টিকা
টিকা নিতে শিক্ষার্থীদের ভিড়, স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই
করোনার টিকা নিতে ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলের মাধ্যমিকস্তরের শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। রানীশংকৈল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যালয়ে অস্থায়ী টিকা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এই একটি মাত্র কেন্দ্রে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়।
গত বৃহস্পতিবার উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা দেয়া শুরু হয়।
শনিবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এক সঙ্গে অনেক শিক্ষার্থী টিকা নিতে আসে। তাদের সঙ্গে অভিভাবকরাও ছিলেন। স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই ছিল না, যে যাঁর মতো করে চলেছেন। হাসপাতালের সামনেই ছিল অভিভাবকদের ভিড়। সেখানে গাদাগাদি করে একে অপরের সঙ্গে গল্প মেতে উঠেন তাঁরা।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে কোনো নিয়মের বালাই নেই। কেউ শারীরিক দূরত্ব মানছে না। সবাই গা ঘেঁষে দাঁড়াচ্ছে। এতে কারও করোনা হয়ে থাকলে অন্যদের মধ্যেও তা সংক্রমিত হবে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের নজর দেয়া উচিত ছিল।
আরও পড়ুন: করোনার টিকার জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ!
রাণীশংকৈলের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীরা টিকা নিতে এই কেন্দ্রে আসে। কিন্তু সেখানে কোনো সামাজিক দূরত্ব মানা হয়নি। শিক্ষার্থীরা গাদাগাদি করে দীর্ঘ অপেক্ষায় অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। কারও মুখে মাস্ক নেই।
এছাড়া টিকা কেন্দ্রটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকের পাশে হওয়ায় সড়কে দেখা দেয় যানজট। ফলে ভোগান্তিতে পড়েন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরাও।
অভিভাবকেরা জানান, একসঙ্গে এত বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীকে মাত্র একটি কেন্দ্রে টিকা দেয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি। এ অব্যবস্থাপনার কারণে করোনামুক্ত হওয়ার বদলে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ চাইলে আরও আগে থেকেই কেন্দ্র সংখ্যা বাড়িয়ে শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার পরিসর বাড়ানো যেত।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আব্দুস সামাদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি শিক্ষার্থীদের মাস্ক ব্যবহার করাতে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা মাস্ক পরতে অনীহা প্রকাশ করে।’
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে ১২ থেকে ১৭ বছরের শতভাগ শিক্ষার্থীর টিকাদান সম্পন্ন
৩১ জানুয়ারির মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হবে: শিক্ষামন্ত্রী
করোনার টিকার জন্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ!
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার চাঁচুড়ী পুরুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টিকা দেয়ার রেজিস্ট্রেশন এবং টিকা কেন্দ্রে যাতায়াত খরচ বাবদ মাথাপিছু ১০০ টাকা করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জানুয়ারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত উপজেলার ৯ হাজার ৩৫২ জন শিক্ষার্থীকে করোনার টিকা দেয়া হয়েছে।
গত ৬ জানুয়ারি প্রথম পর্যায়ে ৬ষ্ঠ থেকে এসএসসি-২০২১ পরীক্ষার্থীদের টিকা নেয়ার নির্ধারিত তারিখ ছিল। উপজেলার চাঁচুড়ী পুরুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকা নেয়ার কেন্দ্র ছিল নড়াইল নার্সিং ইনস্টিটিউট টিকা কেন্দ্রে।ি
এজন্য ৫ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী সকল শিক্ষার্থীকে তাদের জন্মনিবন্ধনের দুই কপি ফটোকপিসহ ১০০ টাকা করে নিয়ে স্কুলে আসার জন্য বিশেষ নির্দেশ দেন। এরপর প্রথমবার বাদ পড়ে যাওয়া শিক্ষার্থীদের ১২ জানুয়ারি টিকা দেয়া হয়। এজন্য ১১ জানুয়ারি তাদের কাছ থেকেও প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম জন্মনিবন্ধনের দুই কপি ফটোকপিসহ ১০০ টাকা করে রেজিস্ট্রেশন ও যাতায়াত খরচ বাবদ নেন।
আরও পড়ুন: নড়াইলে ধর্ষণ মামলায় স্বামীর যাবজ্জীবন, স্ত্রীর ৭ বছরের কারাদণ্ড
চাঁচুড়ী পুরুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, ৫ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম স্কুলের প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ১০০ টাকা নিয়ে বিদ্যালয়ে হাজির হতে বলেন। করোনা টিকার রেজিস্ট্রেশনের জন্য এবং টিকাকেন্দ্রে যাতায়াত খরচ বাবদ ওই টাকা লাগবে বলে জানানো হয়। প্রধান শিক্ষকের নির্দেশনা অনুযায়ী সব শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রেশনের জন্য নির্ধারিত তারিখে টাকাসহ লাইনে দাঁড়ানোর পর শিক্ষকরা টাকা নেয়।
ওই বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীর অভিযোগ, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনেকের কাছ থেকে করোনার টিকার রেজিস্ট্রেশনের নামে ১০০ টাকা করে আদায় করেছেন। ঘটনা আঁচ করতে পেরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম ১০০ টাকা করে শিক্ষার্থীর জন্য যাতায়াত খরচ বলে চালিয়ে দেন।
অথচ শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদেরকে গাদাগাদি করে নিম্নমানের বাসে করে টিকাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে এ অভিযোগের বিষয়ে চাঁচুড়ী পুরুলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম ১০০ টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন,শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার যাতায়াতের জন্য খরচ করে যে টাকা অবশিষ্ট থাকবে সেটা দ্বিতীয় ডোজের সময় খরচ করা হবে।
আরও পড়ুন: নড়াইলে পৃথক মাদক মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন
টাকা নেয়ার নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে তিনি বলেন, আমি কোনো অন্যায় করিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহাজান মিয়া বলেন,বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যাবস্থাপনা কমিটি শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। ‘টিকা রেজিস্ট্রেশন বা টিকা নেয়ার জন্য যাতায়াত ভাড়া কিংবা ভিন্ন নামে টাকা আদায়ের নিয়ম নেই। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.আরিফুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ‘টিকা রেজিস্ট্রেশন বা টিকা নেয়ার জন্য যাতায়াত ভাড়া কিংবা ভিন্ন নামে টাকা আদায়ের নিয়ম নাই। আপনারা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানান। লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: নড়াইলে হত্যা মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে শাবিপ্রবিতে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু
শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ক্যাম্পাসে দুই দিনব্যাপী জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব শিক্ষার্থীর এনআইডি নেই তাদের সুবিধার্থে বিশেষ ব্যবস্থায় এ কার্যক্রম শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।রবিবার (৯ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে নিবন্ধন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।উদ্বোধনকালে উপাচার্য বলেন, করোনাকালীন সময়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কর্যক্রম থেমে থাকেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীদের টিকা নিশ্চিত করতে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রয়োজন। যারা এনআইডি ছাড়া টিকা নিয়েছে তাদের এনআইডির তথ্য দ্রুত জমা দিতে হবে। এজন্য বিশেষ ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের এনআইডি প্রদানে আমাদের এই উদ্যোগ। নির্বাচন কমিশনসহ সংশিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি।উদ্বোধনকালে শাবিপ্রবি মেডিকেল সেন্টারের প্রশাসক অধ্যাপক ড. মো. কবির হোসেন, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক জহীর উদ্দিন আহমেদ, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আলমগীর কবির, রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেন, আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদের, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শুকুর মাহমুদ, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এমদাদুল হক, সোহরাব হোসেন প্রমুখ।
আরও পড়ুন: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ পাচ্ছেন শাবিপ্রবির ৬০ শিক্ষার্থী
কাউনের চালের তৈরি নুডলস নিয়ন্ত্রণ করবে ডায়াবেটিস: শাবিপ্রবির গবেষণা
কারিগরি কমিটির সঙ্গে বৈঠকের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিষয়ে সিদ্ধান্ত: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিষয়ে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সঙ্গে রবিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
করোনা মহামারি মোকাবিলায় বিভিন্ন সুপারিশের জন্য স্বাধীন বিশেষজ্ঞ ও সরকারি প্রতিনিধিদের নিয়ে ২০২০ সালের এপ্রিলে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি গঠন করে সরকার।
শনিবার রাজধানীর ঢাকা ইম্পেরিয়াল কলেজের রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘সরকার আপাতত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে চায় না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মার্চ-এপ্রিলে করোনার সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা করছিলাম। কিন্তু শনাক্তের সংখ্যা জানুয়ারির শুরু থেকেই বাড়তে শুরু করেছে। তাই আগের পরিকল্পনার সঙ্গে কিছু সমন্বয় করতে হবে।’
মন্ত্রী বলেন, সরকার করোনার টিকাদানের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে যাতে শিক্ষার্থীরা টিকা নিয়ে ক্লাসে যোগ দিতে পারে।
টিকা ছাড়া স্কুলে যেতে পারবে না ১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীরা
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেছেন, ১২ বা তার বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের স্কুল যাওয়ার জন্য কমপক্ষে করোনা ভ্যাকসিনের একটি ডোজ গ্রহণ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছে, টিকা না নিয়ে কেউ স্কুলে আসতে পারবে না। ৩ জানুয়ারি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং আজ বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি মন্ত্রিসভার বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন এবং অন্যারা বাংলাদেশ সচিবালয় থেকে যুক্ত ছিলেন।
এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১২ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীদের স্কুল যাওয়ার জন্য টিকার কমপক্ষে একটি ডোজ নিতে হবে।
আরও পড়ুন: দেশের প্রতিটি নাগরিককে টিকা গ্রহণের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফাইজারের আরও প্রায় ২৫ লাখ ডোজ পৌঁছেছে
কোভ্যাক্স সুবিধার অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া ফাইজার টিকার আরও ২৪ লাখ ৯০ হাজার ৭৮০ ডোজ দেশে পৌঁছেছে। রবিবার সকাল ৮টা ২৭ মিনিটের দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চালানটি এসে পৌঁছায়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ফাইজার টিকার ৪৬ লাখ ডোজের আরেকটি চালান ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ২৮ ডিসেম্বর থেকে ফাইজার টিকার সঙ্গে বুস্টার ডোজ দেয়া শুরু করেছে। শনিবার (১ জানুয়ারি) পর্যন্ত ফাইজার টিকার সঙ্গে ৩৫ হাজার ৭৩৮ বুস্টার ডোজ দেয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে, ৬১ হাজার ৫৩৯ জন ফাইজারের প্রথম ডোজ পেয়েছেন এবং ১৭ লাখ ৪৫ হাজার ৯৯৬ জন শনিবার পর্যন্ত ফাইজারে দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন।
জাতীয় কোভিড-১৯ টিকাদান অভিযানকে সমর্থন করতে এবং মহামারি মোকাবিলায় সরকারের প্রতিক্রিয়া জোরদার করতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে।
বাংলাদেশ ২১ জুন কোভিড -১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ঢাকার তিনটি কেন্দ্রে ফাইজার-বায়োটেক টিকার প্রথম ডোজ পরিচালনা শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: ওমিক্রনের বিরুদ্ধে ফাইজারের পিল কার্যকর
বাংলাদেশকে আরও ১৮ লাখ ডোজ ফাইজার টিকা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
ফকিরহাটে শতভাগ মানুষকে টিকাদান
বাংলাদেশের প্রথম উপজেলা হিসেবে বাগেরহাটের ফকিরহাটে করোনার টিকা পাওয়ার যোগ্য শতভাগ মানুষ কমপক্ষে এক ডোজ টিকা নিয়েছেন। এমন সময়ে এ উল্লেখযোগ্য অর্জন হলো যখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশ টিকার নেয়ার বিষয়ে মানুষকে বুঝাতে লড়াই করছে।
বৃহস্পতিবার ফকিরহাট প্রথম উপজেলা হিসেবে টিকা পাওয়ার যোগ্য শতভাগ মানুষকে এক ডোজ টিকা দেয়া সম্পন্ন করেছে।
ফকিরহাট উপজেলায় এক লাখ ৬৩ হাজার মানুষ বসবাস করেন। তারা মাসের পর মাস ও দিনের পর দিন দীর্ঘ সারিবদ্ধ হয়ে টিকার জন্য কেন্দ্রে দাঁড়িয়েছেন।
ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক, কুমার- বৃদ্ধ, তরুণ, ধনী, দরিদ্র, উচ্চ বা কম শিক্ষিত- সবাই তাদের নাম ডাকা হলে উপস্থিত হয়েছেন এবং কয়েক সপ্তাহ পর আবার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: তিনটি দেশে ৭ কোটি কোভোভ্যাক্স টিকার ডোজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে ভারত
তিনটি দেশে ৭ কোটি কোভোভ্যাক্স টিকার ডোজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে ভারত
নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার উৎপাদিত করোনা ভ্যাকসিন কোভোভ্যাক্সের সাত কোটি ডোজ টিকা রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে ভারত সরকার।
এনডিটিভি জানিয়েছে, বিদেশে ভ্যাকসিনের ডোজ রপ্তানির ছাড়পত্রের জন্য ভারতের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা ডিসিজিআই কাছে একটি আবেদন জমা দিয়েছে সিরাম ইনস্টিটিউট।
সূত্রটি জানিয়েছে, মূল্যায়নের পর ডিসিজিআই অফিস নেদারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে কোভোভ্যাক্সের সাত কোটি ডোজ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ভারতে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫০ ছাড়িয়েছে
এই ভ্যাকসিন এখনও এই দেশগুলোতে অনুমোদিত নয়।
ভারতের কেন্দ্রীয় ওষুধ কর্তৃপক্ষ (সিডিএসসিও) মঙ্গলবার দেশে জরুরি পরিস্থিতিতে সীমিত ব্যবহারের জন্য কোভোভ্যাক্সের অনুমোদন করেছে।
ডিসিজিআই অফিস ১৭ মে কোভোভ্যাক্স তৈরি ও স্টক করার জন্য এসআইআই অনুমতি দিয়েছে৷ ডিসিজিআই অনুমোদনের ভিত্তিতে এখন পর্যন্ত, পুনে-ভিত্তিক সংস্থাটি ভ্যাকসিন ডোজ তৈরি ও মজুদ করেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: ভারতে শিখ মন্দিরের ভেতর একজনকে পিটিয়ে হত্যা
এর আগে ভাইরাল রোগের বিরুদ্ধে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃত বৈধ জ্যাবগুলির ঝুড়ি প্রসারিত করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৭ ডিসেম্বর কোভোভ্যাক্সের জন্য একটি জরুরি ব্যবহারের তালিকা জারি করেছিল।
ভারতের জরুরি ব্যবহারের অনুমোদনের আগে সংস্থাটি নভেম্বর মাসে ইন্দোনেশিয়ায় কোভোভ্যাক্সের দুই কোটি ডোজ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল।
দেশের প্রতিটি নাগরিককে টিকা গ্রহণের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন করে করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে দেশের প্রতিটি নাগরিককে টিকা গ্রহণের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। কেননা সরকার তৃণমূল পর্যায়ে টিকাদান অভিযান সহজলভ্য করার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই প্রতিটি কমিউনিটি ক্লিনিক ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যাতে গ্রামীণ জনগণ শিগগিরই টিকা নিতে পারে।
অনেকে এখনও ভ্যাকসিন গ্রহণে অনীহা দেখান উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারো টিকা ছাড়া থাকা উচিত নয়। সকলকে অবশ্যই এটি নিতে হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে একদিন যুদ্ধবিমান তৈরি হবে, আশা প্রধানমন্ত্রীর
বুধবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ভার্চুয়ালি এক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে তিনি মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) এবং এর সমমানের পরীক্ষা-২০২১-এর ফলাফল প্রকাশ করেন এবং ২০২২ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের উদ্বোধন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যেহেতু করোনা টিকা কমিউনিটি ক্লিনিক বা অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে দেয়া হবে, তাই যারা এখনও ভ্যাকসিন পাননি তাদের সবাইকে তা নিতে হবে।
আরও পড়ুন: লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড: আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
সরকার ইতোমধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের টিকা দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন শিক্ষার্থীদের টিকা দেয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী এসময় শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সকল শিক্ষার্থী যাতে টিকা পান সেজন্য আন্তরিক হওয়ার নির্দেশ দেন।
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, শুধু অভিভাবকদের নয়, তাদের সন্তানদেরও টিকা নিতে হবে।
জানুয়ারি থেকে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে টিকা দেয়া হবে
আগামী মাস (জানুয়ারি) থেকেই দেশের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে টিকা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, ‘আগামী মাস থেকে প্রতি মাসে আমরা অন্তত চার কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেয়ার কাজ শুরু করছি। এর জন্য আগামী মাস থেকেই আমরা দেশের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ভ্যাকসিন দেয়ার উদ্যোগ নিচ্ছি। এতে করে আশা করা যায়, আগামী মে-জুনের মধ্যেই আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সক্ষম হবো।’
বুধবার দুপুরে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে বিডিসিএল’র আয়োজিত বিডিসিএল এর বার্ষিক জেনারেল মিটিং এ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই ৩১ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন জোগানের ব্যাবস্থা করেছি। এই ভ্যাকসিন থেকে প্রতি মাসেই প্রয়োজনীয় পরিমাণে ভ্যাকসিন আমাদের হাতে চলে আসছে। এর মধ্যেই সাত কোটি প্রথম ডোজ, পাঁচ কোটি ডাবল ডোজসহ মোট ১২ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া সম্ভব হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য পূরণ করতে বুস্টার ডোজসহ মোট ২৮ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন প্রয়োজন হবে। সেক্ষেত্রে সরকারের ৩১ ডোজ ভ্যাকসিন হাতে পাওয়ার সংস্থান করা গেছে। কাজেই বুস্টার ডোজসহ আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ২৮ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন লাগলেও আমাদের হাতে আরও তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন হাতেই থাকবে। আর ইতোমধ্যে আমরা স্কুল পর্যায়ে সহ বস্তিতে গিয়েও ভ্যাকসিন দিয়েছি। ’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, দেশে বিডিসিএল এর উৎপাদন চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে। দেশের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে নানারকম ওষুধের উৎপাদনের চাহিদাও পাচ্ছে বিডিসিএল। কিন্তু সে তুলনায় বিডিসিএল স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। অবকাঠামো দুর্বলতা, যন্ত্রপাতির ঘাটতি, ফ্যাক্টরির জায়গা স্বল্পতাসহ এখানে নানারকম সমস্যা রয়েছে। এজন্য বিডিসিএল এর জন্য একটি অত্যাধুনিক মানের কারখানা নির্মাণের বিল এখন একনেকে রয়েছে।
আরও পড়ুন: ওমিক্রন মোকাবিলায় বুস্টার ডোজ সহায়ক হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এটি দ্রুতই সম্পন্ন হয়ে যাবে। এসব উদ্যোগ সম্পন্ন করার পর বিডিসিএল আরও বেশি শক্তিশালী হবে।’
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে আরও জানান, বাংলাদেশ করোনা মোকাবিলায় বিশ্ববাসীর প্রশংসা পেয়েছে। সাউথইস্ট এশিয়াতে করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশ প্রথম হয়েছে। ব্লুমবার্গ প্রশংসা করেছে। ১২০টি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন করা হয়েছে। ফিল্ড হাসপাতাল করা হয়েছে। হাসপাতাল বেড বাড়ানো হয়েছে। দেশে করোনার সময় কোথাও ওষুধ বা অক্সিজেন সংকট দেখা দেয়নি। সঠিক চিকিৎসা গাইডলাইন ছিল বলেই করোনা এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সামনে ওমিক্রনে আবার চাপ বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে শুধু ভ্যাকসিন ওমিক্রন ঠেকাবে না। আমাদের স্বাস্থ্যবিধি যথার্থ নিয়মে মানতে হবে। তাহলেই ওমিক্রন ছড়াবে না বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ওমিক্রন মোকাবিলায় সবাইকে মুখে মাস্ক পড়ারও আহ্বান জানান জাহিদ মালেক।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়ার সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর এবিএম খুরশিদ আলম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর শারফুদ্দিন আহমেদ, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু, ডিজিডিএ এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমানসহ অন্যান্য বক্তারা। সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ইডিসিএল এর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ডা. এহসানুল কবির।
আরও পড়ুন: পর্যটন স্পটে মাস্ক না পরায় করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশংকা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
মহাখালী বিসিপিএসএ থেকে বুস্টার ডোজের কার্যক্রম শুরু হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী