শরণার্থী
থাইল্যান্ডে মিয়ানমারের শরণার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আহ্বান জাতিসংঘের
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে থাইল্যান্ডে আসা মিয়ানমারের শরণার্থীদের সুস্থতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে।
সরকারি সূত্র অনুসারে, আশ্রয় ও সুরক্ষার জন্য দক্ষিণ-পূর্ব মিয়ানমারের কাইন এবং কায়াহ রাজ্যের সাড়ে ৯ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে থাইল্যান্ডের তাক এবং মে হং সন প্রদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।
যদিও সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকেরা মিয়ানমারে ফিরে এসেছে, তবুও এখনও কমপক্ষে এক হাজার শরণার্থী থাইল্যান্ডের মায়ে সোটে নামক স্থানে রয়ে গেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা বলেছে, স্থানীয় সম্প্রদায়ের মাধ্যমে থাই সরকার যে সহায়তা দিয়েছে, তা শরণার্থীদের জন্য টেকসই বা পর্যাপ্ত নাও হতে পারে।
সংস্থাটি বলেছে, মিয়ানমারে পরিস্থিতি খুবই অনিশ্চিত ও অস্থিতিশীল।
আরও পড়ুন: শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী, সুনামির আশঙ্কা নেই
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা বলেছে, মিয়ানমারে অব্যাহত সংঘাত চলতে থাকায় দেশটির নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রয়োজন।
সংস্থাটি থাই সরকারকে তাক প্রদেশের ‘মায়ে সোটে’তে ‘অস্থায়ী নিরাপত্তা এলাকায়’ আশ্রয় দেয়া শরণার্থীদের অন্য জায়গায় স্থানান্তর করার আহ্বান জানিয়ে বলেছে, তাদের এমন কোথাও স্থানান্তরিত করা হোক, অস্থায়ী হলেও যেখানে তারা নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে থাকতে পারে এবং উন্নত মানবিক সহায়তা পেতে পারে।
ইউএনএইচসিআর থাইল্যান্ডে নতুন আসা শরণার্থীদের মানবিক প্রয়োজনে সাড়া দেয়ার জন্য থাই কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছে।
আরও পড়ুন: ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রেসিডেন্ট ডেভিড সাসোলি আর নেই
সু চির আরও ৪ বছরের কারাদণ্ড
রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কূলে পৌঁছে দিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনী
ভাঙা নৌকায় ভেসে বেড়ানো ১২০ রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীকে উদ্ধার করে বন্দরে পৌঁছে দিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনীর একটি জাহাজ। গত কয়েকদিন আগে আচেহ প্রদেশ থেকে এই শরণার্থীদের নিয়ে নৌকাটি রওনা হয়।
বৃহস্পতিবার দেশটির নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, শরণার্থীবাহী কাঠের নৌকাটি গত কয়েকদিনে ভেঙে যায় এবং নৌকাটির ইঞ্জিনও নষ্ট হয়ে যায়।
বুধবার ইন্দোনেশিয়ার সরকারি এক বিবৃতিতে জানানো হয়, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তারা কূলে ভিড়তে অনুমতি দিচ্ছে। কারণ নৌকাটির অবস্থা খুবই খারাপ এবং এর যাত্রীদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
যদিও এর আগের দিন মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, নৌকায় থাকা ১২০ রোহিঙ্গাকে তারা খাবার, পানি ও ওষুধ সরবরাহ করবেন। তবে আন্তর্জাতিক অনুরোধ রেখে তাদের শরণার্থী হিসেবে গ্রহণ করা হবে না।
আরও পড়ুন: ভাসানচর থেকে পালানোর সময় রোহিঙ্গা নারীর মৃত্যু
নৌবাহিনীর ওয়েস্টার্ন ফ্লিট কমান্ডের মুখপাত্র কর্নেল লা ওডে এম হোলিব জানিয়েছে, ভাঙা নৌকাটিকে বৃহস্পতিবার ভোরে নৌবাহিনীর একটি জাহাজ আচেহ জেলার বিরুয়েন উপকূল থেকে প্রায় ৫৩ মাইল (৮৫ কিলোমিটার) দূরের লোকসেউমাওয়ে জেলার একটি বন্দর; ক্রুয়েং গেউকেহের দিকে নিয়ে যায়।
কর্নেল হোলিব আরও বলেন, তীব্র ঢেউ ও খারাপ আবহাওয়ার কারণে তাদের উদ্ধার অভিযান বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তবে, তারা আশা করছে আজকের আবহাওয়ার উন্নতির ফলে নিরাপদে শরণার্থীদের উদ্ধার করতে পারবে।
স্থানীয় উপজাতীয় মাছ ধরা সম্প্রদায়ের নেতা বদরুদ্দিন ইউনুস বলেন, স্থানীয় জেলেরা রবিবার প্রথমে নৌকাটি বিরুয়েনের উপকূল থেকে প্রায় ৬০ মাইল (৯৬ কিলোমিটার) দূরে ভাসতে দেখেছিল।
তিনি আরও বলেন, জেলেরা ৬০ জন নারী, ৫১ জন শিশু ও ৯জন পুরুষসহ যাত্রীদের খাবার, পানি ও কাপড় সরবরাহ করেছে। ভাসমান রোহিঙ্গারা জানিয়েছিল তারা মালয়েশিয়া যেতে চায়, নৌকার ইঞ্জিন বিকল হওয়ার আগে তারা ২৮ দিন ধরে সমুদ্রে ভাসছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের পক্ষে একা রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব নেয়া উচিত না: জাতিসংঘ
অন্যদিকে, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ইন্দোনেশিয়ার প্রতি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
২০১৭ সালের আগস্ট মাসে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থী বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। সেসময় মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ক্লিয়ারেন্স অপারেশন শুরু করেছিল। মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠীর প্রতি গণধর্ষণ, হত্যা এবং হাজার হাজার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছিল।
রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশের শরণার্থী শিবির ছেড়ে সমুদ্রপথে প্রাণ ঝুঁকি নিয়ে অন্যান্য মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। এক্ষেত্রে মুসলিম-অধ্যুষিত মালয়েশিয়া তাদের কাছে জনপ্রিয় একটি গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। এছাড়া পাচারকারীরাও মালয়েশিয়ায় তাদের উন্নত জীবন-যাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পাচার করছে। কিন্তু বাস্তবে মালয়েশিয়ায় এসে অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থী বন্দি জীবন কাটাচ্ছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম থেকে ভাসানচরের পথে ৬১৩ রোহিঙ্গা
চট্টগ্রাম থেকে ভাসানচরের পথে ৬১৩ রোহিঙ্গা
চট্টগ্রাম থেকে ভাসানচরের পথে রওনা হয়েছেন আরও ৬১৩ রোহিঙ্গা। চট্টগ্রাম পতেঙ্গা বোট ক্লাব থেকে শনিবার সকালে নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজে করে তারা ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা হন।
রোহিঙ্গাদের চট্টগ্রাম থেকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম নৌবাহিনীর জনসংযোগ বিভাগ।অতিরিক্ত ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার শামসুদ্দৌজা নয়ন জানান, অষ্টম দফায় রোহিঙ্গার দুটি দল গতকাল উখিয়া থেকে ভাসানচরের উদ্দেশে চট্টগ্রামে রওনা হয়।
দুপুরের পর রোহিঙ্গা শরণার্থীরা ভাসানচরে গিয়ে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কড়া নিরাপত্তায় বিএএফ শাহীন কলেজের অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্প থেকে পতেঙ্গা বোট ক্লাবে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের।এর আগে প্রায় আট মাস পর গত ২৫ নভেম্বর ৩৭৯ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে পৌঁছান। এর আগে ছয় দফায় প্রায় ১৮ হাজার ৬০০ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়। মাঝখানে প্রায় আট মাস বন্ধ থাকার পর আজ থেকে আবার রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গারা নিরাপদে ফিরে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই চায় না: জাতিসংঘ
ফেসবুকের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের মামলা, ১৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি
রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান অবাধ ও মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক বাস্তবায়নে সহায়ক হবে: জাপান
ঢাকা, ১৫ ডিসেম্বর (ইউএনবি)-রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে জাপান কাজ অব্যাহত রাখবে উল্লেখ করে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধান অবাধ ও মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক বাস্তবায়ন করতে সহায়ক হবে। বুধবার তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এ সংকটের একটি টেকসই সমাধান অবাধ ও মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক বাস্তবায়নের জন্য সহায়ক হবে।’
জাপানি রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন জাপান, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও এনজিওগুলোর সহযোগিতায় রোহিঙ্গা শরণার্থী ও স্বাগতিক বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের উন্নত জীবনযাত্রায় অবদান রাখবে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গারা নিরাপদে ফিরে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই চায় না: জাতিসংঘ
রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য বড় বোঝা: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ তাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে এখনও কোনো অগ্রগতি হয়নি। কক্সবাজারের পরিবেশ ও বনজ সম্পদ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
রবিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে নেদারল্যান্ডসের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত অ্যান জেরার্ড ভ্যান লিউয়েন দেখা করার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
বাংলাদেশে আটকে পড়া পাকিস্তানিদের সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা আমাদের ওপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি করছে।
আরও পড়ুন: খাদ্য অপচয় বন্ধের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
রাষ্ট্রদূত বলেন, তিনি শরণার্থী ও এনজিও কর্মীসহ বিভিন্ন লোকের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাদের সকলেই মনে করেন যে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান মিয়ানমারই দিতে পারে।
শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নে নেদারল্যান্ডসের অবদানের প্রশংসা করেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেদারল্যান্ডসের মতো ভূমি পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিকাশের অবস্থানের কথা উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী ডেল্টা প্ল্যান ২০২১ প্রণয়নে সহযোগিতার জন্য নেদারল্যান্ডকে ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন: কুমিল্লার ঘটনায় অপরাধীদের খুঁজে বের করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
তিনি তার নেদারল্যান্ডস সফরের কথাও স্মরণ করেন এবং বলেন যে,কৃষি সামগ্রী উৎপাদন ও সংরক্ষণের জন্য গ্রিন হাউস ব্যবস্থা দেখে তিনি অভিভূত হয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি কৃষিভিত্তিক দেশ এবং আমরা সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি।’
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা বাড়ানোর আহ্বান বাংলাদেশের
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং আঞ্চলিক দেশগুলোকে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট সমাধানে তাদের প্রচেষ্টা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
প্রত্যাবাসনে দেরি হওয়ায় বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শিবিরে ক্রমবর্ধমান হতাশায় গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা বলেছেন, জরুরি পদক্ষেপ এখন সময়ের প্রয়োজন।
সোমবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত তৃতীয় কমিটির সাধারণ বিতর্কে তার বক্তব্য প্রদানকালে তিনি বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা এবং তাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত ভয়াবহ অপরাধের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট: বিশ্ব সম্প্রদায়ের দ্রুত উদ্যোগ চান শেখ হাসিনা
তিনি বলেন, ‘যদিও বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের টিকা নিশ্চিত করাসহ মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে তবে এই দীর্ঘ সংকটের চূড়ান্ত সমাধান তাদের নিরাপদ, টেকসই এবং মর্যাদাপূর্ণ মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনের মধ্যে নিহিত আছে।’
কূটনীতিক আরও বলেন, আমরা মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে এই কমিটির বার্ষিক রেজুলেশনে ওআইসি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে কাজ করব।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট: জাতিসংঘ মহাসচিবের হস্তক্ষেপ চায় বাংলাদেশ
বিবৃতিতে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা এ বছর তৃতীয় কমিটিতে বাংলাদেশের মূল অগ্রাধিকারগুলিও তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেন,‘রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান ছাড়াও, বাংলাদেশের প্রধান অগ্রাধিকারগুলির মধ্যে রয়েছে ভ্যাকসিন সমতা নিশ্চিত করা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারীর প্রতি সহিংসতা মোকাবিলা করা, শিক্ষাসহ শিশুদের সকল অধিকার নিশ্চিত করা, অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার ও কল্যাণ রক্ষা করা এবং জাতীয় ও বৈশ্বিক স্তরে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষা।’
এসময় রাষ্ট্রদূত সমাজে মহামারির অসম প্রভাবের উপর আলোকপাত করে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্থিতিশীল পুনরুদ্ধারের জন্য বৃহত্তর সংহতি ও সহযোগিতার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার দ্রুত তদন্তের দাবি অ্যামনেস্টির
মুহিবুল্লাহ হত্যায় জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিশ্বব্যাপী সমালোচনা শুরুর পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ কে আব্দুল মোমেন শনিবার মুহিবুল্লাহর হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার অঙ্গীকার করেছেন।
ড. মোমেন বলেছেন, একটি স্বার্থানেষী মহল মুহিবুল্লাহকে হত্যা করেছে কারণ সে তার নিজ দেশ মিয়ানমার ফিরে যেতে চেয়েছিল। তিনি বলেন, ‘যারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’
আরও পড়ুন: উখিয়ায় শীর্ষ রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা
বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজারের উখিয়া ক্যাম্পে মুহিবুল্লাহ হত্যার ঘটনায় পুলিশ একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।
মুহিবুল্লাহর ভাই হাবিবউল্লাহর অভিযোগের ভিত্তিতে উখিয়া থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে খুনের এফআইআর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জুর মোর্শেদ।
বুধবার রাতে অজ্ঞাত হামলাকারীরা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করে। তাকে প্রথমে স্থানীয় একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়, সেখানে পৌঁছানোর পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: মুহিবুল্লাহ হত্যায় জড়িত সন্দেহে আটক ১
নিহত মানবাধিকার কর্মী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে মাস্টার মুহিবুল্লাহ নামে জনপ্রিয় ছিলেন। তিনি কুতুপালং ক্যাম্পে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) প্রধান ছিলেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার দ্রুত তদন্তের দাবি অ্যামনেস্টির
মুহিবুল্লাহ হত্যার তদন্ত দাবি হিউম্যান রাইটস ওয়াচের
শীর্ষ রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি ক্যাম্পে রোহিঙ্গা কর্মীদের ওপর অন্যান্য হামলার দ্রুত তদন্তের দাবি জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের জন্য মুহিবুল্লাহ ছিলেন একটি গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠস্বর। তিনি সবসময় রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন, তাদের অধিকার, জীবনমান ও ভবিষ্যত করণীয় সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে মত প্রকাশের অধিকার রক্ষা করেছেন।’
আরও পড়ুন: উখিয়ায় শীর্ষ রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা
তিনি বলেন, মুহিবুল্লাহর মৃত্যু শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গাদের অধিকার ও নিরাপত্তার হুমকির পাশাপাশি মিয়ানমারে তাদের নিরাপদে প্রত্যবাসনের প্রচেষ্টাকেও বাধাগ্রস্ত করবে।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে আরকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিচ এন্ড হিউম্যান রাইট সংগঠনের চেয়ারম্যান মুহিবুল্লাহকে (৪৬) কক্সবাজারের উখিয়া কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা নেতার মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রদূতের গভীর শোক
চট্টগ্রামে ৭৪ রোহিঙ্গা আটক
চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা থেকে ৭৪ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে বোয়ালখালী থানা পুলিশ। আটক রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্প থেকে পালিয়ে এসে বোয়ালখালীর বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে বলে পুলিশ জানায়।সোমবার (২৩ আগস্ট) দিবাগত রাতে উপজেলার কড়লডেঙ্গা ইউনিয়নের বু-আলী কালন্দর শাহ মাজার গেইট এলাকার বিভিন্ন ভাড়াঘর থেকে এসব রোহিঙ্গাদের আটক করা হয়।
আরও পড়ুন: সাগরে নৌকাডুবি: ১১ রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধারবোয়ালখালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন কান্তি দে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এসব রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্প থেকে পালিয়ে বোয়ালখালীতে চলে আসে। তারা লেবু বাগানসহ এলাকায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল করিম জানান, আটককৃত রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে একই পরিবারের ৭ জনসহ ৯ রোহিঙ্গা আটকস্থানীয়রা জানান, উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ে লেবু বাগানের মালিকরা স্বল্প মজুরিতে এ রোহিঙ্গাদের দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিক হিসেবে কাজ করিয়ে আসছে।
উল্লেখ্য এর আগে চলতি বছরের ২৬ জুন দিবাগত রাতে কড়লডেঙ্গা থেকে ৩১ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছিল বোয়ালখালী থানা পুলিশ।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে ৩৪ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে টিকা দেয়া শুরু
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর তুলনায় ভাসানচর অনেক উন্নত: জাতিসংঘ
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, কক্সবাজারে অবস্থিত বেশ কয়েকটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের তুলনায় ভাসানচর অনেক উন্নত ও সুবিধাসম্পন্ন। এছাড়া এখানে বাংলাদেশ সরকারের সাথে কাজ করতে আগ্রহী বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।
আরও পড়ুন: ভাসানচরে যাবেন জাতিসংঘের সফররত ২ শীর্ষ কর্মকর্তা
বুধবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ.কে. আব্দুল মোমেনের সাথে ইউএনএইচসিআরের দুই প্রতিনিধির বৈঠকের পর একথা জানান তারা। এসময় সংস্থাটির সহকারী হাই কমিশনার রউফ মাজো বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ভাসানচরে দারুণ কাজ করেছে। কক্সবাজারের রোহিাঙ্গা ক্যাম্পগুলোর তুলনায় ভাসানচরের পরিবেশ ও সুযোগ-সুবিধা অনেক বেশি এবং উন্নত।’
সহকারী হাইকমিশনার রউফ জানান, বাংলাদেশ সরকারের পাশে আছি এবং সবসময়ই সরকারের সাথে কাজ করবো। কক্সবাজারের মতো, প্রয়োজন অনুযায়ী বাংলাদেশের যেকোনও জায়গাতেই ইউএনএইচসিআর কাজ করবে।
আরও পড়ুন: সিওপি২৬ সভাপতি অলোক শর্মা ২ দিনের সফরে ঢাকায়
সংস্থাটির অপর সুরক্ষা বিষয় হাই কমিশনার গিলিয়ান ট্রিগস্ বলেন, ‘আমরা এখানে বাংলাদেশ সরকারের সাথে কাজ করতে চাই এবং রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই।’
তিনি জানান, রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই জাতিসংঘের লক্ষ্য।