ফিলিস্তিন
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের দখলদারি বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নিতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান বাংলাদেশের
ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইসরাইয়েলের অবৈধ দখলদারিত্বের অবসান ঘটাতে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য স্থায়ী শান্তি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা পরিষদের নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার নিউ ইয়র্কে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে ফিলিস্তিন প্রশ্নসহ মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের উন্মুক্ত বিতর্কে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে দ্রুত অবনতিশীল পরিস্থিতির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ওআইসি।
রাষ্ট্রদূত মুহিত জেনিন শরণার্থী শিবিরে সাম্প্রতিক ইসরায়েলি আগ্রাসন বৃদ্ধির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ক্রমাগত আগ্রাসনের নিন্দা জানান। তিনি আরও বলেন, এই আগ্রাসন বৃদ্ধির ফলে নারী ও শিশুসহ অসংখ্য বেসামরিক হতাহতের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক অবকাঠামোর ব্যাপক ধ্বংস হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিচার ব্যবস্থার আইন সংশোধনের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে ইসরায়েলিরা
তিনি জোর দিয়ে বলেন, এ ধরনের আগ্রাসন শুধু ফিলিস্তিনিদের মৌলিক মানবাধিকারই লঙ্ঘন করে না, বরং অত্যাবশ্যকীয় সেবা প্রাপ্তির অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে। একই সঙ্গে তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা কেড়ে নেয় এবং তাদের মানবিক মর্যাদার মারাত্মক অবমাননা করে।
মুহিত এসব কর্মকাণ্ডের জন্য জরুরি জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্বারোপ করেন। জবাবদিহির অভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এ ধরনের কাজ করতে উৎসাহ পাচ্ছে ইসরায়েল।
ওআইসি'র পক্ষ থেকে ইসরায়েলের সব ধরনের বসতি স্থাপন কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইলের অপরাধের পূর্ণ, স্বচ্ছ ও স্বাধীন তদন্তের দাবিও জানান মুহিত।
আরও পড়ুন: আল-আকসায় ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ, ১৫০ ফিলিস্তিনি আহত
তিনি নিরাপত্তা পরিষদের নীতিমালা ৯০৪ (১৯৯৪) এবং ফিলিস্তিনি বেসামরিক জনগণের সুরক্ষায় জাতিসংঘ মহাসচিবের ২০১৮ সালের রিপোর্টে দেওয়া সুপারিশসহ আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য আন্তর্জাতিক সুরক্ষায় ওআইসির জরুরি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
ওআইসি'র অবস্থানের প্রতিনিধিত্ব করার পাশাপাশি মুহিত ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকারের প্রতি বাংলাদেশের অটল ও অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি একটি স্বাধীন, টেকসই ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ফিলিস্তিনের জনগণের বৈধ আকাঙ্ক্ষার ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী সমাধান অর্জনে বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের অবিচল অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: বিতর্কিত ইসরায়েলি নজরদারি প্রযুক্তি সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘনের ভয়ঙ্কর হাতিয়ার: টিআইবি
নুর ইসরায়েলের মোসাদের সঙ্গে ৩ বার সাক্ষাৎ করেছেন: ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এসওয়াই রমজান বৃহস্পতিবার বলেছেন, গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে তিনটি বৈঠক করেছেন।
ঢাকায় ফিলিস্তিন দূতাবাসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রাষ্ট্রদূত এ দাবি করেন।
মোসাদের সঙ্গে এ ধরনের বৈঠক বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে তিনি মনে করেন।
রমজান বলেন, ‘আমাদের গোয়েন্দা সূত্রগুলো কাতার, দুবাই ও ভারতে ইসরায়েলিদের সঙ্গে নুরের সাক্ষাতের ছবি পেয়েছে।’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে সিলেটে ভিপি নুরের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দাখিল
রাষ্ট্রদূতের মতে, গত বছর কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপের সময় ফিলিস্তিনি গোয়েন্দা সংস্থা প্রথম বিষয়টি লক্ষ্য করে।
দূত বলেন, নুর যদি মোসাদের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি অস্বীকার করেন, তা ফিলিস্তিনের জন্য যথেষ্ট।
তিনি বলেন যে তবে তা বাংলাদেশ সরকার বা বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য হুমকি।
ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ সরকারকে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে বলেছেন।
আরও পড়ুন: ৭ কর্মদিবসে সাবেক ভিপি নুরকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে হাজিরের নির্দেশ
চট্টগ্রামে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
৭৫তম নাকবা দিবস: ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি দেশের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের রেজুলেশনের ভিত্তিতে সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য এবং ইসরায়েলি দখলদারিত্বের অবসান এবং ১৯৬৭ সালের আগের সীমান্ত অনুযায়ী একটি স্বাধীন, সার্বভৌম ও টেকসই প্যালেস্টাইন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বাংলাদেশের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ‘নাকবা’-এর ফলাফল ফিরিয়ে আনতে এবং সার্বভৌম স্বদেশে নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও মর্যাদায নিয়ে বসবাসের জন্য ফিলিস্তিনি জনগণের বৈধ অধিকার ও আকাঙ্ক্ষা পুনরুদ্ধার করার জন্য প্রচেষ্টা জোরদার করার আহ্বান জানান।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, প্রধানমন্ত্রী ১৯৪৮ সালের ১৫মে তারিখে 'নাকবা' (বিপর্যয়) এর ৭৫ তম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি বার্তা জারি করেন, যা ফিলিস্তিনি সমাজ ও স্বদেশের ধ্বংস ও সংখ্যাগরিষ্ঠ ফিলিস্তিনি জনগণের স্থায়ী বাস্তুচ্যুতকে চিহ্নিত করে।
বার্তায়, বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে তিনি ১৯৪৮ সালের এই দিনে এবং তারপর থেকে নিজেদের ভূমি থেকে বাস্তুচ্যুত ও উচ্ছেদ হওয়া ফিলিস্তিনিদের প্রতি গভীর সহানুভূতি ও অটুট সংহতি প্রকাশ করেন, যা আজ পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে হবে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তিনি উল্লেখ করেন যে নাকবা শুধুমাত্র ফিলিস্তিনিদের তাদের নিজস্ব ভূমি থেকে হিংসাত্মক বিতাড়নমূলক কাজই ছিলোনা, এটি আজকে ইসরায়েলি বর্ণবাদ নামে যা পরিচিত, তারও সূচনা করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘের সদর দপ্তরে প্রথমবারের মতো এই দিবসটি পালনের জন্য ফিলিস্তিনি জনগণের একচ্ছত্র অধিকারের অনুশীলন সংক্রান্ত জাতিসংঘ কমিটিকে ধন্যবাদ জানান।
উল্লেখ্য যে এই দিবসটি ফিলিস্তিনিদের প্রতি ঐতিহাসিক অবিচারের সময়োপযোগী চিহ্ন এবং জাতিসংঘ ও এর সদস্যদের দায়িত্ব এই লজ্জাজনক বিপর্যয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে ফিলিস্তিনিরা যে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে তার অবসান করা।
তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিনিরা ন্যায়বিচার ও সমাধান চায়, যা কেবলমাত্র এই দুঃখজনক ঘটনার প্রকৃত দোষীদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার মাধ্যমে এবং ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের এবং অব্যাহত দখলদারদের অধীনস্ত এলাকায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য একটি ন্যায্য সমাধান নিশ্চিত করার মাধ্যমে করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: যারা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশ কিছুই কিনবে না: প্রধানমন্ত্রী
সকল মেগা প্রকল্প জনগণের সর্বোচ্চ উপকারের জন্য: প্রধানমন্ত্রী
ফিলিস্তিন: পশ্চিম তীরে কিশোরকে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরাইল
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অধিকৃত পশ্চিম তীরে শুক্রবার ইসরাইলি বাহিনী এক কিশোরকে গুলি করে হত্যা করেছে।
ফিলিস্তিনি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেথলেহেম শহরের কাছে একটি গ্রামে ইসরাইলি বাহিনী এবং পাথর নিক্ষেপকারী ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় গুলি চালানো হয়।
মন্ত্রণালয় নিহত কিশোরটিকে মোস্তফা সাবাহ (১৬) হিসেবে শনাক্ত করেছে এবং তার বুকে গুলি করা হয়েছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা ফুটেজে দেখা যাচ্ছে যে জনতা গুলি চালানোর পর কিশোরটির লাশ বহন করছে এবং আরবীতে ‘আল্লাহু আকবার’ বা ‘আল্লাহ মহান’ বলে চিৎকার করছে।
ইসরাইল-ফিলিস্তিনি লড়াই বছরের পর বছর অদৃশ্য উচ্চতায় পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর কমান্ডার সিরিয়ায় নিহত
সামরিক বাহিনী জানিয়েছে,এর আগে শুক্রবার সেনাবাহিনী পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালিয়ে ইসরাইলিদের বিরুদ্ধে হামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে।
ফিলিস্তিনি গণমাধ্যম জানিয়েছে, সেখানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে দুই যুবক আহত হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের একটি তথ্য অনুসারে ২০২৩ সালে এখনও পর্যন্ত পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে ৯৭ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তাদের অন্তত অর্ধেক সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত। সে সময় ইসরাইলিদের ওপর ফিলিস্তিনি হামলায় ১৯ জন নিহত হয়।
১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে ইসরাইল গাজা উপত্যাকা এবং পূর্ব জেরুজালেমসহ পশ্চিম তীর দখল করে। ফিলিস্তিনিরা ভবিষ্যৎ স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য ওই জমিগুলো চায়।
আরও পড়ুন: পাসওভারেও থেমে নেই ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘর্ষ
গাজায় হামাসের ওপর ইসরায়েলি বিমান হামলা
গাজা উপত্যকায় হামাসকে লক্ষ্য করে বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার ভোরে এই অভিযান চালায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনী।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, ফিলিস্তিনের হামাস দক্ষিণ ইসরায়েলে একটি রকেট নিক্ষেপ করার কয়েক ঘন্টা পর দেশটির নতুন অতি-জাতীয়তাবাদী সরকারের অধীনে ইতোমধ্যেই উত্তেজনা বেড়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গাজা নিয়ন্ত্রণকারী হামাসের একটি রকেট কারখানায় লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়েছে।এতে বলা হয় যে ওই স্থাপনায় কাঁচা রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে।
হামলায় হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
সেনাবাহিনী জানিয়েছে গত বুধবার ইসরায়েলি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গাজা থেকে ছোড়া একটি রকেটকে রুখে দেয়। গত সপ্তাহে, একটি সামরিক অভিযানে ১০ ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পর পাল্টাপাল্টি রকেট এবং বিমান হামলায় গাজার হামাস ও ইসরায়েল পশ্চিম তীরে কয়েক মাসের আন্তঃসীমান্ত শান্তি ভঙ্গ করেছে।
ইসরায়েলের স্থানীয় বাসিন্দারা বিস্ফোরণের শব্দ শোনার কথা জানিয়েছেন।
ইসরায়েলের উদ্ধারকারী পরিষেবা বলেছে যে তারা একটি ৫০ বছর বয়সী মহিলা ছাড়া আহত হওয়ার কোনও খবর পায়নি। তবে তিনি একটি আশ্রয়কেন্দ্রে দৌঁড়ানোর সময় পিছলে পড়েছিল।
আরও পড়ুন: পশ্চিম তীরে অভিযানের সময় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর গুলিতে ৩ ফিলিস্তিনির মৃত্যু
জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির ইসরায়েলি কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দিদের সঙ্গে কঠোর আচরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার যুদ্ধমূলক অবস্থানের বিষয়ে হামাস ইসরাইলকে হুমকি দেয়ার পরে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। অধিকৃত পশ্চিম তীর থেকে হামাস-শাসিত গাজা উপত্যকা পর্যন্ত অনেক ফিলিস্তিনি বন্দিদেরকে ফিলিস্তিনের জন্য বীর হিসেবে শ্রদ্ধা করে।
বেন-গভির বলেছেন যে গাজা থেকে নতুন রকেট হামলা ফিলিস্তিনি বন্দিদের বিরুদ্ধে তার শাস্তিমূলক নীতি বাস্তবায়নে তাকে বাধা দেবে না। তিনি এ বিষয়ে জরুরি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা বৈঠক ডেকেছেন।
ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সহিংসতা সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
গত সপ্তাহে পশ্চিম তীরের জেনিনে একটি ঘাঁটিতে ইসরায়েলি অভিযানে নিহত ১০ জনের বেশির ভাগই হামাস সদস্য। পরের দিন, পূর্ব জেরুজালেমের একটি ইহুদি বসতিতে ফিলিস্তিনিদের গুলিতে সাতজন নিহত হয়। একটি পৃথক আরেকটি ঘটনায় পূর্ব জেরুজালেম সপ্তাহান্তে ১৩ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনির গুলিতে দুই ইসরায়েলি আহত হয়েছে।
এমন অস্থিরতার পর ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে একাধিক শাস্তিমূলক পদক্ষেপের অনুমোদন দেয়।
ইসরায়েলি কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দীদের, বিশেষ করে মহিলা বন্দীদের বিরুদ্ধে কারারক্ষীদের দ্বারা কথিত হামলার নিন্দা জানিয়ে মঙ্গলবার একটি বিবৃতি দিয়েছে হামাস।
আরও পড়ুন: জেরুজালেমের সিনাগগে ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ৭
ইসরায়েলি কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে গত শুক্রবার সমস্যা শুরু হয়েছিল যখন তারা পূর্ব জেরুজালেমের সিনাগগের বাইরে ভয়াবহ ফিলিস্তিনি হামলার পরে কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি বন্দিকে নির্জন কারাগারে রেখেছিল।
জেল পরিষেবা জানিয়েছে, এক মহিলা ফিলিস্তিনি বন্দিকে বিচ্ছিন্নতার শাস্তি দেয়া হয়েছিল। প্রতিবাদে তার সেলে আগুন দেয়ার চেষ্টা করেছিল। আরেকটি পদক্ষেপে জেল পরিষেবা রামাল্লা শহরের কাছে ইসরায়েলের ওফার কারাগারের তিনটি কক্ষ থেকে টেলিভিশন সরিয়ে দিয়েছে।
প্রাক্তন এবং বর্তমান বন্দিদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি দল প্যালেস্টাইনি প্রিজনারস ক্লাবের আমানি স্রানেহ বলেছেন, ‘অতিরিক্ত পদক্ষেপ এবং বন্দিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েল সরকারের এই নতুন উসকানি নীতি’ ‘খুব উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি’ তৈরি করছে।
আরও পড়ুন: সম্মিলিতভাবে ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াতে মুসলিম উম্মাহের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
জেরুজালেমের সিনাগগে ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ৭
পূর্ব জেরুজালেমের সিনাগগের বাইরে এক ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীর গুলিতে শুক্রবার রাতে ৭০ বছর বয়সী এক নারীসহ সাতজন নিহত ও তিনজন আহত হন। বিষয়টি সরকারি কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন। এটি কয়েক বছরের মধ্যে ইসরায়েলিদের ওপর সবচেয়ে মারাত্মক হামলা এবং এর ফলে, আরও রক্তপাতের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলেছে।
পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর অভিযানে ৯ জন নিহত হওয়ার একদিন পর বাসিন্দারা যখন ইহুদিদের ছুটির দিন পালন করছিলেন, তখন এই হামলার ঘটনা ঘটে।
গাজা থেকে রকেট হামলা এবং প্রতিশোধমূলক ইসরায়েলি বিমান হামলাসহ সহিংসতার বিস্ফোরণ ইসরায়েলের নতুন সরকারের জন্য একটি প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে, যেখানে উগ্র জাতীয়তাবাদীদের আধিপত্য রয়েছে যারা ফিলিস্তিনি সহিংসতার বিরুদ্ধে কঠোর লাইনের জন্য চাপ দিয়েছে। রবিবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের ওই অঞ্চল সফর নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
আরও পড়ুন: লস অ্যাঞ্জেলেসে চান্দ্র নববর্ষ উৎসবের কাছে বন্দুকধারীর হামলা, নিহত ১০
ইসরায়েলের জাতীয় পুলিশ সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, তিনি নিরাপত্তা মূল্যায়ন করেছেন এবং তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন, ছুটির দিন শেষ হওয়ার পর শনিবার রাতে তিনি তার নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠক করবেন।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জঁ-পিয়েরে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং প্রাণহানির ঘটনায় মর্মাহত ও শোকাহত।
ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, নেভ ইয়াকভ নামক একটি এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে, যেখানে অতি-অর্থোডক্স জনগোষ্ঠী রয়ে গেছে এবং বন্দুকধারী একটি গাড়িতে করে পালিয়ে গেছে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা তাকে ধাওয়া করে এবং পাল্টা গুলি নিক্ষেপে তাকে হত্যা করে।
জেরুজালেমের পুলিশ প্রধান ডোরন তুরজেমান বন্দুকধারী ছাড়াও সাতজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এবং তিনজন আহত হওয়ার বিষয়টিও জানিয়েছে।
পুলিশ হামলাকারীকে পূর্ব জেরুজালেমের বাসিন্দা ২১ বছর বয়সী বলে শনাক্ত করেছে। তুরজেমান তাকে সাহায্যকারী যে কাউকে খুঁজে বের করার উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: শিকাগো স্কুলের কাছে বন্দুকধারীর গুলিতে ২ ছাত্র নিহত, আহত ২
নাইজেরিয়ায় ৭ বন্দুকধারী নিহত
জীবন ও জীবিকার স্বার্থে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
বিশ্বব্যাপী মানুষের জীবন ও জীবিকার স্বার্থে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমরা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান চাই। নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে একটি দেশকে শাস্তি দিতে গিয়ে নারী ও শিশুসহ গোটা মানবজাতিকেই শাস্তি দেয়া হচ্ছে।’
স্থানীয় সময় শুক্রবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৭তম অধিবেশনে তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
বিগত বছরের মতো এবারও তিনি বাংলায় বক্তব্য দিয়েছেন। এ বছরের সাধারণ বিতর্কের থিম হল ‘এ ওয়াটারশেড মোমেন্ট: ট্রান্সফর্মেটিভ সলুশনস টু ইন্টারলকিং চ্যালেঞ্জেস’।
তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব একটি দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বরং সমস্ত দেশের জনগণের জীবন ও জীবিকাকে আরও ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে এবং তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। মানুষ খাদ্য,বাসস্থান,স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিশেষ করে শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘বিশ্ব সম্প্রদায়ের বিবেকবান অংশের কাছে আমার আবেদন, অস্ত্র প্রতিযোগিতা, যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা বন্ধ করুন। শিশুদের খাদ্য, শিক্ষা,স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। শান্তি প্রতিষ্ঠা করুন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা একই গ্রহে বাস করি এবং আমরা আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য এটিকে আরও ভালো অবস্থায় রেখে যাওয়ার জন্য দায়বদ্ধ।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সংকট কাটিয়ে উঠতে বিশ্বব্যাপী সংহতি প্রয়োজন: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘সংলাপ হচ্ছে সংকট ও বিরোধ নিরসনের সর্বোত্তম উপায়।’
এ প্রসঙ্গে তিনি ‘গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপ’- গঠনের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই গ্রুপের একজন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে, আমি বর্তমান পরিস্থিতির গুরুত্ব ও সঙ্কটের গভীরতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি বৈশ্বিক সমাধান নিরূপণ করতে অন্যান্য বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘এটি (যুদ্ধ) আমাদের মতো অর্থনীতিকে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে ফেলেছে। মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমরা (বাংলাদেশ) বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছি।’
আরও পড়ুন: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট খাদ্য ও জ্বালানি সংকটে উদ্বেগ প্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর
রোহিঙ্গা সংকট আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ও এর বাইরেও প্রভাব ফেলতে পারে
মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, গত মাসে বাংলাদেশ ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশ থেকে বাংলাদেশে অভিবাসনের পাঁচ বছর পূর্ণ হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরিতে মিয়ানমারকে সহায়তা করার জন্য ত্রিপক্ষীয় বিন্যাসে অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা এবং জাতিসংঘ ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও একটি রোহিঙ্গাকেও তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করা হয়নি।’
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সশস্ত্র সংঘাত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনাকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ব্যাপারে জাতিসংঘ কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছি।’
বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘদিন উপস্থিতির বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবেশ, নিরাপত্তা ও সামাজিক-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, ‘প্রত্যাবাসন নিয়ে অনিশ্চয়তা ব্যাপক হতাশার জন্ম দিয়েছে। মানব ও মাদক পাচারসহ আন্তঃসীমান্ত সংগঠিত অপরাধ বাড়ছে।’
তিনি বলেন, ‘সমস্যাটি অব্যাহত থাকলে এটি সমগ্র অঞ্চল ও এর বাইরেও নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে।’
আরও পড়ুন: মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর
অন্তর্ভুক্তিমূলক জলবায়ু কর্মকাণ্ড প্রচার করুন
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি মানবজাতির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।
তিনি বলেন, ‘অতীতে আমরা প্রতিশ্রুতি দেয়া এবং ভঙ্গ করার একটি দুষ্ট চক্র দেখেছি। আমাদের এখন এই পথ পরিবর্তন করতে হবে।’
বাংলাদেশের বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেছেন যে সরকার প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়ন এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ জলবায়ু পরিবর্তনের বিপজ্জনক প্রভাব মোকাবিলায় অনেক রূপান্তরমূলক পদক্ষেপের নেতৃত্ব দিয়েছে।
তিনি বলেন, “ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের সভাপতি থাকাকালে আমরা ‘মুজিব ক্লাইমেট প্রস্পারিটি প্লান’ গ্রহণ করি, যার লক্ষ্য হল বাংলাদেশকে ‘ঝুঁকির পথ থেকে জলবায়ু সহনশীলতা ও জলবায়ু সমৃদ্ধির টেকসই পথের’ দিকে নিয়ে যাওয়া।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কিত আমাদের জাতীয় পরিকল্পনা এবং নীতিগুলি লিঙ্গ প্রতিক্রিয়াশীল এবং অভিযোজন এবং প্রশমনে মহিলাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বিবেচনা করে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ তাদের নিজস্ব সমৃদ্ধি পরিকল্পনা বিকাশের জন্য অন্যান্য দুর্বল দেশগুলোকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। আমি বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে অন্তর্ভুক্তিমূলক জলবায়ু কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করার আহ্বান জানাই।’
আরও পড়ুন: জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভাষণে বিশ্ব শান্তির ওপর গুরুত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী: মোমেন
সন্ত্রাস ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি
প্রধানমন্ত্রী সন্ত্রাস ও সহিংস চরমপন্থার প্রতি বাংলাদেশের 'জিরো টলারেন্স' অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের ভূখণ্ড কোনো পক্ষকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বা অন্যদের ক্ষতি করার জন্য ব্যবহার করার অনুমতি দিই না।’
সাইবার-অপরাধ এবং সাইবার-সহিংসতা মোকাবিলায় একটি আন্তর্জাতিকভাবে বাধ্যতামূলক যন্ত্রের সমাপ্তির জন্য জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ মানবাধিকার রক্ষায় পূর্ণ অঙ্গীকারবদ্ধ
একটি দায়িত্বশীল সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ তার নিজস্ব জনগণের মানবাধিকার রক্ষা ও প্রচারে সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আমরা একটি সামগ্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি গ্রহণ করেছি।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রশমন, সংঘাত ও অর্থ, জ্বালানি ও জ্বালানি সংকট প্রতিরোধে রূপান্তরমূলক সমাধান খুঁজতে আগ্রহী যা বিশ্ব এখন মোকাবিলা করছে।
আরও পড়ুন: মার্কিন ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশের উদার বিনিয়োগ নীতিতে আমন্ত্রণ প্রধানমন্ত্রীর
ফিলিস্তিনকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে ঢাকা
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ অধিকৃত ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
তিনি ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমান্তের ভিত্তিতে দ্বিরাষ্ট্র সমাধান এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি বাংলাদেশের দ্ব্যর্থহীন সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের সাফল্য সংক্ষেপে বর্ণনা করে তিনি বলেন, আগস্ট ২০২২ পর্যন্ত বাংলাদেশের যোগ্য জনসংখ্যার শতভাগ টিকা দেয়া হয়েছে।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, শিক্ষা, খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে এর সাফল্য এবং লিঙ্গ বৈষম্য তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স মোকাবিলায় পদক্ষেপ প্রয়োজন: প্রধানমন্ত্রী
ফিলিস্তিন, মিয়ানমারে নজর দিন, অগ্নিসন্ত্রাসের শিকারদের কথা শুনুন: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের উচিত ফিলিস্তিন, মিয়ানমারের দিকে নজর দেয়া এবং ভালো হতো যদি তাদের হাইকমিশনার এদেশে ২০১৩-১৪-১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাসে হতাহতদের পরিবারের কথা শুনতেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ফিলিস্তিনে শিশুরা ইসরায়েলি সৈন্যের দিকে ঢিল ছুঁড়লে প্রত্যুত্তরে বৃষ্টির মতো গুলি ছুঁড়ে তাদের হত্যা করা হয়। আর রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করে বাংলাদেশকে বাহবা দিলেই হবে না, মিয়ানমারে গিয়ে সেখানে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়া নিশ্চিত করতে হবে। মানাবাধিকারের চরম লঙ্ঘন ঘটা এসব দেশে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের নজর দেয়া উচিত।
ড. হাছান বলেন, 'বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় মানবাধিকার লংঘনকারী জিয়া ও তার দল। জিয়াউর রহমান ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করেছিল, খুনিদের পূণর্বাসিত করেছিল। শুধু তাই নয়, ক্ষমতা নিষ্কন্টক করতে হাজার হাজার সেনাসদস্যকে বিনা বিচারে হত্যা করেছিল। আর ২০১৩-১৪-১৫ সালে তার তৈরি করে রেখে যাওয়া দল বিএনপি ও তাদের দোসর জামাতের হরতাল-অবরোধের নামে শত নিরীহ মানুষকে পেট্রোল বোমায় পুড়িয়ে মারা হয়েছে।'
আরও পড়ুন: বিএনপির মিছিলের হারিকেন থেকে পেট্রোল বোমার শঙ্কায় জনগণ: তথ্যমন্ত্রী
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট তার সদ্যসমাপ্ত বাংলাদেশ সফরকালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে যে কথা বলেছেন, সে প্রেক্ষিতে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান বলেন, দেশের প্রত্যেক নাগরিকের ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার জন্য এই আইন। আমাদের এ আইন নিয়ে যারা প্রশ্ন তোলেন, তাদের বলবো অস্ট্রেলিয়া, সিংগাপুরে এ আইনের দিকে তাকাতে। সেখানকার আইনে আমাদের চেয়েও কঠিন ধারা আছে। আমাদের যে ধারাগুলো নিয়ে কথা হয়, ভারত ও পাকিস্তানেও একইরকম ধারা আছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে ফ্রেমওয়ার্ক ল' করা হয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার জন্য। সেটির আলোকে সদস্য রাষ্ট্রগুলো তাদের আইন করেছে। কই, সেগুলো নিয়ে তো কোনো কথা বলেন না।
'অনেক সময় আইন না পড়ে, না বুঝেও নানা ধরনের কথা বলা হয়' উল্লেখ করে সেইসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, 'হ্যাঁ, এই আইনের যাতে কোনো অপপ্রয়োগ না হয়, সে জন্য আমরা সতর্ক আছি, কেউ যাতে নিগৃহীত না হয় সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি।'
হাছান মাহমুদ এসময় গভীর শ্রদ্ধা ও শোকে জাতির পিতা ও তার পরিবারের শহীদদের স্মরণ করেন এবং বলেন, 'যারা বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্য কুশীলব ও যারা এর পটভূমি রচনা করেছে, বাসন্তীকে জাল পরিয়ে জনগণকে উত্তেজিত করেছে, তাদের বিচার ও মুখোশ উন্মোচনের জন্য কমিশন গঠনের দাবির সঙ্গে আমি একাত্ম।'
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নে কৃষিবিদ ও কৃষির সকল ক্ষেত্রে কর্মরতদের অনেক অবদান রয়েছে উল্লেখ করে একটি নিবেদন হিসেবে পরিবেশ গবেষক ড. হাছান বলেন, বাংলাদেশের আয়তনের চারভাগের একভাগ নেদারল্যান্ডসের কৃষিখাতে বার্ষিক রপ্তানি আয় ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা প্রায় আমাদের মোট রপ্তানির সমান। আশা করি, আমাদের কৃষিবিদরা কৃষিজমি রক্ষাসহ বহুমুখী কার্যক্রমে দেশের কৃষিখাতকে তৈরি পোশাক খাতের মতো অন্যতম প্রধান রপ্তানি আয়ের উৎসে পরিণত করতে সচেষ্ট থাকবেন।
আরও পড়ুন: বিএনপির পেট্রোলবোমা সন্ত্রাসীরা ফের মাঠে, প্রতিরোধ করতে হবে: তথ্যমন্ত্রী
বিশেষ অতিথি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, জিয়াউর রহমান কমিশন্ড অফিসার হিসেবে জীবনের বিনিময়ে হলেও রাষ্ট্রপতি, রাষ্ট্র ও সংবিধান রক্ষার শপথ নিয়ে তা ভঙ্গ করে বঙ্গবন্ধু হত্যায় কুশীলবের ভূমিকা নিয়েছেন, সংবিধান লংঘন করেছেন, সংসদে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ পাশ করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করেছেন।
বিশেষ অতিথি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, যারা জাতির পিতার হত্যাকারীদের রক্ষা করেছিল ও সরকারি চাকরি দিয়েছিল তারা এখনও বাংলাদেশের রাজনীতিতে রয়েছে। তারা বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান চায় এবং বঙ্গবন্ধুকন্যাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে চায়। এরাই দেশে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করেছিল এবং এখনও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
শেকৃবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কৃষিবিদ অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদের সভাপতিত্বে সভায় আলোচনা করেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কৃষিবিদ অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া, শেকৃবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব এবং যুব ও ক্রীড়া সচিব কৃষিবিদ মেজবাহ উদ্দিন, বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবিদ ড. মো. সাঈদুর রহমান সেলিম প্রমুখ।
আরও পড়ুন: জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান কুশীলব: তথ্যমন্ত্রী
জেরুজালেমে ইসরায়েলি বাসে গুলি, আহত ৮
দখলকৃত জেরুজালেমের পুরাতন শহরের কাছে রবিবার একটি বাসে বন্দুকধারীর এলোপাতাড়ি গুলিতে আট ইসরায়েলি আহত হয়েছে বলে পুলিশ ও চিকিৎসকরা জানিয়েছে।
আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর। তাদের মধ্যে একজন গর্ভবতী মহিলার পেটে আঘাত এবং একজন পুরুষের মাথায় ও ঘাড়ে গুলি লেগেছে।
কর্ককর্তারা জানিয়েছেন, ওয়েস্টার্ন ওয়ালের কাছে একটি পার্কিং লটে বাসটি অপেক্ষা করার সময় গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। এটি হুদিদের প্রার্থনা করার পবিত্রতম স্থান হিসাবে পরিচিত।
ইসরায়েলি পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে নিরাপত্তা বাহিনী পাঠানো হয়েছে। সন্দেহভাজন হামলাকারীর খোঁজে সিলওয়ানের নিকটবর্তী ফিলিস্তিনি এলাকায় তল্লাশি শুরু করেছে।
সম্প্রতি গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের পর এ হামলার ঘটনা ঘটল।
পড়ুন: গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত ফিলিস্তিন-ইসরায়েল
ক্রোয়েশিয়ায় বাস দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত
গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত ফিলিস্তিন-ইসরায়েল
তিন দিনের সহিংস সংঘর্ষের পর রবিবার রাতে ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
মিশরের মধ্যস্থতায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে ইসরায়েলি এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীর রকেট হামলা অব্যাহত ছিল।
ইসরায়েল জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করা হলে তারা ‘কঠোরভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে’।
গত শুক্রবার থেকে ইসরায়েলি বিমান গাজায় লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করছে। অপরদিকে ইরান-সমর্থিত ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসরায়েলে শত শত রকেট নিক্ষেপ করেছে।
ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে। এছাড়া আহত হয়েছেন ২০০ শতাধিক মানুষ।
ইসরায়েল শুক্রবার ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর একজন নেতার ওপর হামলার মাধ্যমে তাদের অভিযান শুরু করে। শনিবার আরেকজন শীর্ষ নেতার ওপর আরেকটি হামলা চালায়।
সশস্ত্র গোষ্ঠীর দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা কমান্ডার খালেদ মনসুর শনিবার গভীর রাতে দক্ষিণ গাজার রাফাহ শরণার্থী শিবিরের একটি অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ে বিমান হামলায় নিহত হন। এসময় আরও দুই জঙ্গি এবং পাঁচজন বেসামরিক লোক নিহত হয়।
গত বছর গাজায় ইসরায়েল এবং হামাসের ১১ দিনের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর সর্বশেষ এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটল।
পড়ুন: ক্রোয়েশিয়ায় বাস দুর্ঘটনায় ১২ জন নিহত
ভারতে মন্দিরে পদদলিত হয়ে নিহত ৩