দুর্গাপূজা
দুর্গাপূজা: হিলি স্থলবন্দরে ৮দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
পূজার ছুটি উপলক্ষে দিনাজপুর হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানির কার্যক্রম শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত টানা আটদিন বন্ধ থাকবে। তবে এসময় সচল থাকবে হিলির ইমিগ্রেশন বিভাগে পাসপোর্টধারীদের যাতায়াত ।
হিলির কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জামিল হোসেন চলন্ত জানান, ১লা অক্টোবর থেকে সাত অক্টোবর পর্যন্ত পূজার ছুটিতে হিলি বন্দরে ভারত থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ রাখা হবে। এছাড়া দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি করা হবেনা।
আরও পড়ুন: বড়দিন উপলক্ষে হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ছুটির ওই সিদ্ধান্ত ভারতীয় হিলি এক্সপোর্টার এন্ড ক্লিয়ারিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক অশোক কুমার চিঠির মাধ্যমে অবহিত করেছেন বাংলাদেশি ব্যবসায়ী সংগঠনকে।
শারদীয় দুর্গাপূজা ও শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি শেষে ৮ অক্টোবর শনিবার থেকে আবার সচল হয়ে উঠবে আমদানি-রপ্তানির কার্যক্রম।
হিলি কাস্টমস ও স্থল শুল্ক স্টেশন এর ডেপুটি কমিশনার বায়োজিদ হোসেন জানান, বন্দরে ছুটি পালনের কারণে কাস্টমসের অভ্যন্তরীণ সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। ৮ অক্টোবর শনিবার থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানি শুরুর সঙ্গে কাস্টমসের সকল কার্যক্রম পূর্বের নিয়মে চালু হবে।
এদিকে, হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ইনচার্জ বদিউজ্জামান জানান, ছুটিতে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও পাসপোর্টধারীদের পারাপারে সচল থাকবে ইমিগ্রেশন বিভাগ।
আরও পড়ুন: হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতীয় চাল আমদানি শুরু
টানা ৩ দিন হিলি স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
দুর্গাপূজা উদযাপন বিঘ্ন করার প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকুন: দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দুর্গাপূজা উদযাপনে বিঘ্নিত করার যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে পূজা উদযাপন কমিটি ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি এ আহ্বান জানান।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে বদ্ধপরিকর।
আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুলের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবি দেশের মানুষকে আতঙ্কিত করছে: ওবায়দুল কাদের
পরে রাজধানীর বাংলা একাডেমিতে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি আয়োজিত আলোচনা সভায় যোগ দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
এসময় কাদের বলেন,শেখ হাসিনার জন্ম তার বাবা শেখ মুজিবের মতো কষ্ট সহ্য করার জন্য।
বঙ্গবন্ধুর পর বাংলাদেশের সবচেয়ে বিশিষ্ট বাঙালি এবং সৎ,সাহসী ও দক্ষ প্রশাসক শেখ হাসিনা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন,শেখ হাসিনা পরিবর্তনের প্রতীক।
আরও পড়ুন: শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে পার পাবেন না: ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহাম্মদ নূরুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হক, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. ভীষ্মদেব চৌধুরী ও আওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী।
পরে ওবায়দুল কাদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বাংলা বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ ও এককালীন মেধা বৃত্তি বিতরণ করেন।
আরও পড়ুন: মেগাপ্রকল্প বিএনপির ‘মেগা-যন্ত্রণার’ কারণ: ওবায়দুল কাদের
দুর্গাপূজার আগে ঠাকুরগাঁওয়ের মন্দিরে আবারও ১৪৪ ধারা
ঠাকুরগাঁও সদরের আউলিয়াপুর ইউনিয়নের রশিক লাল জিউ মন্দিরে আবারও ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ইউএনও আবু তাহের মো. শামসুজ্জামান অনির্দিষ্টকালের জন্য এ আদেশ জারি করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়,রসিক লাল জিউ মন্দিরের জমির দখল নিয়ে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও ইসকন অনুসারীদের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছে।
আরও পড়ুন: আ’লীগ-বিএনপি পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি: পেকুয়ায় ১৪৪ ধারা জারি
২০০৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর মন্দির ও জমি দখল নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘটিত এক সংঘর্ষে ফুলবাবু নামে হিন্দু সনাতন ধর্মের একজন নিহত হন। এরপর উপজেলা প্রশাসন মন্দির সীলগালা করে মন্দির পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে।
বিভিন্ন পূজার আগে মন্দির দখল নিয়ে সংঘর্ষের আশঙ্কায় প্রশাসন ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেন।
এবারও দুর্গাপূজার আগে অনুরূপ আশঙ্কা দেখা দিলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় একই স্থানে আ. লীগ-বিএনপির সমাবেশ, ১৪৪ ধারা জারি
পাবনায় বিএনপি-আ.লীগের সমাবেশস্থলে ১৪৪ ধারা জারি
কুমিল্লার পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননা: মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে
গত বছর কুমিল্লায় দুর্গাপূজার সময় অস্থায়ী একটি পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননার অভিযোগে দায়ের করা ১২টি মামলার বেশির ভাগ তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত বছর ১৩ অক্টোবর ইকবাল হোসেন নামে এক ব্যক্তি মণ্ডপে একটি মূর্তির কোলে কুরআন রেখেছিলেন। অন্য অভিযুক্ত ইকরাম ‘পবিত্র ধর্মগ্রন্থের অবমাননা’ কথা জানিয়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল করেছিলেন। সে সময় ঘটনাটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়।
এ ঘটনায় কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও রংপুরসহ কয়েকটি জেলায় মন্দিরে সহিংসতা ও হামলা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত আট জন নিহত ও বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে পাঁচজন মুসলিম, তারা পুলিশের গুলিতে মারা যান।
আরও পড়ুন: নোয়াখালীতে মন্দিরে হামলা ও লুঠপাটের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪
সহিংসতার ঘটনায় কুমিল্লায় ১২টি মামলা হয়েছে। এসব মামলার তদন্ত করছে সিআইডি, পিবিআই ও থানা পুলিশ।
কুমিল্লার সিআইডি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, আমাদের কাছে তদন্তে থাকা ৬টি মামলার মধ্যে ৫টি মামলারই অভিযোগপত্র দাখিল করেছি। অন্য মামলা ধারা পরিবর্তন করার কারণে প্রশাসনিক অনুমোদনের জন্য বিলম্ব হচ্ছে।
তিনি বলেন, ধর্মঅবমাননা ও সন্ত্রাস বিরোধী ধারায় যে মামলাটি কোতোয়ালি থানার মামলা নং ৫২ (ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮), এটিতে আকেটি ধারা সংযুক্ত করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এছাড়া সন্ত্রাস দমন, বিশেষ ক্ষমতা আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা ও বিস্ফোরক আইনের মামলাগুলোর অভিযোপত্র দেয়া হয়েছে।
তদন্তাধীন চারটি মামলার মধ্যে একটি মামলায় একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পিবিআই। বাকি তিনটি মামলার তদন্তও শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন পিবিআই কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: ফেনীতে মন্দিরে হামলা-সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু
জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মান্নান জানিয়েছেন, কুমিল্লায় মন্দিরের ঘটনায় দায়ের করা দুটি বড় মামলা জেলা পুলিশ তদন্ত করেছে, তবে তারা অভিযোগপত্র দাখিলের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
তিনি বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা দুটি মামলা এবং সিআরপিসির অধীনে নাশকতা মামলা প্রশাসনিক অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে ।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান জানান, গত বছর নানুয়া দীঘিরপাড় এলাকায় কোরআন অবমাননার ঘটনা ঘটেছিল সেখানে এ বছরও দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, গত বছরের সহিংসতার কথা বিবেচনা করে এ বছর দুর্গাপূজা উদযাপনকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সরকারের ব্যর্থতায় মন্দিরে ভাঙচুর : ডা. জাফরুল্লাহ
কুমিল্লা জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল পাল জানান, এ বছর জেলায় ৭৯৪টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় এবারের পূজা সুষ্ঠুভাবে উদযাপিত হবে বলে আমরা আশা করছি।
বাগেরহাট: পূর্বপুরুষদের পেশা ছাড়তে চায় প্রতিমা শিল্পীরা, সহায়তার আশ্বাস ডিসির
শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে মাটির প্রতিমায় জীবন্ত রূপ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাগেরহাটের প্রতিমা শিল্পীরা। বংশ পরম্পরায় প্রতিমা তৈরির এসব শিল্পীদের মন ভালো নেই। কারণ পরিশ্রম অনুযায়ী কাঙ্খিত মূল্য পাচ্ছে না তারা। পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন পার করছেন এসব প্রতিমা শিল্পীরা। এ অবস্থায় পূর্বপুরুষদের এই পেশা ছেড়ে বিকল্প পেশা খুঁজছে প্রতিমা কারিগরেরা। তবে তাদের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক (ডিসি)।
সরেজমিনে শহরের শালতলা শ্রীশ্রী হরিসভা মন্দিরে দেখা গেছে, শিল্পীরা রং তুলিতে দেবদেবীর প্রতিমা সাজাচ্ছেন। সেই সঙ্গে চলছে সাজসজ্জা আর লাইটিংয়ের কাজ।
আরও পড়ুন: দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি চলছে মাগুরায়
শারদীয় দুর্গোৎসবের মূল আকর্ষণ হচ্ছে দেবদেবীদের প্রতিমা। আর এই মুহূর্তে বিভিন্ন পূজামণ্ডপে দেবদেবীর প্রতিমায় রঙের কাজ চলছে। শিল্পীরা অপরূপ সাজে প্রতিমা সাজাচ্ছেন। মাটির প্রতিমায় জীবন্ত রূপ দিলেও প্রতিমার কারিগরদের জীবন অনেক কষ্টে যাচ্ছে। প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম বাড়লেও তাদের পারিশ্রমিক বাড়েনি বলে জানালেন প্রতিমা শিল্পীরা।
বাগেরহাট শ্রীশ্রী হরিসভা মন্দির দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি লিটন সরকার জানান, দুর্গোৎসব শুধু হিন্দুদের নয়। এটি বাঙালির সাংস্কৃতির অংশ। এই পূজা নির্বিঘ্নে করার জন্য সরকারের কাছে সার্বিক সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
দুর্গাপূজা: বাগেরহাটে ৬৪২টি মন্দিরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
বাগেরহাটে শারদীয় দুর্গোৎসবের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। জেলায় এবছর ৬৪২টি মন্দিরে দুর্গোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। পূজামণ্ডপগুলোতে কারিগরদের নিপুণ হাতের ছোঁয়া, আর রং তুলিতে প্রতিমা সাজানো হচ্ছে। মাটির প্রতিমায় জীবন্ত রূপ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা।
অন্যদিকে, এসব মণ্ডপে নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপনের জন্য প্রতিবছরের মতো এবারও পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যরা কাজ করবেন।
মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা, নিরাত্তা ব্যবস্থা এবং পূজা চলাকালীন আযান ও নামাজের সময়সূচি নির্ধারণ সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান। সভায় জেলার বিভিন্ন মসজিদের ইমাম,পূজা উদযাপন পরিষদের কর্মকর্তাসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, পূজার এই পাঁচদিন জেলার সব মসজিদে একই সময়ে আযান ও নামাজ হবে।
আরও পড়ুন: দুর্গা পূজায় দুর্ভেদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে পুলিশ: আইজিপি
বাগেরহাট শ্রীশ্রী হরিসভা মন্দির দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি লিটন সরকার জানান,এবারের শারদীয় দুর্গোৎসব ঘিরে এক ধরনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এপর্যন্ত প্রশাসনের সবগুলো সভাতেই দুর্গোৎসবকে ঘিরে শঙ্কা প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, দুর্গোৎসব শুধু হিন্দুদের নয়, বাঙালীর সংস্কৃতিরও অংশ।
আর তাই দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য সরকারের কাছে সার্বিক সহযোগীতার দাবি জানান তিনি।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক জানান, শারদীয় দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর করতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে দুই স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রতিটি পূজামণ্ডপে সিসি ক্যামেরার পাশাপাশি নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে। স্টাটিক ডিউটির পাশাপাশি, পর্যাপ্ত মোবাইল টিম রাখা হবে।
তিনি জানান, দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য জেলা পুলিশ পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা রেখেছে। শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
পুলিশ সুপার আরও জানান, এরইমধ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
আর কদিন বাদে সনাতনধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শরৎকালের কাশফুলের সৌন্দর্য জানান দিচ্ছে দেবী দুর্গা স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোকে আসছেন।
মহামারি করোনার কারণে গেল দুই বছর দুর্গাপূজায় উৎসবের কিছুটা কমতি ছিল। এবছর করোনার প্রভাব কমে আসায় আড়ম্বরসহকারে পূজার আয়োজন চলছে। দর্শনার্থী আর ভক্তদের ঢল নামবে এমন আশায় মণ্ডপগুলো সাজানো হচ্ছে নানা ভাবে। ভক্তরাও অপেক্ষায় রয়েছে দেবী দুর্গাকে বরণ করতে।
এই মুহূর্তে বিভিন্ন পূজামণ্ডপে দেবদেবীর প্রতিমায় রঙের কাজ চলছে। প্রতিমা শিল্পীরা অপরূপ সাজে প্রতিমা সাজাচ্ছেন। এই সঙ্গে পূজামণ্ডপগুলোতে সাজসজ্জা আর আলোক সজ্জার কাজ চলছে।
বাগেরহাট শহরের শালতলা শ্রীশ্রী হরিসভা মন্দিরে গিয়ে দেখা গেছে,শিল্পীরা রং তুলিতে দেবদেবীর প্রতিমা সাজাচ্ছেন। সেই সঙ্গে চলছে সাজসজ্জা আর লাইটিংয়ের কাজ। এই অঞ্চলের মধ্যে এই প্রথম শতবছরের প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী হরিসভা মন্দিরের থিমের ওপর ভিত্তি করে সাজসজ্জা করা হচ্ছে। ডেকরেশনে অনটাইম প্লেট ও বাটি ও বাঁশের তৈরি কুলার ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া নানা ধরণের উপকরণ ব্যবহার করে সাজসজ্জায় নানা বৈচিত্র আনা হয়েছে। এই পূজামন্দিরে দূর-দূরান্ত থেকে কয়েক হাজার দর্শনার্থী ও ভক্তদের ঢল নামবে বলে আয়োজকরা আশা করছেন।
উল্লেখ্য, ১ অক্টোবর মহাষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে দেবী দুর্গা হাতিতে (গজে) চড়ে স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোকে আসবেন। মহাসপ্তমী,মহাঅষ্টমী,মহানবমী এবং ৫ অক্টোবর দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে দুর্গাপূজা।
আরও পড়ুন: দুর্গা পূজায় দুর্ভেদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে পুলিশ: আইজিপি
দুর্গাপূজা: এমন উৎসব যা বাংলাদেশকে এক করে
রাষ্ট্রের ভিত মজবুত করতে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন যে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বাংলাদেশ রাষ্ট্র রচিত হয়েছে সেই ভিত্তি মজবুত করতে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখে দিতে হবে।
তিনি বলেন, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ইসলাম সকল ধর্মের মর্মবাণী হচ্ছে মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্ব ও সম্প্রীতি। এই মর্মে মানুষের কল্যাণকে চেতনায় ধারণ ও অনুশীলন করলে দেশ ও পৃথিবী অনেক শান্তিময় হতো। ধর্ম নিয়ে হানাহানি থাকতো না। আমাদের দেশে যে অপশক্তি সাম্প্রদায়িকতা ছড়াতে চায়, সেই অপশক্তিকে সবাই মিলে দমন করতে হবে। তাহলেই যে চেতনার ভিত্তিতে রাষ্ট্র রচিত হয়েছে সেই রাষ্ট্র ব্যবস্থার ভিত আরও মজবুত হবে।’
রবিবার রাজধানীর বনানী পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজার শুভ মহালয়া অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের স্বপ্নে বিভোর বিএনপিকে সবক্ষেত্রে প্রতিহত করার আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের দেশ হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবার মিলিত সংগ্রাম এবং মিলিত রক্তের স্রোতের বিনিময়ে রচিত হয়েছে। সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র রচনার জন্যই সব ধর্মের অনুসরীরা একযোগে লড়াই করেছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যার নেতৃত্বে এই দেশ রচিত হয়েছে সেই জাতির পিতাকে ৭৫ সালে হত্যা করার পর যে চেতনার ভিত্তিতে দেশ রচিত হয়েছিল সেই চেতনায় আঘাত হানা হয়েছে। ভুলুণ্ঠিত করার চেষ্টা এবং রাষ্ট্রকে আবার সাম্প্রদায়িক বানানোর অপচেষ্টা চালানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার রাষ্ট্রের মূল চেতনার পুণরুদ্ধার করে মূল চেতনায় ফিরিয়ে নেয়া লক্ষ্যে কাজ করছে উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘যারা এই রাষ্ট্রকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করতে চেয়েছে তারা এখনও সাম্প্রদায়িক হানাহানি ছড়ায় এবং তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সরকার সবসময় কঠোর ব্যবস্থাও নিয়েছে। দেশে একটি রাজনৈতিক পক্ষ আছে যারা সাম্প্রদায়িকতাকে নিয়ে অপরাজনীতি করে। তাদের ব্যাপারে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: বিএনপি বিশৃঙ্খলা করলে আ.লীগ প্রতিহত করবে: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, আমাদের দেশে প্রতিবছর পূজামণ্ডপের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। এটির কারণ হচ্ছে, মানুষের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা আছে, মানুষের সামর্থ্য আছে এবং একইসঙ্গে সরকার আপনাদের পাশে আছে। এই তিনটি কারণে প্রতিবছর পূজামণ্ডপের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। গত বছর বিভিন্ন জায়গায় পূজার সময় গণ্ডগোল করার চেষ্টা করা হয়েছিল এরপরও এ বছর পূজামণ্ডপের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এটা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক।
এ বছর অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে সমগ্র দেশে পূজা উদযাপন এবং প্রতিমা বিসর্জন হবে। দুর্গা উৎসবের আনন্দ সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়ুক, সেই আনন্দ সারাবছর জাগরত থাকুক এবং আপনাদের আনন্দের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ আনন্দময় হোক, শান্তিময় হোক এই আশাপ্রকাশ করেন তথ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন করুন: তথ্যমন্ত্রী
এদিকে, ভোর ৬টা ২মিনিটে মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে গুলশান-বনানী সার্বজনীন পূজা ফাউন্ডেশন আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন অতিথি ও আয়োজকরা। অভিনেতা মনোজ সেনগুপ্তের সঞ্চালনায় ফাউন্ডেশনের সভাপতি পান্না লাল দত্ত, সাধারণ সম্পাদক প্রাণকৃষ্ণ ঘোষ, শিল্পী লাল দত্ত প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
আজ মহালয়া, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসবের আমেজ
সারাদেশ জুড়ে হিন্দুরা আজ মহালয়া উদযাপন করছে। বিভিন্ন মণ্ডপে পূজা ও ভক্তির মাধ্যমে রবিবার ভোরে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের ক্ষণ গণনা।
হিন্দু ধর্মমতে, দুর্গাপূজা শুরুর সাত দিন পূর্বে দুর্গা দেবীর আনুষ্ঠানিক প্রার্থনা হিসেবে মহালয়া বিবেচিত হয়।
আরও পড়ুন: শিকদারবাড়ির দুর্গোৎসব এ বছরও বড় পরিসরে হচ্ছে না
আগামী ১ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর দিনে দুর্গাপূজা শুরু হবে। এবার দেবী দুর্গা মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে হাতি (গজ) চড়ে পৃথিবীতে (মর্ত্যলোকে) আসবেন।
মহালয়া উপলক্ষে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি ভোর ৬টা থেকে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
আরও পড়ুন: দুর্গোৎসবের প্রস্তুতি চলছে মাগুরায়
এই দিনটিতে হিন্দুরা মৃত পূর্বপুরুষদের পূজা করে এবং তাদের নামে ব্রাহ্মণদের পোশাক, খাবার ও মিষ্টি উপহার দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।
এ বছর সারাদেশে মোট ৩২ হাজার ১৬৮টি পূজামণ্ডপ হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানিয়েছেন, আসন্ন দুর্গাপূজায় দেশের প্রতিটি পূজামণ্ডপে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা স্থাপন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেইসঙ্গে পূজা মণ্ডপে স্থায়ীভাবে আনসার সদস্যরা পাহারায় থাকবেন।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে ৪১ মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু
তিনি আরও বলেন, আমরা এসব পূজা মণ্ডপে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পূজামণ্ডপের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আমাদের প্রয়োজনীয় সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী, এটা পুলিশ হতে পারে, হতে পারে আনসার, যেখানে যেটা প্রয়োজন সেখানে সেইভাবে ব্যবস্থা করা হবে।
দুর্গাপূজা: মৌলভীবাজারে মণ্ডপের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
শারদীয় দুর্গাপূজার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। এরই মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় পূজামণ্ডপগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। মাটির কাজ শেষ হয়েছে প্রায় প্রতিটি পূজামণ্ডপে। এখন চলছে প্রতিমাগুলো রং ও সাজসজ্জার কাজ। অন্যান্য বছরের ন্যায় শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা অনুষ্ঠিত হবে আশা করছেন আয়োজকরা। পূজা উপলক্ষে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্প্রীতি কমিটি গঠনসহ নেয়া হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে পূজার আয়োজন হলেও মানুষের মাঝে একটা উদ্বেগ উৎকন্ঠা ছিল। পাশাপাশি পূজামণ্ডপগুলোতে মানুষের চলাচল সীমিত ছিল।
এ বছর করোনার প্রাদুর্ভাব কিছুটা কম থাকায় সবার মাঝে একটা উৎসাহ উদ্দীপনা কাজ করছে।
চিত্ত রঞ্জন ও জয় দেব নামের প্রতিমা শিল্পী জানান, মূর্তি তৈরির জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে হতাশা। বিগত বছরগুলোতে মাটি, খেড়, বাশ, দুর্গা প্রতিমাসহ অন্যান্য দেবদেবীর শাড়ী, চুড়ি আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্রের দাম কিছুটা কম থাকলেও এ বছর সেটা কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ায় তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা: এমন উৎসব যা বাংলাদেশকে এক করে
প্রতিমা তৈরির আনুসাঙ্গিক জিনিসপত্রের দাম স্থিতিশীল না থাকায় অনেক প্রতিমাশিল্পী শুধু মজুরি ভিত্তিতে কাজ করছেন।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মহিম দে জানান, দুই বছর করোনার কারণে জাঁকজমকপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন করতে পারেননি। তবে এবার জেলায় সার্বজনীন পূজামণ্ডপের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে পূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে তারা আশাবাদী।
অপরদিকে শহরের বাইরে চা বাগান এলাকা এবং গ্রামগঞ্জের পূজামণ্ডপগুলোতে তারা নিজেদের উদ্যোগে বিদ্যুতের ব্যবস্থাসহ পূজার পাঁচ দিন পূজামণ্ডপ পাহাড়ার জন্য কমিটি করা হয়েছে।
জেলার ছয়টি স্থানে অন্যান্য বছরের ন্যায় এ বছরও ব্যতিক্রমী আয়োজনে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
স্থানগুলো হচ্ছে রাজনগরের পাঁচগাঁও, কুলাউড়ার কাদিপুরে শিব মন্দির, সদর উপজেলার ত্রিনয়নী, আবহান, মহেশ্বরী ও শ্রীমঙ্গরের রুপসপুর মণ্ডপ।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান, এবার এক হাজার সাতটি পূজামণ্ডপ থাকায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সবকটি উপজেলায় নেয়া হয়েছে সকল ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
তিনি বলেন, পাঁচ দিনের বৃহৎ এই পূজাকে ঘিরে বড় বড় পূজামণ্ডপগুলোতে দিন রাত মিলিয়ে লাখ লাখ মানুষের সমাগম ঘটে। ফলে অধিক ঝুকিপূর্ণ ৮২টি পূজামণ্ডপসহ আইনশৃঙ্খলার সার্বিক নিরাপত্তায় সাত শত ৪৭ জন পুলিশ সদস্য এবং ছয় হাজার ৮২০ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে।
তাছাড়া সাদা পোশাকে কাজ করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক টিম।
আরও পড়ুন: পহেলা বৈশাখের মতো দুর্গাপূজাও সবার উৎসব: শিক্ষামন্ত্রী
পুলিশ সুপার বলেন, দুর্গাপূজা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে পালনের লক্ষ্যে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা সভা করেছেন। প্রত্যেকটি পূজামণ্ডপের আশপাশের সকল ধর্মের লোকজনদের নিয়ে সামাজিক সম্প্রীতি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণসহ অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বলে তিনি জানান।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে জেলায় সরকারিভাবে প্রত্যেকটি পূজামণ্ডপে ৫০০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: রাঙ্গামাটিতে ৪১ মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু
দুর্গাপূজা: এমন উৎসব যা বাংলাদেশকে এক করে
প্রেম ও সৌহার্দ্যের চেতনায় পরিপূর্ণ দুর্গাপূজা বাংলাদেশে একতার উৎসব।
সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগরিষ্ঠ যেই হোক না কেন, এই উৎসবে মণ্ডপে ভিড় করার, ঢাকের (একটি বিশেষ বাজনা যন্ত্র) ধ্বনিতে নাচার ও মনোরম ভোগ নেয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেন না।
ফরিদপুর, নেত্রকোণা ও খুলনাসহ সারাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে হিন্দু দেবদেবীর প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত দিন পার করছেন ‘পাল’ নামে পরিচিত প্রতিমা কারিগররা।
১ অক্টোবর উৎসব শুরু হবে ষষ্ঠী উপলক্ষে দুর্গার অবতারণার মাধ্যমে এবং প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে উৎসব শেষ হবে ৫ অক্টোবর।
প্রতিমাগুলো যেন সময়মতো প্রস্তুত হয় তা নিশ্চিত করতে পালরা দিনরাত কাজ করে চলেছে। উৎসব দরজায় কড়া নাড়ছে বলে প্রতিমার কারিগররা প্রতিদিন ১৬ থেকে ১৭ ঘণ্টা কাজ করছে।
ফরিদপুর জেলার প্রতিমা কারিগর সুকুমার পাল বলেন, ‘প্রতিমা তৈরির কাঁচামালের দাম অনেক বেড়ে গেছে। প্রতিটি প্রতিমার জন্য ৪০ হাজার টাকা নিচ্ছি, কিন্তু তা যথেষ্ট নয়।’
তিনি জানান, সাম্প্রতিক সময়ে সবকিছুর দাম বাড়লেও আমাদের আয় তেমন বাড়েনি।
এ ব্যাপারে জেলার বেলেশ্বরের বিশ্বজিৎ পাল জানান, শোভারামপুর বোর্ড অফিসের সামনে তিনি প্রতিমা তৈরি করছেন। এবছর প্রতিটি প্রতিমা তৈরি করতে তিনি ৫০ হাজার টাকা করে নিচ্ছেন। মোট আটটি প্রতিমা তৈরি করছেন তিনি। এর মধ্যে ফরিদপুর শহরে একটি প্রতিমা তিনি গড়াচ্ছেন। এছাড়া গ্রামাঞ্চলে তার প্রতিমা বেশি।
তিনি বলেন, এবছর জিনিসপত্রের দাম বাড়ার কারণে এই টাকা নেবার পরও তার হাতে তেমন কিছু থাকবে না।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকার জানান, জেলার ৯টি উপজেলার ৮২৯টি পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি জানান, ‘শান্তিপূর্ণ ও সফলভাবে পূজা উদযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশ ডিএমপি কমিশনারের