চীন
চীনে ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১, এখনও নিখোঁজ অনেক
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ ইউনানের প্রত্যন্ত ও পার্বত্য এলাকায় ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে এবং এখনও অনেক নিখোঁজ রয়েছে বলে জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিনহুয়া।
সোমবার(২২ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোর ৬টার কিছু আগে ইউনানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লিয়াংশুই গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এর আগে মঙ্গলবার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, মোট ৪৪ জনের মতো নিখোঁজ এবং নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু লাশ উদ্ধার করেছেন তারা।
আরেকটি ভূমিধসের সতর্কতার কারণে দিনের শুরুতে উদ্ধার অভিযান স্থগিত থাকার পর পুনরায় তা শুরু হয়েছে।
জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, খননকারী, ড্রোন ও উদ্ধারকারী কুকুরের সহায়তায় ১ হাজারেরও বেশি উদ্ধারকর্মী হিমশীতল ঠান্ডার মধ্যে কাজ করছেন। সোমবার দু'জনকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দেওয়া হয়।
স্থানীয় বিশেষজ্ঞদের প্রাথমিক তদন্তের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, প্রায় ১০০ মিটার (৩৩০ ফুট) প্রশস্ত, ৬০ মিটার (২০০ ফুট) উচ্চতা এবং গড়ে ৬ মিটার (২০ ফুট) পুরুত্বের একটি খাড়া পাহাড় ধসে পড়লে ভূমিধসের সূত্রপাত হয়। তবে কী কারণে প্রথম ধসের ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি তারা।
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে ভূমিধসে নিহত ৭, নিখোঁজ ১০
সিনহুয়ার পোস্ট করা উপর থেকে তোলা ছবিতে দেখা গেছে, একটি উঁচু পাহাড়ের অংশ পাশের গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ির ওপর ছড়িয়ে পড়েছে। নিরাপত্তার কারণে ৯০০ জনেরও বেশি গ্রামবাসীকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ঝেনশিয়ং কাউন্টি বেইজিং থেকে প্রায় ২ হাজার ২৫০ কিলোমিটার (১,৪০০ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। ২ হাজার ৪০০ মিটার (৭,৯০০ ফুট) পর্যন্ত এর উচ্চতা রয়েছে।
উদ্ধারকারীরা তুষারপাত, বরফে ঢাকা রাস্তা এবং হিমশীতল তাপমাত্রার সঙ্গে লড়াই করছে। এমন আবহাওয়া কমপক্ষে আরও তিন দিন অব্যাহত থাকবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: চীনের পশ্চিমাঞ্চলে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প
চীনের অনেক অংশে ভারী তুষারপাত হচ্ছে, যা পরিবহন ব্যবস্থায় ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে এবং জীবনকে বিপন্ন করছে।
উদ্ধারকারীরা গত সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিম চীনের একটি প্রত্যন্ত স্কিইং এলাকা থেকে পর্যটকদের সরিয়ে নিয়েছিল। কারণ ভারী তুষারপাতের কারণে এক সপ্তাহ ধরে এক হাজারেরও বেশি লোক আটকা পড়েছিল। সীমান্তের কাছে জিনজিয়াং অঞ্চলের আলতাই প্রদেশের একটি গ্রামে তুষারধসের কারণে মঙ্গোলিয়া, রাশিয়া ও কাজাখস্তানের সঙ্গে চীনের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
বৃষ্টি বা অনিরাপদ নির্মাণ কাজের কারণে ভূমিধসের ঘটনা চীনে অস্বাভাবিক কিছু নয়। গত বছর ভূমিধসে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছিল। এর মধ্যে ইনার মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে একটি উন্মুক্ত খনিতে ৫০ জনেরও বেশি লোক নিহত হন। এছাড়া ২০২১ সালে নির্মাণাধীন একটি টানেল প্লাবিত হওয়ায় ১৪ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল।
গানসু ও কিংহাই প্রদেশের মধ্যবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চলে চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার মাত্র এক মাস পর ইউনানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটল। গত ১৮ ডিসেম্বর আঘাত হানা ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ১৪৯ জন নিহত হয়, এতে ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় এবং ভারী ভূমিধসে কিংহাই প্রদেশের দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়।
গত ৯ বছরের মধ্যে চীনে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রায় এক হাজার মানুষ আহত এবং ১৪ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
আরও পড়ুন: চীনের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসে ৪৭ জনের মৃত্যু
নিরাপত্তা বাহিনীর প্রশিক্ষণের পরিধি বাড়াতে চীনের প্রতি অনুরোধ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
নিরাপত্তা বাহিনীর প্রশিক্ষণের পরিধি বাড়াতে চীনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। সোমবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে চীন সরকারের 'গ্রেট ওয়াল মেমোরেটিভ মেডেল' হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এ অনুরোধ জানান।
ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন আজ এ মেডেল হস্তান্তর করেন। এ সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তা ও চীনের প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা সব সময় সাইবার সিকিউরিটির বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন আছি। আমরা ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম, আন্তর্জাতিক ক্রাইম এসমস্ত ক্রাইম যাতে আমরা প্রতিরোধ করতে পারি সেগুলোর জন্য আমরা সবসময় সহযোগিতা চাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, তারা সবসময় আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন। এই প্রশিক্ষণের পরিধি আরও বাড়ানোর জন্য আমরা অনুরোধ জানিয়েছি তারা বিবেচনা করেছেন যে তারা আমাদের আরও প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুযোগ দেবেন। প্রশিক্ষণের জন্য আমাদের পুলিশ মহাপরিদর্শক এরই মধ্যে তালিকা তাদের কাছে হস্তান্তর করেছেন। আমার মনে হয়, তারা সেটি গ্রহণ করবে।
আরও পড়ুন: পরাজয় নিশ্চিত জেনে নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রের বিরূপ মন্তব্য প্রসঙ্গে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমরা মনে করি একটা সুন্দর নির্বাচন উপহার দিয়েছে আমাদের নির্বাচন কমিশন। এখন পর্যন্ত কোনো দেশ থেকে এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়নি সেটা আপনারা জানেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের নির্বাচন নিয়ে অনেকগুলো দেশ অনেক মন্তব্য করেছেন। কিন্তু চায়না সরকার আমাদের বন্ধু। তারা সবসময় বলেছে এটা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় সেখানে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই। বাংলাদেশ সরকারই নির্বাচন করবে আমাদের এখানে কোনো মন্তব্য নেই।
যারা বিরূপ মন্তব্য করেছেন তাদের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি তারা এখন বুঝে গিয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটা সুন্দর নির্বাচন হয়েছে।
তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ যে সম্পর্ক পাশাপাশি অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের সঙ্গেও আমাদের চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। আমি মনে করি এটা আরও শক্তিশালী হবে।
আরও পড়ুন: পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নৈতিক দায়িত্ব পালনের আহ্বান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
চীনের পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসে ৪৭ জনের মৃত্যু
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় পার্বত্য ইউনান প্রদেশে ভূমিধসে ৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ঠান্ডা তাপমাত্রা ও তুষারপাতের কারণে আরও ২০০ জনকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (২২ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোর ৬টার কিছু আগে ইউনান প্রদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় লিয়াংশুই গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ঝেনশিয়ং কাউন্টির প্রচার বিভাগ জানিয়েছে, ১৮টি আলাদা বাড়িতে চাপা পড়া হতাহতদের উদ্ধার তৎপরতা চলছে।
তবে এসব ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ভূমিধসের কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা না গেলেও ছবিতে দেখা গেছে যে তুষারপাত অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় বন্যা ও ভূমিধসে ২১ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত
ভূমিধসের সময় ৩৫ বছর বয়সী লুও ডংমেই ঘুমিয়ে ছিলেন, কিন্তু তিনি বেঁচে যান এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তাকে একটি স্কুলে সরিয়ে নিয়েছে।
লুও ডংমেই বলেন, ‘আমি ঘুমিয়ে ছিলাম, কিন্তু আমার ভাই দরজায় কড়া নাড়ল এবং আমাকে জাগিয়ে তুলল। তারা বলেছিল যে সেখানে একটি ভূমিধস ছিল এবং বিছানাটি কাঁপছিল, তাই তারা দ্রুত উপরে উঠে আমাদের জাগিয়ে তোলে।’
তিনি বলেন, লুও, তার স্বামী এবং তাদের তিন সন্তানসহ আরও অনেক বাসিন্দাকে স্কুলে খাবার সরবরাহ করা হয়েছে তবে তারা এখনও ঠান্ডা আবহাওয়া মোকাবিলায় কম্বল এবং অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রীর জন্য অপেক্ষা করছেন।
লুও বলেন, ভূমিধসের স্থানের কাছাকাছি থাকা তার বোন ও খালার সঙ্গে তিনি যোগাযোগ করতে পারছেন না। ‘আমি এখন শুধু অপেক্ষা করতে পারি।’
আরও পড়ুন: চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ভূমিধসে খনি শ্রমিক আবাসনে নিহত ১৯
উদ্ধারকারীরা গত সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিম চীনের একটি প্রত্যন্ত স্কিইং এলাকা থেকে পর্যটকদের সরিয়ে নিয়েছিল। কারণ ভারী তুষারপাতের কারণে এক সপ্তাহ ধরে এক হাজারেরও বেশি লোক আটকা পড়েছিল। সীমান্তের কাছে জিনজিয়াং অঞ্চলের আলতাই প্রদেশের একটি গ্রামে তুষারধসের কারণে মঙ্গোলিয়া, রাশিয়া ও কাজাখস্তানের সঙ্গে চীনের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
বৃষ্টি বা অনিরাপদ নির্মাণ কাজের কারণে ভূমিধসের ঘটনা চীনে অস্বাভাবিক কিছু নয়। গত বছর ভূমিধসে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত হয়েছিল। এর মধ্যে ইনার মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে একটি উন্মুক্ত খনিতে ৫০ জনেরও বেশি লোক নিহত হন। এছাড়া ২০২১ সালে নির্মাণাধীন একটি টানেল প্লাবিত হওয়ায় ১৪ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল।
গানসু ও কিংহাই প্রদেশের মধ্যবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চলে চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানার মাত্র এক মাস পর ইউনানে ভূমিধসের ঘটনা ঘটল। গত ১৮ ডিসেম্বর আঘাত হানা ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ১৪৯ জন নিহত হয়, এতে ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় এবং ভারী ভূমিধসে কিংহাই প্রদেশের দুটি গ্রাম প্লাবিত হয়।
গত ৯ বছরের মধ্যে চীনে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রায় এক হাজার মানুষ আহত এবং ১৪ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে ভূমিধসে নিহত ৭, নিখোঁজ ১০
বলিভিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৭
বলিভিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৭ জন নিহত ও ৩ জন আহত হয়েছেন।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) পশ্চিমাঞ্চলীয় অরুরো বিভাগের চাল্লাপাতা শহরের কাছে দু’টি গণপরিবহন (বাস ও ভ্যান) মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বলেছে, নিহতদের মধ্যে ৬ জন ভ্যানে ছিলেন, অন্যজন বাসের যাত্রী। ভ্যানটি সড়কের বিপরীত পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তারিজা থেকে লা পাজগামী বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও স্থানীয় টেলিভিশনে প্রচার করা ছবিতে দেখা যায়, ধাক্কায় যাত্রীবাহী ভ্যানটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং বাসের সামনের অংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দুর্ঘটনার কারণ জানার জন্য তদন্ত চালাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন।
আরও পড়ুন: খুলনায় সড়ক দুর্ঘটনায় যুবক নিহত
নাটোরে সড়ক দুর্ঘটনায় স্ত্রী-স্বামী নিহত
পুনরায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে চীনের প্রেসিডেন্টের অভিনন্দন
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) পাঠানো চিঠিতে তিনি বলেন, ‘চীন ও বাংলাদেশ দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব বিয়ে প্রতিবেশি। কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ৪৯ বছরে উভয় দেশ সবসময় একে অপরকে সম্মান করেছে, একে অপরের সঙ্গে সম আচরণ দেখিয়েছে এবং পারস্পরিক সুযোগসুবিধা ও ‘জয়-জয়’ ফলাফল অর্জন করেছে।’
চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, উভয় দেশ একে অপরের প্রধান স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যুতে দৃঢ়ভাবে একে অপরকে সমর্থন করে এবং যৌথভাবে প্রতিটি দেশের উন্নয়ন ও পুনরুজ্জীবনকে অনুসরণ করে, যা আমাদের দুই দেশের জনগণের জন্য বাস্তব সুবিধা বয়ে আনে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিদেশি বন্ধুদের অভিনন্দন
এ প্রসঙ্গে তিনি স্মরণ করেন, গত আগস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে দুই দেশের নেতা বৈঠক করেন এবং চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্যে পৌঁছান।
চিঠিতে তিনি আরও বলেন, ‘আশা করা হচ্ছে- চীন ও বাংলাদেশ যে গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্যে পৌঁছেছে তা আরও বাস্তবায়ন, রাজনৈতিক পারস্পরিক বিশ্বাস বৃদ্ধি, ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্ব বৃদ্ধি, উন্নয়ন কৌশলকে আরও সমন্বয়, উচ্চ মানের বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতা প্রচার, যাতে চীন-বাংলাদেশ কৌশলগত সহযোগিতা নতুন উচ্চতায় উন্নীত হবে।’
তিনি তার সুস্বাস্থ্য, সাফল্যময় কর্মজীবন এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সাফলতা কামনা করেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্রাজিলের অভিনন্দন
পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় শেখ হাসিনাকে নেপালের প্রধানমন্ত্রীর অভিনন্দন
চীনের গণমাধ্যমে বাংলা অনুষ্ঠান সম্প্রচারের ৫৫তম বর্ষ উদযাপিত
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বাংলা অনুষ্ঠান সম্প্রচারের ৫৫তম বর্ষ উপলক্ষে সোমবার (১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ঢাকায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দীপ্ত টিভির কার্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ‘হ্যালো চায়না’ শিরোনামের এ অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এবং বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসের শারজেই ড্যাফেয়ার (Charge d'affaires) ইয়ান হুয়ালং।
উদযাপনের অংশ হিসেবে নিউ ইয়ার কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয়। যেখান সংগীত পরিবেশন করেন খ্যাতিমান সংগীতশিল্পী তাহসান (তাহসান রহমান খান) এবং জনপ্রিয় রক ব্যান্ড চিরকুটের শারমিন সুলতানা সুমি ও অন্য সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে ভিডিওর মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন চায়না মিডিয়া গ্রুপের (সিএমজি) আফ্রিকান ও এশিয়ান কেন্দ্রের পরিচালক আন সিয়াও ইয়ু এবং বেইজিং থেকে অনলাইনে অনুষ্ঠানে যোগ দেন সিএমজির বাংলা বিভাগের পরিচালক ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দি। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন দীপ্ত টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জাহেদুল হাসান।
আরও পড়ুন: তিস্তা নদীর উন্নয়নমূলক প্রকল্পে আগ্রহ প্রকাশ করেছে চীন: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
এ আয়োজন উপলক্ষে বাণী দেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। তিনি বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে আদান-প্রদান বৃদ্ধিতে চীনা গণমাধ্যমে প্রচারিত বাংলা অনুষ্ঠানের অবদানের প্রশংসা করেন।
এ সময় গণমাধ্যমে কর্মরত সংবাদকর্মী ও কলাকুশলীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা কেবল ইতিহাসের সাক্ষী নন, ইতিহাস নির্মাণকারীও।’
সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, চীন বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন অংশীদার এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় বিকাশে বন্ধুপ্রতীম দেশটির অবদান অনস্বীকার্য।
সিএমজি বাংলা বিভাগের উদ্যোগে বাংলাদেশ-চীন মিডিয়া ক্লাব প্রতিষ্ঠার উদ্যোগকে তিনি স্বাগত জানান এবং আশা প্রকাশ করেন দুদেশের সাংস্কৃতিক বন্ধনকে আরও সদৃঢ় করবে এ ক্লাব।
সিএমজির আফ্রিকান ও এশিয়ান কেন্দ্রের পরিচালক আন সিয়াও ইয়ু বলেন, চীনা জাতির মহান পুনর্জাগরণের স্বপ্ন এবং বাংলাদেশের জনগণের ‘সোনার বাংলার’ স্বপ্নের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে।
চীন ও বাংলাদেশের সহযোগিতা উভয় দেশের জনগণের জন্য সুফল বয়ে এনেছে এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সিএমজি দু’দেশের মধ্যে মিডিয়ার সহযোগিতাকে আরও গভীর করতে এবং চীন-বাংলাদেশ বন্ধুত্বকে এগিয়ে নিতে দুদেশের সর্বস্তরের বন্ধুদের সঙ্গে কাজ করবে।
কাজী জাহেদুল হাসান চীনকে বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় দেশটি সব সময় পাশে রয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বাংলা অনুষ্ঠান সম্প্রচার শুরু হয় ১৯৬৯ সালের ১ জানুয়ারি তৎকালীন রেডিও পিকিংয়ের মাধ্যমে। রেডিও পিকিংয়ের নাম বদলে পরে হয় রেডিও বেইজিং এবং তারপর চীন আন্তর্জাতিক বেতার (চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনাল-সিআরআই)। ২০১৮ সালে চীন আন্তর্জাতিক বেতার এবং আরও ৩টি রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম – চায়না সেন্ট্রাল টেলিভিশন (সিসিটিভি), চায়না গ্লোবাল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক (সিজিটিএন) এবং চায়না ন্যাশনাল রেডিও (সিএনআর) নিয়ে গঠিত হয় সিএমজি।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ও চীনের গণমাধ্যমগুলোর যোগাযোগ ও আদান-প্রদান আরও বাড়াতে চায়না মিডিয়া গ্রুপের বাংলা বিভাগ চলতি বছরে বাংলাদেশ-চীন মিডিয়া ক্লাব প্রতিষ্ঠার নতুন উদ্যোগ নিয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে উজ্জ্বল ভবিষ্যত দেখছে চীন: ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত
চীনে ভূমিকম্পে হতাহতের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শোক
চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের কাছে পাঠানো এক শোকবার্তা পাঠান তিনি।
এতে শেখ হাসিনা বলেন, 'চীনের দীর্ঘদিনের বন্ধু হিসেবে বাংলাদেশের জনগণ এবং সরকারের পক্ষ থেকে এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে বন্ধুপ্রতীম চীনা জনগণের প্রতি আন্তরিক সহানুভূতি প্রকাশ করছি।’
আরও পড়ুন: অগ্নিসংযোগ করে বিএনপি মানুষের মন জয় করতে পারবে না: শেখ হাসিনা
তিনি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
প্রেসিডেন্ট শির নিবিড় তত্বাবধানে চীন সফলভাবে উদ্ধার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে এবং শিগগিরই গানসু প্রদেশের জনগণের জীবনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আসবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ ও কসোভো দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে পারে: বিদায়ী রাষ্ট্রদূতকে প্রধানমন্ত্রী
চীনে আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়নের উন্নয়ন
সারসংক্ষেপ
আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ শৃঙ্খলা। অনেক বড় দেশ আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়নকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে, চীনের স্টেট কাউন্সিলের একাডেমিক ডিগ্রি কমিটি “পিএইচডি, মাস্টার্স ডিগ্রি প্রদানের পেশাদার ক্যাটালগ” জারি করে। “ট্যালেন্ট ট্রেনিং ডিসিপ্লিনস (মন্তব্যের জন্য খসড়া)”, এর ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি, আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন আন্তঃবিভাগীয় বিভাগের অধীনে প্রথম স্তরের শৃঙ্খলা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়। একই সঙ্গে চীনের আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন উন্নয়নের একটি নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করে।
মূল শব্দ: আঞ্চলিক ও দেশীয়, চীন, শৃঙ্খলা নির্মাণ
১ . আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়নের উন্নয়নের প্রেক্ষাপট
১.১ আঞ্চলিক ও দেশীয় গবেষণার উৎস
আরও পড়ুন: দক্ষিণ এশিয়ার জ্বালানি বিকাশে নবদিগন্তের হাতছানি
আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন মূলত ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি ও হ্যাবসবার্গ সাম্রাজ্যে "প্রাচ্যবাদ" এর একটি শাখা হিসেবে আবির্ভূত হয়। পাশ্চাত্যের বণিক বা ধর্মপ্রচারক যারা প্রাচ্যে ভ্রমণ করেছিলেন তারা তাদের নিজস্ব উপলব্ধির সঙ্গে জ্ঞান, কিংবদন্তি ও কল্পনার মতো অনেক কারণকে একত্রিত করেছিলেন। তারা প্রাচ্যের সাংস্কৃতিক রীতিনীতি, আইন, প্রথা ইত্যাদিকে পাশ্চাত্য দৃষ্টিকোণ থেকে দেখেছিলেন। তারা সত্য ও মিথ্যা তথ্য নিয়ে পাশ্চাত্যে ফিরে যান। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটেন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্দিষ্ট আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন স্কুলের প্রতিষ্ঠা শুরু হয়। তারা প্রধানত মানবিক বিষয়ে ফোকাস করে এবং ভাষা, ইতিহাস, রীতিনীতি, আইন ও সাহিত্য শেখায়(জরান,২০১৯)।
১.২ আধুনিক আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন
আধুনিক এলাকা অধ্যয়নের উৎস দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং যুদ্ধ পরবর্তী সময়কাল থেকে খুঁজে পাওয়া যায়। মার্কিন সরকারের গোয়েন্দা তথ্য এবং সামরিক প্রয়োজনের কারণে, প্রাথমিক এলাকা অধ্যয়ন কেন্দ্রটি অফিস অব স্ট্র্যাটেজিক সার্ভিসেসের অফিসে অবস্থিত ছিল।
প্রারম্ভিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকা অধ্যয়ন কোর্সের সঙ্গে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল (হুসাইন,২০১১)৷ মার্কিন সরকার রুথ বেনেডিক্টকে কমিশন দিয়েছে, রুথ জাপানের সংস্কৃতি ও সমাজ অধ্যয়ন করেছে, যার ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপান দখলের জন্য পরবর্তী নীতি প্রণয়ন করতে এবং জাপানি অধ্যয়নের প্রবণতা চালু করতে সহায়তা করে(লুস,২০০৮)।
১৯৬০-এর দশকে, আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন তুলনামূলক রাজনীতির সঙ্গে একত্রে বিকশিত হয় এবং কিছু আঞ্চলিক তুলনামূলক অধ্যয়ন শুরু হয়। ১৯৬০ সালে অ্যালমন্ড ও অন্যদের দ্বারা সম্পাদিত "দ্য পলিটিক্স অব ডেভেলপিং রিজিয়ন" ছিল প্রারম্ভিক আঞ্চলিক গবেষণায় একটি বিশ্বকোষ, যা প্রতিটি অঞ্চলের ইতিহাস, প্রক্রিয়া, গঠন ও কার্য বিশ্লেষণ করে(বালিন্দুন,২০১৩)।
১.৩ নতুন যুগে আঞ্চলিক গবেষণার উন্নয়ন
১৮৭০ থেকে ১৮৯০ এর দশক পর্যন্ত, আঞ্চলিক গবেষণা পদ্ধতি মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞানের মধ্যে পরিপূরকতা দেখাতে শুরু করে। এই সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো তুলনামূলক রাজনীতি বিজ্ঞানসম্মত হতে শুরু করে। বিপুল সংখ্যক পণ্ডিত প্রকৃত স্থানীয় পরিস্থিতি বোঝার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পর্যবেক্ষণ ও মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে কার্যকারণ প্রক্রিয়া আবিষ্কার করতে শুরু করেন। সবচেয়ে বিখ্যাত কেস হলো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উপর জেমস স্কটের গবেষণা। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় কৃষকদের আচরণ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে, তিনি স্থানীয় কৃষকদের প্রতিরোধের কারণ এবং কীভাবে তারা "দুর্বলদের অস্ত্র" ব্যবহার করেছিলেন তা পর্যবেক্ষণ করেছিলেন(জেমস,২০১১)।
১৯৯০ এরপর, বিশ্বায়নের বিকাশ ও স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের প্রেক্ষাপটে, কিছু গবেষক "প্রথাগত আঞ্চলিক দেশ অধ্যয়ন" ও "অঞ্চলভিত্তিক জ্ঞান" এর মধ্যে পার্থক্য করার প্রয়োজনীয়তার প্রস্তাব করেন। আঞ্চলিক জ্ঞান থেকে বিকশিত সাধারণ তত্ত্বের চাহিদা পরিবর্তিত হওয়ার সঙ্গে আঞ্চলিক ও দেশীয় গবেষণা পদ্ধতি আরও বৈজ্ঞানিক হয়ে উঠেছে। অবশ্যই, সেই সময়কালে পদ্ধতিগত বিবাদে জড়িত হওয়া অনিবার্য ছিল।
আরও পড়ুন: ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ প্রসঙ্গে চীনের বাংলাভাষী প্রতিভা প্রশিক্ষণের কৌশল সম্পর্কিত গবেষণা
২. চীনে আঞ্চলিক ও দেশীয় গবেষণার উন্নয়ন
২.১ চীনে আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়নের ঐতিহ্য
একটি দীর্ঘ ইতিহাসযুক্ত প্রাচীন সভ্যতা হিসেবে চীনের আঞ্চলিক ও দেশীয় গবেষণার একটি গভীর ঐতিহ্য রয়েছে। "ঐতিহাসিক রেকর্ড"-এ কোরিয়া ও দাওয়ানের(উজবেকিস্তান) ঐতিহাসিক নথিগুলোকে প্রতিবেশী দেশগুলোর দেশভিত্তিক গবেষণা হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে। কেন্দ্রীয় রাজবংশের পরবর্তী সরকারি "ঐতিহাসিক রেকর্ড"র ঐতিহ্য অনুসরণ করে এবং আশেপাশের অঞ্চলের জাতিগত গোষ্ঠী, জাতি ও দেশগুলোকে নথিভুক্ত করে, প্রাসঙ্গিক গবেষণার ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার প্রদর্শন করে।
কিং রাজবংশের শেষের দিকে, পশ্চিমা দেশগুলো চীনের দরজা খুলতে শক্তি প্রয়োগ করে এবং চীনের মূলধারার বুদ্ধিজীবীরা "বিশ্বকে দেখার জন্য তাদের চোখ খুলতে" শুরু করে। এই সময়কালে বাহ্যিক বিশ্বের অবস্থার উপর অনেকগুলো মনোগ্রাফ তৈরি হয়েছিল, যার মধ্যে সবচেয়ে প্রতিনিধিত্বকারী ছিল "ইং হুয়ান ঝি লু"।
চীন প্রজাতন্ত্রের সময়, ড. সান ইয়াত-সেনের সচিব দাই জিতাও-এর "অন জাপান" লিখেছেন (১৯২৮)। সাধারণভাবে বলতে গেলে, একটি দীর্ঘ গবেষণার ঐতিহ্য থাকা সত্ত্বেও, নতুন চীন প্রতিষ্ঠার আগে চীনা বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের বহির্বিশ্ব সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন ও সঞ্চয়ন ছিল স্বতঃস্ফূর্ত, আদিম, বিক্ষিপ্ত ও সরল গবেষণার পর্যায়। তখন কোনো নিয়মতান্ত্রিক জ্ঞান ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়নি এবং কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাও ছিল না।
২.২ চীনের আধুনিক আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন
চীনের আধুনিক আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন শুরু হয়েছিল নতুন চীন প্রতিষ্ঠার প্রথম দিকে। ১৯৫৪ সালের এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত, প্রধানমন্ত্রী ঝৌ এনলাই জেনেভা সম্মেলনে যোগদানের জন্য একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
নতুন চীন প্রথমবারের মতো পাঁচটি প্রধান শক্তির মধ্যে একটি হিসেবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রবেশ করে। একই বছরের ৭ জুলাই, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) কেন্দ্রীয় কমিটির রাজনৈতিক ব্যুরোর বর্ধিত সভায় ঝৌ এনলাইয়ের প্রতিবেদন শোনা যায়। নতুন চীনে পদ্ধতিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন শুরু হয়।
১৯৫৬ সালে, চীনের একাডেমি অব সায়েন্সেসের ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস ইনস্টিটিউট এবং জিয়ামেন ইউনিভার্সিটির নানিয়াং ইনস্টিটিউট ধারাবাহিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। পরবর্তীকালে, অনেকে ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ প্রতিষ্ঠা করে। পরবর্তীকালে, পিকিং ইউনিভার্সিটি, চীনের রেনমিন ইউনিভার্সিটি এবং ফুদান ইউনিভার্সিটি যথাক্রমে ১৯৬৪ সালে আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিভাগ স্থাপন করে। চীনের বিশ্ববিদ্যালয় বিদেশি গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত পর্যায়েরও সূচনা করে।
২.৩ সমসাময়িক চীনের আঞ্চলিক ও দেশীয় গবেষণা
সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময় সংক্ষিপ্ত বিপর্যয়ের সম্মুখীন হওয়ার পর, চীনে আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়নের প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের পর থেকে ব্যাপক অগ্রগতি লাভ করে। ১৯৮০ সালে, চায়না ইনস্টিটিউট অব কনটেম্পোরারি ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয় আঞ্চলিক ও দেশীয় গবেষণা ইউনিট প্রতিষ্ঠা করতে থাকে। একবিংশ শতাব্দীতে, যখন চীন দেশের গবেষণার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ গভীরতর হচ্ছে, তখন আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়নও তাদের শৃঙ্খলাবদ্ধকরণকে ত্বরান্বিত করতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের জরুরি জলবায়ু তহবিল প্রয়োজন: প্রধানমন্ত্রী
১৯৯৯ সালে, চীনের শিক্ষা মন্ত্রণালয় মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞানের নয়টি মূল গবেষণা ভিত্তি স্থাপন করে যাতে আন্তর্জাতিক বিষয় জড়িত থাকে এবং উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে আঞ্চলিক ও দেশীয় অধ্যয়ন সম্পূর্ণ মনোযোগ পায়। পরবর্তীকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০১১ সালে "জাতীয় ও আঞ্চলিক গবেষণা চর্চা ফাউন্ডেশন" প্রকল্প চালু করে এবং ২০১৫ সালে প্রশিক্ষণ ও নির্মাণ পদ্ধতি জারি করে।
৩. চীনের আঞ্চলিক ও দেশীয় গবেষণার বৈশিষ্ট্য
৩.১ নিয়মানুবর্তিতা: শৃঙ্খলা ব্যবস্থা নির্মিত হচ্ছে
নৈতিক সাংবাদিকতা নিশ্চিতের উপায় নিয়ে চীনে শুরু হয়েছে ওয়ার্ল্ড মিডিয়া সামিট
ডিজিটালাইজেশনের যুগে যথাযথ রিপোর্টিং এবং নৈতিক সাংবাদিকতা নিশ্চিত করার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে দক্ষিণ চীনের গুয়াংজুতে জড়ো হয়েছেন বৈশ্বিক মিডিয়া নেতারা।
৫ম ওয়ার্ল্ড মিডিয়া সামিটে ১০১টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের প্রায় ৪৫০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন, যার মধ্যে ১৯৭টি মূলধারার গণমাধ্যমের প্রতিনিধিও রয়েছেন। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য 'বুস্টিং গ্লোবাল কনফিডেন্স, প্রমোটিং মিডিয়া ডেভেলপমেন্ট'।
ইউএনবি ও ঢাকা কুরিয়ারের প্রধান সম্পাদক এনায়েতউল্লাহ খান সপ্তাহব্যাপী সম্মেলনে ২ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ইউএনবির পরিচালক মাসুদ জামিল খানও সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছেন।
সম্মেলনটির সহ-আয়োজক হিসেবে রয়েছে চীনের সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া। যেখানে প্রতিনিধিরা মানব উন্নয়ন ও নিরাপত্তা, নতুন প্রযুক্তিগত সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ, নতুন যুগে গণমাধ্যম ও বাজার এবং অভিন্ন উদ্বেগের অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।
আরও পড়ুন: চীনে ওয়ার্ল্ড মিডিয়া সামিটে ইউএনবি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এনায়েতউল্লাহ খান
চীনে ওয়ার্ল্ড মিডিয়া সামিটে ইউএনবি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এনায়েতউল্লাহ খান
চীনের দক্ষিণাঞ্চলের গুয়াংডং প্রদেশের গুয়াংজুর নানশা বে মেরিনা কনভেনশন সেন্টারে চলমান পঞ্চম ওয়ার্ল্ড মিডিয়া সামিটে দুই সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইউএনবি ও ঢাকা কুরিয়ারের প্রধান সম্পাদক এনায়েতউল্লাহ খান।
শুক্রবার শুরু হওয়া সপ্তাহব্যাপী সামিটে কসমস গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুদ খান তার সঙ্গে রয়েছেন।
ইউএনবি দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড বেসরকারি সংবাদ সংস্থা কসমস গ্রুপের মিডিয়া শাখা।
বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় সংবাদদাতা ও সাংবাদিকদের একটি প্রতিষ্ঠিত নেটওয়ার্ক হিসেবে ইউএনবি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ২০ মিলিয়নেরও বেশি পাঠকের কাছে সংবাদ ও তথ্যের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য উৎস হিসেবে স্বীকৃত।
ইউএনবির প্রতিনিধিরা সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশনে অংশগ্রহণ করেন এবং আগামী দিনের বিভিন্ন সুযোগ ও চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে বৈশ্বিক মিডিয়া আউটলেটের অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়া দেশটির গুয়াংডং প্রদেশের গুয়াংজু শহর এবং ইউনান প্রদেশের কুনমিং শহরে ২-৮ ডিসেম্বর ওয়ার্ল্ড মিডিয়া সামিট আয়োজন করেছে।
আরও পড়ুন: ওয়ার্ল্ড মিডিয়া সামিটে যোগ দিতে গুয়াংজুতে ইউএনবির প্রধান সম্পাদক এনায়েতউল্লাহ খান