রোহিঙ্গা সংকট
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক ‘কৌশলগত পর্যায়ে’ উন্নীতকরণে জোর মালয়েশিয়ার
বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার সম্পর্ককে ‘কৌশলগত পর্যায়ে’ উন্নীত করার ওপর জোর দিয়েছেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন আবদুল্লাহ। দু’দেশের মধ্যে ডিজিটাল অর্থনীতির ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণের আশ্বাসও দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে টেলিফোন করলে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে মতবিনিময় করেন ড. মোমেন।
চলতি বছর বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান ড. মোমেন এবং দু’দেশের বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
দু’দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানটি যথাযথভাবে উদযাপন করতে সম্মত হন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব যাচাই ত্বরান্বিত করতে সম্মত বাংলাদেশ-মিয়ানমার
মালয়েশিয়ার সব খাতে বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগদানের সুযোগ উন্মুক্ত করেছে দেশটির সরকার- মালয়েশিয়ার সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন চ্যানেলের মাধ্যমে আরও বেশি কর্মী পাঠানোর মাধ্যমে মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মকাণ্ডে অবদান রাখতে বাংলাদেশ সরকারের প্রস্তুতির কথা জানান তিনি।
বাংলাদেশ থেকে তথ্য প্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তি নিয়োগের বিষয়টি বিবেচনা করার অনুরোধও করেন ড. মোমেন।
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় সব ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার সহায়ক ভূমিকার প্রশংসা করে ড. মোমেন। বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য মালয়েশিয়ার অব্যাহত সমর্থনের অনুরোধ জানান তিনি।
পাঁচ লাখের বেশি করোনার টিকা অনুদান হিসেবে দেয়ার জন্য তিনি মালয়েশিয়া সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রশংসা করে সাইফুদ্দিন বলেন, মিয়ানমার থেকে ১১ লাখেরও বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষকে আশ্রয় দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশাল মানবিক পদক্ষেপের জন্য পুরো বিশ্ব কৃতজ্ঞ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ- জাপানের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর: আসছে ৫০ টাকার স্মারক রৌপ্য মুদ্রা
উভয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী দু’দেশের মধ্যে আরও ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধার্থে প্রস্তাবিত মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি দ্রুত সম্পন্নের ওপর জোর দেন।
আসিয়ান সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনারশিপসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের প্রার্থীতার পক্ষে মালয়েশিয়ার সমর্থন চান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী দু’দেশের দ্বীপক্ষীয় সম্পর্ককে আরও গতিশীল করতে উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময়ে কাজ করতেও সম্মত হয়েছেন।
ড. মোমেন কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে সাইফুদ্দিনকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানালে তিনি পরবর্তীতে পারস্পরিক সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরে সম্মত হন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়ে সরকারের উন্মুক্ত দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা ইইউ’র
‘রোহিঙ্গা’: মুক্তির অপেক্ষায় ওয়াহিদুজ্জামান ডায়মন্ডের বাংলা ফিচার ফিল্ম
২০২০ এ মুক্তির কথা থাকলেও করোনার প্রথম ধাক্কায় পিছিয়ে যায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র নির্দেশক সৈয়দ ওয়াহিদুজ্জামানের ‘রোহিঙ্গা’ সিনেমার শুভ মহরত। গত ২ নভেম্বর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড থেকে ছাড়পত্র পেয়ে যায় ছবিটি এবং এর মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যায়। সমসাময়িক রোহিঙ্গা সংকটকে কেন্দ্র করে বানানো হয়েছে সিনেমাটির গল্প। এবারের বিনোদনধর্মী ফিচারে থাকছে বিশ্বমানের এই চলচ্চিত্রটি নিয়েই কিছু কথা।
এক নজরে রোহিঙ্গা সংকট
২০১৭ সালের আগস্টের শেষের দিকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী একটি ক্র্যাকডাউন শুরু করে, যা উত্তর রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের কয়েক হাজার সদস্যকে বাড়িঘর ছাড়া করে। এই দেশত্যাগ ছিল মিয়ানমারে কয়েক দশকের বিধিনিষেধমূলক নীতি এবং নিপীড়নের চূড়ান্ত পরিণতি। বর্তমানে কক্সবাজার ও নোয়াখালীর ভাসানচর এলাকায় প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: কপিরাইট লঙ্ঘনের অভিযোগে বাংলালিংকের বিরুদ্ধে জেমসের মামলা
করোনাভাইরাস মহামারি চলাকালীন মানবিক পরিষেবাগুলো কমিয়ে দেয়ায় শিবিরগুলোর অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। ২০২১ সালে রোহিঙ্গারা মুখোমুখি হয় দাবানল এবং বন্যার। শিবিরগুলোতে করোনাভাইরাস শনাক্ত ক্রমাগত বাড়তে থাকে। অন্যদিকে বাড়তে থাকে উদ্বাস্তু ও সাহায্য গোষ্ঠীর ওপর সরকারি বিধিনিষেধ।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। অভ্যুত্থান দেশব্যাপী আইন অমান্য আন্দোলনের সূত্রপাত করে, মিয়ানমারের সীমান্ত অঞ্চলে সংঘাত পুনঃপ্রজ্বলিত করে এবং বিদ্যমান মানবিক সংকটকে আরও খারাপ করে।
আরও পড়ুন: জীবন সঙ্গীনী হিসেবে ডিলেন মেয়ার’কে বেছে নিলেন ‘টোয়াইলাইট’ তারকা ক্রিস্টেন স্টুয়ার্ট
সমসাময়িক চাঞ্চল্যকর গল্পের ছবি ‘রোহিঙ্গা’ মুক্তির পথে
'রোহিঙ্গা' বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের মানবেতর জীবনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনী কর্তৃক সামরিক অভিযান চালানোর পর নিজেদের দেশ থেকে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের দুর্দশার একটি আভাস দেবে। বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের নিয়ে আবর্তিত হবে বাংলা ফিচার ফিল্মটি। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন বিশ্বজুড়ে একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনাতে পরিণত হওয়ার এই সময়ে খুব শিগগিরই মুক্তি পেতে যাচ্ছে সিনেমাটি। বাংলা ভাষায় নির্মিত এই ছবিটি ইংরেজি, ফরাসি, স্প্যানিশ, হিন্দি ইত্যাদিসহ বেশ কয়েকটি ভাষায় প্রকাশিত হবে।
‘রোহিঙ্গা’ চলচ্চিত্র নির্মাতার কথা
বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র পরিচালক সৈয়দ ওয়াহিদুজ্জামান ডায়মন্ড মূলত সর্বহারা এবং সমাজের ছিন্নমূল মানুষের জীবনকে তাঁর ছবির মূল উপজীব্য রাখেন। এ কারণে তিনি ‘নিম্নবর্গের মানুষের জীবনের রূপকার’ বা ‘প্রান্তিক মানুষের জীবনের প্রতিকৃতি’ উপাধিতে ভূষিত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: তিথির অসুখ: ইমরাউল রাফাত পরিচালিত চরকির নতুন ওয়েব ফিল্ম
এখন পর্যন্ত তিনি মোট চারটি পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ফিচার ফিল্ম তৈরি করেছেন। নাচোলের ঐতিহাসিক সাঁওতাল বিপ্লবের ওপর ভিত্তি করে ‘নাচোলের রানী’ ডায়মন্ডের প্রথম ফিচার ফিল্ম। এই বিশেষ ছবির জন্য তিনি কলকাতার রাশিয়ান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গোর্কি সদন থেকে সম্মানসূচক পুরস্কার এবং টালিগঞ্জ অতন্দ্র সাংস্কৃতিক সংসদ ইন্ডিয়া থেকে ‘অতন্দ্র পদক’ পেয়েছেন।
২০০৯ সালে তাঁর দ্বিতীয় চলচ্চিত্র 'গঙ্গাযাত্রা'-এর জন্য ‘সেরা পরিচালক’ এবং ‘সেরা চিত্রনাট্যকার’ বিভাগে দুটি বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। 'গঙ্গাযাত্রা' মুভিটিই ডায়মন্ডের দুটি সহ মোট আটটি বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে।
আরও পড়ুন: আমেরিকার প্রেসকট চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত অমিতাভ রেজার 'রিকশা গার্ল'
এছাড়াও তিনি ব্যাংককে ‘বাচসাস অ্যাওয়ার্ড’, ‘স্টার সিনে অ্যাওয়ার্ড’, ‘ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড বাংলা ২০১০’ অর্জন করেছেন।
ডায়মন্ডের পঞ্চম মুভি হিসেবে ‘রোহিঙ্গা’ কোন রকম কর্তন ছাড়াই সেন্সর বোর্ড থেকে প্রেক্ষাগৃহে দেখানোর জন্য ছাড়পত্র পেয়ে গেছে। খুব শিগগিরই মুক্তি পেতে যাচ্ছে মুভিটি। ‘গঙ্গাযাত্রা’ ও ‘অন্তর্ধান’ এর মতো এবারো ডায়মন্ডের সাথে প্রযোজনায় থাকছেন শবনম শাহনাজ চৌধুরী।
আরও পড়ুন: পুরাতন বান্টি-বাবলি জুটিকে টপকাতে আসছে বান্টি অর বাবলি-২
‘রোহিঙ্গা’ ফিল্মের অভিনেতা-অভিনেত্রীরা
ছবিটির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন মডেল তারকা ও অভিনেত্রী আরশি হোসেন। টিভি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রিতে তার যাত্রা শুরু হয়। এর আগে দুটি মুভিতে কাজ করলেও এটাই তার প্রথম মুভি যেখানে তিনি মূল ভূমিকায় আছেন। এছাড়া ২০২০-এ শূটিং শুরু হওয়া ডায়মন্ডের ‘কোভিড-১৯ ইন বাংলাদেশ’ মুভিতেও মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। আরশির সাথে থাকছেন মঞ্চ থেকে শুরু করে বড় পর্দার পরিচিত মুখ ওমর আয়াজ অনি।
এছাড়া অন্যান্য চরিত্রে আছেন সাদ্দাম হোসেন, মাস্টার তানজিদ, জান্নাত আক্তার শুচি, সামিয়া আক্তার বৃষ্টি, এস এম মহসিন, শ্রেয়া, হায়াতুজ্জামান খান, এনামুল হক, সাকিবা বিনতে আলী, বদল সিদ্দিক ও লিটন।
আরও পড়ুন: কবির খান-এর ‘৮৩’ তে কপিল দেব-এর বেশে রনবীর সিং
পরিশিষ্ট
২০০৭ থেকে শুরু করে মোট ১৪ বছর ধরে নির্মিত হয়েছে সৈয়দ ওয়াহিদুজ্জামানের ‘রোহিঙ্গা’ চলচ্চিত্রটি। স্বয়ং পরিচালকের ভাষায়- ‘সরকারের কাছ থেকে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিলাম। যেহেতু এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা, আমি পরিস্থিতিটিকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে চিত্রিত করার জন্য দীর্ঘ সময় ধরে শুটিং করতে চেয়েছিলাম।’ সর্বসাকুল্যে একজন দক্ষ সিনেমা নির্মাণ শিল্পীর পরিণত চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে নিঃসন্দেহে একটি ল্যান্ডমার্ক হিসেবে অধিষ্ঠিত হবে।
মিয়ানমারের ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টি; বাংলাদেশের অসাধারণ উদারতার প্রশংসা
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে এবং মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সংশ্লিষ্ট সকলকে সহায়তা করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অত্যন্ত দৃঢ় প্রতিজ্ঞ বলে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি জানিয়েছেন।
তিনি 'অসামান্য সক্রিয় উদারতা' প্রদর্শনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন। একই সাথে, তিনি মনে করেন, বাংলাদেশের জন্য এটি অত্যন্ত ব্যয়বহুল।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানাতে জন কেরি ঢাকায়
শুক্রবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের সাথে বৈঠকের পর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় যৌথ সংবাদ সম্মেলনে কেরি এই মন্তব্য করেন।
এ সময় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, সাবের হোসেন চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম, ভালনারেবল ফোরামের রাষ্ট্রপতির বিশেষ দূত আবুল কালাম আজাদ, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল মিলার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।
কেরি জানান, মিয়ানমারের জনগণ যা প্রত্যক্ষ করছে তা এখন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের যে অবিশ্বাস্য চেতনা ও সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে তার জন্য বাইডেন প্রশাসন অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।
তিনি বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহায়তায় পদক্ষেপ নেয়া জরুরি কারণ এটি একমাত্র বাংলাদেশের দায়িত্ব নয়।
বাইডেন প্রশাসন মিয়ানমারের জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য অনেক চেষ্টা করে কিন্তু কোন ফল পাননি।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, 'আমি জানি যে আমরা খুব কঠোর লড়াই করেছি এবং মিয়ানমারকে অন্য পথে নেয়ার চেষ্টা করেছি। আমাদের উচ্চ প্রত্যাশা ছিল। আমি ব্যক্তিগতভাবে নাইপিডো গিয়েছিলাম এবং জেনারেলদের সাথে দেখা করেছি।'
কেরি বলেন, বাংলাদেশ অন্যতম সহায়তার হাত এবং রোহিঙ্গাদের একটি দ্বীপ দিয়েছে যাতে রোহিঙ্গারা ভবিষ্যত গোছাতে সক্ষম হয়। তবে এটি দীর্ঘমেয়াদী নয়। 'এতে সমস্যার সমাধান হয় না।'
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, 'রোহিঙ্গারা বন ও ভূতাত্ত্বিক ব্যবস্থা ধ্বংস করছে। আমরা আশাবাদী যে যুক্তরাষ্ট্রের কার্যকর উদ্যোগ রোহিঙ্গাদের একটি সাধারণ জীবনযাপনের জন্য মিয়ানমারে নিরাপদে ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য সহায়তা করতে পারে।'
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আঞ্চলিক, বহুপাক্ষিক উদ্যোগ চায় ঢাকা
বর্তমানে, কক্সবাজার ও ভাসানচরে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর প্রত্যাবাসন চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।
২০১৮ সালে ১৬ জানুয়ারি বাংলাদেশ ও মিয়ানমার 'ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট' সম্পর্কিত একটি নথিতে স্বাক্ষর করে যা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পক্ষে সহজ হবে বলে আশা করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ জানায়, রোহিঙ্গারা তাদের সরকারের ওপর আস্থা রাখে না এবং তাদের মধ্যে আস্থা বাড়াতে বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দেয়।
রোহিঙ্গা সঙ্কটের স্থায়ী সমাধানের জন্য-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক, বহুপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক এবং বিচার ব্যবস্থা- একাধিক উপায়ে চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশ মিয়ানমারের বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ জাপান, চীন, রাশিয়া, ভারত ও আসিয়ানভুক্ত দেশসমূহ থেকে বেসামরিক নাগরিক পর্যবেক্ষক মোতায়েনের প্রস্তাব করেছিল।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় কেরি বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় 'আগ্রাসীভাবে' এগিয়ে যাওয়ার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতিশ্রুতি জানাতে ঢাকায় পৌঁছান।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার তাকে স্বাগত জানান।
আরও পড়ুন: তরুণদের শক্তি ও সম্ভাবনা বৃদ্ধিতে প্রধানমন্ত্রীর জোর
২২ এপ্রিল শুরু হতে যাওয়া বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানাতে তিনি চার দিনের ভারত সফর শেষে ঢাকায় এসেছেন। ৪০টি দেশের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানের অংশগ্রহণে ভার্চুয়ালি এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে জলবায়ু প্রভাব বিশেষত দুর্বল জলবায়ু পরিস্থিতে বাংলাদেশের নেতৃত্বের জন্য স্বীকৃতি পাবেন।
ঢাকায় কেরি বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি এবং মূল উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সাথে সাক্ষাৎ করেন।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে বলে জানায় ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম ও ভালনারেবল টুয়েন্টি গ্রুপ অব ফাইন্যান্স মিনিস্টারস-এর সভাপতি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪০ জন বিশ্বনেতাকে 'বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে' যোগ দেয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান। জো বাইডেন কর্তৃক আয়োজিত এই ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলন জনগণের জন্য লাইভ স্ট্রিম করা হবে।
আরও পড়ুন: জলবায়ুর কারণে বিশ্বে ২ কোটি মানুষ অভিবাসী হওয়ার আশঙ্কা
'বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন' জোরালো জলবায়ু কর্মকাণ্ডের প্রয়োজনীয়তা এবং অর্থনৈতিক সুবিধাগুলিকে তুলে ধরবে। গ্লাসগোতে এই নভেম্বরে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনের (সিওপি ২৬) পথে একটি মূল মাইলফলক হয়ে থাকবে।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জকে জোর দিয়ে বলেছেন, 'যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্ব গভীর জলবায়ু সংকটের মুখোমুখি এবং আমাদের বৈদেশিক নীতি, কূটনীতি এবং জাতীয় নিরাপত্তার কেন্দ্রবিন্দুতে জলবায়ু পরিবর্তন থাকা উচিৎ।
প্যারিস চুক্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে নিতে বাইডেন তার অফিসের প্রথম দিনই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।
পরে ২৭ জানুয়ারি তিনি ঘোষণা দেন, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় প্রধান অর্থনীতির প্রচেষ্টা ঝালাইয়ে তিনি শিগগরই নেতাদের একটি শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করবেন।
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক: মোমেন- ব্লিংকেন বৈঠক ২৪ ফেব্রুয়ারি
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ‘বিস্তৃত’ আলোচনা করতে সোমবার রাতে ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনা হবেন।
রোহিঙ্গা সংকট: প্রত্যাবাসনের পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান ইউএনএসসি’র
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সঙ্কটের মূল কারণগুলো খুঁজে বের করে তা সমাধানের প্রয়োজনীয়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করে, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছা, টেকসই এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের পরিবেশ তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের (ইউএনএসসি) সদস্যরা।
রোহিঙ্গা সংকট: দ্বন্দ্ব নয়, শান্তিপূর্ণ সমাধান চান প্রধানমন্ত্রী
আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থে বাংলাদেশ কোনো ধরনের বিরোধে না জড়িয়ে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব নিয়ে মিয়ানমারের সাথে আলোচনা অব্যাহত রেখেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এটি বাংলাদেশের জন্য বড় এক বছর: ব্রিটিশ হাইকমিশনার ডিকসন
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেছেন, চলতি বছরটি বাংলাদেশ এবং যুক্তরাজ্যের জন্য বড় এক বছর এবং বাংলাদেশের ‘অসাধারণ সাফল্য’ উদযাপনে বছরজুড়ে একাধিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবেন তারা।
ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর জোরপূর্বক নয়: ঢাকা
রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করা ভাসানচর দ্বীপটি ৩০ বছরের পুরোনো এবং নিরাপদ উল্লেখ করে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সেখানে রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক স্থানান্তর করা হয়নি, দ্বীপটিতে বসবাসের উপযোগী সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান তারকা: তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করে বুধবার তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসওগ্লু বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই দেশটি দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান তারকা এবং পুরো বিশ্বের জন্য টেকসই উন্নয়নের মডেল হয়ে উঠেছে।
শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় প্রকৃত নেতৃত্ব দেখিয়েছে বাংলাদেশ ও তুরস্ক: তুর্কি রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মুস্তফা ওসমান তুরান বলেছেন, জীবনযাপনের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশসহ সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে সত্যিকারের নেতৃত্ব দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।