স্বাধীনতা
স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে: শামীম ওসমান
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, আজকে স্লোগান দেওয়ার সময় এসেছে যে ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর বাংলাদেশ রক্ষা কর।’
তিনি বলেন, ‘আজ এমন একটি পরিস্থিতি এসেছে, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন। আমার মনে হচ্ছে সামনে আমাদের সেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। সে ব্যাপারে আমি আপনাদের নির্দেশনা চাই।’
আরও পড়ুন: শামীম ওসমানের স্ত্রী, পুত্রবধূ ও নাতি করোনায় আক্রান্ত
রবিবার (২০ আগস্ট) নারায়ণগঞ্জ সদরে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
শামীম ওসমান বলেন, এ নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের সূতিকাগার। বঙ্গবন্ধু তার আত্মজীবনীতে বার বার নারায়ণগঞ্জের কথা বলেছেন। প্রতিটি আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জের মানুষ রক্ত দিয়েছে। পঁচাত্তরের পরেও নারায়ণগঞ্জের মানুষ গণতন্ত্রের জন্য রক্ত দিয়েছেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
তিনি বলেন, আপনারা এ দেশ স্বাধীন করে দিয়েছেন। তার চেয়ে বড় কিছু তো আর করার থাকে না। তারপরেও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দেশ রক্ষার জন্য কথা বলতে হয় এটা দুর্ভাগ্যজনক।
আমরা আপনাদের যোগ্য উত্তরসূরি হতে পারিনি সেজন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।
তিনি মন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, আমি প্রস্তাব রাখছি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মৃতদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একটি সম্মেলনের আয়োজন করুন।
আরও পড়ুন: নাসিক নির্বাচন: শান্তিপূর্ণ ভোট হওয়ায় প্রশংসা শামীম ওসমানের
নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে ভোট শুরু
বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু ছিলেন আপোষহীন: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার প্রশ্নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন আপোষহীন। তিনি তার সারাজীবনে কখনোই কোনো অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করেননি।
একটি উন্নত-সমৃদ্ধ, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে থাকার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ভোক্তা অধিকার নিশ্চিতে আইনের সঙ্গে সচেতনতা জরুরি: বাণিজ্যমন্ত্রী
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) রাজধানীর টিসিবি ভবনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে (ভিডিও বার্তায়) তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাটি জীবন মানুষের অধিকার আদায়ে লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। মানুষের কল্যাণে নিজের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ছয় দফা, গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচনসহ সকল আন্দোলনে নেতৃত্বের আসনে ছিলেন।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বিশ্বের বুকে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা স্থান করে নেয়।
মন্ত্রী বলেন, ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ পুরো জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার ডাকে সাড়া দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে দ্বিধা করেননি।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি যুদ্ধে হার মানলেও তাদের ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। যে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে তার প্রতিশোধ নিতেই পাকিস্তানের দোসররা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার সহধর্মিণীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নৃশংসভাবে হত্যা করে।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার মাধ্যমে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে: ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী
দেশের বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে চায় জাপান: বাণিজ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশের সব পক্ষকে মৌলিক স্বাধীনতা ও আইনের শাসনকে সম্মান করার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকারকে সহিংসতার প্রতিবেদনগুলো ‘পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে, স্বচ্ছভাবে ও নিরপেক্ষভাবে’ তদন্ত করতে এবং অপরাধীদের জবাবদিহি করার আহ্বান জানিয়েছে।
জনগণকে শান্তিপূর্ণভাবে একত্র হতে এবং তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করার জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতেও বাংলাদেশকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার সোমবার (৩১ জুলাই) ওয়াশিংটনে নিয়মিত ব্রিফিংকালে বলেন, ‘আমরা সব পক্ষকে মৌলিক স্বাধীনতা ও আইনের শাসনকে সম্মান করার এবং সহিংসতা, হয়রানি ও ভয় দেখানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই।’
তিনি বলেন, গত সপ্তাহান্তের রাজনৈতিক বিক্ষোভকে ঘিরে বাংলাদেশে ভয়ভীতি ও রাজনৈতিক সহিংসতার খবরে তারা উদ্বিগ্ন।
মিলার আরও বলেন, ভোটার, রাজনৈতিক দল, যুব গোষ্ঠী ও পুলিশ; সকলের প্রতিশ্রুতির ওপর অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নির্ভর করে এবং রাজনৈতিক সহিংসতার পরিবেশে তা হতে পারে না।
আরও পড়ুন: পবিত্র কোরআন অবমাননা নিয়ে বাংলাদেশ ও সুইডেনের আলোচনা
জ্বালানি দক্ষতার উন্নতি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ: বিশ্বব্যাংক
ঢাকায় আজকের সমাবেশ: গণতন্ত্রে রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো স্থান নেই, পুনর্ব্যক্ত করল যুক্তরাষ্ট্র
মানবপাচার মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার লঙ্ঘন: আন্তোনিও গুতেরেস
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, মানবপাচার হলো মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, সংঘাত ও অস্থিতিশীলতার সময়ে দুর্বলতার সুযোগে মানুষ এর শিকারে পরিণত হয় এবং তখন এর মাত্রাও বৃদ্ধি পায়।
রবিবার (৩০ জুলাই) বিশ্ব মানবপাচার বিরোধী দিবস উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে জাতিসংঘ মহাসচিব এসব কথা বলেন। ২০১৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক প্রস্তাবের মাধ্যমে প্রতি বছর ৩০ জুলাই বিশ্ব মানবপাচার বিরোধী দিবস হিসেবে সারা বিশ্বে পালন করার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর থেকে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালিত হয়।
গুতেরেস বলেন, অসমতা বাড়ছে, জলবায়ু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাস্তুচ্যূতির হার যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি। আর এসকল কারণে অনেক বেশি মানুষ মানব পাচারকারীদের শিকারে পরিণত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
তিনি বলেন, ভুক্তভোগীদের সিংহভাগই নারী ও শিশু। যাদের অনেকেই নৃশংস সহিংসতা, জোরপূর্বক শ্রম এবং ভয়াবহ যৌন নিপীড়ন ও শোষণের শিকার হয়।
তিনি আরও বলেন, তা সত্ত্বেও মানব পাচারকারীরা এখনো মুক্তি পেয়ে যাচ্ছে। তাদের অপরাধ দমনের বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে না। এই বিষয়ে অবশ্যই পরিবর্তন আনতে হবে।
আরও পড়ুন: আসুন গর্ব করে ঘোষণা করি, আমরা নারীবাদী: গুতেরেস
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, আমাদের অবশ্যই শনাক্তকরণ ও সুরক্ষায় আরও বিনিয়োগ করতে হবে। মানুষকে পণ্য বানানো অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ব্যবস্থাকে জোরদার করতে হবে এবং ভুক্তভোগীদের জীবন পুনর্গঠনে সহযোগিতা করতে আমাদের অবশ্যই আরও বেশি কিছু করতে হবে।
তিনি বলেন, এবারের এই বিশ্ব মানবপাচার বিরোধী দিবসে আসুন আমরা মানবপাচারের শিকার ভুক্তভোগীদের শনাক্ত, সুরক্ষা ও সহযোগিতা দিতে এবং পাচারের শিকার কোনো ভুক্তভোগী যেন পেছনে পড়ে না থাকে, তা নিশ্চিতে আমাদের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করি।
তিনি আরও বলেন, আসুন একসঙ্গে আমরা এমন বিশ্ব গড়ে তুলি, যেখানে কাউকে কখনো বেচা-কেনা কিংবা শোষণ করা হয় না।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক নির্যাতনের বিচারের আহ্বান গুতেরেসের
অভিবাসনের বৈশ্বিক চুক্তি ‘পথ দেখাচ্ছে’: গুতেরেস
যুদ্ধের জন্য নয়, সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়ন: প্রধানমন্ত্রী
দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সরকার সশস্ত্র বাহিনীর সার্বিক উন্নয়নে পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, কারো সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই। তবে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে সশস্ত্র বাহিনীর সার্বিক উন্নয়নে পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
বুধবার পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় খুলনা শিপইয়ার্ডে নির্মিত নৌঘাঁটি বিএনএস শের-ই-বাংলা এবং চারটি ল্যান্ডিং ক্রাফট ইউটিলিটি (এলসিইউ)সহ আটটি জাহাজের কমিশনিং অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন: গঠনমূলক সমালোচনা করতে গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
তিনি বলেন, আমরা কারো বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চাই না। আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষিত রাখার উপর আমাদের গুরুত্ব থাকবে।
তিনি আরও বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সরকার নৌবাহিনীসহ সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নে পদক্ষেপ নিয়েছে; যাতে তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দক্ষতা অর্জন করতে পারে। এই উদ্দেশ্যে আমরা বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছি।
আরও পড়ুন: ‘মুজিবপিডিয়া’র মোড়ক উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, সমুদ্রে নজরদারি ও নিরাপত্তা জোরদার করতে হেলিকপ্টার ছাড়াও বেশ কিছু যুদ্ধজাহাজের সরঞ্জাম সংগ্রহ ও নির্মাণের কাজ চলছে।
নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে নৌ ঘাঁটি শের-ই-বাংলাদেশ এবং আটটি জাহাজের উপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আরও পড়ুন: এসডিজি অর্জনে একসঙ্গে কাজ করার এখনই সময়: প্রধানমন্ত্রী
৬ দফা দাবির মধ্যেই ছিল স্বাধীনতার প্রেরণা: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবি থেকে জনগণের মধ্যে স্বাধীনতার আন্দোলন বেগবান হয়েছে।
৬ দফা দিবসে বুধবার সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শহীদদের রক্ত বৃথা যায়নি।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের স্বাধীনতা অর্জন করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে, স্বাধীনতার পর যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ছিলেন, তখন তাকে হত্যা করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘তার হত্যার পর দেশ আর অগ্রসর হতে পারেনি।’
সংসদ নেতা উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় এলে জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে।
তিনি বলেন, ‘সরকার দেশকে উন্নয়নশীল দেশে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।’
আরও পড়ুন: অস্থির বৈশ্বিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি উল্লেখ করেন, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু উল্লেখ করেছিলেন, জনগণকে কেউ দমন করতে পারবে না।
‘বাংলাদেশকে আর কেউ দমাতে পারবে না, কারণ বাংলাদেশের মানুষ এটা ভালো করেই জানে যে বাঙালিরা স্বাধীন ও বিজয়ী, এটাই বাস্তবতা।’
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষ মাথা উঁচু করে সারাবিশ্বে ঘুরে বেড়াবে।
আরও পড়ুন: বিএনপিকে বাইরের শক্তি ক্ষমতায় বসাতে পারবে না, বরং সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবহার করবে: প্রধানমন্ত্রী
‘আমরা একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ব এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি স্মার্ট দেশ হিসেবে গড়ে তুলব।’
তিনি উল্লেখ করেন, লাখো শহীদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সেই স্বাধীনতাকে ব্যর্থ হতে দেওয়া উচিত নয় এবং আমরা তা হতে দেব না। আমাদের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে।’
বক্তব্য দেন সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আবুল কালাম আজাদ ও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ প্রমুখ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছিল বিশ্বব্যাংক: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
ইসলামাবাদে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন
যথাযোগ্য মর্যাদা, ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে এ বছর মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস দুই পর্বে উদযাপন করা হয়েছে।
উদযাপনের দ্বিতীয় পর্বে পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হ্ইাকমিশনার মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী ও তার সহধর্মিনী মিসেস শামসাদ আরা খানম ২০২৩ সালের ৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় স্থানীয় অভিজাত হোটেল মেরিয়টে এক বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা ও নৈশ্যভোজের আয়োজন করেন।
সংবর্ধনায় পাকিস্তানের রাজ্য ও সীমান্ত অঞ্চল বিষয়ক এবং অতিরিক্ত দায়িত্ব ধর্ম ও ইন্টারফেইথ হারমনি বিষয়ক ফেডারেল মন্ত্রী সিনেটর মুহাম্মদ তালহা মাহমুদ পাকিস্তান সরকারের পক্ষে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
এছাড়াও দারিদ্র বিমোচন ও সামাজিক নিরাপত্তা বিষয়ক, মাদক নিয়ন্ত্রন এবং পরিকল্পনা ও উদ্যোগ বিষয়ক ফেডারেল মন্ত্রীগণ, পাকিস্তানের অডিটর ও কম্পট্রোলার জেনারেল (কেবিনেট মন্ত্রীর পদমর্যাদার), ৩০ জনের অধিক সিনেটর ও জাতীয় সংসদের সদস্য, প্রাদেশিক এসেম্বলীর সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত/হাইকমিশনার, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানগণ, পাকিস্তান সরকারের বেসামরিক ও সামরিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, প্রবাসী বাংলাদেশি সমন্বয়ে সাড়ে পাঁচ শতাধিক অতিথি এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠান স্থলে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস তুলে ধরে ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ স্থাপন করা হয়। সংবর্ধনা হলটি বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতি, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও কৃষ্টি তুলে ধরে ব্যানার ও স্ট্যান্ডিজ দিয়ে সাজানো হয়।
আরও পড়ুন: ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে ‘রূপকল্প ২০২১’ অর্জন ও ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মানে ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন মেগা প্রকল্প ও উদ্যোগ বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়।
অতিথিরা বঙ্গবন্ধু কর্নারে স্থাপিত বই ও প্রকাশনা, সায়য়িকীসহ বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি সমৃদ্ধ ব্যানার, স্ট্যান্ডিজ ইত্যাদি অত্যন্ত আগ্রহসহকারে দেখেন।
হাইকমিশনার মো. রুহুল আলম সিদ্দিকী তার স্বাগত বক্তব্যে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।
হাইকমিশনার বলেন, দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী ও বিধ্বংসী যুদ্ধের পর বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশের সরকারি সম্পদ, কৃষি, বাণিজ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। উপরন্তু মানুষের মৃত্যু, ব্যক্তিগত ঘর-বাড়ি ধ্বংস এবং মানসিক আঘাতের কারণে ক্ষতির পরিমাণ ছিল অপরিমেয়। সে হিসেবে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয় শূন্য থেকে নয় বরং ঋণাত্বক অবস্থান থেকে।
তিনি তার বক্তব্যে বিগত ৫০ বছরে বিশেষ করে স্বাধীনতা পরবর্তী সাড়ে তিন বছর এবং বর্তমান সরকারের অধীনে উনিশ বছরের বেশী সময়ে বাংলাদেশের উন্নয়নের পথে অগ্রযাত্রা বিশেষভাবে তুলে ধরেন।
হাইকমিশনার বলেন, বিশাল প্রতিকূলতা, প্রতিবন্ধকতা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে যুদ্ধ বিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন এবং বাংলাদেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র ও বঞ্চনাহীন দেশ হিসেবে পরিণত করার কাজ শুরু করেন। দুর্ভাগ্যবশত ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সঙ্গে সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়ে।
হাইকমিশনার আরও বলেন, জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ৫ বছরের জন্য দেশের দায়িত্বভার গ্রহণ করে বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে অগ্রযাত্রা পুনরায় শুরু করেন। তিনি ২০০৯ সালে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হয় এবং বর্তমানে চতুর্থ মেয়াদে দয়িত্ব পালন করছেন।
আরও পড়ুন: কানাডার সংসদে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিল পাশ
তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক খাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। বর্তমানে মানুষের মাথাপিছু আয় ২৮২৪ মার্কিন ডলার, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৫ বিলিয়ন এবং মানুষের গড়আয়ু ৭২ দশমিক ৩ বছরসহ বাংলাদেশ এখন একটি জ্ঞানভিত্তিক মধ্যম আয়ের দেশ। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের একটি দ্রুত অগ্রসরমান অর্থনীতির দেশে পরিনত হয়েছে। গত ১৪ বছরে দেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ৭ শতাংশ। করোনা মহামারী চলাকলীন গত অর্থবছরে সময়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৬ দমমিক ৯৪ শতাংশ। বাংলাদেশ খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে, শতবাগ বাড়ি বিদ্যুতের আওতায় আনা হয়েছে। নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, মা ও শিশু স্বাস্থ্য, তথ্য প্রযুক্তি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় বাংলাদেশ প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। এ কারণে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্বে স্বীকৃত।
এমুহুর্তে যখন বিশ্ব অর্থনীতি নিম্নমুখী, তখন বাংলাদেশ ‘ভিশন-২০৪১’ এর মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি উচ্চ আয়ের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফেডারেল মন্ত্রী সিনেটর মুহাম্মদ তালহা মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক অভিন্ন ইতিহাস, একইরূপ বিশ্বাস ও সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত।
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে ভবিষ্যতে এ সম্পর্ক জোরদার করার মাধ্যমে দুদেশের মানুষের উন্নয়ন ও কল্যাণ সাধিত হবে।
দিবসটি উপলক্ষে হাইকমিশনার, ফেডারেল মন্ত্রীগণ, বিশেষ অতিথিগণ, কূটনৈতিক কোরের ডিন, সার্কভূক্ত দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারগণকে সঙ্গে নিয়ে কেক কাটেন।
আমন্ত্রিত অতিথিদের বাংলাদেশি খাবারসহ নানরকম সুস্বাদু খাবার দিয়ে আপ্যায়িত করা হয়।
স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রবিরোধী বলে আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতায় আসতে দেওয়া যাবে না: ফখরুল
বর্তমান সরকার স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কাজ করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এদেরকে কোনোমতেই ক্ষমতায় আর আসতে দেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, ‘দুঃখজনকভাবে ও অত্যন্ত লজ্জাজনকভাবে আওয়ামী লীগ আজকে স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। কারণ স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের যে লক্ষ্য ছিলো-আশা ছিলো, আকাঙ্খা ছিলো-একটা গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা, একটা বহুদলীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা; সেটাকে সম্পূর্ণভাবে ধবংস করে দিয়ে আওয়ামী লীগ একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সেই পুরনো কায়দায়।’
আরও পড়ুন: ‘স্বৈরাচারের’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শ্রমিকদের প্রতি মির্জা ফখরুলের আহ্বান
বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক অনুষ্ঠানে ফখরুল বলেন, এখন তাদের অবস্থান স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে এবং দেশের মানুষের বিরুদ্ধে।
প্রাক্তন মন্ত্রী সুনীল কুমার গুপ্তের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ভাসানী ওনুসারী পরিষদ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এরআগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অগ্নিসংযোগকারী সন্ত্রাসী বিএনপি-জামায়াত জোট, খুনি, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও যুদ্ধাপরাধীরা এ দেশে (বাংলাদেশ) আর ক্ষমতায় আসবে না বলে মন্তব্য করার একদিন পর ফখরুল এ মন্তব্য করেন।
বুধবার ওয়াশিংটনে রিজ কার্লটন হোটেলে বাংলাদেশি প্রবাসীদের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মন্তব্য করেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল না করার জন্য সরকারের অবস্থানেরও সমালোচনা করেন বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, ‘যখন সবাই আইনটি বাতিলের দাবি করছে, তখন আপনি দাম্ভিকতা করছেন যে এটি বাতিল হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কেন এটা বাতিল করা উচিত নয়? আপনি এটি (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন) একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছেন, তাই আপনি এই অস্ত্র হারাতে চান না।’
ফখরুল বলেন, ‘কিন্তু আপনাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, দেশের মানুষ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করেও স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, ১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারকে উৎখাত করেছিল। এখন দেশের মানুষ আন্দোলন শুরু করেছে এবং এই আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের জয় হবে। ’
তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী, গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি আবার ক্ষমতায় এলে তাদের দেশের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।
ফখরুল বলেন, ‘এ কারণে আমরা দেশকে ভালোবাসে এমন সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একযোগে আন্দোলন শুরু করেছি। আমরা সারা দেশের মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছি। এই আশা নিয়েই আমাদের দেশকে মুক্ত করতে হবে, স্বাধীনতা রক্ষা করতে হবে এবং জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধার করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভাষানী ওনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম।
জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা থাকলেও পরে অনুমতি বাতিল করে ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার, গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বিজন কান্তি সরকার প্রমুখ।
আরও পড়ুন: সরকার মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে: মির্জা ফখরুল
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে মন্তব্য তাকে কারাগারে ফিরিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র: ফখরুল
বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে উদাহরণ: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও বিস্তৃতি উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে একটি উদাহরণ।
তিনি বলেন, আমরা মুক্ত গণমাধ্যমে বিশ্বাস করি, গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি। প্রতিবেশী অনেক দেশেই গণমাধ্যমের এ রকম বিস্তৃতি ঘটেনি এবং এমন অবাধ স্বাধীনতার মধ্য দিয়ে কাজ করে না।
আরও পড়ুন: শেখ জামালের হত্যাকারীদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী
বুধবার (৩ মে) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাব আয়োজিত ‘মানবাধিকার সংরক্ষণ ও গণতন্ত্র সম্প্রসারণে গণমাধ্যমের ভূমিকা’শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার সঙ্গে দায়িত্বশীলতাকে যোগ করতে হয় তাহলেই গণমাধ্যম সঠিকভাবে পরিচালিত হয়। আর যদি স্বাধীনতার সঙ্গে দায়িত্বশীলতা না থাকে তাহলে অনেক ক্ষেত্রে সমাজের ক্ষতি হয়, রাষ্ট্রেরও ক্ষতি হয়।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণতন্ত্র এবং গণমাধ্যম একে অপরের পরিপূরক। গণমাধ্যম ব্যতিরেকে গণতন্ত্র হতে পারে না। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বচ্ছতা ব্যতিরেকে গণতন্ত্র কখনো পথ চলতে পারে না, গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা টিকে থাকতে পারে না। সে কারণে গণতন্ত্রকে সংহত করতে হলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অবশ্যই প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার গণতন্ত্র ও বহুমাত্রিক সমাজ ব্যবস্থার বিকাশ, ন্যায়ভিত্তিক-বিতর্কভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করার লক্ষ্যে গণমাধ্যমের বিস্তৃতি এবং স্বাধীনতার ওপর জোর দিয়েছে, উল্লেখ করে পরিসংখ্যান দিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, গত ১৪ বছরে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনসহ সম্প্রচারে আসা টেলিভিশন চ্যানেলের সংখ্যা ৩৯টি, খুব সহসা আরও কয়েকটি সম্প্রচারে আসবে। বেসরকারি টেলিভিশন এবং বেতারের যাত্রাও শুরু হয়েছিল শেখ হাসিনার হাত ধরে। আমরা যখন ২০০৯ সালে সরকার গঠন করি তখন টিভি চ্যানেল ছিলো ১০টি আর দৈনিক পত্রিকা ছিলো সাড়ে ৪০০ যা এখন ১২৬০। ২২টি বেসরকারি এফএম রেডিও’র লাইসেন্স দেওয়া আছে ১২টি সম্প্রচারে আছে, কয়েক ডজন কমিউনিটি রেডিও’র লাইসেন্স দেওয়া আছে যার বেশিরভাগই সম্প্রচারে আছে। অনলাইন গণমাধ্যম কত শত কিংবা কয় হাজার সেটি একটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যাপার।
ইতোমধ্যে দুই শতাধিক অনলাইন গণমাধ্যমের রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়েছে, পত্রিকা এবং টেলিভিশনের অনলাইনসহ সেটা আরও অনেক বেশি।’
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, এর ফলে আজকে হাজার হাজার সাংবাদিক গণমাধ্যমে কাজ করছে। আজকে যারা বিদগ্ধ সাংবাদিক তারা তাদের এই ‘ট্যালেন্ট’ প্রকাশ করার সুযোগ পেতেন না যদি গণমাধ্যমের এ রকম ব্যাপক বিস্তৃতি না ঘটতো। পৃথিবীর আশপাশের দেশে গণমাধ্যমের এ রকম বিস্তৃতি ঘটেনি এবং এ রকম অবাধ স্বাধীনতার মধ্যে কাজ করে না। কয়েকটি ছাড়া প্রায় সকল টেলিভিশন আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ধরেই অনুমোদন পেয়েছে। আর সকল টেলিভিশনে প্রতিদিন রাতের বেলায় টক শো’তে সরকারের সমালোচনা হয়। সংবাদ যখন প্রকাশ করা হয় তখনও সরকারের ব্যাপক আলোচনা হয়। এ ক্ষেত্রে সরকার কখনো হস্তক্ষেপ করে না। কারণ আমরা মুক্ত গণমাধ্যমে বিশ্বাস করি, গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা কথায় কথায় সিঙ্গাপুরের উদাহরণ দেই। একটি জেলে পল্লী থেকে কিভাবে সিঙ্গাপুর উন্নত দেশে রূপান্তরিত হলো। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত প্রায় সব দেশের চেয়ে সিঙ্গাপুরের মাথাপিছু আয় বেশি। সিঙ্গাপুরের ৪টি চ্যানেল রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পত্রিকাও রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত। থাইল্যান্ডে সব টেলিভিশন চ্যানেল ফিড একটা জায়গা থেকে আপলিংক করা হয়। কোনো কনটেন্ট পছন্দনীয় না হলে তা অফ করে দিয়ে বিজ্ঞাপন বা অন্য কিছু দেওয়া হয়। আমাদের দেশে তা নয়। মালয়েশিয়ার ছেলেমেয়েরা ৮০’র দশক পর্যন্ত আমাদের দেশে পড়তে আসতো। এখন আমাদের ছেলেমেয়েরা সেখানে যাচ্ছে। তারা কিভাবে এই জায়গায় এলো সেটি একটি বিস্ময়। সেখানে গণমাধ্যমের এই স্বাধীনতা নাই, বিস্তৃতিও নাই।
আরও পড়ুন: বিএনপির পরিকল্পনার অংশ হিসেবে খালেদা জিয়াকে অসুস্থ দেখানো হচ্ছে: তথ্যমন্ত্রী
ইউরোপের দেশগুলোর উদাহরণ দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্রের অনেক ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যকে অনুসরণের চেষ্টা করি। সেখানে প্রতি সপ্তাহে ভুল বা অসত্য সংবাদ পরিবেশন কিম্বা কারো ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নষ্ট হওয়ার দায়ে গণমাধ্যমকে প্রতিনিয়ত মোটা অংকের জরিমানা গুনতে হয়। বিবিসিতে একজন এমপির বিরুদ্ধে ভুল সংবাদ পরিবেশিত হওয়ার কারণে পুরো বিবিসি টিমকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। ১৩০ বছরের পুরনো পত্রিকা ‘নিউজ অব দ্যা ওয়ার্ল্ড’ একটি ভুল অসত্য সংবাদ পরিবেশনের কারণে কয়েক মিলিয়ন পাউন্ড জরিমানা পরিশোধ করতে গিয়ে দেউলিয়া হয়ে বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের দেশে এ ধরণের ঘটনা কখনো ঘটেনি। কন্টিনেন্টাল ইউরোপেও যুক্তরাজ্যের মতোই ভুল বা অসত্য সংবাদ পরিবেশনের কারণে গণমাধ্যমকে মোটা অংকের জরিমানা গুনতে হয়, শাস্তি পেতে হয়।
‘পত্রিকায় পুঁজির দৌরাত্ম্য আজকে দেশে একটা সমস্যা’ উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, যখন সংবাদমাধ্যমে পুঁজি বিনিয়োগ হয়, সেই পুঁজির দৌরাত্ম্য সাংবাদিকদের ওপর খড়গ বসায়, তাদের কাজে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায়। সরকারের পক্ষ থেকে কি প্রতিবন্ধকতা হচ্ছে সেটি নিয়ে আমরা সবসময় আলোচনা করি কিন্তু আমি মনে করি সুস্থভাবে, অবাধে, ভয়হীন পরিবেশে কাজ করার ক্ষেত্রে মালিক পক্ষের পুঁজির দৌরাত্ম্য একটি বড় প্রতিবন্ধকতা। কয়েকজন সাংবাদিক নেতা প্রশ্ন রেখেছেন, ব্যাংকের মতো সংবাদ মাধ্যমের পরিচালনা পর্ষদে কেন সাংবাদিকদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে না, ইন্ডিপেনডেন্ট ডিরেক্টর থাকবে না!
এ সময় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি সবসময় বলেছি আজকেও বলবো, একজন সাংবাদিক, গৃহিনী, চাকরিজীবী, কৃষক অর্থাৎ সর্বক্ষেত্রে সব মানুষকে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেওয়ার জন্যই এই আইন। অনেক সাংবাদিকও এই আইনে ডিজিটাল নিরাপত্তার জন্য অপসাংবাদিকতার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ক’দিন আগে একজন নারী সাংবাদিক তার চরিত্র হননের প্রতিকারের জন্য এই আইনে আরেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
হাছান বলেন, আজকের আলোচনায় সাংবাদিকরাও বলেছেন, এ আইনের প্রয়োজন রয়েছে। এ ধরণের আইন আজকে পৃথিবীর প্রায় সব দেশে করেছে। অনেক দেশে এই আইন আমাদের চেয়ে কঠোর। যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি অঙ্গরাজ্য ছাড়া অন্যগুলোতে ফাঁসি নাই। কিন্তু সেখানে ডিজিটাল অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। যুক্তরাজ্যের লোকসংখ্যা আমাদের তিন ভাগের এক ভাগ, ৬ কোটির একটু বেশি। সেখানে প্রতি মাসে কয়েক ডজন মানুষ গ্রেপ্তার হয়। আমাদের দেশে হয় না। একজন গ্রেপ্তার হলে সেটা পত্রিকায় শিরোনাম হয়।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, সেই সঙ্গে অবশ্যই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। কারণে-অকারণে মামলা ঠুকে দেওয়া, সঙ্গে সঙ্গে আবার গ্রেপ্তার করা- এগুলো অবশ্যই বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। সে ব্যাপারে আমি একমত। কোনো একটা গোষ্ঠীকে কোনো আইন থেকে বাদ দেওয়া সেটি সমীচীন নয় কিন্তু কোনো আইন যেন কারো ওপর অপপ্রয়োগ না হয় সেটি আমাদের নিশ্চিত করা প্রয়োজন। আগের তুলনায় অপপ্রয়োগ কমেছে, অপপ্রয়োগটা শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: বৃদ্ধ মা-বাবার যত্ন নেওয়া সন্তানদের সামাজিক ও আইনগত দায়িত্ব: তথ্যমন্ত্রী
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ করার জন্য নয়: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে মোমেন
সরকার সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে উল্লেখ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশ জানিয়ে দিয়েছে যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সীমাবদ্ধ করার জন্য নয়।
‘আমরা বলেছিলাম আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করেছি, কিন্তু এটা সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রোধ করার জন্য নয়। আওয়ামী লীগ সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে,” পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে তার বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষকে এসব কথা বলেছেন।
মোমেন বিপুল সংখ্যক সংবাদপত্র ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের চালু থাকার কথা উল্লেখ করেন যাকে তিনি ‘অতি সক্রিয়’ হিসেবে বর্ণনা করেন।
প্রধান উপ-মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেলের মতে, সভায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন ‘গণমাধ্যম এবং নাগরিক সমাজের বিরুদ্ধে সহিংসতা এবং ভয় দেখানো’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, যার মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে রয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে মোমেনের ফলপ্রসূ বৈঠক
বাংলাদেশে শ্রম খাত সংস্কারের চলমান ও সম্পন্ন কাজের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবহিত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন আশা প্রকাশ করেন যে, দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এই প্রচেষ্টা যথাযথভাবে স্বীকৃত ও প্রশংসিত হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশের শ্রম পরিস্থিতির উন্নতিতে চলমান ইউএস-বাংলাদেশ পরামর্শমূলক প্রক্রিয়ার প্রশংসা করেন।
মোমেন শ্রমের মানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন এবং ইউএস ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স
কর্পোরেশনের (ডিএফসি) অধীনে অর্থায়নের জন্য বাংলাদেশকে বিবেচনা করার জন্য মার্কিন পক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
ডিএফসি হলো আমেরিকার ডেভেলপমেন্ট ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউশন। এটি আজ উন্নয়নশীল বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জের সমাধানে অর্থায়নের জন্য বেসরকারি খাতের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক দল অপর রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করছে না: মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট