪ হাজার টাকা জরিমানা গুণতে হলো। এখন পর্যন্ত কারো পেটে ভাত পরেনি বলে তিনি জানান।
আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট চালুর দাবি আটাবের
ছুটিতে আসা প্রবাসী কর্মী ও নতুন ভিসা প্রাপ্তদের যাতায়াত সচল রাখার নিমিত্তে লকডাউনে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটসমূহ চালু রাখার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরর দাবি জানিয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)।
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মলেন লিখিত বক্তব্যে আটাবের সভাপতি মনছুর আহামেদ কালাম এ দাবি জানান।
আরও পড়ুন: লকডাউন: স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সকল প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার নির্দেশ
তিনি বলেন, 'দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসের বর্তমান অস্বাভাবিক প্রাদুর্ভাবের কারণে আগামী ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। করোনাভাইরাস মহামারি নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপের সাথে সহযোগিতা করা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা আমাদের সকলেরই দায়িত্ব।'
আটাবের সভাপতি বলেন, 'লকডাউনে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ভ্রমণপথে সকল ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী অনেক প্রবাসী ছুটি নিয়ে বা জরুরি প্রয়োজনে বর্তমানে দেশে অবস্থান করছেন এবং তাদের অনেকের ভিসার মেয়াদোত্তীর্ণ হতে চলেছে। তারা এয়ারলাইন্সের টিকেট সংগ্রহ করে কর্মস্থলে গমনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় আছেন। তাছাড়াও অনেক নতুন কর্মী ভিসা প্রাপ্ত হয়ে কর্মস্থলে গমনের অপেক্ষায় রয়েছেন। নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থলে যোগদান না করতে পারলে নিয়োগকর্তা তাদের অনেকেরই ভিসা বাতিল করবেন।'
আরও পড়ুন: লকডাউনে মোংলা বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক
তিনি বলেন, 'একজন প্রবাসীর আয়ের ওপর তার পুরো পরিবার নির্ভরশীল। সঠিক সময়ে নিজ কর্মস্থলে গমন করতে না পারার কারনে তাদের কর্মচ্যুতি হলে তাদের পরিবার পথে বসার উপক্রম হবে।'
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে মনছুর আহামেদ বলেন, ছুটিতে আসা প্রবাসী কর্মী এবং নতুন ভিসাপ্রাপ্ত কর্মীদের সময় মত কর্মস্থলে পৌঁছানোর বিষয়টিও বর্তমান সরকার মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করবেন বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
‘লকডাউনের সময় যাদের ফ্লাইট র্নিধারিত ছিল বা যাদের ভিসা মেয়াদোত্তীর্ণের পথে তারা সময়মত কর্মস্থলে পৌঁছাতে না পারলে ব্যক্তি, পরিবার এবং রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে।'
তিনি বলেন, 'এছাড়া প্রবাসী কর্মীরা যে সকল দেশে গমন করবেন বিশেষত সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অনেক দেশ এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি যাত্রী প্রবেশে কোন প্রকার বিধি-নিষেধ আরোপ করেনি।'
আরও পড়ুন: লকডাউনে ৮টি বিশেষ পার্সেল ট্রেন চলবে: রেলপথ মন্ত্রী
উল্লেখ্য, আটাব দেশের প্রায় ৩ হাজার ৫০০ সরকার নিবন্ধিত ট্রাভেল এজেন্সির একটি অলাভজনক সংগঠন। বিদেশগামী যাত্রীদের এয়ার টিকেট ও অন্যান্য বিষয়ে সহযোগিতাসহ দেশি-বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর সাথে আটাব নিবিড়ভাবে কাজ করছে এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহযোগী সংস্থা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।
লকডাউন: স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সকল প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার নির্দেশ
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন চলাকালীন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীনস্থ সকল অধিদপ্তর, দপ্তর, প্রতিষ্ঠানের আওতাধীন সকল হাসপাতাল, প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে করোনা বেড বাড়ানো হবে: স্বাস্থ্য সচিব
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
এতে বলা হয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীনস্থ সকল অধিদপ্তর, দপ্তর, প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আবশ্যিকভাবে নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করবেন এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করবেন।
লকডাউন বিধিনিষেধ কঠোরভাবে অনুসরণ করার আহ্বান আইজিপি’র
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে লকডাউন বিধিনিষেধ কঠোরভাবে অনুসরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ।
তিনি বলেন, 'আমরা আগামীকাল কাউকে সড়ক-রাস্তাঘাট এবং বাইরে দেখতে চাই না। বিনা প্রয়োজনে কাউকে দেখতে চাই না। আমাদের চাপ প্রয়োগের চেয়ে নিজ উদ্যোগেই এই দায়িত্ব পালন করুন। এসব না মানলে সমগ্র বাংলাদেশকে আইসোলেশনে নিতে হবে।'
আরও পড়ুন: লকডাউনে কেউ ক্ষুধার্ত থাকবে না: সচিব
মঙ্গলবার লকডাউনে পুলিশের মুভমেন্ট পাস অ্যাপসের উদ্বোধন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, 'গতবছর আমরা করোনা পরিস্থিতি যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছি, এবারও দ্বিতীয় ওয়েভ নিয়ন্ত্রণ সেভাবে করতে চাই। তবে অবশ্যই অপ্রয়োজনীয় চলাফেরা বন্ধ করতে হবে। গতবছর লাখ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন। এবারও গত দুদিন ধরে ঢাকা ছাড়ছেন, এগুলো ঠিক না। এগুলো নৈতিকভাবে খুবই অন্যায় কাজ।
তিনি বলেন, ‘গতকাল বিভিন্নভাবে যারা যেখানে পৌঁছেছেন, তারা সেখানেই থাকবেন। গ্রামবাসীকে বলব, লক্ষ্য রাখবেন, যদি আক্রান্ত কেউ থাকেন, তাহলে সে গ্রামের অন্যকেও আক্রান্ত করবে। তারা সাতদিন ঘরে থাকবেন। সরকার যেভাবে বলছে সেভাবে নির্দেশ মানবেন।'
আইজিপি বলেন, যাদের সীমিত কারণে বের হওয়া লাগতে পারে তারা মুভমেন্ট পাস নেবেন। 'রাস্তাঘাটে কোনো আড্ডা দেবেন না। বিভিন্ন সড়কে, মোড়ে আড্ডা দেবেন না। দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে তরুণরা কেউ বের হবেন না। বের হতে হলে অবশ্যই দ্রুত ঘরে ফিরতে হবে।'
আরও পড়ুন: রাজনীতির নামে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড করতে দেয়া হবে না: আইজিপি
গাড়ি বের করার বিষয়েও নিরুৎসাহী করে তিনি বলেন, 'অবশ্যই মুভমেন্ট পাস নেবেন।'
পুলিশকে সবাই সহযোগিতা করবেন বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এক ঘণ্টায় পাঁচ হাজার মুভমেন্ট পাসের আবেদন জমা নিয়ে আইজিপি বলেন, ঢাকার বাইরে গেলে মুভমেন্ট পাশ লাগবে। একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে ও একটি গাড়ির নম্বর দিয়ে একাধিক পাস নেয়া যাবে না। একজন ব্যক্তির একাধিক পাস নেয়ার সুযোগ নেই। একের অধিক পাস নিতে গেলে অবশ্যই ধরা পড়ে যাবেন তিনি। সুতরাং মিথ্যা তথ্য দিয়ে একাধিক পাস নেয়ার সুযোগ নেই।
মুভমেন্ট পাস অ্যাপসের আইনগত ভিত্তি কী এমন আরেক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, ‘এটার আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। এটা সহযোগিতা। মুভমেন্ট পাস নিতে আমরা কাউকে বাধ্য করছি না। এটাকে সাপোর্ট হিসেবে দেখা হচ্ছে। আপনি না চাইলে আমরা বাধ্য করব না।’
আরও পড়ুন: ১৪ এপ্রিল থেকে দেশে সর্বাত্মক লকডাউন শুরু; প্রজ্ঞাপন জারি
করোনা পরিস্থিতিতে সবাইকে সচেতনতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের বিষয়ে আইজিপি বলেন, সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। আমরা কোনো প্রাণহানি চাই না। বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণের প্রধান উপায় হচ্ছে ব্যক্তিগত সচেতনতা।
‘আমাদের অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। তাছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধোয়া। এসব বিধি আমাদের মনোযোগ ও আন্তরিকতা দিয়ে মানতে হবে,’ বলেন তিনি।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাইট শেয়ারিং সার্ভিস চালুর দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতি’র
চালকের মতো যাত্রীর মাথায় মানসম্মত হেলমেট নিশ্চিত করে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ সাপেক্ষে রাইট শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেল চালুর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই দাবি জানান।
তিনি বলেন, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে যানজট, গণপরিবহন সংকট, পরিবহনে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী সেবারমান তলানীতে পৌঁছানোর কারণে সময়ের চাহিদার প্রেক্ষিতে মোটরসাইকেলে রাইট শেয়ারিং চালু হলেও বর্তমানে প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষের জীবন-জীবিকার একমাত্র উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে এটি। এছাড়াও প্রায় ১২ লাখ বাইকার রাইট শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে স্বাভাবিক সময়ে সারাদেশে দৈনিক প্রায় ৫০ লক্ষ ট্রিপ যাত্রী পরিবহন করছে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, যানজট, গণপরিবহন সংকটসহ নানা কারণে জরুরি যাতায়াতের প্রয়োজনে যাত্রীদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠা এই বাহনটি করোনা সংকটে বন্ধ করে দেয়ায় জরুরি যাতায়াতের যাত্রীরা বিপাকে পড়েছে। অন্যান্য গণপরিবহনের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম ঝুকিঁপূর্ণ হলেও সরকারের অদুরদর্শী সিদ্বান্তে এটি বন্ধ থাকায় যাত্রীদের পাশাপাশি এই পেশায় নিয়োজিত চালকেরা নিধারুণ অর্থ সংকটে পড়েছে।
আরও পড়ুন: গণপরিবহনে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতি’র
গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানানো কঠিন হলেও মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে এটি মানানো অনেক সহজতর। তাই জরুরি ভিত্তিতে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ সাপেক্ষে রাইট শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেল চালু করার দাবি জানান মোজাম্মেল হক।
শুক্রবার থেকে দোকানপাট-শপিংমল খোলা
স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুক্রবার থেকে পাঁচ দিনের জন্য দোকানপাট ও শপিংমল পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কঠোর স্বাস্থ্যবিধি পালন সাপেক্ষে দোকানপাট ও শপিংমল খোলা রাখা যাবে।
তবে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়।
কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলায় সরকার ৫ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহব্যাপী লকডাউন কার্যকর করতে দেশের দোকান ও শপিংমলগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়।
আরও পড়ুন: লকডাউনের তৃতীয় দিন: আন্তনগর বাস চলছে
এদিকে, লকডাউন চলাকালীন শপিংমল বন্ধের প্রতিবাদে সোমবার থেকে নিউমার্কেট এবং সংলগ্ন শপিংমলের দোকান মালিক ও কর্মচারীরা বিক্ষোভ করছেন।
ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, নূর ম্যানশন এবং একাধিক শপিংমলের দোকানের মালিক ও কর্মচারীরা প্রতিদিন চার ঘণ্টা করে তাদের দোকান খোলা রাখার অনুমতি দিতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশব্যাপী চলমান লকডাউনকে 'অবৈজ্ঞানিক ও আংশিক' মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা
লকডাউনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে অপ্রয়োজনে জনসাধারণের চলাচল এবং সমাবেশ নিয়ন্ত্রণ করা এবং এইভাবে ভাইরাস সংক্রমণ রোধ করা।
মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় এটি বাংলাদেশের প্রথম আনুষ্ঠানিক লকডাউন।
আরও পড়ুন: জনগণের উদাসীনতার মাঝেই দেশে লকডাউনের ২য় দিন শুরু
গত কয়েকদিন সপ্তাহ ধরে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যু ঊর্ধ্বগতি হওয়ায় সরকার রবিবার দেশব্যাপী এক সপ্তাহ লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছিল।