প্রধানমন্ত্রী
স্বজন হারানোর দুঃখের গভীরতা আর কেউ অনুধাবন করতে পারবে না, যেমনটা আমি করি : বিজিবি সদর দপ্তরে প্রধানমন্ত্রী
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) বার্ষিক কুচকাওয়াজে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদের মধ্যে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে চেইন অব কমান্ড মেনে চলায় সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করেছেন।
বিজিবি সদস্যদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, চেইন অব কমান্ড একটি সুশৃঙ্খল বাহিনীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। কখনও শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবেন না; চেইন অব কমান্ড অনুসরণ অব্যাহত রাখুন।’
সোমবার (৪ মার্চ) সকালে রাজধানীতে বাহিনীটির সদর দপ্তরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবস-২০২৪ এর কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন-২০১০ প্রণয়নকে বিজিবির সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বিজিবিকে আরও শক্তিশালী করতে তার সরকারের উদ্যোগ তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: বেইলি রোডের ভবনটিতে ‘ফায়ার এক্সিট’ নেই: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, বর্তমানে বিজিবিকে একটি দক্ষ, শক্তিশালী, আধুনিক ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। বিজিবি এখন স্থল, জল এবং আকাশপথে দায়িত্ব পালনে সক্ষম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিজিবিকে বিশ্বমানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে 'বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ভিশন-২০৪১' গ্রহণ করেছে।
২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশে বিজিবিও হবে স্মার্ট বাহিনী উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা চাই বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ একটি বিশ্বমানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে উঠুক এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে বাংলাদেশের জনগণের আস্থার প্রতীক হিসেবে এগিয়ে যাক।’
প্রধানমন্ত্রী দেশের সীমান্ত সুরক্ষা এবং বিভিন্ন সীমান্ত অপরাধ মোকাবিলা এবং দেশের যে কোনো সংকটে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর ভূমিকার প্রশংসা করেন।
আরও পড়ুন: আধুনিক প্রযুক্তিগত জ্ঞান সম্পন্ন সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলা হবে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, সীমান্ত রক্ষার পাশাপাশি বিজিবি দায়িত্বশীলতার সঙ্গে চোরাচালান, মাদক, নারী, শিশু পাচারসহ সীমান্ত সংক্রান্ত বিভিন্ন অপরাধ প্রতিহত করেছে।
তিনি বলেন, ‘সীমান্তে প্রহরীর ভূমিকা পালনের পাশাপাশি দেশে অগ্নিসন্ত্রাসের মতো যেকোন সমস্যায় বিজিবি জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং জানমাল রক্ষায় সর্বদা ভূমিকা রাখছে এবং এভাবেই তারা জাতির আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে।’
২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই মর্মান্তিক ঘটনার সঙ্গে তার গভীর আবেগঘন সম্পর্কের কথা জানান। মর্মান্তিক ওই ঘটনায় ৫৭ জন বিশিষ্ট কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন ব্যক্তি দুঃখজনকভাবে নিহত হন। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঘটে যাওয়া এ ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম কালো অধ্যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্রোহের সময় হারানো মানুষের কথা স্মরণ করে তিনি গভীর দুঃখ অনুভব করছেন। তিনি নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তাদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি তার ব্যক্তিগত সহানুভূতি প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'স্বজন হারানোর দুঃখের গভীরতা আমার মতো আর কেউ অনুধাবন করতে পারবে না।’
প্রধানমন্ত্রী বিদ্রোহের জন্য দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার আশ্বাস পুনর্ব্যক্ত করে এ ধরনের ট্র্যাজেডির পুনরাবৃত্তি হবে না বলে আশা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী তার নেতৃত্বে গৃহীত অগ্রগতির কথা তুলে ধরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) আধুনিকায়নে বিগত ১৫ বছরে ৩৫ হাজার ৫১৭ জন সৈন্য নিয়োগের কথা উল্লেখ করেন। অন্তর্ভুক্তির একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক, তার সরকার ২০১৫ সাল থেকে ৯৩৬ জন নারী সৈন্য যোগ দিয়ে বাহিনীতে নারীদের একীভূতকরণের উদ্যোগ নিয়েছে।
আরও পড়ুন: অপরাধের নতুন ধরন দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে: পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রধানমন্ত্রী
উদীয়মান হুমকির প্রতিক্রিয়ায়, তার প্রশাসন সীমান্তের ঝুঁকিপূর্ণ অংশগুলোতে 'স্মার্ট ডিজিটাল নজরদারি এবং কৌশলগত সীমান্ত প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থা' বাস্তবায়ন করেছে, নজরদারি ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে এবং আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা জোরদার করেছে।
সীমান্ত নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক উন্নয়নে নিজের অঙ্গীকারের ওপর জোর দিয়ে শেখ হাসিনা ১ হাজার ৩৬ কিলোমিটার সীমান্ত সড়ক নির্মাণের কথা তুলে ধরেন। এই অবকাঠামো প্রকল্পের লক্ষ্য কেবল পার্বত্য সীমান্ত অঞ্চলকে সুরক্ষিত করা নয় বরং প্রত্যন্ত জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নও করা।
প্রধানমন্ত্রী পিলখানার বীর উত্তম আনোয়ার হোসেন প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন এবং পরে মার্চ-পাস্টের অভিবাদন গ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বীরত্বপূর্ণ ও অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৭২ জন নির্বাচিত বিজিবি সদস্যকে বিজিবি পদক, রাষ্ট্রপতি বিজিবি পদক, বিজিবি পদক-সেবা ও রাষ্ট্রপতি বিজিবি পদক-সেবা প্রদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী বিজিবি সদর দপ্তরে বঙ্গবন্ধুর 'প্রেরণা' শীর্ষক ভাস্কর্য উন্মোচন করেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী পৌঁছালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী তাকে স্বাগত জানান।
আরও পড়ুন: রমজানে পণ্যের অবৈধ মজুদ বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে: ডিসিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী
মন্ত্রিসভায় শপথ নিলেন নতুন মুখ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন সাত নতুন মুখ।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন নতুন প্রতিমন্ত্রীদের শপথবাক্য পাঠ করান।
শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তারা শপথ ও গোপনীয়তার শপথেও স্বাক্ষর করেন।
আরও পড়ুন: টানা চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় শেখ হাসিনাকে মন্ত্রিসভার অভিনন্দন
তারা হলেন- রাজশাহী-৫ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ , নওগাঁ-২ আসনের শহীদুজ্জামান সরকার, চট্টগ্রাম ১৪ আসনের নজরুল ইসলাম চৌধুরী, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক বেগম শামসুন্নাহার চাপাত, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক ওয়াশিকা আয়েশা খান, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ও শহীদ কর্নেল নাজমুল হুদার মেয়ে নাহিদ ইজহার খান এবং আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ও সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য ডা. রোকেয়া সুলতানা।
গত ১১ জানুয়ারি ৩৭ জন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী নিয়ে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর মধ্যে ২৬ জন মন্ত্রী ও ১১ জন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন।
নতুনদের নিয়ে মন্ত্রিসভার মোট সদস্য সংখ্যা দাঁড়াল ৪৪ জনে। এখন তার মন্ত্রিসভায় ২৬ জন মন্ত্রী ও ১৮ জন প্রতিমন্ত্রী রয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধান বিচারপতি, উপদেষ্টা, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, অন্যান্য মন্ত্রী, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, তিন বাহিনীর প্রধান, কূটনৈতিক কোরের সদস্য, সাংবাদিক এবং উচ্চপদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতির পত্নী ডা. রেবেকা সুলতানা, প্রধানমন্ত্রীর কনিষ্ঠ বোন শেখ রেহানা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
মাহবুব হোসেনের পরিচালনায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।
আরও পড়ুন: নতুন মন্ত্রিসভায় ডাক পেলেন যারা
মন্ত্রিসভায় নতুন ৭ জনকে নিয়োগ দিলেন রাষ্ট্রপতি
অফশোর গ্যাস উত্তোলনে বিনিয়োগ প্রয়োজন: আইটিএফসি প্রতিনিধি দলকে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে জ্বালানি ঘাটতি দূর করতে সরকার অফশোর গ্যাস উত্তোলনের সিন্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এ জন্য আমাদের বিনিয়োগ প্রয়োজন।'
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সংসদ ভবনস্থ কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইটিএফসি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইঞ্জিনিয়ার হানি সালেম সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার দেশের সব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে।
তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৯৬ সালে তার প্রথম মেয়াদে তিনি বিদ্যুৎ খাতের জন্য বেসরকারি খাতকে উন্মুক্ত করে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার তা সৃষ্টি করায় দেশে বিনিয়োগ উপযোগী পরিবেশ বিরাজ করছে।’আরও পড়ুন: নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের বিশেষ তহবিল চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং এজন্য দেশে বিনিয়োগ প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন,‘বিশেষ করে গ্রামীণ অর্থনীতি ও খাদ্য উৎপাদনের উন্নয়নকে আমরা অগ্রাধিকার দিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বর্তমান মুদ্রাস্ফীতি রোধে লড়াই করছে এবং জনসাধারণের ভোগান্তি লাঘবের ওপর জোর দিয়েছে।
তিনি বলেন, এজন্য আমরা সব ধরনের উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছি।
আরও পড়ুন: সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও মাদক প্রতিরোধে কাজ করুন: স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিদের প্রধানমন্ত্রী
আইটিএফসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী হানি সালেম বলেন, তারা অবকাঠামো, আইসিটি, ঋণ ব্যবস্থাপনা, জ্বালানি খাত ও জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন বাস্তবায়নে সর্বাত্মক সহায়তা দেবেন।
বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আর্থিক ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করেন ইঞ্জিনিয়ার হানি সালেম।
তিনি বলেন, ঋণ পরিশোধে বাংলাদেশের চমৎকার ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদক দমনে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে: পুলিশকে প্রধানমন্ত্রী
খতনা করতে গিয়ে দুই শিশুর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নির্দেশ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে খতনা করাতে গিয়ে সম্প্রতি দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় না দিতে (জিরো টলারেন্স) স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেনকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্য খাতের সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠক শেষে আয়োজিত আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে সামন্ত লাল সেন বলেন, “গতকাল আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি, প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন, ‘এ ব্যাপারে তুমি জিরো টলারেন্স। কোনো রকম অনিয়ম, কোনোরকম গাফিলতির জন্য যদি কোনো বাচ্চা মারা যায়, তুমি তোমার মতো ব্যবস্থা নেবে।’ এরকম কড়া নির্দেশ উনি আমাকে দিয়েছেন।”
বৈঠকের বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে, সেটার পর্যালোচনা করে আমরা সবাই আলাপ-আলোচনা করলাম, কীভাবে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা যায়। ইতোমধ্যেই আপনারা জানেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, কীভাবে ক্লিনিক পরিচালনা করবে কী কী শর্ত থাকা লাগবে।’
আরও পড়ুন: ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে ২৯ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত: গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
তিনি বলেন, ‘এটি (স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা) গত বৃহস্পতিবার আমরা দিয়েছিলাম, আজ রবিবার। আমরা তিন চার দিন সময় দিয়েছিলাম দেখি কী করে। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই এটি আমি নিজে মনিটরিং করব।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমার চিকিৎসক ভাই-বোনদের বলতে চাই আমরা যেখানে অপারেশন করব...., অপারেশন করার আগে আমাদের দেখতে হবে সেখানে সাপোর্টিং জিনিস আছে কিনা। সেটা অপারেশন করার জায়গা নাকি জায়গা নয়।’
তিনি বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে অনেক অপারেশন করেছি সুতরাং আমি জানি কোথায় কী কী লাগে, কী ক্রাইটেরিয়া লাগে অপারেশন করার জন্য। সেগুলো না থাকলে কোনো অবস্থাতেই এটা করা যাবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএমডিসি (বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল ) হচ্ছে আমাদের সর্বোচ্চ আদালত। ইতোমধ্যে আমি বিএমডিসির সঙ্গে কথা বলেছি, এই তিনটি (অ্যানেসথেসিয়া দিয়ে খতনা ও এন্ডোসকপি করাতে গিয়ে মারা যাওয়ার ঘটনা) বিষয় ইনভেস্টিগেশন করার জন্য এবং যদি কেউ দোষী সাব্যস্ত হয় তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। আমার কথা চিকিৎসকদের সুরক্ষা দেবে, রোগীদেরও সুরক্ষা দেব।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে দেওয়া ১০ দফা নির্দেশনার বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে স্বাস্থ্য মন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি আগামী দুই একদিনের মধ্যে..., আমি নিজে এটা মনিটরিং করব।’
তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের আগেও বলেছি, এখনো বলছি আমি এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। আমি এ ব্যাপারে কোনো ছাড় দেব না, যার যেখানে যে যোগ্যতা, সেই যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ করবে, এর বাইরে কাজ করতে পারবে না। এটা পরিষ্কার।’
অবৈধ ক্লিনিক এর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অবৈধ ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযান চলমান। অতীতে কী হয়েছে সেটা... আমি তো বলছি এটা আমি চলমান রাখব।’
তিনি বলেন, ‘আমি সেদিন ময়মনসিংহ গিয়েছিলাম, আসার সময় ডানে-বামে কত ক্লিনিক। এটাতো আমার একার পক্ষে সম্ভব না, এটার জন্য সবার আপনাদের ভূমিকা লাগবে, স্থানীয় সংসদ সদস্যদের ভূমিকা লাগবে। সামগ্রিকভাবে যদি এটার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো যায় এটা সম্ভব।’
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের সময় নাগরিকদের সতর্ক থাকার আহ্বান রাষ্ট্রপতির
স্বাস্থ্যখাতের অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও মাদক প্রতিরোধে কাজ করুন: স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিদের প্রধানমন্ত্রী
সমাজ থেকে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতি নির্মূলে সচেষ্ট থাকতে স্থানীয় সরকারের কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে হবে। আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।’
রবিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে 'স্থানীয় সরকার স্মার্ট হবে: সেবার অধিকার নিশ্চিত হবে' প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত ‘স্থানীয় সরকার দিবস -২০২৪’ অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
যুবসমাজের ওপর মাদকের ক্ষতিকর প্রভাব এবং সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিকে উসকে দেওয়ার আশঙ্কার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী এসব সমস্যা মোকাবিলায় জনসচেতনতা গড়ে তুলতে জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে এই গতিশীলতায় অবদান রাখার জন্য স্থানীয় নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান।
জনপ্রতিনিধিদের তাদের দেওয়া অঙ্গীকার রক্ষা এবং সঠিক প্রকল্প গ্রহণের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী, যাতে জনগণ সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু অ্যাপ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশকে একটি ব-দ্বীপ উল্লেখ করে তিনি নদ-নদী, খাল, নালা, বিল ও হাওরসহ জলাশয় সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
শেখ হাসিনা গ্রাম পর্যায়ের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং জলাশয় সংরক্ষণের মতো উদ্যোগের মাধ্যমে পরিবেশ সুরক্ষার ওপরও জোর দেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে জটিলতা এড়াতে গ্রাম পর্যায়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শুরু করা জরুরি।
প্রধানমন্ত্রী স্থানীয় প্রতিনিধিদের নিজস্ব স্থানীয় সংস্থার জন্য রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি, সমবায়ের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, আবাদি জমি রক্ষা এবং কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালনা ও সেবার প্রতি মনোযোগ দিতে তাদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ২০০৫-০৬ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার খাতে বাজেট বরাদ্দ ছিল মাত্র ৫ হাজার ৭৯৯ কোটি টাকা, কিন্তু ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে তা বাড়িয়ে ৪৬ হাজার ৭০৪ কোটি টাকা করা হয়।
তিনি এমন একটি ভবিষ্যতের কল্পনা করেছিলেন যেখানে স্থানীয় সরকার সংস্থাগুলো জাতীয় উন্নয়নের ক্ষেত্রে ক্ষমতাপ্রাপ্ত হবে এবং স্থানীয় উদ্যোগের জন্য প্রয়োজনীয় কাঠামো সরবরাহে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকার উপর জোর দিয়েছিলেন।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আবুল খায়ের আবদুল্লাহ, শরীয়তপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাবেদুর রহমান খোকা সিকদার, রাজশাহীর বাঘা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লায়েব উদ্দিন আহমেদ, পঞ্চগড় পৌর মেয়র জাকিয়া খাতুন এবং সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার জগদ্দল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন রশিদ লাবলু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইব্রাহিম উপস্থিত সবাইকে স্বাগত জানান এবং দেশব্যাপী স্থানীয় শাসন ও সেবা প্রদানের জন্য নিবেদিত একটি দিনের মঞ্চ তৈরি করেন।
আরও পড়ুন: নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের বিশেষ তহবিল চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
নারী উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের বিশেষ তহবিল চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু অ্যাপ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি ডিজিটাল বাংলাদেশের শ্রদ্ধাঞ্জলি হিসেবে বঙ্গবন্ধু অ্যাপের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাস আরও সমৃদ্ধ হলো।
শনিবার প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্বার টেকনোলজিস লিমিটেডের তৈরি অ্যাপটি উদ্বোধন করা হয়।
আরও পড়ুন: রমজানে কোনো পণ্যের ঘাটতি হবে না: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'এই অ্যাপ মানুষকে জাতির পিতার ঘটনাবহুল জীবন সম্পর্কে জানার সুযোগ করে দিয়েছে।’
তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে জনগণকে শিক্ষিত করতে ডিজিটাল মাধ্যম হিসেবে অ্যাপটি ভূমিকা রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী এই দূরদর্শী প্রকল্প বাস্তবায়নে তাদের প্রচেষ্টার জন্য বঙ্গবন্ধু অ্যাপের পেছনে থাকা টিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: স্বাধীন বিচার বিভাগ একটি দেশের উন্নয়নকে উৎসাহিত করে: প্রধানমন্ত্রী
আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মগুলো সময়মতো কাজ করে না: প্রধানমন্ত্রী
স্বাধীন বিচার বিভাগ একটি দেশের উন্নয়নকে উৎসাহিত করে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীন বিচার বিভাগ, শক্তিশালী সংসদ ও প্রশাসন একটি দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় আসার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশ্বাসকে বাস্তবায়নে বিচার বিভাগকে প্রশাসন থেকে পৃথক করে সম্পূর্ণ স্বাধীন করেছি।’
শনিবার(২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে 'একবিংশ শতাব্দীতে দক্ষিণ এশীয় সাংবিধানিক আদালত: বাংলাদেশ ও ভারতের শিক্ষা' শীর্ষক দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
আরও পড়ুন: গত মাসের নির্বাচন নিয়ে বিশ্বের কোনো নেতা প্রশ্ন তোলেননি: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, সরকার বিচার বিভাগকে প্রশাসন থেকে আলাদা এর জন্য পৃথক বাজেট বরাদ্দ করে করেছে।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগ আগে আর্থিক বিষয়ে সরকারের ওপর নির্ভরশীল ছিল।
এছাড়া আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইন প্রণয়ন করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, এর আগে নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা এটাকে নির্বাচন কমিশিন (ইসি) হিসেবে সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন করেছি এবং এর জন্য আলাদা অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি।’
তিনি বলেন,‘এর মানে হলো- আমরা নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি এবং আওয়ামী লীগ সরকার তা করতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার উচ্চ আদালতের রায় অনুযায়ী সংবিধানে একটি অনুচ্ছেদ সংযোজন করেছে, যাতে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রমজানে কোনো পণ্যের ঘাটতি হবে না: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তিনি বলেন, 'এই অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে আমি বলতে পারি, জনগণের মৌলিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষিত হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অর্জন করেছে।
তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন,‘ইনশাল্লাহ, ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশে পরিণত করতে সক্ষম হব।’
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, প্রধান বিচারপতি ধনঞ্জয় ওয়াই চন্দ্রচূড়, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এবং আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মগুলো সময়মতো কাজ করে না: প্রধানমন্ত্রী
আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মগুলো সময়মতো কাজ করে না: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেক আন্তর্জাতিক প্লাটফর্ম আছে, কিন্তু প্রয়োজনের সময় ফোরামগুলো কাজ করে না।
শুক্রবার(২৩ ফেব্রুয়ারি) গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশের প্রধান সম্পাদক এনায়েতউল্লাহ খানের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমি মনে করি ইতোমধ্যে অনেক প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েছে, কিন্তু সেগুলো সময়মতো কাজ করে না।’
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন-২০২৪ -এ যোগদানের লক্ষ্যে তার সাম্প্রতিক জার্মানি সফরের ফলাফল সম্পর্কে অবহিত করতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশগ্রহণ বিশ্ব শান্তির প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকারের প্রতিফলন : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এবং ক্ষুদ্র ভূমিতে বিশাল জনগোষ্ঠী নিয়ে ব্যস্ত থাকায় মধ্যম শক্তি বা উদীয়মান শক্তিকে নিয়ে নতুন প্লাটফর্ম তৈরির কোনো উদ্যোগ নেওয়ার কথা তিনি ভাবছেন না।
এনায়েতউল্লাহ খান তার প্রশ্নে বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি ভূ-রাজনৈতিক সংঘাতের মধ্যে রয়েছে, যখন জোটনিরপেক্ষ প্ল্যাটফর্ম বর্তমান রাজনৈতিক পটভূমিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। আমাদের (বাংলাদেশ) মতো মধ্যম শক্তি ও উদীয়মান শক্তি রয়েছে। এর মধ্যে ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনাম অন্যতম।
ইউএনবির প্রধান সম্পাদক জানতে চান, 'আপনি (শেখ হাসিনা) জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে মা ও শিশু, নারীর ক্ষমতায়নসহ (আন্তর্জাতিক ফোরামে) অনেক বিষয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। মধ্যম শক্তি ও উদীয়মান শক্তিকে নিয়ে নতুন প্লাটফর্ম তৈরির উদ্যোগ নেওয়ার কথা ভাবছেন কিনা?'
আরও পড়ুন: গত মাসের নির্বাচন নিয়ে বিশ্বের কোনো নেতা প্রশ্ন তোলেননি: প্রধানমন্ত্রী
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি একজন সাধারণ মানুষ। আমি আমার দেশ, দেশের মানুষ, ছোট ভূখণ্ডের বিশাল জনগোষ্ঠী নিয়ে ব্যস্ত আছি। হ্যাঁ, আমি আওয়াজ তুলি এবং যেখানে কোনও অন্যায় দেখি সেখানে প্রতিবাদ করি। আমি সব সময় বলি, আমি যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই।’
শেখ হাসিনা বলেন, এ ধরনের কোনো প্লাটফর্ম গঠন করার মতো যোগ্যতা ও চিন্তাভাবনা তার নেই।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গাজা যুদ্ধ বন্ধের প্রস্তাবে যেভাবে ভেটো দেওয়া হয়েছে, তেমনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গাজায় গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে, যেখানে হাসপাতালগুলোও হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না এবং শিশুদের খাবার নেই।
তিনি বলেন, ‘আমি এ ধরনের ঘটনার প্রতিবাদ জানাই। আমার যা কিছু আছে তা নিয়ে আমি যথেষ্ট সচেতন। এর চেয়ে বড় কিছু করার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না।’
আরও পড়ুন: রমজানে কোনো পণ্যের ঘাটতি হবে না: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
গত মাসের নির্বাচন নিয়ে বিশ্বের কোনো নেতা প্রশ্ন তোলেননি: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোনো বিশ্ব নেতা তার সাম্প্রতিক জার্মানি সফরে গত মাসের(৭ জানুয়ারি) সাধারণ নির্বাচন নিয়ে কোনো উদ্বেগ বা প্রশ্ন উত্থাপন করেননি।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে কেউ কিছু বলেনি। নির্বাচন নিয়ে তাদের কোনো উদ্বেগ ও প্রশ্ন নেই।’
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন-২০২৪-এ যোগ দিতে তার সাম্প্রতিক জার্মানি সফরের ফলাফল সম্পর্কে অবহিত করতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্মেলনের ফাঁকে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে তার বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে দ্বিপক্ষীয় বিষয়গুলো প্রাধান্য পেয়েছে।
তিনি বলেন, 'নির্বাচন সম্পর্কে কেউ আমাকে কিছু বলেনি, কারণ তারা জানত যে আমি নির্বাচনে জয়ী হয়ে আবার ক্ষমতায় ফিরে আসব।’
আরও পড়ুন: ত্যাগের মহিমায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী
কারও নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, এমন একটি দেশ আছে যেখানে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করতে ১২-১৩ দিন সময় লাগলেও নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু বলা হয়।
বাংলাদেশে ভোটগ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল ঘোষণা করা হলেও নির্বাচন অবাধ নয়। কীভাবে বলা যায়!
প্রধানমন্ত্রী ১৫ ফেব্রুয়ারি মিউনিখ যান এবং ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশে ফিরে আসেন।
মিউনিখে অবস্থানকালে শেখ হাসিনা মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দেন এবং পাশাপাশি বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন: মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশগ্রহণ বিশ্ব শান্তির প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকারের প্রতিফলন : প্রধানমন্ত্রী
মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে অংশগ্রহণ বিশ্ব শান্তির প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকারের প্রতিফলন : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত সপ্তাহে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে তার অংশগ্রহণ শান্তি, সার্বভৌমত্ব এবং সার্বিক বিশ্ব নিরাপত্তার প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিফলন।
সম্প্রতি মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে ২০২৪-এ যোগ দিতে জার্মানির মিউনিখে তিন দিনের সফরের ফলাফল বিষয়ে শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী ১৫ ফেব্রুয়ারি মিউনিখ যান এবং ১৯ ফেব্রুয়ারি দেশে ফেরেন।
মিউনিখে অবস্থানকালে তিনি সম্মেলনের ফাঁকে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
আরও পড়ুন: ত্যাগের মহিমায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী
লিখিত বক্তব্যে শেখ হাসিনা তার এই সফরকে সফল বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, তিনি বিশ্ব নেতাদেরকে বলেছেন, আকার নয়, একটি দেশের নীতির শক্তিই হচ্ছে রাজনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক মুক্তির পথ।
এছাড়া বন্ধুপ্রতীম দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের মাধ্যমে এই সম্পর্কের ধারাবাহিকতা আরও দৃঢ় হয়েছে এবং সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন-২৪ অংশগ্রহণ নিয়ে ব্রিফ করছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'ফ্রম পকেট টু প্ল্যানেট : স্কেলিং আপ ক্লাইমেট ফাইন্যান্স' শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের প্যানেলে তিনি অবিলম্বে গাজা ও বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে সব ধরনের শত্রুতা, অবৈধ দখলদারিত্ব ও নিরস্ত্র মানুষ, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ওপর অমানবিক হত্যা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, 'আমি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যে, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার বিরূপ প্রভাব যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরেও প্রভাব ফেলে।’
এ প্রসঙ্গে অর্থহীন অস্ত্র প্রতিযোগিতার অবসান ঘটিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় লজিস্টিকস ও অর্থায়ন সহজলভ্য ও বাস্তবায়নের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন,‘মানবতার অস্তিত্বের সংকটের মধ্যে আমি এই কঠিন বাস্তবতা তুলে ধরেছি যে, ক্ষুদ্র স্বার্থ কেবল দুর্দশা নিয়ে আসে। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় অর্থায়ন গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে তিনি বিশ্ব নেতাদের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, 'আমি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট বহুমুখী নিরাপত্তা ঝুঁকি মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ও জনগণের জন্য অর্থায়ন বৃদ্ধি, প্রতিশ্রুত তহবিলের প্রকৃত স্থানান্তর এবং ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা নিশ্চিত করার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছি।’
তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের বৈশ্বিক ঝুঁকি মোকাবিলায় ধনী দেশগুলোর রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়ন এবং পারস্পরিক অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট সকলকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
আলোচনার সময় রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই ও দ্রুত সমাধানে কাতারের অব্যাহত সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি।
তিনি বলেন, ‘বৈঠকে পারস্পরিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, এলএনজি সরবরাহ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সহিংসতা বন্ধে একসঙ্গে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যাংকের উন্নয়ন নীতি ও অংশীদারিত্বের ঊর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গের (অ্যাক্সেল ভন ট্রটসেনবার্গ) সঙ্গে বৈঠকে তিনি মধ্যম আয়ের দেশগুলোর অন্তর্ভুক্তিতে অবদানের আলোকে চলতি অর্থবছরে বাজেট সহায়তা হিসেবে বিশ্বব্যাংকের প্রতিশ্রুত ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দ্রুত ছাড়ের আহ্বান জানিয়েছেন।
উচ্চ-মধ্যম আয় ও উচ্চ আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জনে বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত পথেও বিশ্বব্যাংকের সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনাকালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক ড. টেড্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস স্বাস্থ্যখাতে বিশেষ করে মৌলিক স্বাস্থ্যসেবায় বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করেন।
সম্মেলনের ফাঁকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং গম, ভোজ্যতেল এবং অন্যান্য কৃষি পণ্য খাতে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সহযোগিতার জন্য তাদের আগ্রহের কথা ব্যক্ত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাত দ্রুত সমাধানের কার্যকর উপায় খুঁজে বের করার জন্য আমি তাকে আহ্বান জানিয়েছি। আমরা গাজা উপত্যকার সংঘাত নিয়েও আলোচনা করেছি।’
আরও পড়ুন: ৩ দিনের সফর শেষে মিউনিখ থেকে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী