বিধিনিষেধ
বিধিনিষেধের মধ্যে শিল্প কারখানা খুললে আইনানুগ ব্যবস্থা: জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে শিল্প কারখানা খোলার প্রমাণ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘খাদ্য পণ্য উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে যুক্ত মিল-কারখানা কোরবানির পশুর চামড়া পরিবহন সংরক্ষণ এবং ওষুধ শিল্প কারখানা বাদে সব শিল্প-কারখানা সরকারি-বেসরকারি অফিস বিধিনিষেধ অনুযায়ী বন্ধ থাকার কথা। শিল্প কল কারখানা খুলে থাকলে তা পর্যবেক্ষণ করছি, কারা খুলছে তা যদি প্রমাণ পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুনঃ লকডাউন: বিনা বাধায় ফেরিতে যাত্রী আসছে পাটুরিয়াঘাটে
সোমবার (২৬ জুলাই) মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পোশাক কারখানা খুলে দেয়ার বিষয়ে কোনো চিন্তা-ভাবনা এখন পর্যন্ত সরকারের নেই বলে জানান ফরহাদ হোসেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, রাস্তায় যখন মানুষ নামছে তখন বলছে তাদের চাকরিতে যেতে হচ্ছে, এটার সত্যতা যাচাই করার চেষ্টা করছি, তারা যেসব নাম বলছে সেগুলো চেক করার চেষ্টা করছি।
আরও পড়ুনঃ কঠোর লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীতে গ্রেপ্তার ৩৮৩
কঠোর লকডাউন হওয়ার কথা থাকলেও সেটি মাঠে দেখা যাচ্ছে না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যেহেতু গার্মেন্টস ও রপ্তানিমুখী কল-কারখানাগুলো বন্ধ রেখেছি, লাখ লাখ শ্রমিক আসা-যাওয়া করত সেগুলো কমেছে, এগুলো ছাড়া আরও বিভিন্ন কারণ আছে যে কারণে মানুষ বাইরে আসছে অযৌক্তিক কারণে। বের হলে কিন্তু আইনের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এছাড়া হাসপাতাল থেকে শুরু করে জরুরি সেবার সঙ্গে মানুষ বাধাহীনভাবে চলাফেরা করতে পারছে ।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কোনো নির্দেশনা দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি ছড়িয়ে গিয়েছে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা কঠিনভাবে তো প্রজ্ঞাপন জারি করেছি।
আরও পড়ুনঃ লকডাউনে ট্রলারে পিকনিক, খাবার গেল এতিমখানা মাদ্রাসায়
উল্লেখ্য করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গত ২৩ জুলাই থেকে বিধি-নিষেধ শুরু হয়েছে। এই বিধিনিষেধ থাকবে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত ।
বিধিনিষেধ শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি
আগামী ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার।
মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এতে বলা হয়, পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপন, জনসাধারণের যাতায়াত, ঈদ পূর্ববর্তী ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা, দেশের অর্থ-সামাজিবক অবস্থা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে এ বিধিনিষেধ শিথিল করা হলো।
তবে এ সময়ে সর্বাবস্থায় জনসাধারণকে সতর্ক অবস্থায় থাকা, মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানতে নির্দেশ দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ১৫ থেকে ২২ জুলাই লকডাউন শিথিল, ঈদের পর ফের কঠোর
৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে ১৫ জুলাই থেকে চলবে ট্রেন
এর আগে সোমবার রেলমন্ত্রী মো. নরুল ইসলাম সুজন বলেন, ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে আগামী ১৫ জুলাই থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলবে। আসন্ন ঈদুল আজহায় মানুষের চলাচলের জন্য আগামী ১৫ জুলাই থেকে ২২জুলাই পর্যন্ত সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল মন্ত্রণালয়।
তিনি বলেন, মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপনে বিস্তারিত জানানো হবে। এক্ষেত্রে টিকেট শুধুমাত্র অনলাইনে পাওয়া যাবে। কাউন্টারে কোন টিকেট দেয়া হবে না। মঙ্গলবার বিকেল থেকে অনলাইনে টিকিট বিক্রি শুরু হবে।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে করোনা ও উপসর্গ নিয়ে আরও ১৯ মৃত্যু
বিধিনিষেধ লঙ্ঘন: বাগেরহাটে ২০ জনের কারাদণ্ড, ৭০৯ জনকে জরিমানা
বাগেরহাটে সরকারি বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করার অপরাধে একসপ্তাহে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ২০ জনকে কারাদণ্ড দিয়েছে এবং ৭০৯ জনকে জরিমানা করেছে।
১ জুলাই থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সাথে নিয়ে নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেটরা এই অভিযান পরিচালনা করেন।
আরও পড়ুনঃ লকডাউন: বিধিনিষেধ না মানায় কুমিল্লায় ২৭৯ জনকে জরিমানা
অভিযান চলাকালে মাস্ক ব্যবহার না করা এবং স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করার অপরাধে ৭০৯ জনের কাছে থেকে তিন লাখ ৩১ হাজার ৮৩৫ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এছাড়া ২০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বাগেরহাট জেলাসদরসহ বিভিন্ন উপজেলার বাজারগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। মানুষ নানা অজুহাতে ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছে। অনেকেই আবার আড্ডা দিচ্ছেন অলিগলিতে।
আরও পড়ুনঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিধিনিষেধ বাড়লো, নতুন শনাক্ত ৬৯
তবে লকডাউনের ৮ম দিন বৃহস্পতিবার বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। শহর থেকে শুরু করে সড়ক-মহাসড়ক ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন, সেনাবাহিনী, বিজিবি এবং আনসার সদস্যরা টহল দিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সাথে নিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রটরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন।
আরও পড়ুনঃ মানিকগঞ্জে লকডাউন আমান্যে ৪৯ মামলা, জরিমানা
বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব মো.শাহীনুজ্জামান জানান, সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়ন করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা জেলার বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন। বিধিনিষেধ ভঙ্গ করলে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। গত একসপ্তাহে জেলার বিভিন্ন এলাকায় ৮৬টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালে ৭০৯ জনকে অর্থদন্ড এবং ২০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ সময়ে ৬৯০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চট্টগ্রামে ১৭ শর্তে বসবে পশুর হাট
করোনার বিধি নিষেধের মধ্যে আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে চট্টগ্রামে ১৭টি শর্তসাপেক্ষে বসবে পশুর হাট।
এর আগে স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে মোট ১১টি স্থানে পশুর হাট ইজারা দেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এসব পশুর হাট বসানোর জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে অনুমোদনও চেয়েছিল চসিক। তবে শেষ পর্যন্ত তিনটি স্থায়ী পশুর হাটের পাশাপাশি আরও তিনটি অস্থায়ী হাট বসানোর অনুমতি মিলেছে।
আগামী ১২ জুলাই থেকে ১৭টি শর্তে ১০ দিনের জন্য (কোরবানির আগের দিন পর্যন্ত) এসব অস্থায়ী হাট বসবে। সেগুলো হলো-কর্ণফুলী পশুর হাট (নূরনগর হাউজিং এস্টেট), সল্টগোলা রেলক্রসিং পশুর হাট এবং পতেঙ্গা বাটারফ্লাই পার্কের দক্ষিণে টিকে গ্রুপের খালি মাঠ। গত কোরবানির ঈদে তিনটি স্থায়ী পশুর হাটের পাশাপাশি চারটি অস্থায়ী হাট বসেছিল নগরীতে।
আরও পড়ুন: গরু কিনে ‘ডিজিটাল পশুর হাট’ উদ্বোধন করলেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরীতে তিনটি স্থায়ী পশুর হাট রয়েছে। এগুলো হচ্ছে সাগরিকা, বিবিরহাট ও পোস্তারপাড় বাজার।
জেলা প্রশাসনের দেয়া ১৭ শর্তের মধ্যে রয়েছে-অস্থায়ী পশুরহাট প্রধান সড়ক থেকে কমপক্ষে ১০০ গজ দূরে বসাতে হবে যাতে কোনো অবস্থাতেই প্রধান সড়কের যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি না হয়। ইজারালব্ধ অর্থের ২০ শতাংশ ভূমি রাজস্ব দিতে হবে, হাটের বাইরে সড়কে কোনো পশু রাখা বা খুঁটি স্থাপন করা যাবে না। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে হাটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে, ঢোকা ও বের হওয়ার পথে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান-পানির ব্যবস্থা রাখতে হবে। হাটে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় লাইনে দাঁড়িয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। ক্রেতা-বিক্রেতা সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। চাঁদা আদায় বা ক্রেতা-বিক্রেতাকে হয়রানি করা যাবে না। জাল নোট শনাক্তের যন্ত্র বসাতে হবে। জেলা প্রশাসন হাট পরিদর্শনের সময় চসিক ও ইজারাদার সব ধরনের সহযোগিতা নিশ্চিত করবে।
আরও পড়ুন: যত্রতত্র পশুর হাট নয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের প্রবেশ ও বের হওয়ার আলাদা পথ থাকতে হবে। জটলা সৃষ্টি যাতে না হয় সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে। বৃদ্ধ ও শিশুদের হাটে আসাকে নিরুৎসাহিত করতে হবে, অনলাইনে পশু কেনাবেচাকে উৎসাহ দিতে হবে। ইজারাদারকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ স্বেচ্ছাসেবক রাখতে হবে। ভেটেরিনারি চিকিৎসক বা সার্জনের অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে হবে। আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক সমস্যা দেখা দিলে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে সমাধান করতে হবে। সড়কে পশু পরিবহনের সময় ইজারাদার বা প্রতিনিধি গাড়ির পথ পরিবর্তন বা নিজের হাটে পশু নিতে বাধ্য করতে পারবে না। শর্ত লঙ্ঘন হলে যেকোনো সময় অনুমতি বাতিল হবে।
আরও পড়ুন: নির্ধারিত স্থানের বাইরে পশুর হাট বসতে দেয়া হবে না: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
চসিকের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সাতটি অস্থায়ী হাট বসানোর অনুমতি চেয়েছিলাম। এর মধ্য তিনটি অস্থায়ী হাট বসানোর অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসক। করোনার সংক্রমণ রোধে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ হাটগুলো বসানো হবে।’
লকডাউন: বিধিনিষেধ না মানায় কুমিল্লায় ২৭৯ জনকে জরিমানা
কুমিল্লা নগরীতে সরকার ঘোষিত প্রথম সপ্তাহের কঠোর লকডাউনের পঞ্চম দিনে সড়কে বেড়েছে মানুষ ও যানবাহন চলাচল। সরকারি বিধিনিষেধ না মানায় জেলা প্রশাসন বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে মামলা ও জরিমানা করছেন।
আরও পড়ুনঃ কঠোর লকডাউনের মেয়াদ বাড়ল আরও ৭ দিন
গত ২৪ ঘণ্টায় জেলা প্রশাসন ও উপজেলার নির্বাহী প্রশাসন ৩৯টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। অভিযানে সরকারি বিধিনিষেধ না মানায় ২৬৮টি মামলায় ২৭৯ জনকে ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৭৫০ টাকা জরিমানা করেন।
আরও পড়ুনঃ লকডাউন অমান্য করায় বরিশালে ৪৯৯ জনকে জরিমানা
এসময় ১৯২ জনকে প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য উপহার প্রদান করা হয়।
সোমবার সকালে কুমিল্লা নগরীতে ও উপজেলায় সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশি টিম টহল দিতে দেখা গেছে। দোকানপাট ও শপিংমলগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।
কঠোর লকডাউনে ২১ দফা নির্দেশনা, থাকছে সেনাবাহিনী
দেশে করোনাভাইরাস জনিত কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ হঠাৎ বৃদ্ধি পাওয়ায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়ে গেছে। এই অবস্থায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ এবং মানুষের জীবন বাঁচানোর লক্ষ্যে আগামী বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা থেকে ৭ জুলাই মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার।
সাত দিনের প্রাথমিক কঠোর লকডাউন পরিপূর্ণভাবে নিশ্চিত করতে, বুধবার ২১ দফা নির্দেশনাসহ প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
আরও পড়ুন: দেশে করোনা আক্রান্ত ৯ লাখ ছাড়াল, ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ১১২
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সকল সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি অফিসসমূহ বন্ধ থাকবে। তবে, আদালত সমূহের ব্যাপারে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট এবং ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালানার ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে।
আরও পড়ুন: করোনা মহামারি থেকে বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠদের নিরাপদ রাখবেন কিভাবে?
এদিকে অভ্যন্তরীণ সকল প্রকার যান্ত্রিক যানবাহন চলাচল বন্ধের পাশাপাশি, শপিংমল/মার্কেটসহ দোকানপাট, সকল প্রকার বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে। এর পাশাপাশি সকল প্রকার জনসমাবেশ ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
আরও পড়ুন: বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৮ কোটি ১৮ লাখ
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জরুরি পরিষেবা, যেমন কৃষি পণ্য, খাদ্যশস্য পরিবহন, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্য সেবা, করোনা টিকা প্রদান, রাজস্ব আদায় সংশ্লিষ্ট কাজ, বিদ্যুৎ,পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন, ইন্টারনেট, সকল গণমাধ্যম, বেসরকারি নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ডাক সেবা, ব্যাংক, ফার্মেসি ও ফার্মাসিটিক্যালসসহ অন্যান্য জরুরি পণ্য ও সেবার সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অধীনে নিয়োজিত ব্যক্তি ও যানবাহন পরিচয়পত্র প্রদর্শনপূর্বক যাতায়াত করতে পারবে।
পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত সকল পরিবহন, সকল বন্দর (বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থল), শিল্প-কলকারখান এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে।
আরও পড়ুন: করোনা: মৃত্যুতে রেকর্ডের একদিন পর শনাক্তেও রেকর্ড
এছাড়া, কাঁচাবাজার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৯ট থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। করোনার টিকা গ্রহণ, হোটেল-রেস্তোরা থেকে খাবার ক্রয় এবং বিদেশ যাত্রায় বাঁধা থাকছে না।
আরও পড়ুন: ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩ কোটি ২ লাখ ছাড়িয়েছে
সর্বশেষ পরিস্থিতি
মঙ্গলবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাসে দেশে ২৪ ঘণ্টায় আরও ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনিয়ে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৩৮৮ জনে।
এর আগে সোমবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ৮ হাজার ৩৬৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়াতে করোনায় আরও ৮ মৃত্যু
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩১ হাজার ৯৮২টি। শনাক্তের হার ২৩.৯৭ শতাংশ। মৃতদের মধ্যে ৬৭ জন পুরুষ এবং ৪৫ জন নারী।
নতুন করে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ২৭ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ১১ হাজার ৭০০ জন। সুস্থতার হার ৮৯.৭৫ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১.৫৯ শতাংশ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিধিনিষেধ বাড়লো, নতুন শনাক্ত ৬৯
চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনার সংক্রমণ রোধে জেলা প্রশাসনের জারি করা কঠোর বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। চলবে ৩০জুন পর্যন্ত।
বুধবার বিকালে জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে পাঠানো এক ইমেইল বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ রাজশাহীতে আরও এক সপ্তাহ বাড়ল লকডাউন
কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে রয়েছে, স্বাস্থবিধি মেনে সকল দোকানপাট সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। বন্ধ থাকবে সাপ্তাহিক হাট। খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তরা সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে। তবে সেখানে বসে খাওয়া যাবেনা।
এছাড়া জেলার মধ্যে গণপরিবহনসমূহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসন সংখ্যার অর্ধেক সংখ্যক যাত্রী নিয়ে চলাচল করবে। আম পরিবহনের যানবাহন ছাড়া সকল আন্তঃজেলা গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। জনসমাবেশ হয় এমন ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে। মসজিদে নামাজে সর্বোচ্চ ২০জন মুসল্লী অংশ নিতে পারবেন।
আরও পড়ুনঃ সারাদেশে লকডাউনের বিষয়ে যা জানাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
উল্লেখ্য করোনা ভাইরাস সংক্রমন রোধে গত ৮জুন থেকে জেলা জুড়ে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল জেলা প্রশাসন।
এদিকে গত ২৪ ঘন্টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও ১জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। আর এ নিয়ে জেলায় করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৯৭ জনে। ৭৮৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় নতুন শনাক্ত হয়েছে ৬৯জন।
এতে সংক্রমনের হার ৮.৮০শতাংশ।
রাজশাহীতে আরও এক সপ্তাহ বাড়ল লকডাউন
রাজশাহী মহানগরীতে আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে সর্বাত্মক লকডাউন। চলবে আগামী ৩০ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত। এ নিয়ে তৃতীয় দফা লকডাউন বাড়ানো হলো রাজশাহীতে।
বুধবার রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুনঃ সারাদেশে লকডাউনের বিষয়ে যা জানাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
বিকেল সাড়ে ৩টায় এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা প্রশাসক বলেন, মঙ্গলবার সিটি মেয়রসহ প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তরের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জরুরী বৈঠক করা হয়েছে। সেই বৈঠকে রাজশাহীর করোনা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে লকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একই সঙ্গে সিটি করপোরেশন এলাকায় লকডাউনের পাশাপাশি উপজেলা এলাকায় বিধিনিষেধ বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত হয় যেন মানুষ অতি জরুরী প্রয়োজন ছাড়া এলাকার বাইরে যেতে না পারে।
আরও পড়ুনঃ বেনাপোলে আজ থেকে ৭ দিনের কঠোর লকডাউন
জেলা প্রশাসক বলেন, লকডাউনে সকল ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শপিংমহল, মার্কেট, দোকান, রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকবে। তবে ওষুধ, কাঁচাবাজার, চিকিৎসা সেবা লকডাউনের আওতামুক্ত থাকবে। এছাড়াও লকডাউনের সময় বাস, ট্রেনসহ কোন প্রকার যানবাহন রাজশাহী নগরে প্রবেশ করতে পারবে না এবং রাজশাহী মহানগর থেকে বাইরে যেতে পারবে না। তবে আমসহ কৃষি ও খাদ্য সামগ্রীবাহী পরিবহন চলাচল করবে। জনসমাবেশ হয় এমন সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
উল্লেখ্য, গত ঈদের পর থেকে রাজশাহীতে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকলে গত ১১ জুন সিটি করপোরেশন এলাকায় এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এরপর গত ১৬ জুন তা আরেক সপ্তাহ বাড়িয়ে ২৪ জুন মধ্য রাত পর্যন্ত করা হয়েছিল।
নেত্রকোণায় সীমান্তবর্তী দুই উপজেলায় কঠোর বিধিনিষেধ
করোনা সংক্রমণ হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় নেত্রকোণার ভারতীয় সীমান্তবর্তী দূর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় নেত্রকোণায় ১৮ জনের করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। তার মধ্যে দূর্গাপুরেই ৯ জন।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার থেকে ৭ জেলায় ‘লকডাউন’
রবিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই বিধিনিষেধ জারি করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কয়েকদিন ধরে সীমান্তের দুই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় করোনা ভাইরাসের প্রকোপ আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকায় মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা চিন্তা করে এ বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
বিধিনিষেধের মধ্যে রয়েছে, সীমান্ত এলাকায় ওষুধের দোকান ছাড়া অন্যান্য দোকানগুলো পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সন্ধ্যা ৬টার পর বন্ধ রাখতে হবে। দুই উপজেলার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে বন্ধ রাখতে হবে। এছাড়া বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ নিজ বাড়ির বাইরে যেতে পারবে না।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়া জেলায় ৭ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা
মৃতদেহ সৎকার বা জরুরি চিকিৎসা সেবায় মাস্ক পরে, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ জীবাণুনাশক ব্যবহার করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। দিনের বেলা কাঁচাবাজারগুলো উম্মুক্ত স্থানে নিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
জেলা প্রশাসক কাজি মো. আব্দুর রহমান বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ যাতে না বাড়ে সেজন্য আমরা কলমাকান্দা ও দুর্গাপুর উপজেলায় বিধিনিষেধ দিয়েছি। কোথাও করোর করোনা শনাক্ত হলে আমরা তাকে দ্রুত হোম কোয়ারেন্টাইন অথবা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করছি। আশপাশের এলাকায় বিধিনিষেধ দিচ্ছি, যাতে এটা বেশি না ছড়াতে পারে।’
ফরিদপুরে ৩ পৌর এলাকায় ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ শুরু
ফরিদপুরের তিন পৌর এলাকায় সোমবার থেকে সাতদিনের কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হয়েছে।
ঘোষিত বিধিনিষেধ সোমবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়েছে, চলবে আগামী ২৮ জুন পর্যন্ত।
এসময় ঘোষিত বিধিনিষেধ জারিকৃত এলাকায় খুলবে না কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, চলবে না কোনো প্রকার যানবাহন, থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়া জেলায় ৭ দিনের কঠোর লকডাউন ঘোষণা
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যাওয়ায় ফরিদপুর সদর, বোয়ালমারী, ভাঙ্গা পৌর শহর এলাকায় সাত দিনের এই বিধি নিষেধ জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
সকাল থেকেই দেখা গেছে, ফরিদপুর পৌর শহরের প্রত্যেকটি প্রবেশ দ্বারে বসানো হয়েছে পুলিশের নজরদারি। কোন যানবাহন শহরের ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদের সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
এদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড আইসিইউয়ে আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: আগামী ২২ জুন থেকে খুলনায় ফের লকডাউন
জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ফরিদপুরের পিসিআর ল্যাবে ২৬৩টি নমুনা পরীক্ষার মধ্যে ১০১টি করোনা পজেটিভ হয়েছে, আর মারা গেছেন আরও দুজন। এনিয়ে জেলায় কোভিড-১৯ এ মৃত্যের সংখ্যা দাঁড়াল ২০১ জন।
ফরিদপুর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর তুহিন লস্কর বলেন, ‘শহরের প্রবেশের সকল সড়কে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়া কাউকেই চলা ফেরা করতে দেয়া হচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় আরও এক সপ্তাহ বাড়ল লকডাউন
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, হঠাৎ করে করোনার শনাক্তের হার বেড়েছে, অন্যদিকে তুলনামূলক ভাবে মৃত্যুও বাড়ছে। যে কারণে জেলার মানুষের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে তিন পৌর শহরে সাত দিনের কঠোর বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এ জন্য জেলার সকলকেই সহযোগিতা করতে হবে, তবেই আমরা করোনা জয় করতে পারব। শুধু ম্যাজিস্ট্রেট বা আইন শৃঙ্খলাবাহিনী দিয়ে এই মহামারির হাত থেকে নিরাপদ থাকা সম্ভব হবে না।’