মিয়ানমার
প্রত্যাবাসন ঠেকাতেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হত্যাকাণ্ড: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
প্রত্যাবাসন ঠেকাতেই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পরিকল্পিতভাবে একের পর এক অঘটন ঘটানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, ‘অনেক লোক মিয়ানমারে ফেরত যেতে চায় না, তাদের স্বার্থে আঘাত লাগে, তারা হয়তো রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’
শুক্রবার সকালে সিলেটে একটি অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তবে, এ বিষয়ে এখনও বিস্তারিত কিছু জানেন না জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা পুরো বিষয়টা খোঁজখবর নিচ্ছি।
পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ৭
মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাইরে যাতে আইনশৃঙ্খলা আরও উন্নত করা যায়, সে বিষয় নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার একটা সভা হয়েছে। এরপরও আজকে এতো বড় দুর্ঘটনা ঘটে গেল। ব্রাশফায়ার করে ৭ জনকে হত্যা করা হলো, এটা খুবই আতঙ্কের বিষয়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন লোকে বলছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদকের ব্যবসা ও অস্ত্র বাণিজ্য হয়।
‘আমরা এসব নিয়ে আলোচনা করেছি। আমার প্রস্তাব হলো, এই ড্রাগ ও অস্ত্র পুরোপুরি বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনে গুলি ছুঁড়তে হবে,’ বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এদিকে, তিস্তার পানি হুট করে বাংলাদেশে ছেড়ে দেয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে আমাদের স্বরাষ্ট্রসচিব ভারতীয় হাইকমিশনের সাথে আলাপ করবেন।
তিনি বলেন, পানির বিষয়টি ভারত আগে আমাদেরকে জানিয়েছিল কি না, আমি জানি না। তবে একাধিক বিষয় নিয়ে হাইকমিশনারের সাথে আলাপ-আলোচনা হবে। আমাদের দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, সরকারি সম্পর্ক খুবই দৃঢ়।
পড়ুন: কলিন পাওয়েল ছিলেন একজন মহান নেতা ও যোদ্ধা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
শিশুদের সুন্দর জীবন নিশ্চিত করতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
মিয়ানমার সীমান্তে অস্ত্র-মানবপাচার রোধে প্রয়োজনে গুলি চালানো হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘মিয়ানমার থেকে অবৈধ অস্ত্র, মাদক, মানবপাচার ও চোরাচালান রোধে প্রয়োজনে সীমান্তে গুলি চালানো হবে।’
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে সকল ধরনের চোরাচালান বন্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা হয়েছে।’
মঙ্গলবার সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভারত সরকারের উপহারের দুটি অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: মুহিবুল্লাহ হত্যায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘মায়ানমার ও বাংলাদেশ সীমান্তে গুলি না চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধে এখন থেকে গুলি চালানো হবে। তাহলেই মানবপাচার, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান বন্ধ হবে। তবে এবিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে।’
ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১০ সালে বিমানবন্দর-বাদাঘাট বাইপাস সড়ক উন্নয়নের প্রকল্প গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু এখনো শেষ হয়নি। ১২ বছরে ১২ কিলোমিটার রাস্তার কাজ হয়নি। এটা সংশ্লিষ্টদের জন্য লজ্জার। এই ব্যর্থতার জন্য আমাদের জন্য দুঃখের, যারা এই রাস্তা ব্যবহার করছেন তাদের জন্যও দুঃখের। আর যারা এই কাজের দায়িত্বে (সড়ক ও জনপথ কর্মকর্তারা) ছিলেন তাদের জন্য লজ্জার। লজ্জায় তাদের চাকরি ছেড়ে দেয়া উচিত।’
উন্নয়ন কাজে দীর্ঘসূত্রিতা ও সংশ্লিষ্টদের গাফিলতিতে এবং সিলেটে বিশেষায়িত মা ও শিশু হাসপাতাল ২০০ বেডে উন্নিত না করে শত কোটি টাকা ফেরত দেয়ায় ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নতুন বই ‘শেখ হাসিনা: বিমুগ্ধ বিস্ময়’
তিনি বলেন, ‘প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালকে ২০০ বেডের বিশেষায়িত মা ও শিশু হাসপাতাল করার জন্য প্রকল্প গ্রহণ করেছিলেন। এজন্য ১১০ কোটি টাকাও বরাদ্দ দিয়েছিলেন। কিন্তু শামসুদ্দিন হাসপাতালকে বিশেষায়িত হাসপাতালে উন্নিত করা হয়নি। ১শ’ শয্যা থেকে দুইশ’ শয্যায় উন্নিত করা হয়নি।’
তাছাড়া ২শ’ শয্যার হাসপাতাল না করে ১শ’ শয্যা সংস্কার করে বরাদ্দ থেকে ১০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। কাজ না করে ফেরত দেয়া হয় ১শ’ কোটি টাকা। সংশ্লিষ্টরা সিলেটের স্বাস্থ্যসেবার জন্য বরাদ্দকৃত টাকা নষ্ট করেছেন বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘২শ’ শয্যার মা ও শিশু হাসপাতালের জন্য ডিজাইন রেডি ছিল, অর্থ বরাদ্দও ছিল। কিন্তু শুধুমাত্র সংশ্লিষ্টদের গাফিলতির কারণে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়নি। কষ্ট করে টাকা আনার পর কাজ না হওয়া খুবই দুঃখজনক। এর জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া উচিত।’
আরও পড়ুন: ১২ বাংলাদেশি মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে পৌঁছেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার বিক্রম দ্বোরাইস্বামীসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। এছাড়া সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ ও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরীসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মুহিবুল্লাহ হত্যা: ২ জনের ৩ দিনের রিমান্ড
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় দুজনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রবিবার (৩ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ আদালতে রিমান্ড শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
এর আগে কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার মোহাম্মদ সেলিম ওরফে লম্বা সেলিম ও শওকত উল্লাহকে আদালতে নেয়া হয়।
কক্সবাজার কোর্ট পরিদর্শক চন্দন কুমার চক্রবর্তী জানান, শনিবার (২ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মোহাম্মদ সেলিম ও শওকত উল্লাহকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে সোপর্দ করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। এর প্রেক্ষিতে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পড়ুন: মুহিবুল্লাহ হত্যায় গ্রেপ্তার ৪
গত বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা মুহিবুল্লাহর নিজ অফিসে পাঁচ রাউন্ড গুলি করে। এ সময় তিন রাউন্ড গুলি তার বুকে লাগে। খবর পেয়ে এপিবিএন সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ‘এমএসএফ’ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মুহিব্বুল্লাহ হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত চার জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উখিয়ার কুতুপালং ৭ নম্বর ক্যাম্পের সি ব্লকের নুর বশরের ছেলে মোহাম্মদ সেলিমকে গ্রেপ্তার করে। শুক্রবার দিবাগত রাতে রোহিঙ্গা জিয়াউর রহমান ও আব্দুস সালামকে ক্যাম্প থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। অপরদিকে উখিয়া থানা পুলিশ শনিবার বিকালে কুতুপালং তিন নম্বর ক্যাম্পের রহিম উল্লাহর ছেলে শওকত উল্লাহকে গ্রেপ্তার করে উখিয়া থানা পুলিশ।
পড়ুন: মুহিবুল্লাহ হত্যায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রোহিঙ্গা নেতা হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে তদন্তের দাবি জাতিসংঘের
উখিয়ায় শীর্ষ রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহকে (৫০) গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উখিয়া কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় ইষ্ট-ওয়েস্ট ১নং ব্লকে তার অফিসে এ ঘটনা ঘটে। মুহিবুল্লাহ আরকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিচ এন্ড হিউম্যান রাইট সংগঠনের চেয়ারম্যান ছিলেন। এ ঘটনায় রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়েছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্বরত ১৪নং ‘এপিবিএন’র পুলিশ সুপার নাইমুল হক জানিয়েছেন, ‘বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা মুহিবুল্লাহর নিজ অফিসে ৫ রাউন্ড গুলি করে। এসময় ৩ রাউন্ড গুলি তার বুকে লাগে। এতে সে ঘটনাস্থলে পড়ে যায়। খবর পেয়ে এপিবিএন সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ‘এমএসএফ’ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। পরে উখিয়া থানা পুলিশকে মৃতদেহটি হস্তান্তর করে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্জুর মোর্শেদ বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ইয়াবার চালান জব্দ, ১২ রোহিঙ্গাসহ ১৪ চোরাকারবারি আটক
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ চায় ঢাকা
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: আইসিআরসির সক্রিয় ভূমিকা চায় ঢাকা
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: আইসিআরসির সক্রিয় ভূমিকা চায় ঢাকা
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেড ক্রসকে (আইসিআরসি) আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
সম্প্রতি নিউইয়র্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের সাথে আইসিআরসির সভাপতি পিটার মাউরার সাক্ষাতে এ আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গারা যেন মর্যাদার সাথে স্বদেশে ফিরে যেতে পারে, সেই লক্ষ্যে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে রাখাইন রাজ্যে আইসিআরসিকে আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে।’
এ সময় নিজ দেশে নির্যাতানের শিকার পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় আইসিআরসি সভাপতি বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী এই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করেন তিনি।
কক্সবাজার জেলা এবং নোয়াখালীর ভাসানচরে মোট ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।
পড়ুন: করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শেখ হাসিনার ছয় প্রস্তাব
এদিকে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিশ্ব সম্প্রদায়কে দ্রুত উদ্যোগী হওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২৪ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তিনি বলেন, ‘আগেও বলেছি, আবারও বলছি- রোহিঙ্গা সংকটের সৃষ্টি মিয়ানমারে, সমাধানও রয়েছে মিয়ানমারে। রাখাইন রাজ্যে তাদের মাতৃভূমিতে নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমেই কেবল এ সংকটের স্থায়ী সমাধান হতে পারে। এ জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই গঠনমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, আসিয়ানের নেতারা বাস্তুচ্যূত মিয়ানমার নাগরিক ইস্যুতে গৃহীত প্রচেষ্টাকে আরও বেগবান করবেন। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিতকরণে গৃহীত সকল কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করতে হবে।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট: বিশ্ব সম্প্রদায়ের দ্রুত উদ্যোগ চান শেখ হাসিনা
সম্ভাবনাময় খাতে মার্কিন বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: মস্কোর সহযোগিতা চায় ঢাকা
মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সেদেশে প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে রাশিয়ার সহযোগিতা চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।
রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাশিয়ার নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার ভিকেনতেভিচ মান্তিতস্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাতকালে এ আহ্বা জানান। এসময় তিনি রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশে স্বাগত জানান।
মিয়ানমারের ‘উদ্যোগের অভাব’ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ‘অপর্যাপ্ত পদক্ষেপের’ কারণে গত চার বছরে কোন প্রত্যাবাসন না হওয়ায় বতর্মানে কক্সবাজার ও নোয়াখালীর ভাসানচরে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে।
আরও পড়ুন: নতুন বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ‘রোহিঙ্গা ইস্যু’ এজেন্ডায় থাকবে: ইইউ
রাশিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের বিশেষ সম্পর্কের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে এবং যুদ্ধপরবর্তী দেশ গঠনে রাশিয়ার অবদান বাংলাদেশ কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে। স্বাধীনতার পরপরই তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে ১৯৭২ সালের মার্চ মাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাশিয়া সফর করেন এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সাহায্যের জন্য রাশিয়ার সরকার এবং জনগণকে কৃতজ্ঞতা জানান।
এসময় বাংলাদেশ-রাশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনে রাশিয়ার আগ্রহের কথা রাশিয়ার নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত পুনঃব্যক্ত করলে উভয় দেশই অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারে বলে মত প্রকাশ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
২০২৩ সালে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিত থাকার আশা ব্যক্ত করেন ড. মোমেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সঙ্কটের স্থায়ী ও শান্তিপূর্ণ সমাধান চায় ইইউ
রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের অঙ্গীকার মিয়ানমার প্রবাসী সরকারের
বোয়ালখালীতে ৩১ রোহিঙ্গা আটক
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে মিয়ানমারের ৩১ জন নাগরিককে (রোহিঙ্গা) আটক করা হয়েছে। রবিবার ভোরে উপজেলার জ্যৈষ্ঠপুরা, আমুচিয়া ও কড়লডেঙ্গা পাহাড়ি এলাকায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে।
বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে থাকা ৩১ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে। এসব রোহিঙ্গার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস বেইজিংয়ের
কক্সবাজারে বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে তারা পালিয়ে বোয়ালখালী উপজেলার পাহাড়ে লেবু বাগানে গোপনে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিল। সেখানে অস্থায়ী শেড বানিয়ে বসবাস করার খবর পেয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
আরও পড়ুন: উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিপুল স্বর্ণেসহ মুদ্রা উদ্ধার, দম্পতি আটক
রোহিঙ্গা সংকট: জাতিসংঘ মহাসচিবের হস্তক্ষেপ চায় বাংলাদেশ
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের ব্যক্তিগত উদ্যোগে হস্তক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা চরম অবনতির দিকে যাচ্ছে উল্লেখ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ.কে. আব্দুল মোমেন তাৎক্ষণিক ভাবে জাতিসংঘের পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর তুলনায় ভাসানচর অনেক উন্নত: জাতিসংঘ
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘একদিকে মিয়ানমারে জনসম্মুখে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, আরেকদিকে বিভিন্ন দেশ তাদের সাথে অর্থনৈতিক এবং ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদার করছে। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক ব্যাপার।’বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে সংস্থাটির মহাসচিবের সাথে এক বৈঠকে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘকে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের আহ্বান বাংলাদেশের
জোরপূর্বক ভাবে দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ার ঘটনায় জাতিসংঘ মহাসচিব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের মানুষের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবির পরিচালনার মাধ্যমে বাংলাদেশের মহানুভবতার কথা বিশ্ববাসী কখনোই ভুলবে না।’
আরও পড়ুন: আগামী ১০ বছরে পরিবেশ বিপর্যয় থেকে বাঁচার শেষ সুযোগ: জাতিসংঘ মহাসচিব
আলোচনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের দেয়া সুযোগ সুবিধা এবং সেখানে জাতিসংঘের কার্যক্রম শুরু করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। এর পাশাপাশি করোনা ভ্যাকসিনকে বিশ্ববাসীর পণ্য হিসেবে ঘোষণা দেয়ায় তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
আরও পড়ুন: ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভের মুখে জাতিসংঘের প্রতিনিধি দল
বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের অত্যন্ত বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে জাতিসংঘ মহাসচিব জানান, সাম্প্রতিক জি-৭ সামিটে তিনি বাংলাদেশের ভ্যাকসিন উৎপাদনের সক্ষমতার কথা তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি জাতিসংঘের বিভিন্ন কর্মসূচিতে বাংলাদেশের দারুণ ভূমিকার রাখার প্রশংসা করেন তিনি।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চায় বাংলাদেশ
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে জাতিসংঘের কাছে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চেয়েছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, 'মানবিক বিবেচনায় আমরা রোহিঙ্গাদেরকে আশ্রয় দিয়েছি। কিন্তু গত চার বছরেও তাদের নিরাপদ এবং স্থায়ী প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে কোনো সমাধান পাওয়া যায় নি। আমরা চাই এখন এ বিষয়ে জাতিসংঘ সুনির্দিষ্ট একটি রোডম্যাপ তৈরি করুক।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘকে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের আহ্বান বাংলাদেশের
বুধবার (১৬ জুন) নিউইয়র্কের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিন এস বার্গনারের সাথে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘদিন অবস্থানের ফলে বিশেষ করে ওই অঞ্চলে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে তা তুলে ধরে বলেন, যদি প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু না হয় তবে তা শুধু কক্সবাজার এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকাতেই পরিস্থিতির অবনতি ঘটাবে না, বরং তা এ অঞ্চলের এবং বাইরের অবস্থারও অবনতি ঘটাবে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর তুলনায় ভাসানচর অনেক উন্নত: জাতিসংঘ
এসময় ভাসানচর প্রকল্প বিষয়ে তিনি বলেন, সেখানে রোহিঙ্গারা তাদের অর্থনৈতিক কার্যক্রম শুরু করতে পারেন।
ড. মোমেন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিশেষ দূতকে ভাসানচর পরিদর্শনে যাওয়ার আমন্ত্রন জানান।
আরও পড়ুন: ভাসানচরে যাবেন জাতিসংঘের সফররত ২ শীর্ষ কর্মকর্তা
বিশেষ দূত মিয়ানমারের সমস্যার স্থায়ী সমাধানকল্পে এবং এই পরিস্থিতির উন্নয়নে দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু করার ব্যাপারে জাতিসংঘ এবং অন্যান্য অংশীজনদে চেষ্টার কথা তুলে ধরেন।
এসময় তিনি ভাসানচর আসার ব্যাপারে তার আগ্রহের কথা জানান।
বিদ্রোহ রুখতে মিয়ানমারে গ্রাম পোড়ালো জান্তা বাহিনী
মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলকারী জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও আন্দোলন রুখতে পুরো একটি গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী। এমনটাই জানানো হয়েছে কয়েকটি স্বাধীন গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।বুধবার দেশটির কেন্দ্রে অবস্থিত মাগউয়ি বিভাগের পাউক শহরতলীর কিনমা গ্রামটি প্রায় পুরোটাই আগুনে দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় সেনা সদস্যরা।
আরও পড়ুন: আসিয়ান নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে মিয়ানমারের জান্তা প্রধান
তবে দেশটির সরকার নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমের খবরে বলা হয় সশস্ত্র জঙ্গীরা এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। উল্লেখ্য, সরকার এবং বিরোধীপক্ষ উভয়েই একে অপরকে ঘটনার জন্য দায়ী করে জঙ্গী হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: নিকট ভবিষ্যতে রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছা প্রত্যাবাসন জটিল হয়ে উঠছে: জাতিসংঘ
গত ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচতি অং সাং সুকি সরকারের ক্ষমতা দখল করার পর থেকেই মিয়ানমারে অহিংস জান্তা বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। কিন্তু জান্তা সরকারের হত্যা ও নির্যাতনের মুখে এই আন্দোলন সহিংস হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বন্ধে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান ফর্টিফাই রাইটসের
মিয়ানমারের কিনমা গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়ার মাধ্যমে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বর্বরতা আরও গভীরবাবে ফুটে উঠেছে। দেশব্যাপী জান্তা সরকারের প্রতি বিদ্রোহ দমনের লক্ষ্যে সামরিক বাহিনীর বর্বরতা চালিয়েই যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিনমা গ্রামের অনেক ছবিতে দেখা যায়, পুরো গ্রাম জ্বলে গেছে। আর কিছু গৃহপালিত পশুর পুড়ে যাওয়া কঙ্কাল পড়ে আছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘকে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপের আহ্বান বাংলাদেশের
এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রামটিতে প্রায় এক হাজার লোকের বসবাস ছিল। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, মোট ২৩৭ টি বাড়ির মধ্যে বর্তমানে শুধু ১০টি ঘর টিকে আছে।