আইনমন্ত্রী
জেনেভায় মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের সঙ্গে আইনমন্ত্রীর বৈঠক
মানবাধিকারের প্রসার ও সুরক্ষায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের অফিসের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
মঙ্গলবার জেনেভায় জাতিসংঘের নবনিযুক্ত মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভলকার তার্ক -এর সঙ্গে এক বৈঠকে এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী।
এসময় তিনি মানবাধিকার রক্ষা ও সমুন্নত রাখার ব্যাপারে বর্তমান সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে তিনি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টাকে সফল করতে জাতিসংঘের অধিকতর শক্তিশালী ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। আইনমন্ত্রী হাইকমিশনারকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে তার অফিসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার কথাও অবহিত করেন।
আরও পড়ুন: নতুন আইন বাস্তবায়নের সময় কিছু অপব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া যায়: আইনমন্ত্রী
এসময় হাই কমিশনার ভলকার তার্ক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দানের জন্য বাংলাদেশ সরকারের মানবীয় উদারতার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
সাক্ষাতের শুরুতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক নবনিযুক্ত মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারকে অভিনন্দন জানান।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৭ অক্টোবর ভলকার তার্ক জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
বৈঠকে জেনেভাস্থ জাতিসংঘ অফিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মো. সুফিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
জেনেভা সফরকালে আইনমন্ত্রী গতকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার নবনিযুক্ত ডিরেক্টর জেনারেল গিলবার্ট এফ হংবো এর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। এসময় তিনি শ্রম অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত নানা পদক্ষেপ সম্পর্কে ডিরেক্টর জেনারেলকে অবহিত করেন। এ বৈঠকে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: জনগণকে সর্বোত্তম সেবা দিন: সাব-রেজিস্ট্রারদের উদ্দেশে আইনমন্ত্রী
আয়কর আইনজীবীদের একটি শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক সংস্থা থাকা দরকার: আইনমন্ত্রী
আগামী নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানো যাবে কিনা, জানতে চেয়েছেন কানাডিয়ান হাইকমিশনার
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানো যাবে কিনা এ বিষয়ে জানতে চেয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত কানাডিয়ান হাইকমিশনার লিলি নিকোলাস।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় এ বিষয়ে জানতে চেয়েছেন লিলি।
বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
আরও পড়ুন: নতুন আইন বাস্তবায়নের সময় কিছু অপব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া যায়: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী বলেন, গত বছর বাংলাদেশে নিযুক্ত হয়েছেন কানাডিয়ান হাইকমিশনার। কিন্তু আমার সঙ্গে এই প্রথম বার দেখা করেছেন। সৌজন্য সাক্ষাতে নির্বাচন ইস্যুতেও আলোচনা হয়। এসময় কানাডিয়ান হাইকমিশনার জানতে চান যে আগামী নির্বাচনে পর্যবেক্ষক অ্যালোও করা হবে কিনা?
নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে আমাদের কাছে কোনো কনসার্ন ব্যক্ত করেন নি। কোনো সাজেশনও দেন নি। নির্বাচন নিয়ে উনারা জানতে চেয়েছেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষক আমরা এ্যালাউ করবো কিনা।
আমি স্পষ্ট করে বলেছি, এটা নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার, তাদেরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আইনমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। আমি স্পষ্টভাবে বলেছি বাংলাদেশ সরকার নির্বাচন কমিশন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং নির্বাচন কমিশনারদের (ইসি) নিয়োগের আইন করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সেখানে সরকারের যেসকল সহযোগীতা লাগবে তা করবে।
তিনি বলেন, বৈঠকে, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট এবং ডাটা প্রোটেকশন অ্যাক্ট নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্ট নিয়ে উনারা কোনো কথা বলেন নি। আমি এটা নিয়ে তাদের জানিয়েছি। কারণ সব জায়গায় এ বিষয়টি নিয়ে যখন আলোচনা হচ্ছে। উনারা ডেটা প্রটেকশন অ্যাক্ট নিয়ে কথা বলেছেন।
আরও পড়ুন: জনগণকে সর্বোত্তম সেবা দিন: সাব-রেজিস্ট্রারদের উদ্দেশে আইনমন্ত্রী
আমি বলেছি, এটা অংশীজনদের সঙ্গে একবার মিটিং হয়েছে। আরও দুই থেকে তিনবার মিটিং হবে। এছাড়া ডেটা কন্ট্রোলের জন্য এটা হবে না প্রটেক্ট করার জন্য হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ ও কানাডার সম্পর্কের ৫০ বছর হচ্ছে এ বছর। সে বিষয়ে দুজনেই বলেছেন আমরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে দেখি।
আমরা উভয় পক্ষ এ সম্পর্ক আরও গভীর হোক সেটা চাই।
এছাড়া সোমবারের মন্ত্রীসভায় অনুমোদন পাওয়া ৪ নভেম্বরকে সংবিধান দিবস নিয়ে কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এটি ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত দিবস। এ দিবসটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে পালন করা হবে।
এলক্ষ্যে সুপ্রীমকোর্ট বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: আয়কর আইনজীবীদের একটি শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক সংস্থা থাকা দরকার: আইনমন্ত্রী
দেখা যাক, ছদ্মবেশে জামায়াতের নিবন্ধন ইসি কীভাবে পরিচালনা করে: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, রাজনৈতিক দল হিসাবে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বিচারাধীন এবং নির্বাচন কমিশন ভিন্ন নামে তাদের নিবন্ধনের আবেদন কীভাবে পরিচালনা করে তা দেখার জন্য তিনি অপেক্ষা করবেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর জুডিশিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে সাব-রেজিস্ট্রারদের প্রশিক্ষণের পর এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আনিসুল হক বলেন, ইসির পদক্ষেপের পর এ বিষয়ে মন্তব্য করা হবে।
ইসির নিবন্ধন চাওয়া বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক পার্টির (বিডিপি) সকল নেতা জামায়াতে ইসলামী ও এর ছাত্র ফ্রন্ট শিবিরে ছিল বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। বুধবার বিডিপি নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে।
২০১৩ সালে, হাইকোর্ট ইসির সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে সাধারণ নির্বাচনে অংশ নেয়া থেকে কার্যকরভাবে নিষিদ্ধ করে। ২০১৮ সালে, ইসি আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলামী মৌলবাদী দলটির নিবন্ধন বাতিল করে। কারণ এটি পূর্বশর্তগুলি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছিল।
যাইহোক, মুক্তিযুদ্ধের সময় গণহত্যায় ভূমিকা রাখার জন্য ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির পক্ষ থেকে নিষিদ্ধের দাবির মধ্যে জামায়াত এখনও একটি রাজনৈতিক দল হিসাবে কাজ করছে।
যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নেতাদের বিচার প্রসঙ্গে আরেক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে বদ্ধপরিকর, যা একটি প্রমাণিত সত্য।
মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে জামায়াতের ভূমিকার জন্য জামায়াতের বিচারের বিষয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক পুনর্ব্যক্ত করেন যে আইনে কিছু পরিবর্তন প্রয়োজন এবং এটি প্রক্রিয়াধীন।
‘আমি আগেই বলেছি জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বিরুদ্ধে বিচারের জন্য আমাদের আইনে কিছু পরিবর্তন দরকার এবং আমরা ইতোমধ্যে সংশোধনী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠিয়েছি। খুব শিগগিরই আমরা এই বিষয়ে একটি আইন পাস করব এবং বিচার শুরু করব,’ তিনি যোগ করেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনে বিচার শুরু করার জন্য সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।
বুধবার নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সব শর্ত পূরণ করলে ভিন্ন নামে নিবন্ধন পেতে পারে।
নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধনের জন্য আবেদনের সময়সীমা ৩০ অক্টোবর শেষ হচ্ছে।
নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে আর কারাগারে পাঠাবে না সরকার: আইনমন্ত্রী
আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার আর কারাগারে পাঠাবে না বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
বৃহস্পতিবার ঢাকার জুডিশিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে সাব-রেজিস্ট্রারদের প্রশিক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
আনিসুল আরও বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ধারা ৪০১ অনুযায়ী খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত দুটি শর্তে পরিবর্তন করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।
আরও পড়ুন: আবেদন করলেই শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হবে: আইনমন্ত্রী
গত ১৯ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ায় সরকার।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে সরকার।
দুই দুর্নীতির মামলায় বেশ কয়েকবার শর্তসাপেক্ষে তার মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিশেষ আদালত পাঁচ বছরের সাজা দিলে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
পরে তিনি দ্বিতীয় দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন।
কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে গুলশানের বাসায় অবস্থান করছেন ৭৬ বছর বয়সী বিএনপি চেয়ারপারসন। তার চিকিৎসার তদারকি করছে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের একটি বিশেষ দল।
আরও পড়ুন: আ.লীগ জনগণের দল, আমাদের শক্তি জনগণের শক্তি: আইনমন্ত্রী
দেশকে অন্ধকারে রেখেছিল জিয়া ও এরশাদ: আইনমন্ত্রী
জনগণকে সর্বোত্তম সেবা দিন: সাব-রেজিস্ট্রারদের উদ্দেশে আইনমন্ত্রী
আইন,বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক সাব-রেজিস্ট্রারদের উদ্দেশে বলেছেন,জনগণকে কোনরূপ হয়রানি না করে দ্রুততম সময়ে সর্বোত্তম সেবা প্রদান করতে হবে এবং জাল-জালিয়াতি রোধে সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সাব-রেজিস্ট্রারদের জন্য আয়োজিত দু’দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন এক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন,যেখানে সকল মানুষ ভোগান্তিহীন ভাবে দ্রুত নাগরিক সেবা পাবেন। সমাজ, অর্থনীতি, শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প, যোগাযোগ, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ইত্যাদি সর্বক্ষেত্রে যুগান্তকারী উন্নয়ন সাধনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর এই স্বপ্ন পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার নিরলস ও নিবেদিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকার আন্তর্জাতিকমানের প্রযুক্তিনির্ভর, আধুনিক, কর্মদক্ষ ও মেধা সম্পন্ন জনশক্তি তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে। ফলে দৈনন্দিন সাধারণ কাজকর্ম থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রে নাগরিকগণ আজ প্রযুক্তির সহায়তায় সেবা গ্রহণে তৎপর হয়ে উঠেছেন।
আরও পড়ুন: আয়কর আইনজীবীদের একটি শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক সংস্থা থাকা দরকার: আইনমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, নতুন প্রজন্ম সহজাত প্রবণতায় শুরু থেকেই সময়োপযোগী টেকনোলজির সঙ্গে পরিচিত হয়ে বেড়ে উঠছে। সেবার ধরণ বদলে যাওয়ায় অপেক্ষাকৃত বয়োবৃদ্ধ নাগরিকগণও অনলাইন সেবা গ্রহণে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। দেশের এই অগ্রযাত্রায় রেজিস্ট্রেশন বিভাগকে পিছিয়ে থাকলে চলবে না। এ বিভাগের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকেও যুগের চাহিদার প্রেক্ষিতে সেবাপ্রার্থী জনগণকে দ্রুত প্রযুক্তিনির্ভর সেবা প্রদানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের চিন্তা-চেতনা ও মন-মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে।
তিনি বলেন, জনগণকে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর মানসম্মত সেবা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার নিবন্ধন অধিদপ্তরের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রস্তুত করে সমস্ত ভূমি রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াকে ডিজিটাইজড্ করতে চায়, এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে ইতোমধ্যেই আমরা ১৭টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ই-রেজিস্ট্রেশন পাইলটিং প্রকল্প সফলভাবে সম্পন্ন করেছি। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের অভিজ্ঞতার আলোকে সারাদেশের সকল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ই-রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালুর লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ডিপিপি তৈরি করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ২২১ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে সারাদেশে ই-রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হলে কোন রকম জটিলতা ছাড়াই নির্ভুলতার সঙ্গে হয়রানীমুক্ত পরিবেশে দলিলের দাতা এবং গ্রহীতা রেজিস্ট্রেশন কার্য সম্পাদন করতে পারবেন। ফলে সরকারি রাজস্ব আদায়েও গতিশীলতা বাড়বে।
এছাড়াও, সারা দেশের রেকর্ড রুমে রক্ষিত বালাম বহিসমূহ ই-আর্কাইভে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা যাবে। অনলাইন ব্যবস্থায় রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া চালু হলে জনগণ সহজেই নিবন্ধিত দলিলের অনুলিপি তাৎক্ষণিক সংগ্রহ করতে পারবেন। এর মাধ্যমে ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ বহুলাংশে হ্রাস পাবে এবং জাল-জালিয়াতির পরিমাণও উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাবে।
নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহাপরির্শক শহীদুল আলম ঝিনুকের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সাওয়ার বক্তৃতা দেন।
আরও পড়ুন: নতুন আইন বাস্তবায়নের সময় কিছু অপব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া যায়: আইনমন্ত্রী
মামলার চাপ কমাতে এডিআর পদ্ধতির প্রয়োগ বাড়াতে হবে: আইনমন্ত্রী
আয়কর আইনজীবীদের একটি শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক সংস্থা থাকা দরকার: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, রাজস্ব আহরণের ক্ষেত্রে আয়কর আইনজীবীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাই আয়কর আইনজীবীদের একটি শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক সংস্থা (রেগুলেটরি বডি) থাকা দরকার। যাতে যে কেউ আয়কর আইনজীবী সমিতির সদস্য হতে না পারে। এসময় তিনি আয়কর আইনজীবীদের নিয়ন্ত্রক সংস্থার স্ট্যান্ডার্ড (মান) বাড়ানোর পরামর্শ দেন।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ আয়কর আইনজীবী সমিতির নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সৎ ও দক্ষ আয়কর আইনজীবীগণ দেশের রাজস্ব বাড়াতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। আয়কর খাতে নিয়োজিত সকল আইনজীবী সৎ ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করলে দেশের রাজস্ব আহরণ যেমন বাড়বে, তেমনি আইন পেশার মর্যাদা ও গুরুত্ব বাড়বে। এতে জনগণের মধ্যে আয়কর দেয়ার ভীতিও দূর হবে। এসময় তিনি পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ আয়কর আইনজীবী সমিতির লাইব্রেরিতে উন্নতমানের বই-পুস্তক দেয়ার আশ্বাস দেন।
বৈঠকে আইনজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ আইনমন্ত্রীর কাছে পেশাগত বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা কামনা করেন।
তারা আয়কর অধ্যাদেশে বাংলদেশ বার কাউন্সিলের আদলে ট্যাক্স কাউন্সিল গঠনের বিধান যুক্ত করার অনুরোধ জানান।
এছাড়া আয়কর আপিল ট্রাইব্যুনালে একজন বিচার বিভাগীয় সদস্য (জেলা জজ) ও একজন প্রাকটিশনার্স আয়কর আইনজীবীর নাম অন্তর্ভুক্তকরণ, চট্টগ্রামে আয়কর আপিল ট্রাইব্যুনালের ২টি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ স্থাপনে আইনমন্ত্রীর সহযোগিতা চান।
এসব বিষয়ে আইনমন্ত্রী এনবিআর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন বলে তাদেরকে আশ্বস্ত করেন।
বৈঠকে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলম সারওয়ার, বাংলাদেশ আয়কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. সোহবার উদ্দিন, মহাসচিব মো. খোরসেদ আলম, সাবেক সভাপতি সৈয়দ ইকবাল মোস্তফা ও এ কে এম আজিজুর রহমান, ঢাকা আয়কর আইনজীবী এসোসিয়েশনের সভাপতি আবু আমজাদ, সাবেক সভাপতি এ কে এম আজিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মো. জাকারিয়া খান ও সাবেক সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. মামুনুর রশিদ অংশ নেন।
মামলার চাপ কমাতে এডিআর পদ্ধতির প্রয়োগ বাড়াতে হবে: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিভিন্ন কারণে দেশের প্রচলিত আদালতগুলোতে মামলাজট তৈরি হয়েছে। এসব আদালতে মামলার চাপ কমাতে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর) পদ্ধতির প্রয়োগ বাড়াতে হবে এবং দ্রুত ও স্বল্প ব্যয়ে এ সেবা প্রদান করতে হবে।
শনিবার রাজধানীর লা মেরিডিয়েন হোটেলে ‘ডিসকাশন অন মিটিং দ্যা নিডস অভ জাস্টিস সিকারস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে জনগণকে ব্যাপকভাবে সচেতন করতে হবে। এডিআর পদ্ধতির সফল প্রয়োগ আনুষ্ঠানিক মামলার বোঝা কমিয়ে সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষার ক্ষেত্রেও সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে।
আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম লক্ষ্য ছিল শোষণমুক্ত সমাজ এবং কল্যাণমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা। তিনি ১৯৭২ সালে জাতিকে যে সংবিধান উপহার দেন তাতে জাতি, বর্ণ, লিঙ্গ বা ধর্ম নির্বিশেষে সবার জন্য সমান অধিকার, ন্যায়বিচারের প্রবেশাধিকার এবং মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। তাই বাংলাদেশ সরকার সকল নাগরিকের মৌলিক মানবাধিকার এবং ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে সাংবিধানিকভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও পড়ুন: আইন বলে দিবে খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি-না: আইনমন্ত্রী
এছাড়া জনগণের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিতকরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সকল মানুষের জন্য সময়োপযোগী এবং মানসম্পন্ন বিচার সেবা প্রদানে বিচার বিভাগকে সবধরনের সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছে। পাশাপাশি আইনগত সহায়তা প্রদান আইন এবং প্রয়োজনীয় বিধিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে আইনগত সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে।
আনিসুল হক বলেন, কোভিড-১৯ অতিমারির সময়ও জনগণের ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার অক্ষুণ্ণ রাখতে সরকার সর্বতভাবে চেষ্টা করেছে। সেসময় জনগণের ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে সরকার সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকেই প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় দ্রুততম সময়ে আদালত কর্তৃক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ জারি করা হয় এবং পরবর্তীতে তা আইনে পরিণত করা হয়। এই আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশে ভার্চুয়াল আদালত ব্যবস্থার প্রবর্তন হয় এবং এর মাধ্যমে জনগণের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার চালু রাখা সম্ভব হয়।
ভরা করোনার সময় কারাগারে অতিরিক্ত ভিড় কমাতে এই আদালত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভার্চুয়াল আদালত প্রবর্তন বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রায় এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।
তাছাড়া লকডাউনের সময় অনলাইনে ২৪ ঘন্টা সরকারি আইনি সহায়তা কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছিল৷ লিগ্যাল এইড অফিসগুলোর হটলাইন খোলা রাখা হয়েছিল।
ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল এর সহযোগিতায় ইউএসএআইডির প্রমোটিং পিস অ্যান্ড জাস্টিস (পিপিজে) অ্যাকটিভিটির উদ্যোগে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় ২০টি জেলার জেলা ও দায়রা জজ এবং লিগ্যাল এইড অফিসাররা অংশগ্রহণ করেন। সভার মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা আইনগত সহায়তা প্রদান কার্যক্রম আরও জোরদারকরণে নিজ নিজ অভিজ্ঞতার আলোকে মতামত তুলে ধরেন।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে সভায় ইউএসএআইডি বাংলাদেশের মিশন পরিচালক ক্যাথরিন ডি. স্টিভেনস, ইউএসএআইডি প্রমোটিং পিস অ্যান্ড জাস্টিসের চিফ অব পার্টি হেদার গোল্ডস্মিথ, ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া, আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. শেখ গোলাম মাহবুব প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানো হবে: আইনমন্ত্রী
খেলাপি ঋণ এর পরিমাণ কমিয়ে আনতে চায় সরকার: আইনমন্ত্রী
আইন বলে দিবে খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি-না: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আইন বলে দিবে খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি-না।
তিনি বলেছেন, আইন যা বলে, তাই হবে। আইনে যদি বলে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন, তাহলে তিনি করবেন। আর আইন যদি বলে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না, তাহলে তিনি তা করতে পারবেন না। আপতত যে আইন আছে তাতে মনে হয় না যে, তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ করতে পারবেন।
সোমবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি-না-এমন প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানো হবে: আইনমন্ত্রী
ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী জজদের ৪৭ তম বিশেষ বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আইনমন্ত্রী কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে, যদি কোন ব্যক্তি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে নূন্যতম দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছরকাল অতিবাহিত না হয়ে থাকে তাহলে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য পদে নির্বাচন করতে পারবেন না।
তিনি (খালেদা জিয়া) তো আদালতের মাধ্যমে দণ্ডপ্রাপ্ত।
বিএনপির আইনজীবীরা খালেদা জিয়ার পক্ষে আপিল করে তা শুনানির উদ্যোগ নিচ্ছেন না। এর ফল কি হবে-এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, তারা কি করবেন, আর কি করবেন না, আমি কি সে জন্য তাদের উপদেশ (এডভাইস) দিবো?
তারা আপিল শুনানির উদ্যোগ নিচ্ছেন না, তার কৈফিয়ত যদি আমাকে দিতে হয়, তাহলে তো সেটা অযৌক্তিক হবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, এ আইন নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। কারণ এ আইন করাই হয়েছে শুধু সাইবার অপরাধ দমন করার জন্য।
বাক স্বাধীনতা বা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার জন্য এ আইন করা হয়নি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় যে ২৯টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অবকাঠামোর নাম ঘোষণা দেয়া হয়েছে সে বিষয়ে তিনি কয়েক দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিবেন বলে জানান আইনমন্ত্রী।
প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার।
আরও পড়ুন: খেলাপি ঋণ এর পরিমাণ কমিয়ে আনতে চায় সরকার: আইনমন্ত্রী
আবেদন করলেই শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হবে: আইনমন্ত্রী
খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানো হবে: আইনমন্ত্রী
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। রবিবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ইউএনবিকে বলেন, ‘আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের পর এখন এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।’
খালেদা জিয়া বাসায় থেকে চিকিৎসা নিবেন এবং এই সময়ের মধ্যে তাকে বিদেশে যেতে দেয়া হবে না বলেও জানান তিনি।
সম্প্রতি খালেদার নিঃশর্ত মুক্তি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে তার পরিবার। খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছেও অনুমতি চেয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার কারাদণ্ড স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর দাবি পরিবারের
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সময় ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে গুলশানে তার বাসভবনে থাকবেন এবং দেশত্যাগ করতে পারবেন না এই শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়াকে ছয়মাসের জন্য মুক্তি দিয়েছিল।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের’ দুর্নীতির মামলায় ঢাকার একটি বিশেষ আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠান। এরপর তিনি আরও একটি মামলায় দণ্ডিত হন।
কারাগার থেকে মুক্তির পর ৭৭ বছর বয়সী বিএনপি প্রধান তার গুলশানের বাসভবন থাকছেন। এরপর বেশ কয়েকবার তিনি রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের একটি বিশেষ দল তার চিকিৎসার দেখভাল করছেন।
আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে ফিরোজায় খালেদা জিয়া
সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরবেন খালেদা জিয়া
খেলাপি ঋণ এর পরিমাণ কমিয়ে আনতে চায় সরকার: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সরকার ‘অর্থনীতির শত্রু’ হিসেবে খ্যাত খেলাপি ঋণ-এর পরিমাণ কমিয়ে আনতে চায়। কারণ ঋণ খেলাপি মামলাজট দেশের অর্থনীতির ওপর বিরুপ প্রভাব ফেলছে।
শনিবার ঢাকায় বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ/সমপর্যায়ের বিচারকদের জন্য আয়োজিত ১৪৭তম রিফ্রেসার কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: সুষ্ঠু ভূমি ব্যবস্থাপনার অভাবেই মামলাজট: আইনমন্ত্রী
তিনি বলন, গত প্রায় সাড়ে ১৩ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ঈর্ষণীয় উন্নয়ন ঘটেছে। এছাড়া বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল রাখতে আমাদের অবশ্যই ঋণ খেলাপি মামলাজট খুলতে হবে এবং এই মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির মাধ্যমে খেলাপি ঋণ বাড়ার লাগাম টানতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, ঋণ খেলাপি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সরকার অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩ সংশোধন করে আদালতের বাইরে এডিআর বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতিতে মামলা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করেছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, মামলার পক্ষগণের অনাগ্রহের কারণে এডিআর পদ্ধতির সফল প্রয়োগ হচ্ছে না। ঋণ খেলাপি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে-এডিআর পদ্ধতিকে আরও কার্যকরভাবে অনুসরণ করতে হবে। এর পাশাপাশি শুনানি পর্যায়ে বিবাদীর অযৌক্তিক কালক্ষেপন রোধ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ন্যায়বিচারের সঙ্গে সামাজিক অপরাধ, রাষ্ট্রের আইন শৃঙ্খলা ও নাগরিক জীবনের নিরাপত্তাসহ অন্যান্য মৌলিক অধিকারগুলো নিবিড়ভাবে জড়িত। তাছাড়া ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন ব্যতিত রাষ্ট্রের প্রকৃত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি লাভ করা যায় না।
মামলাজটের পরিসংখ্যান তুলে ধরে আনিসুল হক বলেন, দেশের আদালতগুলোতে দায়েরকৃত সিভিল মামলার অর্ধেকেরও বেশি ভূমি সম্পর্কিত। অনেক ফৌজদারি মামলার মূলেও রয়েছে ভূমি বিরোধ। এসব মামলার বিচার পাওয়ার জন্য প্রতিদিন লাখ লাখ বিচারপ্রার্থীকে আদালতে ধরা দিতে হয়। এতে যে কেবল তাদের সময় ও অর্থ অপচয় হচ্ছে তা নয়, মূল্যবান কর্মঘণ্টাও নষ্ট হচ্ছে। যেসময়ে তাদের উৎপাদনের কাজে থাকার কথা, সেসময় আদালতের বারান্দায় ঘুরেঘুরে বিচার পাওয়ার প্রহর গুণতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: আ.লীগ জনগণের দল, আমাদের শক্তি জনগণের শক্তি: আইনমন্ত্রী
তিনি আশা প্রকাশ করেন বিচারকগণ, বিচারকগণ এসব বিষয় গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিবেন এবং জনগণকে দ্রুত ন্যায়বিচার প্রদান করে তাদের বিচার পাওয়ার দুর্ভোগ লাঘব করবেন।
প্রশিক্ষণার্থী বিচারকদের উদ্দেশ্যে আইনমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার সারা জীবনের রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে এমন এক স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও গতিশীল বিচার বিভাগের স্বপ্ন দেখেছিলেন-যেখানে শোষিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত এবং অসহায় মানুষ স্বল্প খরচে দ্রুত ন্যায়বিচার পাবে। বঙ্গবন্ধুর এই স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন- বিচারক হিসেবে আপনাদের ওপরই নির্ভর করে। এই নির্ভরতা আপনাদেরকে যেমন দায়িত্বশীল করেছে, তেমনি মর্যাদাবানও করে তুলেছে।
তিনি বলেন, আপনাদের দায়িত্ব পালনে আমরা সহায়ক ভূমিকা পালন করে যাচ্ছি মাত্র। আমরা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি, দক্ষতার সঙ্গে সুচারুরূপে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আপনাদের দাপ্তরিক সমস্যার যুক্তিসঙ্গত সমাধানসহ পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোটাও অপরিহার্য। আর পেশাগত দক্ষতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের কোন বিকল্প নেই। সেকারণে আমরা দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ কোর্স আয়োজন করে যাচ্ছি।
বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আইন মন্ত্রণালয় এবং বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: জিয়া মারা না গেলে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আসামি হতেন: আইনমন্ত্রী