হত্যা মামলা
যশোরে হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড
যশোর সদর উপজেলার সালতা গ্রামের মিনারুল হত্যা মামলায় একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার যশোরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ইখতিয়ারুল ইসলাম মল্লিক এ আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হাফিজুর রহমান উপজেলার ওসমানপুর গ্রামের চান্দালী মোল্লার ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিপি এম. ইদ্রিস আলী।
আদালত সূত্র জানায়, স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৪ আগস্ট রাতে দা দিয়ে মিনারুলকে কুপিয়ে হত্যা করে হাফিজুর। এ ঘটনায় মিনারুলের বড় ভাই আক্তারুজ্জামান অজ্ঞাতদের আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) উপপরিদর্শক (এসআই) জিয়াউর রহমান।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় কৃষক হত্যা মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন
পিবিআই মিনারুলকে ঘটনার নয় দিনের মাথায় আটক এবং হত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করেন। ২৫ আগস্ট আদালতে সোপর্দ করলে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গৌতম মল্লিক তার জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সেই থেকেই হাফিজুর কারাগারে আটক রয়েছেন। একই বছরের ৭ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ বৃহস্পতিবার আসামির উপস্থিতিতে আদালত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে ধর্ষণ ও ২ শিশু হত্যা মামলায় একজনের আমৃত্যু কারাদণ্ড
কুষ্টিয়ায় কৃষক হত্যা মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় কৃষক সাবু মিয়াকে (২০) হত্যার দায়ে দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাদের ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
সোমবার (৩০ মে) দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন-কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চাঁপাইগাছি গ্রামের আজিম প্রামাণিকের ছেলে মো. বাপ্পি প্রামাণিক এবং একই ইউনিয়নের মহেন্দ্রপুর গ্রামের গোলাপ সর্দ্দারের ছেলে আলামিন সর্দ্দার।
রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে কুষ্টিয়ার জজকোর্টের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী জানান, ২০১৫ সালের ১২ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের মো.স্বপন মন্ডলের বড় ছেলে সাবু মিয়া জগন্নাথপুর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে বাইসাইকেলে করে চাঁপাইগাছি বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা হন। এরপর সাবু রাতে বাড়ি ফিরে না আসায় সম্ভাব্য স্থানে খোঁজ খবর নিয়ে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। পরের দিন ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চাঁপাইগাছি এলাকার কাদের বিশ্বাসের কলা বাগানের মধ্যে মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর শুনে নিহত সাবুর বাবা মো. স্বপন মন্ডল, সাবুর স্ত্রী ও মেয়ে মোছা. শাপলা খাতুন এবং প্রতিবেশিরা গিয়ে সাবুর লাশ শনাক্ত করে। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় নিহত সাবু মিয়ার বাবা মো.স্বপন মন্ডল বাদী হয়ে কুমারখালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামি মো.বাপ্পি প্রামাণিক ও আলামিন সর্দ্দারের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আজ (৩০ মে) রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন আদালত।
আরও পড়ুন: হত্যা মামলা: দিনাজপুরে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ঝালকাঠিতে হত্যা মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন
নাটোরে প্রবাসী হত্যা মামলার আসামি পাবনায় গ্রেপ্তার
নাটোরের গুরুদাসপুরে প্রবাসী আবুল কাশেমকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হত্যার একমাত্র আসামি কেনান আলীকে পাবনা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার রাতে পাবনার চাটমোহর উপজেলার ধুলাউড়ি গ্রামে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় কেনানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বিদেশে পাঠানোর কথা বলে কেনান আলীর কাছ থেকে টাকা নেয় আবুল কাশেম।কিন্ত বিদেশে না পাঠানোর জের ধরে তাদের মধ্যে বিরোধ বাধে।এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে গত বছরের ৩ নভেম্বর গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর কলেজের সামনে প্রকাশ্যে কাশেমকে হত্যা করে পালিয়ে যায় কেনান। এ ঘটনায় পরদিন নিহতের স্ত্রী জাজেদা বেগম বাদি হয়ে কেনানকে আসামি করে গুরুদাসপুর থানায় মামলা করেন।
রাতেই কেনানকে গুরুদাসপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামী গ্রেপ্তার
বরিশালে আসামি ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ, গ্রেপ্তার ২
কুমিল্লায় স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামী গ্রেপ্তার
কুমিল্লায় স্ত্রী হত্যার ঘটনায় মামলা দায়েরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত আসামি স্বামীকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার রাতে ঢাকার সায়েদাবাদ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গ্রেপ্তার মো. ইকবাল হোসেন অলিপুর গ্রামের কাজি আবদুল হাকিমের ছেলে ও পেশায় সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক।
মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লা নগরীর শাকতলায় কোম্পানি কার্যালয়ে কোম্পানি কমান্ডার মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেপ্তার ৬
তিনি জানান, গত ২৪ এপ্রিল কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি থানার কালিরবাজার ইউনিয়নের মস্তাপুর এলাকার পাহাড়ের পাদদেশে পড়ে থাকা হাত মুখ বাঁধা ফারজানা বেগম (২৯) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার সাত জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ নিয়ে মিডিয়ায় সংবাদ প্রচার হলে র্যাব ১১ এর ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি ২ এর গোয়েন্দারা সোমবার জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারভুক্ত তিন জনকে গ্রেপ্তার করে থানায় হস্তান্তর করে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে অনলাইন প্রতারক চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার
মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন জানান, র্যাব এর একই কোম্পানির অপর একটি অভিযানিক দল তথ্যের ভিত্তিতে একই দিন রাতে ঢাকার সায়েদাবাদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহার নামীয় প্রধান আসামি স্বামী মো. ইকবাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে কোতোয়ালি থানায় সোপর্দ করা হয়।
চট্টগ্রামে হত্যা মামলায় ৭ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
চট্টগ্রামের কর্ণফুলি উপজেলায় মামুনুর রশীদ সাগর নামে এক যুবক খুন ও আরেকজনকে কুপিয়ে অঙ্গহানির ঘটনায় সাত আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন চট্টগ্রামের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। একই রায়ে একজনকে অতিরিক্ত আরও ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকার অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বুধবার (২০ এপ্রিল) সকালে চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ রায় দেন।
দণ্ডিত আসামিরা হলেন-মো. আজম, ফারুক, আলী আজগর, শওকত হোসেন, ওমর উদ্দীন, আশরাফুল আলম সুমন ও মো. পারভেজ। এদের মধ্যে সুমন ও পারভেজ পলাতক আছে। এছাড়া ওমর উদ্দীনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি অতিরিক্ত আরও ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকার অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি আইয়ুব খান রায় ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: চাচা হত্যার দায়ে ৩ ভাতিজার মৃত্যুদণ্ড, ১ জনের যাবজ্জীবন
তিনি জানান, ২০১৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর কর্ণফুলী উপজেলার শাহমীরপুর এলাকায় মাদক ও ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় মামুনুর রশীদ মামুন নামে এক যুবককে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে মৃত্যু নিশ্চিত করে দণ্ডিত আসামিরা। একই ঘটনায় আসামিরা নিহতের বন্ধু আজিজকেও চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে; পরবর্তীতে তাকে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই ইয়াছিন বাদী হয়ে কর্ণফুলী থানায় মামলা করেন।
পুলিশ ২০১৯ সালের ১১ মার্চ সাতজনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট প্রদান করে। আদালত ২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করেন। মামলায় ২৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত বুধবার আসামিদের বিরুদ্ধে এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার পর আদালতে উপস্থিত থাকা সাত আসামির পাঁচজনকে কারাগারে পাঠানো হয় অন্য দুজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
আরও পড়ুন: জিল্লুর হত্যা মামলায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৬ জনের যাবজ্জীবন
হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার রায় আজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক শিক্ষক ও লেখক অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য রয়েছে আজ বুধবার।
গত ২৭ মার্চ ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে রায়ের এই দিন নির্ধারণ করেন।
২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে বাসায় ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের হামলায় মারাত্মক আহত হন অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদ। পরের দিন হুমায়ুন আজাদের ভাই মঞ্জুর কবির রাজধানীর রমনা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। ওই হামলার পরে তিনি ২২ দিন ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে(সিএমএইচ) এবং ৪৮ দিন ব্যাংককে চিকিৎসা নেন। একই বছর জার্মানিতে চলে যান তিনি। সেখানেই ১২ আগস্ট মারা যান তিনি। এরপর এটি হত্যা মামলা হিসেবে রূপ নেয়।
আরও পড়ুন: হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার রায় ১৩ এপ্রিল
২০০৭ সালের ১৪ নভেম্বর অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক কাজী আবদুল মালেক জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদশের (জেএমবি) প্রধান শায়খ আবদুর রহমান, আতাউর রহমান সানি, নূর মোহাম্মদ সাবু ওরফে শামীম, মিনহাজ ওরফে শফিক, আনোয়ার আলম ওরফে ভাগিনা শহিদকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এরপর ওই বছরের ৩০ মার্চ ঝালকাঠির দুই বিচারক হত্যা মামলায় শায়খ আবদুর রহমান ও আতাউর রহমানের ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় অভিযোগপত্র থেকে তাঁদের নাম বাদ দেয়া হয়।
সিআইডির পরিদর্শক লুৎফর রহমান মামলাটির মূল তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন। তিনিই মামলাটির তদন্তের পর ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল পাঁচ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন- জঙ্গি সংগঠন জেএমবির শুরা সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শফিক, আনোয়ার আলম ওরফে ভাগ্নে শহিদ, সালেহীন ওরফে সালাহউদ্দিন, হাফিজ মাহমুদ ও নূর মোহাম্মদ ওরফে সাবু। তাদের মধ্যে আসামি নূর মোহাম্মদ ওরফে সাবু পলাতক রয়েছেন। অপরদিকে ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশের প্রিজনভ্যান থেকে এ মামলার দুই আসামি সালাহউদ্দিন ওরফে সালেহীন এবং রাকিবুল হাসান ওরফে হাফিজ মাহমুদকে ছিনিয়ে নেয়া হয়। পরে এদের মধ্যে রাকিব ওই দিন রাতেই ধরা পড়েন এবং পুলিশের সঙ্গে ‘বন্ধুকযুদ্ধে’ মারা যান।
আরও পড়ুন: ব্লগার অনন্ত বিজয় হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
পরকীয়ার জেরে হত্যা, নারীসহ চারজনের মৃত্যুদণ্ড
রাজশাহীতে পরকীয়ার জেরে হত্যা মামলায় এক নারীসহ চারজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া আসামিদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
রবিবার বেলা ১১টার দিকে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চারজন হলেন-নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার শ্যামপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাদল মণ্ডল (৪৬), রাজশাহীর তানোর উপজেলার এনায়েতপুর চোরখৈর গ্রামের বিমল সিং (৫০), বিমলের স্ত্রী অঞ্জলী রানী (৪৫) এবং তাদের ছেলে সুবোধ সিং (২৮)।
মামলার সূত্রে জানা যায়, এনায়েতপুর চোরখৈর গ্রামের নির্মল সিংয়ের ছেলে প্রকাশ সিংকে (২০) হত্যার দায়ে তাদের এ দণ্ড দিয়েছেন আদালত। নিহত প্রকাশ দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বিমল সিংয়ের ছোট ভাইয়ের ছেলে ছিলেন। রাজশাহী শহরের একটি মিষ্টির দোকানের পরিবেশন কর্মী ছিলেন তিনি। ২০২১ সালের ২৯ এপ্রিল সকালে তানোরের বংশীধরপুর ব্রীজের কাছে প্রকাশের গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানেও জখম ছিল।
পড়ুন: ইভ্যালি চেয়ারম্যান কারামুক্ত
প্রকাশকে হত্যার ঘটনায় নির্মল সিং তানোর থানায় একটি মামলা করেন। এই মামলার এজাহারে বলা হয়েছিল অঞ্জলী রানীর সঙ্গে বাদল মণ্ডলের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এটি জেনে যাওয়ায় বাদল প্রকাশকে হুমকি দিয়েছিলেন। তাই পূর্বপরিকল্পনা করে তাকে হত্যা করা হয়। পরে ছয় দিনের মধ্যে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করলে বিষয়টি তারা স্বীকার করেন এবং আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। তারা বলেছিলেন, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী চারজন মিলেই প্রকাশকে হত্যা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু জানান, চার আসামিই গ্রেপ্তার হয়ে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেন। পরে তিনজন কারাগারে ছিলেন। আর জামিনে ছিলেন অঞ্জলী। রায় ঘোষণার সময় সবাই আদালতের কাঠগড়ায় ছিলেন। আসামিদের স্বীকারোক্তি এবং মামলার ২০ জনের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে আদালত এ রায় দিয়েছেন।
পড়ুন: সিনহা হত্যা: যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির আপিল শুনবেন হাইকোর্ট
খুলনায় হত্যা মামলায় ৫ জনের যাবজ্জীবন
খুলনার আলোচিত মডার্ন সি ফুডের কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার সাহা হত্যা মামলায় প্রতিষ্ঠানের মালিকের ছেলেসহ পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
সোমবার খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. শহীদুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
এছাড়া একই মামলায় অন্য চার আসামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় প্রত্যেককে খালাস দেন আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- মডার্ন সি ফুডের মালিকের ছেলে মেহেদী হাসান স্টারলিং, মো.আরিফুল হক সজল, নাহিদ রেজা রানা ওরফে লেজার রানা, মো. ডালিম শিকদার ওরফে আমির শিকদার ডালিম ও সজল মোল্লা।
আরও পড়ুন: ফেনীতে শিশু হত্যা মামলায় চাচীর যাবজ্জীবন
সাজাপ্রাপ্ত সকল আসামি জামিনে ছিলেন। রায় ঘোষণার পর সাজাপ্রাপ্ত সকলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
আদালত সূত্র জানায়, ২০১২ সালের ৭ জুন সাড়ে ১০টার দিকে মেয়েকে নিয়ে সামছুর রহমান রোডে জোহরা খাতুন স্কুলে আসেন উজ্জ্বল কুসার সাহা। এর কিছুক্ষণের মধ্যে মেহেদী হাসান স্টারলিংয়ের খালাতো ভাই আরিফুল হক সজল তাকে ফোন দেয়। অবস্থান নিশ্চিত করে অন্যান্য আসামিদের নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সজল। আসামিদের পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য কিছুক্ষন অপেক্ষাও করে উজ্জ্বলের সঙ্গে। সজল স্থান ত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য আসামিরা ভিকটিমের ওপর ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প ও ইট নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ শুরু করে। তাদের আঘাতে জ্ঞান হারিয়ে ফেললে আসামিরা উজ্জ্বলকে ফেলে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে খুলনা জেনারেল ও পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
আরও পড়ুন: খুলনায় প্রেমিকাকে হত্যার দায়ে প্রেমিকের যাবজ্জীবন
এ ব্যাপারে নিহতের ছোট ভাই সুমন কুমার সাহা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে খুলনা থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তদন্ত করেন খুলনা থানার এসআই সোহেল রানা। আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠালে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। কিন্তু অভিযোগপত্র থেকে মামলার মূল পরিকল্পনাকারীর নাম বাদ দেয়ায় বাদী আদালতে নারাজি পিটিশন করেন। পরে মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মো. শাহাজাহানের কাছে দেয়া হয়। তিনিও আগের তদন্ত কর্মকর্তার পথ অনুসরণ করায় মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইয়ের কাছে পাঠানো হয়। পরে পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ সুপার হেড কোয়ার্টারস মো. আমিনুল ইসলাম ৯ জন আসামির নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
ব্লগার অনন্ত বিজয় হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া এ মামলায় খালাস পেয়েছেন একজন।
বুধবার (৩০ মার্চ) সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ (২৭), সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বিরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ (২৫) ও কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ (২৫)।
খালাস পেয়েছেন বিতর্কিত ব্লগার সাফিউর রহমার ফারাবী।
আরও পড়ুন: মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে আনসার ব্যাটালিয়ন আইনের খসড়া অনুমোদন
ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ আইনজীবী (পিপি) মুমিনুর রহমান টিটু জানান, রায় ঘোষণার সময় আবুল খায়ের রশীদ আহমদ এবং সাফিউর রহমান ফারাবী উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর তিন আসামি পলাতক রয়েছেন। এছাড়া আরেক আসামি মান্নান ২০১৭ সালের ২ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১২ মে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে নগরীর সুবিদবাজারের নুরানি আবাসিক এলাকার বাসা থেকে কয়েকশ’ গজ দূরে অনন্ত বিজয়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পেশায় ব্যাংকার অনন্ত বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি ‘যুক্তি’ নামে বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। এছাড়া বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই রত্নেশ্বর দাশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত চারজনকে আসামি করে বিমানবন্দর থানায় মামলা করেন। এতে বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় হত্যা মামলায় ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড
২০১৭ সালের ৯ মে সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন।
২০১৭ সালের ২৩ মে অভিযোগ গঠনের পর ২০২০ সালে বিচারার্থে মামলা সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হয়। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। পরে ১৪ মার্চ পলাতক তিন আসামির যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য করেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষে তিনজন সাফাই সাক্ষ্য প্রদান দেন।
ব্লগার অনন্ত বিজয় হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ফারাবীকে ইতোপূর্বে ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জঙ্গি হামলায় নিহত বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়।
হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার রায় ১৩ এপ্রিল
লেখক ও শিক্ষাবিদ হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার রায় আগামি ১৩ এপ্রিল নির্ধারণ করেছেন আদালত। রবিবার ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ এই রায়ের দিন নির্ধারণ করেন।
মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামিরা হলেন- জঙ্গি সংগঠন জেএমবির শুরা সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শফিক, আনোয়ার আলম ওরফে ভাগ্নে শহিদ, সালেহীন ওরফে সালাহউদ্দিন, হাফিজ মাহমুদ ও নূর মোহাম্মদ ওরফে সাবু। তাদের মধ্যে আসামি নূর মোহাম্মদ ওরফে সাবু পলাতক রয়েছেন। অপরদিকে ২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশের প্রিজনভ্যান থেকে এ মামলার দুই আসামি সালাহউদ্দিন ওরফে সালেহীন এবং রাকিবুল হাসান ওরফে হাফিজ মাহমুদকে ছিনিয়ে নেয়া হয়। পরে এদের মধ্যে রাকিব ওই দিন রাতেই ধরা পড়েন এবং পুলিশের সঙ্গে ‘বন্ধুকযুদ্ধে’ মারা যান।
উল্লেখ্য ২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে বাসায় ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের হামলায় মারাত্মক আহত হন অধ্যাপক ড. হুমায়ুন আজাদ। পরের দিন হুমায়ুন আজাদের ভাই মঞ্জুর কবির রাজধানীর রমনা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন। ওই হামলার পরে তিনি ২২ দিন ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে(সিএমএইচ) এবং ৪৮ দিন ব্যাংককে চিকিৎসা নেন। একই বছর জার্মানিতে চলে যান তিনি। সেখানেই ১২ আগস্ট মারা যান তিনি। এরপর এটি হত্যা মামলা হিসেবে রূপ নেয়।
আরও পড়ুন: এএসপি আনিস হত্যা: ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা
২০০৭ সালের ১৪ নভেম্বর অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক কাজী আবদুল মালেক জঙ্গি সংগঠন জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদশের (জেএমবি) প্রধান শায়খ আবদুর রহমান, আতাউর রহমান সানি, নূর মোহাম্মদ সাবু ওরফে শামীম, মিনহাজ ওরফে শফিক, আনোয়ার আলম ওরফে ভাগিনা শহিদকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। এরপর ওই বছরের ৩০ মার্চ ঝালকাঠির দুই বিচারক হত্যা মামলায় শায়খ আবদুর রহমান ও আতাউর রহমানের ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় অভিযোগপত্র থেকে তাঁদের নাম বাদ দেয়া হয়।
সিআইডির পরিদর্শক লুৎফর রহমান মামলাটির মূল তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন। তিনিই মামলাটির তদন্তের পর ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল পাঁচ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আরও পড়ুন: মিতু হত্যা: আদালতের নির্দেশে বাবুল আক্তারের হাতের লেখার নমুনা সংগ্রহ