গবেষণা
স্বাধীনতার ইতিহাসে তাদের স্থান কি হবে?
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের সুফল যা একটি কঠিন বাস্তবতা। এদেশের আপামর জনতার পরোক্ষ প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ, মা বোনের ইজ্জত, মানবিক বিপর্যয়, ত্যাগ তিতিক্ষার কথা ইতিহাসে স্থান পেয়েছে। অসমাপ্ত রয়ে গেছে ইতিহাসের অনেক উপাদান। গবেষকরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
দেশের বাইরে থেকেও যারা যুদ্ধে সমর্থন জুগিয়েছিল তাদের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। অনেকেই দেশের মাটিতে পা না দিয়েও মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় আছেন এবং ভাতা গ্রহণ করছেন। এমনকি বিজয়ের মুহূর্তে কোন অবদান না রেখেও শুধু মাত্র স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে নিহত হয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান সম্বোধিত হচ্ছেন। কিন্তু উল্লেখ্যযোগ্য সংখ্যক বাঙালিরা যুদ্ধকালীন সময়ে পাকিস্তানে মানসিক চাপ, নির্যাতন, জেল ও অনেক কষ্ট করে পালাতে গিয়ে ধরা পড়ে নিগৃহীত হয়েছিলেন। তাদের ইতিহাস অনুচ্চারিত রয়ে গেছে।
সামরিক বেসামরিক সকল শ্রেণিই নিজের মাতৃভূমিতে ফেরত এসে বাঙালী মূল স্রোতের সঙ্গে একাত্ম হতে চেয়েছিলেন। তাদের এই ত্যাগ তিতিক্ষা কি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে স্থান পাওয়ার যোগ্য নয়? সে উদ্যোগ কেউ নিয়েছেন কি না জানা নেই।
জানামতে আমাদের অনেক আত্মীয় স্বজন পালাতে গিয়ে ধরা পড়েছে । আফগানিস্তান হয়ে কপর্দকশূন্য অবস্থায় অনেকে দেশে ফিরেছেন। দুর্গম পর্বত অতিক্রম করতে গিয়ে নিজের কোলের সন্তান শত ফুট নিচে গড়িয়ে পড়েছে। পরিবার ছাড়া বসবাসকারী অনেকেই পালিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছে। এসব কি ইতিহাসের উপাদান নয়?
এবার আসি সামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রসঙ্গে।
২৫ শে মার্চ কালো রাতে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী যখন পূর্ব পাকিস্তানের নিরীহ বাঙালিদের ওপর হামলা চালায় তখন যুদ্ধের সূচনা হয়। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে অবস্থানরত দি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের পাঁচটি ব্যাটালিয়ন বিদ্রোহ করে ও পাকিস্তান পক্ষ ত্যাগ করে সসস্ত্র প্রতিরোধে অংশ নেয়। সেদিন থেকেই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বাঙালী সদস্যরা গাদ্দার নামে অভিহিত হয়। তারা পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষার শপথ ভঙ্গ করেছে। পূর্ব পাকিস্তানে প্রত্যক্ষ লড়াইয়ে বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও গণ যোদ্ধাদের সম্মিলিত শক্তির মুখোমুখি পাকিস্তানী বাহিনী। অপর দিকে পাকিস্তানে আটকে পড়া বাঙালী সামরিক সদস্যরা ( তাদের ভাষায় গাদ্দার) কড়া নজরদারির আওতায় এলেন।
এসব ভুক্তভোগী অফিসারদের থেকে অনেক কিছু জানা যায়। যুদ্ধের প্রথম দিকে হালকা নজরদারি। এর মধ্যে সুযোগ বুঝে দু একজন যখন পালিয়ে ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রম করে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয় তখন আরও কড়া নজরদারি আরোপিত হয়। অনেকে পালাতে গিয়ে ধরা পড়ে জেল খাটেন, সুবিধা বঞ্চিত হন।
পাকিস্তান মিলিটারি সদর দপ্তর ধরে নিয়েছিল ডান্ডা মেরে বাঙালিকে দু একমাসের মধ্যে ঠান্ডা করে দেয়া যাবে। কিছুদিন পরেই বোঝা গেলো এ ধারণা ভুল। সামগ্রিক অবস্থা পাকিস্তানের অনুকূলে নয়। এর পর থেকে বাঙালীদেরকে যথাসম্ভব দায়িত্বপূর্ণ কাজ থেকে সরিয়ে দেয়া হলো। তাদেরকে বিভিন্ন স্থানে একত্রিত করে কঠিন প্রহরায় রাখা হলো। অদম্য বাঙালিরা এখান থেকেও পালিয়ে যাবার চেষ্টা চালিয়ে গেলো।
৭১ সালের যুদ্ধের চূড়ান্ত পর্বে পাকিস্তানের পরাজয়ে ( পূর্ব ও পশ্চিম উভয় সীমান্তে) বাঙালিরা আরও রোষানলে পড়ে। এবার শুরু হয় সকল বাঙ্গালীদের একত্র করে দুটি গ্রুপে ভাগ করে বিভিন্ন ক্যাম্পে বন্দী করা। একটি গ্রুপ অবিবাহিত ও সিঙ্গেল অফিসারদের, আরেকটি গ্রুপ পরিবারসহ বসবাসকারীদের। সৈনিকদের বেলায় ও একই অবস্থা। কড়া পাহারার মাঝে কারো সঙ্গে কোনো যোগাযোগ, দেখা সাক্ষাৎ কিছুই সম্ভব নয়। দেশের সঙ্গে যোগাযোগ ও নেই। কবে ছাড়া পাবে তার নিশ্চয়তা নেই। দেশ স্বাধীন হয়েছে। পুনর্গঠনের কাজ চলছে। পাকিস্তানে আটক বাঙ্গালীদের ফেরত নেয়ার দৃশ্যমান অগ্রগতি না দেখে বন্দী শিবিরে অবস্থানরত ব্যক্তিরা আরো হতাশ হলেন।
আটকে পড়া বাঙ্গালীদের নিয়ে পাকিস্তানীরা নুতন ষড়যন্ত্র শুরু করে। যুদ্ধে বিপর্যস্ত ও পরাজিত পাকিস্তানীদের মনোবল শূন্যের কোঠায়। ৯৩ হাজার যুদ্ধবন্দী কিভাবে কখন ফেরত আসবে। এর মাঝে অনেকের পুত্র, জামাই, নিকটাত্মীয় রয়েছে। এ ৯৩ হাজারের বিপরীতে পাকিস্তানীদের হাতে কোনো ভারতীয় যুদ্ধবন্দী নেই। তাই ওরা চেষ্টা চালালো আটকে পড়া বাঙালিদের যুদ্ধবন্দী বানিয়ে দর কষাকষির ক্ষেত্র তৈরি করার।
বন্দী শিবিরগুলোতে কঠোর নিয়ম কানুন চালু হলো । লয়ালপুর জেল, সাগাই দুর্গ, খাজুরি ক্যাম্পের বিভীষিকার কথা অনেক শুনেছি। বাইরে যোগাযোগ নেই, অর্থকষ্টে অনেকেই বিপদে ছিলো। বেসামরিক ঠিকাদারের সরবরাহকৃত খাবার ক্রয় করে খেতে হতো। কয়েকদিন পরপর বিছানাপত্র ব্যাক্তিগত বাক্স পেটরা তল্লাশি, রেডিও, টেপ রেকর্ডার ক্যামেরা ইত্যাদি বাজেয়াপ্ত করা হতো। সন্দেহ এতই প্রবল যে প্রায়ই দল বদল, রুম বদল, ক্যাম্প বদল ইত্যাদি রুটিন হয়ে দাঁড়ালো। ক্যাম্পের পাহারায় ছিলো উপজাতীয় মিলিশিয়ারা। ওরা ওদের ভাষা ছাড়া আর কারো ভাষা বুঝতো না। ক্যাম্প ইনচার্জ কারো সাথে যোগাযোগের কোনো সুত্রই রাখেননি।
জুনিয়র অফিসারগণ বন্দীত্ব ঘুচাতে সদা তৎপর। ওরা পালিয়ে যাবার চেষ্টা চালিয়ে গেলো। এতো নজরদারির ভেতরেও গোপনে সুড়ঙ্গ তৈরির পরিকল্পনা করলো। সুড়ঙ্গ খননের যন্ত্রপাতি যোগাড় করা, গোপনীয়তা বজায় রেখে খনন কাজ চালানো কঠিন ব্যাপার ছিল । খননের আওয়াজ লুকানোর জন্য হারমোনিয়াম বাজিয়ে উচ্চস্বরে গান করা হতো। খননের বাড়তি মাটি লুকানোর জন্য নিজের সুটকেস খালি করে মাটি ভরা হলো। তাদের চেষ্টা, বুদ্ধিমত্তা ও স্পৃহা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করতে হয়। এতো চেষ্টার পর ও তীরে এসে তরী ডুবলো। সুড়ঙ্গ তৈরি হলো কিন্তু তার শেষ প্রান্ত গিয়ে ঠেকলো কর্তব্যরত এক সেন্ট্রির পায়ের কাছে। উদ্যোক্তাদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলো। নেমে এলো সবার উপর অত্যাচার ও নিপীড়ন। রূপকথার কাহিনীকেও এসব বাস্তব গল্প হার মানায়। কিন্তু কোথাও উল্লেখ না থাকায় বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্ম জানবে না এ কাহিনী।
লেখক: কলামিস্ট কর্নেল (অব.) মো. শাহ জাহান মোল্লা
(প্রকাশিত মতামতের দায় লেখকের, ইউএনবির নয়)
পড়ুন: বাংলাদেশে বিরোধী দলের বন্ধ্যাত্ব
গণতন্ত্রের মোহমুক্তি
করোনায় কর্মজীবন নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিষন্নতা-মানসিক চাপ বেড়েছে: শাবিপ্রবির গবেষণা
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবন নিয়ে বিষন্নতা এবং মানসিক চাপ তাদেরকে ভয়ানক স্বাস্থ্য ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কোভিড-১৯ চলাকালীন এই বিষন্নতা ও মানসিক চাপ কয়েকগুণ বেড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই মানসিক চাপ এবং হতাশার পেছনে অন্যতম কারণ কোভিড-১৯ মহামারিতে কর্মসংস্থানের নিরাপত্তাহীনতা।
সম্প্রতি শাবিপ্রবির পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে তিন জন শিক্ষার্থী উপমা চৌধুরী, মো. আহসান হাবিব শুভ্র ও সৈয়দ মো. ফারহানের একটি গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
তাদের গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের করোনা মহামারিতে তাদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবন নিয়ে মানসিক অবস্থা এবং হতাশা বৃদ্ধি পায় কিনা তা যাচাই করা। গবেষণাটি পরিচালিত হয় ২০২০-২১ সালে এবং সম্প্রতি এর ওপর ভিত্তি করে একটি গবেষণা প্রবন্ধ আন্তর্জাতিক জার্নাল এ প্রকাশিত হয়।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে ঈদুল ফিতরের ছুটি ঘোষণা
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ৬২ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ৩য়, ৪র্থ বর্ষ ও মাস্টার্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ওপর পরিচালিত এ গবেষণায় দেখা গেছে অধিকাংশ (৮০ শতাংশ) শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিষন্নতা রয়েছে এবং ৭০ শতাংশ মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছে।
ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের পাশাপাশি করোনাভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ভয়ও মানসিক চাপ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীরাই দ্বিগুণের চেয়ে বেশি বিষন্নতা এবং মানসিক চাপের শিকার। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের ধারণা কোভিড ১৯ মহামারির কারণে তাদের ভবিষ্যতে কর্মসংস্থান অনিশ্চিত তাদের বিষন্নতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।
গবেষণায় দেখা গেছে, উপযুক্ত চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা এবং স্নাতক সম্পন্ন হওয়ার সময়ের সঙ্গে নেতিবাচকভাবে সম্পর্কিত ছিল। আজকাল বেশির ভাগ প্রাইভেট কোম্পানি ভালো উদ্ভাবনী এবং সহজেই মানিয়ে নিতে পারে এমন যুবকদের পছন্দ করে। তাই শিক্ষার্থীদের স্নাতক বিলম্ব হওয়ায় তাদের এই সুযোগও বিলম্ব হচ্ছে যা তাদের অধিক হতাশা ও মানসিক চাপে রাখছে।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা বিভাগ ইন্টার্নশিপের সুযোগ দিয়ে থাকে অথবা ইন্টার্নশিপ তাদের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত সেসব শিক্ষার্থীরা বাকি শিক্ষার্থীদের তুলনায় ৩৬ শতাংশ কম বিষন্নতা এবং মানসিক চাপে ভোগে। যেসব শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা বিভাগ কোনো ধরনের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কোনো কার্যক্রম বা কোর্সের ব্যবস্থা করে অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রমে দ্বিতীয় বা তৃতীয় বর্ষে থাকাকালীন মাঠ পর্যায়ের যেসব কাজের অভিজ্ঞতা থাকে তা দেয়ার সুযোগ করে দেয় সেসব শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবন নিয়ে বিষন্নতা কম পাওয়া গেছে। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ ধরনের কার্যক্রমের সুযোগ করে দেয় সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বিষন্নতা ৪৬ শতাংশ কম পাওয়া যায়।
গ্র্যাজুয়েশন বিলম্বিত হওয়া, উপযুক্ত চাকরি পাওয়ার জন্য দক্ষতার অভাব, স্টার্টআপ প্ল্যান এবং তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ইন্টার্নশিপ সুবিধা না পাওয়া হতাশা ও মানসিক চাপে বড় অবদান রাখছে। গ্রাজুয়েশনের পর অনলাইন মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রোগ্রাম এবং ইন্টার্নশিপ প্রদানের মাধ্যমে পরিস্থিতি রোধ করতে সরকারের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সহযোগিতা করা উচিত যাতে তারা তাদের মানসিক চাপ মুছে ফেলতে পারে এবং হতাশা ও চাপ কাটিয়ে উঠতে পারে।
বর্তমানে এই মানসিক চাপ এবং হতাশা থেকে শিক্ষার্থীদের কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করার জন্য মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রোগ্রাম আয়োজন করা উচিৎ।
মূলত এই মানসিক চাপ, হতাশা বা বিষন্নতার পেছনে যে কারণগুলো যেমন তাদের দক্ষতার অভাব এবং তাদের ইন্টার্নশিপের সুযোগ দেয়া হয় না এইসব ব্যাপারগুলো নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সরকার এবং নীতি নির্ধারক সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন: সভাপতি আখতার, সা. সম্পাদক জহির
নারী গ্রাজুয়েটরা অধিক বিষন্নতার স্বীকার পুরুষদের তুলনায় কারণ বেশিরভাগ নারী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে তাদের কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা কম থাকে এবং তাদের বিভিন্ন পেশার মানুষ যারা কর্মসংস্থানের সঙ্গে জড়িত তাদের সঙ্গে অধিক যোগাযোগ স্থাপন হয় না। যেসকল শিক্ষার্থীরা শুধু পাঠ্যক্রম ভিত্তিক পড়াশোনা করে থাকে তাদের ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকে না সেক্ষেত্রে এসব শিক্ষার্থীদের হতাশা এবং মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায়। তাই শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ইন্টার্নশিপের সুযোগ প্রদান করার মাধ্যমে তাদের মানসিক হতাশা ও চাপ কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করা সম্ভব।
তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিৎ তারা যেন এসকল শিক্ষার্থীদের শিল্প সফর এবং ইন্টার্নশিপের আওতায় এনে তাদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবন সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা দেয়।
জানুয়ারিতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কাজ করেছেন গার্মেন্টস শ্রমিকরা: সানেম
করোনা মহামারির মধ্যে বাংলাদেশে গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য চলতি বছরের জানুয়ারি মাস ছিল ব্যস্ততম মাস। জানুয়ারিতে ২৭ কার্যদিবসে শ্রমিকরা কারখানায় গড়ে ২৯৫ ঘণ্টা সময় ব্যয় করেছে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি।
বাংলাদেশের গার্মেন্টস শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান নিয়ে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোফাইন্যান্স অপরচুনিটিজের (এমএফও) যৌথ গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
‘গার্মেন্ট ওয়ার্কার ডায়েরিজ’ প্রকল্পের অধীনে এপ্রিল ২০২০ থেকে প্রতি সপ্তাহে প্রায় এক হাজার ৩০০ জন নির্বাচিত গার্মেন্টস কর্মীদের ওপর এ জরিপ করা হয়।
আরও পড়ুন: গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্পে বৈচিত্র্য আনার আহ্বান এফবিসিসিআই সভাপতির
জরিপে অংশ নেয়া শ্রমিকরা বাংলাদেশের পাঁচটি প্রধান শিল্প এলাকা (চট্টগ্রাম, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও সাভার) এর বিভিন্ন কারখানায় নিযুক্ত।
জরিপের উত্তরদাতাদের তিন-চতুর্থাংশ নারী, যা আরএমজি সেক্টরের শ্রমশক্তির বিন্যাসকে প্রতিনিধিত্ব করে। এক ঘণ্টার মধ্যাহ্নভোজের বিরতি বাদে, শ্রমিকরা জানুয়ারিতে গড়ে ২৬৮ ঘণ্টা কাজ করেছেন বলে জরিপে বলা হয়েছে।
নারী কর্মীরা জানুয়ারিতে গড়ে ২৬৭ ঘণ্টা কাজ করেছেন, যেখানে পুরুষ শ্রমিকরা এক ঘণ্টার মধ্যাহ্নভোজের বিরতি বাদ দিয়ে গড়ে ২৭০ ঘণ্টা কাজ করেছেন।
ফেব্রুয়ারির ২৪ কার্যদিবসে শ্রমিকরা গড়ে ২৫৯ ঘণ্টা কারখানায় ব্যয় করেছেন। এক ঘণ্টার মধ্যাহ্নভোজের বিরতি বাদ দিয়ে ফেব্রুয়ারি মাসে শ্রমিকরা গড়ে ২৩৫ ঘণ্টা কাজ করেছে।
তাদের মধ্যে নারী শ্রমিকরা গড়ে ২৩৪ ঘণ্টা এবং পুরুষ শ্রমিকরা গড়ে ২৩৫ ঘণ্টা কাজ করেছেন।
জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি উভয় মাসে, জরিপকৃত শ্রমিকরা আইনত অনুমোদিত ১০ ঘণ্টার (আট ঘণ্টা নিয়মিত এবং দুই ঘণ্টা ওভারটাইম) অধিক কাজ করেছেন।
আরও পড়ুন: ৬ মাসে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ১৮ কোটি টাকা সহায়তা
ডিসেম্বরে কাজের জন্য নারী শ্রমিকরা জানুয়ারিতে গড়ে ১২ হাজার টাকা এবং পুরুষ শ্রমিকরা গড়ে ১২ হাজার ৫০০ টাকা বেতন পেয়েছেন।
জানুয়ারিতে কাজের জন্য নারী শ্রমিকরা ফেব্রুয়ারিতে গড়ে ১২ হাজার টাকা বেতন পেয়েছেন যেখানে পুরুষ শ্রমিকরা পেয়েছেন ১৩ হাজার টাকা।
ফেব্রুয়ারিতে, ৫৪ শতাংশ কর্মী মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (বিকাশ, নগদ, রকেট, ইত্যাদি) মাধ্যমে এবং ৪৬ শতাংশ নগদ অর্থে বেতন পেয়েছেন।
প্রায় ২০ শতাংশ গার্মেন্টস কর্মী জানিয়েছেন ফেব্রুয়ারি মাসে তাদের পরিবারের অন্তত একজন সদস্য অসুস্থ ছিলেন। জানুয়ারিতে এই অসুস্থতার হার ছিল ২৬ শতাংশ।
আরও পড়ুন: আশুলিয়ায় গার্মেন্টস কর্মী হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড
শ্রীলঙ্কার ছাঁচে বাংলাদেশকে মূল্যায়ন করবেন না: পরিকল্পনামন্ত্রী
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিবেচনায় শ্রীলঙ্কার ছাঁচে ফেলে বাংলাদেশকে মূল্যায়ন করা ভুল। বাংলাদেশ কোনো অবস্থাতেই অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ করে না।
মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মন্ত্রী।
একনেক চেয়ারম্যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে মোট ১২টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।
মান্নান বলেন, একনেকে এক হাজার ২০১৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২টি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি তহবিল ৭,৯৯০.১৪ কোটি টাকা, বৈদেশিক অর্থায়ন ৩,০০০.৩৯ কোটি টাকা এবং নিজস্ব উৎস থেকে অর্থায়ন ৫৯৪.৪৩ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কার সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারালো ক্ষমতাসীন জোট
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা করবেন না। কিছু লোক এটা করার চেষ্টা করছে। এটা ঠিক নয়।’
শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশেও অনুৎপাদনশীল প্রকল্প নেয়া হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অপ্রয়োজনীয় কাজ করি না। দেশের মানুষের জন্য যা ভালো তা করি। শ্রীলঙ্কা আর আমাদের প্রেক্ষাপট এক নয়। শ্রীলঙ্কা আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র। আমি এ বিষয়ে মন্তব্য করব না।’
‘আমরা গবেষণা করছি, দেখছি এবং শুনছি। আমি আবারও বলছি, শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি আর বাংলাদেশের অর্থনীতি এক নয়,’ যোগ করেন মান্নান।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় নতুন ৪ মন্ত্রীর শপথ গ্রহণ
বাংলাদেশের উন্নতি অনেক দেশের কাছে গবেষণার বিষয়: আইজিপি
বাংলাদেশের উন্নতি বিশ্বের অনেক দরিদ্র দেশের কাছে গবেষণার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশে ক্ষুধা এখন পরাজিত হচ্ছে। গত ১৪ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সামাজিক ক্ষেত্রে বিষ্ময়কর উন্নতি হয়েছে। যা বিশ্বে রোল মডেল। বিশ্বের অনেক দরিদ্র দেশের কাছে গবেষণার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের উন্নতি।’
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) বিকালে যশোর পুলিশ লাইনের মাঠে দক্ষ পুলিশ সমৃদ্ধ দেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’ স্লোগানে জেলা পুলিশের বার্ষিক সমাবেশ ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র এখনও থেমে নেই। দেশের মধ্যে এবং বাইরে ষড়যন্ত্র চলছে। সকল ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করতে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
পড়ুন: পুলিশের সক্ষমতা বাড়াবে নবগঠিত এভিয়েশন উইং: আইজিপি
তিনি বলেন, সকল ষড়যন্ত্র দুই পায়ে মাড়িয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ বিজয়ের দেশ, বীরের দেশ। এদেশে কোনো শত্রু থাকবে না। ভেতর ও বাইরের ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করতে হবে একসাথে। যেভাবে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এদেশ স্বাধীন হয়েছিল।
তিনি যশোরের ক্রীড়া অনুষ্ঠান আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, যশোরের সাংস্কৃতিক সংগঠনের যে মনোরম ডিসপ্লে দেখেছি তাতে মুগ্ধ হয়েছি। জাতীয় পর্যায়ে এই ধরনের ডিসপ্লে প্রদর্শিত হয়।
বেনজীর বলেন, পুলিশের জন্য খেলাধুলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খেলার সাথে কাজের হৃদ্বিক সম্পর্ক রয়েছে। পুলিশের ফিজিক্যাল ফিটনেস ও দৃঢ় মানসিকতায় খেলাধুলা সাহায্য করে। এতে বাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলা, শরীর চর্চা ও মুক্তবুদ্ধির চার্চা বাড়ে। পুলিশের জাতীয় পর্যায়ে নানা ধরনের খেলা রয়েছে। এখন কাবাডি, ফুটবল, ক্রিকেট, অ্যাথলেটিকসহ নানা জাতীয় পর্যায়ের খেলায় বাংলাদেশ পুলিশ অংশ নেয়।
যশোরে এই ধরনের আয়োজন প্রত্যেক বছর অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
পড়ুন: হবিগঞ্জে ৩ পুলিশ সদস্য সাময়িক বরখাস্ত
মৌলিক ক্ষেত্রে গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে: পরিকল্পনামন্ত্রী
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘বাংলাদেশে মৌলিক ক্ষেত্রে গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।’ তরুণ কৃষিবিদদের জ্ঞান-বিজ্ঞান ও গবেষণায় অধিকতর মনযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তোমরা জাগো, ওঠো, বেড়িয়ে পড়ো।’
মঙ্গলবার সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বন্দুক-কামানের চেয়ে কলমকে বেশি শক্তিশালী বলে আখ্যায়িত করেছেন।
হাওরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সরকার ঘোষিত কর্মসূচি নিয়েও আলোচনা করেন তিনি।
আরও পড়ুন: আ. লীগ একটি রাজনৈতিক দল নয়, রাজনৈতিক আন্দোলন: পরিকল্পনামন্ত্রী
ওরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষকের বক্তৃতায় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. মতিয়ার রহমান হাওলাদার বলেন, ‘এইচএসসিতে শিক্ষার্থীরা যে পড়াশোনা করে তার ৪ ভাগের ১ ভাগ পড়াশোনা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ে এ প্লাস রেজাল্ট পাওয়া সম্ভব।’
তিনি বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী প্রায় বিনামূল্যে পড়াশোনা করেন। শিক্ষার্থীদের তিনি পড়াশোনা ও জ্ঞান চর্চায় মনযোগী হতে বলেন।
আরও পড়ুন: দেশে বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে: পরিকল্পনামন্ত্রী
নেতিবাচক রাজনীতি থেকে বিএনপিকে বেরিয়ে আসার আহ্বান পরিকল্পনামন্ত্রীর
গবেষণালব্ধ জ্ঞান মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
দেশের জনগণের কল্যাণে গবেষকদের প্রতি গবেষণালব্ধ জ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, `আপনাদের উদ্ভাবিত জ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগ জনগণের কল্যাণে ব্যবহার হওয়া উচিত। আমিও দেখতে চাই, আপনারা এখন যে গবেষণা করছেন তার প্রভাব কী হয়।‘
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আয়োজিত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, বিজ্ঞানী, গবেষক এবং বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’, ‘এনএসটি ফেলোশিপ’ এবং বিশেষ গবেষণা অনুদান প্রদানকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
এসময় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে ফেলোশিপ ও অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন।
আরও পড়ুন: মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী
বর্তমানে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব দরজায় কড়া নাড়ছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের এর জন্য (চতুর্থ শিল্প বিপ্লব) দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে। আমরা এ বিষয়টি মাথায় রেখে আপনাদের (গবেষক ও শিক্ষার্থীদের) সহায়তা করছি। আমরা চাই দেশের জনগণ আপনাদের কাছ থেকে সহায়তা পাবে।’
ফেলোশিপ ও গবেষণা অনুদান সরকারের রাজস্ব তহবিল থেকে প্রদান করা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা যারা ফেলোশিপ পাচ্ছেন, জাতির উন্নয়নে তাদের সর্বোচ্চ দায়িত্ব নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’
বিশ্ব নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে এগিয়ে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এই গতির (দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের গতি) সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: বীমার সুবিধা সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
নতুন প্রজন্মকে ত্যাগ ও সংগ্রামের কথা জানতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের করোনা জটিলতার ঝুঁকি কম: ব্রিটিশ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ
প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের করোনা জটিলতার ঝুঁকি অনেক কম বলে জানিয়েছেন শীর্ষস্থানীয় এক ব্রিটিশ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ।
সোমবার ইউকে হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সির পরামর্শক শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ শামেজ লাধানি বলেছেন, অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস (ওএনএস) প্রকাশিত নতুন তথ্য অনুযায়ী শিশুদের করোনা ঝুঁকি নিয়ে মা-বাবা,চিকিৎসক ও নীতিনির্ধারকদের আশ্বস্ত হওয়া উচিত।
ওএনএস গবেষণার প্রধান তদন্তকারী লাধানি বলেছেন, এটি আশ্বস্ত করার মতো যে,২০২০ সালের মার্চ থেকে করা জরিপে দেখা গেছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের বেশিরভাগই দীর্ঘস্থায়ী করোনা উপসর্গ অনুভব করেনি।
আরও পড়ুন: করোনা নিয়ন্ত্রণে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ প্রথম: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
তিনি জানান,গবেষণার ফলাফলে দেখা গেছে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের করোনা জটিলতার ঝুঁকি অনেকটাই কম।সেহেতু শিশুরা স্কুলে যেতে পারে।
লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন (এলএসএইচটিএম) এর গবেষণার সহ-প্রধান তদন্তকারী প্যাট্রিক এনগুইপডপ জোমো বলেছেন, এই গবেষণায় শিশু ও তরুণদের উপর করোনার সম্ভাব্য প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে।
ওএনএস, এলএসএইচটিএম ও ইউকে হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি যৌথভাবে গবেষণাটি পরিচালনা করেছে।
বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ৫৯ লাখ ৫৫ হাজার ছাড়াল
জাতীয় পরিবেশ পদক ২০২১ পাচ্ছেন দুই ব্যক্তি ও ২ প্রতিষ্ঠান
পরিবেশ উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতীয় পরিবেশ পদক-২০২১ এর জন্য দুজন ব্যক্তি ও দুটি প্রতিষ্ঠানকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেয়া হয়েছে।বৃহস্পতিবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত 'জাতীয় পরিবেশ পদক- ২০২১ প্রদান' সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ ক্যাটাগরিতে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি উপজেলার এম এ মতিন (মতিন সৈকত) এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে রাজশাহী সিটি করপোরেশন মনোনীত হয়েছে। পরিবেশ বিষয়ক শিক্ষা ও প্রচার ক্যাটাগরিতে ব্যক্তিগত পর্যায়ে পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন ঢাকা জেলার ইনাম আল হক এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে বেসরকারি পরিবেশ, উন্নয়ন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান 'বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডেজেনাস নলেজ (বারসিক)'।
আরও পড়ুন: ২৪ বিশিষ্ট নাগরিকের মাঝে একুশে পদক বিতরণসভায় অন্যান্যের মধ্যে মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, সচিব মো. মোস্তফা কামাল, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মাহবুব হোসেন, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) মো. মনিরুজ্জামান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীসহ কমিটির সদস্য হিসেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, জাতীয় পরিবেশ পদকপ্রাপ্ত প্রত্যেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে বাইশ ক্যারেট মানের দুই তোলা ওজনের স্বর্ণের বাজার মূল্য ও আরও ৫০ হাজার টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হবে।
জুন মাসে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কর্তক এই পদক দেয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: সম্মাননা পদক পেলেন ঢাকা বিভাগের নির্বাচিত ৫ শ্রেষ্ঠ জয়িতা
ইউজিসির পোস্ট ডক্টরাল ফেলোশিপ পেলেন শাবিপ্রবি অধ্যাপক ফারুক মিয়া
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক ‘পোস্ট ডক্টরাল ফেলোশিপ (২০২১-২২)’-এ মনোনীত হয়েছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ফারুক মিয়া।
তার গবেষণার শিরোনাম ‘হিস্টোরিকাল অ্যারকিটেকচার ফর অভজারভিং টিস্যু ফিজিওলজি অব হিলশা স্বাদ, ট্যানুলোসা হিলশা ইন ডাইভারস হেবিট্যাটস অব বাংলাদেশ’। এই গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক একই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: শামসুল হক প্রধান।
সম্প্রতি ইউজিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১০ জন শিক্ষক এ ফেলোশিপে মনোনীত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবির প্রক্টরিয়াল টিমে নতুন ৪ সদস্য
ফেলোশিপে মনোনীত অন্যরা হলেন- রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সরোয়ার আলী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারাসিটোলজি সহযোগী অধ্যাপক ড. অনিতা রাণি দে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত রসায়ন ও কেমিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুমন গাঙ্গুলী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. হালিমা খাতুন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোস্তাক আহমেদ, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল হক, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো খালেদ হোসেন, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. কাওছার হোসেন এবং নোয়াখালী সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. বকুল ভট্টাচার্য।
অনুভূতি প্রকাশ করে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফারুক মিয়া বলেন, এটি গবেষণার একটি সর্বোচ্চ ধাপ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তথা গবেষকদের জন্য এটি একটি স্বপ্ন। তাই আমি অত্যন্ত আনন্দিত এবং আমাকে পোস্ট ডক্টরাল ফেলো নির্বাচন করার জন্য ইউজিসিকে ধন্যবাদ। এই গবেষণার মাধ্যমে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর গবেষণার আরেকটি যাত্রা শুরু হবে এবং গবেষণার ধারাবাহিকতায় একসময় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শ্রেষ্টত্ব অর্জন করবে।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে অনলাইনে ক্লাস শুরু
গত বছর ২৩ সেপ্টেম্বর সব পাবলিক/প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি কলেজের শিক্ষকদের কাছ থেকে ফেলোশিপের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।