বান্দরবান
বান্দরবানে বন্যায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি
টানা চার দিনের বৃষ্টিতে বান্দরবানে বন্যার পানি বেড়ে শহরের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
চট্টগ্রাম-বান্দরবান সড়কের বাইতুল ইজ্জত এলাকায় সড়কের উপর পানি উঠায় বান্দরবানের সঙ্গে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে ভারি বর্ষণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, সতর্ক করতে মাইকিং
এদিকে শহরের জ্ঞানরত্ন বৌদ্ধ বিহার এলাকায় সড়ক ডুবে যাওয়ায় রাঙ্গামাটির সঙ্গে বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
এ ছাড়াও রোয়াংছড়ি, রুমা ও থানছি সড়কে রবিবার থেকেই যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে বলে জিপ-কার-মাইক্রেবাস শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন জানান।
প্রচণ্ড বৃষ্টিতে শহরের বালাঘাটা, ফজর আলী পাড়া, চেয়ারম্যান পাড়া, পুলিশ লাইন এলাকা, ছাইগ্যা মহাজন পাড়া, হট্টিকালচার এলাকা, লালমিয়া চর এলাকা, বাস স্টেশন, হাফেজঘোনা, আর্মিপাড়া, কাশেম পাড়া, স্টেডিয়াম ও কেচিং পাড়া এলাকার জনগণ দুই দিন ধরে পানিবন্দি রয়েছে।
এদিকে, টানা বৃষ্টির কারণে বান্দরবান শহর ও এর আশপাশের এলাকাগুলোতে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরতদের সরে যেতে প্রশাসন ও পৌরসভার পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, বান্দরবানের ৭টি উপজেলায় দুর্গতদের সহায়তায় ১৯৩টি আশ্রয় কেন্দ্রে খোলা হয়েছে। ২০ টন খাদ্যশস্য এবং নগদ ১ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ৪৩টি মেডিকেল টিম স্বাস্থ্য সেবায় কাজ করছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুমেন শর্মা জানান, এ পর্যন্ত পাহাড় ধসে ৬ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এর মধ্যে বান্দরবান শহরের বীর বাহাদুর নগর ও স্টেডিয়াম এলাকায় পাহাড় ধসে আহত দুইজনকে রবিবার রাতে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এদিকে নাইক্ষংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নে খাল পার হতে গিয়ে রবিবার বিকালে মেমপই ম্রো (৩০) নামে এক ব্যক্তি স্রোতে ভেসে গেছে। নিখোঁজ এ ব্যক্তির এখনো সন্ধান মিলেনি।
বন্যার সংবাদ সংগ্রহের জন্য একটি ওয়েব পেইজ খুলেছে জেলা প্রশাসন। সেখানে বলা হয়েছে, বিভিন্ন উপজেলায় পাহাড় ধসে ৭১৮টি বসতবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
প্রবল বর্ষণের ফলে সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে পানি বন্দি মানুষকে উদ্ধারে বিভিন্ন এলাকায় প্রশাসন এবং স্থানীয় উদ্যোগে পর্যাপ্ত পরিমাণ নৌযান নামানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের ২ উপজেলায় পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
বান্দরবানে কেএনএফ’র আইইডি বিস্ফোরণে সেনাসদস্য নিহত, আহত ১
বান্দরবানে ভারি বর্ষণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, সতর্ক করতে মাইকিং
দুই দিনের টানা বর্ষণে বান্দরবানের সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলা শহরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
ইতোমধ্যে শহরের হাফেজঘোনা, বাসষ্টেশন, আর্মি পাড়া ও ইসলাম পুর এলাকার নিচু স্থান ৫ থেকে ৭ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
এদিকে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে পৌর সভা ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
জেলা প্রশাসক মো. মোজাহিদ উদ্দিন জানিয়েছেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় বান্দরবানে ১৯২ টি অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।
এছাড়া লামা উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারী ৮টি পরিবারের ৩৬ জনকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
তিনি জানান, দুপুর থেকে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। এদিকে সাংগু ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদ সীমার কাছ দিয়ে বইছে।
জেলা প্রশাসক আরও জানান, বিপদ মোকাবিলায় প্রসাশন সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছেন। ত্রাণ সমগ্রীর কোন অভাব নেই। প্রশাসনের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দুর্যোগ মোকাবিলায় সকল ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন।
শহরের মৃত্তিকা ও পানি বিভাজিকা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘন্টায় বান্দরবানে ১৬৫ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ক্যান্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজের কেজি থেকে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: উপকূলীয় নিম্নাঞ্চল জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে: আবহাওয়া অধিদপ্তর
সুনামগঞ্জে বন্যায় ১০ গ্রাম প্লাবিত, বৃষ্টি অব্যাহত
৫ ঘণ্টা পর বান্দরবান-থানচির যোগাযোগ স্বাভাবিক
বান্দরবানের নীলগিরি এলাকায় ভূমিধসের কারণে পাঁচ ঘণ্টা পর বান্দরবান-থানচি সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়েছে।
থানচি উপজেলার ইউএনও মো. আবুল মনসুর জানান, ফায়ার সার্ভিস ও বিজিবি সদস্যরা একটি বড় পাথর অপসারণ করেছে।
যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে বলে জানান থানচি উপজেলা ফায়ার স্টেশনের জ্যোতি বড়ুয়া।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের ২ উপজেলায় পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
বান্দরবানে কেএনএফ’র আইইডি বিস্ফোরণে সেনাসদস্য নিহত, আহত ১
বান্দরবানে কেএনএফের সদর দপ্তর দখল, ১ সেনা সদস্য নিহত
বান্দরবানে কেএনএফ’র আইইডি বিস্ফোরণে সেনাসদস্য নিহত, আহত ১
বান্দরবানের রুমায় কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) পুঁতে রাখা ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণে এক সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও এক সেনাসদস্য আহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৬ জুন) দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার ছিলোপি পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করতে গিয়ে তিনি এই বিস্ফোরণের শিকার হন।
নিহত মোন্নাফ হোসেন রাজু (২১) সেনাবাহিনীর একজন সৈনিক।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে কুকি-চিন সন্ত্রাসীদের হামলায় ২ সেনাসদস্য নিহত, আহত ২: আইএসপিআর
আহত সৈনিকের নাম মো. রেজাউল।
জানা যায়, সেনাবাহিনীর টহল দল ছিলোপি পাড়া টিওবি থেকে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণের জন্য পাইনুম পাড়া এলাকায় যাওয়ার পথে ক্যাম্প থেকে আনুমানিক ৪০০ মিটার দূরে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের বিক্ষিপ্তভাবে পুঁতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণের শিকার হন রাজু ও রেজাউল। বিস্ফোরণে তাদের শরীরের বিভিন্ন অংশে স্প্লিন্টারের আঘাতে গুরুতর আহত হয়।
চিকিৎসার জন্য জরুরিভিত্তিতে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারের মাধ্যমে তাদের চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজু মারা যান।
নিহত সেনাসদস্যের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিয়োজিত কার্যক্রমের পাশাপাশি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মানবিক সহযোগিতা প্রদান করতে গিয়ে সেনাসদস্যের এই সর্বোচ্চ ত্যাগ জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ রাখবে।
আরও পড়ুন: বগুড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় সেনাসদস্য নিহত
বান্দরবানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে জেএসএস সন্ত্রাসীদের গোলাগুলি, ১ সেনাসদস্য নিহত
বান্দরবানে কেএনএফের সদর দপ্তর দখল, ১ সেনা সদস্য নিহত
সেনাবাহিনীর একটি টহল দল বান্দরবানের রুমা উপজেলার থেপি পাড়া এলাকায় কেএনএফ (কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট) এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সদর দপ্তরসহ একটি গোপন প্রশিক্ষণ ক্যাম্প দখল করেছে। এই অভিযানে ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসে (আইইডি) বিস্ফোরণে সেনাবাহিনীর এক সদস্য নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কেএনএফের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প এলাকার আশেপাশে বসবাসরত স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে রুমা সেনা জোনের একটি টহল দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। কেএনএফ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের কাছাকাছি পৌঁছালে কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলটি পালিয়ে যায়। তবে ওই সময় কেএনএফের পুতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণে সৈনিক তুজাম (৩০) আহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হেলিকপ্টার দিয়ে তাকে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
সাধারণ জনগণের নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনীর বিশেষায়িত দল এই ধরনের সম্ভাব্য আইইডি চিহ্নিত করে নিষ্ক্রিয় করছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ সৈনিকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা বান্দরবানের রুমা, রোয়ানছড়ি ও থানচি উপজেলার পাহাড়ি জনপদে ক্রমাগত হত্যা, অপহরণ, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এই ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধে কাজ করছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে আইইডি বিস্ফোরণে এক শ্রমিক নিহত
বান্দরবানে কেএনএফ নেতা গ্রেপ্তার
বান্দরবানে আইইডি বিস্ফোরণে এক শ্রমিক নিহত
বান্দরবানের রুমায় ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণে এক নির্মাণ শ্রমিক নিহত এবং আরও এক শ্রমিক আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার রেমাক্রি প্রাংসা ইউনিয়নের বঙ্কুপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. রাশেদ (১৮)চট্টগ্রামের বাঁশখালীর উপজেলার ছনুয়া গ্রামের বাসিন্দা। আহত মো দুলাল (৩৫) ও একই এলাকার বাসিন্দা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বঙ্কু পাড়া এলাকায় থানছি লীক্রী সীমান্ত সড়কের নির্মাণ কাজ করার সময় কেএনএফের পুঁতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই স্থানীদের সহায়তায় হতাহতদের উদ্ধার করে থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়েছে। আহত শ্রমিককে উন্নত চিকিৎসার জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক জানিয়েছেন, ঘটনার পর ওই এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
বান্দরবানে কেএনএফ নেতা গ্রেপ্তার
বান্দরবানে লোঙ্গা খুমী (৪০) নামে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী।
গতকাল শুক্রবার (১৯ মে) বিকালে সেনাবাহিনীর একটি চৌকস টহল দল গোপন অভিযান পরিচালনা করে জেলার রুমা বাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার লোঙ্গা খুমী রুমা উপজেলার ঙাচা খুমীর ছেলে।
জানা গেছে, তিনি দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার রুমা প্রতিনিধি। তাকে গতকাল সন্ধ্যায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি দীর্ঘদিন যাবত সেনাবাহিনীর নজরদারিতে ছিলেন বলে সেনা সূত্রে জানা গেছে। তার সরাসরি সম্পৃক্ততা বিষয়ক কেএনএফ-এর একটি গোপন অফিসিয়াল নথি সম্প্রতি সেনাবাহিনীর হাতে আসলে সেই সূত্র ধরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ইয়াবা জব্দ, কলেজশিক্ষক গ্রেপ্তার
উক্ত গোপন নথিতে কেএনএফের শীর্ষ নেতৃত্বের একটি অফিসিয়াল তালিকা রয়েছে, যার সর্বপ্রথমে প্রেসিডেন্ট হিসেবে রয়েছে নাথান বম-এর নাম এবং পরবর্তীতে অন্যান্য নেতাদের মধ্যে কেএনএফের অ্যাসিস্ট্যান্ট ফরেন সেক্রেটারি হিসেবে লোঙ্গা খুমীর নাম উল্লেখ রয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্র আরও নিশ্চিত করেছে যে, মিডিয়া জগতে কেএনএফের হীন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যেই তিনি গত প্রায় দুই বছর পূর্বে মানবজমিন পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে যোগ দেন।
লোঙ্গা খুমী রুমা উপজেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিএনপির ব্যানারে তিনি গত ২০১৬ সালে রুমা সদর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন।
লোঙ্গা খুমী গত ২০০৮ সালে কুকি-চিন ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (কেএনডিও) এর সহ-সভাপতি হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি কেএনএফের অ্যাসিস্ট্যান্ট ফরেন সেক্রেটারি হিসেবে নিযুক্ত হয়ে এখন পর্যন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন।
তার বিরুদ্ধে রুমা থানায় মামলা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরেই তাকে আদালতে পাঠানো হয় বলে ওসি জানান।
আরও পড়ুন: অবৈধ কারেন্ট জালসহ ১৭ জেলে গ্রেপ্তার
বান্দরবানে কুকি-চিন সন্ত্রাসীদের হামলায় ২ সেনাসদস্য নিহত, আহত ২: আইএসপিআর
বান্দরবানের রুমায় দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় সেনাবাহিনীর ওপর কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) অতর্কিত হামলায় দুই সেনাসদস্য (সৈনিক) নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও দুই সেনাসদস্য (অফিসার)।
আহত দুই সেনাসদস্য বর্তমানে চট্টগ্রাম সিএমএইচ-এ চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে কুকি-চিন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের গুলিতে সেনা ওয়ারেন্ট অফিসার নিহত
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) আজ (বুধবার) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
নিহত দুই সেনাসদস্য হলেন-মো. আলতাফ আহম্মদ এবং মো. তোহিদ। তারা রুমা ২৮ বীর সেনানিবাস সৈনিক।
আহত দুই সেনাসদস্য হলেন-ক্যাপ্টেন ইশতিয়াক আহম্মদ শওকত এবং মেজর মনোয়ার।
তারাও রুমা ২৮ বীর সেনা বাহিনীর অফিসার।
আইএসপিআর জানিয়েছে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বান্দরবানের রুমা উপজেলার অন্তর্গত সুংসুংপাড়া সেনা ক্যাম্পের আওতাধীন জারুলছড়িপাড়া নামক স্থানে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের আস্তানার খবর পেয়ে সুংসুংপাড়া আর্মি ক্যাম্প হতে মেজর মনোয়ারের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি টহল দল মঙ্গলবার (১৬ মে) দ্রুততার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট স্থানে গমনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে ৩ জনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার, আহত ১
উক্ত টহল দলটি জারুলছড়ি পাড়ার নিকটস্থ পানির ছড়ার কাছাকাছি পৌঁছালে কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) সন্ত্রাসীদের ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণ ও অতর্কিত গুলিবর্ষণে পতিত হয়।
এতে দুইজন সেনা অফিসার ও দুই জন সৈনিক আহত হয়।
পরে আহত সেনাসদস্যদের বিমানযোগে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে যাওয়া হয়।
পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত সৈনিকদ্বয় মৃত্যুবরণ করেন এবং আহত অফিসারদ্বয় বর্তমানে চট্টগ্রাম সিএমএইচ-এ চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এর আগে, ১৩ মার্চ, বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলায় সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদী দল কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) সদস্যরা একটি টহল দলের ওপর গুলি চালালে একজন সিনিয়র সেনা ওয়ারেন্ট অফিসার নিহত এবং দুই সৈন্য আহত হয়।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) বান্দরবানের রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার গহীন অরণ্যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অরাজক পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে ইউপিডিএফ-কেএনএফ এর গোলাগুলিতে নিহত ৮
বান্দরবানে ৩ জনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার, আহত ১
বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে তিনজন নিহত এবং একজন আহত হয়েছে। সোমবার দুপুরে উপজেলার দুর্গম পাইক্ষ্যং পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতেরা হলেন-পাথাং বম, নেমথাং বম ও লম লিয়ান বম। এদের সবার বাড়ি রানিন পাড়ায়। এরা তিনজনই ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল চালক বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে কুকি চিনের সংঘর্ষ, নিহত ১
এছাড়া, আহত ব্যক্তির নাম মানসার বম।
স্থানীয়রা জানান, সকালে রনিন পাড়া ও পাইক্ষ্যং পাড়াসহ আশেপাশের এলাকার লোকজন রোয়াংছড়ি বাজারে আসার পথে তাদের ওপর একদল সশস্ত্র অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গুলিবর্ষণ করে।
এসময় মানসার বম নামের ভাড়ায়চালিত এক মোটরসাইকেল চালক আহত হন। পরে তিনজনের লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। বিকালে সেনাবাহিনী ও পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
এদিকে এ ঘটনার পর ওই এলাকার তিনটি পাড়ার দেড় শতাধিক লোকজন আতঙ্কে পালিয়ে নিরাপদ জায়গায় চলে গেছে। ওই এলাকায় সেনাবাহিনী টহল জোরদার করেছে।
বান্দরবানের পুলিশ সুপার মো. তারিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সকালে পাইক্ষ্যং পাড়া এলাকায় গোলাগুলি হয়েছে এমন খবর পেয়ে সেখানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ গেলে সেখান থেকে তিনজনের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে।
তিনি আরও জানান, গত ৭ মে একই এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে আটজন নিহত হয়েছিল। এ ঘটনার এক মাসের মাথায় আবারও তিনজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় এলাকায় জনমনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
পুলিশ সুপার জানান, কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা এখনো জানা না গেলেও স্থানীয়রা বলছেন ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক দলের সশস্ত্র সদস্যরা সকাল থেকে পাইক্ষ্যং পাড়া এলাকায় অবস্থান করে গুলি চালিয়েছে।
উল্লেখ্য, কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) তাদের ফেসবুক পেজে এ ঘটনার জন্য ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিককে দায়ী করেছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে ইউপিডিএফ-কেএনএফ এর গোলাগুলিতে নিহত ৮
বান্দরবানে আগুনে পুড়ল ৩০টি দোকান ও ১৫টি ঘর
বান্দরবানে অশুভ শক্তি প্রতিহত করতে নদী পূজা
যথাযথ ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে অশুভ শক্তিকে প্রতিরোধ করার উদ্দেশ্যে বান্দরবানের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা নদী পূজা সম্পন্ন করেছে।
পূজা উপলক্ষে শনিবার (২২ এপ্রিল) সকালে বান্দরবান রাজবাড়ী পরিবারের আয়োজনে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
আরও পড়ুন: সিলেটের জৈন্তাপুর-জাফলং ঈদে পর্যটক বরণে প্রস্তুত
শোভাযাত্রাটি রাজবাড়ী প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উজানি পাড়া সাঙ্গু নদীর তীরে এসে সমবেত হয়।
শোভাযাত্রায় বান্দরবানের বোমাং সার্কেল চীফের জ্যৈষ্ঠ রাজপুত্র চসিংপ্রু বনি, রাজপরিবারের সদস্য, বিভিন্ন মৌজার হেডম্যান ও কারবারি (পাড়া প্রধান) সহ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পুরুষরা অংশ নেয়। এতে নেতৃত্ব দেন রাজপুত্র।
এ সময় সাঙ্গু নদীর তীরে বটগাছ ও নদীর পূজা করে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা।
এ সময় ভক্তরা মিষ্টান্ন, মোমবাতি ও ধুপ জ্বালিয়ে এবং নদীতে ফুল বিসর্জন দিয়ে দেবতার পূজা করেন।
এছাড়া নতুন বছরে পৃথিবীতে সুখে-শান্তিতে বসবাসের জন্য প্রার্থনা করা হয়।
রাজ পরিবার সূত্রে জানা গেছে, প্রাচীনকালে পাহাড়ি অঞ্চল বান্দরবানে অশুভ ও অদৃশ্য শক্তি প্রভাব বিস্তার করতো। এতে পাহাড়বাসীরা বিভিন্ন সময় নানান ধরনের রোগব্যাধিতে আক্রান্তসহ নানা অসুবিধার সম্মুখীন হতো।
তাই তারা বিশ্বাস করেন অশুভ শক্তির হাত থেকে রেহাই পেতে হলে এই নদী পূজা (ক্ষ্যং ফুহ) পালন করা দরকার। তাই সেই বিশ্বাস থেকেই এ পূজা পালিত হয়ে আসছে।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর বৈশাখ মাসে রাজপরিবারের পক্ষ থেকে এই নদী পূজা উদযাপন করা হয়। এর মাধ্যমে পুরাতন বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণ করে থাকেন বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরের ৪০ গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতর উদযাপন
এবারের ঈদ যাত্রায় কোনো ভোগান্তি নেই: কাদের