রাজনীতি
কুমিল্লায় আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ২৫
কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলায় বুধবার সকালে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী আব্দুর রহিম জানান, আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এসময় পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর ও একটি মোটরসাইকেল সাইকেল পুড়িয়ে দেয়া হয়।
তিনি বলেন, বেলা ১১টার দিকে নাঙ্গলকোট সদরের লোটাস চত্বরের কাছে বিএনপি নেতাকর্মীরা সমাবেশ করতে জড়ো হন। একই সময় নাঙ্গলকোটের রেলস্টেশন এলাকায় অবস্থান নেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় অন্তত ২৫ জন আহত হয়।
আরও পড়ুন: আ’লীগ-বিএনপি পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি: পেকুয়ায় ১৪৪ ধারা জারি
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে।
আরও পড়ুন: খুলনায় বিএনপির অফিস ভাঙচুর, নেতাদের বাড়িতে হামলা
এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।
একই স্থানে আ.লীগ-বিএনপির সমাবেশ, রাঙামাটিতে ১৪৪ ধারা জারি
রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলায় বুধবার একই স্থানে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ একই স্থানে সমাবেশের ডাক দেয়ায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই আদেশ জারি করা হয়।
বুধবার জুরাছড়ি উপজেলায় প্রতিটি পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তারা কঠোর অবস্থানে থেকে যাতে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় এই ব্যাপারে তৎপর রয়েছে।
আরও পড়ুন: আ’লীগ-বিএনপি পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি: পেকুয়ায় ১৪৪ ধারা জারি
এ ব্যাপরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিতেন্দ্র কুমার নাথ জানান, জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, পরিবহন ভাড়া এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপির ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জুরাছড়ি উপজেলা বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বুধবার সকালে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে।
আরও পড়ুন: খুলনায় বিএনপির অফিস ভাঙচুর, নেতাদের বাড়িতে হামলা
এদিকে একইদিনে একইস্থানে ক্ষমতাসীন দল উপজেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের উদ্যোগে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদ ও বিএনপি নেতা তারেক জিয়ার ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল এবং সমাবেশ করবে বলে জানা গেছে। তাই একই সময়ে দেশের দুটি বৃহত্তর রাজনৈতিক দলের সমাবেশের কারণে উপজেলার স্বাভাবিক শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় বুধবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত উপজেলা সদর এবং এর আশেপাশের এলাকায় সকল প্রকার মিছিল-মিটিং, সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে বিএনপির প্রতিবাদ সভার মঞ্চ ভাঙচুরের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে
পাশাপাশি চার বা তার অধিক ব্যক্তি একত্রে চলাচল এবং আইনশৃঙ্খলা পরিপন্থী সব অবৈধ কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকবে। কেউ যদি আইনশৃঙ্খলা অবনতি, নাশকতা বা ফৌজদারী অপরাধ করার চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
গুমের ঘটনা জাতিসংঘের অধীনে তদন্ত করুন: সরকারকে ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যদি জাতিসংঘের অধীনে জোরপূর্বক গুমের ঘটনার তদন্ত না করেন, তাহলে তাদেরকে সেসকল অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আজ আমরা গুমের শিকার পরিবারের সদস্য, সন্তানদের পাশে দাঁড়িয়ে জোরপূর্বক গুম করার ঘটনাগুলোর জাতিসংঘের অধীনে নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে দ্রুত একটি তদন্ত দাবি করছি।’
‘অন্যথায়, অতীতে বলপূর্বক গুম ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানদের মতো বিচারের মুখোমুখি করা হবে।’
মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে এক মানববন্ধন করে। এতে ভুক্তভোগীদের পরিবারের
সদস্য, সন্তান এবং অনেক বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা যোগ দেন।
ফখরুল অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। ‘তারা ভয়ের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। গুম ও হত্যার হুমকি দিয়ে দেশ চালাচ্ছে।’
জোরপূর্বক গুম করা মানুষদের উদ্ধার করে তাদের পরিবার ও সন্তানদের মুখে হাসি ফোটাতে দলীয় নেতাকর্মীদের আরও বেশি ত্যাগ করা ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘সরকার আমাদের চলমান আন্দোলনকে ভয় পেয়ে সীমাহীন বল প্রয়োগ শুরু করেছে। মানুষ জেগে উঠেছে, কোন প্রকার দমননীতি এই সময় কাজে আসবে না।’
তীব্র আন্দোলনের মাধ্যমে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের দুঃশাসনের কবল থেকে দেশকে বাঁচাতে জনগণকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।
জোরপূর্বক গুমের শিকার পরিবারগুলোর প্রতি সংহতি প্রকাশ করে ফখরুল বলেন, ‘আপনারা একা নন, সমগ্র দেশের মানুষ আপনাদের সঙ্গে আছে, তারা আপনার জন্য লড়াই চালিয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: ইউএনকপে আইজিপি’র নাম অন্তর্ভুক্তি: ফখরুলের সমালোচনা
অন্যের সহায়তায় যারা ক্ষমতায় আছে তারা বাংলাদেশকে শাসন করতে পারে না: ফখরুল
শ্রীলঙ্কার মতো সংকট বাংলাদেশে হবে না: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কখনও শ্রীলঙ্কার মতো হবে না। কারণ আমাদের সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের উন্নয়ন করছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে অনেক মিথ্যা অভিযোগ করে লাভ নাই। বাংলাদেশ কখনও শ্রীলঙ্কা হবে না, হতে দেয়া হবে না।’
মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের উদ্যোগে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপরিবারকে হত্যা, শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে তার সরকার পরিকল্পিতভাবে বাজেট প্রণয়ন করেছে।
তিনি বলেন, প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্প অর্থনৈতিকভাবে দেশকে লাভবান করতে গ্রহণ করা হয়েছে।
পড়ুন:আ.লীগ নেতা নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যেকটি উন্নয়নমূলক পরিকল্পনা গ্রহণের আগে আমরা চিন্তা করেছি দেশ ও দেশের মানুষ এটি থেকে কিভাবে লাভবান হতে পারবে। একটি বড় প্রকল্প থেকে মোটা অংকের কমিশন নিতে সর্বোপরি আমরা কখনও চিন্তা করিনি।’ ‘শেখ হাসিনা কোন প্রকল্প থেকে এভাবে (টাকা কামাই করতে) চিন্তা করেনি,’ তিনি যোগ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সময়মতো বিদেশি বিনিয়োগের ব্যয় পরিশোধ করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ধারের টাকায় ঘি খাই না। আমাদের ঋণের পরিমাণ খুব বেশি নয় যে আমরা কোন প্রকার ঋণের ফাঁদে পড়ে যাবো।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন। এতে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর উত্তর আ.লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস উত্তরের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর আ.লীগের সহ-সভাপতি সাদেক খান এমপি এবং এমএ কাদের খান, সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি শহীদ সেরনিয়াবাত এবং নূরুল আমিন রুহুল এমপি এবং সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে কুশিয়ারা নদীর পানি বণ্টন সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই: প্রতিমন্ত্রী
সোনাগাজীতে বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশ কর্মকর্তাসহ আহত ৭
ফেনীর সোনাগাজীতে বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধেছে। এতে জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (সোনাগাজী সার্কেল) মাশকুর রহমান ও সেকেন্ড অফিসার আমির উদ্দিন দোলন আহত হয়েছেন। তাদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় আরও পাঁচজন আহত হন। সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে এ সংঘর্ষ বাঁধে।
এ সময় পুলিশ অন্তত ৪০ রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। এ ঘটনায় দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। বিএনপি কর্মীদের ছোড়া ইট-পাটকেলের আঘাতে আহত হয় তারা ।
সোনাগাজী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালেদ হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, হামলার ঘটনায় আহত জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপারকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
বিকেল ৪টা থেকে দুপক্ষ মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কমপক্ষে ৪০ রাউন্ড টিয়ালশেল নিক্ষেপ করেছে। বিএনপির দাবি, তাদের পাঁচ কর্মী আহত হয়েছে। পুলিশ এখন পর্যন্ত দুজনকে আটক করেছে বলেও জানান ওসি।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার সোনাগাজীতে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে জেলা বিএনপি। বিকালে ভৈরব রাস্তার মাথায় বিএনপির সমাবেশ শেষে নেতাকর্মীরা সোনাগাজীর জিরো পয়েন্টের দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে অগ্রসর হন। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। ইটের আঘাতে আহত হন সার্কেল এএসপি মাশকুর। তার মাথা ও তলপেটে আঘাত লেগেছে।
বিএনপি অবস্থান নিয়ে কর্মসূচি করছে শরতলীর ভৈরব রাস্তার মাথায়। অপরদিকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছে শহরের জিরো পয়েন্টে। আর আগে সকাল থেকেই থেমে থেমে চলছিল সংঘর্ষ।
এদিকে বিএনপি তাদের ৫ কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টু।
সকাল থেকে পৌর শহরের বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ রাখতে দেখা গেছে। সড়কে মানুষের চলাচলও রয়েছে অন্যান্য দিনের তুলনায় কম। এদিকে পৌর শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সোনাগাজীতে বিএনপি ও ছাত্রলীগের মধ্যে কর্মসূচি নিয়ে এখনও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পৌর শহরের টহল জোরদার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: আ’লীগ-বিএনপি পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি: পেকুয়ায় ১৪৪ ধারা জারি
বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ: ৪০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ৩ মামলা
কুষ্টিয়ায় শোক সভায় আ. লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ২০
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার গোস্বামী দুর্গাপুর ইউনিয়নে শোক সভা চলাকালে আ.লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১০ জনকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রবিবার বিকালে গোস্বামী দুর্গাপুরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত শোকসভায় এ হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা। পুলিশ ও তার সামনেই দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা হামলা ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
আগস্ট মাস উপলক্ষে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আয়োজনে পর্যায়ক্রমে শোক সভার কর্মসূচি পালন করে আসছে। সে হিসেবে রবিবার গোস্বামী দুর্গাপুর ইউনিয়নে শোক সভার নির্ধারিত দিন ছিল।
জানা গেছে, আসরের নামাজের পর গোস্বামী দুর্গাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজনে শংকরদিয়া বাজারের ওপর শোকসভার আয়োজন করা হয়। সভায় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতা প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনা সভায় যোগ দেন। তার সঙ্গে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলামসহ অন্যান্য নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশের সামনেই দু’পক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হন। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত আওয়ামীলীগ নেতারা বারবার থামানোর চেষ্টা করলেও নেতা-কর্মীরা একে অন্যের ওপর হামলা করতে থাকে। ভাংচুর করা হয় বসার চেয়ার। সংঘর্ষ চলাকালে শোকসভায় আসা লোকজন ভয়ে পালিয়ে যান। প্রায় ২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে চলা সংঘর্ষে দুই পক্ষের কমপক্ষে ২০ জনের বেশি আহত হন। আহতদের মধ্যে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান ঝেন্টুকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। এছাড়া আহতদের মধ্যে কমপক্ষে ১০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দবির উদ্দিন জানান, ‘ বিকালে অতিথিরা আসার পর শোক সভা শুরু হয়। আমি দুই হাজার মানুষের জন্য খাবার রান্না করি। বর্তমান চেয়ারম্যান লাল্টুর রহমান শতাধিক লোকজন নিয়ে মিছিল নিয়ে আসেন। তাদের অনেকের কাছে দেশীয় অস্ত্র ছিল। আমরা আগে থেকে বুঝতে পারিনি। তারা এসেই আমার সমর্থক ও সাধারণ নেতাকর্মীর ওপর হামলা করে। কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। আমার কয়েকজন কর্মীর অবস্থা আশংকাজনক।
হামলার বিষয়টি অস্বীকার করে বর্তমান চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা লাল্টু রহমান দাবি করেন তার লোকজনের ওপর দবিরের লোকজন হামলা চালিয়েছে। এতে পাঁচ থেকে ছয়জন আহত হয়েছেন। আমার তিন ভাইয়ের মাথা ফেটে গেছে। নেতাদের সামনেই হামলা করেছে। আমরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছি মাত্র।
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘ সভা শুরু হওয়ার পর স্থানীয় দুটি পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়। আমাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হলে সভা শেষ করা হয়। বিষয়টি আমাদের জন্য বিব্রতকর। এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আননুর যায়েদ বলেন, ‘ আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
আরও পড়ুন: আ’লীগ-বিএনপি পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি: পেকুয়ায় ১৪৪ ধারা জারি
খুলনায় বিএনপির অফিস ভাঙচুর, নেতাদের বাড়িতে হামলা
নোয়াখালীতে বিএনপির প্রতিবাদ সভার মঞ্চ ভাঙচুরের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে
বরিশালে বিএনপির ১২ নেতা-কর্মী আটক
চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের ওপর হামলার অভিযোগে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা
আ’লীগ-বিএনপি পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি: পেকুয়ায় ১৪৪ ধারা জারি
কক্সবাজারের পেকুয়ায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি কারণে শান্তি ভঙ্গের আশঙ্কায় রবিবার ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূর্বিতা চাকমা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এছাড়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও শান্তিপূর্ণ বজায় রাখতে উপজেলায় মাইকিং করা হয়।
উপজেলার সিকদার পাড়া স্টেডিয়াম থেকে চৌমুহনী হয়ে পেকুয়া আলহাজ্বব কবির চৌধুরী বাজার পর্যন্ত সকল ধরনের সভা সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করে প্রসাশন।
আরও পড়ুন: খুলনায় বিএনপির অফিস ভাঙচুর, নেতাদের বাড়িতে হামলা
বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, রবিবার পেকুয়া উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে একটি বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়। অপরদিকে, একইদিন পেকুয়া চৌমুহনী চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে একটি শোক সমাবেশের ডাক দেয়া হয়। এই প্রেক্ষিতে ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ৯ টার দিকে মহড়া দিতে পেকুয়া চৌমুহনী এলাকায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও স্টেডিয়াম এলাকায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিলে পুলিশ সবাইকে সরিয়ে দেয়।
পরে রাত ১২টার দিকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রবিবার ১৪৪ ধারা জারি করে মাইকিং করা হয় বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে বিএনপির প্রতিবাদ সভার মঞ্চ ভাঙচুরের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূর্বিতা চাকমা বলেন, 'রবিবার দুই দলের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে রবিবার সকাল ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সকল ধরনের রাজনৈতিক সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়।
খুলনায় বিএনপির অফিস ভাঙচুর, নেতাদের বাড়িতে হামলা
খুলনা নগরীর খালিশপুরে সমাবেশকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সময় হামলাকারীরা বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতার বাড়িতে হামলা, দলের খুলনা অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে বলে অভিযোগ করেছে দলটি।
জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এই সহিংসতার জন্য ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীদের দায়ী করেছে।
আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে বিএনপির প্রতিবাদ সভার মঞ্চ ভাঙচুরের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে
শনিবার রাতে খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এসএম শফিকুল আলম মনা এক প্রেস ব্রিফিংয়ে অভিযোগ করেন, খালিশপুর বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর ও বিভিন্ন ওয়ার্ড অফিসে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। হামলাকারীরা বিএনপি নেতাদের বাড়িও ভাঙচুর করে।
তিনি জানান, হামলায় বিএনপির প্রায় ৫০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম জানান, শনিবার বিকালে বৈকালী মোড়ে একই স্থানে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে পুলিশ। তবে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে খালিশপুরে বিএনপির নেতাকর্মীরা মিছিল করে।
আরও পড়ুন: বরিশালে বিএনপির ১২ নেতা-কর্মী আটক
তিনি জানান, বিএনপির মিছিল এগিয়ে গেলে আওয়ামী লীগ নেতা কর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
নোয়াখালীতে বিএনপির প্রতিবাদ সভার মঞ্চ ভাঙচুরের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে
নোয়াখালীর চাটখিলে বিএনপির ডাকা প্রতিবাদ সভার মঞ্চ, চেয়ার ভাঙচুর করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় চাটখিল উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু হানিফ ও সদস্য সচিব শাহজাহান রানাসহ ৩০ জন নেতাকর্মী আহত হওয়ার দাবি করছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।
শুক্রবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে চাটখিল পৌরসভার চাটখিল আলিয়া মাদরাসা প্রাঙ্গণে ভাঙচুরের এই ঘটনা ঘটে।
কেন্দ্রীয় বিএনপি যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, জ্বালানি তেল এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে চাটখিল পৌরসভার এলাকার আলিয়া মাদরাসার সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বিকাল ৪টার দিকে এই সভার জন্য সকাল থেকে প্যান্ডেল ও মঞ্চ বানানো হয়। জুম্মার নামাজের শেষে হঠাৎ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা কর্মী এসে হামলা চালিয়ে মঞ্চ ও চেয়ার ভাঙচুর করেন। প্রতিবাদ সভায় আসার পথে বিভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়ে আমাদের ৩০ জন নেতাকর্মীকে আহত করা হয়।
আরও পড়ুন: বরিশালে বিএনপির ১২ নেতা-কর্মী আটক
নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন বলেন, গত তিন দিন ধরে নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলায় বিএনপি প্রতিবাদ সভা করেছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিএনপির প্রতিবাদ সভা পণ্ড করার কোনো নির্দেশনা নেই। তবে চাটখিল উপজেলা বিএনপির মধ্যে দুটি গ্রুপ রয়েছে। তারা নিজেদের মধ্যে কোন্দলের কারণে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবাদ সভাস্থলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কোনো নেতা-কর্মী হামলা করেনি বলে তিনি দাবি করেন।
এব্যাপারে চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.গিয়াস উদ্দিন বলেন, এই রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি।
আ.লীগ সভাপতির কার্যালয়ে সোহেল তাজ
প্রায় শতাধিক সমর্থক নিয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয় পরিদর্শন করেন। বৃহস্পতিবার রাতে সেখানে গিয়ে তিনি দলটির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। এ ঘটনার ফলে পুনরায় তার রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার জল্পনা আরও বেড়েছে।
ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোহেল তাজ রাজনীতিতে তার সক্রিয় হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।
তিনি এখনও রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে সোহেল তাজ বলেন, ‘আমার জন্ম একটি রাজনৈতিক পরিবারে। আওয়ামী লীগ আমার রক্তে মিশে আছে। আমি কখনোই রাজনীতির বাইরে ছিলাম না। কিছুদিন ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত ছিলাম। আজ পার্টি অফিসে এসেছি, আমি এখানে নিয়মিত আসার চেষ্টা করব।’
সোহেল তাজ জানান, তিনি দলের জন্য কাজ করতে প্রস্তুত।
আরও পড়ুন: ‘হটলাইন কমান্ডো’ নিয়ে আসছেন সোহেল তাজ
তিনি বলেন, ‘২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় আমি যেমন ছিলাম, এখনও তেমনই থাকব।’
সোহেল তাজ বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে। তিনি ২০০১ সালের গাজীপুর-৪ আসন থেকে প্রথমবারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে একই আসন থেকে আবারও নির্বাচিত হলে পরবর্তীতে শেখ হাসিনা তাকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বানান। তবে এর পাঁচ মাস পরে তিনি পদত্যাগ করেন।
২০১২ সালের এপ্রিলে আবারও তিনি এমপি পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর থেকেই সোহেল তাজ সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন।
আরও পড়ুন: সোহেল তাজের অপহৃত ভাগনে উদ্ধার