বন্দর
ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশ-মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম শেষ করেছে: আবহাওয়া অধিদপ্তর
অত্যন্ত প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয় এবং রবিবার সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ-মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করেছে এবং দুর্বল হয়ে মিয়ানমারের সিটুয়ের কাছে স্থল গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের বুলেটিনে বলা হয়েছে, এটি স্থলভাগের অভ্যন্তরে আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমান্বএয় দুর্বল হতে পারে।
এতে আরও বলা হয়েছে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোখা সামান্য দুর্বল হয়ে পড়েছে, মিয়ানামারের স্থলভাগে অবস্থান করছে: বিএমডি
এছাড়া, চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারী সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোখা: সেন্টমার্টিনে ১০০ কিমি. বেগে বাতাস বইছে
ঘূর্ণিঝড় মোখা: চট্টগ্রাম বন্দরে অ্যালার্ট-২ জারি
ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে অ্যালার্ট-২ জারি করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। এটি বন্দরের নিজস্ব অ্যালার্ট।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর মোখার কারণে চার নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত জারির পর বন্দর কর্তৃপক্ষ শুক্রবার (১২ মে) বিকালে নিজস্ব এ অ্যালার্ট জারি করে।
এ ব্যাপারে বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্ক সংকেত ঘোষণা করলে অ্যালার্ট জারি করা হয়। এটা বন্দরের নিজস্ব অ্যালার্ট।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোখা: কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার, বেড়েছে ঘূর্ণন
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচতে সাগরে অবস্থানকরা লাইটার জাহাজগুলোকে সদরঘাট থেকে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকার দিকে নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
জেটি ও বহির্নোঙরে থাকা জাহাজগুলোকে ইঞ্জিন চালু রাখতে বলা হয়েছে যাতে তাৎক্ষণিক মুভমেন্ট করতে পারে।
এছাড়া বন্দরের নিজস্ব জাহাজগুলোকে নিরাপদে থেকে ডাবল মুরিং করতে বলা হয়েছে বলে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা রবিবার (১৪ মে) দুপুর নাগাদ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় মোখা উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় (১৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮ দশমিক দুই ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।
এটি শুক্রবার (১২ মে) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার পাঁচ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৩৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৬৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৩০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এছাড়া এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হতে পারে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোখা: এখনো শান্ত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৫০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুদ্ধ রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত যে গতিতে ঘূর্ণিঝড় মোখা এগোচ্ছে, তাতে রবিবার দুপুর নাগাদ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল ও মিয়ানমারের উত্তর-উপকূল দিয়ে এটি অতিক্রম করতে পারে।
এছাড়া উপকূলে আঘাত হানার চার থেকে ছয় ঘণ্টার মধ্যে মোখা শক্তি হারাবে।
এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিদ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১৪ মে ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশে আছড়ে পড়তে পারে
চট্টগ্রাম বন্দরে শিপ হ্যান্ডেলিং এ নতুন অপারেটরদের নিয়োগ ৬ মাসের জন্য স্থগিত
চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ পরিচালনার (শিপ হ্যান্ডেলিং) জন্য নতুন অপারেটরদের নিয়োগ (লাইসেন্স) প্রদানে বন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একটি ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান বিচারপতি শাহেদ নুরুদ্দিনের যৌথ বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এস.টি. এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর তারেক কামালের এক আবেদনের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এই আদেশ দেন। এ কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত করেন।
আবেদনকারীর পক্ষে নিয়োজিত আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবির আব্বাস চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহনে প্রতি টনে ২২০ টাকা দেবে ভারত
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ কুতুবদিয়া, বহির্নোঙ্গর ও অন্যান্য বিশেষায়িত জেটিতে আগত দেশি/বিদেশি জাহাজের পণ্য হ্যান্ডলিং এর জন্য রেগুলেশন্স ফর ওয়ার্কিং অব চিটাগং পোর্ট (কার্গো এন্ড কন্টেইনার) -এর প্রবিধানমালা ও এ সংক্রান্ত বাংলাদেশ গেজেট অনুসরণ না করে দরপত্র ব্যতীত নতুন শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
এমতাবস্থায়, এস. টি. এন্টারপ্রাইজ নামক একটি প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের উক্ত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন নং-৫০৭১ অব ২০২৩ দাখিল করলে বিজ্ঞ বিচারক শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) রুলনীশি জারি করে বাংলাদেশ গেজেট অনুসরণ না করে দরপত্র ব্যতীত নতুন শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তার কারণ দর্শানোর জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বরাবরে নির্দেশ দেন এবং গেজেট অনুসরণ না করে দরপত্র ব্যতীত নতুন শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্তের ওপর ৬ মাসের স্থগিতাদেশ প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরে দেশজুড়ে নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটে পণ্য খালাস বন্ধ
লাইটার জাহাজ শ্রমিকদের ধর্মঘট, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন বন্ধ
মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহনে প্রতি টনে ২২০ টাকা দেবে ভারত
মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের জন্য ভারতকে প্রতি টন ২২০ টাকা ফি (ট্রান্সশিপমেন্ট ফি, নিরাপত্তা এবং প্রশাসনিক চার্জ) দিতে হবে।
এছাড়া প্রতি চালান ৩০ টাকা ডকুমেন্ট প্রসেসিং ফি, প্রতি কিলোমিটার কন্টেইনার স্ক্যানিং ফি ২৫৪ টাকা এবং এসকর্ট চার্জ ৮৫ টাকা দিতে হবে।
সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক প্রজ্ঞাপনে বলেছে, চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট রুটের বাইরে অন্য রুটে ট্রানজিট চলাকালীন পণ্য পরিবহন করা যাবে না।
আরও পড়ুন: ১ কোটি ১৬ লাখ মানুষের করযোগ্য আয় থাকলেও অধিকাংশই রিটার্ন জমা দেয় না: এনবিআর কর্মকর্তা
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভারত থেকে পণ্য পরিবহনের জন্য চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের চুক্তির অধীনে ভারতীয় পণ্যের ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট সংক্রান্ত একটি স্থায়ী আদেশ জারি করেছে। স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) দ্বারা ট্রানজিট ফি-রুট নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্থায়ী আদেশে বলা হয়েছে, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের ট্রানজিট অপারেটর হিসেবে নিবন্ধনের জন্য মোংলা ও চট্টগ্রাম কাস্টমসের কাছে আবেদন করতে হবে। আবেদন যাচাইয়ের পরে ফলাফল সন্তোষজনক হলে যোগ্য সিএন্ডএফ এজেন্টদের ১০ হাজার টাকা (অফেরতযোগ্য) ট্রেজারি চালান,১০ লাখ টাকার একটি নিঃশর্ত ব্যাংক গ্যারান্টি এবং ৫০ লাখ টাকার ঝুঁকি বন্ড জমা দিতে হবে।
ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট পণ্য সাত দিনের মধ্যে বাংলাদেশের ভৌগলিক সীমানা অতিক্রম করতে ব্যর্থ হলে অপারেটরকে পণ্যের জন্য শুল্ক-কর জরিমানা দিতে হবে।
এনবিআর এর প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক কারণে পণ্য গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারলে বা যানবাহন বিকল হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেট অফিসে বিস্তারিত জানিয়ে চিঠি পাঠাতে হবে।
আদেশে আরও বলা হয়েছে যে প্রতিটি ট্রানজিট-ট্রানশিপমেন্ট চালানের স্ক্যানিং করা হবে। তারপর ইলেকট্রনিক সিল লক ইনস্টল করা হবে। স্ক্যানিংয়ে অসঙ্গতি পাওয়া গেলে পণ্যগুলোর একটি ম্যানুয়াল পরিদর্শন করা হবে।
২০২০ সালের জুলাই মাসের চুক্তির অধীনে প্রথম ট্রায়াল রান লোহার রড এবং ডাল বোঝাই চারটি কন্টেইনারে কলকাতার হলদিয়া বন্দর থেকে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে পরিবহন করা হয়েছিল।
ভারত-বাংলাদেশ প্রোটোকল রুটের মাধ্যমে চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দরকে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য চতুর্থ এবং চূড়ান্ত ট্রায়াল রান ২০২২ সালের ৭ নভেম্বর শেষ হয়েছিল।
বাংলাদেশের নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেছেন, ভারত সিঙ্গাপুর ও কলম্বো বন্দরের বিকল্প হিসেবে মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে চায়।
প্রতিবেশী দেশটি নিয়মিত ট্রানজিটের জন্য আগ্রহী কারণ এর যানবাহনগুলো কলকাতা থেকে গুয়াহাটি হয়ে আগরতলা পর্যন্ত পণ্য পরিবহনের জন্য এক হাজার ৬৫০ কিলোমিটারের বেশি ভ্রমণ করতে হয়।
আশা করা হচ্ছে যে এই পদক্ষেপটি ভারত-বাংলাদেশ প্রোটোকল রুটের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ জলপথে উত্তর-পূর্বে বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়াতে এবং মালবাহী খরচ কমাতে সাহায্য করবে।
এতদিন পূর্বের রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনে ভারত অনেক সময় লাগত। বাংলাদেশের এই দুই বন্দর দিয়ে যাতায়াত করলে ভারতের সময় ও খরচ দুটোই কমবে।
আরও পড়ুন: আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ল: এনবিআর
আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ল: এনবিআর
নারায়ণগঞ্জে ট্রাক-সিএনজি সংঘর্ষে নিহত ২
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে দুইজন নিহত ও দুইজন আহত হয়েছেন।
রবিবার উপজেলার ফুলহর এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- উপজেলার জহিরুল ইসলাম (৪২) ও গাইবান্ধা জেলার মুকুল (৪০)।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিকী জানান, অটোরিকশাটি মদনপুর এলাকায় যাওয়ার পথে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক তাকে ধাক্কা দেয়। এ সময় ট্রাক চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
ওসি জানান, আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহতদের লাশ নারায়ণগঞ্জ জেলা হাসপাতালে রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ৪
দিনাজপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্রের মৃত্যু
৭৩ বছর পর ট্রেন যাচ্ছে মোংলা সমুদ্র বন্দরে
পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দ্রুত এগিয়ে চলেছে দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। এবার প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৭৩ বছর পর রেল যোগাযোগে যুক্ত হবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা।
এরইমধ্যে খুলনা-মোংলা রেলপথের কাজ ৯৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের জুনে বাকি কাজ শেষ হওয়ার কথা।
জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেলপথের উদ্বোধন করবেন বলে আশা করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
১৯৫০ সালের ১লা ডিসেম্বর মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠিত হয়। মোংলা বন্দর দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বাগেরহাট জেলায় অবস্থিত। এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে সেলফি তোলার সময় ট্রেন থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু
খুলনা শহর থেকে ৪৮ কিলোমিটার দক্ষিণে পশুর নদী ও মোংলা নদীর সংযোগস্থলে এই বন্দরের অবস্থান।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পণ্য ও পর্যটন পরিবহনে মোংলা বন্দরকে রেলসেবার আওতায় আনা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে নির্মাণ করা হচ্ছে খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার রেলপথ।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা আরও জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে রেলপথের ৯৬ শতাংশ কাজ। চলতি বছরের জুনে পুরো কাজ শেষ হবে।
বন্দরের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, রেলসেবা চালু হলে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারিত হবে। রেলপথ না থাকায় এতদিন বন্দরের বড় বড় কন্টেইনার পরিবহনে সমস্যা হতো।
এছাড়া সুন্দরবনে পর্যটক পরিবহন সহজ হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটবে।
মোংলা বন্দরের ব্যবসায়ী এইচ এম দুলাল, মশিউর রহমান ও ইকবাল হোসেন জানান, মোংলা দেশের অন্যতম সমুদ্রবন্দর হলেও এখানে এতদিন রেল সংযোগ ছিল না। ফলে বন্দরটিতে অন্য দেশের বড় মালবাহী জাহাজ ভিড়তে আগ্রহ দেখাচ্ছিল না। বরং বড় বড় জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে আসছিল। এতে মোংলা বন্দরের ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল।
তারা আরও জানান, মোংলা বন্দরকে রেলসেবার আওতায় আনতে ইতোপূর্বে একাধিক পরিকল্পনা নেয়া হলেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। বর্তমানে দেশের আর্থিক সমৃদ্ধির কথা বিবেচনা করে ভারত, নেপাল ও ভুটানসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগ সম্প্রসারণে বন্দরকে রেলসেবার আওতায় আনা হচ্ছে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থায় গতি আসবে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পটি ২০১০ সালের ২১শে ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়। প্রকল্পটি তিনটি ভাগে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
এরমধ্যে:
প্যাকেজ ১-রেললাইন নির্মাণ,
প্যাকেজ ২-রূপসা নদীর ওপর রেলসেতু,
প্যাকেজ ৩-টেলিযোগাযোগ ও সিগন্যালিং সিস্টেম।
আরও পড়ুন: যশোরে শিক্ষিকার নাক ফাটানো সেই ট্রেনপরিচালক বরখাস্ত
এসব প্রকল্পের আওতায় মূল লাইনসহ রেলওয়ে ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য ৮৬ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার।
তার মধ্যে ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ। আর রূপসা নদীর ওপর নির্মাণ করা হয়েছে পাঁচ দশমিক ১৩ কিলোমিটার রেলসেতু।
ইতোমধ্যে ওই সেতুর কাজ প্রায় শতভাগ শেষ হয়েছে। এছাড়া ৩১টি ছোট সেতুর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আর ১০৭টি কালভার্টের মধ্যে ১০৫টির কাজ শেষ হয়েছে। ৯টি ভিইউপি’র নির্মাণকাজ এবং ২৯ এলসি গেটের মধ্যে ২৬টির কাজ শেষ হয়েছে।
সাতটি স্টেশন বিল্ডিংয়ের মধ্যে ফুলতলা, আড়ংঘাটা ও মোহাম্মদ নগরের কাজও শেষ হয়েছে। বাকি পাঁচ স্টেশনের মধ্যে কাটাখালীর ৮০ শতাংশ, চুলকাঠির সাত শতাংশ, ভাগার ৭২ শতাংশ, দিগরাজের ৯৮ শতাংশ ও মোংলা স্টেশন নির্মাণের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
কাজের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান বলেন, খুলনা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। গত কয়েক মাসে আরও অগ্রগতি হয়েছে। ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে পুরো রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।
এছাড়া জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই রেলপথের উদ্বোধন করবেন।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে চার হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এরমধ্যে ভারতীয় লোন রয়েছে দুই হাজার ৯৪৮ কোটি এক লাখ ৮৪ হাজার টাকা। বাকি এক হাজার ৩১২ কোটি ৮৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকা সরকারি ফান্ড থেকে ব্যয় হবে।
এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে দক্ষিণের জেলাগুলোর ব্যবসা-বাণিজ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন ঘটবে বলে জানালেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী।
তিনি বলেন, মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বন্দরের সঙ্গে রেল যোগাযোগের ব্যবস্থা ছিল না। এখন খুলনা-মোংলা রেলপথ চালু হলে সড়কপথে পণ্য পরিবহনের চাপ কমবে। সেইসঙ্গে পণ্য পরিবহন ব্যয় ও সময় কমবে।
তিনি আরও বলেন, পাশাপাশি বন্দরের নৌ, সড়ক ও রেলপথের মাল্টিমোডাল যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে। ফলে ভারত, নেপাল ও ভুটানের পণ্য পরিবহন সহজ হবে। ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। সেই সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থায় গতি আসবে।
আরও পড়ুন: ঈদ যাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ৭ এপ্রিল
বাংলাদেশের জ্বালানি ও বন্দর খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী সৌদি আরব: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, সৌদি আরব বাংলাদেশের জ্বালানি ও বন্দর খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ বিজনেস সামিট ২০২৩-এর সাইডলাইনে সফররত সৌদি বাণিজ্যমন্ত্রী ও ফরেন ট্রেড জেনারেল অথরিটির চেয়ারম্যান ড. মজিদ বিন আব্দুল্লাহ আল-কাসাবির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মোমেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সৌদি আরবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে তারা শুধু কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী। তারা বাংলাদেশের কয়েকটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে এবং ইতোমধ্যে শুরুও করেছেন। যার মধ্যে পতেঙ্গায় সরকারি জমিতে তারা একটি প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে।’
আরও পড়ুন: ভ্যাকসিনকে ‘গ্লোবাল পাবলিক গুডস’ ঘোষণার ব্যাপারে জোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
মোমেন আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামে আরেকটি বড় প্রকল্পের জন্য আমরা তাদের একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রস্তাব দিয়েছি। তারা বলেছে যে খুব শিগগিরই এটির কাজ শুরু করবে।’
এর আগে বিজনেস সামিটে যোগ দিতে এবং বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয়, বাণিজ্যিক ও বৈশ্বিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে সৌদি আরবের বাণিজ্যমন্ত্রী ড. মজিদ বিন আব্দুল্লাহ আল-কাসাবি শুক্রবার ঢাকায় এসেছেন।
মন্ত্রী ২০ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ৩৫ সদস্যের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলও তার সঙ্গে রয়েছেন।
এই সফর বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় ও বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও গতিশীল করবে বলে আশা করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেছে মোমেন
ঢাকায় মোমেনের সঙ্গে আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক সোমবার
শুল্কায়ন মূল্য বাড়িয়ে দেয়ায় বেনাপোল বন্দরে ৪২ ট্রাক চিনি আটকে আছে
মূল্য সংক্রান্ত জটিলতায় বেনাপোল বন্দরে ২৮ দিন ধরে আটকা পড়ে আছে এক হাজার ২৫০ মেট্রিক টন চিনিবাহী ৪২টি ভারতীয় ট্রাক। এর ফলে ট্রাকের ডেমারেজসহ বন্দরের চার্জ নিয়ে বিপাকে পড়েছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান।
তবে কাস্টমসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর ভারত থেকে ৬টি চালানে ৮৪টি ভারতীয় ট্রাকে দুই হাজার ৫০০ মেট্রিক টন চিনি বেনাপোল বন্দরে আসে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রী নিহত: চালক ও হেলপার আটক
এর মধ্য তিনটি চালানে এক হাজার ২৫০ মেট্রিক টন (৪২ ট্রাক) চিনি সরকার নির্ধারিত ট্যারিফ মূল্যে শুল্কয়ন করার পর খালাস দেয়া হয়।
পরে বাংলাদেশ সুগার রিফাইনারি অ্যাসোসিয়েশন কম মূল্যে শুল্কায়নের অভিযোগ তুলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানালে বাকি তিন চালান বন্দরে আটকা পড়ে যায়।
সেই থেকে এখনো আমদানিকৃত চিনি বোঝাই ভারতীয় ট্রাকগুলো বন্দরের ভারতীয় ট্রাক টার্মিনালে দাঁড়িয়ে আছে। এসব ট্রাকের চালক ও হেলপাররা বন্দরের মধ্যে ট্রাকের মধ্যে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
চিনির আমদানিকারক সেতু এন্টারপ্রাইজের প্রতিনিধি সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী আবদুল লতিফ বলেন, ‘ছয়টি চালানের মধ্যে তিনটি চালান সরকার নির্ধারিত ট্যারিফ মূল্য পরিশোধ করে খালাস করেছি। কিন্তু সুগার রিফাইনারি অ্যাসোসিয়েশন হঠাৎ আমদানি মূল্য কম দেখানোর অভিযোগ তোলায় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ট্যারিফ মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে বাকি তিনটি চালানের চিনি খালাস করতে পারছি না। প্রতিদিন ভারতীয় ট্রাকপ্রতি দুই হাজার টাকা করে ডেমারেজ দিতে হচ্ছে। এছাড়াও বন্দরের চার্জ রয়েছে। দ্রুত সমাধান না হলে আমদানিকারক লাখ লাখ টাকা ক্ষতির মধ্যে পড়বেন।’
তিনি আরও জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রতি মেট্রিক টন চিনি ৪৩০ মার্কিন ডলারে শুল্কায়ন মূল্য নির্ধারণ (ট্যারিফ মূল্য) করে দিয়েছে চলতি বাজেটে। কিন্থু বাংলাদেশ সুগার রিফাইনারি অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগের পর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ প্রতি মেট্রিক টন ৫৭০ ডলারে শুল্ক পরিশোধের নির্দেশ দেয়। যার ফলে এই চিনি খালাস করে বাজারে বিক্রি করা সম্ভব নয়। বর্ধিত মূল্যে চিনি খালাস করলে কয়েক লাখ টাকা আর্থিক লোকসান হবে বলে আমদানিকারক চিনি খালাস করছে না।
ভারতীয় ট্রাকচালক আশিষ সরকার বলেন, ‘আমদানি জটিলতায় ২৮ দিন ধরে চিনি নিয়ে বেনাপোল বন্দরে আটকে আছি। কবে খালাস হবে কিছুই জানি না। এই প্রচণ্ড শীতে রাতে ট্রাকের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। গোসল খাওয়া নিয়ে খুব কস্টের মধ্যে আছি।’
এ বিষয়ে বেনাপোল কাস্টম হাউজের যুগ্ম কমিশনার মো. শাফায়েত হোসেন বলেন, ‘চিনির তিনটি চালান বৈধ পন্থায় বন্দর থেকে খালাস হয়েছে। তবে যেহেতু আমদানি মূল্য বাড়ানোর বিষয়ে একটি অভিযোগপত্র এসেছে। বিষয়টি কাস্টমসের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
আরও পড়ুন: ডিএমপি’র মাদকবিরোধী অভিযানে আটক ৬০
চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়বে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ
চট্টগ্রাম বন্দরে প্রথমবারের মত ভিড়বে ১০ মিটার গভীরতার বড় জাহাজ। আগামীকাল রবিবার (১৫ জানুয়ারি) পরীক্ষামূলকভাবে বন্দর জেটিতে নোঙর করতে যাচ্ছে দশ মিটার ড্রাফট ও ২০০ মিটার দৈর্ঘের এই জাহাজটি। এজন্য সকল প্রস্তুতি নিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, জাহাজ ভেড়াতে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে দক্ষ পাইলট। বড় জাহাজ ভেড়াতে কর্ণফুলী নদীর মোহনায় গভীরতা বৃদ্ধি এবং পাইলটদের প্রশিক্ষণসহ সব ধরনের প্রস্তুতিমূলক কাজও সম্পন্ন হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরে খালাস হয়েছে রেলের ১৫টি বগি
বন্দর সূত্রে জানা যায়, এতদিন চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফট এবং ১৯৫ মিটার লম্বা জাহাজ ভিড়তে পারতো। ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে বন্দরে উপর্যুক্ত ড্রাফট ও লেংথের জাহাজ নোঙর করে আসছে। এর আগে বন্দরে আরও ছোট জাহাজ ভিড়ত।
দীর্ঘ সময় ধরে বড় জাহাজ ভেড়াতে বড় বাধা ছিল কর্ণফুলী নদীর প্রবেশমুখ অর্থাৎ সাগর ও নদীর সংযোগস্থলের কম গভীরতা।
তবে লন্ডনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘এইচআর ওয়েলিং ফোর্ড’ এর জরিপে ইতিবাচক সাড়া পেয়ে বড় জাহাজ ভেড়ানোর উদ্যোগ নেয় বন্দর। বড় জাহাজ ভিড়লে আমদানি-রপ্তানি খরচ কমার পাশাপাশি বন্দরে জাহাজজট কমে যাবে বলে দাবি বন্দর ব্যবহারকারীদের।
বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ বার্থিং করা চালু হলে তিন হাজার পাঁচশ’ টিইইউএস কনটেইনার পরিবহন করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি ৯ থেকে ১৩ নম্বর জেটি এবং পিসিটি ও এনসিটিতেও ভেড়ানো যাবে ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চিফ হাইড্রোগ্রাফার কমান্ডার আরিফুর রহমান বলেন, ‘গবেষণা প্রতিষ্ঠান যে রিপোর্ট দিয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার জাহাজের ট্রায়াল রান শুরু হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই রানে সফল হলে বিদেশি শিপিং কোম্পানিগুলোকে বড় জাহাজ পাঠানোর জন্য সার্কুলার দেয়া হবে। তখন বড় জাহাজ এলে বার্থিং দেব।’
তিনি আরও বলেন, বন্দরের ১৮টি জেটিতে একই ড্রাফট থাকবে না।
নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) এবং চিটাগাং কন্টেইনার টার্মিনালে (সিসিটি) ১০ মিটার ড্রাফট দেয়া সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
এছাড়া জেনারেল কার্গো বার্থের (জিসিবি) কয়েকটিতে ড্রাফট বাড়ানো যাবে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খায়রুল আলম সুজন বলেন, ‘আগের চেয়ে বেশি ড্রাফট এবং বেশি দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভিড়তে পারলে একই সময়ে একই জাহাজে কন্টেইার পরিবহন বাড়বে। এতে পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে খরচ কমে আসবে।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের শিপিং সেক্টরের অনেক জাহাজই বন্দরে আসতে পারে না। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামে শিপিং ব্যবসা এবং আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িতরা দীর্ঘদিন ধরে বন্দরের লেংথ ও ড্রাফট বাড়ানোর বিষয়ে দাবি জানিয়ে আসছিলেন।’
তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ সুনিশ্চিত না হয়ে ড্রাফট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দেয়নি বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরের জেটি ফাঁকা, আমদানি-রপ্তানিতে ভাটা
চট্টগ্রাম বন্দরে নামল দ. কোরিয়া থেকে আসা রেলকোচের মিটারগেজ চালান
চট্টগ্রাম বন্দরের জেটি ফাঁকা, আমদানি-রপ্তানিতে ভাটা
দেশের আমদানি রপ্তানির প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন বছরের শুরুতেই অনেকগুলো জেটি ফাঁকা পড়ে আছে। এর মধ্যে খোলা পণ্য নামানোর জেটি যেমন আছে, তেমনি আছে কনটেইনার জেটিও।
বহির্নোঙরে পণ্যবাহী জাহাজ অপেক্ষমাণ না থাকায় বন্দরের ১৮টি গুরুত্বপূর্ণ জেটির মধ্যে সাতটিই এখন জাহাজের অপেক্ষায় বসে আছে।
এছাড়া বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকটে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য কমে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগে বন্দরে জেটিতে ভেড়ার অপেক্ষায় থাকতে হতো বিদেশি জাহাজকে। কখনও কখনও তিন থেকে ১৫ দিনও অপেক্ষা করতে হয়েছে। বর্তমানে সেই চিত্র নেই।
বহির্নোঙরে অপেক্ষা না করেই সরাসরি জেটিতে ঢুকছে জাহাজ। এর পরও শূন্য থাকছে জেটি।
বছরের শুরুতে এমন পরিস্থিতি ভাবিয়ে তুলেছে ব্যবসায়ী ও বন্দর সংশ্লিষ্টদের।
প্রায় সাড়ে ৩১ লাখ একক কনটেইনার ওঠানামা দিয়ে ২০২২ সাল শেষ করেছে চট্টগ্রাম বন্দর।
আগের বছরের তুলনায় দুই শতাংশ কনটেইনার ওঠানামা কমেছে এই বন্দরে। আর খোলা পণ্য ওঠানামা বেড়েছে আড়াই শতাংশ।
আরও পড়ুন: লাইটার জাহাজ শ্রমিকদের ধর্মঘট, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন বন্ধ