ভ্যাকসিন
করোনা: দেশে একদিনে আরও ৬০ মৃত্যু, শনাক্ত প্রায় ৪ হাজার
মহামারি করোনাভাইরাসে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেড়েছে।
বুধবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৯৫৬ জনের শরীরে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে মোট শনাক্ত ৮ লাখ ৩৭ হাজার ২৪৭ জনে পৌঁছেছে।
এছাড়া ভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৬০ জন মারা গেছেন। এনিয়ে দেশে মোট মৃত্যু ১৩ হাজার ২৮২ জনে দাঁড়াল।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনা মোট মৃত্যু সংখ্যা ৩৮ লাখের কাছাকাছি
এর আগে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জনায়, ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে ৫০ জন মারা গেছেন এবং ৩ হাজার ৩১৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ২৩ হাজার ৮০৭ টি। শনাক্তের হার ১৬.৬২ শতাংশ।
নতুন করে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৬৭৯ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৭৫২ জন।
আরও পড়ুন: রামেক হাসপাতালের করোনায় ১২ মৃত্যু
দেশে আন্তর্জাতিক মানের ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট তৈরি করা হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশেই ভ্যাকসিন তৈরি করতে সরকার আন্তর্জাতিক মানের একটি ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট তৈরি করতে যাচ্ছে। এই ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউটে অন্যান্য টিকার পাশাপাশি করোনার টিকাও তৈরি করা হবে।
বুধবার জাতীয় সংসদে টাঙ্গাইল-৬ আসনের সাংসদ আহসানুল ইসলামের এক প্রশের জবাবে প্রধানমন্ত্রী একথা জানান।
তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠায় সরকার দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের সাথে একটি চুক্তি সম্পন্ন করবে। ইতোমধ্যে এই চুক্তির বিভিন্ন দিক বিবেচনা এবং মন্ত্রীসভায় এর অনুমোদনের কার্যক্রম চলছে।’
আরও পড়ুন: সিনোফার্মের দ্বিতীয় দফায় ৬ লাখ টিকা দেশে পৌঁছেছে
শেখ হাসিনা সংসদকে জানান, করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার বিদেশ থেকে করোনার টিকা সংগ্রহের পাশাপাশি বাংলাদেশেও এর উৎপাদনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যেসকল দেশ ইতোমধ্যে করোনার টিকা তৈরি করেছে, সেসকল দেশের সরকারের সাথে তাদের ভ্যাকসিন বাংলাদেশে উৎপাদনের ব্যাপারে আলোচনা চলছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৫ লাখ মানুষ ভ্যাকসিন পাবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
চীন থেকে আসা করোনার ১১ লাখ ভ্যাকসিনের ৫ লাখ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেয়া হবে বলে বুধবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘১১ লাখ যে ভ্যাকসিন আমরা পেয়েছি, সেখান থেকে ৫ লাখ লোককে দেয়া হবে। কারণ আমরা দ্বিতীয় ডোজ হাতে রেখে দেব। এটা আমাদের সকলেরই সিদ্ধান্ত।’
শর্ত পূরণ করলে ‘বঙ্গভ্যাক্সের’ ট্রায়ালের অনুমতি: বিএমআরসি
এদিকে, বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক উৎপাদিত করোনাভাইরাসের টিকা বঙ্গভ্যাক্সের মানবদেহে পরীক্ষা চালানোর অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ (বিএমআরসি)। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমতি পাওয়ার আগে তাদের কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে।
বিএমআরসির পরিচালক অধ্যাপক ডা. রুহুল আমিন বলেছেন, সরাসরি অনুমতি দেয়া হয়েছে বলা যাবে না। তবে শর্ত দেয়া হয়েছে। ভুল ত্রুটি ঠিক করলে আমরা অনুমতি দিয়ে দেব। শর্ত পূরণ করলে অনুমোদন দেয়া হবে।
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৫ লাখ মানুষ ভ্যাকসিন পাবে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
চীন থেকে আসা করোনার ১১ লাখ ভ্যাকসিনের ৫ লাখ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘১১ লাখ যে ভ্যাকসিন আমরা পেয়েছি, সেখান থেকে ৫ লাখ লোককে দেয়া হবে। কারণ আমরা দ্বিতীয় ডোজ হাতে রেখে দেব। এটা আমাদের সকলেরই সিদ্ধান্ত।’
বুধবার (১৬ জুন) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
জাহিদ মালেক বলেন, যারা ভ্যাকসিনের জন্য আগে রেজিস্ট্রেশন করেছেন কিন্তু এখনো পাননি তাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: ফাইজারের টিকা নিবন্ধিত ব্যক্তিরা সিরিয়াল অনুযায়ী পাবেন: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
এছাড়া স্বাস্থ্যকর্মী ও পুলিশ সদস্য, সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থী, সরকারি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষার্থী, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের শিক্ষার্থী, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারি, বিদেশগামী কর্মী, ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছনতাকর্মী ও করোনায় মৃতদের সৎকারে নিয়োজিত কর্মীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেয়া হবে বলে তিনি জানান।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বসবাসরত চীনা নাগরিক এবং এর বাইরেও অন্য দেশের যেসব নাগরিক এখানে কাজ করে যাচ্ছেন, তারা যদি আমাদের কাছে আবেদন করেন, যারা এর আগেও আবেদন করেছেন, তাদেরকেও আমরা দিয়ে যাচ্ছি।
আরও পড়ুন: সিনোফার্ম-ফাইজারের টিকা কার্যক্রম ১৯ জুন থেকে শুরু: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
রাশিয়ার সাথে ভ্যাকসিন কেনার চুক্তি নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা মোটামুটি একটি সমঝোতার পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। এখন আমরা অপেক্ষা করছি, তারা কবে কখন কতটুকু দেবে, এ বিষয়গুলো নিয়ে গত বেশ কয়েকদিন ধরে আলোচনা চলছে।
আরও পড়ুন: পৃথিবীর কোনও দেশই স্বাস্থ্যখাতকে গুরুত্ব দেয়নি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আজও আলোচনা চলেছে। হয়তোবা আজকে আমরা ভালো একটি সিদ্ধান্ত রাশিয়ার কাছ থেকে...যদি পাই, সেটা পাওয়ার পরে আপনারা অবশ্যই জানতে পারবেন।
ভ্যাকসিনের স্বত্ত্ব মওকুফের কথা ভাবছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা
উন্নয়নশীল দেশগুলোকে করোনা মহামারি মোকাবিলায় সহায়তা করার জন্য বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতরা ভ্যাকসিনের স্বত্ত্বসহ অন্যান্য বুদ্ধিবৃত্তিক সুরক্ষা সহজ করার লক্ষ্যে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করেছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত ওই প্রস্তাবনাটির বিরোধিতা করছে ওষুধশিল্পে প্রভাবশালী বিশ্বের ধনী দেশগুলো।
মঙ্গলবার বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার প্যানেলের দু'দিনের বৈঠকের উদ্বোধনী দিনে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের ওপর সাময়িক স্বত্ত্ব মওকুফের জন্য ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা যৌথভাবে একটি সংশোধিত প্রস্তাবনা উত্থাপন করা হয়েছে। প্রস্তাবটি চীন এবং যুক্তরাষ্ট্র সহ বিশ্বের ৬০-এর অধিক দেশের সমর্থন পেয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু সদস্য দেশ এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। ইইউ শুক্রবার একটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে। বিকল্প প্রস্তাবটি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বিদ্যমান বিধিগুলোর ওপর নির্ভর করেই দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফাইজারের পর মর্ডানার ভ্যাকসিনকে সবুজ সংকেত দিল ইউরোপীয় কমিশন
২৭ দেশের সমন্বিত জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন জানিয়েছে, এই বিধিগুলি সরকারকে জরুরি ভিত্তিতে পেটেন্টধারীদের সম্মতি ছাড়াই তাদের দেশের উৎদনকারীদের উৎপাদন লাইসেন্স দেওয়ার অনুমতি দেয়।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে উৎসাহিত এডভোকেসি গ্রুপগুলো এই পরিকল্পনাটিকে সমর্থন দিয়েছে এবং জোর দিয়ে বলেছে, যারা এর বিরোধী, তাদের কথা মতো কাজ করা যাবে না।
আরও পড়ুন: কোভ্যাক্সের সাথে করা চুক্তিকে অগ্রাধিকার দেয়ার আহ্বান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
নোবেল শান্তি পুরষ্কারপ্রাপ্ত সংস্থা ডক্টর্স উইদাউট বর্ডারস অভিযোগ করেছে, গত সোমবার স্বত্ত্ব মওকুফের প্রস্তাব বিলম্বিত করার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন সুইজারল্যান্ড, নরওয়েসহ কয়েকটি দেশকে দায়ী করেছে।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ১৭ কোটি ৩৫ লাখ ছাড়ালো
তবে ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থাগুলির দাবি, স্বত্ত্ব মওকুফের ফলে গবেষকদের এবং উদ্যোক্তাদের বেশ ক্ষতি হতে পারে। পরবর্তীতে তারা এমন কাজে আগ্রহ হারাতে পারেন। তারা মনে করে, ধনী দেশগুলো উন্নয়নশীল বিশ্বের স্বাস্থ্যকর্মীদের ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সাথে ভ্যাকসিন শেয়ার করলে, টিকাদান কার্যক্রম আরও বেগবান হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বরাবরই ভ্যাকসিনের অসম বণ্টনের বিরুদ্ধে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে।
ব্যাপক ভ্যাকসিনেশনের হার বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টের ঝুঁকি কমাতে পারে: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
নতুন ভ্যারিয়েন্টের করোনার প্রকোপ রোধে শতকরা ৮০ শতাংশ ভ্যাকসিনেশন কভারেজ প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার(ডব্লিউএইচও)মুখপাত্র।
ডব্লিউএইচও’র জরুরি কর্মসূচি বিষয়ক প্রধান ডা. মিশেল রায়ান সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ব্যাপক পর্যায়ে ভ্যাকসিনেশন কভারেজের মাধ্যমে এই অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব।’
রায়ান স্বীকার করেছেন যে, সংক্রমণের ক্ষেত্রে ঠিক কতে শতাংশ ভ্যাকসিনেশন কভারেজ প্রভাব ফেলবে সেই ডাটা এখনও পুরোপুরিভাবে স্পষ্ট নয়। তবে এক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ কভারেজ ব্যাপক হারে সংক্রমণের ঘটনাগুলো এড়াতে প্রভাব রাখতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মারিয়া ভ্যান বলেছেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ইতোমধ্যে ৬০টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এটা ব্রিটেনের আল্ফা ভ্যারিয়েন্ট থেকেও বেশি সংক্রমণযোগ্য বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ১৭ কোটি ৩৫ লাখ ছাড়ালো
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিওএইচও) প্রধান টেড্রস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস ইতোমধ্যে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যাতে করেনা ভ্যাকসিন এর প্রাপ্যতা বাড়ানো যায় সে ব্যাপারে জাতিসংঘের ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমে সহায়তার জন্য জি৭ এর আওতাভুক্ত দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন।
এই সপ্তাহের শেষে ইংল্যান্ডে জি৭ নেতাদের সাথে বৈঠকের কথা রয়েছে উল্লেখ করে টেড্রস বলেন, সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ যাতে বিশ্বের প্রতিটি দেশের ১০ শতাংশ মানুষ এবং বছর শেষে প্রতিটি দেশের ৩০ শতাংশ মানুষ যাতে ভ্যাকসিন পায় তার সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে উক্ত নেতারা সহযোগিতা করতে পারে।
তিনি বলেন, এই লক্ষ্য অর্জনে আমাদের জুন-জুলাইয়ে ১০০ মিলিয়ন এবং সেপ্টেম্বর নাগাদ ২৫০ মিলিয়ন টিকা প্রয়োজন।
এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষমতা জি৭ দেশগুলোর রয়েছে বলে ডব্লিওএইচও প্রধান মন্তব্য করেন।
চীনের ‘করোনাভ্যাক’ ব্যবহারের অনুমোদন দিল বাংলাদেশ
চীনের সিনোভ্যাক লাইফ সাইন্স কোম্পানির তৈরি ‘করোনভ্যাক’ ভ্যাকসিন জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
এম/এস ইনসেপ্টা ভ্যাক্সিনের আবেদনের ভিত্তিতে রবিবার এই অনুমোদনের সিদ্ধান্ত জানায় সংস্থাটি। এর আগে গত ৩ জুন ইনসেপ্টা ভ্যাকসিন এটি অনুমোদনের জন্য আবেদন করে।
আরও পড়ুন: চীনা টিকার মূল্য প্রকাশ: পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার
‘করোনভ্যাকের’ বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছে এম/এস ইনসেপ্টা ভ্যাক্সিন লিমিটেড।
প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ব্যবহৃত এই করোনা ভ্যাকসিন ইতোমধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেয়েছে।
ঔষধ প্রশাসনের প্রেরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চীনা কর্তৃপক্ষ গত ৯ ফেব্রুয়ারি এই ভ্যাক্সিনটির অনুমোদন দেয়। বর্তমানে বিশ্বের ২২টি দেশে এই কোভিড-১৯ টিকার ব্যবহার হচ্ছে।
করোনভ্যাক বাংলাদেশে জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদনপ্রাপ্ত করোনার পঞ্চম ভ্যাকসিন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সাথে যৌথভাবে করোনার টিকা উৎপাদনে আগ্রহী চীন
এই ভ্যাকসিনটির দু’টি ডোজ দেয়া হবে। উল্লেখ্য যে, এই ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজের দুই থেকে চার সপ্তাহের মধ্যেই দ্বিতীয় ডোজ দেয়া যাবে।
এর আগে চীন সরকারের উপহার হিসেবে পাঁচ লাখ ডোজ সিনোফার্মের করোনা টিকা গত ১২ মে বাংলাদেশে এসে পৌঁছায়।
ভ্যাকসিন সংকটে চাঁদপুরে করোনার ২য় ডোজ দেয়া স্থগিত
চাঁদপুরে করোনা ভাইরাসের টিকা প্রদান কার্যক্রমের ২য় ডোজের টিকা দেয়া সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। ১৪ হাজার ১২১ জন ২য় ডোজের ভ্যাকসিন এখনও পান নি।
সিভিল সাজর্ন ডা. এম. সাখাওয়াতউল্লাহ সোমবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, করোনা ভাইরাসের ২য় ডোজ টিকা দেয়া সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। যা নোটিশ আকারে সদর হাসপাতালের দেয়ালে সেঁটে দেয়া হয়েছে। ১ম ডোজ যারা নিয়েছেন তাদের মধ্যে ১৪ হাজার ১২১ জন ২য় ডোজের ভ্যাকসিন এখনও পাননি।
আরও পড়ুন: অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা পেতে তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি আরও জানান, এখানে টিকার মজুদ শেষ হয়ে গেছে। টিকা আসলে আবার টিকা কার্যক্রম শুরু হবে। চাহিদা অনুযায়ী দ্বিতীয় ডোজের সরবরাহ না পাওয়ায় ভ্যাকসিন দেয়া সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে গত শনিবার থেকে।
আরও পড়ুন: ভ্যাকসিনের অতিরিক্ত ডোজ অনুদানের আহ্বান ইউনিসেফের
ডা. এম সাখাওয়াতউল্লাহ বলেন, প্রথম ধাপে টিকা নেয়ার ক্ষেত্রে অনেকে অনাগ্রহী ছিলেন। এখন টিকা শেষ হওয়ার পরে টিকা নেয়ার জন্য সকলের মধ্যে আগ্রহ বেড়ে গেছে। টিকার জন্য হাহাকার পড়ে গেছে।
আরও পড়ুন: টিকার জন্য রাশিয়ার সাথে শিগগিরই চুক্তি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
সিভিল সাজর্ন বলেন, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চললে চাঁদপুরের অবস্থা আরও ভয়াবহ হতে পারে। সবাইকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। সবাইকে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
উল্লেখ্য, চাঁদপুরে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ৭২৯ জন। জেলায় এ পযর্ন্ত করোনায় মারা গেছে ১২২ জন। সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ৩৪০ জন।
করোনা ভ্যাকসিন তৈরিতে স্বত্ব উন্মুক্তসহ প্রযুক্তি সহায়তা চায় ঢাকা
স্বল্পোন্নত দেশগুলো যাতে করোনা ভ্যাকসিন এবং জীবন রক্ষাকারী ওষুধ তৈরি করতে পারে সে ব্যাপারে কার্যকরী প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের স্বত্ব উন্মুক্তের আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ.কে. আব্দুল মোমেন।
স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য বাণিজ্য এবং আঞ্চলিক সহায়তা বৃদ্ধির জন্য বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সদরদপ্তরে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়েল অনুষ্ঠানে এই দাবি জানা তিনি।
যদিও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য ইস্তাম্বুল প্রোগ্রাম অফ অ্যাকশন ২০১১ সালে এক দশকের মধ্যে বিশ্ব বাণিজ্যে তাদের অবদান দ্বিগুন করার কথা বলেছিল, কিন্তু ড. মোমেন জানান, দুর্ভাগ্যজনকভাবে গত ১০ বছরে বিশ্ব বাণিজ্যে তাদের অবদান আরও কমেছে।
মন্ত্রী বাণিজ্যের ক্ষেত্রে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর সুবিধার জন্য দক্ষিণ-দক্ষিণ এবং ত্রিদলীয় সহায়তা এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা বাড়ানোর ওপর জোর দেন।
ড. মোমেন চলমান মহামারি এবং স্বল্পউন্নত দেশের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এর প্রভাব উল্লেখ করে বলেন, এসব দেশে ডিজিটাল অবকাঠামোগত সুবিধা বিশেষ করে ই-কমার্সের ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান করা দরকার।
মহামারি চলাকালীন সময়ে স্বল্পউন্নত দেশগুলোর সার্ভিস সেক্টরের আয় ব্যাপক হারে কমে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন যেহেতু বেশিরভাগই পর্যটন খাতের ওপর নির্ভরশীল সে কারণে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর অর্থনীতি এমন ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
ড. মোমেন স্বল্পোন্নত দেশগুলোর কল্যাণে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থার মিটিংয়ে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্কহীন বাধা ও বিভিন্ন সমস্যা দূরীকরণে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলোর দ্রত বাস্তবায়নের দাবি জানান।
এছাড়াও তিনি স্বল্পোন্নত দেশগুলোর করোনা ভ্যাকসিন সহজলভ্য উপায়ে পাওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
তিনি এসব দেশে করোনা ভ্যাকসিনের বিশাল ঘাটতির কথা উল্লেখ্যপূবর্ক দেশগুলেতে জীবনরক্ষাকারী ওষুধ এবং করোনা ভ্যাকসিন তৈরি করার ব্যাপারে আর্থিক এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদানের সুপারিশ করেন।
এছাড়াও তিনি উন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ক্রমবিকাশের ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান এবং এ ব্যাপারে তাদের চলমান সাহায্যের দরকারের বিষয়টি তুলে ধরেন।
করোনা: দেশে বেসরকারি খাতে ভ্যাকসিন উৎপাদনের বিপক্ষে বিশেষজ্ঞরা
স্থানীয় ফার্মাসিউটিক্যাল প্রতিষ্ঠানগুলো করোনার ভ্যাকসিন আমদানি বা উৎপাদন করার ক্ষেত্রে বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছে। তবে দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন বেসরকারি খাত নয়, বরং সরকারের উচিৎ নিজস্ব উদ্যোগে করোনার ভ্যাকসিন সংগ্রহ করা বা উৎপাদন করা। এত ভ্যাকসিনের মান, সাশ্রয়যোগ্যতা ও সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা যাবে।
রাশিয়ার স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিন বাংলাদেশে তৈরির জন্য সরকারকে প্রস্তাব দেওয়া তিনটি প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা পেতে তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বিশ্লেষকরা সরকারকে করোনার ভ্যাকসিন তৈরির জন্য স্বল্প সময়ের মধ্যে ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ (আইপিএইচ) বা রাষ্ট্রায়ত্ত এসেনশিয়াল ড্রাগস্ লিমিটেডকে (ইডিসিএল) আধুনিকায়নের মাধ্যমে করোনার টিকা উৎপাদনের পরামর্শ দিয়েছেন।
বেসরকারি উদ্যোগ
স্বাস্থ্যসেবা অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) মুখপাত্র রোবেদ আমিন জানান, ইনসেপটা, ইউনিহেলথ এবং পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস, এই তিনটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠান রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি ভ্যাকসিন তৈরি করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: টিকার জন্য রাশিয়ার সাথে শিগগিরই চুক্তি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, একই ভ্যাকসিন তৈরির জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রস্তাব সরকারকে দিয়েছে এবং তাদের সক্ষমতা যাচাই করা হবে।
এছাড়া ডিজিএইচএসের এই কর্মকর্তা জানান, আরেক বাংলাদেশি ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থা রেনাটা লিমিটেড মডার্নার কোভিড-১৯ টিকা আমদানির জন্য সরকারের কাছে অনুমতি চেয়েছে এবং এ বিষয়ে আলোচনা চলছে।
আরও পড়ুন: ভ্যাকসিনের অতিরিক্ত ডোজ অনুদানের আহ্বান ইউনিসেফের
এছাড়া সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদনের সম্ভাবনাও যাচাই করছে সরকার।
টিকা উৎপাদনের সক্ষমতা কেমন?
যদিও তিনটি সংস্থা ভ্যাকসিন উৎপাদনের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে, তবে ডিজিএইচএসের প্রাক্তন পরিচালক ডা. বেনাজির আহমেদ বলেছেন, সংস্থাগুলোর এই কাজটি করার ক্ষমতা নিয়ে তার সন্দেহ আছে।
তিনি বলেছেন, “সংস্থাগুলো রাশিয়া বা চীন থেকে প্রচুর পরিমাণে ভ্যাকসিন আমদানি করে, দেশে বোতলজাত বা প্যাকেজিং করে বিপণনের ব্যাবস্থা করতে পারে। তবে প্রচুর পরিমাণে ভ্যাকসিন আমদানির মাধ্যমে চাহিদা মেটাতে অনেক বেশি সময় লাগবে। ভ্যাকসিন উৎপাদনের অনুমতি পাওয়ার জন্য আবেদন করা সংস্থাগুলির সক্ষমতা গুরুত্বের সাথে মূল্যায়ন করা উচিত সরকারের।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রাক্তন উপদেষ্টা প্রফেসর মোজাহেরুল হকও মনে করেন যে, এই সংস্থাগুলোর ভ্যাকসিন উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সকল সুবিধাদির ঘাটতি রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠানগুলো অবশ্যই খুব ভালো মানের ওষুধ উৎপাদন করে। তবে করোনার ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি এবং সুবিধা নেই তাদের কাছে। যেহেতু কিছু সংস্থা করোনার ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছে, তাই তাদের সক্ষমতা সঠিকভাবে পরীক্ষা করা উচিত।’
ভ্যাকসিনের অতিরিক্ত ডোজ অনুদানের আহ্বান ইউনিসেফের
ভ্যাকসিনের অতিরিক্ত ডোজ ভাগ করে নেওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিটা ফোর।
তিনি বলেন, সদস্য দেশগুলো কোভ্যাক্স অ্যাডভান্স মার্কেট কমিটমেন্টকে সম্পূর্ণ তহবিল সরবরাহ করার জন্য যখন টেকসই পরিকল্পনা করবে, তখনই বিশ্ব টিকাদান কার্যক্রম সফল হবে।
"সোমবার জুন মাসের জি-৭ সম্মেলনে জি-৭ দেশগুলো অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি পর্বের এক সভায় হেনরিটা ফোর এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘তাৎক্ষণিকভাবে অতিরিক্ত ডোজ ভাগ করে নেওয়া অন্যতম প্রয়োজনীয় এবং জরুরী পদক্ষেপ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এটি এখনই প্রয়োজন।’
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাপী করোনা ভ্যাকসিন বিতরণে ইউনিসেফের সাথে কাজ করবে এমিরেটস
তিনি ভ্যাকসিন উৎপাদনের সক্ষমতা বৃদ্ধির পক্ষে এবং প্রযুক্তিগত স্থানান্তরে সমর্থন করার বিষয়েও কথা উল্লেখ করেন।
ফোর বলেছেন, কোভ্যাক্স সামনের দিনগুলোতে এর ৬৫ মিলিয়নতম ডোজ সরবরাহ করবে। তবে এটি কমপক্ষে ১৭০ মিলিয়নতম হওয়া উচিত ছিল।
তিনি বলেন, ‘জি-৭ এর নেতারা পরের মাসে যুক্তরাজ্যে একত্রিত হবে।এসময়ে করেনার চলমান দ্বিতীয় ঢেউ ভারত এবং এর দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশজুড়ে প্রকোপ বৃদ্ধি পেতে পারে। এমনটা হলে তখন ভ্যাকসিন ঘাটতি হবে ১৯০ মিলিয়ন ডোজ।"
আরও পড়ুন: দেশে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনে টিকা পেয়েছে ২ কোটি ৮ লাখ শিশু: ইউনিসেফ
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতের মারাত্মক ভ্যারিয়েন্টটি বুঝিয়েছে যে সামনের দিনগুলোতে স্বাস্থ্য নির্দেশনা পালন না করলে কি হতে পারে, আর এ বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। ভারতের পরিস্থিতি দুঃখজনক হলেও, এটা নতুন নয়। ভারতের মতো নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিলের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা করোনার সাথে লড়াই করছে।
তার মতে, এসময়ে, বাচ্চাদের এবং পরিবারের জন্য অতিরিক্ত ব্যয় করতে হবে।
ফোর বলেছেন, ‘ভাইরাসটি যতবেশি ছড়াচ্ছে ততবেশি এর মারাত্মক বা সংক্রামক রূপগুলি বেড়িয়ে আসছে।’
আরও পড়ুন: স্কুল আরও এক বছর বন্ধের ক্ষতি শিশুরা বইতে পারবে না: ইউনিসেফ
এই বৈশ্বিক মহামারি থেকে রক্ষা পাবার একমাত্র সহজ পন্থা হচ্ছে বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন এবং যাবতীয় চিকিৎসা ব্যবস্থার সমবণ্টন হওয়া।
ফোর জানান, কোভ্যাক্স ভ্যাক্সিনের সমবণ্টনের জন্যই কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু কোভ্যাক্স প্রয়োজনীয় ভ্যাক্সিন সরবরাহ পাচ্ছে না।
ভারত ভ্যাকসিন উৎপাদনের একটি বৈশ্বিক কেন্দ্র। করোনার প্রকোপে ভারতের বেহাল দশার কারণে ভ্যাকসিন উৎপাদন মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। তাই কোভ্যাক্স প্রয়োজনীয় ভ্যাক্সিন সরবরাহ পাচ্ছে না।
মে মাসের শেষের দিকে নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের দেশগুলিতে ১৪০ মিলিয়ন ডোজ বিতরণের কথা থাকলেও, কোভ্যাক্স সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারছে না। এছাড়া জুনে আরও ৫০ মিলিয়ন ডোজ বিতরণেও ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
এসময় ভ্যাকসিন এর ক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদ, সীমিত উৎপাদন ক্ষমতা এবং তহবিলের অভাবের কারণে করোনা ভ্যাকসিনের বিতরণের সময়সূচি পিছিয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন ইউনিসেফের এই কর্মকর্তা।
ব্রিটিশ সংস্থা এয়ারফিনিটি পরিচালিত এক জরিপে বলা হয়, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী সাতটি দেশ এবং ইইউ তাদের জুন, জুলাই এবং আগস্টের জন্য মজুত করা মাত্র ২০ শতাংশ টিকা একেবারে দরিদ্র দেশগুলোর জন্য কোভ্যাক্সের টিকাদান কর্মসূচির সাথে ভাগ করে বিশ্বের ভ্যাকসিনের ঘাটতি পূরণ করতে সহায়তা করতে পারে।
ফোর বলেন, ‘কিছু জি-৭ সদস্যের কাছে অন্যের চেয়ে বেশি সরবরাহ রয়েছে ভ্যাকসিনের। আবার কারও কারও ঘরোয়া উৎপাদন রয়েছে। তৎক্ষণাৎ সরবরাহকৃত অতিরিক্ত ডোজ সমভাবে বণ্টন করার সম্মিলিত প্রতিশ্রুতি না নিলে পরবর্তীতে যেকোনও দেশ বিশ্বব্যাপী কোভিড আক্রান্তের ক্ষেত্রে অন্যান্যদের মত হটস্পটে পরিণত হতে পারে।’
যুক্তরাষ্ট্রের কাছে জরুরি ৪০ লাখ ভ্যাকসিন চায় বাংলাদেশ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন বলেছেন, সরকার জরুরি ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ৪০ লাখ ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সরবরাহ চেয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ মে) নিজ কার্যালয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলারের সাথে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রয়োজনের অধিক পুরো বিশ্বব্যাপী ৬ কোটি ডোজেরও অধিক অক্সফোর্ডের করোনা ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে।
জরুরি ভিত্তিতে ৪০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন চেয়েছি, উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আরও এক থেকে ২ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন চাইব।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সরকার চাইছে যেকোনও উপায়েই হোক ভ্যাকসিন সংগ্রহের মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে।
আরও পড়ুন: অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা পেতে তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে আলোচনায় ড. মোমেন জানতে চান, যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে কোনো ভ্যাকসিন সহায়তা দিয়েছে কিনা। জবাবে রাষ্ট্রদূত জানান, তারা এখনও তেমন কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।
মন্ত্রী জানান, মার্কিন সরকারের ভ্যাকসিন রপ্তানির জন্য খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়, যা বেশ সময়সাপেক্ষ। কিন্তু বাংলাদেশের খুব জরুরি ভিত্তিতেই ভ্যাকসিন প্রয়োজন।
এর আগে বুধবার (৫ মে) পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এবং অভিবাসী ভারতীয়রা মার্কিন সরকারের কাছে বিভিন্নভাবে ভারতকে ভ্যাকসিন সহায়তা দেয়ার জন্য দাবি জানাচ্ছে। মন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বাংলাদেশি কমিউনিটিকেও একই দাবি জানানো আহ্বান জানান।
এর আগে বাংলাদেশ সফরে এসে ভ্যাকসিন সহায়তা দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনেরে বিশেষ দূত জন কেরি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন জানান, ভ্যাকসিন সংগ্রহের ব্যাপারে আমরা সবদিক বিবেচনা করছি এবং সকল উৎস থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের ব্যবস্থা করছি। ইতোমধ্যেই রাশিয়া ও চীনের সাথে এই নিয়ে আলোচনা এগিয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করে বলেন, চীন সরকার ঈদের আগেই উপহার হিসেব ৫ লাখ ডোজ করোনার টিকা উপহার হিসেবে প্রেরণের চেষ্টা করছে। আগামী ১০ থেকে ১২ মে’র মধ্যে এসকল ভ্যাকসিন বাংলাদশে এসে পৌঁছাতে পারে।