ভারত
মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন মমতা
ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বুধবার টানা তৃতীয়বারের মতো শপথ নিয়েছেন মমতা ব্যানার্জি।
রাজ্যের রাজধানী কলকাতায় তাজ ভবনে (গভর্নর হাউজ) ভারতীয় সময় বেলা ১১টায় পশ্চিমবঙ্গের গভর্নর যগদীপ ঠাকুর ৬৬ বছর বয়সী মমতাকে শপথ পড়ান।
শপথ অনুষ্ঠান শেষে দিদি হিসেবে পরিচিত মমতা বলেন, ‘আমার প্রথম প্রাধান্য হলো কোভিড মোকাবিলা করা। সংকট মোকাবিলায় কী কী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে সে বিষয়ে বৈঠক করতে রাজ্য সচিবালয়ে যাব।’
পশ্চিমঙ্গের বিধানসভার নির্বাচনে মমতার দল তৃণমূল কংগ্রেস ২৯২টি আসনের মধ্যে ২১৩টি আসনে জয়লাভ করে ক্ষমতায় এসেছে। রবিবার এ ফলাফল ঘোষণা করা হয়। তবে মমতা তার নিজের আসনে নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে প্রায় ২ হাজার ভোটে পরাজিত হয়েছেন।
সিলেটে সীমান্তে ভারতীয় খাসিয়ার গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
সিলেটের জৈন্তাপুর সীমান্তে ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার ডিবির হাওর এলাকার কেন্দ্রিবিল সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মকবুল আলী (২৮) জৈন্তাপুর উপজেলার কেন্দ্রী ঝিঙ্গাবাড়ী গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে।
আরও পড়ুন: বিএসএফ’র গুলিতে আহত ভারতীয় কিশোরকে হস্তান্তর
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার ভোরে কেন্দ্রিবিল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে মটরশুটি নিয়ে ভারতে প্রবেশ করে একটি চোরাকারবারী দল। দুপুরে ফেরার পথে স্থানীয় খাসিয়া বাসিন্দারা গুলি ছুঁড়ে। এতে কেন্দ্রী ঝিঙ্গাবাড়ী গ্রামের মকবুল আলী নিহত হন। এ সময় তার সাথে থাকা অন্যরা মকবুল আলীর লাশ ভারতের ভেতর থেকে সীমান্তের জিরো লাইনে রেখে পালিয়ে যান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত বন্ধ থাকবে ১৪ দিন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম দস্তগীর বলেন, ‘খাসিয়াদের গুলিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আমরা তার লাশ উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি।’
আরও পড়ুন: ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে আসার সময় সাতক্ষীরা সীমান্তে আটক ৪
তবে বিজিবি সিলেট ৪৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক আহমদ ইউসুফ জামিল জানান, বিজিবির সদস্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা কাঠ সংগ্রহ করতে ভারত সীমান্তের ভেতরে গিয়েছিলেন। পরে ভারতের বাসিন্দারা তাদের ধাওয়া করে গুলি ছুঁড়েন। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মকবুল হোসেন। তার সঙ্গীরা গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে গেছেন।
ভারত: পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন পরবর্তী সহিসংতায় নিহত ১২
পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় কমপক্ষে ১২ জন নিহতের ঘটনায় রাজ্যের প্রশাসনের কাছে প্রতিবেদন চেয়েছে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে স্থানীয় গণমাধ্যমে জানানো হয়, গত দুদিনে পশ্চিমবঙ্গে ১২ জন মানুষ মারা গেছেন। তাদের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিজেপির সমর্থকরা রয়েছেন।
সূত্র জানায়, মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গের মূখ্য সচিবের কাছে এ ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: কোভিড: ভারতে সাড়ে ৩ লাখের অধিক নতুন শনাক্ত, মৃত্যু ৩,৪১৭
ইতোমধ্যে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।
তিনি তার সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘নির্বাচন চলাকানীন নানা জঞ্জাল, উষ্ণতা এবং শান্তিপূর্ণ অবস্থা ছিল। বিজেপি নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা করেছে, কিন্তু আমি বলব সবাইকে শান্ত থাকতে। সহিসংতায় জড়াবেন না, যদি কোনো সমস্য দেখতে পান পুলিশকে জানাবেন, পুলিশ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিবে।’
আরও পড়ুন: ভারত ফেরত যাত্রীর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে
বিজেপির রাজ্য প্রধান দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে মমতার সাথে একমত পোষণ করছি, এটা ভালো যে মমতা সবাইকে শান্ত থাকতে বলেছেন। অন্যথায় আমরা প্রতিবাদ করতাম। তৃণমূলের জয়ের পর কেনো এই সহিংসতা?’
দিদি নামে পরিচিত মমতা আগামী বুধবার তৃতীয় বারের মতো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করবেন।
সকল প্রতিকূলতাকে পেছনে ফেলে রবিবার বিধানসভা নির্বাচনে অভূতপূর্ব জয় লাভ করেছেন তিনি।
তিনি বর্তমান শাসক দল বিজেপির চ্যালঞ্জকে দৃঢভাবে মোকাবিলার পামাপাশি বাম ফ্রন্টকেও পরাজিত করেছেন।
বিধান সভার ২৯২টি আসনের মধ্যে ২১৩টি আসনে জয়লাভ করে তার দল শিগগরই সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। যদিও ৬৬ বছর বয়সী মমতা তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেয়া সুভেন্দু অধিকারীর কাছে ২ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে গেছেন।
আরও পড়ুন: ভারতে করোনা আক্রান্ত ২ কোটি ছাড়াল
রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মমতা স্পষ্ট করে জানান, তিনি আদালতে এই রায়ের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জ জানাবেন।
তিনি বলেন, ‘কীভাবে নির্বাচন কমিশন একবার রায় ঘোষণার পর সেটি পরিবর্তন করতে পারেন? আমরা আদালতে যাব।’
নন্দীগ্রামে ১ হাজার ২০০ ভোটে মমতা হবার জয়ী ঘোষণার কিছুক্ষণ পর সুভেন্দু অধিকারীকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। পুলিশ পুনরায় ভোট গনণার আবেদন নাকচ করে দিয়েছে।
যদিও বিজেপি বাংলায় ৭৭টা আসনে জয়লাভ করেছে যেখানে ২০১৬ সালের নির্বাচনে পেয়েছিলো মাত্র ৩টি আসন। কিন্তু ১৯৭৭-২০১১ পর্যন্ত বাম সরকার শাসন করে আসলেও এইবার নির্বাচনে একটি আসনেও জয়লাভ করেনি তারা।
কোভিড-১৯: অবশেষে আইপিএল স্থগিত
চারটি ফ্র্যাঞ্চাইজির খেলোয়াড় ও কর্মীরা কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়ার পর অবশেষে মঙ্গলবার ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) স্থগিত করা হয়েছে।
ভারতের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (বিসিসিআই) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং টুর্নামেন্টের কর্মকর্তারা ‘তাত্ক্ষণিকভাবে আইপিএল ২০২১ মৌসুম পিছিয়ে দেয়ার জন্য সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
বিসিসিআই জানায়, ‘বিসিসিআই খেলোয়াড়, সমর্থক এবং আইপিএল আয়োজনে জড়িত অন্যান্য অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তায় কোনো আপস করতে চায় না।’
‘এটা কঠিন সময়, বিশেষ করে ভারতে। যদিও আমরা কিছুটা ইতিবাচক এবং উত্সাহ আনার চেষ্টা করেছি, তবে এটি এখনই জরুরি যে টুর্নামেন্টটি স্থগিত করা হয়েছে এবং প্রত্যেকেই এই কঠিন সময়ে তাদের পরিবার ও প্রিয়জনদের কাছে ফিরে যাবে,’ বিবৃতিতে বলা হয়।
আরও পড়ুন: কলকাতা নাইট রাইডার্সের দুই খেলোয়াড় করোনায় আক্রান্ত
এর আগে করোনার কারণে সোমবারের কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং রয়েল চ্যালেঞ্জার ব্যাঙ্গালুরের মধ্যকার নির্ধারিত ম্যাচটি পেছানো হয়েছিল।
মঙ্গলবার চেন্নাই সুপার কিংসের দুই কর্মী, সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ঋদ্ধিমান সাহা ও দিল্লি ক্যাপিটালসের অমিত মিশ্রও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
৯ এপ্রিল থেকে প্রতি সন্ধ্যায় দর্শক ছাড়াই আইপিএলের খেলা চলছে। যদিও ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
বিসিসিআই বলছে, ‘আইপিএল ২০২১-এ অংশ নেয়া সবাইকে নিরাপদে পৌঁছে দিতে তাদের ক্ষমতার মধ্যে সব করা হবে।’
এদিকে, ভারতে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩ লাখ ৫৭ হাজার ২২৯ জন। বর্তমানে দেশটিতে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়াল ২ কোটি ২ লাখ ৮২ হাজার ৮৩৩ জনে।
দেশটিতে নতুন করে ৩ হাজার ৪৪৯ জন করোনা রোগীর মৃত্যুর পর মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৪০৮ জনে। খবর এনডিটিভির।
ভারতে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৩৪ লাখ ৪৭ হাজার ১৩৩ জন এবং এখন পর্যন্ত দেশটিতে সুস্থ হয়েছে ১ কোটি ৬৬ লাখ ১৩ হাজার ২৯২ জন।
আরও পড়ুন:ভারতে করোনা আক্রান্ত ২ কোটি ছাড়াল
প্রতিবেশী এই দেশটিতে করোনারে সর্বোচ্চ প্রকোপের মধ্যেই দেশটিতে কেন্দ্রীয় সরকার লকডাউন ঘোষণা করে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন বোর্ড পরীক্ষা বাতিল ও স্থগিত করেছে।
বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল দেশটিতে শনিবার (১ মে) থেকে ১৮ বছরের ওপরের সকলের জন্য তৃতীয় ধাপে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে।
কলকাতা নাইট রাইডার্সের দুই খেলোয়াড় করোনায় আক্রান্ত
আইপিএলের শুরু থেকে করোনার ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হলেও কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) দুই খেলোয়াড়ের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে।
ফলে সোমবারের কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং রয়েল চ্যালেঞ্জার ব্যাঙ্গালুরের মধ্যকার নির্ধারিত ম্যাচটি পেছানো হয়েছে।
কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত চার দিনে আইপিএল কর্তৃপক্ষ এ দুই খেলোয়াড়ের ৪টি পরীক্ষা করিয়েছেন যার মধ্যে শেষ পরীক্ষায় বরুণ চক্রবর্তী এবং সন্দীপ ওয়ারিয়র করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন:করোনায় ১৭২০ ক্রিকেটারের পাশে বিসিবি
বর্তমানে এ দুজন খেলোয়াড়কে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে এবং কলকাতা নাইট রাইডার্সের পক্ষ থেকে বাকি খেলোয়াড়দের কোভিড টেস্ট করানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: এক ফরম্যাট থেকে অবসর নিতে চান তামিম ইকবাল
এ ব্যাপারে ভবিষ্যৎ কোনো স্বাস্থ্য জটিলতা এড়ানোর জন্য আইপিএল মেডিকেল কর্তৃপক্ষ নিবিড় এবং নিত্য পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে। আইপিএলে করোনা শনাক্তের ঘটনা এই প্রথম।
আরও পড়ুন: ক্যান্ডি টেস্ট: টাইগারদের রথে শিথিলতা এনে দিল অভিষিক্ত জয়াবিক্রম
করোনা মহামারিতে দেশগুলোর মধ্যে বেশি খারাপ অবস্থানে রয়েছে এমন দেশগুলোর মধ্যে ভারত অন্যতম।
ভারত ফেরত যাত্রীর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে
ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞায় আটকে পড়া বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রীর সংখ্যা দিনদিন কমতে শুরু করেছে। কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশি উপ-হাইকমিশন থেকে এনওসি নিয়ে গত এক সপ্তাহে ১ হাজার ২৯৬ জন পাসপোর্ট যাত্রী বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন দিয়ে দেশে ফিরেছেন। অপরদিকে বাংলাদেশে আটকা পড়াদের মধ্যে ১২০ জন পাসপোর্ট যাত্রী ভারতে ফিরে গেছেন।
সোমবার দুপুর পর্যন্ত ভারত থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রী দেশে ফিরেছে ৮৮ জন আর ভারতীয় ফিরে গেছে মাত্র ৪ জন।
আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি বাড়লেও রপ্তানি বাণিজ্যে ধস
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব জানান, বাংলাদেশ সরকার ভারতের করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট সংক্রমণ রোধে ২৬ এপ্রিল থেকে দুই সপ্তাহের জন্য ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এতে করে ভারতে আটকা পড়ে কয়েক হাজার বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রী। আটকা পড়া পাসপোর্ট যাত্রীদের নিজ দেশে ফিরতে হলে কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশি উপ-হাইকমিশন থেকে এনওসি নিয়ে ও ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আরটিপিসিআর ল্যাবের করোনা টেস্টের সনদ নিয়ে দেশে ফেরার নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ সরকার।
তিনি বলেন, নির্দেশনা মোতাবেক গত এক সপ্তাহে ১ হাজার ২৯৬ জন বাংলাদেশি পাসপোর্ট যাত্রী দেশে ফিরেছেন এবং বাংলাদেশে আটকা পড়া ১২০ জন ভারতীয় পাসপোর্ট যাত্রী দেশে ফিরে গেছেন।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে পাসপোর্টধারীদের যাতায়াত বাড়ছে
তিনি আরও বলেন, ভারত থেকে আসা এসব পাসপোর্ট যাত্রীদের বেনাপোলে বিভিন্ন হোটেল, ঝিকরগাছা গাজিরদরগা এতিম খানায় ও যশোরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে। যেসব যাত্রী করোনায় আক্রান্ত বা উপসর্গ নিয়ে দেশে ফিরছেন তাদের যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে করোনা ইউনিটে পাঠানো হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ভারতের নতুন ধরনের করোনা যাতে বাংলাদেশে ছড়াতে না পারে সেজন্য স্থলপথে পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত ১৪ দিন বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এমন অবস্থায় ভারতে আটকে পড়া ১ হাজার ২৯৬ জন যাত্রী দূতাবাসের বিশেষ অনুমতি নিয়ে দেশে ফিরছেন।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের অফিসার ডা. আশরাফুজজামান জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে বাংলাদেশ সরকার ১৪ দিন ভারত ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। তবে যারা ভারতে আটকা পড়েছে শুধুমাত্র তারাই কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশি উপ-হাইকমিশন থেকে এনওসি নিয়ে দেশে ফিরছেন। এছাড়া যেসব পাসপোর্ট যাত্রীরা দেশে ফিরছেন তাদের বাধ্যতামূলক বেনাপোলের কয়েকটি আবাসিক হোটেল, ঝিকরগাছার গাজিরদরগা এতিমখানায়, নড়াইল ও খুলনায় বিভিন্ন হোটেলের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে। ভারত থেকে আসা করোনায় আক্রান্ত ১৬ জন রোগীকে যশোর করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দরকে ঘিরে সক্রিয় শক্তিশালী চোরাচালান সিন্ডিকেট
তিনি আরও জানান, ভারত ফেরত রোগীদের বিশেষ ব্যবস্থায় হোটেলে রাখা হয়েছে, এবং তাদের চিকিৎসার জন্য জরুরি টিম কাজ করছে।
করোনা: এবার অক্সিজেন সংকটে কর্নাটকে মারা গেল ২৪ জন
অক্সিজেন রপ্তানিকারী দেশ ভারতের বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে অক্সিজেন সংকট ইতোমধ্যে চরমে পৌঁছেছে। অক্সিজেনের স্বল্পতা হাসপাতালগুলোতে দিন-দিন মহা সংকটে রূপ নিচ্ছে।
গত ১০ দিনে অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে দিল্লির ৩টি হাসপাতালে মোট ৬২ জন করোনা রোগী মারা যায়। কিন্তু এবার দক্ষিণ ভারতের কর্নাটকের একটি সরকারি হাসপাতালে অক্সিজেন শেষ হয়ে যাবার কারণে ২৪ জন রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
প্রাদেশিক রাজধানী বেঙ্গালুরু থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরের চামারাজানগর জেলার সদর হাসপাতালে অক্সিজেন শেষ হয়ে গেলে এই ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, নিহতদের মধ্যে কয়েকজন লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।
আরও পড়ুন: কোভিড: ভারতে সাড়ে ৩ লাখের অধিক নতুন শনাক্ত, মৃত্যু ৩,৪১৭
কর্ণাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে সুধাকর এই ঘটনাকে দুঃখ প্রকাশ করেন। কিন্তু সকল মৃত্যুই অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে হয়েছে এমনটা স্বীকার করতে নারাজ তিনি। ঘটানাস্থান পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবেন বলেও জানান এই মন্ত্রী।
তবে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে দেরি করেননি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রধান রাহুল গান্ধী। তিনি টুইটারে কেন্দ্রীয় সরকারের চরম সমালোচনা করে বলেন, “আমি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। হাসপাতালের নিহতরা কি মারা গেছেন, নাকি তাদের হত্যা করা হয়েছে? আর কত কষ্ট সহ্য করার পর শাসনতন্ত্র জেগে উঠবে?”
আরও পড়ুন: করোনা: ভারতে প্রায় ৪ লাখ নতুন শনাক্ত, মৃত্যু ৩৬৮৯
ভারতের হাসপাতালগুলোর অক্সিজেন সংকটের তীব্রতা প্রকাশ্যে আসে গত ১০ দিনে দিল্লির তিনটি হাসপাতালে ৬২ জনের মৃত্যুর পর।
শনিবার (১ মে) সকালে দিল্লির অন্যতম আধুনিক বাতরা হাসপাতালে অক্সিজেন সংকটের কারণে মারা যায় ১২ জন রোগী।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, মাত্র ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট হাসপাতালটিতে অক্সিজেন সরবরাহ না থাকায় ১২ জন করোনা রোগী প্রাণ হারায়। মৃতদের অধিকাংশই লাইফ সাপোর্ট ছিলেন।
এছাড়া শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) মধ্যরাতে দিল্লির জয়পুর গোল্ডেন হাসপাতালে অক্সিজেন সংকটের কারণে ২৫ জন রোগী প্রাণ হারায়। অপরদিকে, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দিল্লির স্বনামধন্য স্যার গঙ্গা রাম হাসপাতালে মারা যায় আরও ২৫ জন।
আরও পড়ুন: ভারতে করোনায় একদিনে রেকর্ড মৃত্যু ও শনাক্ত
উল্লেখ্য, গত ২৮ এপ্রিল মহারাষ্ট্রের সরকারি জাকির হোসেন হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ লাইনের লিকেজের কারণে ২৪ জন রোগী মারা যায়।
কোভিড: ভারতে সাড়ে ৩ লাখের অধিক নতুন শনাক্ত, মৃত্যু ৩,৪১৭
ভারতে সোমবার (৩ মে) সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ১৪৭ জন। বর্তমানে দেশটিতে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়াল ১ কোটি ৯৯ লাখ ২৫ হাজার ৬০৪ জনে।
দেশটিতে নতুন করে ৩ হাজার ৪১৭ জন করোনা রোগীর মৃত্যুর পর মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৮ হাজার ৯৪৯ জনে।
দেশটিতে বর্তমানে করোনা রোগীর সংখ্যা ৩৪ লাখ ১৩ হাজার ৬৪২ জন এবং এখন পর্যন্ত দেশটিতে সুস্থ হয়েছে ১ কোটি ৬২ লাখ ৯৩ হাজার ৩ জন।
প্রতিবেশী এই দেশটিতে করোনারে সর্বোচ্চ প্রকোপের মধ্যেই দেশটিতে কেন্দ্রীয় সরকার লকডাউন ঘোষণা করে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন বোর্ড পরীক্ষা বাতিল ও স্থগিত করেছে।
আরও পড়ুন: করোনা: ভারতে প্রায় ৪ লাখ নতুন শনাক্ত, মৃত্যু ৩৬৮৯
দেশটিতে শনিবার (১ মে) থেকে ১৮ বছরের ওপরের সকলের জন্য তৃতীয় ধাপে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে। গত জানুয়ারি থেকে এই পর্যন্ত দেশটিতে ১৫ কোটি ৬০ লাখ ডোজ করোনার টিকা প্রদান করা হয়েছে।
ভারতের রাজধানী দিল্লিই দেশটির সবচেয়ে করোনা ঝুঁকিপূর্ণ ও আক্রান্ত অঞ্চল। দিল্লির স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৯৬৬ জন করোনা রোগী এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছে।
আরও পড়ুন: ভারতে করোনায় একদিনে রেকর্ড মৃত্যু ও শনাক্ত
করোনা: ভারতে প্রায় ৪ লাখ নতুন শনাক্ত, মৃত্যু ৩৬৮৯
ভারতে রবিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ৩ লাখ ৯২ হাজার ৪৮৮ জন। বর্তমানে দেশটিতে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়াল ১ কোটি ৯৫ লাখ ৫৭ হাজার জনে।
দেশটিতে নতুন করে ৩ হাজার ৬৮৯ জন করোনা রোগীর মৃত্যুর পর মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজার ৫৪২ জনে।
বর্তমানে দেশটিতে করোনা রোগী আছে ৩৩ লাখ ৪৯ হাজার ৬৪৪ জন। এখন পর্যন্ত দেশটিতে সুস্থ হয়েছে ১ কোটি ৫৯ লাখ ৯২ হাজার ২৭১ জন।
প্রতিবেশী এই দেশটিতে করোনারে সর্বোচ্চ প্রকোপের মধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার লকডাউন ঘোষণা করে। রাজধানী দিল্লিতে ৩ মে (সোমবার) পর্যন্ত লকডাউন চলবে।
ভারতের রাজধানী দিল্লিই দেশটির সবচেয়ে করোনা ঝুঁকিপূর্ণ ও আক্রান্ত অঞ্চল।
দিল্লির স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৫৫৯ জন করোনায় মৃত্যুবরণ করেছে।
দেশটিতে শনিবার (১ মে) থেকে ১৮ বছরের ওপরের সকলের জন্য তৃতীয় ধাপে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করা হয়েছে। গত জানুয়ারি থেকে এই পর্যন্ত দেশটিতে ১৫ কোটি ৬০ লাখ ডোজ করোনার টিকা প্রদান করা হয়েছে।
ভারতে বর্তমানে সেরাম ইনস্টিটিউট এবং বায়োটেক ইন্টারন্যাশনাল এর তৈরি দুই ধরনের টিকা ব্যবহার হচ্ছে। তবে, দেশটি শনিবার রাশিয়ার তৈরি স্পুটনিক-ভি ভ্যাক্সিনের প্রথম চালান সংগ্রহ করে।
করোনায় বিশ্বে আক্রান্ত ১৫ কোটি ১৪ লাখ ছাড়িয়েছে
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় (জেএইচইউ) থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শনিবার বিকাল ৩টা পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ কোটি ১৪ লাখ ২৯ হাজার ৬৫২ জনে।
এছাড়া, ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩১ লাখ ৮১ হাজার ৩৪৩ জনে।
চীনের উহানে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। গত বছরের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে মহামারি ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে ডব্লিউএইচও।
আরও পড়ুন: করোনার দুর্দিনে জনগণের পাশেই আছেন প্রধানমন্ত্রী
করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত ৩ কোটি ২৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭০৮ জন করোনায় আক্রান্ত এবং ৫ লাখ ৭৬ হাজার ২৩২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল আক্রান্তে তৃতীয় ও মৃত্যুর দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগী ১ কোটি ৪৬ লাখ ৫৯ হাজার ছাড়িয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৩ হাজার ৭৮১ জনের।
পৃথিবীর দ্বিতীয় জনবহুল দেশ ভারতে করোনায় আক্রান্ত দেশের তালিকায় দ্বিতীয় এবং মৃত্যু নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে মোট আক্রান্ত ১ কোটি ৯১ লাখ ৬৪ হাজার ছাড়িয়েছে এবং মারা গেছেন ২ লাখ ১১ হাজার ৮৫৩ জন।
মেক্সিকো মৃত্যুর দিক দিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে মারা গেছেন ২ লাখ ১৬ হাজার ৯০৭ জন।