ঋণ
নভেম্বরে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পেতে পারে বাংলাদেশ
চলতি বছরের নভেম্বরের মধ্যে আইএমএফ থেকে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে ৪ দশামিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ।
সোমবার (২৮ আগস্ট) অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউএনবিকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কর্মকর্তারা বেশ কয়েকবার ঢাকা সফর করেছেন এবং বিভিন্ন খাতে সন্তোষজনক অর্জন পেয়েছেন। ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি যথাসময়ে ছেড়ে দেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন: আইএমএফ’র হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশের রিজার্ভ ২৩.৫৭ বিলিয়ন ডলার
ইতোমধ্যে, বাংলাদেশ কিছু খাতে সংস্কার করেছে এবং আইএমএফের প্রয়োজনীয় শর্তের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সর্বশেষ তথ্য হালনাগাদ করেছে। তাই ঋণের পরবর্তী কিস্তি সময়মতো পাওয়ার বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আইএমএফের নির্ধারিত মানদণ্ডের নিচে নেমে এসেছে। এ কারণে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইএমএফের সাবেক অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর।
তবে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি যথাসময়ে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সম্প্রতি আইএমএফের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল একাধিক বৈঠক করেছে। ঋণের দ্বিতীয় ধাপ যথাসময়ে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে ওই বৈঠকে আশ্বস্ত করেছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল।
গত ফেব্রুয়ারিতে আইএমএফের ঋণের প্রথম কিস্তি হিসেবে বাংলাদেশ পেয়েছে ৪৭০.৬২ মিলিয়ন ডলার।
২০২৬ সাল পর্যন্ত সাড়ে তিন বছরে সাত কিস্তিতে আইএমএফের পুরো ঋণ পাওয়ার কথা রয়েছে বাংলাদেশের।
আরও পড়ুন: আইএমএফের শর্তের ভিত্তিতে বাজেট করা হয়নি: অর্থমন্ত্রী
দক্ষ জনশক্তি গড়তে বাংলাদেশকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি
শ্রকিমদের দক্ষতা বাড়াতে, আরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং রেমিট্যান্স বাড়াতে ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
সোমবার (২৮ আগস্ট) রাজধানীর অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) বাংলাদেশ সরকার ও এডিবির মধ্যে একটি ঋণ চুক্তি সই হয়।
এ সময় ইআরডির সচিব শরিফা খান এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত এডিবির ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর জিয়াংবাও নিং চুক্তিতে সই করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে ২ প্রকল্পে ৪৯০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ দেবে এডিবি
বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় ২০২৪-২০৪১ মেয়াদে 'স্কিলস ফর ইন্ডাস্ট্রি কম্পিটিটিভনেস অ্যান্ড ইনোভেশন প্রোগ্রাম' শীর্ষক এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ।
দক্ষ জনশক্তি বিদেশে পাঠানো মাধ্যমে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি এবং শ্রমিকদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কারিগরি ও তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেওয়াই এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য।
প্রসঙ্গত, অর্থ বিভাগ তহবিল ব্যবস্থাপনা এবং এই কর্মসূচির সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবে।
১৯৭৩ সালে এডিবির সদস্য হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ বহুপাক্ষিক উন্নয়নের অংশীদার এ প্রতিষ্ঠান। এ পর্যন্ত বাংলাদেশকে এডিবির মোট ঋণের পরিমাণ ২৯ হাজার ৬৬৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং অনুদান হিসেবে দিয়েছে ৫৫৩ দশমিক ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
প্রধানত বিদ্যুৎ, জ্বালানি, স্থানীয় সরকার, পরিবহন, শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য, পানিসম্পদ, সুশাসন ও আর্থিক খাতে উন্নয়ন সহায়তা দেয় এডিবি।
আরও পড়ুন: যশোরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিশোধন কেন্দ্র পরিদর্শন করলেন এডিবি’র নির্বাহী পরিচালক
বাংলাদেশ থেকে ঋণ নেওয়া ২০০ মিলিয়নের মধ্যে ৫০ মিলিয়ন ডলার শোধ করেছে শ্রীলঙ্কা
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক সংকটের সময় বাংলাদেশের থেকে নেওয়া ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণের মধ্যে ৫০ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে শ্রীলঙ্কা।
সোমবার (২১ আগস্ট) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক ইউএনবিকে বলেন, ‘শ্রীলঙ্কাকে দেওয়া ২০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণের মধ্যে আমরা প্রথম কিস্তিতে ৫০ মিলিয়ন ডলার ফেরত পেয়েছি। এই মাসের শেষের দিকে তাদের আরেকটি কিস্তি দেওয়ার কথা। আমরা আশা করছি তারা এই বছরের মধ্যে পুরো ঋণ পরিশোধ করবে।’
শ্রীলঙ্কা ২০২১ সালে কারেন্সি সোয়াপ সিস্টেমের অধীনে তিন মাসের মধ্যে পরিশোধের শর্তে ঋণ নিয়েছিল।
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে শ্রীলঙ্কায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপন
কিন্তু তারা সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয় এবং দ্বীপরাষ্ট্রটি অভ্যন্তরীণ আর্থিক অস্থিরতার মধ্যে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার কারণে ঋণ পরিশোধের সময় বাড়াতে চায়। বাংলাদেশ কয়েক দফা সময়সীমা বাড়িয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশ ২০২১ সালের ১৯ আগস্ট প্রথম ধাপে ৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে। এরপর সেই বছরের ৩০ অক্টোবর দ্বিতীয় দফায় ১০০ মিলিয়ন ডলার এবং নভেম্বরে ৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়া হয়।
চুক্তি অনুযায়ী গত বছরের আগস্ট, অক্টোবর ও নভেম্বরের মধ্যে সুদসহ টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সময়মতো ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয় দেশটি।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় বিক্ষোভকারীদের ওপর বলপ্রয়োগ না করতে প্রেসিডেন্টের প্রতি আহ্বান
শ্রীলঙ্কার নতুন প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসের মিত্র দিনেশ গুণবর্ধন
রপ্তানি ঋণের সুদের হার কমিয়ে ৯ শতাংশ নির্ধারণ
রপ্তানি খাতে প্রি-শিপমেন্ট ঋণে সুদের হার ১ শতাংশ কমিয়ে ৯ দশমিক ১০ শতাংশ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি)।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রপ্তানি খাতের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ বিবেচনা করে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধান ও নীতি বিভাগ একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণের সুদের হার নির্ধারণের জন্য 'স্মার্ট' সিস্টেমে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ মুনাফা যোগ করে সুদের হার নির্ধারণ করা হবে।
আরও পড়ুন: ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলার সতর্কতা জারি
সুদ গণনার নতুন কাঠামো ১ জুলাই বাস্তবায়ন করেছে বিবি। এই ব্যবস্থায়, ব্যাংকগুলো 'স্মার্ট' (১৮২ দিনের ট্রেজারি বিলের স্মার্ট ছয়-মাসের চলমান গড় হার) -এর সঙ্গে সর্বাধিক ৩ শতাংশ যোগ করে ঋণের সুদ গণনা করতে পারে। তবে প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণের জন্য তা কমিয়ে ২ শতাংশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ১৮২ দিনের ট্রেজারি বিলের গড় হার ৭ দশমিক ১০ শতাংশ। এতে ব্যাংকগুলো প্রি-শিপমেন্ট রপ্তানি ঋণের ২ শতাংশ যোগ করলে ঋণের সর্বোচ্চ সুদের হার হবে ৯ দশমিক ১০ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই নির্দেশনা ব্যাংকগুলোতে পাঠিয়ে অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে বলেছে।
আরও পড়ুন: ব্যাংক পরিচালক হতে পারবেন এক পরিবারের সর্বোচ্চ ৩ জন: বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশের মাথাপিছু ঋণ ৯৫ হাজার টাকা: বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ প্রায় ১৬ দশমিক ১৪ লাখ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিবি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৫ হাজার ১৯ টাকা। কিন্তু আয় এখনও মাথাপিছু ঋণের চেয়ে বেশি। দেশের জনগণের বর্তমান বার্ষিক মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৭৯৩ ডলার; যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় ঋণ ও জিডিপি অনুপাতের দিক থেকে বাংলাদেশ এখনও ভালো অবস্থানে। কিন্তু ঋণের সুদ পরিশোধ করতে জাতীয় বাজেটের বড় একটি অংশ ব্যয় হয়।
আরও পড়ুন: সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সংস্কার উদ্যোগের পরিকল্পনা করছে সরকার
তিনি বলেন, আয় বেশি হলেও রাজস্ব সংগ্রহ কম হওয়ার কারণে ঋণের ঝুঁকি এখন মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে এবং বাণিজ্য ঘাটতির কারণে সরবরাহ শৃঙ্খলা ব্যাহত হওয়ায় সরকারের ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা কমে যাচ্ছে।
ইউএনবিকে তিনি বলেন, ‘ঋণ ও জিডিপির অনুপাত বিবেচনায় এটি এখনও ঝুঁকিপূর্ণ নয়। তবে একটি সমস্যা হলো রাজস্ব আয়ে ধীরগতি এবং দেশের সর্বনিম্ন কর ও জিডিপির অনুপাত।’
তিনি আরও বলেন, ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ঝুঁকির বিষয়গুলো হলো- বৈদেশিক মুদ্রার সংকট, অলস ঋণের উচ্চহার, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা এবং অভ্যন্তরীণ রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাওয়ার প্রবণতা।
আরও পড়ুন: জুন মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ৯.৭৪ শতাংশে নেমে এসেছে: বিবিএস
বাংলাদেশ সরকারকে ৫৫ কোটি টাকা দিয়ে মেট্রোরেলের ঋণের প্রথম কিস্তি পরিশোধ
প্রথম কিস্তিতে বাংলাদেশ সরকারকে প্রায় ৫৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা দিয়ে এমআরটি লাইন-৬ নির্মাণের জন্য নেওয়া ঋণ পরিশোধ শুরু হয়েছে।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঋণের প্রথম কিস্তি হিসেবে ৫৫ কোটি ২৯ লাখ ৭৬ হাজার ৬০ টাকার চেক গ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকের শুরুতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার হাতে চেক হস্তান্তর করেন।
এছাড়া পদ্মা সেতুর ঋণের তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তিও ওই সময় পরিশোধ করা হয়।
আরও পড়ুন: অক্টোবরে ঢাকা মেট্রোরেলের আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী: কাদের
পদ্মাসেতু ঋণের তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তি হিসেবে ওবায়দুল কাদেরের কাছ থেকে ৩১৬ কোটি ২ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩ টাকার চেক গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকের পর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘পদ্মাসেতু ঋণের ৩য় ও ৪র্থ কিস্তি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ৩১৬ কোটি টাকা এবং মেট্রোরেল ঋণের ১ম কিস্তি হিসেবে ৫৫ কোটি টাকা জমা দেওয়া হয়েছে।’
২০২৩ সালের ৫ এপ্রিল পদ্মাসেতু ঋণের প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তি সরকারকে পরিশোধ করা হয়।
আরও পড়ুন: আজ থেকে ১২ ঘণ্টা চলবে মেট্রোরেল
৩১ মে থেকে সকাল ৮টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে ঢাকা মেট্রোরেল
অর্থনীতি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থায় নেই, দেশ চালাতে সর্বত্র বৈদেশিক ঋণ খুঁজছে সরকার: মোশাররফ
বিএনপির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, সরকার যখন দেশ চালাতে এদিক-ওদিক বিদেশি ঋণ খুঁজছে, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনীতি একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাস্তবতা আড়াল করার চেষ্টা করছেন।
তিনি বলেন, ‘জেনেভায় গিয়ে আমাদের দখলদার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে আমাদের দেশের অর্থনীতি একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে... এভাবে ফাঁপা কথা দিয়ে সত্যকে বেশিদিন চেপে রাখা যাবে না। বাংলাদেশের অর্থনীতি যেমন আমরা জানি, গোটা বিশ্বও তা জানে।’
এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা বলেন, ডলারের অভাবে আমদানি বন্ধ থাকলেও সরকার দেশ পরিচালনার জন্য বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক ঋণ সংস্থার কাছে বিদেশি ঋণ ‘ভিক্ষা’ করছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ বলেন, সরকার বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার জন্য জ্বালানি ও বিদ্যুত আমদানি করতে না পারায় মানুষ ভয়াবহ লোডশেডিং-এর সম্মুখীন হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির অবস্থা সবাই জানে। মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে, ডলারের সংকট তীব্র হচ্ছে, পণ্যের দাম ক্রমাগত বাড়ছে, এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকটের মধ্যে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স কমে যাচ্ছে। এগুলোই বাস্তবতা। তাহলে প্রধানমন্ত্রী কীভাবে দাবি করবেন বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে আছে?
বৃহস্পতিবার জেনেভায় ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সাল থেকে দেশে গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতার ধারাবাহিকতার কারণে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে অর্থনৈতিকভাবে একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি মিডিয়া সেল।
১৯৭৪ সালের ১৬ জুন তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার তার অনুগত চারটি পত্রিকা ছাড়া সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দেয়। সংবাদপত্র বন্ধের স্মরণে একদল সাংবাদিক দিনটিকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন।
মোশাররফ বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকট থেকে মুক্তি পেতে শক্তিশালী আন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করার বিকল্প নেই।
আরও পড়ুন: স্যাংশনে আ.লীগ সরকারের হাঁটু কাপতে শুরু করেছে: ফখরুল
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকলে বাংলাদেশে কখনোই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। বাংলাদেশের জনগণও বিশ্বাস করে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে অতীতে যেমন সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না।
বিএনপি নেতা আরও বলেন, ক্ষমতাসীন দল যতই চেষ্টা করুক না কেন তাদের দল এবার সরকারের কোনো ফাঁদে পা দেবে না। ‘আমাদের অবশ্যই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই শাসককে অপসারণ করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতা হারানোর ভয়ে ঘাবড়ে যাওয়ায় ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বিভিন্ন বিষয়ে পরস্পরবিরোধী মন্তব্য করছেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে বিএনপিকে মাঠছাড়া করার ষড়যন্ত্র করছে সরকার: ফখরুল
বাংলাদেশের অর্থনীতি সংস্কারে ভূমিকা রাখবে আইএমএফের ঋণ
গত ফেব্রুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ‘রেসিলিয়েন্ট সাসটেইনেবল ফান্ড’ এর আওতায় ঋণ সহায়তার প্রথম কিস্তি পেয়েছে বাংলাদেশ। ডলারের হিসেবে যার পরিমাণ ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার।
আইএমএফ থেকে সাড়ে তিন বছর ধরে সাত কিস্তিতে যে ৪৭০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ পাচ্ছে, তার মূল্যও কম নয়।
কারণ, এ ঋণের বিপরীতে মোটা দাগে ৩৮টি শর্ত পূরণ করতে হবে বাংলাদেশকে। আর এই অর্থনীতি সংস্কারের শর্ত পূরণের মূল্য দিতে হতে পারে দেশের খেটে খাওয়া মানুষদের।
আইএমএফের মূল শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে- আন্তর্জাতিক নিয়মের সঙ্গে মিল রেখে এদেশের রিজার্ভ ব্যবস্থা পুনর্গঠন করা, ব্যাংকঋণের সুদহারের সীমা তুলে দেওয়া, ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দিয়ে একটি নির্দিষ্ট দাম ঠিক করা, সব সময় জ্বালানি তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে মিলিয়ে সমন্বয় করা, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় রাজস্ব সংগ্রহের হার বৃদ্ধি ইত্যাদি।
এছাড়াও বিভিন্ন খাত থেকে উল্লেখযোগ্য হারে ভর্তুকি কমানো, ব্যাংকঋণের সুদের হার বৃদ্ধি, ডলারের একদর করাসহ আইএমএফ যে সকল সুপারিশ বাংলাদেশ সরকারকে বাস্তবায়ন করতে বলেছে; সেগুলার একটি সরাসরি প্রভাব দেশের সাধারণ জনগণের ওপর পড়ছে।
বাংলাদেশ মূলত জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসে ভর্তুকি দিয়ে থাকে; যার পরিমাণ জিডিপির ০.৪ শতাংশ।
বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশ সরকারের ভর্তুকির পরিমাণ প্রতিবছর প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার এবং গ্যাসে প্রায় ০.৪ বিলিয়ন ডলার।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ব্যাংকের আশা আইএমএফ ঋণের প্রথম কিস্তি আগামী মাসের মধ্যে আসবে: মুখপাত্র
বাংলাদেশে বিগত বছরগুলোতে কয়েক দফায় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। কারণ আইএম এফ এর শর্ত হলো অলাভজনক খাতগুলো থেকে ভর্তুকি তুলে নেওয়া।
মূলত গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়েনি, বরং এসব পণ্যের মূল্যের বড় একটি অংশ আগে সরকার পরিশোধ করত, কিন্ত এখন সেটি ভোক্তা পর্যায়ে পরিশোধ করতে হচ্ছে।
ব্যাংকঋণের সুদহারের সীমা তুলে দিলে ব্যাংকগুলো ঋণের সুদ বাড়িয়ে দেবে। এতে পণ্য ও সেবা উৎপাদনের খরচ বেড়েছে, ফলে বেড়েছে পণ্যের দামও। যার ভুক্তভোগী হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ।
যদি ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়, তাহলে রাতারাতি এদেশে ডলারের দাম বেড়ে যাবে এবং ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রা টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়ন হতে পারে।
তখন পণ্য আমদানিতে খরচ আরও বেড়ে যেতে পারে, যা মূল্যস্ফীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে।
এদিকে, ঋণপ্রাপ্তির প্রথম দুই বছরে কর-জিডিপি দশমিক ৫০ শতাংশ এবং তিন বছরে দশমিক ৭০ শতাংশ হারে বৃদ্ধির কথা বলেছে আইএমএফ।
দেশের রাজস্ব প্রশাসনের প্রবণতা হচ্ছে, যারা কর দেন তাদের ওপরই বাড়তি করের বোঝা চাপানো।
অর্থাৎ এদেশের কর-রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রটি বিস্তৃত হলেও আমাদের কর সংগ্রহ ব্যবস্থায় যথেষ্ট ফাঁক-ফোকর রয়েছে। এদেশের চাকরিজীবীরাই একমাত্র নিয়মিত কর দেয়।
যদি কর-রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য মাথাপিছু কর বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়, তবে সেটি হবে কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষের ওপর একটি বাড়তি বোঝা।
সরকার ইতোমধ্যে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে; যার প্রভাব জিনিসপত্রের দামের ওপর পড়েছে। এগুলোতে সরকার আর ভর্তুকি দিতে রাজি নয়। জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বাড়িয়ে বর্তমানে যে জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তা আন্তর্জাতিক বাজারদরের কাছাকাছিই আছে।
আরও পড়ুন: সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার ঋণ চুক্তি চূড়ান্ত করতে ঢাকায় আসছেন আইএমএফ’র ডিএমডি
২০২৬ সালের মধ্যে সরকারি মালিকানাধীন ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার ১০ শতাংশের মধ্যে ও বেসরকারি খাতের ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনতে বলেছে আইএমএফ।
এদিকে আইএমএফকে বাংলাদেশ জানিয়েছে, ব্যাংকের পুনঃতফসিল করা ঋণকেও খেলাপি ঋণের হিসাবে আনা হচ্ছে, যা আগামী জুনের মধ্যে কার্যকর হবে।
এর বাইরে দ্রুততম সময়ে আয়কর আইন ও শুল্ক আইন প্রণয়ন, ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধন, ফাইন্যান্স কোম্পানি আইনের সংশোধন এবং দেউলিয়া আইন প্রণয়নের শর্তও রয়েছে আইএমএফের।
শুধু ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে বাংলাদেশের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩৪৩.৯৬ বিলিয়ন টাকা এবং এই খেলাপী ঋণের পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলছে।
আইএমেফের এই শর্তটি বাস্তবায়ন করা গেলে দেশে ঋণ খেলাপির পরিমাণ অনেকটা কমে যাবে বলে আশা করা যায়।
এছাড়াও, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে তিন মাস পরপর জিডিপির তথ্য প্রকাশ, প্রকৃত ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের হিসাবায়ন পদ্ধতি এবং আন্তর্জাতিক নিয়মের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মুদ্রাস্ফীতি পরিমাপ পদ্ধতির প্রণয়ন আগামী জুনের মধ্যেই বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
আইএমএফের ঋণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির যে সংস্কার হবে বলে মনে করা হচ্ছে, সেই সংস্কারের ঢেউয়ের প্রভাব শুধু নির্দিষ্ট কোনো একটি শ্রেণির মানুষের ওপরে না পড়ে, দেশের সকল মানুষের ওপর ন্যায়সঙ্গতভাবে পড়ুক; তবেই দেশের উন্নয়ন টেকসই হবে।
(প্রকাশিত মতামতের দায় লেখকের, ইউএনবির নয়)
আরও পড়ুন: আইএমএফ’র ঋণ একটি চারিত্রিক সনদের মতো: প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মশিউর
কিছুটা স্বস্তির জন্য আইএমএফের ঋণ নিয়েছে বাংলাদেশ: আইএমএফের এমডিকে প্রধানমন্ত্রী
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে কিছুটা স্বস্তির জন্য বাংলাদেশ ঋণ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল দ্য রিজ-কার্লটন হোটেলের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য চার দশমিক সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ অনুমোদন করে।
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, আইএমএফের এমডি শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতির ভূয়সী প্রশংসা করেন, যা কোভিড-১৯ মহামারির পর বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করে তুলেছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের জন্য আরও সমর্থন বাড়ান: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, আইএমএফ প্রধান বলেন যে সব বাধা মোকাবিলা করে দেশকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যেতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মতো নেতৃত্ব প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন, যোগাযোগ নিশ্চিতকরণ এবং আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার কারণে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আইএমএফ প্রধানকে তার দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তার সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ সম্পর্কে অবহিত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন একদিনে হয়নি, বরং এটি দীর্ঘদিনের পরিকল্পনা ও কাজের ফল।’
তিনি বলেন, ২০০৭ সালের রাজনৈতিক পরিবর্তনে সামরিক সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর কারাগারে থাকা অবস্থায় তিনি কীভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন করতে চান সে পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন এবং ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর সেই পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেন।
শেখ হাসিনা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা এবং নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে মধ্যস্থতা করতে পারে জাপান: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আইএমএফ গত ১৪ বছর ধরে সবসময় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে আইএমএফের সঙ্গে চার দশমিক সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি প্রকল্পে নিয়োজিত রয়েছে, যা মাত্র দুই সপ্তাহের আলোচনার পরে দেশটি পেয়েছে। যদিও অনেক দেশ বছরের পর বছর ধরে আলোচনার পরেও ঋণ নিতে পারে না।
আইএমএফ প্রধানের উদ্ধৃতি দিয়ে রউফ বলেন, ‘আইএমএফ ভবিষ্যতেও এ ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।’
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আইএমএফের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতেও অব্যাহত সহযোগিতা কামনা করেন।
এ সময় অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান উপস্থিত ছিলেন।
জানুয়ারিতে আইএমএফের এক বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী ৪২ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ সাতটি কিস্তিতে এই ঋণ পাবে। ঋণের গড় সুদ হবে দুই দশমিক ২ শতাংশ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিনিয়োগ ব্যাপক সাফল্য বয়ে আনবে: জাপানি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী
বরিস জনসনের ঋণ নিয়ে ক্ষোভের মধ্যে বিবিসি প্রধানের পদত্যাগ
যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের জন্য ২০২১ সালের ঋণের ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে নিজের ভূমিকার বিষয়ে স্বার্থের সম্ভাব্য দ্বন্দ্ব প্রকাশ করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে পদত্যাগ করেছেন বিবিসির চেয়ারম্যান।
শুক্রবার এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পাওয়ার পর তিনি পদত্যাগ করেন।
সরকারের সুপারিশে বিবিসি পদে নিযুক্ত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে রিচার্ড শার্প ক্রেডিট লাইনের ব্যবস্থা করতে সাহায্য করেছিলেন বলে প্রকাশের পর সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত জাতীয় সম্প্রচারকারী সংস্থাটি রাজনৈতিক চাপের মধ্যে পড়েছে।
ধনী কানাডিয়ান ব্যবসায়ী স্যাম ব্লিথের কাছ থেকে আট লাখ পাউন্ড বা (দশ লাখ ডলার) লাইন অফ ক্রেডিট এসেছে। যিনি জনসনের সঙ্গে কনজারভেটিভ পার্টির দাতা শার্পের পরিচয় করিয়েছিলেন। জনসন দলের নেতার পাশাপাশি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীও ছিলেন।
শার্প বলেছিলেন যে তিনি নিয়মগুলোর একটি ‘অজান্তে’ লঙ্ঘন করার পরে ‘বিবিসির স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে’ পদত্যাগ করছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি যে এই বিষয়টি কর্পোরেশনের ভাল কাজ থেকে একটি বিভ্রান্তি হতে পারে যদি আমি আমার মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত পদে থাকতাম।’।
আরও পড়ুন: ভারতে বিবিসি’র কার্যালয়ে তৃতীয় দিনের মতো অভিযান, কর ফাঁকির অভিযোগ
শার্প বলেছেন যে নতুন চেয়ারম্যান খোঁজ করা হচ্ছে। জুনের শেষ পর্যন্ত নতুন চেয়ারম্যান না পাওয়া পর্যন্ত তিনি বিবিসিতে তার পদে থাকবেন।
শুক্রবার প্রকাশিত জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডাম হেপিনস্টলের ঘটনার একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে শার্প ‘সম্ভাব্য স্বার্থের দ্বন্দ্ব প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
তদন্তটি ১০০ বছর বয়সী বিবিসির জন্য সর্বশেষ অস্বস্তিকর পর্ব, যা একটি টেলিভিশন সহ সমস্ত পরিবারের দ্বারা প্রদত্ত লাইসেন্স ফি দ্বারা অর্থায়ন করা হয় এবং এর সংবাদ কভারেজের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ হওয়া কর্তব্য।
পাবলিক ব্রডকাস্টার প্রায়শই একটি রাজনৈতিক ফুটবল, রক্ষণশীল সরকারের কিছু সদস্য এর সংবাদ আউটপুটে বামপন্থী তীর্যক দেখেন এবং কিছু উদারপন্থী এটিকে রক্ষণশীল পক্ষপাতিত্বের জন্য অভিযুক্ত করে।
বিবিসি’র প্রধান ক্রীড়া উপস্থাপক ও সাবেক ইংল্যান্ড ফুটবল খেলোয়াড় গ্যারি লিনেকার সোশ্যাল মিডিয়াতে সরকারের অভিবাসন নীতির সমালোচনা করায় বিবিসি মার্চ মাসে বাকস্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক পক্ষপাত নিয়ে একটি সমালোচনার মধ্যে পড়েছিল।
ফলে লিনেকারকে স্থগিত করা হয়েছিল এবং তারপরে অন্যান্য ক্রীড়া উপস্থাপক, বিশ্লেষক এবং প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড়রা সংহতিতে বিবিসি এয়ারওয়েভ বর্জন করার পর তার স্থগিতের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।
আরও পড়ুন: বাংলাসহ ১০ ভাষায় রেডিও সম্প্রচার বন্ধ করছে বিবিসি