জ্বালানি
জ্বালানি, অবকাঠামো, আইসিটি খাতে ব্রাজিলের বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ
বাংলাদেশে জ্বালানি, অবকাঠামো ও আইসিটি খাতে বিনিয়োগের জন্য ব্রাজিলের বিনিয়োগকারীদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এ অঞ্চলের বৃহত্তম উৎপাদন কেন্দ্র।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের মধ্যে অনেক মিল থাকলেও বাণিজ্যের পরিধি এখনও বাড়েনি।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে ব্রাজিলের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত পাওলো ফার্নান্দো দিয়াস ফেরেস ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রাজিলের নতুন রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানান এবং ব্রাজিলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরপূর্তি উপলক্ষে তাকে অভিনন্দন জানান।
আরও পড়ুন: মোমেনকে ভুলভাবে উদ্ধৃত করা হয়েছে: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
তিনি ব্রাজিলের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও ‘লুলা’ দা সিলভাকে তার অসাধারণ বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক আরও জোরদার করতে বাংলাদেশ নতুন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।
মোমেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও ‘লুলা’ দা সিলভাকে আগামী বছর পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
তিনি ব্রাজিল থেকে চিনি, সয়াবিন তেল এবং উন্নত জাতের দুধের গাভী আমদানিতে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন।
মোমেন আশা প্রকাশ করেন যে ব্রাজিল মার্কোসুর দেশগুলোর সঙ্গে অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির জন্য বাংলাদেশের উদ্যোগকে সহজতর করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে উন্নয়নশীল দেশগুলোর বৃহত্তর সহযোগিতার জন্য কার্যকর কোনও আন্তর্জাতিক সংগঠন নেই।
তিনি বলেন, ব্রাজিল, বাংলাদেশ এবং অন্যান্য সমমনা উন্নয়নশীল দেশগুলো ভালো সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, তথ্য আদান-প্রদান এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দক্ষিণের দেশগুলোকে নিয়ে একটি সংগঠন করতে পারে।
ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত ফেরেস এই ধারণার প্রশংসা করেন এবং পারস্পরিক সুবিধার বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে তার দেশের গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তিনি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রশংসা করেন এবং ঢাকায় থাকাকালীন সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।
উভয় পক্ষ বহুপক্ষীয় ফোরামে পারস্পরিক সহযোগিতা এবং পারস্পরিক সমর্থনের বিষয়েও আলোচনা করেছে।
আরও পড়ুন: আপনার বাবা ছিলেন বিদেশে বাংলাদেশের কণ্ঠস্বর: টেড কেনেডি জুনিয়রকে মোমেন
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে চীনের পক্ষ থেকে সুখবর নেই: মোমেন
জ্বালানি সরবরাহের উৎসগুলোকে বিস্তৃত করেছে বাংলাদেশ; ডলারের অভাব নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, সরকার বেশ কয়েকটি বন্ধুপ্রতিম দেশের সঙ্গে সফল আলোচনার মাধ্যমে জ্বালানি সরবরাহের জন্য তার উৎসের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের আগে সীমিত উৎস ছিল। এখন, আমরা সোর্স বাড়িয়েছি। আমরা এটি খুব সফলভাবে করেছি।’
মঙ্গলবার বুয়েটের খেলার মাঠে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্টের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগদানের পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
মোমেন বলেন, ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে সরবরাহ শৃঙ্খল ও আর্থিক লেনদেনে বিঘ্ন সৃষ্টি হওয়ায় জ্বালানি সংকট এখন বৈশ্বিক সংকট।
তিনি কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) মন্ত্রীদের সঙ্গে তার সফল আলোচনার কথা উল্লেখ করেছেন যেখানে প্রচুর তেল মজুদ রয়েছে।
মোমেন বলেন, ব্রুনাই, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলোও বাংলাদেশে গ্যাস সরবরাহ করতে ইচ্ছুক।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে থাইল্যান্ড ও আসিয়ানের সক্রিয় ভূমিকা চায় ঢাকা
তিনি বলেন, ‘এমনকি, বাংলাদেশ কোনো সংকটের সম্মুখীন হলে চীন জ্বালানি সরবরাহ করতে ইচ্ছুক। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন আরও জাতি আসছে।’
মোমেন বলেন, বাংলাদেশ শিগগিরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনবে এবং জ্বালানির প্রাপ্যতা থাকবে। দেশের কল্যাণে যা যা করা দরকার আমরা তাই করব।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দেশে ডলারের কোনো সংকট নেই। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের জন্য আমদানি বিল হিসেবে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নকে (এসিইউ) ১ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করার পর এবং এলসি দায় মেটানোর জন্য ১৩১ মিলিয়ন ডলার খরচ করার পর ৭ নভেম্বর শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
মোমেন বলেন, ‘২০০১-২০০৬ মেয়াদে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলারে উঠানামা করতো।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার কোনো অভাব নেই। কয়েক মাসের আমদানির জন্য এটি যথেষ্ট অর্থ।’
মোমেন বলেন, এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) ইস্যু বন্ধ করার কোনো কারণ নেই, বরং সরকার ইনভয়েসিং চেক করার ব্যবস্থা নিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এটা চেক করা দরকার। তাদের সমস্ত নথি পরীক্ষা করা বা পুনঃপরীক্ষা করা উচিত। এটা মোটেও খারাপ নয়।’
আরও পড়ুন: ভুল উদ্বৃতি দিয়ে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কাতারের আমিরের বাংলাদেশ সফর নতুন উচ্চতায় নিবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক
নভেম্বর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতির আশা নসরুল হামিদের
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, নভেম্বর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি নভেম্বর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হবে। আমি আশাবাদী এবং আপনাদের হতাশ করতে চাই না।’
বৃহস্পতিবার তিনি ঢাকার ব্র্যাক ইন সেন্টারে নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ক সেমিনারে যোগ দেয়ার পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এর আগে আগস্টে প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন যে সেপ্টেম্বর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে এবং পরে আবার বলেছিলেন যে অক্টোবর থেকে লোডশেডিং কমবে।
২০২২ সালের ৪ অক্টোবর জাতীয় পাওয়ার গ্রিড বিপর্যয়ের পরে দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় প্রতিদিন ৫-৬ ঘন্টা লোডশেডিং হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আপাতত ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানি করবে নেপাল: রাষ্ট্রদূত
জ্বালানি আমদানি কমাতে এবং বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের জন্য সরকার জুলাই মাসে সব ডিজেল-চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম স্থগিত করে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করে। আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানিও একই উদ্দেশ্যে স্থগিত করা হয়, ফলে সারা দেশে ঘন ঘন লোডশেডিং শুরু হয়।
আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি আবার শুরু করতে এবং উচ্চ মূল্যে কারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে ব্যবসায়ীদের অনুরোধের কথা উল্লেখ করে নসরুল বলেন, সরকার সব বিকল্প মূল্যায়ন করছে।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের প্রয়োজন সাশ্রয়ী মূল্যে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ নিয়ে আমরা কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন যে তার মন্ত্রণালয় এলএনজি আমদানির বিষয়ে ব্রুনাইকে একটি বিশদ প্রস্তাব পাঠিয়েছে এবং এখন তাদের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।
তিনি বলেন, ব্রুনাই থেকে প্রতিক্রিয়া পেতে আরও এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।
আরও পড়ুন: ৮০ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন: নসরুল হামিদ
দিনের বেলায় বিদ্যুৎ বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার: তথ্যমন্ত্রী
জ্বালানি সহযোগিতায় সম্মত বাংলাদেশ ও ব্রুনাই
ঢাকা, ১৬ অক্টোবর (ইউএনবি)-
বাংলাদেশ ও ব্রুনাই দারুসসালাম জ্বালানি খাতে; বিশেষ করে বাংলাদেশে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) এবং অন্যান্য পেট্রোলিয়াম পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতার প্রক্রিয়া অনুসন্ধান করতে সম্মত হয়েছে।
রবিবার ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুই নেতার মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনার পর প্রকাশ করা এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, সফররত ব্রুনাইয়ের সুলতান হাজি হাসানাল বলকিয়া এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জ্বালানি খাতে দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতার জন্য সম্মত হয়েছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের জ্বালানির ক্রমবর্ধমান চাহিদা এবং জ্বালানির একটি স্থিতিশীল ও মূল আঞ্চলিক রপ্তানিকারক হিসেবে ব্রুনাই দারুসসালামের অবস্থানের ভিত্তিতে দুই নেতা বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে; বিশেষ করে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) এবং অন্যান্য পেট্রোলিয়াম পণ্য সরবরাহে দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতার প্রক্রিয়া অনুসন্ধান করতে সম্মত হন।’
আরও পড়ুন: অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য সমান বিধান নিশ্চিত করুন: ব্রুনাইয়ের প্রতি বাণিজ্যমন্ত্রী
আনুষ্ঠানিক আলোচনার পর, দুই দেশ তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) এবং অন্যান্য পেট্রোলিয়াম পণ্য সরবরাহে সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তিসহ চারটি সমঝোতা স্মারকেও (এমওইউ) সই করেছে।
চুক্তিটি হলো- বিমান সেবা চুক্তি। আর অন্য তিনটি দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক হলো- ‘বাংলাদেশি শ্রমিকদের কর্মসংস্থান ও নিয়োগের বিষয়ে সমঝোতা স্মারক’, ‘তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) এবং অন্যান্য পেট্রোলিয়াম পণ্য সরবরাহে সহযোগিতার ক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক' এবং ‘নাবিকদের প্রশিক্ষণ, সনদ, ওয়াচকিপিং এর মান সংক্রান্ত ১৯৭৮ সালের আন্তর্জাতিক কনভেনশনের অধীনে ইস্যুকৃত সনদপত্রের স্বীকৃতির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক’।
আলোচনায়, দুই পক্ষই বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং দ্বিমুখী বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য কাজ করার জন্য তাদের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। বর্তমানে যা সম্ভাবনার চেয়ে অনেক নিচে অবস্থান করছে।
দুই দেশ বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ব্রুনাই দারুসসালামের অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগে সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি বর্ধিত ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য ব্যবসায়িক সম্পর্ক এবং সহযোগিতার জন্য একটি পথ অনুসন্ধানের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনাকে স্বাগত জানায়।
উভয় নেতা হালাল বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও বৃদ্ধির বিষয়েও সম্মত হন।
বাংলাদেশ ব্রুনাই দারুসসালামকে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের সুযোগের সুবিধা দেয়ার প্রস্তাব করেছে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ব্রুনাই দারুসসালাম প্রস্তাবটি নোট করেছে এবং উভয় দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য বিনিয়োগ সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো নিয়ে আলোচনার কথা জানিয়েছে।
ব্রুনাই দারুসসালাম বাংলাদেশকে তার অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যমূলক কর্মকাণ্ড যেমন খাদ্য, কৃষি এবং অ্যাকুয়াকালচারে (পানির মধ্যে গাছপালা উত্পাদন বা জীবজন্তুর বংশবৃদ্ধির প্রচেষ্টা) বিনিয়োগের কথা বিবেচনা করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্রুনাইয়ের সঙ্গে সই হলো যেসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশ-ব্রুনাই দ্বিপক্ষীয় আলোচনা সম্পন্ন
বিদ্যুৎ খাতে ভালো সমন্বয় দরকার: নসরুল হামিদ
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিদ্যুৎ খাতের অবকাঠামো উন্নয়নে প্রকল্প বাস্তবায়নে আরও সমন্বয় নিশ্চিত করতে নিজ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে ‘টুগেদার ফর এ স্মার্ট অ্যান্ড গ্রিন বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মশালায় কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সমন্বয়ের অভাবে অনেক অর্জনই ব্যর্থতায় পরিণত হচ্ছে।
সাম্প্রতিক গ্রিড ব্যর্থতার পটভূমিতে এই আহ্বান জানাল প্রতিমন্ত্রী। ৪ অক্টোবর দেশের বেশিরভাগ অঞ্চল সাত ঘন্টার ব্ল্যাকআউটে নিমজ্জিত হয়েছিল।
চীনের প্রযুক্তি কোম্পানি হুয়াওয়ে এবং বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের কারিগরি শাখা পাওয়ার সেল যৌথভাবে স্মার্ট গ্রিডের উন্নয়ন এবং বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বিষয়ে এই কর্মশালার আয়োজন করে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাওয়ার গ্রিড স্বয়ংক্রিয়করণ এখন সময়ের অপরিহার্য দাবি।
একটি স্মার্ট গ্রিড স্বয়ংক্রিয়ভাবে চাহিদা এবং সরবরাহের মধ্যে ভারসাম্য নিশ্চিত করতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তি এবং স্মার্ট ডিভাইসের প্রবর্তন পাওয়ার ট্রান্সমিশন সিস্টেমকে সুরক্ষিত রাখবে।
তিনি প্রযুক্তিগত উন্নয়নের পাশাপাশি বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে প্রচলিত গ্রিড থেকে স্মার্ট গ্রিডে রূপান্তর করতে বিদ্যুৎ খাতে দক্ষ জনশক্তির বিকাশের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন।
তিনি রাজধানীতে ও বাইরে দৈনিক পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের তীব্র বিদ্যুতের সংকটে জনগণকে ধৈর্য ধরার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
কর্মশালার পাশাপাশি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি ভালো পেতে জনগণকে নভেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
কর্মশালায় স্মার্ট গ্রিড, ইলেকট্রিক যান এবং গ্লোবাল কনটেক্সট বিষয়ক দু’টি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। স্মার্ট গ্রিড, সাইবার-আক্রমণ প্রতিরোধ, ডিজিটাইজেশন, অটোমেশনের পাশাপাশি প্রযুক্তি-ভিত্তিক ক্লিন এনার্জি এবং বৈদ্যুতিক যানবাহন নিয়েও আলোচনা হয়।
সাশ্রয়ী এবং পরিবেশবান্ধব বৈদ্যুতিক গাড়ির বিষয়টিও কর্মশালায় উঠে আসে। ওয়ার্কশপে বলা হয়, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে চার্জিং গাইডলাইন সংক্রান্ত একটি নীতিমালা তৈরি করেছে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান এবং হুয়াওয়ে টেকনোলজির (বাংলাদেশ) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্যান জুনফেং।
পাইকারিতে বিদ্যুতের শুল্ক ‘সমন্বয়’ বিষয়ে সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন(বিইআরসি)বৃহস্পতিবার(১৩ অক্টোবর) পাইকারিতে বিদ্যুতের শুল্ক সমন্বয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে। মঙ্গলবার কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিইআরসি চেয়ারম্যান আবদুল জলিল ইউএনবিকে বলেন, শিগগিরই এ বিষয়ে নোটিশ জারি করা হবে।
এর আগে বিইআরসি প্রধান বলেছিলেন যে জনশুনানি শেষ হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে যে কোনও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার নিয়ম অনুসারে ১৪ অক্টোবরের মধ্যে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
পাইকারিতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর সর্বশেষ ১৮ মে গণশুনানি করেছিল রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড(বিপিডিবি)।
শুনানির প্রক্রিয়া শেষ করতে বিইআরসি স্টেকহোল্ডারদের প্রাসঙ্গিক নথি জমা দেয়ার সময় বাড়িয়েছে।
বিইআরসি’র সদস্য বলেছেন, সেই অতিরিক্ত সময় থেকে বিইআরসি ৯০ দিন গণনা করছে এবং ১৪ অক্টোবর নির্ধারিত সময় শেষ হবে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে পাইকারিতে বিদ্যুতের শুল্কের কোনও সমন্বয় বিদ্যুতের বর্তমান খুচরা শুল্কের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে না।
কিন্তু বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোর ওপর -এর প্রভাব পড়বে।এর মধ্যে যারা বিপিডিবি থেকে বিপুল পরিমাণে বিদ্যুৎ কিনে তাদের খুচরা গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করে তারাও প্রভাবিত হবে। এর অর্থ হলো- যদি নিয়ন্ত্রকের কাছ থেকে কোনো ঊর্ধ্বমুখী সমন্বয় আসে, বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো পরবর্তীতে খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়াবে।
জ্বালানি নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি এমন সময়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে যাচ্ছে যখন দেশে তীব্র বিদ্যুত সংকট চলছে এবং গ্রাহকরা প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা লোডশেডিংয়ের শিকার হচ্ছেন।
অন্যদিকে, আর্থিক সহায়তা হিসেবে ভর্তুকি পেতে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে অনেক বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে গ্রাহকদের কাছে কম দামে বিক্রি করায় বিপিডিবি ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
এই পটভূমিতে, বিপিডিবি গণশুনানিতে পাইকারিতে বিদ্যুতের শুল্ক ৬৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ বাড়ানোর একটি প্রস্তাব পেশ করে যখন বিইআরসি-এর একটি প্রযুক্তিগত মূল্যায়ন কমিটি (টিইসি) ৫৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ বৃদ্ধির সুপারিশ করেছিল।
পাঁচ সদস্যের কমিশন যেকোনও প্রস্তাবের বিষয়ে গণশুনানির পর স্টেকহোল্ডারদের যুক্তি ও পাল্টা যুক্তি শুনে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়।
১৮ মে গণশুনানিতে বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংস্থার প্রতিনিধিসহ ভোক্তা অধিকার গোষ্ঠীগুলো এই মুহূর্তে বিদ্যুতের শুল্কের যে কোনও বড় বৃদ্ধির তীব্র বিরোধিতা করেছে। কারণ মানুষ ইতোমধ্যেই উচ্চ দ্রব্যমূল্যের কারণে উচ্চ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করছে৷
তারা প্রস্তাবটিকে অযৌক্তিক আখ্যায়িত করে বলেন, অদক্ষ বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উচ্চ হারে বিদ্যুৎ কেনার ক্ষেত্রে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অনৈতিক প্রথা মোকাবিলার মাধ্যমে বিপিডিবি তার রাজস্ব ঘাটতি পূরণ করতে পারে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ খাতে উন্নয়নের নামে সরকারের ব্যাপক লুণ্ঠন প্রকাশ পেয়েছে: বিএনপি
বিপিডিবি কর্মকর্তারা প্রস্তাবটি উপস্থাপন করে বলেছিলেন যে সংস্থাটি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোতে ৮৮ হাজার ৯৯৩ মিলিয়ন কিলোওয়াট ঘন্টা (ইউনিট) সরবরাহ করতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৭৪ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা রাজস্বের প্রয়োজন হবে।
‘কিন্তু বিপিডিবি যদি তার বর্তমান বিদ্যুত পাঁচ টাকা ১৭ পয়সা প্রতি ইউনিট দরে বিক্রি করে, তাহলে ২০২২ সালের ক্যালেন্ডার বছরে ৩০ হাজার ২৫১ কোটি টাকা রাজস্ব ঘাটতির সম্মুখীন হবে। সরকারের ভর্তুকি ছাড়াই গণনা করার কথা উল্লেখ করে শুনানিতে
বিপিডিবির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, বিপিডিবিকে বিদ্যুতের দাম ৬৫ দশমিক সাত শতাংশ বৃদ্ধি করে প্রতি ইউনিটের মূল্য ৫ দশমিক ১৭ টাকা থেকে ৮ দশমিক ৫৬ টাকা করতে হবে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির পর বিদ্যুৎ বিভাগ তার ডিজেল-চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কার্যক্রম এবং তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি স্থগিত করেছে।
ফলে, যদিও দেশের স্থাপিত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় দুই হাজার ৫৫০ মেগাওয়াট, এটি এখন প্রায় ১৪ হাজার মেগাওয়াটের চাহিদার বিপরীতে প্রায় ১২ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করে এবং প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াটের লোডশেডিং দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: লোডশেডিং: ঘোড়াশাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতি হবে না
কর্ম সপ্তাহের শুরুতে ঢাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতি আরও খারাপ
চার বিতরণ অঞ্চলে ডিজিটাল কল সেন্টার স্থাপন করবে বিপিডিবি
দেশের চারটি বিতরণ অঞ্চল চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ এবং কুমিল্লায় ২৪ ঘন্টা গ্রাহক সেবা দিতে ডিজিটাল কল সেন্টার স্থাপন করবে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড (বিপিডিবি)।
রবিবার ডিজিটাল কল সেন্টার স্থাপনে বেসরকারি আউটসোর্সিং সংস্থা ডিজিকনের সঙ্গে বিপিডিবি এই চুক্তি সই করে।
এর মাধ্যমে বিপিডিবি তার ৩৬ লাখ গ্রাহককে গ্রাহক পরিষেবা দিবে।
চুক্তি অনুযায়ী, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ডিজিকন টেকনোলজিস লিমিটেড আগামী তিন মাসের মধ্যে ঢাকার বিদ্যুৎ ভবনে কল সেন্টার স্থাপন করবে। গ্রাহকদের সেবা প্রদানের জন্য ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে কল সেন্টারটি পরিচালনা করবে বিপিডিবি।
আরও পড়ুন: সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৯ মাস ছাড়
বিপিডিবি’র কল সেন্টারটি সারা বছর ২৪ ঘন্টা চালু থাকবে এবং এটি চালু হয়ে গেলে যেকোন বিপিডিবি গ্রাহক একটি অ্যাপ ব্যবহার করে বা মোবাইল ফোন থেকে ১৬১৩১ নম্বরে কল করে অভিযোগ জানাতে পারবেন।
কল সেন্টার অভিযোগটি তাৎক্ষণিক গ্রহণ করবে এবং সমস্যাটি সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হবে। একই সঙ্গে অভিযোগের অবস্থা সম্পর্কে গ্রাহকের প্রতিক্রিয়াও পাঠাবে।
গ্রাহক অ্যাপ ব্যবহার করে অভিযোগের স্থিতি ট্র্যাক করতে পারেন এবং অভিযোগের সমাধান হয়ে গেলে পরিষেবাটি মূল্যায়ন করতে পারেন।
বিপিডিবি কর্মকর্তারা তাদের স্মার্ট মোবাইল ফোন থেকে একটি ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে সেবাটি পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।
ডিজিকন টেকনোলজিস ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে পরবর্তী দুই বছরের জন্য সিস্টেমটি পরিচালনা করবে। এর মধ্যে, এটি প্রয়োজনীয় সফ্টওয়্যার তৈরি করবে এবং জনশক্তিকে প্রশিক্ষণ দেবে।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে গ্রাহকসেবা প্রদানে বিপিডিবির উদ্যোগকে স্বাগত জানান।
বিদ্যুৎ ভবনে এক অনুষ্ঠানে ডিজিকনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াহিদুর রহমান শরীফ এবং বিপিডিবির দাপ্তরিক ক্রয় পরিচালক রুবিনা হক নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন।
ডিজিকনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াহিদুর রহমান শরীফ বিপিডিবিকে অন্যান্য বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির অন্য সব কল সেন্টারকে একটি সিস্টেমে একীভূত করার পদক্ষেপ নিতে বলেন, যাতে এর যেকোনো গ্রাহক সহজেই অভিযোগ করতে পারে এবং কোনো ঝামেলা ছাড়াই সেবা পেতে পারে।
আরও পড়ুন:আগস্টে রেকর্ড ৮ হাজার ৭৩৩ কোটি টাকা ভ্যাট সংগ্রহ
তিনি আরও বলেন, ‘কল সেন্টার এবং এর সিস্টেমটি অবশ্যই ব্যবহারকারী বান্ধব হতে হবে এবং অভিযোগ দায়েরের জন্য পাওয়ার সেক্টরের সমস্ত সংস্থার জন্য একটি অনন্য নম্বর থাকা উচিত।’ অন্যান্য বিতরণ সংস্থার মতো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন নম্বর মনে রাখা অসম্ভব। ইতোমধ্যে তাদের আলাদা কল সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।
তিনি বিপিডিবিকে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) অনুসরণ করার পরামর্শ দেন যাতে মনে রাখার মতো একটি সহজ অনন্য নম্বর পাওয়া যায়।
বিপিডিবি চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান ও ডিজিকনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াহিদুর রহমান।
তবে ডিজিকন কীভাবে চুক্তিটি পেয়েছে এবং পরিষেবা প্রদানের জন্য কত টাকা দেয়া হবে সে সম্পর্কে অনুষ্ঠানে কিছু জানানো হয়নি।
ওয়াহিদুর রহমান জানান, বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির আওতায় ডেসকো গ্রাহকদের সেবা দিয়ে আসছেন তারা।
আরও পড়ুন: বিশেষ ব্যবস্থাপনায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ চায় বিজিএমইএ
ফের মেয়াদ বাড়ল চার রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের
ফের মেয়াদ বাড়ল ভাড়ায় চালিত (রেন্টাল) চার বিদ্যুৎকেন্দ্রের। এ ব্যাপারে অনুমোদন দিয়েছে সরকারের ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের অনুপস্থিতিতে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে এই বৈঠকটি হয়।
কর্মকর্তারা বলছে, ভাড়া করা বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো হলো- একর্ন ইনফ্রাসট্রাকচার সার্ভিস লিমিটেডের চট্টগ্রামের জুলডার ১০০ মেগওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র, নর্দান পাওয়ার সলুশনস লিমিটেডের রাজশাহীর ৫০ মেগাওয়াট কাটাখালি পাওয়ার প্ল্যান্ট, পাওয়ার প্যাক মুতিয়ারা কেরানীগঞ্জ পাওয়ার প্ল্যান্ট লিমিটেডের ১০০ মেগাওয়াট কেরানীগঞ্জ পাওয়ার প্ল্যান্ট, সিনহুয়া পাওয়ার জেনারেশেন কোম্পানি লিমিটেডের চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৫০ মেগাওয়াট আমনুয়ারা পাওয়ার প্ল্যান্ট।
আরও পড়ুন: রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র: সেপ্টেম্বরে শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদির যৌথভাবে ১ম ইউনিট সম্পন্নের ঘোষণা
তারা বলছে, এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ভাড়ায় চালিত চারটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে আগামী দুই বছর বিদ্যুৎ ক্রয় করবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেন, বিদ্যুৎ নিলে টাকা দেয়া হবে, না নিলে টাকা দেয়া হবে না, এমন নতুন নিয়ম শর্তের ভিত্তিতে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নতুন শর্তানুযায়ী বিদ্যুৎ ক্রয়ে নতুন শুল্ক আরোপ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ভাড়ায় চালিত কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষকে কেবল জ্বালানি খরচ ও নূন্যতম পরিচালন এবং রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় প্রদান করা হবে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সংযোগ নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে: মোদি
যৌথভাবে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিট ১- এর কাজ সম্পন্নের ঘোষণা হাসিনা-মোদির
রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে বাংলাদেশের অর্থ পরিশোধে টান পড়তে পারে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে দেশের অর্থ প্রদানের ভারসাম্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মশিউর রহমান রাঙার এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
তিনি বলেন, বিশ্ব অর্থনীতির দুর্বল প্রবৃদ্ধি, সরবরাহ ব্যবস্থায় বিঘ্ন, জ্বালানি, গ্যাসও খাদ্য সামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি, ভোক্তা পণ্য, শিল্পের কাঁচামাল ও আন্তর্জাতিক মালবাহী খরচ বৃদ্ধি, রপ্তানি বন্ধ, রেমিট্যান্স কম আহরণসহ নানা কারণে বাংলাদেশের অর্থপ্রদানে ভারসাম্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
সংসদ নেত্রী হাসিনা আরও বলেন, গত চৌদ্দ বছরে ঋণ ও বাজেট ঘাটতি উভয়কে টেকসই ও সহনশীল করে তার সরকার উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
পড়ুন: জনগণের কল্যাণে কাজ করুন: সরকারি কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, করোনা মহামারিসহ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নানা সমস্যার মধ্যেও বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৫ শতাংশ ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে।
ঋণ ও জিডিপি সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে, যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ২০২১-২০২২ অর্থবছরের শেষে ঋণ ও জিডিপির হার ৩৪ শতাংশ রাখা যা আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের স্বীকৃত ঋণের সীমার অনেক নিচে।
তিনি এসময় বিভিন্ন পরিস্থিতি মোকাবিলায় তার সরকারের পদক্ষেপগুলোকে তুলে ধরেন।
জাতীয় পার্টির ঢাকার আরেক সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসাইন এর প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চাহিদার আলোকে যে পরিমাণ
বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা আছে সে হিসাবে দেশে কোন বিদ্যুৎ সংকট নেই।
পড়ুন: আ.লীগ নেতা নুরুজ্জামানের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
তিনি অবশ্য বলেন, জ্বালানি সাশ্রয়ে মিতব্যয়িতা, পরিকল্পিত লোডশেডিং –এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিকভাবে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে চলমান সসম্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে।
তিনি উল্লেখ করেন যে, বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকার ১০০০-২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লোডশেডিং দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপগুলোর মধ্যে সহনশীল মাত্রায় লোডশেডিং দিচ্ছে।’
তিনি অবশ্য আশা করছেন যে অল্প কিছুদিন পরই বর্তমান বিদ্যুতের লোডশেডিং বন্ধ করা যাবে।
পরিস্থিতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, নতুন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়া শুরু হলে ও বিদ্যুৎ ব্যয়ে মিতব্যয়ীতা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে উন্নতির আশা করা যায়।
নাটোরের ক্ষমতাসীন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এম শহিদুল ইসলাম বকুলের প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন বর্তমানে দেশে ৭ দশমিক শূণ্য এক মেট্রিক টন পরিশোধিত ও অপরিশোধিত তেল আছে যা দিয়ে ৩০-৩৫ দিন চলবে।
তিনি বলেন, এই সময়ের মধ্যে দেশে নিরবিচ্ছিন্ন তেল সরবরাহ নিশ্চিত করতে আরও দুটি তেলের ট্যাংকার দেশে পৌঁছাবে।
তিনি বলেন, আগামী ছয়মাসের জন্য (জুলাই-ডিসেম্বর)দেশের চাহিদার আলোকে সরবরাহকারী কোম্পানিগুলোকে আমদানি আদেশ দেয়া আছে ।
সংসদীয় বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৫২১জন নারীসহ দেশের ৬ হাজার ৮৩৬ জন শান্তিরক্ষী বিশ্বের জাতিসংঘের অধীনে ৮টি মিশনে নিয়োজিত রয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদস্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিশনে দায়িত্ব পালনকালে মোট ১৬১ জন নিহত ও ২৫৮ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার মতো সংকট বাংলাদেশে হবে না: প্রধানমন্ত্রী
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার জ্বালানি আমদানিতে বাধা হবে না: জ্বালানি উপদেষ্টা
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরী মনে করেন, রাশিয়ার পেট্রোলিয়াম জ্বালানি আমদানিতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বাধা হবে না।
সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে ইউএস আন্ডার সেক্রেটারির সঙ্গে করা বৈঠকের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে রাশিয়ার ওপর দেয়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে তিনি খাদ্য, জ্বালানি এবং সার আমদানির বিষয়ে কথা বলেছেন।
বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারির সঙ্গে কথোপকথনের উপলব্ধি হলো রাশিয়া থেকে জ্বালানি
আমদানিতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বাধা দাড়াবে না।’
পড়ুন:রাশিয়া থেকে গম, ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে চাল আমদানি করবে সরকার
তৌফিক-ই- ইলাহি বলেন, খাদ্য, সার, জ্বালানি আমদানিতে যুক্তরাষ্ট্রের কোন বাধা নেই, বাংলাদেশ যদি রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি করে তাহলে তারা কোন আপত্তি করবে না।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে কিছু কূটনৈতিক শিষ্টাচার আছে। কিন্তু সহজ ‘আমি এটি বুঝতে পারি কখন তা মন্ত্রণালয় পর্যায়ে বলতে হবে, এর একটা গুরুত্ব আছে।’
এই উপদেষ্টা আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আন্ডার সেক্রেটারি বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন। সেসময়ই রাশিয়া থেকে বাংলাদেশের তেল আমদানির সুযোগ আছে কিনা তা জানতে চান।
গত সপ্তাহে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করা সম্ভব নয়।
জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব মাহবুব হোসেইন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বাংলাদেশে মাত্র ৪৫ দিনের জ্বালানি মজুদ আছে।
তিনি বলেন, ‘এটিকে আমরা বৃদ্ধি করে ৬০ দিনে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি।’ এই পরিকল্পনার আওতায় আমাদের বর্তমান রিজার্ভের ধারণক্ষমতা ১৫ লাখ মেট্রিক টন থেকে ৩০ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত করার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়া-ইউক্রেনসহ কোন দেশ থেকে খাদ্য আমদানিতে বাধা নেই: বাণিজ্যমন্ত্রী