মিয়ানমার
বিদ্রোহ রুখতে মিয়ানমারে গ্রাম পোড়ালো জান্তা বাহিনী
মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলকারী জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও আন্দোলন রুখতে পুরো একটি গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। এমনটাই জানানো হয়েছে কয়েকটি স্বাধীন গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।বুধবার দেশটির কেন্দ্রে অবস্থিত মাগউয়ি বিভাগের পাউক শহরতলীর কিনমা গ্রামটি প্রায় পুরোটাই আগুনে দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় সেনা সদস্যরা।
আরও পড়ুন: আসিয়ান নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে মিয়ানমারের জান্তা প্রধান
তবে দেশটির সরকার নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমের খবরে বলা হয় সশস্ত্র জঙ্গীরা এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। উল্লেখ্য, সরকার এবং বিরোধীপক্ষ উভয়েই একে অপরকে ঘটনার জন্য দায়ী করে জঙ্গী হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: নিকট ভবিষ্যতে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন জটিল হয়ে উঠছে: জাতিসংঘ
গত ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচতি অং সাং সুকি সরকারের ক্ষমতা দখল করার পর থেকেই মিয়ানমারে অহিংস জান্তা বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। কিন্তু জান্তা সরকারের হত্যা ও নির্যাতনের মুখে এই আন্দোলন সহিংস হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বন্ধে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান ফর্টিফাই রাইটসের
মিয়ানমারের কিনমা গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়ার মাধ্যমে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বর্বরতা আরও গভীরবাবে ফুটে উঠেছে। দেশব্যাপী জান্তা সরকারের প্রতি বিদ্রোহ দমনের লক্ষ্যে সামরিক বাহিনীর বর্বরতা চালিয়েই যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিনমা গ্রামের অনেক ছবিতে দেখা যায়, পুরো গ্রাম জ্বলে গেছে। আর কিছু গৃহপালিত পশুর পুড়ে যাওয়া কঙ্কাল পড়ে আছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘকে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের আহ্বান বাংলাদেশের
এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রামটিতে প্রায় এক হাজার লোকের বসবাস ছিল। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, মোট ২৩৭ টি বাড়ির মধ্যে বর্তমানে শুধু ১০টি ঘর টিকে আছে।
আসিয়ান নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে মিয়ানমারের জান্তা প্রধান
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ান নেতাদের সাথে জাকার্তায় এক জরুরি বৈঠকে অংশ নিয়েছেন মিয়ানমারের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং। শনিবার (২৪ এপ্রিল) আসিয়ান নেতাদের সম্মেলনে যোগ দিতে জাকার্তা পৌঁছান এই সেনা কর্মকর্তা।
ধারণা করা হচ্ছে বৈঠকে, আসিয়ান নেতারা সু চির মুক্তি ও রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি এবং দেশটিতে চলমান গণবিক্ষোভে সেনাবাহিনীর হত্যাকাণ্ড বন্ধের দাবি জানাবেন।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বন্ধে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান ফর্টিফাই রাইটসের
তবে আসিয়ান ছয়টি দেশের প্রধান ও তিনটি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সাথে ক্ষমতা দখলকারী এই জেনারেলের দুই ঘণ্টার বৈঠকে তেমন ফলপ্রসূ কিছু হবে না মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলের পর জান্তা সরকার প্রধানের এটাই প্রথম বিদেশ সফর। তার এই সিদ্ধান্তকে মিয়ানমার সংকট নিরসনে আসিয়ান জোটের বড় ভূমিকা রাখার এটাই সুযোগ বলে মনে করছে বিশ্লেষকরা।
সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলনের বিষয়ে বলেন, “এখন সংকট সমাধান না করা গেলে মিয়ানমার, আসিয়ান ও এই অঞ্চলের জন্য জটিল সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।”
ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা পরবর্তী ধাপে সম্মিলিতভাবে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে পারি যাতে মিয়ানমারের মানুষ বর্তমান অচল অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারে।”
আরও পড়ুন: ‘মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান ব্যর্থ করতে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করবে জাতিসংঘ’
এদিকে সংবাদ সংস্থা এপিকে এক কূটনৈতিক জানান, জান্তা প্রধান মিন অং হ্লেইং প্রশাসন রাজি হলে ব্রুনাই এর প্রধানমন্ত্রী ও আসিয়ানের বর্তমান সভাপতি হাসান আল বলকিয়াহ মিয়ানমার সফর করবেন। উক্ত সফরে তার সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন আসিয়ান মহাসচিব লিম জক হই। আসিয়ান এই প্রতিনিধি দল মিয়ানমার সফরের মাধ্যমে সু চি এবং জেনারেল হ্লেইং এর সাথে আলোচনা এবং সমঝোতার চেষ্টা করবেন।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আঞ্চলিক, বহুপাক্ষিক উদ্যোগ চায় ঢাকা
বাংলাদেশের জন্য রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এখনও একটি বাধ্যতামূলক অগ্রাধিকার হিসেবে থাকায় এ বিষয়ে আঞ্চলিক বা বহুপাক্ষিক উদ্যোগকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা উচিত বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, 'মানবাধিকার ইস্যুতে কাজের মাধ্যমে কানাডা এই ধরনের উদ্যোগে নেতৃত্ব দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে। বাংলাদেশ সর্বদা এই দিক থেকে কানাডা এবং অন্যান্য অংশীদারদের সাথে কাজ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।'
আরও পড়ুন: উখিয়ায় অগ্নিকাণ্ডে ৩ রোহিঙ্গা দোকান কর্মচারী নিহত
ড. মোমেন মঙ্গলবার রাতে `রোহিঙ্গা সংকট ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া: প্রত্যাবাসন ও জবাবদিহিতা উদ্যোগে কানাডার ভবিষ্যত ভূমিকা' শীর্ষক ওয়েবিনারে এই মন্তব্য করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারাও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সুরক্ষা ও মর্যাদার সাথে দেশে ফিরতে উদগ্রীব হয়ে আছে।
তিনি বলেন, ‘এই দুর্দশাগ্রস্ত মানুষদের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়িত করা আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব। কেবল আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই স্থগিত প্রত্যাবাসন বাস্তবে রূপ নিতে পারে।'
আরও পড়ুন: ৬ষ্ঠ দফায় ভাসানচরের পথে ২৪৯৫ রোহিঙ্গা
কনফ্লিক্ট অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স রিসার্চ ইনস্টিটিউট কানাডার সহযোগিতায় কানাডায় বঙ্গবন্ধু সেন্টার ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ (বিসিবিএস) রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে প্রথম ওয়েবিনারের আয়োজন করে।
কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ডা. খলিলুর রহমান, সিনেটর মেরিলো ম্যাকফেডরান সিএম, হিদার ম্যাকফারসন, ব্র্যাড রেডেকপ, অধ্যাপক জন প্যাকার এবং ইন্টারন্যাশনাল কনফ্লিক্ট রেজোলিউশনের অধ্যাপক নিউবার্গার-জেসিন প্রমুখ এই ওয়েবিনারে বক্তব্য দেন।
অধিবেশনটির মডারেটর ছিলেন সিআরআরসি’র নির্বাহী পরিচালক ড. কাওসার আহমেদ।
আরও পড়ুন: উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ আগুন
শিগগরই সমাধান না হলে রোহিঙ্গা সংকট বিস্তৃত আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা ইস্যুতে পরিণত হতে পারে বলে বক্তারা জানান।
তারা বলেন, কানাডাকে অবশ্যই মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখতে, কার্যকর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং মিয়ানমারে বিনিয়োগ বন্ধ এবং আইসিজে মামলা সমর্থন করার বিষয়ে বাস্তব 'পদক্ষেপ' এবং প্রকৃত 'আগ্রহ' সহ পদক্ষেপ নিতে হবে।
তারা আরও বলেন, জরুরি ভিত্তিতে বহুপাক্ষিক পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন বাস্তবায়নে হস্তক্ষেপ করতে সমমনাদের সক্ষম করবে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে শ্রীলঙ্কার সক্রিয় সহযোগিতা কামনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
তারা জানান, তাদের পার্লামেন্টে কানাডার সরকারকে আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরাম (এআরএফ), যেখানে বাংলাদেশ ও কানাডা উভয়ই সদস্য, এর মাধ্যমে সমঝোতামূলক কূটনৈতিক সমাধানসহ সংকট নিরসনে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা নেয়ার অনুরোধ করে একটি যৌথ বিবৃতি দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তারা বলেন, 'আচেহ মডেলটির সম্ভাবনা খোঁজার প্রয়োজন রয়েছে যা মিয়ানমারের অভ্যন্তরে একটি কার্যকর সম্মেলনের অধীনে মিয়ানমারে সংখ্যালঘুদের অধিকারের নিশ্চয়তা দেবে।'
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না সৌদি আরব: শাহরিয়ার
বক্তারা বলেন, ক্যাম্পে বেড়ে ওঠা হাজার হাজার রোহিঙ্গা শিশুদের 'হারানো প্রজন্ম' হিসেবে শিক্ষার চাহিদাও হারাতে হতে পারে।
ভাসানচর পৌঁছেছেন আরও ১৭৫৯ রোহিঙ্গা
নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের পঞ্চম ধাপের দ্বিতীয় পর্যায়ে বৃহস্পতিবার আরও এক হাজার ৭৫৯ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী ভাসানচরে পৌঁছেছেন।
ভাসানচরের পথে ১ হাজার ৭০ জন রোহিঙ্গা
পঞ্চম ধাপে এক হাজার ৭০ জন রোহিঙ্গা নিয়ে ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা হয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ছয়টি জাহাজ।
টেকনাফে পানি সরবরাহ উন্নয়নে জাপান ও ইউএনএইচসিআরের সহায়তা
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার স্থানীয় ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য পানি সরবরাহ ও বণ্টন ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে জাপান সরকার এবং জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) প্রায় ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা প্রদানের একটি চুক্তি সম্পাদন করেছে।
মিয়ানমারে ১২০০ রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা মালয়েশিয়াকে স্থগিত করার আহ্বান
মিয়ানমারের ১২০০ নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা মালয়েশিয়া সরকারের স্থগিত করা উচিত বলে শুক্রবার মত দিয়েছে ফর্টিফাই রাইটস এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বন্ধে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান ফর্টিফাই রাইটসের
মানবাধিকার সংস্থা ফর্টিফাই রাইটস জানিয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা নির্বিচারে সাংবাদিকদের আটক করেছে, অনেককে আত্মগোপনে থাকার হুমকি দিয়েছে এবং প্রস্তাবিত আইন কার্যকর করেছে যা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বড় বাধা।
ভাসানচরে পৌঁছেছে ২০১৪ রোহিঙ্গা, উখিয়া থেকে চট্টগ্রামের পথে আরও ৮৭৯ জন
রোহিঙ্গা হস্তান্তরের চতুর্থ দফার প্রথমদিনে ২ হাজার ১৪ জন চট্টগ্রাম হয়ে সোমবার নোয়াখালীর ভাসানচরে পৌঁছেছেন।
সু চিকে আটক রাখার মেয়াদ বাড়ল
মিয়ানমারের সামরিক নেতারা ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির আটকের মেয়াদ বাড়িয়েছে। তার রিমান্ডের সময় সোমবার শেষ হওয়ার কথা ছিল। চলতি মাসের সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে লোকজনের যে বিক্ষোভ চলছে তার অন্যতম দাবি হলো সু চির মুক্তি।