নির্বাচন কমিশন
ইসি নিজেই স্বীকার করেছেন ইভিএম দিয়ে সঠিকভাবে নির্বাচন করা সম্ভব হচ্ছে না: জিএম কাদের
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেছেন, এর আগে নির্বাচন নিয়ে আমরা যে কথা বলেছি তা সত্য প্রমাণিত হয়েছে। অন্ততপক্ষে ইভিএমের ক্ষেত্রে প্রমাণিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিজেই স্বীকার করেছেন যে, ইভিএম দিয়ে নির্বাচন সঠিকভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না, আয়ত্বে আনা সম্ভব হচ্ছে না।
মঙ্গলবার দুপুরে রংপুর নগরীর পল্লীনিবাসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: উন্নয়নের নামে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করছে সরকার: জিএম কাদের
জিএম কাদের বলেন, প্রেসিডিয়াম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচনের আগে যে সব নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তার সবগুলোতে আমরা অংশগ্রহণ করবো। এর অর্থ হলো যে, নির্বাচনে যে সব অনিয়ম হয় তা প্রত্যক্ষভাবে দেখার জন্য এবং দেশবাসীকে দেখানোর জন্য আমরা নির্বাচনগুলোতে যাচ্ছি।
ভবিষ্যতে সরকারের পক্ষে বিপক্ষে কথা বলতে গেলে আমরা এসব বিষয় প্রমাণ স্বরূপ তুলে ধরতে পারবো বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোট গঠনের বিষয়ে জিএম কাদের বলেন, আমরা কারো সঙ্গে জোট করবো কি করবো না, সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।নির্বাচনের কাছাকাছি সময়ে এসে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
কাদের বলেন, তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে ৩০০ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সেভাবে প্রার্থী নির্বাচন করা হচ্ছে।
জিএম কাদের বলেন, জাতীয় পার্টির একটা অতীত ঐতিহ্য আছে। অতীতে আমরা যে সুশাসন দিয়েছি, পরবর্তীতে কোনো সরকার তুলনামূলকভাবে সে রকম সুশাসন দিতে পারেনি। আমরা জনগণের কাছে এসব বিষয় নিয়ে যাচ্ছি। দলকে শক্তিশালী করতে আমরা কাজ করছি।
এসময় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিকালে রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন জিএম কাদের।
আরও পড়ুন: দেউলিয়া হওয়ার পথে দেশ: জিএম কাদের
দেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে দূরে সরে গেছে: জিএম কাদের
নির্বাচন কমিশন কোনো চাপে নেই: সিইসি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) কোনো চাপে নেই এবং কমিশন এর কাজ করছে।
রবিবার জেলা পরিষদ নির্বাচন মনিটরিং সেল পরিদর্শন শেষে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৫৭টি জেলায় জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচন ভবনের মনিটরিং সেল থেকে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে ইসি।
ভোট কারচুপি ও ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে বুধবার গাইনবান্ধা-৫ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচন স্থগিত করে ইসি।
সিইসি বলেন, সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহারের চর্চা সাম্প্রতিক। আমরা এখান থেকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারি। যা একটি ভালো চর্চা।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কোনো দলের না। আমরা চাই ভোটাররা যেন তাদের ভোট দিতে পারে। এটা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার করছি।’
আরও পড়ুন: গাইবান্ধা-৫ আসনে নির্বাচন স্থগিত করা কমিশনের বেপরোয়া সিদ্ধান্ত নয়: সিইসি
জাতীয় নির্বাচনের সময় এতগুলো কেন্দ্র সিসিটিভির মাধ্যমে কীভাবে পর্যবেক্ষণ করবে ইসি এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের সময় ৪০ হাজার বা ৪২ হাজার ভোটকেন্দ্রে চার লাখ বুথ থাকবে। পাঁচ নির্বাচন কমিশনার একা জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন না, পর্যবেক্ষণের জন্য আরও জনবল নিয়োজিত থাকবে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনের মতো আগামীকালের জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার করা হবে।
জেলা পরিষদ নির্বাচনে সারাদেশে ৪৬২টি কেন্দ্রের ৯২৫টি বুথে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে এবং ৬০ হাজার ৮৬৬ জন ভোটার ভোট দেবেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে ডিসি, এসপিদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকার নির্দেশ সিইসি’র
নির্বাচন বাঁচিয়ে রাখতে না পারলে রাজনীতি উধাও হয়ে যাবে: সিইসি
নির্বাচনকে সামনে রেখে শনিবার ডিসি-এসপিদের সঙ্গে বসবে ইসি
জেলা পরিষদ নির্বাচন ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শনিবার (৮ অক্টোবর) ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) সঙ্গে বৈঠকে বসবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
১৭ অক্টোবর জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ২০২৩ সালের ডিসেম্বর অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
আরও পড়ুন: আগামী জাতীয় নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে: ইসি
শনিবার নির্বাচন কমিশন মিলনায়তনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে ইসির উপসচিব আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
ইসির যুগ্ম সচিব এসএম আসাদুজ্জামান জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল সভায় সভাপতিত্ব করবেন এবং অন্যান্য কমিশনাররাও সভায় উপস্থিত থাকবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে কমিশন সচিবালয় দেশের সব ডিসি ও এসপিদের সভায় উপস্থিত থাকতে বলেছে।
কমিশন ইতোমধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কর্মপরিকল্পনা উন্মোচন করেছে।
আরও পড়ুন: ১৫০ আসনে ইভিএম: ইসির ৮৭১১ কোটি টাকার প্রকল্প চূড়ান্ত
১৫০ আসনে ইভিএম ব্যবহারে ইসির সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান বিএনপির
ইসির বক্তব্য সকাল বেলা একটা, বিকাল বেলা আরেকটা: তথ্যমন্ত্রী
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বক্তব্য সকাল বেলা একটা, বিকাল বেলা আরেকটা বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে মতবিনিময়ের সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করে বিএনপি নতুন কোনো ব্যবস্থায় নির্বাচনে এলে আপত্তি নেই বলে করা সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালের বক্তব্য বিষয়ে জানতে চাইলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্র যেসব দেশে আছে সেখানে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও একইভাবে নির্বাচন হয়। ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ইউকে এবং ইউরোপের দেশগুলোতেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সংসদীয় গণতন্ত্র বিদ্যমান। সে সমস্ত দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় অর্থাৎ যে সরকার দেশ পরিচালনা করে আসছিল তারাই নির্বাচনকালীন সময়ে দায়িত্ব পালন করে। আমাদের দেশেও তাই হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্লোগান দিয়ে, স্বপ্ন দেখে কোন লাভ হবে না।
আরও পড়ুন: দেশের অর্থনীতি নিয়ে জিএম কাদের ও রিজভীর বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা তথ্যমন্ত্রীর
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য তো সকাল বেলা একটা থাকে, বিকাল বেলা আরেকটা থাকে। একটি বক্তব্য দেয়ার পরে আবার পরে সেটি তিনি (সিইসি) প্রত্যাহার করেন। সুতরাং এ নিয়ে আমি ব্যাখ্যা দিতে পারব না, উনি ব্যাখ্যা দিতে পারবেন।
নড়াইলে ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নড়াইলের ঘটনার পর সেখানে অভিযুক্ত যে ছেলেটির পোস্টের মাধ্যমে এই ঘটনাটি ঘটেছে, তার বাবাকে এবং হামলার অভিযোগে আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদেরকেও গ্রেপ্তার করার প্রক্রিয়া চলছে। এর পেছনে কারা ইন্ধন দিয়েছে, সেটিও খতিয়ে বের করা হবে। অতীতে যেমন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, এক্ষেত্রেও কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং সমস্ত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা গ্রামের পর গ্রাম নির্যাতন চালিয়েছিল, জ্বালিয়ে দিয়েছিল। আমাদের দলীয় কার্যালয়ে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য আমাদের লঙ্গরখানা খুলতে হয়েছিল, আশ্রয় কেন্দ্র খুলতে হয়েছিল। ধর্মীয় অপশক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে বিএনপি এবং এবং সেই প্রধান পৃষ্ঠপোষক দলের মুখপাত্র হচ্ছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব। তাই যিনি প্রধান পৃষ্ঠপোষকদের মুখপাত্র, তিনি এ ধরনের কথা বলে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা চালাবেন, সেটি খুবই স্বাভাবিক। এ ধরনের ঘটনা যখন ঘটেছে আমাদের সরকার তখনই তড়িৎ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কারণ আমাদের দল অসাম্প্রদায়িক দল, আমাদের দল অসাম্প্রদায়িকতাকে লালন করে।
মন্ত্রী আরও বলেন, এই ধরনের ঘটনা ঘটার পেছনে সব সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ফেসবুক। আমি মনে করি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দায়-দায়িত্ব আছে। এই যে ঘটনাগুলো ঘটে, ফেসবুকে মিথ্যা পোস্ট দিয়ে তারপর সেটিকে গুজব রটিয়ে দিয়ে সেটির মাধ্যমে যে ঘটনা ঘটালো, এটির জন্য তো সার্ভিস প্রোভাইডারদের দায়িত্ব আছে।
আরও পড়ুন: বিদেশিদের কাছে নয়, জনগণের কাছে যান: বিএনপিকে তথ্যমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধুকন্যার হাত ধরেই তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি এসেছে: তথ্যমন্ত্রী
দেশের নির্বাচনে বিদেশিরা ভূমিকা রাখতে পারবে না: রাজ্জাক
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতসহ যতো ক্ষমতাশালী দেশের হোক না কেন তারা বাংলাদেশের নির্বাচনে তেমন কোন ভূমিকা রাখতে পারবে না বলে জানিয়েছেন কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।
বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) দুপুরে সচিবালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে কৃষিখাতে সরকারি-বেসরকারি অংশিদারিত্ব (পিপিপি) নিয়ে সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি বেশ কয়েকদিন যাবত বিভিন্ন বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সাথে বৈঠক করছে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিদেশিরা আমাদের উন্নয়ন সহযোগী। পুরো পৃথিবী একটা গ্লোবাল ভিলেজ। বিএনপি তাদের সাথে মতবিনিময় করতে পারে।
তিনি বলেন, বিদেশিরা চায় আমাদের নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর নিরপেক্ষ এবং সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হোক। এজন্য আমরা নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দিয়েছি। পৃথিবীর সব দেশে জাপান, জার্মান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য সব দেশেই নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পৃথিবীর কোথাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই। বিএনপি এক টানা বলে যাচ্ছে তত্ত্বাবধায় সরকারের কথা। এটা কোন দিনই হবে না।
মন্ত্রী বলেন, তবে আমরা সবাই চাই একটা সত্যিকারের নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং একটা শক্তিশালী সক্ষমতা সম্পন্ন নির্বাচন কমিশন। যে নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করবেন। প্রধানমন্ত্রী, সামরিক বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সবাই মিলে আমরা নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করবো। এটিই আমাদের সংধানে আছে এবং সংবিধান অনুযায়ী আমরা নির্বাচন করবো।
রাজ্জাক বলেন, নির্বাচনের সকল প্রক্রিয়ায় বিদেশিদের যদি কোন মতামত থাকে কোন পরামর্শ থাকে এবং তারা যদি আমাদের সহযোগিতা করতে চায় তাহলে সেটাকে আমরা অভিনন্দন জানাবো। বিএনপি তাদের সাথে আলোচনা করছে। বিএনপিকে আমি বলবো যদি ক্ষমতায় আসতে চান তাহলে জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণ যাদেরকে ভোট দিয়ে নির্বাচন করবে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত যতো ক্ষমতাশালী দেশের হোক না কেন তারা নির্বাচনে তেমন কোন ভূমিকা রাখতে পারবে না।
পড়ুন: বিদেশিদের কাছে নয়, জনগণের কাছে যান: বিএনপিকে তথ্যমন্ত্রী
যাত্রাপথে ভোগান্তিতে ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের আনন্দ নেই: বিএনপি
কুসিক নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। বুধবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিরতি ছাড়াই চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
মোট দুই লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন ভোটার ১০৫টি কেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ১০৫টি ভোট কেন্দ্রে ৬৪০টি বুথ রয়েছে।
নির্বাচনে মেয়র পদে এবার পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আরও পড়ুন: কুসিক নির্বাচন নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
২০১১ সালে গঠিত হওয়ার পর এটি কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের তৃতীয় নির্বাচন এবং নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে প্রথম নির্বাচন, যা সম্পূর্ণভাবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে পরিচালিত হবে।
মঙ্গলবার কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, বহুল আলোচিত নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালনার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। শহরে কমপক্ষে ৭৫ টি চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ইতোমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৩ হাজার ৬০০ সদস্যকে মাঠে মোতায়েন করা হয়েছে।
সর্বশেষ কুমিল্লা সিটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৭ সালের ৩০ মার্চ। দ্বিতীয় মেয়াদে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু।
আরও পড়ুন: কুসিক নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করার ঘোষণা ইমরানের
কুসিক নির্বাচন প্রমাণ করেছে নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: ফখরুল
সাক্কুর হ্যাটট্রিক নাকি রিফাতের প্রথম?
কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে বুধবার বহুল আলোচিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) মেয়র ও কাউন্সিলর নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অন্যতম বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ না নিলেও গত ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেয়া কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে প্রথম বড় নির্বাচনও এটি।
এদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত কোনো বিরতি ছাড়া ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নগরবাসীর মতে, কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সদ্য সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু এগিয়ে রয়েছেন।
এছাড়া মেয়র পদে আরও তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. রাশেদুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান বাবুল ও মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন।
ইউএনবির সাথে আলাপকালে কুমিল্লা সিটির দুইবারের মেয়র সাক্কু সুষ্ঠু নির্বাচন হলে হ্যাটট্রিক জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ বরেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু করতে কঠোর অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: পুলিশ সুপার
তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ও স্থানীয় প্রভাবশালী দলের নেতারা ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নির্বাচনী ফলাফল প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন।
ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে একটি বিশ্বাসযোগ্য পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে আহ্বান জানিয়েছেন সাক্কু।
এদিকে, আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী রিফাত সুষ্ঠু ভোট এবং জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী।
তিনি বলেন, নগরীর উন্নয়নে ভোটাররা একজন সৎ ও যোগ্য প্রার্থী হিসেবে আমাকে নির্বাচিত করবেন। দুর্নীতি থেকে মুক্তি ও নগরীর উন্নয়ন নিশ্চিত করতে জনগণ মেয়র পদে পরিবর্তন চায়।
উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন এবং সকল ভোটার নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবে বলেও আশা প্রকাশ করেন রিফাত।
নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের ১০৫টি ভোটকেন্দ্রের অধীনে প্রায় দুই লাখ ২৯ হাজার ৯২০ জন মানুষের ভোটাধিকার রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি থেকে কুমিল্লা সিটি মেয়র সাক্কু আজীবন বহিষ্কার
এছাড়া নির্বাচনে ২৭টি ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১০৬ জন এবং সংরক্ষিত ৯টি আসনে ৩৬ জন নারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
১৬ সদস্যের একটি নিরাপত্তা দল প্রতিটি ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। তবে এসব কেন্দ্রকে গুরুত্বপূর্ণ বলছে ইসি। এছাড়া ১৫ সদস্যের আরেকটি নিরাপত্তা দল প্রতিটি সাধারণ ভোটকেন্দ্র পাহারা দেবে।
নির্বাচনী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা ও নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে মোবাইল ফোর্স হিসেবে ২৭টি টিম (পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে), স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ৯টি দল এবং সংরক্ষিত বাহিনী হিসেবে দুটি দল রয়েছে।
এছাড়া নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে ২৭টি ওয়ার্ডে র্যাবের ২৭টি টিম রয়েছে। নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘনের শাস্তি নিশ্চিতে ৯ জন বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট এবং ২৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন।
গত ২৫ এপ্রিল ইসি এ সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে এবং গত ১৭ মে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময়সীমা শেষ হয়।
২০১১ সালে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন গঠিত হয়। ২০১১ ও ২০১৭ সালে প্রথম দুটি নির্বাচন হয়। এ দুই নির্বাচনে বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন।
এছাড়া বুধবার সারাদেশের বিভিন্ন জেলায় একটি উপজেলা পরিষদ, পাঁচটি পৌরসভা এবং ১২৩টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে হবে বলে মঙ্গলবার ইসি থেকে দেয়া তথ্যপত্রে জানানো হয়েছে।
একই দিনে একটি উপজেলা পরিষদ, একটি পৌরসভা ও ৪৪টি ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকটি পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আমরা শুধু চাই জনগণের অবাধ অংশগ্রহণে নির্বাচন হোক: মার্কিন রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে জনগণের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখার প্রত্যাশা পুনর্ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে কে জিতবে তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র কোনো চিন্তা করে না। আমরা শুধু এমন একটি নির্বাচন চাই যেখানে বাংলাদেশের জনগণ তাদের নেতা নির্বাচন করতে পারে।’
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে গতবারের চেয়ে ভালো নির্বাচন প্রত্যাশা করে জাপান
তিনি বলেন, একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা নির্বাচন কমিশন ও সমগ্র বাংলাদেশি সমাজের কাজ এবং এটি কোনোভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের কাজ নয়।
চট্টগ্রামের এওচিয়া ইউপির নির্বাচন স্থগিত
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইসি জানায়, ১৫ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এওচিয়া ইউপির নির্বাচনী তফসিল পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: চেয়ারম্যান প্রার্থীর হুমকি: চাম্বল ইউপি নির্বাচন স্থগিত করল ইসি
এ বিষয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারিসহ পদ্ধতিগতভাবে কার্যক্রম গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন।
কুসিক নির্বাচন নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।
এই নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত করতে নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সচেষ্ট রয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ে ঢাকায় নবনিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা জানান।
তিনি বলেন, নির্বাচনে সকল দলের স্বত:স্ফূর্ত অংশগ্রহণের কারণে এক ধরনের উত্তেজনা বিরাজ করে এবং এটি থাকবে। বিশ্বের অনেক দেশের নির্বাচনই উত্তেজনাপূর্ণ হয়। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনাই আমরা চাই না।
আরও পড়ুন: নিম্নবিত্তের মানুষকে সাশ্রয় মূল্যে পানি দিন: ওয়াসাকে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী
তাজুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য নির্বাচন কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচনকালীন কমিশনের অধীন কাজ করবে। সরকার নির্বাচন কমিশনকে সবধরনের সহযোগিতা প্রদানে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে সাক্ষাতের বিষয়ে মন্ত্রী জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বাংলাদেশের নগর স্বাস্থ্য উন্নয়নে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ ব্যাপারে কাজ করতে উভয় দেশের মধ্যে একটি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরের উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। পরবর্তীতে যৌথভাবে নগর ও গ্রামীণ স্বাস্থ্য উন্নয়নে কাজ করা হবে।
দ্বিপক্ষীয় ও অভ্যন্তরীণ সমসাময়িক সমস্যা সমাধানে উভয় দেশ একসঙ্গে কাজ করবে বলে অঙ্গীকার করেন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। সেই সঙ্গে অদূর ভবিষ্যতে দুই দেশের সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় ও নতুন উচ্চতায় নেয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ঋণের দিক দিয়ে এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান সবচেয়ে ভালো: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী