দুর্গাপূজা
দুর্গাপূজা উপলক্ষে ৪ দিন বন্ধ থাকবে বেনাপোল বাণিজ্য কার্যক্রম
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে টানা চার দিন আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকবে বেনাপোল বন্দরে। তবে এ ছুটিতে বেনাপোল কাস্টম হাউজের কার্যক্রম, বন্দরে পণ্য খালাস এবং বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যাত্রী চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।
ভারতের পেট্রাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী জানান, দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ১২ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি থাকবে। এই সময়কালে পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকবে।
আরও পড়ুন: রেলযোগে পার্সেল ভ্যানের প্রথম ২ চালান বেনাপোল বন্দরে
বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে পণ্যবোঝাই ৩০০ থেকে ৩৫০টি ট্রাক আসে ভারত থেকে। বাংলাদেশ থেকেও দিনে গড়ে প্রায় ১০০ ট্রাক পণ্য যায় ভারতে।শিল্প-প্রতিষ্ঠানের কাঁচা মালামালের পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য আসে এই বন্দর দিয়ে। ভারত থেকে বাংলাদেশে আমদানি করা পণ্যের ৮০ ভাগই আসে বেনাপোল বন্দর দিয়ে।
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, ‘দুর্গাপূজার ছুটির কারণে টানা চার দিন আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ থাকবে বলে পেট্রাপোলের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশন থেকে পত্র দিয়ে আমাদের জানিয়েছে।’
আরও পড়ুন: অটোমেশনের আওতায় এলো বেনাপোল বন্দর
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোহাম্মদ মজিবুর রহমান জানান, পূজার ছুটিতে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও দুই দেশের মধ্যে যাত্রী চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার মো. আজিজুর রহমান জানান, দুর্গাপূজার ছুটি থাকায় ১২ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে বলে ওপারের কাস্টমস কর্তৃপক্ষ ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা আমাদের জানিয়ে দিয়েছেন। আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও বন্দরে পণ্য লোড-আনলোড, খালাশ ও কাস্টমসে কাজ চলবে।’
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা উপলক্ষে বেনাপোল দিয়ে ভারতে গেলো ২০৯ মেট্রিক টন ইলিশ
দুর্গাপূজা: বাগরেহাটে ৬৩৩ মণ্ডপে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে
কদিন বাদে সনাতন ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এ বছর বাগেরহাটে ৬৩৩টি পূজামণ্ডপে স্থাপন করা দেবদেবীর প্রতিমায় এখন রঙের কাজ চলছে। কাজ শেষ করতে স্প্রে মেশিনের মাধ্যমে প্রতিমায় রং করা হচ্ছে। করোনার কারণে অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় রেখে খরচ কমাতে বিভিন্ন পূজামণ্ডপে প্রতিমার সাইজ অনেকটা ছোট করা হয়েছে। বংশ পরম্পরায় প্রতিমা তৈরি করা এই কারিগড়দের মন খুব একটা ভালো নেই। করোনার প্রভাবে প্রতিমার কাজ না থাকা আর দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির কারণে পূর্বপুরুষের পেশা ছাড়তে চায় তারা।
জানা গেছে, বাগেরহাট সদর, কচুয়া, মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা, মোংলা, রামপাল, ফকিরহাট, মোল্লাহাট ও চিতলমারী উপজেলা মিলে জেলার ৯টি উপজেলায় এ বছর ৬৩৩টি পূজামণ্ডপে দুর্গা উৎসবের আয়োজন চলছে। পূজামণ্ডপগুলোতে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। এখন পূজামণ্ডপগুলোতে কারিগড়দের নিপুণ হাতের ছোয়া আর রং তুলিতে প্রতিমা সাজানো হচ্ছে। ১১ অক্টোবর সন্ধ্যায় বেলগাছের নিচে বোধনের মধ্যে দিয়ে দেবী দুর্গা ঘোড়ায় চড়ে স্বর্গ থেকে মত্তলোকে আসবেন। মহাষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাঅষ্টমী, মহানবমী পূজার মধ্যে দিয়ে দেবীকে আরাধনা এবং ১৫ অক্টোবর দশমীতে দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দোলায় চড়ে মা দুর্গা ফিরে যাবেন স্বর্গ লোকে।
দুর্গোৎসবকে ঘিরে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা এবং আনন্দঘন পরিবেশে উৎসবের জন্য জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। পূজামণ্ডপগুলোতে পুলিশ এবং আনসার মোতায়েনের পাশাপাশি র্যাবের টহল থাকবে। একই সাথেপূজা মণ্ডপগুলোর পক্ষ থেকে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্বপালন করবে।
পড়ুন: দুর্গাপূজার মহোৎসবে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী ১০ পদের মিষ্টি
দুর্গাপূজার মহোৎসবে বাঙালির ঐতিহ্যবাহী ১০ পদের মিষ্টি
শারদীয়া দুর্গাপূজা মানেই আশ্বিন মাসের সংক্রান্তি জুড়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মহান ধর্মীয় উৎসব। বাঙালিদের এই মহোৎসবে দেবী দুর্গার স্তুতির সাথে সাথে পেট পূজাও চলে সমানতালে। এসময় আরাধনার জন্য তৈরি প্রসাদের স্বাদে হিন্দু অধ্যুষিত এলাকার সীমানা ছাড়িয়ে দিগ্বিদিক একাকার হয়ে যায়। পূজা উপলক্ষে একদিকে যখন চলে পোশাক-আসাক ও সাঁজ-গোজের কড়চা, অন্যদিকে ভোজন রসিক বাঙালি স্বপ্ন বুনতে থাকে মিষ্টি দিয়ে উদরপূর্তির। এ শুধু ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত জিবের খোরাক মিটানো নয়, দুর্গাপূজার মিষ্টি বাঙালির ঐতিহ্যও বটে। বাঙালির ঘরে ঘরে অন্যান্য জমকালো অনুষ্ঠানগুলোতেও ভোজন পর্বের এক বিরাট অংশ জুড়ে জায়গা করে নেয় এই মিষ্টিগুলো।
দুর্গাপূজার এই মিষ্টিগুলোতেই ভরপুর থাকবে এবারের ফিচারটি।
দুর্গাপূজায় বাঙালির ঐতিহ্যবাহী ১০ পদের মিষ্টি
নলেন গুড়ের সন্দেশ
শীতকালে খেজুরগাছ থেকে সংগ্রহ করা হয় খাঁটি নলেন রস আর এই রসেই বানানো হয় নলেন গুড়। এই গুড়ের ডিশের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। বংশ পরম্পরায় বিশেষত হিন্দু কারিগরেরা নলেন গুড়ের সন্দেশ বানিয়ে থাকেন। নলেন গুড়ের সাথে এই সন্দেশ বানানোর প্রধান উপাদান দুধের ছানা।
বছরের শেষ নাগাদ শীত ও বসন্ত জুড়ে প্রায় ছয় মাস এই সন্দেশ পাওয়া যায়। আর তাই এই সময়ের বাঙালির প্রতিটি উৎসবে ভোজের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে আকর্ষণীয় এই মিষ্টান্নটি। চিনির বদলে এই গুড় ব্যবহার করে তৈরি করা নলেন গুড়ের পায়েসও বেশ জনপ্রিয়।
পড়ুন: লাল চাল: কেন খাবেন এবং কারা এড়িয়ে চলবেন?
ছানার পায়েস
বাঙালির প্রতিটি উৎসবে ছানার পায়েসের জুড়ি মেলা ভার। চেখে দেখার আগে ছানার ক্যানভাসের উপর পেস্তা, কিশমিশ, অ্যামন্ড ও কাজু বাদামের সজ্জা দেখেই মন ভরে যায়। তাই পরিবেশনের সাথে সাথেই বাচ্চা থেকে শুরু করে বুড়ো কারোরই গলধকরণে বেগ পেতে হয় না।
অনেকের কাছে এটি ক্ষীর বা ফিরনি নামেও পরিচিত। মূলত পায়েস হলো মোঘল আমলের মিষ্টান্ন। এতে কাশ্মিরী ও পারস্য রন্ধনশৈলী সংযোজিত হয়ে তৈরি হয় ফিরনি। আর ফিরনিতে উত্তর ভারতীয় রীতিতে দুধের মিষ্টি থাকায় এর নাম কোথাও কোথাও বদলে ক্ষীর হয়ে যায়।
পড়ুন: থটস অফ শামস: মজার সব চরিত্রে এককভাবে অভিনয়কারী প্রতিভাবান কন্টেন্ট নির্মাতা
মিষ্টি দই
মিষ্টি দইকে মিষ্টির রাজা বলা যেতে পারে। শুধুমাত্র ঘনীভূত দুধ ও চিনিতে তৈরি আশ্চর্য এই খাবারটির স্বর্গীয় স্বাদ একবার নিলে বারবার মনে করিয়ে দেয়। মুখের ভেতরে নিয়ে হালকা চাপ দিতেই অমৃত স্বাদের অনুভূতি জানান দিতে শুরু করে।
বাংলাদেশসহ ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের প্রিয় মিষ্টান্নের নাম মিষ্টি দই। বগুড়ার দইয়ের জগৎ জোড়া খ্যাতির কথা সবার-ই জানা। স্থানীয়দের মতে দইয়ের ইতিহাস প্রায় আড়াইশো বছরের পুরনো। সে সময় বগুড়ার কাছেই অবস্থিত শেরপুরে বসবাসরত ঘোষ সম্প্রদায় বংশ পরম্পরায় দই বানানোর কাজ করতো।
পড়ুন: হার্ট অ্যাটাক: করণীয় এবং প্রতিরোধে যে সকল পদক্ষেপ নিতে হবে
রসগোল্লা
ভোজনরসিক বাঙালির পরিচয় বহন করে রসগোল্লা, যার জন্য এর মিষ্টান্নের নাম বলা হয় বাঙালির রসগোল্লা। কড়া রান্না করায় পোড়ামাটির মতো বাদামি রঙের হয় এই মিষ্টি। এই মিষ্টিকে ভিত্তি ধরে বানানো হয় বিভিন্ন নামকরা মিষ্টি। এগুলোর মধ্যে রাজভোগ ও ক্ষীর কদম অন্যতম।
রসগোল্লার উৎপত্তি নিয়ে বেশ মতবিরোধ আছে। বিশেষজ্ঞদের মতে পর্তুগীজদের আমলে বর্তমান বরিশালের পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় হিন্দু ময়রাগণ রসগোল্লা বানাতেন। পরবর্তীতে এদের বংশধরেরা কলকাতা, ওড়িশায় স্থানান্তরের মাধ্যমে সেখানেও রসগোল্লার জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে দেন।
পড়ুন: কোলেস্টেরল কমানোর কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
রাজভোগ
ছানা, জাফরান ও শুকনো ফলের মিশ্রণে চিনিতে ভরপুর জিহ্বে জল আনা মিষ্টি রাজভোগ। আকারে বড় মুখ রোচক এই স্পঞ্জি মিষ্টিগুলো অনেকটা রসগোল্লার মত। খোয়া দিয়ে ভরা এই রসাল মিষ্টি একের পর এক শেষ করার জন্য রীতিমত দুঃসাহসের প্রয়োজন। কারণ মিষ্টি স্বাদের এই আধিক্য একমাত্র শুধু মিষ্টিপ্রেমীদের পক্ষেই বশে আনা সম্ভব। এরপরেও দেশ-বিদেশের মিষ্টিপ্রিয়রা একবার হলেও এই মিষ্টির স্বাদ আস্বাদন করে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে রাখেন।
পান্তুয়া
পশ্চিমবঙ্গের কালনা, রানাঘাট ও কাটোয়ায় বিখ্যাত এই মিষ্টান্ন বেশ সুস্বাদু এবং হৃদয়গ্রাহী। পান্তুয়া অনেকটা গুলাব জামুনের মতো দেখতে এই রসাল মিষ্টি ছানা, ময়দা, ও খোসার পেস্ট থেকে তৈরি করা হয়। মাঝারি আকারের মিষ্টিবলগুলো ডুবো চিনির সেরায় ভেজে তাতে এলাচ দেয়া হয়।
পড়ুন: কঠোর ডায়েটের স্বাস্থ্য ঝুঁকিসমূহ জেনে নিন
এই মিষ্টিটির জনপ্রিয়তা শুরু হয় দেশভাগের সময় সুরেন্দ্রলাল কুন্ডুর হাত ধরে। সে সময় তিনি বাংলাদেশ থেকে কাটোয়ায় চলে যান এবং ছেলে প্রাণকৃষ্ণকে সাথে নিয়ে একটি খাবারের দোকান দেন। সেখানেই প্রাণকৃষ্ণ বানাতে শুরু করেন ক্ষীরের পান্তুয়া। প্রাণকৃষ্ণের ডাকনাম পরান-এর নামানুসারে স্থানীয়রা মিষ্টান্নটিকে পরানের পান্তুয়া বলে ডাকতে শুরু করে।
ল্যাংচা
বর্ধমানের রাজা তাঁর পূত্রবধূর মিষ্টি খাওয়ার শখ মেটাতে নদিয়া নিবাসী ময়রা নামক এক ল্যাংড়া মিষ্টির কারিগরকে রাজপ্রাসাদে ডেকে আনিয়েছিলেন। ময়রা’র বানানো মিষ্টির স্বাদে মুগ্ধ হয়ে তাকে বর্ধমানের বড়শূল গ্রামে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়া হয়। ময়রা’র মিষ্টির দোকান করে দেয়া হয় বাদশাহী সড়কের উপর শক্তিগড় গ্রামে, যেখান থেকে প্রতিদিন এক মণ করে মিষ্টি যেতো বর্ধমান প্রাসাদে। পরবর্তীতে এই ময়রা’র মিষ্টান্ন ল্যাংচা নামে বহুল পরিচিতি পায়।
পান্তুয়ার একই গোত্রভুক্ত এই রসাল মিষ্টিটি প্রথমে নলাকার ছিলো। পরে এটি পান্তুয়ার মতই গোলাকার করা হয়। অনেকের কাছে এটা বাংলাদেশের কালোজামের মত দেখতে।
পড়ুন: ২০০ কেজি সোনায় কারুকার্যমণ্ডিত হতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পবিত্র কোরআন
চমচম
বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম বাঙালির একটি ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি। ভারতের উত্তর প্রদেশের বালিয়া জেলার রাজা রামগড় ও তাঁর নাতি মতিলাল গড়-এর অবদানে এই মিষ্টি স্বাদ ও উপাদানের গুণগত মানে সিদ্ধি লাভ করে।
প্রায় দুইশত বছর পূর্বে যশোরত হাল নামের এক কারিগরের হাতে প্রথম চমচম তৈরি হয়। টাঙ্গাইলের
যমুনা ও ধলেশ্বরী নদীর পানির সহজাত বৈশিষ্ট্যের কারণে চিনির গায়ে দ্রবণ থাকায় অন্যান্য মিষ্টি থেকে চমচম অপেক্ষাকৃত কম পচনশীল হয়ে থাকে। মাখন, চিনি ও ময়দার মিশ্রণে সুস্বাদু এই মিষ্টিকে বাংলাদেশের মিষ্টির রাজা হিসেবে অভিহিত করা হয়।
পড়ুন: মাগুরায় ৭১২ মণ্ডপে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি
ক্ষীর কদম
বাইরে গুড়ো চিনির খোয়া ভাজা ক্ষীর এবং ভেতরে লুকানো রসগোল্লা- এই দুই স্তরের ক্ষীর কদম খেতে যেমন মজা দেখতেও তেমনি সুন্দর। পরিবেশনে আলাদা সৌন্দর্য্য আনার জন্য এর অতিরিক্ত কিছুই প্রয়োজন পড়ে না। কদম ফুলের মত দেখতে হওয়ায় মিষ্টান্নটির এরকম নামকরণ। ক্ষীর ও কদমের এমন দারুণ সংযোজনে বাঙালির পূজাগুলো মুখরিত হয়ে ওঠে। এছাড়া শৈল্পিক রন্ধনপ্রণালীর এক আশ্চর্য প্রয়োগ এই ক্ষীর কদম যেখানে মেহমান ও মেজবান উভয়ের মাঝেই মুগ্ধতা সৃষ্টি করে।
কাঁচাগোল্লা
গরুর দুধের কাঁচা ছানা ও এলাচে মিশ্রিত নিমেষেই মুখ মিষ্টি করে দেয়ার মত একটি খাবার এই কাঁচাগোল্লা। কাঁচাগোল্লার নামের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের উত্তর বঙ্গের জেলা নাটরের নামটি।
একদা নাটরের প্রসিদ্ধ লালবাজারের মধূসুদন পাল-এর মিষ্টির দোকানে কারিগর না আসায় দুশ্চিন্তায় পড়ে যান দোকানের মালিক। এরপরেও তিনি কর্মচারীদেরকে কাঁচা ছানাতে চিনির রস ঢেলে জ্বাল দিয়ে নামিয়ে রাখতে বলেন। অবশেষে সেই ছানা চেখে দেখে বিস্মিত হয়ে যান। এই কাঁচা ছানার মিষ্টির কথাই সে সময় কাঁচাগোল্লা নামে ঢোল পিটিয়ে চারপাশ জানানো হোতো।
পড়ুন: দুর্গাপূজা উপলক্ষে বেনাপোল দিয়ে ভারতে গেলো ২০৯ মেট্রিক টন ইলিশ
মিহিদানা
১৯০৪ সালে বর্ধমানের মিষ্টি প্রস্তুতকারক ভৈরবচন্দ্র নাগ সর্বপ্রথম মিহিদানা তৈরি করেছিলেন। বর্ধমানের ভূস্বামী বিজয়চাঁদ মহতাব বড়লাট জর্জ ন্যাথানিয়েল কার্জন-এর বর্ধমান ভ্রমণ স্মরণীয় করতে এই মিষ্টি বানানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি বুন্দিয়ার আদলে তৈরি রঙ-বেরঙের এই চমৎকার মিষ্টিটি অবলীলায় ভোজনরসিকদের মন জয় করে নেয়। এর মুল উপাদান বেসন, ঘি, চিনি, জাফরান ও চাল হলেও এখন অনেক কারিগর এতে চিনির বদলে খেজুরের গুড়ও ব্যবহার করছেন।
পরিশিষ্ট
যুগ যুগ ধরে দুর্গাপূজার মিষ্টিগুলো বাঙালিয়ানাকে সমৃদ্ধ করেছে। আবহমান বাংলার ধর্মপ্রাণ মানুষগুলোর উপসনাকেন্দ্রিক অনুষ্ঠানগুলোতে করেছে প্রাণের সঞ্চার। এরকম আরো বহু মিষ্টান্নের আকর্ষণের জন্য এদের কারিগরেরা বেশ মর্যাদার আসনে আসীন হন। বর্তমানে যোগাযোগ মাধ্যমের উৎকর্ষের কারণে ঘরে ঘরে এ ধরণের মিষ্টি বানানোর রেসিপিও ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্যব্যাপী। ফলে পৃথিবীর আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা প্রতিটি বাঙালির মিষ্টিমুখ অনুষ্ঠানে অবলীলায় জায়গা করে নিচ্ছে দুর্গাপূজার মিষ্টি।
পড়ুন: বর্ষা মৌসুমে যেসব পুষ্টিকর সবজি খেতে পারেন
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর অভিনন্দন
উপনির্বাচনে রেকর্ড ভোটে জয়ী হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে আব্দুল মোমেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা এক অভিনন্দন বার্তায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন যে, পারস্পরিক মঙ্গল ও উন্নয়নের স্বার্থে, আগামী দিনগুলোতে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ এবং পরিপূরক হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
ড. মোমেন বলেন, টানা তৃতীয় মেয়াদে ভবানীপুর নির্বাচনী এলাকায় বিপুল বিজয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বের প্রতি পশ্চিমবঙ্গের জনগণের অব্যাহত আস্থা ও সুগভীর বিশ্বাসের প্রতিফলন। মমতা ব্যানার্জ্জীর যোগ্য নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গের জনগণের সর্বাঙ্গীণ উন্নতি ও উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করেন তিনি।
এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর সুস্বাস্থ্য ও অব্যাহত সাফল্য কামনা করেন এবং আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা জানান।
আরও পড়ুন: ভবানীপুরে জিতে আবারও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা
শিগগিরই মুহিবুল্লাহর হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহর হত্যাকারীদের শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
রবিবার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দুর্গাপূজার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে এক বৈঠকে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
মুহিবুল্লাহ হত্যার কারণ খুঁজতে তদন্ত চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,সন্দেহভাজনদের শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে।
আরও পড়ুন: মুহিবুল্লাহ হত্যা: আরও ১ সন্দেহভাজন রোহিঙ্গা গ্রেপ্তার
মুহিবুল্লাহকে রোহিঙ্গাদের কণ্ঠসর উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, তিনি সবসময় তাদের প্রত্যাবাসনের কথা বলেছিলেন।
তিনি বলেন,কোন বিদেশী এজেন্ট শরণার্থী শিবিরে পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করছে কিনা তা জানতে তদন্ত করছে সরকার।
ক্যাম্পে নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়ে তিনি জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া বসানো হচ্ছে যা কিছুদিনের মধ্যে সম্পন্ন হবে। এছাড়াও উচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।
আরও পড়ুন: মুহিবুল্লাহ হত্যায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মাগুরায় ৭১২ মণ্ডপে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি
বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান এ উৎসব দুর্গার্পজা আগামী ১১ অক্টোবর (সোমবার) থেকে শুরু হবে। এ বছর মাগুরা জেলায় চারটি থানায় মোট ৭১২টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে জেলা পূজা উৎযাপন পরিষদ।
গত বছর জেলায় ৬০২ মণ্ডপে পূজা হয়েছিল। এ বছর ১১০টি মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী কালিমন্দিরে পূজা দিলেন মোদি
সংশ্লিষ্টরা জানান, ১১ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্যে দিয়ে দেবীর বোধন আমন্ত্রণ অধিবাস দিয়ে শুরু হয়ে ১৫ অক্টোবর শুক্রবার মহাবিজয়া উৎসবের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে। এবার সদর উপজেলায় ২৩২টি, শ্রীপুরে ১৫৪, শালিখায় ১৭১, মহম্মদপুরে ১৩২ ও পৌরসভায় ২৩টিসহ জেলায় মোট ৭১২টি মণ্ডপে দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের মতো করোনার কারণে এবারও পূজায় কোনো আলোকসজ্জা, মেলা, আরতি প্রতিযোগিতা, কোনো ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠিত হবে না। বৈশ্বিক করোনা মহামারির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধুমাত্র মন্দির প্রাঙ্গণে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
সরেজমিনে মাগুরা সদরের বাটিকাডাঙ্গা গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে শিল্পীরা ইতোমধ্যে প্রতিমায় মাটির কাজ শেষ করেছেন। চলছে রঙ-তুলির কাজ।
প্রতিমা শিল্পী মুকুল বৈদ্য বলেন, ‘ব্যস্ত সময় পার করছি। বেশ কিছু প্রতিমার কাজ পেয়েছি; কিন্তু পারিশ্রমিক ভালো না। পূজামণ্ডপে চলছে ডেকোরেশনের কাজ। আগে যে প্রতিমা ৫০ হাজার টাকায় তৈরি করেছি, এবার ২৫ হাজার টাকায় তৈরি করতে হচ্ছে। সারাবছর আমাদের এই দুর্গাপূজার আয়ের টাকায় সংসার চলে।’
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা: চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফ মিষ্টি বিনিময়
মাগুরা নতুন বাজার স্মৃতি সংঘের আয়োজক প্রকাশ সাহা বলেন, ‘প্রতি বছরের মতো এবারও পূজার আয়োজন চলছে।’
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাসুদেব কুণ্ডু বলেন, ‘মাগুরায় হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, মুসলিম- সবাই মিলেমিশে বাস করে। উৎসবে সবার একাত্বতা হলেও এবার পূজায় উৎসব আমেজ সীমিত করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিটি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।’
জেলার পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম জানান, প্রতিটি মণ্ডপে আনসার, গ্রামপুলিশ, পূজা পরিষদের স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করবে। এছাড়া শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় জেলা প্রশাসন থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে মোবাইল টিমসহ ডিবি পুলিশের টহল ও গোয়েন্দা পুলিশ কাজ করবে।
চুয়াডাঙ্গায় দুর্গাপূজার প্রতিমা ভাঙচুর
চুয়াডাঙ্গায় একটি মন্দিরে দুর্গাপূজার প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার শহরতলীর দৌলতদিয়ার দক্ষিণ পাড়া মন্দিরে দুস্কৃতিকারীরা এই প্রতিমা ভাঙচুর করে বলে সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতারা জানিয়েছেন।
এই ঘটনায় সমগ্র চুয়াডাঙ্গা জেলায় দূর্গাপূজা আয়োজকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এমন ঘটনায় তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবু তারেক, এএসপি (সদর) কনক কুমার দাস ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহম্মদ মহসিন পিপিএম।
আরও পড়ুন: নিকলীতে প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় আটক ৫, একজনের স্বীকারোক্তি
ওসি জানান, কি কারণে এধরনের ঘটনা ঘটেছে পুলিশ তা তদন্ত করছে।
জেলার নেতৃবৃন্দ জানায়, কারিগররা প্রতিমার কাজ করে রাতে বিশ্রামে চলে যায় । বিকেলে এসে ভাঙচুরের ঘটনা দেখতে পেলে পুলিশে খবর দেয়।
এদিকে আজ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের জেলা নেতারা আগামী ২৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের জোর দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেছে। অন্যথায় তারা কঠোর কর্মসুচি ঘোষণা করবেন বলে জানান।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা উপলক্ষে বেনাপোল দিয়ে ভারতে গেলো ২০৯ মেট্রিক টন ইলিশ
দুর্গাপূজা উপলক্ষে বেনাপোল দিয়ে ভারতে গেলো ২০৯ মেট্রিক টন ইলিশ
বাংলাদেশ থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ২০৯ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে ভারতে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে বেনাপোল বন্দরে এসে পৌঁছায় এই চালান।
বেনাপোল মৎস্য অধিদপ্তরের মান নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মাছের নমুনা পরীক্ষা করে রপ্তানির অনুমতি দেন।
১৭টি ইলিশ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছ রপ্তানি করে ভারতে। যার রপ্তানি মূল্য প্রতি কেজি ১০ মার্কিন ডলার।
আরও পড়ুন: ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হবে: মন্ত্রী
ভারতে দুই হাজার ৮০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির জন্য দেশের ৫২টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিয়েছে সরকার। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ৪০ টন করে ইলিশ রপ্তানি করতে পারবে।
বেনাপোল মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ অফিসের পরিদর্শক আসওয়াদুল ইসলাম বলেন, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান দুর্গাপূজা উপলক্ষে সরকার গত ২০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ৫২ রপ্তানিকারকের প্রত্যেককে ৪০ টন করে দুই হাজার ৮০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়।
বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মো. আজিজুর রহমান জানান, আজ দ্বিতীয় দিনের মত বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে ২০৯ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছে ভারতে। ইলিশ রপ্তানি কার্যক্রম দ্রুত করতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইলিশ নিয়ে কথকতা
ভোমরা স্থলবন্দরে ফের আমদানি-রপ্তানি শুরু
সনাতন ধর্মাবলম্বী বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয়া দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে টানা পাঁচদিন বন্ধ থাকার পর বুধবার থেকে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম আবারও শুরু হয়েছে।
প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দুর্গাপূজা
প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সোমবার শেষ হলো হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয়া দুর্গাপূজা।