গণতন্ত্র
গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা শান্তিপূর্ণ সমাজের ভিত্তি: গুতেরেস
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা হলো স্থিতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও শান্তিপূর্ণ সমাজের ভিত্তি।
তিনি বলেন, এগুলোই স্বাধীনতা, টেকসই উন্নয়ন অগ্রগতি এবং প্রত্যেক ব্যক্তির মর্যাদা ও অধিকার রক্ষা করে।
১৫ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘এই গুরুত্বপূর্ণ দিনে আসুন আমরা এক প্রজন্মের সঙ্গে অন্য প্রজন্ম হাত মেলাই এবং সবার জন্য আরও ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব গড়ে তুলতে এক হয়ে কাজ করি।’
আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসে গুতেরেস বলেন, তারা সমাজের প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করে এবং উত্তেজনা ও অশান্তির এই সময় যেসব হুমকির সম্মুখীন হয় তা চিহ্নিত করে।
আরও পড়ুন: মানবপাচার মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার লঙ্ঘন: আন্তোনিও গুতেরেস
জাতিসংঘ প্রধান বলেন, ভুল তথ্য ও কুতথ্য জনসাধারণের আলোচনাকে বিষাক্ত করছে, সম্প্রদায়গুলোকে মেরুকরণ করছে এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আস্থা নষ্ট করছে।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য 'পরবর্তী প্রজন্মের ক্ষমতায়ন', যা বর্তমান ও ভবিষ্যতে গণতন্ত্র রক্ষায় শিশু ও তরুণদের অপরিহার্য ভূমিকার ওপর আলোকপাত করে।
গুতেরেস বলেন, ‘শিশু ও তরুণদের কথা শোনাই যথেষ্ট নয়। আমাদের অবশ্যই শিক্ষা, দক্ষতা নির্মাণ ও আজীবন শেখার ক্ষেত্রে ব্যাপক বিনিয়োগের মাধ্যমে তাদের সমর্থন করতে হবে।’
তিনি বলেন, তাদের অবশ্যই মানবাধিকার রক্ষা করতে হবে এবং লিঙ্গ সমতাকে এগিয়ে নিতে হবে।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই প্রতিটি স্তরে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তরুণদের অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ প্রসারিত করতে হবে।’
আরও পড়ুন: আসুন গর্ব করে ঘোষণা করি, আমরা নারীবাদী: গুতেরেস
বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করলেন আন্তোনিও গুতেরেস
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান সম্ভব: ফখরুল
বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধান বিষয়টিকে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বলে অভিহিত করেছেন।
রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান নিয়ে এক সেমিনারে বক্তৃতায় ফখরুল এ যুক্তি দেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আসা একটি নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন।
কারণ এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করবে।
তিনি বলেন, এই সংকট (গণতন্ত্রের অভাব) শুধু বিএনপিকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছে না, এটি এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা। এর চেয়ে বড় সংকট এর আগে আর আসেনি। আমরা কথা বলতে পারি না, বিচার, নিরাপত্তা, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা পাই না... এটা তো চলতে পারে না।
নিউইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পত্রিকাটি স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে যে কীভাবে বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ধীরে ধীরে, গোপনে ও নীরবে হরণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে গেলেন মির্জা ফখরুল
ফখরুল বলেন, এই সেমিনারের মাধ্যমে আমি গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে সকল আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশ্ব সম্প্রদায় ও জনগণকে বাংলাদেশের জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করছি।
বিএনপি এদিন রাজধানীর একটি হোটেলে ‘রোহিঙ্গা সংকট ও প্রত্যাবাসন কৌশল’- শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে।
যেখানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, বিএনপি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হলে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহায়তায় সমস্যার সমাধান করবে।
তিনি বলেন, জনগণের ম্যান্ডেট না থাকায় আওয়ামী লীগ সরকার রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে আওয়াজ তুলতে পারে না। তাই এই সরকারকে অপসারণ না করলে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হবে না।
এই বিএনপি নেতা বলেন, মিয়ানমার থেকে আসা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে বারবার সহিংসতা ও গুলি চালানোর ঘটনায় উদ্বিগ্ন হওয়ায় তারা রোহিঙ্গা ইস্যুতে এই সেমিনারের আয়োজন করেছেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা উদ্বিগ্ন যে সেখান থেকে উগ্রবাদের উত্থান ঘটছে কিংবা দেশে আবার সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে কি না।
তার মূল বক্তব্যে খসরু বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে চলমান মানবিক ট্র্যাজেডি টেকসই এবং অর্থবহ পদক্ষেপের দাবি রাখে। গণহত্যার ছয় বছর অতিবাহিত হলেও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে প্রত্যাবাসনে অগ্রগতির অভাব গভীরভাবে উদ্বেগজনক ও অগ্রহণযোগ্য। সত্য এই যে আজ পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গা শরণার্থীকেও প্রত্যাবাসন করা যায়নি।
তিনি বলেন, ২০১৭ সালে একটি ব্যর্থ প্রত্যাবাসন চুক্তির পর মিয়ানমার এখন একটি নতুন চুক্তির অধীনে ১ হাজার ১৭৬ রোহিঙ্গাকে গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে।
মিয়ানমারের জান্তা দাবি করে, মংডু শহরের মডেল গ্রামগুলো একটি পাইলট প্রত্যাবাসন প্রকল্পের অংশ।
খসরু বলেন, আমরা এই নতুন প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টাকে একটি ফাঁদ হিসেবে দেখছি, যা শুধুমাত্র বিশ্বের ভুলে যাওয়া সংখ্যালঘুদের একটি নিপীড়নকে স্থায়ী করবে।
তিনি উল্লেখ করেন, বিএনপি ৭০-এর দশকের শেষের দিকে এবং ৯০-এর দশকের শুরুতে দুইবার রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা করেছে। উভয় সময়েই আমাদের দল রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের সামরিক শাসনের ওপর উল্লেখযোগ্য কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে সফল হয়েছে।
খসরু বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় আসলে রোহিঙ্গা সংকট সমাধান করা আমাদের জাতীয় ও বৈদেশিক নীতির সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হবে। এই জটিল সংকটের স্থায়ী সমাধানের দিকে নজর দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনের চেষ্টা করবেন না: মির্জা ফখরুল
মির্জা ফখরুল সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরেছেন
বিএনপির হাতে গণতন্ত্র নিরাপদ নয়: কাদের
বিএনপির হাতে দেশের নিরাপত্তা ও গণতন্ত্র নিরাপদ নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘ডেঙ্গু থেকে জনগণের জীবন নিরাপদ নয়। তেমনি বিএনপির হাতে দেশের নিরাপত্তা ও গণতন্ত্র নিরাপদ নয়। তাই আমাদের এই দুই প্রধান বিপজ্জনক শত্রু ডেঙ্গু ও বিএনপিকে প্রতিরোধ করতে হবে।’
শনিবার (১৯ আগস্ট) রাজধানীর ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা উপকমিটির আয়োজনে ডেঙ্গু প্রতিরোধে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচিতে বক্তব্য দেওয়ার সময় ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
এ ছাড়া তিনি সারাদেশে ডেঙ্গু প্রতিরোধ কর্মসূচি পালনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: আমন্ত্রণ ছাড়াই কিছু বিদেশি আসেন: কাদের
এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, বিএনপি কবে নিষেধাজ্ঞা ও ভিসা নীতি দেবে সেই আশায় যুক্তরাষ্ট্রের দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু, তাদের (বিএনপি) চোখের পাওয়ার কমে গেছে এবং এখন বিএনপি কিছুই দেখতে পাচ্ছে না।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের দিকে তাকিয়ে আছে বলেও জানান তিনি।
প্রাণ গোপাল দত্তের সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও অধ্যাপক, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
পরে ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধ ও এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন, নয়তো পাকিস্তানে যান: ওবায়দুল কাদের
বিএনপি নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধীরা এখনও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করছে: কাদের
বিএনপি আশা করে বাংলাদেশিদের গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষাকে মূল্য দেবে ভারত: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভারত বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান জানাবে।
শনিবার (১৯ আগস্ট) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয় তাহলে তা দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের নিরাপত্তার জন্য ভালো হবে না।
আমরা অবশ্যই আশা করি, ‘ভারত বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান জানাবে।’ পাশাপাশি তারা সব দলের অংশগ্রহণে এবং সবার কল্যাণে দেশে একটি সত্যিকারের নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য তাদের পূর্ণ সমর্থন প্রকাশ করবে।
হাসিনা সরকারকে অস্থিতিশীল করার বিভিন্ন পদক্ষেপের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভারতের বার্তার বিষয়ে এক প্রতিবেদক তার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ফখরুল বলেন, 'ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে আমরাও দেখেছি। যদি রিপোর্টটি সত্য হয়, তবে এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।’
আরও পড়ুন: সামনে শেখ হাসিনার অনুমতি নিয়ে নামাজ পড়তে হবে: বরকত উল্লাহ বুলু
তিনি অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যই বাংলাদেশের বর্তমান সব সংকটের মূল কারণ।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, গত ১৫ বছর ধরে রাষ্ট্র কর্তৃক বাংলাদেশের জনগণের উপর অবর্ণনীয় নির্যাতন চালানো হয়েছে।
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে একটি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস সৃষ্টি হয়েছে এবং বলা যেতে পারে দেশে গভীর সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, যদি এই খবরটি সত্য হয় তবে এটি ভারতের মতো একটি গণতান্ত্রিক দেশের কাছ থেকে অপ্রত্যাশিত, যারা সর্বদা গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখার কথা বলে।
ফখরুল বলেন, 'আমরা কখনোই এ ধরনের কথা বলব না, কিন্তু আমরা বলতে বাধ্য হচ্ছি, যদি খবরটি সত্য হয়, তাহলে তারা (ভারত) বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ও তাদের শক্তির উপর তাদের দলের আস্থা রয়েছে। ‘আমি মনে করি, বাংলাদেশের মানুষ কী চায়, ভারত তা বোঝার চেষ্টা করবে। ভারত যদি বাংলাদেশের জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়, তবে তা হবে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং আমরা মনে করি এটি বাংলাদেশের জনগণের জন্য এবং এই অঞ্চলের জনগণের জন্যও ভালো হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো মৌলবাদী দলের ক্ষমতায় আসার কোনো আশঙ্কা নেই। বাংলাদেশের ৫২ বছরের ইতিহাসে কোনো মৌলবাদী দল কখনো ক্ষমতায় আসতে পারেনি। বরং তাদের শক্তি কমে গেছে।’
এর আগে বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে জিয়ার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ফখরুল।
ডয়চে ভেলে ও আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাসিনা সরকারকে অস্থিতিশীল করতে যুক্তরাষ্ট্র যেভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা প্রতিবেশি দেশ হিসেবে ভারতের সামগ্রিক নিরাপত্তা এবং সামগ্রিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ার জন্য ইতিবাচক নয়।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমেরিকার বর্তমান ভূমিকা নিয়ে ভারত সন্তুষ্ট নয় এবং ওয়াশিংটনকেও এই বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সর্বজনীন পেনশন প্রকল্প জনগণের টাকা চুরির আরেকটি কৌশল: ফখরুল
গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ে ‘বিদেশিদের ভূমিকা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দীপু মনি
বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিয়ে বিদেশিদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীরা যখন ক্ষমতায় আসল, তাদের যখন বিচার হল না, তখন মানবাধিকার ক্ষুন্ন হয়নি? তারা তারা তখন গণতন্ত্র নিয়ে কিছু বলেনি। এখন আমাদের নানা রকম ছবক দেয়।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে শিশুপুত্র রাসেলসহ বঙ্গবন্ধুকে করা হলো নৃসংশভাবে, তখন মানবাধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে কি না সে প্রশ্নও তোলেন মন্ত্রী। ১৯৮১ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা ফিরে এসে নিহত বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের জন্য সেই বাড়িটিতে একটু দোয়া পড়তে চেয়েছিল, তাকে তা করতে এবং বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তখনও মানবাধিকার ক্ষুন্ন হয়নি! সেসব ঘটনা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: ন্যাশনাল স্টিম অলিম্পিয়াডের উদ্বোধন করবেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি
মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) দুপুরে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কীর্তির উপর আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানে হানাদার বাহিনীর যে ৯৫ হাজার আত্মসমর্পন করেছিলন, সে আত্মসমর্পনকারীদের মধ্যে বাঙালি নামধারী কিছু কুলাঙ্গার পাকিস্তানি সেনা অফিসার ছিল। এই রকিবুল হুদা ছিল তার মধ্যে একজন।
তিনি বলেন, অতএব সে বঙ্গবন্ধু কন্যাকে হত্যার চেস্টা করবে এটাই স্বাভাবিক। বঙ্গবন্ধু কন্যাকে হত্যার জন্য কমপক্ষে ২১ বার চেষ্টা করা হয়েছে।
দীপু মনি আরও বলেন, যখন ২০০১ সালে অব্যাহতভাবে মাসের পর মাস সারা বাংলাদেশকে বিএনপি জামায়াতের সন্ত্রাসীরা মৃত্যুপুরীতে পরিণত করেছিল। যখন মহিমা, ফাহিমা, পুর্নিমা, লতিফা তাদেরকে একের পর এক ধর্ষণ এবং গণধর্ষণ করা হয়েছিল, তখন কোথায় ছিল মানবাধিকার।
আরও পড়ুন: এইচএসসি পরীক্ষা যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে: দীপু মনি
নির্বাচনের আগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ সম্ভব নয়: দীপু মনি
গণতন্ত্র ছাড়া মুক্ত গণমাধ্যম সম্ভব নয়: ফখরুল
পাচারকারী ও দুর্নীতিবাজদের রক্ষায় কাজ করা গণমাধ্যমগুলো করপোরেট মিডিয়ায় পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্র ছাড়া মুক্ত গণমাধ্যম সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেশে অনেক মিডিয়া দেখছি, কিন্তু তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না… দেশে কৌশলে করপোরেট মিডিয়া তৈরি করা হয়েছে, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোই সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেলের মালিক।’
সোমবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে 'বাংলাদেশের গণমাধ্যম: দুঃশাসনের দেড় দশক' শীর্ষক এক সেমিনারে বিএনপির এই নেতা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘করপোরেট মিডিয়া মালিকরা সরকার ও ব্যাংকের সুযোগ-সুবিধা ভোগের পাশাপাশি ব্যবসা করছেন। ব্যাংক থেকে টাকা পাচারকারীদের রক্ষা করতে এসব গণমাধ্যম করপোরেশনে পরিণত হয়েছে।’
আরও পড়ুন: এবার অবশ্যই শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন হবে: ফখরুল
তিনি বলেন, অদ্ভূত বিষয় হলো, এখন একটি করপোরেট গণমাধ্যম আরেকটি গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে এবং এক ব্যবসায়ী আরেক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার করছে। তারা সবাই ফ্যাসিবাদের সঙ্গে সম্পর্কিত।
ফখরুল বলেন, ‘মূল কথা হচ্ছে গণতন্ত্র ছাড়া গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় এবং স্বাধীনতা না থাকলে গণমাধ্যম সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না।’
তিনি বলেন, সর্বব্যাপী ফ্যাসিবাদ আমাদের দেশকে গ্রাস করেছে এবং ফ্যাসিবাদের প্রধান অস্ত্র হচ্ছে গণমাধ্যমকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্টদের প্রয়োজন জনগণকে ন্যূনতম গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা। আর এজন্য প্রয়োজন গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা, যা বর্তমান সরকার গত দেড় দশক ধরে সূক্ষ্মভাবে করে আসছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫২ বছর পর এখন আমাদের বলতে হচ্ছে, দেশে গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই।’
তিনি বলেন, এমনকি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় স্পষ্টভাবে বলছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই, এখানে নির্বাচন হয় না। এখানে মানুষের অধিকার ও মানবাধিকারকে হরণ করা হচ্ছে।
ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে দলের নেতা-কর্মীরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: মানুষ বিএনপিকে 'হিন্দুবিরোধী' বলে বিশ্বাস করে না: ফখরুল
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা ও ক্ষমতা মজবুত করার পুরোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এর অংশ হিসেবে তারা সংবিধান পরিবর্তন করে সংসদ, নির্বাচন ব্যবস্থা, প্রশাসন ও বিচার বিভাগের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
সরকার পুরো সমাজকে কলুষিত করে রাজনীতি ও দেশের সব অর্জনকে ধ্বংস করেছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা।
ফখরুল বলেন, ‘আসুন আমরা সবাই অন্ধকার ঠেলে আলোর দিকে এগিয়ে যাই। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে, আমাদের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার রক্ষায় ১৯৭১ ও ৯০-এর দশকের মতো সাহস ও শক্তি নিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তায় নামতে হবে।’
তিনি বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সংসদ ভেঙে দিয়ে আওয়ামী লীগকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করতে হবে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে খেলতে ইসি ‘অচেনা’ দুটি দলকে নিবন্ধন দিয়েছে: ফখরুল
সামরিক শাসক ও মৌলবাদীদের কাছ থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে আ. লীগ: জয়
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ বলেছেন, সরকার সামরিক শাসক এবং মৌলবাদী শক্তির মোকাবিলা করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছে আওয়ামী লীগ।
বৃহস্পতিবার জয় তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও পেস্ট করে এসব কথা লেখেন। ওই ভিডিওতে বলা হয়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের পরও বাংলাদেশকে গণতন্ত্রের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর পাকিস্তানপন্থী স্বৈরশাসনের পথ সুগম হয়।
ভিডিওতে বলা হয়, মোস্তাক, জিয়া ও এরশাদের সরকার আইয়ুব খান ও ইয়াহিয়া খানের পথ অনুসরণ করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে এবং নিজেদের দুঃশাসনকে বৈধতা দিয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার তীব্র বিরোধিতাকারী এবং মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দোসর জামায়াতে ইসলামীকে রাজনৈতিক পটভূমিতে প্রত্যাবর্তনের পথ প্রশস্ত করেছে তারা।
আরও পড়ুন: খোলা মাঠ থাকতেও কেন সড়কে সমাবেশ: বিএনপিকে জয়ের প্রশ্ন
ভিডিওতে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় আওয়ামী লীগের ভূমিকা তুলে ধরে বলা হয়েছে, ১৯৫৮ সালে যখন স্বৈরাচারের ভয় সব রাজনৈতিক দলকে দমিয়ে রাখে এবং রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করে, তখন বঙ্গবন্ধুই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যান। ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর তাকে তার নিজের বাসভবনে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি কারণ তখন সামরিক স্বৈরশাসকেরা দেশ চালাচ্ছিল।
১৯৮৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন সামরিক শাসক তাকে গৃহবন্দী করে রাখেন, যা ১৯৮৫, ১৯৮৬, ১৯৮৭, ১৯৮৯ এবং ১৯৯০ সালের পরবর্তী বছরগুলোতে পুনরাবৃত্তি হয়েছিল। ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি চট্টগ্রাম কোর্ট ভবনের সামনে পুলিশ শেখ হাসিনা ও তার সমর্থকদের লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করে।
বিএনপির রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের গণতন্ত্রপন্থী দৃষ্টিভঙ্গির বিপরীতে ভিডিওতে বলা হয়, খালেদা জিয়া তার ছেলে তারেক রহমানের বিচার বন্ধ করে তাকে বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় তিনি নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
ভিডিওটিতে আরও বলা হয়, বিএনপি ও জামায়াত ২০১৩ ও ২০১৪ সালে গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলতে ব্যাপক নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের গণতন্ত্র হত্যার কলঙ্কজনক অধ্যায় জিয়ার হ্যাঁ/না গণভোট: জয়
বিজয় দিবসে আ.লীগের প্রত্যয়: ২০৪১ সাল নাগাদ পরিপূর্ণ উন্নত, স্মার্ট বাংলাদেশ
দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে গণতন্ত্র বজায় রাখতে হবে: শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার আওয়ামী লীগ সরকার দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতা চায়।
তিনি বলেন, আমরা চাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকুক। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চলমান থাকায় আমরা দেশের উন্নয়ন করতে পেরেছি এবং উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছি।’
বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের জন্য নতুন অফিস উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক ধারা দীর্ঘ সংগ্রামের ফল এবং সকলকে মনে রাখতে হবে এটা রাতারাতি ঘটেনি।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের উন্নয়নের পথে বারবার বাধার মুখে পড়েছে।
তিনি বলেন, ‘২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর এখন পর্যন্ত আমরা সরকারে রয়েছি। আমরা আমাদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে পেরেছি। এর ফলে পুরো দেশ বদলে গেছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সাল থেকে একটি স্থিতিশীল গণতন্ত্র বিরাজ করায় বাংলাদেশ ব্যাপক উন্নয়ন করেছে।
অনুষ্ঠানে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীও বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বে নিজেদের স্বতন্ত্রতা বজায় রেখে বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ ঘটান: প্রধানমন্ত্রী
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের অফিসের কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে নতুন অফিস কম্পাউন্ডে স্থানান্তর করা হবে।
এছাড়া আগামী অক্টোবরের মধ্যে সেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন, কর্ম ও সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের একটি আর্কাইভ নির্মাণ করা হবে বলেও জানান স্পিকার।
এর আগে বিকালে ফিতা কেটে জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের নবনির্মিত কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে স্পিকার, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, ডেপুটি স্পিকার, চিফ হুইপ ও হুইপ, সংসদ সদস্য ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী নবনির্মিত কার্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন।
নতুন কার্যালয় প্রাঙ্গণে পৌঁছালে স্পিকার প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
আরও পড়ুন: আ. লীগ সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রমাণ দিয়েছে: ৫ সিটি মেয়রের শপথ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই আমার লক্ষ্য: টুঙ্গিপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী
স্বাধীন ও দায়িত্বশীল গণমাধ্যম গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলছেন, স্বাধীন, স্বচ্ছ ও দায়িত্বশীল গণমাধ্যম অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য সহায়ক এবং গণতান্ত্রিক সমাজের জন্য অপরিহার্য।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজকে গণমাধ্যমের স্বাধীন বিকাশ, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানের এক অনন্য উদাহরণ।
মঙ্গলবার (২৩ মে) দুপুরে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে ১৮তম এশিয়া মিডিয়া সামিট উদ্বোধনী দিনে ‘অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে গণমাধ্যমের ভূমিকা’- শীর্ষক মন্ত্রী পর্যায়ের অধিবেশনে বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এশিয়া-প্যাসিফিক ইনস্টিটিউট ফর ব্রডকাস্টিং ডেভেলপমেন্ট (এআইবিডি) আয়োজিত সম্মেলনের এ অধিবেশনে কম্বোডিয়ার তথ্যমন্ত্রী খিউ কানহারিত, মিয়ানমারের তথ্যমন্ত্রী মং মং ওন, সামোয়ার যোগাযোগ তথ্য ও প্রযুক্তিমন্ত্রী তোলুপ পৌমুলিনুকু ওনেসেমো এবং ফিজির সহকারী মন্ত্রী সাকিউসা তুবুনা বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: ৭ মে শেখ হাসিনা দেশে না ফিরলে গণতন্ত্রও ফিরতো না: তথ্যমন্ত্রী
তিন দিনব্যাপী এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য অর্থনীতিকে আরও টেকসই করতে গণমামধ্যমের ভূমিকা।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারি ও ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী এবং দেশে দেশে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
তিনি বলেন, আমাদের গণমাধ্যম এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ এবং নীতি দেশের নাগরিকদের কাছে তুলে ধরে মানুষকে সচেতন রেখেছে। দেশে বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করেছে।
একই সঙ্গে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প নিয়ে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন উদ্যোক্তাদের উৎসাহ দিয়েছে, আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে।
গণমাধ্যম যেমন বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতে এবং চিন্তা ও উদ্ভাবনী পরিকল্পনাকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে সহায়ক ভূমিকা রাখে তেমনি সরকারের দায়িত্বশীলতাও বৃদ্ধি করে উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, সে কারণে বাংলাদেশ সরকার প্রায় দেড় হাজার পত্রিকা এবং কয়েক ডজন টেলিভিশন ও রেডিওকে লাইসেন্স দিয়েছে যাতে এই গণমাধ্যম বস্তুনিষ্ঠ তথ্য দিয়ে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক বিষয়ে মানুষকে সচেতন করে দেশের অর্থনীতি পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশ এবং এশীয় প্রশান্ত অঞ্চল তথা বিশ্বের সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়তে সরকার এবং গণমাধ্যম হাতে হাত রেখে কাজ করবে।
আরও পড়ুন: হত্যা-খুনের রাজনীতি থেকে বিএনপি বেরিয়ে আসতে পারেনি: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপির আন্দোলনের ঘোষণা কাগুজে বাঘ ছাড়া কিছু নয়: তথ্যমন্ত্রী
৭ মে শেখ হাসিনা দেশে না ফিরলে গণতন্ত্রও ফিরতো না: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘২০০৭ সালের ৭ মে যদি সমস্ত রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এবং জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে শেখ হাসিনা দেশে না ফিরতেন, তাহলে বাংলাদেশে গণতন্ত্রও ফিরতো না।’
তিনি বলেন, ১৯৮১ সালে ১৭ মে তিনি প্রথম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশে পদার্পণ করেছিলেন। আজ ৭ মে, তার বিদেশ থেকে দ্বিতীয় দফা প্রত্যাবর্তনের দিন।
রবিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বাংলার স্থপতি’ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা এবং গ্রন্থকার অ্যালভীন দীলিপ বাগচীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা উন্নয়নশীল দেশের ক্ষেত্রে উদাহরণ: তথ্যমন্ত্রী
বাংলাদেশ খ্রিস্টান যুব কল্যাণ সমিতির সভাপতি ইলারিশ আর গোমেজের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সাবেক সচিব মো. শহীদ উল্লাহ খন্দকার, বিশপ থিওটোনিয়াস গোমেজ প্রমুখ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেন।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, আজ ৭ মে একটি ঐতিহাসিক দিন। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে; আজকের দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ, গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, প্রথমে তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছিলো, এরপর তার দেশে আসার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো। বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেছিলেন যে আমার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে, আমি ঢাকায় গিয়ে মামলা লড়বো। আমি তখন তার বিশেষ সহকারী হিসেবে কাজ করতাম।
বিমানবন্দরে আমি নিজেও গিয়েছিলাম। বিমানবন্দরে যাওয়ার সময় কোনো মানুষ দেখিনি, বিমানবন্দর থেকে তিনি আসছিলেন তখন রাস্তার দুই ধার ছাপিয়ে হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ মানুষ চলে আসলো শেখ হাসিনাকে বরণ করার জন্য।
হাছান বলেন, বঙ্গবন্ধু যেমন অসীম সাহসী ছিলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যাও তেমনি অসীম সাহসী। তার সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে তিনি প্রচণ্ড সংকটের মধ্যে ধৈর্য্য হারান না, যেমন বঙ্গবন্ধু হারাননি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে ২৫ মার্চ যখন গ্রেপ্তার করা হয় তখন শুধু সেনাবাহিনী গিয়েছিলো তা নয়, তাকে গ্রেপ্তারের আগে চারপাশে বিভিন্ন বিস্ফোরণ ঘটানো হয়, ধানমন্ডি এলাকায় গোলাগুলি করা হয়। তিনি সে সময় ধৈর্য্য হারাননি।
বঙ্গবন্ধু বরং পাকিস্তানিদের বলেছিলেন, তোমাদের এতো গোলাগুলি-বিস্ফোরণ ঘটানো, মানুষকে কষ্ট দেওয়ার প্রয়োজন ছিলো না। আমার কাছে আসলেই তো আমাকে নিয়ে যেতে পারতে। তাকে গ্রেপ্তারের পূর্ব মুহূর্তে তিনি স্বাধীনতা ঘোষণা করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাও প্রচণ্ড সংকটে ধৈর্য্য হারাননি।
তিনি বলেন, বিবিসির অনলাইন জরিপে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বিবেচিত হয়েছিলেন। এর কারণ বিশ্লেষণে বলতে হয়, বাঙালি জাতিসত্ত্বার উন্মেষের পাঁচ হাজার বছর ইতিহাসে বাঙালি কখনো স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারে নাই। বাংলা ভাষাভাষীর কিছু অঞ্চল নিয়ে কোনো কোনো সময় স্বাধীন রাজা ছিলো কিন্তু কোনো স্বাধীন রাষ্ট্র কখনো প্রতিষ্ঠিত হয় নাই। কিন্তু বাঙালির স্বাধীনতার আকাঙ্খা ছিলো।
তিনি আরও বলেন, তিতুমীর, সূর্যসেন, নেতাজী সুভাষ বসু অনেকেই স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছে, বিদ্রোহ করেছে, কিন্তু স্বাধীনতা আসেনি। বঙ্গবন্ধুই সেই নেতা যিনি বাঙালি জাতিকে ধীরে ধীরে, পলে পলে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার লক্ষ্যে মনন তৈরি করে চূড়ান্তভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন এবং তার সেই ঘোষণার মধ্য দিয়ে একটি জাতি রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতাকে ছিনিয়ে এনেছে, জয় বাংলা শ্লোগানে মৃত্যুকে আলিঙ্গণ করেছে। বিশ্ব ইতিহাসে এমন উদাহরণ বিরল। এ জন্যই ইতিহাসের পাতায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব, জাতির পিতা মুজিব তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি।
তথ্যমন্ত্রী এ সময় ‘বাংলার স্থপতি’ বইয়ের গ্রন্থকার অ্যালভীন দীলিপ বাগচীকে অভিনন্দন জানান এবং বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ওপর বিশ্লেষণধর্মী ইতিহাসভিত্তিক এই গ্রন্থ রচনার জন্য দীলিপ বাগচী এবং তার পরিবারকে আন্তরিক ধন্যবাদ এবং আগামীতে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে গ্রন্থ রচনার জন্য তাকে অনুরোধ জানাই।
সেই সঙ্গে ড. হাছান বলেন, এখন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিভিন্ন জন প্রচুর বই লেখে, অনেক ক্ষেত্রে লেখার প্রতিযোগিতাও তৈরি হয়েছে এবং সেটি করতে গিয়ে অনেক ইতিহাস বিকৃতি হচ্ছে এবং বইয়ের মান রক্ষিত হচ্ছে না। এ বিষয়ে আমি মনে করি বঙ্গবন্ধুর ওপর দেশে-বিদেশে যে সমস্ত বই রচিত হয়েছে সেগুলো নির্দিষ্ট মানদণ্ড মেনে চলা প্রয়োজন এবং বইতে কোনোভাবেই যেন ন্যূনতম ইতিহাস বিকৃতি না ঘটে সে ব্যাপারে সচেতন থাকা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: শিক্ষামন্ত্রীর মায়ের মৃত্যুতে তথ্যমন্ত্রীর শোক
বাংলাদেশ নিয়ে বিশ্বের প্রশংসায় বিএনপি নেতাদের মাথা খারাপ: তথ্যমন্ত্রী