রোহিঙ্গা সংকট
রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে ওআইসি সদস্যদের দায়িত্ব নিতে হবে: মোমেন
বাংলাদেশ বলেছে, সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠী- রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে ওআইসি সদস্য দেশগুলোকে অবশ্যই সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব ভাগ করে নিতে হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডক্টর এ কে আব্দুল মোমেন রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জবাবদিহিতার জন্য ওআইসি অ্যাডহক মন্ত্রী পর্যায়ের কমিটির উন্মুক্ত বৈঠকে এই আহ্বান জানান।
শুক্রবার (১৭ মার্চ) মৌরিতানিয়ার রাজধানী নোয়াকচটতে ৪৯তম ওআইসি ফরেন কাউন্সিলের মন্ত্রীদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য মিয়ানমারকে জবাবদিহি করতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার দায়ের করা মামলার অবস্থার সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরেন।
শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সদস্য রাষ্ট্রগুলোর স্বেচ্ছায় অবদানের অবস্থা এবং মামলা চালিয়ে যাওয়ার জন্য তহবিলের প্রয়োজনীয়তার সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করা হয়েছে।
মোমেন আন্তঃদেশীয় আর্থ-সামাজিক বিপর্যয়, বিশেষ করে অনিশ্চিত ভবিষ্যত সহ হাজার হাজার কিশোর ও যুবকদের ধ্বংস হওয়া এড়াতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন।
গাম্বিয়া ও ওআইসিকে ধন্যবাদ জানাতে এবং আইনি পদক্ষেপে সদয় সমর্থনের জন্য রোহিঙ্গাদের ন্যায়বিচার প্রদানে মামলার গতি নিশ্চিত করার গুরুত্বের উপর আলোকপাত করেন তিনি।
আরও পড়ুন: রিয়াদে জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপিত
তিনি মামলার আইনি খরচে স্বেচ্ছায় অবদান রেখে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে ভার ভাগাভাগি করার আহ্বান জানান।
বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সৌদি আরব, তুর্কি, নাইজেরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ইরান, মিশর, পাকিস্তান ও গাম্বিয়া।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যামেরুন ও মৌরিতানিয়ার প্রতিপক্ষের সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।
উভয় দেশ বাংলাদেশের দ্রুত ও ধারাবাহিক অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং আশা প্রকাশ করে যে কৃষি, মৎস্য, বাণিজ্য, শিক্ষা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার সুযোগ ঘটবে।
মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিবের সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি।
মোমেন ১৬-১৭ মার্চ মৌরিতানিয়ার নোয়াকচটতে অনুষ্ঠিত ৪৯তম ওআইসি কাউন্সিল অব ফরেন মিনিস্টারস (সিএফএম)-এ বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন।
আরও পড়ুন: লস এঞ্জেলেসে বঙ্গবন্ধুর ১০৩তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন
রোহিঙ্গা সংকট ভুলে যাওয়ার নয়: ইইউ উচ্চ প্রতিনিধি
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতি বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি জোসেপ বোরেল বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের চাহিদা মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সংস্থার মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছেন।
শুক্রবার নয়াদিল্লিতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি বলেন, ‘এই সংকট ভুলে যাওয়ার নয়। ইইউ ২০১৭ সাল থেকে ২৮৭ মিলিয়ন ইউরো সহ বৃহত্তম মানবিক সহায়তাদানকারীদের মধ্যে একটি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধিতে আগ্রহী ইইউ: অ্যাম্বাসেডর
তারা বর্তমান সময়ে বৈশ্বিক সংকট– জলবায়ু পরিবর্তন এবং স্বল্পোন্নত দেশগুলোর দুর্বলতা এবং সেইসঙ্গে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিয়ে আলোচনা করেছেন।
শাহরিয়ার বলেন, ‘রোহিঙ্গা সঙ্কটসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এবং বিশ্ব সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে ইইউ-এর পররাষ্ট্র বিষয়ক উচ্চ প্রতিনিধি জোসেপ বোরেলের সঙ্গে দেখা করে ভালো লাগছে।’
আরও পড়ুন: পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্মানে নিউইয়র্কে বিসিআইইউয়ের বাণিজ্যবিষয়ক বৈঠক
অহিংস রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের আহ্বান জানিয়েছে ইইউ মিশনগুলো
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা আবশ্যক: হেগে বক্তারা
রোহিঙ্গাদের টেকসই স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও রোম সংবিধির রাষ্ট্রপক্ষগুলোকে দৃঢ়তার সঙ্গে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াতে হবে। বক্তারা শুক্রবার হেগে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টের (আইসিসি) ২১তম বার্ষিক সমাবেশ চলাকালীন একটি ইভেন্টে একথা বলেন।
নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশ দূতাবাস, গাম্বিয়া সরকার ও নো পিস উইথআউট জাস্টিস যৌথভাবে ‘রোহিঙ্গাদের জন্য ন্যায়বিচার’ শিরোনামের একটি সাইড ইভেন্টের আয়োজন করে।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম রিয়াজ হামিদুল্লাহ, আইসিসির ডেপুটি প্রসিকিউটর নাজহাত শামীম খান, বার্মা রোহিঙ্গা অরগানাইজেশন ইউকে এর প্রেসিডেন্ট তুন খিন, রাখাইন রাজ্যের উপদেষ্টা কমিশনের সাবেক সদস্য ল্যাটিশিয়া ভ্যান ডেন অ্যাসুম ও গাম্বিয়ান সলিসিটর জেনারেল হুসেইন থমাসি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: ল্যাভরভের আসন্ন সফরে জ্বালানি সহযোগিতা ও রোহিঙ্গা সংকটের ওপর ফোকাস দিবে ঢাকা
বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হামিদুল্লাহ বলেন, টেকসই সমাধানের জন্য মিয়ানমারের নতুন ফেডারেল কাঠামোর মধ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিয়ানমারের অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘু সম্পর্কিত সমস্যাগুলো অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। আঞ্চলিক গোষ্ঠী, সুশীল সমাজ, থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক, আসিয়ান অঞ্চলের নেতাদের এই অঞ্চলের যৌথ স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে দেশটির পরিস্থিতির দিকে নজর দেয়া দরকার। মানবিক সহায়তার পাশাপাশি রাজনৈতিক সমাধানে সমানভাবে নজর দেয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।
রোহিঙ্গা নেতা থুন খিন রোহিঙ্গাদেরকে স্থান দেয়া ও তাদের পক্ষে ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। তিনি রোহিঙ্গাদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য আর্জেন্টিনার আদালতে চলমান মামলার ওপর আলোকপাত করেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ডেপুটি প্রসিকিউটর নাজহাত খান রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্তের আইসিসি মামলার তদন্তের অগ্রগতি তুলে ধরেন।
গাম্বিয়ান সলিসিটর জেনারেল বলেন, গাম্বিয়া নিজেই দুই দশকের স্বৈরাচারী শাসনের শিকার হয়েছে। তাই তারা গণহত্যা কনভেনশনের সদস্য হিসেবে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা লড়ছে।
রাষ্ট্রদূত ল্যাটিশিয়া আসুম বলেন, অভ্যুত্থানের পর থেকে দুই বছর ধরে মিয়ানমারের স্থল পরিস্থিতি ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বেশিরভাগ আসিয়ান দেশের সঙ্গে মিয়ানমারের স্থল সীমানা নেই। তাই তারা রোহিঙ্গাদের নিয়ে প্রতিবেশি দেশগুলোর ওপর যে বোঝা তা যথাযথ বোঝে না।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে জাপানের সমর্থন চায় বাংলাদেশ
ল্যাভরভের আসন্ন সফরে জ্বালানি সহযোগিতা ও রোহিঙ্গা সংকটের ওপর ফোকাস দিবে ঢাকা
বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় এ মাসের শেষের দিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের পরিকল্পিত সরকারি সফরের সময় বাংলাদেশ রাশিয়ার সঙ্গে জ্বালানি খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখবে।
এছাড়াও বাংলাদেশ খাদ্যশস্য সরবরাহ এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ পাইপলাইনে থাকা প্রকল্পগুলোর দ্রুত বাস্তবায়ন নিয়েও আলোচনা করবে।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ইঙ্গিত দিয়েছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।
রবিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) এ এক সেমিনার শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি এবং তার এখানে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা তাকে স্বাগত জানাব এবং এই সফর রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের চ্যালেঞ্জ ও অগ্রাধিকারের বিষয়গুলো তুলে ধরার সুযোগ দেবে।’
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: বেইজিংয়ের প্রচেষ্টার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইতে পারে ঢাকা
মাসুদ আরও বলেন, বাংলাদেশ চায় রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে রাশিয়া বাংলাদেশের পাশে থাকুক।
পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, এখনও অনেক দিন আছে এবং মনে করিয়ে দিয়েছেন যে রাশিয়া একটি অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে।
ঢাকায় রাশিয়ান দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেছেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের জন্য আইওআরএ বৈঠকে অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ পাওয়া গেছে এবং এই সফরের সম্ভাবনার বিষয়ে কাজ চলছে।’
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন তার রুশ প্রতিপক্ষকে ২৪ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ২২তম আইওআরএ কাউন্সিল অব মিনিস্টারস (সিওএম) বৈঠকে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানান।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ সম্ভবত ২৩ নভেম্বর এখানে আইওআরএ বৈঠকে তার মূল ফোকাস ছাড়াও পারস্পরিক স্বার্থের দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।
রাশিয়া ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ) এর একটি সংলাপের অংশীদার।
আইওআরএর বর্তমান চেয়ারম্যান বাংলাদেশ আশা করছে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ এক ডজনেরও বেশি মন্ত্রী বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন বলে একজন সিনিয়র কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানিয়েছেন।
রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার সম্ভাবনা রয়েছে।
মোমেন গত মাসে কাজাখস্তানের আস্তানায় সিআইসিএ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে রুশ প্রতিপক্ষের সঙ্গে দেখা করেন এবং রোহিঙ্গাদের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন।
তিনি রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আরও শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সমর্থনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
আগস্টে সের্গেই ল্যাভরভ মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী উনা মং লুইন এবং অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নেইপিদোতে সাক্ষাৎ করেন।
সিনিয়র অফিসিয়ালস কমিটির (এসওসি) ২৪ তম বৈঠকের আগে আগামী ২২-২৩ নভেম্বর বাংলাদেশ আইওআরএ কাউন্সিল অব মিনিস্টারস মিটিং আয়োজন করবে।
ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ) হলো একটি আন্তঃসরকারি সংস্থা, যার লক্ষ্য তার ২৩টি সদস্য রাষ্ট্র এবং ১০টি সংলাপ অংশীদারের মাধ্যমে ভারত মহাসাগর অঞ্চলের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতা ও টেকসই উন্নয়ন জোরদার করা।
আইওআরএ সদস্য রাষ্ট্রগুলি হলো- অস্ট্রেলিয়া, বাংলাদেশ, কমোরোস ইউনিয়ন, ফরাসি প্রজাতন্ত্র, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, কেনিয়া, মাদাগাস্কার প্রজাতন্ত্র, মালয়েশিয়া, মালদ্বীপ, মরিশাস, মোজাম্বিক, ওমান, সেশেলস, সিঙ্গাপুর, সোমালিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, তানজানিয়া, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইয়েমেন।
আইওআর এ এর ২৩টি সদস্য রাষ্ট্র এবং ১০টি সংলাপ অংশীদারও মন্ত্রী পর্যায়ের ও সিনিয়র অফিসিয়াল (এসওসি) এই বৈঠকে যোগ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত ২১তম আইওআরএ সিওএম সভায় বাংলাদেশ আইওআরএ চেয়ারের পদ গ্রহণ করে এবং ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য টেকসইভাবে ভারত মহাসাগরের সুযোগগুলিকে কাজে লাগানোর’ শপথ গ্রহণ করে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচার পরিচালনায় ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রের সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য ইইউ’র ৩ মিলিয়ন ইউরো সহায়তা ঘোষণা
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান প্রধানমন্ত্রী।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক অংশগ্রহণের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং সংকট সমাধানের জন্য চাপ দিয়েছেন। যেহেতু বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে আগত ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিষয়ে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এসময় রোহিঙ্গাদের দ্বারা সংঘটিত পরিবেশ ধ্বংস, মাদক পাচার ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়গুলো হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৭ সালে সর্বশেষ অনুপ্রবেশের পর থেকে বাংলাদেশ গত পাঁচ বছর ধরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে আসছে।
তিনি আরও বলেন, তাদের (রোহিঙ্গাদের) জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা এখন কমছে। তাই তাদের আর আশ্রয় দেয়া সম্ভব না। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন করতে হবে।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী
যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন বৃহস্পতিবার
যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র সফর সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী
রোহিঙ্গা সংকট: তৃতীয় দেশে পুনর্বাসন বিবেচনা করছে জাপান
বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি বলেছেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারে মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য ‘তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনের বিষয়টি বিবেচনা করা দরকার’।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘তৃতীয় দেশে পুনর্বাসনের মাধ্যমে উদ্বাস্তুদের গ্রহণ করা একটি স্থায়ী সমাধান। এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে শরণার্থী সংকটের বোঝা ভাগ করে নেয়ার একটি উপায়।’
২০০৮ সালের ডিসেম্বরে জাপান এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে তৃতীয়-দেশে পুনর্বাসনের মাধ্যমে মিয়ানমার থেকে শরণার্থীদের গ্রহণ করার জন্য একটি পাইলট কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেয়।
এ প্রকল্পের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাসহ ৫৪টি পরিবার ও ২০০ জনকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রদূত।
তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, তারা ইউএনএইচসিআর-এর নির্দেশনায় জাপানে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের আরও সম্ভাবনা বিবেচনা করতে পারে।
নাওকি বলেন, জাপান, বাংলাদেশ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে একসঙ্গে মিয়ানমারে নিরাপদ, স্বেচ্ছায়, মর্যাদাপূর্ণ এবং টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য পরিবেশ তৈরি করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।
জাপানের রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর চাহিদার প্রতি গভীর মনোযোগ দিয়ে সক্রিয়ভাবে মানবিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত রাখবে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যু আন্তর্জাতিক অগ্রাধিকারে থাকবে: ইইউ
বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘রোহিঙ্গা সংকট: প্রত্যাবাসনের পথ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সেমিনারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমারবিষয়ক বিশেষ দূত নোয়েলিন হাইজার, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, ঢাকার ইউএস দূতাবাসের আঞ্চলিক উদ্বাস্তু সমন্বয়কারী ম্যাকেঞ্জি রো এবং ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বক্তব্য দেন।
রাষ্ট্রদূত নাওকি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের মৌলিক সমাধান হচ্ছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করা।
তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে জাপান বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত থাকবে। আমরা দ্বিপাক্ষিক সংলাপের মাধ্যমে দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করি। আমি দ্রুত প্রত্যাবাসনের জরুরি প্রয়োজন দেখছি।
মিয়ানমারের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এটি একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, এটা অত্যন্ত প্রশংসনীয় যে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণ গত পাঁচ বছরে মানবিক অবস্থান দেখিয়েছে এবং উদারভাবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে।
তিনি বলেন, জাপান অব্যাহতভাবে বাংলাদেশ ও রোহিঙ্গাদের প্রতি সমর্থন ও সংহতি প্রকাশ করবে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধানে বিভিন্ন দেশের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন: ব্রিটিশ হাইকমিশনার
রোহিঙ্গাদের স্বদেশে মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করছি: মন্ত্রী ওয়াং
রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান খুঁজতে চীন আন্তরিকভাবে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশে সফররত দেশটির স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।
কৃষিমন্ত্রী মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘মিয়ানমার একটি কঠিন দেশ, আমরা সঙ্কট সমাধানে আন্তরিকভাবে কাজ করছি এবং ভবিষ্যতেও আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব।‘
এর আগে শনিবার বিকাল ৫টা ১৮ মিনিটের দিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে কৃষিমন্ত্রী মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
রাজ্জাক ওয়াংকে জানান, দেশে সম্পদ সীমিত থাকায় বাংলাদেশ এত বড় বোঝা বহন করতে পারছে না।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা থাকার কারণে দেশের সামাজিক নিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতার ওপর প্রভাব পড়ছে।
তিনি বলেন, এটা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে ‘নতুন স্তরে’ উন্নীত করার আশা নিয়ে আজ (রবিবার) বাংলাদেশের নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।
বিমানবন্দর থেকে মন্ত্রী ওয়াং ধানমন্ডি ৩২-এ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে যান এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সেখানে তিনি দর্শনার্থী বইয়ে স্বাক্ষর করেন।
বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হুয়া চুনয়িং বলেছেন, ‘আমরা আশা করি এই সফরটি দুই দেশের নেতাদের মধ্যে সাধারণ বোঝাপড়াকে আরও কার্যকর করার, পারস্পরিক উপকারী সহযোগিতাকে আরও গভীর করার এবং সম্পর্ককে একটি নতুন স্তরে উন্নীত করার সুযোগ দেবে।’
তিনি বলেন, তার দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের সম্পর্ককে ‘অত্যন্ত মূল্যবান’ বলে মনে করেন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের আমন্ত্রণে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করছেন।
পড়ুন: বঙ্গবন্ধুর প্রতি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে একসঙ্গে কাজ করবে ঢাকা-টোকিও
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি ইয়োশিমাসা বলেছেন, তার দেশ রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশকে সহায়তা দেয়া অব্যাহত রাখবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন রোহিঙ্গা সমস্যার দ্রুত সমাধানে জাপানের আরও সম্পৃক্ততা চাইলে তিনি এ আশ্বাস দেন।
সোমবার জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যা ও ভাসানচরে স্বেচ্ছায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরসহ এ পর্যন্ত গৃহীত পদক্ষেপের বিষয় তুলে ধরে।
মন্ত্রী হায়াশি ইউক্রেন, উত্তর কোরিয়া ও ইন্দো-প্যাসিফিকের পরিস্থিতি তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশের বোঝাপড়া ও সহযোগিতা কামনা করেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নেবে সরকার: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয় ও যুদ্ধবিরোধী দেশ।
তিনি বলেন, ‘ইরাক, আফগানিস্তান, সিরিয়া বা লিবিয়া যেখানেই যুদ্ধ হোক সেখানে জানমালের ক্ষতি হয় যা আমরা ইউক্রেনে প্রত্যক্ষ করছি। বাংলাদেশ মানবিকতার ভিত্তিতে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং ইউক্রেনে মানবিক প্রবেশাধিকারের পদক্ষেপ সমর্থন করেছে।’
মোমেন কয়েক ঘণ্টা টোকিওতে ট্রানজিটে ছিলেন এবং ১১ থেকে ১৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মহাসাগর সম্মেলনে অংশ নিতে সোমবার বিকালে পালাউয়ের উদ্দেশে রওনা হন।
টোকিও থেকে প্রাপ্ত এক বার্তা অনুসারে, ২০২১ সালের নভেম্বরে মন্ত্রী হায়াশি দায়িত্ব নেন। তার দায়িত্ব নেয়ার পর ঘন্টাব্যাপী এ দ্বিপক্ষীয় বৈঠকটি ছিল তাদের প্রথম আনুষ্ঠানিক সভা।
বাংলাদেশে জাপান একটি বহুল পরিচিত নাম এবং বৃহত্তম দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন অংশীদার উল্লেখ করে মোমেন বাংলাদেশে আরও জাপানি বিনিয়োগের আহ্বান জানান। বিশেষ করে সমুদ্র অর্থনীতি, অটোমোবাইলস, আইসিটি, ফার্মাসিউটিক্যালস, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং ও ইলেকট্রনিক্সের মতো উদীয়মান খাতে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: মার্কিন আইনপ্রণেতাদের ভূমিকা রাখার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আরও জাপানি কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগে আকৃষ্ট হবে এবং দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে সমুদ্র অর্থনীতি, আইসিটি ও ফার্মাসিউটিক্যালসে আরও সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছেন।
তরুণ জনগোষ্ঠীকে আরও বেশি বৃত্তি ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের অনুরোধের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হায়াশি বলেছেন, জাপান মানবসম্পদ উন্নয়নে বাংলাদেশকে বৃত্তি ও দক্ষতা উন্নয়ন অব্যাহত রাখবে।
এ সময় টোকিওতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমেদ, মিশন উপপ্রধান শাহ আসিফ রহমান ও পরিচালক (পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয়) মো. এমদাদুল ইসলাম চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান প্রত্যাবাসনে নিহিত: পররাষ্ট্র সচিব
১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আশ্রয় দিয়ে বিশাল আর্থ-সামাজিক ও পরিবেশগত খরচ বহন করতে পারবে না বলে পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ।
রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান প্রত্যাবাসনের মধ্যেই নিহিত উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘এ জন্য তাদের অবশ্যই রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবাসন করতে হবে।’
২২ ও ২৩ মার্চ পাকিস্তানের ইসলামাবাদে ওআইসির কাউন্সিল অব ফরেন ফিনিস্টারের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেখানে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহিতার বিষয়ে ওআইসির অ্যাডহক মন্ত্রী পর্যায়ের কমিটির উন্মুক্ত বৈঠকে এই আহ্বান জানান পররাষ্ট্র সচিব।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের আবারও ‘বাঙালি সম্প্রদায়’ বলল মিয়ানমার
রোহিঙ্গা সংকট: বাংলাদেশ ও গাম্বিয়াকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে সৌদি আরব
বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা বিন ইউসুফ আল দাহিলান বলেছেন, তার দেশ রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে। রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নিপীড়নের অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে গাম্বিয়ার করা মামলার প্রতিও সমর্থন অব্যাহত রাখবে সৌদি আরব।
সোমবার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা আশ্রয়ণ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে সৌদি দূতাবাসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার সময় রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সৌদি আরব শুরু থেকেই রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশকে সহায়তা করে আসছে। বিভিন্ন ফোরামে এই বিষয়টিকে উত্থাপন করার সময় তাদের কণ্ঠ আরও জোরালো করবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আগামী দিনেও এ ক্ষেত্রে দুই সরকারের মধ্যে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সুশীল সমাজের নেতাদের সঙ্গে নুল্যান্ডের সাক্ষাৎ
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদের সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন টেকসই প্রত্যাবাসন এবং জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সৌদি পক্ষের কাছে সহযোগিতা চেয়েছিলেন।
সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট সমাধানে সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দেন।
এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার কখনই কোনো বিদেশিকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট দেয়ার কথা ভাবে না।
আরও পড়ুন: ওআইসির সিএফএম অধিবেশনে যোগ দিতে পাকিস্তান যাবেন না পররাষ্ট্রমন্ত্রী
তিনি অবশ্য বলেছেন, বাংলাদেশি পাসপোর্ট নিয়ে কেএসএতে থাকা কয়েকজন রোহিঙ্গা পেয়েছেন। এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আরও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
সৌদি রাষ্ট্রদূত বলেন, সৌদি আরব মানবিক কাজের ক্ষেত্রে এবং বিশ্বের বেশিরভাগ দেশে দরিদ্রদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়ার ক্ষেত্রে একটি নেতৃস্থানীয় দেশ।
ইয়েমেন, সিরিয়া এবং ইরাকের মতো বিপর্যয় ও যুদ্ধের সাক্ষী থাকা ভ্রাতৃপ্রতিম দেশগুলোকে ‘বাদশাহ সালমান মানবিক সহায়তা ও ত্রাণ কেন্দ্র’ এবং ‘সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্টে’র মাধ্যমে মানবিক সহায়তা দেয়া হয়।