নির্বাচন কমিশন
ইসি গঠনে সরকারের পদক্ষেপ আরেকটি ‘উপহাস’: বিএনপি
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপের পর নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপকে আরেকটি ‘উপহাস' বলে বর্ণনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, যারা বলপ্রয়োগ করে দেশ শাসন করবে তারাই আইন করবে। এরপর আইন অনুযায়ী সার্চ কমিটি গঠন করা হবে। অন্য কথায়, সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতিকে একটি তালিকা দেবে যা প্রধানমন্ত্রী সরবরাহ করবেন।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: গ্যাসের দাম বৃদ্ধির পাঁয়তারা করছে সরকার: বিএনপি
বিএনপি নেতা বলেন, রাষ্ট্রপতি শুধু ওই তালিকা থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনারদের নাম ঘোষণা করবেন।
তিনি বলেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য এটি একটি উপহাস মাত্র। সরকার প্রথমে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে উপহাস করেছিল।
বিএনপি নেতা বলেন, বহুল আলোচিত ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ এবং নির্বাচন কমিশনার বিল-২০২২’ (রবিবার) সংসদে উত্থাপন করা হবে। কারণ সরকার এ বিষয়ে সংবিধান অনুযায়ী একটি আইন করতে চায়।
গত সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিলটির খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ইসি আইনের খসড়া না পড়েই বিএনপি’র মন্তব্য ‘না বলা বাতিকের' প্রমাণ: তথ্যমন্ত্রী
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ বলেছেন, বর্তমান ‘অবৈধ’ ও ‘ফ্যাসিবাদী’ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার বিষয়ে তাদের দল কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
তিনি বলেন, সুতরাং সরকার এখন যে নাটক করছে তা অর্থহীন। এই সরকারের অধীনে কখনই নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না এবং এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারবে না। সর্বশেষ দুটি নির্বাচন কমিশন তার প্রমাণ।
ইসি নিয়ে সংলাপ: নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে বিভিন্ন প্রস্তাব আ. লীগের
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে আইন প্রণনয়নসহ বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সোমবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে ইসি গঠনের বিষয়ে চলমান সংলাপে অংশ নিয়ে এসব প্রস্তাব দেয় ক্ষমতাসীন দলটি।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন ইউএনবিকে বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ সংলাপে যোগ দেয়।
এ সংলাপের কয়েক ঘণ্টা আগে মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকে ইসি গঠনের বিষয়ে একটি খসড়া আইন অনুমোদন দেয়া হয়।
আওয়ামী লীগ তাদের প্রস্তাবে বলেছে, সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদ রাষ্ট্রপতি যে প্রক্রিয়া উপযুক্ত মনে করবেন সে মোতাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য কমিশনার নিয়োগ দেয়ার ক্ষমতা দিয়েছে।
আরেক প্রস্তাবে বলা হয়, প্রিজাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তার ক্ষেত্রে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে শুধু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ দেয়া।
প্রতিটি নির্বাচন অবাধ, স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু করতে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোরও প্রস্তাব করে প্রতিনিধি দল।
আরও পড়ুন: ইসি গঠনের বিষয়ে খসড়া আইন মন্ত্রিসভায় অনুমোদন
নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে একটি স্বাধীন ও কার্যকর ইসি অপরিহার্য বলেও মত দেয় আওয়ামী লীগ। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা যেন নিরপেক্ষ হয় তা নিশ্চিত করা লাগবে।
প্রত্যেক ভোটারের নামের সঙ্গে ছবি যুক্ত করে ভোটার তালিকা নির্ভুল করা এবং ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ভোটগ্রহণে ইভিএমের অধিক ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে দলটি।
নির্বাচনে পেশি শক্তির ব্যবহার বন্ধ এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুসহ সব স্তরের ভোটাররা যাতে সঠিকভাবে তাদের অধিকার প্রয়োগ করতে পারে তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানায় দলটি।
প্রতিনিধি দল নির্বাচনের আগে ও পরে ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে।
ইসি গঠনের বিষয়ে খসড়া আইন মন্ত্রিসভায় অনুমোদন
‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’ এর খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সোমবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ খসড়া আইনের অনুমোদন দেয়া হয়।
সভার পর সচিবালয়ে সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দেয়ার বিষয়ে খসড়া আইনের চূড়ান্ত অনুমোদন আজ দেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের বিষয়ে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটি গঠন করা হবে।
তিনি বলেন,‘সিইসি ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য অনুসন্ধান কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে উপযুক্ত প্রার্থীর নাম সুপারিশ করবে।’
আরও পড়ুন: নাসিক নির্বাচন উদাহরণ সৃষ্টি করবে: সিইসি
এ অনুসন্ধান কমিটি ছয় সদস্য বিশিষ্ট হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। এর প্রধান হবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি।
অন্য সদস্যরা হবেন-প্রধান বিচারপতি মনোনীত হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারপতি, কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান ও রাষ্ট্রপতি মনোনীত দু’জন ব্যক্তি।
সিইসি ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারের যোগ্যতার বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, তাদের ন্যূনতম ৫০ বছর বয়সী বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে এবং সরকারি, আধা-সরকারি, বেসরকারি বা বিচারিক পদে কমপক্ষে ২০ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
প্রস্তাবিত আইনটি আইনে পরিণত হতে বেশি সময় লাগবে না বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন আনোয়ারুল ইসলাম।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হওয়ার মাত্র এক মাস আগেই এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হলো। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে পূর্ণ হবে।
আরও পড়ুন: ইসি নিয়ে সংলাপ: ৩ দফা দাবি গণফোরাম ও বিকল্পধারার
ইসি নিয়ে সংলাপ: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসলামী ফ্রন্ট ও জমিয়তে উলামায়ের বৈঠক
ইসি গঠনের আগে সংলাপ তামাশা মাত্র: বিএনপি
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির চলমান সংলাপ তামাশা ছাড়া আর কিছু নয় বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলটি বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ইচ্ছায় ইসি গঠিত হবে।
বিএনপির জ্যৈষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা আগে দেখতাম ট্রেনে-বাসে বড়ি বিক্রি করতে হকার অত্যন্ত মজার মজার চমকপ্রদ অনেক কাহিনী বলত, গল্প বলত, মানুষকে আকৃষ্ট করত। তারপরে সে বড়িটা বিক্রি করত। রাষ্ট্রপতি হলেন সে ধরনের হকার। তিনিও সংলাপের নামে একই ধরনের কাজ করছেন।’
সোমবার এক মানবন্ধনে অংশ নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করতে ও ফাঁকি দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপের মাধ্যমে তামাশা করছেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি আসলে নির্বাচন বানচাল করতে চায়: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আল্টিমেটলি যে নির্বাচন কমিশন বানানো হবে- সেখানে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক ইচ্ছারই প্রতিফলন ঘটবে। তার আগে একটা তামাশা করে যাচ্ছেন, তার আগে একটা হকারের সেই চমকপ্রদ কাহিনী তিনি করছেন।’
সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর মুক্তির দাবিতে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশ যৌথভাবে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ মানবন্ধনের আয়োজন করে।
২০২০ সালের ২১ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
রিজভী বলেন, ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে যা করার দরকার সব করছে সরকার। ‘কিন্তু এখন আর এটা কাজ করবে না। কেননা এ সরকারের আসল চেহেরা ধীরে ধীরে বিশ্বের মানুষের সামনে উন্মোচিত হতে শুরু করেছে।’
এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ এবং খালেদা জিয়া, রুহুল আমিন গাজী ও অন্যান্য রাজবন্দীদের মুক্তি দেয়ার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বিরোধী ও ভিন্নমত দমনে সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করছে: বিএনপি
সিইসির ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিএনপি নেতার দাবি নাকচ মার্কিন দূতাবাসের
ইসি নিয়ে আলোচনা করতে কোথাও যাবে না বিএনপি
বিএনপি নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা করতে কোথাও যাবে না বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘চলমান সংলাপ অর্থহীন মহড়ায় পরিণত হবে, কারণ এটি ক্ষমতা আঁকড়ে ধরার জন্য সরকারের নতুন কৌশলের অংশ হিসেবে করা হচ্ছে।’
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির নারী মঞ্চ ও শিশু অধিকার ফোরাম আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তৃতাকালে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, বর্তমান সরকার আবারও ক্ষমতায় বসতে নানা কৌশল অবলম্বন করছে। রাষ্ট্রপতি আলোচনা করছেন...তবে ইতোমধ্যেই অনেক রাজনৈতিক দল এই আলোচনা বয়কট করে স্পষ্টই বুঝিয়ে দিয়েছে যে এই আলোচনায় কোনো ফল হবে না বলেই সবাই মনে করছে।
এসময় তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির বর্তমান সংলাপ অর্থহীন, কারণ নির্বাচনের সময় নিরপেক্ষ সরকার না থাকলে বিশ্বাসযোগ্য ভোট নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনের কিছুই করার নেই।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা আরও বলেন, জনগণের ভোটাধিকার ‘পুনরুদ্ধার’ এবং দেশের রাজনৈতিক ‘সংকট’ কাটিয়ে উঠতে সরকারকে অবশ্যই খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ মুক্ত করে একটি নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য একটি নিরপেক্ষ ইসি গঠন করা হবে বলে মন্তব্য করে তিনি জানান, এটাই আমাদের স্পষ্ট কথা এবং এটাই সংকট সমাধানের একমাত্র উপায়।
গত ২০ ডিসেম্বর নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতি ইতোমধ্যেই দেশের নিবন্ধিত ২৮টি রাজনৈতিক দলকে বঙ্গভবনে আলোচনায় যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার কিছু হলে সরকারকে ‘হত্যা মামলার আসামি’ করার হুঁশিয়ারি বিএনপির
তবে বিএনপি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি-রব) আলোচনায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোটাধিকারের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, আমি সকল রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিবিদদের দেশের বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানাতে চাই। আসুন জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি এবং জনগণের সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ি।
দারিদ্র্যসীমার অবনতি
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, সারাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। অথচ ক্ষমতাসীনরা বিপুল অর্থ উপার্জন করে ধনী হচ্ছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেছেন তার শাসনামলে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো তার এই ১৩ বছরের শাসনামলে সাধারণ মানুষ দরিদ্র হয়েছে এবং দরিদ্র মানুষ আরও দরিদ্র হয়েছে।
এসময় বিএনপি নেতা আরও বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে চার কোটি মানুষ বেকার এবং নয় কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে।
আওয়ামী লীগ নেতারা বিভিন্ন সুযোগ - সুযোগ নিয়ে অবৈধভাবে বিপুল অর্থ উপার্জন করছেন মন্তব্য করে তিনি জানান, তারা এখন তাদের অবৈধ পথে অর্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করছে।
আরও পড়ুন: ইসি নিয়ে সংলাপ: যাবে না বিএনপি
গণমানুষের দাবি
খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসাকে দেশের গণমানুষের দাবি আখ্যায়িত করে ফখরুল বলেন, সরকারকে এই দাবি মেনে নিতেই হবে।
খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার গণদাবি অস্বীকার করলে সরকারকে ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এই বিএনপি নেতা বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে প্রায় দুই মাস ধরে শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে আন্দোলন করছি আমরা। সারাদেশে অনেক সমাবেশ করেছি আমরা এবং সেসব কর্মসূচি থেকে লাখ লাখ মানুষ তার (খালেদা জিয়ার) মুক্তির স্লোগান দিয়েছে।
এসময় খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, সেলিমা রহমান, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ২০২২ সালে গণতন্ত্র ‘পুনরুদ্ধার’ হবে: বিএনপি
ইসি নিয়ে সংলাপে অংশ নেবে না জেএসডি
‘অর্থহীন’ আখ্যা দিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে বঙ্গভবনে চলমান সংলাপে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)।
শুক্রবার রাজধানীর উত্তরায় নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সভাপতি আ স ম আবদুর রব এ ঘোষণা দেন।
এসময় তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠন একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সমাধান নয়। সঙ্গত কারণেই জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল সংলাপে অংশ নিচ্ছে না।’
রব বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা ও দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচন কমিশনের ওপর নয়, 'জাতীয় সরকার' গঠনের প্রক্রিয়া নিয়ে সংলাপ হতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার সংবিধানের চেতনা ও সংকল্পের প্রতিনিধিত্ব না করায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন করে মামলা দায়ের এবং পুরনো মামলায় আবারও গ্রেপ্তার শুরু করেছে। তাই শুধু নির্বাচন কমিশন গঠনই নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা নয়।
আরও পড়ুন: ইসি নিয়ে সংলাপ: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসলামী ফ্রন্ট ও জমিয়তে উলামায়ের বৈঠক
সোমবার বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেয়ার কথা ছিল জেএসডি (রব)।
জ্যেষ্ঠ এই নেতার অভিযোগ, ‘নির্বাচন প্রশ্নে রাষ্ট্রপতি, সরকার ও নির্বাচন কমিশন সংবিধান লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত। যারা সংবিধান লঙ্ঘন করেছে তাদের জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।’
বর্তমান নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই পক্ষপাতমূলক আচরণের মাধ্যমে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে।
জাসদ সভাপতি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অপসারণ চেয়ে ২০১৯ সালে দেশের ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দিয়েছিলেন। কিন্তু রাষ্ট্রপতি কোনো ব্যবস্থা নেননি।
দলীয় সরকারের অধীনে দেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সুতরাং, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের নিশ্চয়তা এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ লক্ষ্যে আমরা ইতোমধ্যে জাতীয় সরকারের প্রস্তাবনা পেশ করেছি। ’
গত ২০ ডিসেম্বর নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতি ইতোমধ্যেই বঙ্গভবনে ২৮টি দলকে আলোচনায় যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইসি নিয়ে সংলাপ: ৩ দফা দাবি গণফোরাম ও বিকল্পধারার
এর আগে বিএনপি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) আলোচনায় না আসার সিদ্ধান্ত নেয়।
কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান ইসির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি।
সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান ইসির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের সংলাপ বর্জন করলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না: গণ ফ্রন্ট
বৃহত্তর ঐক্য গড়তে সরকারবিরোধী দলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা বিএনপির
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অভিন্ন দাবিতে ‘৯০ দশকের মতো’ যুগপৎ আন্দোলন করতে ডান ও বামপন্থীদের সম্পৃক্ত করে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৃহত্তর ঐক্য গঠনের পরিকল্পনা করছে বিএনপি।
দলটি ইতোমধ্যে কয়েকটি বাম দলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিকভাবে বৈঠক করেছে। কিছু শর্তের ভিত্তিতে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার-এ সাধারণ ইস্যুতে কাজ করার ব্যাপারে ইতিবাচক সংকেতও পেয়েছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য ইউএনবিকে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, তাদের সর্বশেষ স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে তাদের দাবি আদায়ে কীভাবে কার্যকর আন্দোলন চালানো যায় সে বিষয়ে তাদের পরামর্শ ও মতামত নিতে অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুদকের মামলায় বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইউএনবিকে বলেন, ‘আমরা এখন আমাদের চেয়ারপার্সনের বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছি। এ বিষয়ে আমাদের কর্মসূচি শেষ হলে আমরা আমাদের প্রধান দাবি নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের জন্য আন্দোলনে মনোনিবেশ করব।’
এ বিষয়ে আন্দোলন শুরু করার আগে তারা সব ডান ও বাম গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের মধ্যে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন বলে জানান বিএনপির মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল জানান, ইতোমধ্যে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের একাধিক দলের সঙ্গে তাদের অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে এবং আগামী দিনে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সঙ্গে বসবেন।
তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র, জনগণের ভোটাধিকার ও একটি সুস্থ নির্বাচন ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করতে সর্বস্তরের জনগণ ও সব রাজনৈতিক দলের শক্তিশালী ঐক্য এখন অপরিহার্য।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা: আরও ৪০ জেলায় সমাবেশ করবে বিএনপি
নির্বাচনের সংলাপ বর্জন করলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না: গণ ফ্রন্ট
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করেছে গণ ফ্রন্ট। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে ইসি গঠনের বিষয়ে সংলাপে অংশ নিয়ে আইন প্রণয়নসহ ১৪টি প্রস্তাব দেয় দলটি।
রাষ্ট্রপতির প্রেস উইংয়ের মতে, দলটির চেয়ারম্যান জাকির হোসেনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশ নেয়।
তারা বলেন, নির্বাচনের সংলাপ বর্জন করলেই সব সমস্যার সমাধান হবে না।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, জনকল্যাণ নিশ্চিত করতে হলে সুস্থ রাজনীতি অপরিহার্য। রাজনৈতিক দলগুলোর পরিচালনায় সুষ্ঠু রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটাতে হবে যাতে রাজনৈতিক দল ও নেতৃত্ব জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনে সক্ষম হয়।
আরও পড়ুন: ইসি নিয়ে সংলাপ: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসলামী ফ্রন্ট ও জমিয়তে উলামায়ের বৈঠক
গণ ফ্রন্ট মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতায় বিশ্বাসী সৎ ও দুর্নীতিমুক্ত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেন। তারা তিনজন নারী সদস্যসহ ৯ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেন।
নির্বাচনে যাতে সরকারি হস্তক্ষেপ না থাকে নির্বাচনী আইনে সে ব্যাপারে সুস্পষ্ট ঘোষণা রাখার প্রস্তাব দেন প্রতিনিধি দল।
বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি আইন প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত সংসদে সদস্য থাকা সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব করে।
এ সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন ও সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সিইসির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি
ইসি নিয়ে সংলাপ: ৩ দফা দাবি গণফোরাম ও বিকল্পধারার
পরিচয়হীনদের পিতা-মাতার নাম লিপিবদ্ধকরণ যুগোপযোগী উদ্যোগ: স্পিকার
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, সকলের ব্যক্তি পরিচয়ের অধিকার রয়েছে। পিতা-মাতার নাম লিপিবদ্ধকরণের প্রয়োজনীয়তা এখানেই। সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় সম্পৃক্ত করা এবং মৌলিক মানবাধিকার ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচন কমিশন বিষয়টি অনুধাবন করেছেন, যা যুগোপযোগী, ভিন্নধর্মী এবং গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।
নির্বাচন কমিশনের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে 'ভোটার তালিকায় পরিচয়হীনদের পিতা-মাতার নাম লিপিবদ্ধকরণে জটিলতা নিরসন' শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বকতব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিরীন শারমিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নয়নকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। ২০০৮ সাল থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভোটার তালিকা ও জাতীয় পরিচয়পত্র প্রণয়ন নির্বাচন কমিশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। ডেমোগ্রাফিক ও বায়োমেট্রিক ডাটাবেজ নির্বাচন কমিশন তৈরি করেছে যা দেশের সকল সরকারি-বেসরকারি কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে এই ডাটাবেজে অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি।
আরও পড়ুন: পেশাগত উন্নয়ন ও মর্যাদার লক্ষ্যে নিরলস কাজ করছে ডিআরইউ: স্পিকার
স্পিকার বলেন, কোভিডকালীন সময়ে নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেজ ব্যবহার করে প্রত্যন্ত অঞ্চলে দুঃস্থ মানুষের কাছে আর্থিক ও অন্যান্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। সুষ্ঠু তথ্য উপস্থাপন ও সংরক্ষণের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। প্রতিবন্ধী ভাতা, বিধবা ভাতা ইত্যাদি সামাজিক নিরাপত্তা বলয় কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেজভিত্তিক। প্রতিবন্ধী, হিজড়া, চা-শ্রমিকসহ সকল প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করে এই ডাটাবেজ আরও সমৃদ্ধ করতে হবে। সকল কাজেই এখন জন্মনিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহৃত হচ্ছে। পিতা-মাতার পরিচয় লিপিবদ্ধকরণের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জটিলতা নিরসন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্পিকার।
নির্বাচন কমিশনের সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম এবং নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: শোষণ ও বৈষম্যমুক্ত সমাজ বিনির্মাণই বাহাত্তরের সংবিধানের মূল লক্ষ্য: স্পিকার
পঞ্চম ধাপে ৭০৮ ইউপিতে ভোটগ্রহণ চলছে
দেশব্যাপী পঞ্চম ধাপে ৭০৮টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। এ ধাপে ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন পদে ৩৬ হাজার ৪০০ জনের বেশি প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বুধবার সকাল ৮টায় দেশের ৪৮টি জেলার ৯৫টি উপজেলার ৭০৮টি ইউনিয়নে ভোগগ্রহণ শুরু হয়েছে এবং চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
তিন হাজার ২৭৮ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ বিভিন্ন পদে মোট ৩৬ হাজার ৪৫৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় ৪৮ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী ইতোমধ্যেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন ইউপিতে সংরক্ষিত আসনে ৩৩ জন ও সদস্য পদে ১১২ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইউপি নির্বাচনে সহিংসতা: শৈলকুপায় ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত
৭০৮টি ইউনিয়নে সাত হাজার ১৩৭টি ভোটকেন্দ্রের অধীনে মোট ভোটার সংখ্যা এক কোটি ৪২ লাখ। ৪০টি ইউপিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হচ্ছে এবং অবশিষ্ট কেন্দ্রগুলোতে ব্যালট পেপার ব্যবহার করা হচ্ছে।
এর আগে গত ২৭ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন ৪৭টি জেলার ৭০৭টি ইউপিতে পঞ্চম ধাপের ভোটের তফসিল ঘোষণা করে। পরে পঞ্চম ধাপের নির্বাচনে আরেকটি ইউপি অন্তর্ভুক্ত হয়।
এ ধাপের নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ছিল ৭ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের তারিখ ৯ ডিসেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ছিল ১৫ ডিসেম্বর।
আরও পড়ুন: ইউপি নির্বাচন: গাইবান্ধায় বিজয়ী প্রার্থীর হামলায় পরাজিত মেম্বার প্রার্থীর মৃত্যু
৭০৭টি ইউপির মধ্যে রয়েছে পঞ্চগড় জেলায় আটটি, দিনাজপুরে ১৯টি, নীলফামারীতে ১১টি, লালমনিরহাটে ৭টি, কুড়িগ্রামে ৭টি, গাইবান্ধায় ১৬টি, জয়পুরহাটে ৫টি, বগুড়ায় ২২টি, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১৪টি, নওগাঁয় ২৩টি, রাজশাহীর ১৯টি, নাটোরে ১১, সিরাজগঞ্জে ১৬, পাবনায় ১৫, কুষ্টিয়ায় ১১, ঝিনাইদহে ২০, যশোরে ২৩, সাতক্ষীরায় ১৬, ভোলায় ১২, পিরোজপুরে ৫, জামালপুরে ১১, শেরপুরে ৮, ময়মনসিংহে ২৬, নেত্রোকোণায় ২১ , টাঙ্গাইলে ১৩, কিশোরগঞ্জে ১৫, মানিকগঞ্জে ২১, মুন্সিগঞ্জে ৭, ঢাকায় ১১, গাজীপুরে ৮, নরসিংদীতে ১৫, রাজবাড়ীতে ১০, ফরিদপুরে ১৫, গোপালগঞ্জে ১৫, মাদারীপুরে ২, শরীয়তে ১৭, সুনামগঞ্জে ১৭ ,সিলেটে ১৮, মৌলভীবাজারে ১৮, হবিগঞ্জে ২১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১৯, কুমিল্লায় ২৫, চাঁদপুরে ২৭, ফেনীতে ১২, নোয়াখালীতে ২০, চট্টগ্রামে ২৫, খাগড়াছড়িতে ৫ ও বন্দরবানে ৩টি।
আরও পড়ুন: ইউপি নির্বাচন: ঝিনাইদহে সংঘর্ষে আহত ৭, আটক ৫