নির্বাচন কমিশন
কিছু ব্যর্থতার মধ্যেও কমিশন আইনানুগ নির্বাচন পরিচালনা করেছে: সিইসি
বিদায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, তার কমিশন কিছু রাজনৈতিক দলের আস্থা অর্জন করতে না পারলেও গত পাঁচ বছরের কাজে তারা মোটেও বিব্রত নন।
তিনি বলেন, ‘কেউ শতভাগ সফল হতে পারে না। আমরাও পারিনি।’
সোমবার রাজধানীর নির্বাচন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। আজই বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদের শেষ দিন ছিল।
সিইসি বলেন, ‘আমরা সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ মনোভাব নিয়ে আইনানুগ নির্বাচন পরিচালনা করেছি। কিছু জায়গায় বিচ্যুতি ছিল। বিভিন্ন স্থানে অনেক ভোটারকে হত্যা করা হয়েছে...যা আমাদের ব্যর্থতা। এখন আমরা দেখেছি কিছু রাজনৈতিক দল আমাদের প্রতি খুশি ও সন্তুষ্ট নয়। আমরা তাদের আস্থা অর্জন করতে পারিনি।’
আরও পড়ুন: সিইসি ও ইসি পদে ১০ জনের নাম প্রস্তাব আ. লীগের
অবসরে যাওয়ার পর সমাজে তাদের কার্যক্রমের জন্য বিব্রত হবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মোটেও না। মোটেও না। আইন-কানুন অনুযায়ী নির্বাচন আয়োজনের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি আমরা।’
নূরুল হুদা বলেন, ‘নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির কোনো অভাব রাখিনি। আমরা নিরপেক্ষ থেকে কাজ করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কাজেই কোনো বিব্রতবোধ নেই, কোনো দুর্বলতা নেই।’
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম ও কবিতা খানম উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সিইসির বিরুদ্ধে জোনায়েদ সাকির আদালত অবমাননার মামলা
তবে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হতে পারেননি। এছাড়া আরেক নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার পরে পৃথকভাবে তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
সিইসি ও ইসি পদে ১০ জনের নাম প্রস্তাব আ. লীগের
নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (ইসি) পদে ১০ জনের নামের প্রস্তাব সার্চ কমিটির কাছে জমা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ।
শুক্রবার আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ নামের এ তালিকা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দেন।
এছাড়া জাতীয় পার্টি ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলসহ পাঁচটি রাজনৈতিক দল ইতিমধ্যে তাদের সুপারিশ করা নামের তালিকা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছে।
এর আগে সিইসি ও অন্যান্য ইসি নিয়োগে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম সুপারিশ করতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান (সভাপতি) করে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করা হয়।
আরও পড়ুন: ইসি গঠন: রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নাম চেয়েছে সার্চ কমিটি
সার্চ কমিটির অন্য পাঁচ সদস্য হলেন- হাইকোর্টের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মো. মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
ইসি গঠনে সদ্য প্রণীত আইনে বলা হয়েছে, অনুসন্ধান কমিটি সিইসি ও অন্যান্য ইসি প্রার্থীদের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে। অনুসন্ধান কমিটি গঠনের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম সুপারিশ করতে হবে কমিটিকে।
অনুসন্ধান কমিটি সিইসি ও ইসিদের প্রতি পদের জন্য দুজন করে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবে। এ ১০ জনের মধ্য থেকে সিইসিসহ পাঁচজনকে দিয়ে ইসি গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি।
আরও পড়ুন: ইসি গঠনের সার্চ কমিটি সুন্দর ও নিরপেক্ষ: তথ্যমন্ত্রী
সিইসি কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ চলতি মাসেই শেষ হচ্ছে।
সংবিধানে আইনের মাধ্যমে সিইসি ও অন্যান্য ইসি নিয়োগের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা বলা রয়েছে। তবে স্বাধীনতার পর এবারই প্রথমবারের মতো একটি আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠিত হচ্ছে।
শনিবার ২০ বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে বসবে সার্চ কমিটি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম সুপারিশ করতে গঠিত সার্চ কমিটি শনিবার ২০ জন বিশিষ্ট নাগরিকের সঙ্গে বসবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সার্চ কমিটি সকাল ১১টায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ভবনের জাজ লাউঞ্জে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করবে।
সার্চ কমিটি যাদের সঙ্গে মতবিনিময় করবে তারা হলেন- এ এফ হাসান আরিফ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডভোকেট এ এফ হাসান আরিফ; বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ফিদা এম কামাল; বাংলাদেশের সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার; সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন; সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মুনসুরুল হক চৌধুরী; রোকনউদ্দিন মাহমুদ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটসের ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ; সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট এম কে রহমান; সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট শাহদীন মালিক; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন খান।
আরও পড়ুন: ইসি গঠন: রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে নাম চেয়েছে সার্চ কমিটি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম; বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান; বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল; বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক মাহফুজা খানম; ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন; ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি; ব্রতীর প্রধান নির্বাহী শারমিন মুরশিদ, ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং অ্যালায়েন্সের (ফেমা) সভাপতি মুনিরা খান ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী।
সার্চ কমিটি
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম সুপারিশ করতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান (সভাপতি) করে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করা হয়।
সার্চ কমিটির অন্য পাঁচ সদস্য হলেন- হাইকোর্টের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মো. মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন ও কথা সাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
আরও পড়ুন: ইসি গঠনের সার্চ কমিটি সুন্দর ও নিরপেক্ষ: তথ্যমন্ত্রী
ইসি গঠনে সদ্য প্রণীত আইনে বলা হয়েছে, অনুসন্ধান কমিটি সিইসি ও অন্যান্য ইসি প্রার্থীদের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে। অনুসন্ধান কমিটি গঠনের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম সুপারিশ করতে হবে কমিটিকে।
অনুসন্ধান কমিটি সিইসি ও ইসিদের প্রতি পদের জন্য দুজন করে ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবে। এ ১০ জনের মধ্য থেকে সিইসিসহ পাঁচজনকে দিয়ে ইসি গঠন করবেন রাষ্ট্রপতি।
সিইসি কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ চলতি মাসেই শেষ হচ্ছে।
সংবিধানে আইনের মাধ্যমে সিইসি ও অন্যান্য ইসি নিয়োগের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা বলা রয়েছে। তবে স্বাধীনতার পর এবারই প্রথমবারের মতো একটি আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সার্চ কমিটির নামে ‘আওয়ামী খাস কমিটি’ গঠিত: বিএনপি
সিইসির বিরুদ্ধে জোনায়েদ সাকির আদালত অবমাননার মামলা
হাইকোর্টের আদেশ অনুসারে গণসংহতি আন্দোলনকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন না দেয়ায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেছেন দলটির সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। মামলায় নুরুল হুদার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার কারণে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চাওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জোনায়েদ সাকির পক্ষে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া হাইকোর্টে এ মামলা করেন।
পরে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, গণসংহতি আন্দোলন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন চেয়ে ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করে। উক্ত আবেদন নির্বাচন কমিশন ২০১৮ সালের ১৯ জুন তারিখে পাঠানো চিঠির মাধ্যমে নিবন্ধন করা যাবে না মর্মে অবহিত করে। পরবর্তী সময়ে গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষে প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। হাইকোর্ট ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল গণসংহতি আন্দোলনকে রায় পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে নিবন্ধন দেয়ার আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: সাবেক ডিআইজি মিজান ও দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুলের মামলার রায় ২৩ ফেব্রুয়ারি
গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে এ রায় ও আদেশের সত্যায়িত কপি যথাসময়ে নির্বাচন কমিশনকে দাখিল করা হয় এবং আদালত থেকেও নিয়ম অনুযায়ী রায় ও আদেশের কপি পাঠানো হয়। আদালতের সুস্পষ্ট রায় ও নির্দেশ থাকার পরও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এরপর বিভিন্ন সময়ে বারবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো ফল না পাওয়ায় ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। এরপর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও নির্বাচন কমিশন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় আজ প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার কারণে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা চেয়ে মামলা করা হয় বলে জানান ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া।
আরও পড়ুন: মার্কিন নাগরিক হত্যা: পুলিশ কমিশনারসহ আট জনের বিরুদ্ধে মামলা
সার্চ কমিটিতে এককভাবে নাম পাঠাবে আ’লীগ: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের নাম সার্চ কমিটিতে জোটগতভাবে নয়, এককভাবে পাঠাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সার্চ কমিটিতে নামের তালিকা পাঠানো হবে।
বৃহস্পতিবার সকালে সচিবালয়ে ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্টের (ইফাদ) কান্ট্রি ডিরেক্টর আর্নৌদ হামিলির্স এর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে কৃষিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, সার্চ কমিটিতে নাম পাঠানো বিএনপির দায়িত্ব। সার্চ কমিটিতে তারা নাম দিল কি দিল না- তাতে কিছু যায় আসে না। দেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সার্চ কমিটি দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এমন একটা কমিশন গঠন করবে, যা সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পাবে। আমি বিশ্বাস করি, বিএনপি যতই আন্দোলন-সংগ্রামের হুমকি দিক না কেন, অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে তারা শিক্ষা নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে করার জন্য সরকার নির্বাচন কমিশনকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করবে।
সপ্তম ধাপে ১৩৮ ইউপিতে ভোটগ্রহণ চলছে
সপ্তম ধাপে সোমবার দেশের ২০টি জেলার ২৪টি উপজেলার ১৩৮ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। সকাল ৮টা ভোটগ্রহণ শুরু হয়, কোনো বিরতি ছাড়াই বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান রবিবার বলেন, ১৩৮টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৫৭৬ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ মোট পাঁচ হাজার ৮৭৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তবে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় ১১ চেয়ারম্যানসহ ৭১ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
১৩৮টি ইউনিয়ন পরিষদে এক হাজার ৩৫০টি ভোটকেন্দ্রের অধীনে সাড়ে ২৪ লাখের বেশি ভোটার রয়েছে।
আরও পড়ুন: সপ্তম ধাপে ১৩৮ ইউপি নির্বাচন সোমবার
এসব ইউনিয়নের মধ্যে ৯টিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এবং বাকিগুলোতে প্রচলিত ব্যালট পেপার পদ্ধতিতে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর সপ্তম ধাপের ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিল ইসি। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ছিল ১২ জানুয়ারি।
১৩৮টি ইউপি হলো কুমিল্লায় ২৪, রাঙামাটিতে ১৯, রংপুরে ১৭, চট্টগ্রামে ১৬, ময়মনসিংহে ১১, কিশোরগঞ্জে ৯, নোয়াখালীতে আট, সুনামগঞ্জে সাত, পটুয়াখালীতে ছয়, খাগড়াছড়িতে পাঁচ, বান্দরবানে তিন; ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, জয়পুরহাট ও সিরাজগঞ্জে দুটি করে এবং চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, পিরোজপুর, সিলেট ও কক্সবাজারে একটি করে।
পড়ুন: ইউপি নির্বাচন: সিলেটে সহিংসতায় আহত যুবকের মৃত্যু
সার্চ কমিটি একটি অর্থহীন চর্চা: বিএনপি
নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ সরকার না রেখে আগামী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের জন্য ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন হবে 'অর্থহীন চর্চা’- এমনটাই মন্তব্য করেছে বিএনপি।
শনিবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সার্চ কমিটির কোনো মূল্য নেই। এটা একটি অর্থহীন চর্চা মাত্র।
ইউএনবির সঙ্গে ফোনালাপকালে বিএনপির এই নেতা বলেন, সার্চ কমিটি নিয়ে তাদের দলের কোনো আগ্রহ নেই।
আরও পড়ুন: বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন
ফখরুল বলেন, ‘এ বিষয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। আমরা মনে করি, জনগণকে আবারও প্রতারিত করতে সরকার অপকৌশলের অংশ হিসেবে এই কমিটি গঠন করেছে।’
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে সার্চ কমিটি কিংবা নির্বাচন কমিশন কোনোটি নিয়েই জনগণ আগ্রহী নয়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নয় নির্বাচনকালীন সরকার জনগণের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এটি বারবার প্রমাণিত হয়েছে যে বর্তমান সরকারের অধীনে একটি নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। জনগণ মনে করে আগে একটি নির্বাচনকালীন সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অতএব নির্বাচন কমিশন এখন কোনো ইস্যু নয়।’
ফখরুল বলেন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠিত হলে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সেই প্রশাসনের মাধ্যমে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: সার্চ কমিটির মাধ্যমেই গঠিত হবে ইসি: আইনমন্ত্রী
এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য নির্বাচন কমিশনারদের নাম সুপারিশ করে আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি সার্চ কমিটি গঠন করা হয়।
এদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, সার্চ কমিটি তাদের দলের কথা বলার বিষয় নয়। তারা এ বিষয়ে আগ্রহী নয়।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, তাদের দলের মূল ফোকাস হচ্ছে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই নেতা বলেন, তিনি মনে করেন সার্চ কমিটি নিরপেক্ষ নয়।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের অবস্থান খুবই পরিষ্কার। আমরা মনে করি, এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠ হতে পারে না। ভোটের সময় বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকলে আমরা নির্বাচনে যাব না। ’
ষষ্ঠ ধাপে ইউপি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে
ষষ্ঠ ধাপে ২২ জেলার ৪২ উপজেলায় ২১৮টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলছে। সকাল ৮টায় ২ হাজার ১৮৬টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয় এবং কোনো বিরতি ছাড়াই চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
২১৮ ইউপির মধ্যে ২১৬টিতে প্রচলিত ব্যালট পেপারের পরিবর্তে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হচ্ছে।
এ ধাপের ইউপি নির্বাচনে প্রায় ৪২ লাখ মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এতে বিভিন্ন পদে ১১ হাজারের বেশি প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আরও পড়ুন: ইউপি নির্বাচন পরবর্তী সংঘর্ষে রায়পুরায় নিহত ২, আহত ২০
এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১ হাজার ১৯৯ জন, সংরক্ষিত আসনে ২ হাজার ৫৫৯ জন মহিলা এবং সদস্য পদে ৭ হাজার ৮৪৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এদিকে চেয়ারম্যান পদে ১২ জন, সংরক্ষিত আসনে ৩২ জন মহিলা এবং সদস্য পদে ১০০ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
গত ১৮ ডিসেম্বর ষষ্ঠ ধাপের ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন কমিশন গঠন আইনের গেজেট প্রকাশ
এফডিসির এমডির পদত্যাগের দাবি পরিচালক সমিতিসহ ১৭ সংগঠনের
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২০২৪ মেয়াদের দ্বি-বার্ষিকী নির্বাচন চলাকালীন পরিচালক সমিতিসহ এফডিসির ১৭ সংগঠনের সদস্যদের প্রবেশে বাধা দেয়ায় শনিবার এফডিসি প্রাঙ্গণে সকল সংগঠনের পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলন করেছে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি।
সংবাদ সম্মেলনে সবার পক্ষ থেকে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান এফডিসির এমডির পদত্যাগ দাবি করেন।
সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘গতকাল শিল্পী সমিতির নির্বাচনের সময় পরিচালকদের বাইরে থাকতে হয়েছে। আমাদের লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এর প্রতিবাদস্বরূপ পরিচালক সমিতির সিদ্ধান্ত শিল্পী সমিতিকে পরবর্তীতে এফডিসিতে নির্বাচন করতে আমরা দেব না।’
আরও পড়ুন: চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি: সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন, সম্পাদক জায়েদ খান
গতকালের ঘটনায় এফডিসি কর্তৃপক্ষ ও নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানায় পরিচালক সমিতি। কিন্তু কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। তাই এফডিসির বর্তমান এমডির পদত্যাগ চায় পরিচালক সমিতি। তাদের দাবি, এমডিকে অপসারণ না করা হলে, কোনো কার্যক্রম হতে দেবে না তারা।
সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘আগামীকাল এফডিসিতে শুটিং রয়েছে। এরপরই সকল কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে। আমরা যতগুলো সংগঠন পারি এফডিসির গেটের সামনে শুয়ে থেকে এমডির প্রবেশ ঠেকাব। তাকে যদি প্রবেশ করতেই হয়, আমাদের লাশের ওপর দিয়ে করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে এবারের শিল্পী সমিতির নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন সোহানুর রহমান সোহান। তাকেও এফডিসি থেকে অবঞ্চিত ঘোষণা দেয়া হয়। সোহান বলেন,‘ পরীজাদা শহীদুল হারুণ প্রশাসনকে বুঝিয়েছেন আমরা থাকলে তিনি ভালোভাবে নির্বাচন করতে পারবেন না। আমরা সকল সংগঠন সিদ্ধান্ত নিয়েছি, পরীজাদা আমাদের সিনেমায় আর অভিনয় করতে পারবেন না।’
আরও পড়ুন: অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি নাসিম, সম্পাদক রওনক
নতুন বিল অনুগত লোকদের নিয়ে আরেকটি ইসি গঠনের চক্রান্ত: বিএনপি
নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন সংক্রান্ত নতুন বিল সরকারের অনুগত লোকদের নিয়ে আরেকটি কমিশন গঠনের জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়াই সরকার নির্বাচন কমিশন বিল পাস করবে এবং এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে।
তিনি আরও বলেন, সরকার হুদা-রাকিবের মতো আরেকটি নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য বিলের খসড়া তৈরি করেছে। নতুন নির্বাচন কমিশনে জনগণের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটবে না।
আরও পড়ুন: ইসি গঠনে সরকারের পদক্ষেপ আরেকটি ‘উপহাস’: বিএনপি
সোমবার দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও বর্তমান চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার বনানী সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
দণ্ডিত ব্যক্তিদের ইসি সদস্য হওয়ার অনুমতি দিয়ে খসড়া বিলের একটি বিধান উল্লেখ করে রিজভী বলেন, এর অর্থ হলো গত ১৪ বছরে যারা নৃশংসতা করেছে তারা কমিশনের সদস্য হতে পারবে।
তিনি বলেন, আসলে সরকার তাদের অনুগত লোকদের ইসি সদস্য হিসেবে নিয়োগ দিতে চায়। তারা কোন ভদ্রলোক নিয়োগ করতে চায় না।
বিএনপি নেতা অভিযোগ করেছেন, সরকার আগামী সাধারণ নির্বাচন কারচুপির চক্রান্তের অংশ হিসেবে তড়িঘড়ি করে বিলটি সংসদে পেশ করেছে।
আরও পড়ুন: গ্যাসের দাম বৃদ্ধির পাঁয়তারা করছে সরকার: বিএনপি
রিজভী বলেন, মুজিব কোট পরা লোকেরা সরকারের সার্চ কমিটিতে থাকবে। এই সার্চ কমিটিও মুজিব কোট পরা লোকদের খুঁজে বের করবে।
এর আগে রবিবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ ও নির্বাচন কমিশনার বিল-২০২২’ নামের খসড়া বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন এবং পরবর্তী পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এটি যাচাই-বাছাই কমিটিতে পাঠানো হয়।
প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে সার্চ কমিটি গঠন করা হবে।