ঘূর্ণিঝড়
জলোচ্ছ্বাসে ডুবেছে সুন্দরবন, ভেসে আসছে বন্য প্রাণী
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন ডুবে যায়। কয়েক ঘণ্টা ধরে নোনা পানি (লবণ পানি) সুন্দরবনে আটকে ছিল। বনের মধ্যে ৫ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়েছে। সুন্দরবনের মধ্যে জোয়ারের সময় পানি বাড়তে থাকায় বন্য প্রাণী দিগ্বিদিক ছুটাছুটি করতে থাকে।
জলোচ্ছ্বাসের কারণে দুদিন জোয়ারের সময় গোটা সুন্দরবন জলোমগ্ন হয়ে পরে। বনের কোন কোন অংশে বিভিন্ন প্রজাতির ছোট গাছ-পালা সম্পূর্ণ পানিতে ডুবে ছিল। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বণ্য প্রাণীর খাদ্য ও আবাসস্থল। জলোচ্ছাসে বন থেকে ভেসে যাওয়া মৃত এবং জীবিত ৬টি হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে। লবণ পানি ঢুকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুন্দরবনে মিষ্টি পানির উৎস পুকুর।
আরও পড়ুন: ভারত উপকূলে আঘাত আনলো ঘূর্ণিঝড় ইয়াস
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুন্দরবন বন্য প্রাণীদের নিরাপদ আবাসস্থল। জলোচ্ছাসের কারণে বনের সব ধরণের বন্য প্রাণী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লবণ পানি বনে আটকে থাকার কারণে বনভূমিও অতিমাত্রায় লবণাক্ত হবে। সুন্দরবনে বন্য প্রাণীর প্রজননের ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়বে। সব মিলে সুন্দরবনের জীববৈচিত্রের উপর প্রভাব পড়বে ইয়াসের জলোচ্ছ্বাসের কারণে।
জানা গেছে, বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের অববাহিকায় গড়ে উঠেছে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য সুন্দরবন এক প্রাকৃতিক দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সুন্দরবন নিজে ক্ষতবিক্ষত হয়ে বিভিন্ন সময় ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলবাসীকে রক্ষা করে চলেছে। প্রলঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা, বুলবুল এবং আম্ফান প্রথম তাণ্ডব চালায় সুন্দরবনে। পরে দুর্বল হয়ে এসব ঝড় উপকূলে আছড়ে পড়ে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব প্রথমে সুন্দরবনে পড়ে। নদ-নদী ও খালে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ৬ ফুট উচ্চতায় জলোচ্ছ্বাস হয়। বুধবার অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে সুন্দরনবনের বিভিন্ন অংশ ডুবে যায়। জোয়ারের সময় সুন্দরবনের মধ্যে ৫ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবারও জোয়ারের সময় সুন্দরবনে দুই ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয় বলে বন বিভাগ জানান।
আরও পড়ুন: ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের সম্ভব্য ক্ষতি এড়াতে চট্টগ্রামে প্রস্তুতি সম্পন্ন
বৃহস্পতিবার বিকালে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ অফিসের কাছে একটি ছোট এবং একটি বড় হরিণকে গলা সমান পানির মধ্যে ঘোরাঘুরি করতে দেখেছে স্থানীয় সাংবাদিকরা।
বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন চালতেবুনিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর জমাদ্দার জানান, জোয়ারের সময় সুন্দরবনের দিক দিকে একটি বন্যশুকর ভেসে যেতে দেখেছে।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে ইয়াসের প্রভাবে ১৬ গ্রাম প্লাবিত
বন সংলগ্ন খুড়িয়াখালী গ্রামের জেলে তুহিন ও ইউসুফ জানান, মাছ ধরে তারা জীবিকা নির্বাহ করে। দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনে তাদের আসা যাওয়া। কিন্তু বনের মধ্যে এত পানি তারা আগে কখনো দেখেনি। সুন্দরবনের মধ্যে মাথা সমান উচু পানিতে বিভিন্ন ধরণের বন্য প্রাণী ভেসে যাওয়ার কথা। এখনো বনের মধ্যে বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে আছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) গবেষক অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে ক্রমাগত এই ধরণের ঝড় জলোচ্ছ্বাস হচ্ছে। এই ধরণের দুর্যোগ মোকাবিলা করে পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসতে সাধারণত ২৫ বছর সময় লাগে। কিন্তু প্রায়ই সুন্দরবনের উপর দিয়ে ঝড়-জলোচ্ছাস বয়ে যাচ্ছে।
প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী জানান, অস্বাভাবিক জোয়ারে গোটা সুন্দরবনে লবণ পানি প্রবেশ করেছে। বনের মধ্যে ৫ ফুট উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হয়েছে। পানিতে সুন্দরবনের ৫৫টি মিষ্টি পানির পুকুরে লবণ পানি প্রবেশ করেছে। মিষ্টি পানির সংরক্ষণের জন্য ওই সব পুকুর খনন করা হয়। বনের স্টাফ এবং বন্য প্রাণীরা তাদের পানির চাহিদা মিটাতো ওই সব পুকুর থেকে। পানির কারণে কিছু বন্য প্রাণী বনের মধ্যে পুকুর পাড়ে উচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। ছোট এবং দুর্বল প্রকৃতির কিছু হরিণ ভেসে যেতে পারে। জলোচ্ছ্বাসের কারণে বন্য প্রাণীর কিছু ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী আরও জানান, ভবিষ্যতে এই ধরণের জলোচ্ছ্বাসের কথা বিবেচনায় নিয়ে সুন্দরবনে বন্য প্রাণীদের আশ্রয়ের কথা চিন্তা করে বনের মধ্যে উচু কেল্লা করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
ফরিদপুরে এক মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে শতাধিক ঘরবাড়ি লন্ডভন্ড
ফরিদপুরের সালথা ও নগরকান্দা উপজেলায় ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে ৫টি গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। হাজার হাজার গাছপালা ভেঙে উপড়ে পড়েছে। বিনষ্ট হয়েছে জমিতে রোপন করা পাটসহ নানা ফসল। তবে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ঘূর্ণিঝড়ে ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ও গাছপালা উপড়ে পড়ার খবর পেয়ে দুই উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
আরও পড়ুন: ভারত উপকূলে আঘাত আনলো ঘূর্ণিঝড় ইয়াস
প্রশাসন ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে ধেয়ে আসা এক মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বাসুয়ারকান্দি, রাহুতপাড়া, মেহেরদিয়া ও নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের গহেরপুর, বিবিরকান্দী গ্রামের দেড় শত ঘড়বাড়ি বিধ্বস্ত হয়। হাজার হাজার গাছপালা উপড়ে পড়ে। তবে হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি।
আরও পড়ুন: ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের সম্ভব্য ক্ষতি এড়াতে চট্টগ্রামে প্রস্তুতি সম্পন্ন
খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ওয়াদুদ মাতুব্বার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হাসিব সরকার, নগরকান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেতী প্রু।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে ইয়াসের প্রভাবে ১৬ গ্রাম প্লাবিত
মো. ওয়াদুদ মাতুব্বার জানান, দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে ধেয়ে আসা এক মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে সালথা ও নগরকান্দা উপজেলার ৫টি গ্রামের শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। তবে হতাহতের কোন ঘটনা ঘটেনি। ক্ষতিগ্রস্তদের সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।
ইয়াসের প্রভাবে খুলনায় ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ইয়াস অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। এর প্রভাবে খুলনায় ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি বৃষ্টি হচ্ছে। মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে সহস্রাধিক আশ্রয় কেন্দ্র
ভারত উপকূলে আঘাত আনলো ঘূর্ণিঝড় ইয়াস
ভারতের পূর্বাঞ্চল উড়িষ্যার উপকূলে আছড়ে পড়েছে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস।
বুধবার সকালে ঘূর্ণিঝড়টি উড়িষ্যায় আছড়ে পড়ে।
উড়িষ্যার আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, রাজ্যের বেলাশুর জেলার ধামরার উত্তর দিকে এবং বাহানাগার দক্ষিণ দিকে আছড়ে পড়ে। আঘাতে সময়ে ঘূণিঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৩০ থেকে ১৫০ কি.মি.।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকছে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায়
উড়িষ্যার শীর্ষ ত্রাণ কর্মকর্তা পি.কে. জেনা ইউএনবিকে জানান, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানা শুরু করেছে এবং এটি অতিক্রম হতে আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা লাগতে পারে।
তার মতে, ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে রাজ্যের বেলাশুর ও ভদ্রাক জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ইতিমধ্যেই প্রায় ৫ লাখ ৮০ বাসিন্দাকে অন্যত্র সড়িয়ে নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে ইয়াসের প্রভাবে ১৬ গ্রাম প্লাবিত
এদিকে পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত প্রায় ১২ লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার থেকেই রাজ্যের সচিবালয়ে অবস্থান করছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে কন্ট্রোল রুমের সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নিচ্ছেন তিনি।
এদিকে সতর্কতা স্বরূপ কলকাতা বিমানবন্দর বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
ইয়াসের প্রভাবে ভোলায় থেমে থেমে ঝড়ো বাতাস ও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে উপকূলীয় দ্বীপজেলা ভোলার উপর দিয়ে বুধবার সকাল থেকে থেমে থেমে ঝড়ো বাতাস ও মাঝে মাঝে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ভোলায় ঘণ্টায় ১৬ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইছে এবং ২৪ ঘণ্টায় ১৫.৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে ঝড়ে গাছ চাপা পড়ে ভোলার লালমোহন উপজেলায় আবু তাহের (৪৮) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকছে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায়
এদিকে বুধবার সকাল থেকে উত্তাল হয়ে উঠেছে মেঘনা নদী। জোয়ারের পানিতে গেলো রাতে জেলার মনপুরা, চরফ্যাসনের ঢাল চর, কুকুরি মুকরি,চরনিজাম, চর জহিরউদ্দিন, মাঝের চর, মদনপুরসহ প্রায় অর্ধশত নিন্মঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে ইয়াসের প্রভাবে ১৬ গ্রাম প্লাবিত
সাগর মোহনার ঢাল চর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম জানান, তার ইউনিয়নে প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ ঘর বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেসে গেছে অসংখ্য পুকুরের মাছ।
অপর দিকে জোয়ারের পানিতে করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ি বাঁধের ১৭টি স্পট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ভোলার মনপুরাতে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ২০ মিটার ও চরফ্যাসনের মাদ্রাজে ১০ মিটার বিধ্বস্ত হয়ে পানি প্রবেশে করেছে।
আরও পড়ুন: 'ইয়াস' মোকাবিলায় জনপ্রতিনিধিদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী বাবুল আক্তার জানান, গেলো রাতে ভোলার মেঘনা নদীর পানি বিপদ সীমার ৫৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ইতিমধ্যেই বিধ্বস্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত বেড়ি বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে।
ভোলা জেলা প্রশাসক মো. তৌফিক ই-লাহী চৌধুরী জানান, লালমোহনে গাছ চাপায় নিহত কৃষকের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া জোয়ারে প্লাবিত হলে রাতে ঢাল চরে প্রায় ১ হাজার ২০০ লোককে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ও কোস্ট ট্রাস্টে নিরাপদে সরিয়ে আনায় হয়। তাদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের সম্ভব্য ক্ষতি এড়াতে চট্টগ্রামে প্রস্তুতি সম্পন্ন
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর সম্ভাব্য ক্ষতি মোকাবেলায় ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। ইতিমধ্যে ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে সারাদেশে ঝড়বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
চট্টগ্রামে জেলা ও উপজেলায় প্রস্তুত করা হয়েছে ৫১১টি আশ্রয়কেন্দ্র। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গঠন করা হয়েছে একটি পর্যবেক্ষণ টিম ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক মেডিকেল টিম। মজুদ করা হয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ শুকনো খাবার।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ইয়াস: বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকছে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায়
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উমর ফারুক। তিনি ইউএনবিকে বলেন, জেলার আওতাধীন প্রতিটি উপজেলা প্রশাসনকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। উপকূলীয় এলাকায় প্রশাসনের উদ্যোগে চলছে সচেতনতামূলক মাইকিং।
এদিকে ঘুর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন দামপাড়াস্থ বিদ্যুৎ অফিসে ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হয়েছে।
চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী নগরবাসীকে ঘুর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন স্থাপিত নিয়ন্ত্রণ কক্ষে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জনান।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে ইয়াসের প্রভাবে ১৬ গ্রাম প্লাবিত
নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নম্বর ০৩১-৬৩০৭৩৯ অথবা ০৩১-৬৩৩৬৪৯।
বুধবার মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম জানান, উপকূলীয় ওয়ার্ডগুলোতে ৬০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়া চসিকের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির প্রধান কাউন্সিলর মো. জহুরুল আলম জসিম বলেন, নগরীর পতেঙ্গা, হালিশহর, কাট্টলীসহ উপকূলীয় ওয়ার্ডগুলোতে ঘূর্ণিঝড়ে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি আমরা। এসব এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ড কার্যালয়কে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ এবং দামপাড়ায় চসিকের প্রধান নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
কিভাবে নেবেন ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার প্রস্তুতি
গত দশক জুড়ে বেশ কয়েকটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার কারণে ঘূর্ণিঝড়ের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার ব্যাপারটি এখন অবশ্যম্ভাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়া চলমান করোনাভাইরাস মহামারির দরুণ দেশবাসী প্রচন্ড বিপজ্জনক সময়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। সেই ভয়াবহতা আরও বাড়িয়ে দিতেই যেন বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস।
ভারত মহাসাগরের অন্তর্গত উত্তর আন্দামান সাগর ও তৎসংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে এই ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তি। এখানে সৃষ্ট নিম্নচাপ ক্রমাগত শক্তিশালী হয়ে ২৪ মে-এর মধ্যে প্রবল এক ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অতঃপর উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ২৬মে বাংলাদেশের খুলনা উপকূলে পৌছতে পারে বলে জানিয়েছে আবাহাওয়া অধিদপ্তর।
এমতাবস্থায় ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়-ক্ষতি যেন কম হয়, সেজন্যে আগে থেকেই যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো নিতে হবে, চলুন জেনে নেই।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পূর্ব প্রস্তুতি
গ্রামাঞ্চলের ক্ষেত্রে
১। ঘর তৈরির সময় খেয়াল রাখুন যেন তা মাটি থেকে যথাসম্ভব উচু স্থানে হয়। মজবুত ভিত্তির ওপর লোহার বা কাঠের পিলার এবং ফ্রেম দিন। অতঃপর তা ছাউনি দিয়ে ঢেকে দিন। ছাউনিতে টিন ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক হউন কারণ ঝড়ের সময় টিন উড়ে মানুষ ও গবাদিপশু আহত করতে পারে। এ ক্ষেত্রে ০.৫ মিলিমিটার পুরুত্ববিশিষ্ট টিন ও জেহুক ব্যবহার করতে পারেন।
২। ঝড়ের কথা মাথায় রেখেই বাড়ির আঙ্গিনায় নারকেল, কলা, বাঁশ, তাল, কড়ইসহ অন্যান্য শক্ত গাছপালা লাগান।
৩। জেলে নৌকা, লঞ্চ ও ট্রলারসহ সকল জলযানগুলোতে রেডিও রাখুন। নদী বা সাগরে থাকার পুরোটা সময় আবহাওয়ার পূর্বাভাস শোনার অভ্যাস করুন।
৪। ঘূর্ণিঝড়ের সিজনে বাড়িতে কয়েক দিন মজুদ করে রাখা যায় এরকম শুকনো খাবার যেমন মুড়ি, চিড়া, বিস্কুট ইত্যাদি রাখবেন।
৫। ঘূর্ণিঝড়ের সময় কোন এলাকার লোক কোন আশ্রয়ে যাবে, গবাদিপশু কোথায় থাকবে, সব কিছু আগে থেকে ঠিক করে রাখুন। কাছে এবং দূরে যথা সম্ভব সব সুরক্ষিত জায়গাগুলো সবাই আগেই চিনে রাখুন। করোনার কারণে সামাজিক দূরত্বের ব্যাপারটা এ সময় ভুলে যাবেন না। আশ্রয় দাতা প্রতিষ্ঠানগুলোরও খেয়াল রাখতে হবে যেনো, প্রতিটি আশ্রয়স্থলে যথেষ্ঠ দূরত্ব বজায় রেখে লোক সমাগম হয়।
৬। সম্ভব হলে সব সময় কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম যেমন ব্যান্ডেজ, ডেটল প্রভৃতি সাথে রাখুন।
৭। আশ্রয়কেন্দ্রে বা অন্য আশ্রয়ে যাওয়ার সময় কী কী জিনিস সঙ্গে নিবেন আর কী কী জিনিস মাটিতে পুঁতে রাখবেন, তা আগে থেকেই ঠিক করে রাখুন। অতি প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী যেমন—চাল, ডাল, দেশলাই, শুকনো কাঠ, পানি ফিটকিরি, চিনি, নিয়মিত ব্যবহৃত ওষুধ, বইপত্র, ব্যান্ডেজ, তুলা, ওরস্যালাইন, দলিলপত্র, টাকা-পয়সা ইত্যাদি পানি নিরোধক পলিথিন ব্যাগে ভরে মাটিতে পুঁতে রেখে যেতে পারেন।
৮। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়ার পর সাথে সাথেই আপনার ঘরগুলোর অবস্থা একবার পরীক্ষা করে নিন। আরো মজবুত করার জন্য মাটিতে খুঁটি পুঁতে দড়ি দিয়ে ঘরের বিভিন্ন অংশ বেঁধে রাখতে পারেন।
৯। পূর্বাভাস পাওয়ার সাথে সাথে সিপিপির (সাইক্লোন প্রিপেয়ার্ডনেস প্রোগ্রাম) স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে দ্রুত যোগাযোগ করুন।
১০। বাড়ি ছাড়ার পূর্বে অবশ্যই আগুন নিভিয়ে যাবেন।
১১। টিউবওয়েলের মাথা খুলে নিন। অতঃপর সেই খোলা অংশ পলিথিন দিয়ে ভালোভাবে আটকে রাখুন যাতে টিউবওয়েলের মধ্যে ময়লা ঢুকতে পারবে না।
আরও পড়ুন: সাইক্লোন ইয়াস: উপকূলবর্তী বন্দরসমূহকে ২ নম্বর বিশেষ সংকেত জারি
১২। বৃষ্টির পানি বিশুদ্ধ ও খাওয়ার উপযোগী। তাই ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য আগে থেকেই ব্যবস্থা করে রাখুন। মাটির বড় হাঁড়িতে বা ড্রামে পানি রেখে তার মুখ ভালোভাবে আটকিয়ে দিন, যেন পোকা-মাকড় বা ময়লা-আবর্জনা ঢুকতে না পারে।
শহরাঞ্চলের ক্ষেত্রে
১। অনলাইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, টিভি ও রেডিও তে ঘূর্ণিঝড়ের খবর পেয়ে আতঙ্কিত না হয়ে শান্ত থেকে নির্দেশনা শুনুন এবং সে অনুযায়ী কাজ করুন।
২। আপনার পাওয়ার ব্যাংক, চার্জার লাইট, টর্চ লাইট ফুল চার্জ দিয়ে নিন। মোমবাতি এবং লাইটার সাথে রাখুন।
৩। আপনার বাসা যদি টিন শেড হয় বা আপনি যদি নিচ তলায় থাকেন তাহলে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পানিরোধক বাক্সে টেপ এবং পলিথিন দিয়ে পেঁচিয়ে রাখুন। মেঝেতে অবশ্যই মাল্টিপ্লাগ রাখবেন না।
৪। নিরাপত্তার জন্য শহর জুড়ে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, ফোন নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকতে পারে। রাস্তা বন্ধ থাকতে পারে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনো খাবার সংগ্রহে রাখুন।
৫। রেলিংয়ের ওপর ফুলের টব, সানশেডে থাকা এসির বাইরের যন্ত্র, কনস্ট্রাকশন এর জিনিস নিরাপদ স্থানে রাখুন। আপনার বাসার পাশে নির্মাণাধীন ভবন থাকলে আপনাকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
সাইক্লোন ইয়াস: উপকূলবর্তী বন্দরসমূহকে ২ নম্বর বিশেষ সংকেত জারি
চট্টগ্রাম,কক্সবাজার,মংলা এবং পায়রা উপকূলবর্তী সমুদ্রবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেতের বদলে ২ নম্বর বিশেষ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
সোমবার বঙ্গপোসগারের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে এবং আন্দামান সাগর সংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট নিম্নচাপটির তীব্রতার ফলে ধীরে ধীরে সাইক্লোন ইয়াশে ঘণীভূত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ নিয়ে সতর্ক থাকতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
নিম্নচাপটি সাগরের পূর্ব-মধ্য এবং ততসংলগ্ন এলাকা দিয়ে এসে উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে একই এলাকায় তীব্র ঘূর্ণিঝড় ইয়াশে পরিণত হয়েছে।
এক বিশেষ বুলেটিনে বলা হয় আজ সকাল ৬ টার দিকে এটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ৭৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্বদিকে, কক্সবাজার বন্দর থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে, মংলা বন্দর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা বন্দর থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে তিনগুণ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
এটি পরবর্তীতে তীব্র হয়ে উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে সরে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নিম্নচাপ কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ সর্বোচ্চ ৫৪ কিলোমিটার যা প্রতি ঘন্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার দমকা বা মাঝারি হাওয়া আকারে বয়ে যেতে পারে বলে বুলেটিনে বলা হয়। নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকট সাগর উত্তাল থাকবে বলে জানা গেছে।
এছাড়া সকল মাছ ধরার নৌকা এবং ভ্রমণকারীদের সতর্কতা অবলম্বনসহ উপকূলের নিকটে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। তাছাড়া তদেরকে গভীর সমুদ্রে না যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় খুলনায় ৮১৪ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত
ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’র ক্ষয়ক্ষতি সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখতে ও জান-মালের অপূরণীয় ক্ষতি প্রতিরোধে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে খুলনা জেলা প্রশাসন। জলোচ্ছ্বাস থেকে উপকূলীয় জনগোষ্ঠীকে বাঁচাতে প্রস্তুত করা হচ্ছে গতবারের ৮১৪টির অধিক আশ্রয়কেন্দ্র। প্রস্তুত রয়েছে ১১৪টি মেডিকেল টীম।
খুলনা জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির একাধিক সূত্র জানিয়েছেন, জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সকল সদস্য, এনজিও, সিপিপি, ফায়ার সার্ভিস সবাইকে যার যার মতো প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার জুম প্রযুক্তির মাধ্যমে সভায় যুক্ত হয়েছিলেন, তাদেরও নির্দেশনা দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ নিয়ে সতর্ক থাকতে বললেন প্রধানমন্ত্রী
পরে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ইসমাইল হোসেনের সাথে সভা করেছে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি।
শনিবার পর্যন্ত ৩৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে বলে প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি স্কুলগুলোকেও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। মহামারি কোভিড-১৯ এর কারণে বেশি সংখ্যক আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুতের সর্বাত্মক চেষ্টা করছে জেলা প্রশাসন।
আরও পড়ুন: আন্দামান সাগরে ঘণীভূত হওয়া ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে আঘাত করতে পারে
খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজিজুল হক জোয়ার্দ্দার বলেন, শুক্রবার জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। শনিবার পর্যন্ত ৩৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছিল। গত বছর ৮১৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছিল; এবার আরও বেশি সংখ্যক আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হবে। কোভিড-১৯ এর কারণে সংক্রমণ রোধে আশ্রয়কেন্দ্রের সক্ষমতার অর্ধেক মানুষকে একটি কেন্দ্রে রাখা হবে।
তিনি বলেন, প্রতিটি উপজেলায় ৫টি ও প্রত্যেক ইউনিয়নে একটি করে মোট ১১৪টি মেডিকেল টীম প্রস্তুত করা হয়েছে। যারা চিকিৎসা সেবা দেবেন। এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে শুষ্ক খাবার অর্থাৎ চাল-ডাল প্রস্তত রয়েছে-সরকারি নিদের্শনা মোতাবেক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।
আতঙ্ক নয়, উপকূলবাসীকে সজাগ ও সতর্কতার মাধ্যমে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আন্দামান সাগরে ঘণীভূত হওয়া ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে আঘাত করতে পারে
উত্তর আন্দামান সাগর ও বঙ্গপোসাগরের পূর্ব-মধ্য দিক দিয়ে বয়ে যাওয়া একটি নিম্নচাপ যেকোনও সময় ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এমনটা ই জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে, নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে তা উত্তর-পশ্চিম দিকে সড়ে উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ-খুলনা অঞ্চলের ওপর আগামী বুধবার আঘাত হানতে পারে।
আরও পড়ুন: আম্পানের এক বছরেও ক্ষত কাটিয়ে উঠতে পারেনি কয়রাবাসী
জেলে ও মাছ ধরা ট্রলার সংশ্লিষ্ট সকলকে এই সময়ে গভীর সাগরে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। এছাড়া ইতিমধ্যে যারা গভীর সাগরে অবস্থান করছে, তাদেরকে আগামীকাল রবিবারের মধ্যে উপকূলে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস কর্তৃপক্ষ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর নিয়মিত বুলেটিনে জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আন্দামান সাগর ও পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে।
আরও পড়ুন: ছাগলের সাথে বসবাস আম্পানে বিধ্বস্ত খাদিজার
এছাড়া রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেটের বিভাগে ঝড় হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের কয়েকটি জায়গাতেও বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে।
সারাদেশ দিন ও রাতে তাপমাত্রা অপরিবর্তীত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।