গণতন্ত্র
২০২৪ সালে শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে: বিএনপি
২০২৪ সালে শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজার প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, আগামী দিনগুলোতে জনগণের সমর্থন নিয়ে বিএনপি আরও শক্তিশালী হবে।
তিনি বলেন, 'ভুয়া ও সাজানো নির্বাচনের জন্য যে প্রহসন করা হচ্ছে তা আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। জনগণের সঙ্গে আমরাও এই একদলীয় সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছি।’আরও পড়ুন: দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শেরপুরে ৪ বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের সমর্থনে দিয়ে নয়, বুলেট ও রাষ্ট্রযন্ত্রের শক্তি ব্যবহার করে ক্ষমতায় রয়েছে।
তিনি বলেন, 'বুলেট, পুলিশের লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেডের ব্যবহার ছাড়াই আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব। আমরা জনগণের শক্তিতে শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ায় এটা করব।’
বিএনপির ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালের ১ জানুয়ারি ছাত্রদল প্রতিষ্ঠা করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদল ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা রাজপথে থাকবে।
বিএনপি নেতা বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশন ৭ জানুয়ারি ভুয়া নির্বাচন করবে।
তিনি বলেন, 'আপনারা দেখেছেন সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের চেষ্টা করে ইতোমধ্যে সবকিছু এলোমেলো করে দিয়েছে। এমনকি নিজেদের জোট ও পোষা বিরোধী দলের প্রার্থীরাও এই নির্বাচনের সমালোচনা করছেন। সুতরাং এ বিষয়ে আমাদের কিছু বলার দরকার নেই।’
ড. মঈন বলেন, সরকার ইতোমধ্যে ৩০০ আসনে কারা এমপি হবেন তা নির্ধারণ করে নির্বাচন করেছে।
‘সুতরাং এটি একটি ভুয়া নির্বাচন। কোনো জনপ্রতিনিধি সংসদ সদস্য হবেন না কারণ এটি মনোনয়নের নির্বাচন হবে। নির্বাচন কমিশন ৭ জানুয়ারি পূর্বনির্ধারিত ফলাফল ঘোষণা করবে।’ ৭ জানুয়ারির ভোট এখন অর্থহীন হয়ে পড়েছে বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা।
আরও পড়ুন: উত্তাল বছর শান্তভাবে শেষ হলেও সরকারের পতনে বিএনপির সংকল্প অটুট
এদিকে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ইতোমধ্যে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। ‘তারা এখন ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচন করে গণতন্ত্রকে কবর দিতে চায়।’
আজ রাজধানীর কাফরুল এলাকায় লিফলেট বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আরেকটি প্রহসনের নির্বাচন করে ক্ষমতায় টিকে থাকার সরকারের স্বপ্ন এবার বাস্তবায়িত হবে না।
তিনি বলেন, 'দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এই ডামি নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে। আগামী ৭ জানুয়ারি কোনো ভোটার ভোটকেন্দ্রে যাবেন না।
দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে রিজভী বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন বর্জনের আহ্বান সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করেন।
বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলের নেতারাও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট বিতরণ করে নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: লিফলেট বিতরণ-গণসংযোগ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বাড়িয়েছে বিএনপি
গণতন্ত্রে নির্বাচনের বিকল্প নেই: ড. মোমেন
গণতন্ত্রে নির্বাচনের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচন ছাড়া সরকার পরিবর্তনের বিকল্প কোনো উপায় নেই। কাজেই যারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছেন তারা গণতন্ত্রকে বিশ্বাস করেনা। এবারের নির্বাচন জাতীয়-আন্তর্জাতিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে বদ্ধপরিকর।’
সোমবার ( ২৬ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টায় সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এসময় মোমেন বলেন, বিপুল সম্পদ থাকা সত্ত্বেও মধ্যপ্রাচ্য প্রক্সিযুদ্ধের কারণে ধ্বংসের মুখে। তাই ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্থিতিশীলতার জন্যও শেখ হাসিনা সরকারের দরকার আছে। আমরা এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে ক্ষুধামুক্ত দেশ হিসেবে গড়তে চাই।
সাংবাদিকরা সামজের দর্পন ও বিবেক উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিলেটের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর ধীরগতির কারণ অনুসন্ধান করে প্রকাশের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: যারা নির্বাচন বর্জন করছে তাদের নেতৃত্বের গুণাবলীর অভাব রয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সেইসঙ্গে হাওরাঞ্চলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহারের উপযোগিতা, ইপিজেড অঞ্চলে স্থানীয়দের বিনিয়োগে ও স্থলবন্দরগুলোতে আমদানি-রপ্তানির সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জের বিষয়গেুলো তুলে ধরারও আহ্বান জানান।
সিলেট জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসিনা বেগম চৌধুরী সভাপতিত্বে ও সহসাধারণ সম্পাদক রবিকিরণ সিংহ রাজেশের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পদক শাহ দিদার আলম চৌধুরী নবেল।
শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সহসভাপতি আশফাক আহমদ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও দৈনিক জনকণ্ঠের ব্যুরো চিফ সালাম মশরুর, সাবেক সভাপতি তাপস দাশ পুরকায়স্থ, সিনিয়র সহসভাপতি মো. মনিরুজ্জামান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক দৈনিক যুগান্তরের ব্যুরো চিফ সংগ্রাম সিংহ, দৈনিক যুগভেরীর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক অপূর্ব শর্মা প্রমুখ।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফয়জুল আনোয়ার আলাওর, সাংগঠনিক সম্পাদক সালেহ আহমদ সেলিম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সৈয়দ এপতার হোসেন পিয়ার, মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি প্রমুখ।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষ প্রাণ দিয়েছিল: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সরকার রাজনৈতিক কারণে কাউকে হয়রানি করছে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষ প্রাণ দিয়েছিল: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে মানুষ প্রাণ দিয়েছে গণতন্ত্র আর মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মানুষের ন্যায্য দাবি অস্বীকার করা হয়। নির্যাতন আর গণহত্যা শুরু হলে সারা বাংলাদেশ ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
মহান বিজয় দিবস-২০২৩ উপলক্ষে শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে ড. মোমেন ও ক্লাব সভাপতি আশরাফুজ্জামান খান ক্লাবের মুক্তিযোদ্ধা সদস্যদের ক্রেস্ট ও উত্তরীয় পরিয়ে সম্মাননা দেন।
এতে স্বাগত বক্তৃতা করেন আশরাফুজ্জামান খান।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেন বীর উত্তম মাসরুর-উল-হক সিদ্দিকী, বীর বিক্রম মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, বীর প্রতীক এম হাবিবুল আলম, মুক্তিযোদ্ধা ওয়ালিউল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল্লাহ খান, মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দীন ইউসুফ ও মুক্তিযোদ্ধা ম. হামিদ।
সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর অনুষ্ঠানে বক্তৃতা ও কবিতা পাঠ করেন।
শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীদের পরিবেশনায় বিশেষ নৃত্যানুষ্ঠানসহ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীদের পরিবেশনায় সংগীতানুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।
আরও পড়ুন: বহির্বিশ্বের চাপ নেই, আমরা আমাদের নিজেদের চাপের মধ্যে আছি: মোমেন
সিলেটের রাজনৈতিক ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চাই: মোমেন
১৯৭১ সালে ভূমিকার জন্য বাংলাদেশের জনগণের কাছে কিসিঞ্জারের ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল: মোমেন
গণতন্ত্র ও উন্নয়ন একসঙ্গে চলে: রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জনগণের কল্যাণে সরকারের গ্রহণ করা কর্মসূচি বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর জন্য সরকারি কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আপনারা সবাই সরকারি কর্মকর্তা হওয়ায় দেশের নিয়মকানুন, প্রবিধান ও সংবিধান মেনে দায়িত্ব পালন করবেন।’
বুধবার (২৯ নভেম্বর) ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কোর্সের (ডিএসসিএসসি) গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এই অনুষ্ঠানে ২৪টি দেশের ৪৯ জনসহ মোট ২৫৭ জন কর্মকর্তা গ্র্যাজুয়েট হন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সবসময় মনে রাখবেন, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন একসঙ্গে চলে।’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ন্যাশনাল ডিফেন্স ও আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্সের প্রশিক্ষণার্থীদের সাক্ষাৎ
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার তাদের সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা শক্তিশালী সামরিক বাহিনী গঠনকে অগ্রাধিকার দেন এবং ১৯৭৪ সালে প্রতিরক্ষা নীতি প্রণয়ন করেন। এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সরকার সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নের লক্ষ্যে 'ফোর্সেস গোল-২০৩০' প্রণয়ন করে।
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, সরকারের যথাযথ কাজ হলো জনগণের পক্ষে ভালো কাজকে সহজ করা এবং মন্দ কাজকে কঠিন করা।
জনগণের জীবনমান উন্নয়নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে বঙ্গবন্ধু সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতার সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর গতিশীল নেতৃত্বে অর্থনীতি ও উন্নয়ন প্রক্রিয়ার সব সূচক ইতিবাচকভাবে এগিয়ে যাচ্ছিল।’
আইনের শাসন, ব্যক্তিগত স্বাধীনতার নিশ্চয়তা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার, মূল্যবোধ ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল স্থিতিশীলতার ভিত্তি উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতা ছাড়া অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ছাড়া স্বাধীনতা জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে পারে না।
আরও পড়ুন: সশস্ত্র বাহিনী দিবস: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ৩ বাহিনী প্রধানের সাক্ষাৎ
তিনি আরও বলেন, ‘আইনের শাসনের অনুপস্থিতিতে সমাজ সঞ্চয়, অধ্যবসায়, সৃজনশীলতা ও উদ্যোক্তার ক্ষেত্রে ব্যক্তির ত্যাগের প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে পারে না।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জগুলো গতিশীল ও বহুমুখী এবং প্রচলিত হুমকি থেকে শুরু করে অপ্রচলিত হুমকি পর্যন্ত। কঠোর প্রশিক্ষণ আপনাদের নানা জটিল চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও জ্ঞানার্জনের সুযোগ করে দিয়েছে।’
ডিএসসিএসসিকে বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের ক্ষুদ্ররূপ; বিভিন্ন পটভূমি, সংস্কৃতি ও দৃষ্টিকোণ থেকে সামরিক নেতাদের একত্রিত করার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে গড়ে ওঠা বন্ধন সদিচ্ছা বাড়িয়ে তুলবে।।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মো. ফয়জুর রহমান।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিএজির মহাপরিচালকের সাক্ষাৎ
যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে আছে, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আছি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে এবং বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। তারা (মার্কিন) আমাদের সঙ্গে আছে। আমরাও তাদের সঙ্গে আছি।’
সোমবার (২৭ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বেশি কিছু চায় না এবং তারা শুধু বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। ‘আমরাও চাই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। বরং আমি তাদের বলব, যারা ভোট বানচালের চেষ্টা করছেন তাদের মার্কিন ভিসা নীতির আওতায় আনতে।’
মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই একটি বাস্তববাদী দেশ। এটি বাস্তবতায় বিশ্বাস করে এবং যখন বাস্তব কিছু করা হয়, তখন যুক্তরাষ্ট্র তাতে সমর্থন দেয়।
উদাহরণ স্বরূপ তিনি বলেন, আমেরিকা সব আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ১৯৭১ সালে গণহত্যাকারী পাকিস্তানি বাহিনীর পাশে ছিল। কিন্তু ১৬ ডিসেম্বর যখন বাংলাদেশ তার বিজয় দিবস পালন করে, তখন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে সমর্থন করে। ‘আমাদের স্বাধীনতার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কখনোই আমাদের বিরুদ্ধে যায়নি। এর মানে কী? যেহেতু একটি দেশ হয়ে গেছে, তারা তখন সেই দেশটার সঙ্গে থাকে।’
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক যাত্রায় বাধা সৃষ্টি করতে চায় না। ‘আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে চাই না।’
তিনি জানান, তাদের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত নির্বাচন হতে পারে, তা বিশ্বকে দেখাতে চান তারা।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি সব দল নির্বাচনে অংশ নেবে এবং দেশজুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, জনগণের কল্যাণের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ গঠনমূলক পরামর্শকে স্বাগত জানায় বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ দেশের উন্নয়নকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলো আমাদের সুপারিশ করে এবং যদি তারা সহায়ক ভূমিকা পালন করে তবে আমরা সেগুলোকে স্বাগত জানাই।’
সহিংসতামুক্ত নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, এর জন্য প্রয়োজন সবার আন্তরিকতা ও সদিচ্ছা।
মোমেন জানান, তারা উন্নত দেশগুলোকে অগ্রাহ্য করতে পারেন না।
তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের অনেক শ্রদ্ধা ও সম্মানের সঙ্গে বিবেচনা করি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র একটি পরাশক্তি। আমরা তাদের অগ্রাহ্য করতে পারি না।"
তিনি বলেন, জনগণ ভোট দিলে আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে। বাংলাদেশে সাধারণত ৫০ শতাংশ ভোটার তাদের ভোট দেন।
মোমেন বলেন, ১৯৯৬ সালে বিএনপি-জামায়াতের আমলে বাংলাদেশে একটি মাত্র নির্বাচন হয়েছিল, যা ভোটারবিহীন ছিল।
র্যাব সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন বলেন, র্যাব অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান এবং দুর্নীতিমুক্ত হওয়ায় জনগণ একে সম্মান করে।
তিনি বলেন, ‘এটি একটি অত্যন্ত কার্যকর সংগঠন। র্যাব থাকাতে আমরা সন্ত্রাসবাদ সমূলে উৎপাটন করেছি এবং মাদক ও মানব পাচারও অনেক কমেছে।’
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের দ্বারা প্রশিক্ষিত হওয়ায় তারা খুবই স্মার্ট। ‘তাদের আবার প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে তারা আরও ভালো করবে।’
তিনি বলেন, ‘মার্কিন সরকার পরিণত এবং আমরা সবসময় আশাবাদী এই এলিট ফোর্সের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে মোমেন জানান, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে তারা কোনো চাপ অনুভব করছেন না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাজনীতি মানে অগ্নিসংযোগ করা নয়, মানুষ হত্যা নয়, দেশের উন্নয়নে বাধা দেওয়া এবং অবরোধের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনকে বাধাগ্রস্ত করা নয়। রাজনীতি হতে হবে জনগণের কল্যাণের লক্ষ্যে। তাহলে জনগণ তাদের গ্রহণ করবে।’
আরও পড়ুন: যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, পেছানো হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
নির্বাচন কেন্দ্রিক সহিংসতা বন্ধে সব দলকে আন্তরিক হতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: রিজভী
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের মধ্যে বুধবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘দল যেসব কর্মসূচি ঘোষণা করবে, আমাদের নেতা-কর্মীরা তা পালন করবে। আমাদের গন্তব্য হয় জেলখানা অথবা মহাসড়ক।
আরও পড়ুন: পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিন: প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী
রিজভী বলেন, ‘এই দুইয়ের মাঝখানে কিছুই নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা আমাদের জেলে নিয়ে যেতে পারে, নানাভাবে আঘাত করতে পারে, নির্যাতন করতে পারে, কিন্তু আমরা সবকিছু মেনে নেব এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এই যাত্রা অব্যাহত থাকবে।’
ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের সদস্য সচিব আল-আমিনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাদা পোশাকের সদস্যরা তুলে নিয়েছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘আমাদের একজন ছাত্রনেতা কোথায় আছেন বা কেমন আছে তা আমরা জানি না। শেখ হাসিনার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও তাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো প্রতিদিন এসব কাজ করছে।’
তিনি বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা যাতে আন্দোলন চালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য সামগ্রিক নৈরাজ্যকর ও ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে, কিন্তু সরকার ব্যর্থ হবে।
গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে উন্নত মজুরির দাবিতে আন্দোলনরত গার্মেন্টস শ্রমিকদের উপর পুলিশের হামলায় এক নারী শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী।
তিনি দাবি করেন, দেশব্যাপী অবরোধের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫১৫ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ১৮টি মামলায় ১ হাজার ৯২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ‘২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের পর থেকে এ পর্যন্ত ১২ হাজার ৪৪৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার ও ৫৭৯টি মামলা করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এত নিপীড়ন, নির্যাতন ও নাশকতার মধ্যে দুই দিনের অবরোধের প্রথম দিন চলছে। এই কর্মসূচি সফল হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সারাদেশে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন চলাচল করেনি। কারণ তারা যাত্রী পায়নি। তার মানে আমাদের কর্মসূচির প্রতি মানুষের সমর্থন রয়েছে।’
আরও পড়ুন: রাজপথে বিরোধী দলের ব্যাপক উপস্থিতি সরকারকে বিভ্রান্ত করছে: রিজভী
টিক্কা ও নিয়াজির চরিত্রে অভিনয় করছেন কাদের: রিজভী
গণতন্ত্র রক্ষার জন্য নয়, ধ্বংসের জন্য লড়াই করছে বিএনপি: কাদের
বিএনপি গণতন্ত্র ধ্বংসের জন্য লড়াই করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শান্তি চায়। অস্থিরতা থাকলে বিএনপি এখন পর্যন্ত একটি সমাবেশও করতে পারত না। তবে ২৮ অক্টোবর শান্তি বিঘ্নিত করতে চাইলে এবারও ছাড় দেওয়া হবে না।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় ওবায়দুল কাদের বলেন এসব কথা বলেন।
আগামী ২৮ অক্টোবর শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ সফল করতে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: সাইবার স্পেসে গুজব ছড়ালে কেউ রেহাই পাবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
বৈঠকে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্দিষ্ট তারিখ নিয়ে কোনো আন্দোলন হয় না। তারিখ ঘোষণা করে বিশ্বের কোনো দেশেই কোনো আন্দোলন সফল হয়নি। এমনকি আমাদের দেশেও '৬৯ ও '৯০-এর আন্দোলন কোনো তারিখ ঘোষণা করে হয়নি। ভুল পথে চলার কারণে এবার বিএনপির আন্দোলন গর্তে পতিত হবে।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ শান্তি চায়। আমরা কেন ক্ষমতায় অস্থিরতা চাই? কিন্তু এখন যদি কেউ কোনো অস্থিরতা সৃষ্টি করতে আসে, তাহলে আমরা তা দেখিয়ে দেব, কাকে অস্থিরতা বলা হয়।’
দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'আমি ২৮ অক্টোবর উত্তাল সমুদ্র দেখতে চাই। আমি উত্তাল বঙ্গোপসাগরের গর্জন শুনতে চাই। আমরা অনেক সহ্য করেছি। সহনশীলতার একটা সীমা আছে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ‘তারা ৪০টি দলের সঙ্গে সমাবেশ করবে। স্বপ্ন তো স্বপ্ন। বিএনপির সেই স্বপ্নে রঙিন বেলুন চুপসে যাবে। একটু অপেক্ষা করুন।’
মন্ত্রী বলেন, ক্ষমতাসীন দলে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যে ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন তা বিস্ময়কর।
সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, ড. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: রাস্তা দখল ও অবরোধের হুমকি দিয়ে বিএনপির ইচ্ছা পূরণ হবে না: কাদের
দেশে গণতন্ত্র না থাকায় মন্দিরে হামলা হয়: বরকত উল্লাহ বুলু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, দেশে গণতন্ত্র না থাকার কারণে মন্দিরে হামলা হয়।
শনিবার (২১ অক্টোবর) দুপুর ১২টারর দিকে কুমিল্লায় হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বিক্ষোভ মিছিলে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলায় আহতদের দেখতে এসে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: সামনে শেখ হাসিনার অনুমতি নিয়ে নামাজ পড়তে হবে: বরকত উল্লাহ বুলু
তিনি আরও বলেন, এ ছাড়া তারা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়, ভোটের জন্য তাদের কারো কাছে যেতে হয় না। তাই ভুল লোক নির্বাচিত হয়।
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, তাদের কোনো জবাবদিহি নেই। মন্দিরে হামলা করে তারা (আওয়ামী লীগ), আর মামলা হয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
নগরীর ঠাকুরপাড়া রামকৃষ্ণ আশ্রমে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় ও আহতদের দেখতে আসে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল।
প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন- বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বিজন কান্তি সরকার, কেন্দ্রীয় বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক এবং কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস, কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উদবাতুল বারী আবু, সদস্যসচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব জসিম উদ্দিন।এ ছাড়া সেখানে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা ছিলেন।
আরও পড়ুন: এক দফা আন্দোলন: বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর ইউনিটের গণমিছিল
সর্বজনীন পেনশন প্রকল্প জনগণের টাকা চুরির আরেকটি কৌশল: ফখরুল
গণতন্ত্র ও মানবাধিকার চর্চা করে যুক্তরাষ্ট্র একটি সমৃদ্ধ অঞ্চলের পথ প্রশস্ত করেছে: হাস
রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ‘প্রতিযোগিতা’ দেশগুলোকে কোনো কিছু বেছে নিতে বাধ্য করার জন্য নয়; বরং এটি সম্মান, সমৃদ্ধি ও অংশীদারিত্বের উপর ভিত্তি করে একটি বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের প্রস্তাব করা।
তিনি বলেন, ‘আমার আশা এই অঞ্চলে আমাদের প্রতিযোগিতার অর্থ হলো আমরা যা করতে চাই স্পষ্টভাবে আমাদের সেসব লক্ষ্য ফুটিয়ে তুলতে এবং ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য দৃষ্টিভঙ্গি বিনিময়ের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতিকে পুনরুজ্জীবিত করবে।’
সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক এবং বে অব বেঙ্গল কনভারসেশনের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান পরিচালিত ‘ডিফাইনিং কম্পিটিশন ইন দ্য ইন্দো-প্যাসিফিক’- শীর্ষক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে দেওয়া বক্তৃতায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার জেরেমি ব্রুর; বাংলাদেশে কানাডিয়ান হাইকমিশনার লিলি নিকোলস এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুকও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, স্থিতিশীলতা, সমৃদ্ধি ও অন্তর্ভুক্তির তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে তারা ‘একসঙ্গে’ আছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে ‘অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ’ নির্বাচনে সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র: পিটার হাস
গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও উন্মুক্ত সংলাপের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি অঞ্চলের পথ প্রশস্ত করছে যেটি শুধু টিকে থাকে না, বরং উন্নতি লাভ করে।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমাদের সার্বভৌম বৈদেশিক নীতির বিশেষাধিকারের স্বীকৃতির মাধ্যমে, আমরা এমন অংশীদারিত্ব গড়ে তুলি যা পারস্পরিক শ্রদ্ধা, আকাঙ্ক্ষা এবং বিশেষ করে এই প্যানেলে থাকা আমাদের বন্ধুদের ক্ষেত্রে, অংশীদারিত্ব ও জোট যা সীমানা অতিক্রম করে এবং একটি স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ ইন্দো-প্যাসিফিকের সম্মিলিত প্রতিশ্রুতির ক্ষেত্রে আমাদের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে অবশ্যই সবার জন্য শান্তি ও সমৃদ্ধির এলাকা হতে হবে। এই অঞ্চলের জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হলো একটি মুক্ত, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অঞ্চল।’
তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে আন্তরিকভাবে একমত।
ভবিষ্যতের বিষয়ে হাস বলেছেন, সেই স্বাধীনতা, সেই উন্মুক্ততা রক্ষা করা সবার স্বার্থে। ‘এবং আমি সেই বৈচিত্র্যের সঙ্গে যুক্ত করতে চাই, যা ইন্দো-প্যাসিফিককে শুধুমাত্র এই অঞ্চলের নাগরিকদের জন্য নয়, সমগ্র বিশ্বের জন্য উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির একটি গতিশীল ইঞ্জিনে পরিণত করবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে প্রাক-নির্বাচন মূল্যায়ন ও পর্যবেক্ষণ দল পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র: পিটার হাস
তিনি বলেন, তারা সম্মিলিতভাবে একটি নিয়মতান্ত্রিক আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার, শক্তিশালী অর্থনৈতিক একত্রীকরণ এবং মেরিটাইম কমন্সের পবিত্রতা রক্ষার জন্য দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি বলেন, ‘আমরা এই লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য একে অপরের সঙ্গে এবং এই অঞ্চলের অন্যদের সঙ্গে আমাদের জোট ও অংশীদারিত্বের উপর নির্ভর করতে সম্মিলিতভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটি আমাদের পদ্ধতির একেবারে মূল বিষয়।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা ‘মুক্ত, উন্মুক্ত, শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক’ এর বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গিকে সাধুবাদ জানায়।
হাস বলেন, এ ছাড়াও আমরা জোর দিচ্ছি, আমরা যেমন একটি মুক্ত ও উন্মুক্ত অঞ্চল খুঁজছি, তেমনি বিশ্বাস করি আমরা এই নীতিগুলো নিজেদের মধ্যে প্রয়োগ করলেই আমরা সত্যিকার অর্থে এই দৃষ্টিভঙ্গিগুলো পূরণ করতে পারি।’
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের মূল চালিকাশক্তি অভিন্ন নীতি: পিটার হাস
জলবায়ু পরিবর্তন কী গণতন্ত্রের জন্য হুমকি?
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অস্থিতিশীলতা ভবিষ্যতে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হতে পারে, যদিও প্রতিনিধিত্বমূলক সরকারগুলো সমাধান প্রদানের জন্য সর্বোত্তম সজ্জিত - বার্ষিক সম্মেলনে একত্রিত বিশেষজ্ঞরা এমনটাই যুক্তি দিয়েছেন।
জাতিসংঘ সমর্থিত অ্যাথেন্স ডেমোক্রেসি ফোরাম শুক্রবার গ্রিসের রাজধানীতে শেষ হয়েছে। এই ফোরামে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা ও চরম আবহাওয়া গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতার ওপর কী প্রভাব ফেলতে পারে সে দিকে মনোনিবেশ করা হয়।
প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির জলবায়ু বিজ্ঞানী মাইকেল ওপেনহাইমার সতর্ক করে দিয়ে বলেন, বৈশ্বিক কর্তৃপক্ষ আবহাওয়াজনিত বারংবার দুর্যোগের কারণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি রক্ষণাবেক্ষণে খুব ধীর গতিতে কাজ করছে।
ভূবিজ্ঞান ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক অধ্যাপক এবং প্রিন্সটনের সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড দ্য এনভায়রনমেন্টের পরিচালক ওপেনহাইমার বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পুনরুদ্ধারের ব্যবধান সংকুচিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ভারতের বিশাল কৌশলগত গুরুত্বের তুলনায় কানাডার স্বার্থ ফিকে: বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বিবিসি
তিনি বলেন, ‘আমরা এমন একটি পরিস্থিতিতে আছি যেখানে সরকারগুলো যে পরিষেবা সরবরাহ করে এবং অন্যতম প্রধান পরিষেবাগুলোর মধ্যে একটি হলো জীবন ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সুরক্ষা যেভাবে হওয়া উচিৎ সেভাবে ঘটছে না। এবং আমার মতে, এটি গণতন্ত্রের ওপর ঘটতে যাওয়া আরেকটি চাপ।’
৩ দিনব্যাপী অ্যাথেন্স ইভেন্টটিতে শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাবিদদের পাশাপাশি রাজনীতিবিদ ও কমিউনিটি প্রকল্প পরিচালকরা একত্রিত হয়েছিলেন এবং এটি এমন সময় অনুষ্ঠিত হয় যখন দেশটি সবচেয়ে খারাপ দাবানলের শিকার হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরে নধ্য গ্রিসে ব্যাপক বন্যা মোকাবিলায় জাতীয় কর্তৃপক্ষ লড়াই করেছে।
ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক তাপমাত্রা ও বিশ্বের কিছু অংশে অভিবাসনের ত্বরান্বিত হওয়ার কারণে উদ্বেগ অব্যাহত রয়েছে, আগামী দশকগুলোতে সরকারগুলো ক্রমবর্ধমান দুর্লভ সম্পদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে ও নাগরিক অস্থিরতা মোকাবিলায় আরও স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্কের অংশ নিউ আমেরিকা পলিটিক্যাল রিফর্ম প্রোগ্রামের ফেলো অ্যান ফ্লোরিনি বলেন, দীর্ঘমেয়াদে এটি একটি খারাপ ধারণা হবে।
আরও পড়ুন: স্বাধীন ও স্থিতিশীল ইন্দো-প্যাসিফিকের আহ্বান ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের সেনাপ্রধানের
তিনি বলেন, ‘স্বৈরতন্ত্র জলবায়ু জরুরি অবস্থার সবচেয়ে খারাপ সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া, কারণ আপনার যা প্রয়োজন তা হলো প্রচুর স্থানীয় ক্ষমতায়ন।’
ফ্লোরিনি বলেন, ‘তারা একটি বড় সৌর বিদ্যুৎ শিল্প গড়ে তুলতে খুব ভালো হতে পারে… কিন্তু একটি স্বৈরতন্ত্রের আগামী কয়েক প্রজন্মের জন্য জলবায়ু জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তথ্য ব্যবস্থা ও নমনীয়তা এবং স্থিতিস্থাপকতা থাকতে চলেছে এই ধারণাটি আমার কাছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে হাস্যকর।’
তিনি জোর দেব, কেবলমাত্র উন্মুক্ত সমাজগুলো তাদের সুদূরপ্রসারী পরিবেশগত প্রভাবের কারণে প্রয়োজনীয় শক্তি, কৃষি ও পানি ব্যবস্থায় পদ্ধতিগত রূপান্তরকে উৎসাহিত করতে পারে।
সুইডেনের উপসালা ইউনিভার্সিটির আর্থ সায়েন্সেস বিভাগের জ্যেষ্ঠ গবেষক ড্যানিয়েল লিন্ডভাল বলেন, গণতান্ত্রিক সরকারগুলোকে স্থানীয় পর্যায়ে জনগণের সঙ্গে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সুবিধাগুলো ভাগ করে নেওয়া দরকার।
তিনি বলেন, ‘আপনি যদি একটি বায়ু ফার্ম তৈরি করেন এবং সুবিধা ও মুনাফার কিছু অংশ স্থানীয় সম্প্রদায়ের কাছে ফিরে দেব, তবে আপনার কাছে তারা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার পরিবর্তে এটিকে সমর্থন করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জ্বালানির স্বাধীনতার সমস্ত সুবিধা তখন পুতিন (রাশিয়া) ও সৌদি আরবের মতো স্বৈরাচারী শাসকদের কাছ থেকে ক্ষমতার পালাবদল হবে।’
আরও পড়ুন: পর্যটনশিল্পকে অবশ্যই নিরাপদ করতে হবে: জাতিসংঘ মহাসচিব