গোয়ালন্দ
গোয়ালন্দে পুকুরে গোসল করতে নেমে যমজ দুই শিশুর মৃত্যু
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের পুকুরে গোসলে নেমে পানিতে ডুবে টাপুর ও টুপর নামের যমজ দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তাদের দুই বোনের বয়স ১২ বছর। শনিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
টাপুর ও টুপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত বেসরকারি মুনস্টার কলেজিয়েট স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
স্থানীয়রা জানায়, শনিবার বেলা ৩টার দিকে টাপুর ও টুপুরকে উপজেলা পরিষদের পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মৃত শিশু দুটির বাবার নাম হোসেন মোল্লা। তাদের বাড়ি গোয়ালন্দ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড ইছাক শেখের পাড়া। শিশু দুটি তার নানী আন্না বেগমের কাছে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স এলাকার ভাড়া বাসায় বসবাস করতো।
আরও পড়ুন: মাগুরায় পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
স্থানীয় কয়েকজন জানান, কয়েক বছর আগে মা ও বাবার মধ্যে সর্ম্পকচ্ছেদ হওয়ায় দুই কন্যা শিশু টাপুর ও টুপুরকে নিয়ে মা রীনা বেগম তার বাবা শেখ আব্দুল গনির বাড়িতে থাকতেন। পরবর্তীতে আব্দুল গনি মারা যান এবং রীনা বেগমও অন্যত্র বিয়ে করেন। বাধ্য হয়ে কন্যা শিশু দুটির নানী আন্না বেগম তাদের লালন-পালন করতেন। একটি ভাড়া বাসায় তাদের রেখে উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন বাসা বাড়িতে কাজ করতেন।
শনিবার দুপুর দুইটার দিকে স্কুল থেকে বাসায় ফিরে নানীর কাছে বলেই তারা উপজেলা পরিষদের পুকুরে গোসল করতে নামে। ওই সময় পুকুরে আর কেউ ছিল না। অনেকক্ষণ হয়ে যাওয়ায় শিশু দুটি ফিরে না আসায় চারিদিকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। পরে কোয়ার্টারে স্থানীয় এক আনসার সদস্যকে শিশুদের খোঁজ নিতে বলেন। বেলা আড়াইটার দিকে ওই আনসার সদস্য পুকুরের কাছে গিয়ে দেখেন শিশু দুটি ভেসে উঠেছে। তাৎক্ষণিকভাবে তার নানীকে জানানোর পর শিশুদের উদ্ধার করে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, জমজ শিশু দুটি পুকুরে ডুবে মারা যাওয়ার খবর শোনা মাত্রই আমাদের থানা পুলিশের একটি দলকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। শিশু দুটির মৃত্যুতে থানায় একটি অপমৃত্যু(ইউডি) মামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: টিউবওয়েলে পানি পানের সময় পড়ে গিয়ে শিশুর মৃত্যু
গোয়ালন্দে দা দিয়ে কুপিয়ে যুবকের হাত বিচ্ছিন্ন, গ্রেপ্তার ২
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে রিয়াজ শেখ (২৫) নামে এক যুবককে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা মামলায় দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন র্যাব-৮ ফরিদপুর ক্যাম্প কোম্পানীর অধিনায়ক, পুলিশ সুপার মো. শফিকুল ইসলাম।
ভুক্তভোগী রিয়াজ শেখ দৌলতদিয়া ইউনিয়নের সোরাপ মণ্ডল পাড়ার মো. বাবু শেখের ছেলে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- মো. হুমায়ুন শেখ (১৮) ও মো. ফরহাদ শেখ (২৫)। হুমায়ুন গোয়ালন্দ উপজেলার উত্তর দৌলতদিয়া শামসু মাস্টার পাড়ার হাশেম শেখ এর ছেলে ও ফরহাদ একই গ্রামের মো. সালেক শেখের ছেলে।
আরও পড়ুন: খুলনায় মাছ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা
র্যাব জানায়, গত রবিবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব জানতে পারে প্রেমঘটিত কারণে গোয়ালন্দের উত্তর দৌলতদিয়া শামসু মাস্টার পাড়ার মো. রিয়াজ শেখ নামের এক যুবককে কুপিয়ে এবং তার হাত বিচ্ছিন্ন করে, তাকে হত্যার চেষ্টা করে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। অভিযুক্ত হুমায়ুনকে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা এলাকা থেকে বুধবার ভোররাতে গ্রেপ্তার করা হয়। তার আগে আরেক অভিযুক্ত ফরহাদকে মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার জানান, হুমায়ুন স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের দলনেতা। তারা দীর্ঘদিন ধরে রেলস্টেশন এলাকায় মাদক ব্যবসা, ছিনতাই সহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত।
র্যাব আরও জানায়, অভিযুক্ত হুমায়ুন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তার সঙ্গে পাশের এলাকার একটি মেয়ের প্রেম ছিল। কিন্তু ভুক্তভোগী রিয়াজের কারণে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য তৈরি হয়। এরই প্রেক্ষিতে গত ৬ মার্চ দৌলতদিয়া রেলস্টেশন এলাকায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিয়াজের হাত বিচ্ছিন্ন করে হত্যা করার চেষ্টা চালায় তারা।
আরও পড়ুন: ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে কিশোরকে কুপিয়ে হত্যা!
পুলিশ সুপার মো. খোরশেদ আলম জানান, আসামি মো. হুমায়ুন শেখ বিভিন্ন অসামাজিক ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। কয়েক বছর আগে সে নারী ও শিশু নির্যাতনের একটি মামলায় ১৪ দিন কারাভোগ করে, বর্তমানে সে জামিনে রয়েছে বলেও জানায় র্যাব-৮।
পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আসামিদের রাজবাড়ীর রেলওয়ে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
স্থানীয় কয়েকজন জানায়, গত রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রিয়াজ শেখ দৌলতদিয়া রেলস্টেশন এলাকায় রেললাইনের পাশে দাড়িয়ে মুঠোফোনে কথা বলছিল। এসময় হুমায়ুন তার সহযোগীকে সঙ্গে করে নিয়ে এসে করে ধারালো ডাব কাটার সোল দিয়ে কোপ দেয়। এসময় রিয়াজ বাম হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে এক কোপে কব্জির ওপর থেকে (কনুইয়ের নিচ থেকে) হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে রেললাইনের ওপর পড়ে। স্থানীয় লোকজন তাৎক্ষনিকভাবে তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করে। বর্তমানে রিয়াজ সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আরও পড়ুন: নাটোরের লালপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
রাজবাড়ীতে তুচ্ছ ঘটনার জেরে যুবকের হাত কেটে বিচ্ছিন্ন
রাজবাড়ীতে তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে এক যুবকের হাত কেটে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে প্রতিপক্ষ। রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া রেলস্টেশন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আহত রিয়াজ শেখ (২৪) উপজেলার দৌলতদিয়া সোরাপ মন্ডল পাড়ার মো. বাবু শেখের ছেলে।
অভিযুক্ত হুমায়ুন ওরফে হুমাই (২৫) একই উপজেলার সামসু মাস্টার পাড়ার হাসেম ওরফে হাসির ছেলে।
আরও পড়ুন: বিচ্ছিন্ন হাত জোড়া লাগিয়ে অসাধারণ সাফল্য খুলনার চিকিৎসকদের
দৌলতদিয়া ইউনিয়নের স্থানীয় ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল জলিল ফকির বলেন, আমরা কয়েকজন দৌলতদিয়া রেলস্টেশন এলাকায় বসে গল্প করছিলাম। এর মধ্যে রিয়াজ নামের ছেলেটি চিৎকার করে দৌড়ে আমার বোডিংয়ের মধ্যে ডুকে যায়। তখন আমরা খেয়াল করি তার বাম হাত থেকে অঝোরে রক্ত ঝরছে। আমরা কয়েকজন মিলে ওই তরুণকে ধাওয়া দিলে সে দৌড়ে পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: বরিশালে বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ: ‘কারিগরের’ দুই হাত বিচ্ছিন্ন
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুদার জানান, প্রেম সংক্রান্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে। আহত রিয়াজকে ফরিদপুর থেকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটকে পুলিশ কাজ শুরু করেছে।
গোয়ালন্দে যুবকের লাশ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যা
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নিজ বাড়ি থেকে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে পরিবারের দাবি তাকে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে দৌলতদিয়ার শাহদৎ মেম্বার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহত জাকির শেখ (৩৩) ওই এলাকার ইউসুফ শেখের ছেলে ও পেশায় পরিবহন শ্রমিক।
নিহতের স্ত্রী মাহফুজা খাতুন জানান, বুধবার সন্ধ্যার দিকে বাড়ি থেকে বের হন। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর তার স্বামী বাড়ি থেকে বের হলে তিনি পাশেই তার বাবার বাড়ি গিয়ে থাকতেন। রাত ২টা-৩টার দিকে বা কোনো কোনোদিন ভোররাতে বাড়ি ফেরার সময় ফোন দিলে স্বামীর সঙ্গে বাড়ি ফিরে আসতেন। কিন্তু বুধবার রাতে কখন বাড়ি ফিরেছে জানতে পারিনি।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় ছুরিকাঘাতে স্কুলছাত্র নিহত, নারীর লাশ উদ্ধার
তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে ডাকাডাকি করে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে ঝাড়ু দিয়ে ঘরের দরজা খুলে দেখেন স্বামী ঘরের মেঝেতে উপুর হয়ে পড়ে আছেন। মেঝেতে রক্ত পড়ে আছে। মুখের সামনের দুটি দাত ভাঙা এবং বুকে ও হাতে রক্ত জমাট বাধা অবস্থায় আছে। তার চিৎকারে দেবর দাউদ ও পাশের ঘর থেকে শ্বাশুরি আসেন। ঘরের ভেতর বিদ্যুতের সুইচ বোর্ড খোলা ছিল।
মাহফুজার অভিযোগ, জাকির মাঝেমধ্যে এলাকার কিছু বখাটে নেশাগ্রস্ত বন্ধুদের বাড়ি এনে আড্ডা দিতেন। তিনি নেশার সঙ্গে জড়িত।
এই কারণে স্বামীকে দুর্বৃত্তরা হত্যা করে ফেলে রেখেছে বলে দাবি করছেন তিনি।
আরও পড়ুন: বিশ্বনাথে চালককে ছুরিকাঘাত করে টমটম ছিনতাই
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন নাকি তাকে মেরে ফেলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না। আমরা সব বিষয় মাথায় নিয়ে কাজ করছি। সকল আলামত সংগ্রহ করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
তবে হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকলে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
গোয়ালন্দে বাসের চাপায় ভ্যানচালকের মৃত্যু
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় বাসের চাপায় এক স্কুলভ্যানের চালকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. মিজান প্রামানিক (২৫) গোয়ালন্দ উপজেলার শিল্পকলা একাডেমি সংলগ্ন মুন স্টার কলেজিয়েট স্কুলের ভ্যানচালক। তিনি উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের চর বালিয়াকান্দি গ্রামের মো. নুরু প্রমানিকের ছেলে।
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় জনগণ এক ঘণ্টার অধিক সময় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় মহাসড়কের উভয় পাশে যানবাহনের দীর্ঘ যট সৃষ্টি হয়ে যায়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বিক্ষোভকারীরা শান্ত হলে প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা পর বিকাল ৩ টা ২০ মিনিটের দিকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় শিশু-বৃদ্ধ নিহত
এ বিষয়ে আহলাদিপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ভ্যানচালক মিজান প্রামানিক মকবুলের দোকান নামক স্থানে ভ্যান যোগে স্কুলের শিক্ষার্থীদের নামিয়ে দিয়ে পুনরায় স্কুলের দিকে ফিরছিলেন। মকবুলের দোকান থেকে গোয়ালন্দের দিকে সামান্য একটু দূরে যাওয়া মাত্র দ্রুত গতির হানিফ পরিবহনের একটি দূরপাল্লার বাস পেছন থেকে স্কুল ভ্যানটিকে চাপা দিয়ে চলে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ভ্যানচালকের মৃত্যু হয়।
স্থানীয় লোকজন ঘাতক হানিফ বাসটিকে আটক করেছে। তবে চালক পলাতক আছে। লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে আইনি প্রক্রিয়া চলমান আছে। মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলে নিহত
গোয়ালন্দে যৌনপল্লীতে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর অসহায় ৮০০ জন নারী ও ১০০ জন শিশুর মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে দৌলতদিয়া রেলস্টেশন শহীদ মিনার চত্বরে বেসরকারি সংস্থা শাপলা মহিলা সংস্থার পক্ষ থেকে এসব খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
আয়োজকরা জানান, দাতা সংস্থা দি কাদেরী চ্যারিটেবল ফাউন্ডেশনের (কেসিএফ) সহযোগিতায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফরিদপুরের সিএনবি ঘাট ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া যৌনপল্লীর অসহায় নারী ও শিশুর মাঝে এসব খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
আরও পড়ুন: মানিকগঞ্জে অসহায়দের মাঝে বিএনপির খাদ্য সামগ্রী বিতরণ
খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে নারীদের জন্য রয়েছে ২৫ কেজি ওজনের এক বস্তা চাউল, ছয় কেজি আলু, পাঁচ কেজি ডাল, এক কেজি লবণ, এক লিটার সয়াবিন তেল, পাঁচটি সাবান ও একটি করে মাস্ক। এছাড়া শিশুদের জন্য দেয়া হয়েছে চার প্যাকেট বিস্কুট, এক কেজি চিনি, ২৫০ গ্রাম ওজনের এক প্যাকেট করে গুড়া দুধ ও ৫০০ গ্রাম ওজনের দুই প্যাকেট সুজি।
আরও পড়ুন: মাগুরায় ২ হাজার কর্মহীন মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ
শাপলা মহিলা সংস্থার সভানেত্রী চঞ্চলা মন্ডলের সভাপতিত্বে জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুল হক খান, পৌরসভার মেয়র মো. নজরুল ইসলাম, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার, দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মন্ডল, শাপলা মহিলা সংস্থার সহকারী ব্যবস্থাপক খোরশেদ আলম প্রমুখ।
গোয়ালন্দে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় বিয়ের আশ্বাসে এক কিশোরীকে (১৫) ধর্ষণের অভিযোগে শুক্রবার রাতে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার সকালে গ্রেপ্তার ইউসুফ শেখকে (২৫) রাজবাড়ীর মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে শুক্রবার গোয়ালন্দ ঘাট থানায় অভিযুক্ত ইউসুফের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
ইউসুফ কোতোয়ালি থানার দক্ষিণ চর মাধবদিয়া দিরাজতুল্লার ডাংগী গ্রামের সোলায়মানের ছেলে।
আরও পড়ুন: বিয়ের আশ্বাসে প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা, অভিযুক্ত কারাগারে
শনিবার ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মা অভিযোগে জানান, ইউসুফ মাঝে মধ্যে তার মেয়ের সাথে মোবাইলে কথা বলতো। মোবাইলে কথা বলতে নিষেধ করায় ইউসুফ ক্ষিপ্ত হয়ে তার মেয়েকে অপহরণ করার চেষ্টা চালায়। তার মেয়ে গত সোমবার (২২ নভেম্বর) আনুমানিক বেলা ১১টার দিকে উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের স্থানীয় আতর চেয়ারম্যানের বাজারে যায়। সেখান থেকে কৌশলে তাকে ইউসুফ মোটরসাইকেলে তুলে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার কামাডাঙ্গী এলাকার ইউসুফের মামা জনৈক রানার বাড়িতে নিয়ে যায়। তুলে নেয়ার দুই দিন পর বুধবার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে তার মেয়ে বাড়ি ফিরে আসে।
বাড়ি ফিরে কিশোরী পরিবারকে জানায়, ইউসুফ তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ করে। সেখান থেকে সে বাড়িয়ে ফিরতে না চাইলে তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এখন সে বিয়ে করবে না বলে অস্বীকার জানায়। পরে তিনি বাদী হয়ে অভিযুক্ত ইউসুফকে আসামি করে শিশু ও নারী নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: বিয়ের আশ্বাসে ‘ধর্ষণ’: সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কারাগারে
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবির জানান,এ বিষয়ে কিশোরীর মা শুক্রবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।পরে রাতেই অভিযুক্ত ইউসুফকে গ্রেপ্তার করে শনিবার রাজবাড়ীর মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মাটি সরে দেবে গেছে সেতু, ঝুঁকি নিয়ে চলাচল
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের তেনাপচা এলাকায় খালের ওপর নির্মিত সেতুর নিচ থেকে মাটি ধসে একাধিক স্থানে দেবে বড় ধরনের ফাটল দেখা দিয়েছে। মাঝের অংশ সম্পূর্ণভাবে দেবে গেছে। দুই সপ্তাহ ধরে এমন পরিস্থিতি হওয়ায় ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করা হলেও হালকা যান চলাচল অব্যাহত থাকায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে।
জানা যায়, দেবগ্রামের তেনাপচা আশ্রয়ন ইউজেড-আরএইচডি (পিয়ার আলী মোড়) সড়কটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীন। সড়কের ৫২৩ মিটার চেইনেজে অবস্থিত দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ২০১১-২০১২ অর্থ বছরে খালের ওপর প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যায়ে ১২ মিটার দৈঘ্যের ২ ভেন্ট বক্স কালভার্ট নির্মাণ হয়। কালভার্টের তলদেশের মাটি ধসে যাওয়ায় কয়েক স্থানে দেবে গেছে। ফেলে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। দ্রুত সেতুটি মেরামত বা পুনঃনির্মাণের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এলজিইডির গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকৌশলী গত ১৬ নভেম্বর নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে পাঠানো প্রতিবেদনে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) রাজবাড়ীর তত্ত্বাবধানে গোয়ালন্দের দেবগ্রাম ইউনিয়নের তেনাপচা এলাকায় পদ্মা নদী থেকে উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের কেউটিল হয়ে বয়ে যাওয়া খালটি ফরিদপুর পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার দৈর্ঘের খনন কাজ করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে গোয়ালন্দ উপজেলা এলাকায় ছিল প্রায় ১১ কিলোমিটার।
আরও পড়ুন: খুলনায় ৮০০ কোটি টাকার তরমুজ বাণিজ্যের সম্ভাবনা
এলাকাবাসীর অভিযোগ, পর্যাপ্ত জায়গা ও ঢালু না রেখে খাল খনন করা হয়। এমনকি সেতুসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে গার্ডার, সিসি ব্লক, জিওব্যাগ সহ প্রয়োজনীয় সুরক্ষার ব্যবস্থার প্রয়োজন থাকলেও করা হয়নি। ফলে গত দুই বছরে বর্ষাকালে খাল দিয়ে পানি প্রচণ্ড বেগে প্রবাহিত হওয়ায় সেতুর নিচে এবং পাশ থেকে মাটি ধসে যায়। তেনাপচা এলাকার প্রায় এক কিলোমিটার জুড়ে খালের দুই পাশ বেশি ধসে পড়ে। এতে ৬-৭টি পরিবার অন্যত্র সরে যেতে বাধ্য হয়। আরও বেশ কিছু পরিবার ভাঙন ঝুঁকিতে পড়ে।
শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) সরেজমিনে দেখা যায়, তেনাপচা খালের ওপর নির্মিত সেতুটির মাঝখানে এবং একপাশ ভেঙে দেবে গেছে। সেতুর নিচে একাধিক স্থান ভেঙে গেছে। সেতুতে ওঠতে বাম পাশের বেশ জায়গা নিয়ে মাঠি সরে গেছে। ওই অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে মাহেন্দ্র, রিকশা, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলের মতো হালকা যান এবং পথচারীরা আসা যাওয়া করছে।
এ সময় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান চৌধুরী ও উপজেলা ছাত্রলীগের একাংশের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কার সিদ্দিক নসিমনে বিভিন্ন মেহগনি গাছের গুড়ি ফেলছেন।
আসাদ চৌধুরী বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি সংস্কার কাজের অংশ হিসেবে তাদের খালের দুই পাশে প্যালাসাইডিং করতে বলেছে। কাজ শেষে তাদের বিল পরিশোধ করা হবে।
আসাদ চৌধুরী জানান, অপরিকল্পিত খননে দুই বছর ধরে খালের দুই পাড় ধসে পড়ছে। ছোটভাকলার আব্দুল আজিজ মাস্টারের বাড়ির কাছ থেকে দেবগ্রামের প্রয়াত চেয়ারম্যান পিয়ার আলীর বাড়ি হয়ে তেনাপচা পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন হয়েছে। এর মধ্যে তেনাপচা এক কিলোমিটার এলাকায় বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে। খাল পাড়ে তার বাড়ি থাকায় তিনিও ঝুঁকিতে বাস করছেন।
অপরিকল্পিত খননের কারণে সেতুটি ধসে পড়ছে বলে জানান।
আরও পড়ুন: যমুনার চরে ভেড়া পালনে শত শত নারীর স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন
পদ্মায় ধরা পড়ল ১৮ কেজি ওজনের কাতল
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীতে শুক্রবার দিবাগত রাতে জেলেদের জালে প্রায় ১৮ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের এক কাতল মাছ ধরা পড়ে।
শনিবার সকালে দৌলতদিয়া ঘাট টার্মিনাল সংলগ্ন বাজারে মাছটি নিলামে বিক্রি হয়। ১৪০০ টাকা কেজি দরে ২৫ হাজার ৪০০ টাকায় মাছটি কিনে নেন স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা।
আরও পড়ুন: ১০০ কেজির বাগাড় মাছ, দাম উঠেছে ২ লাখ টাকা
স্থানীয় মৎস্যজীবীরা জানান, শুক্রবার দিবাগত রাতে পাবনার কাজির হাটের জেলে গুরুদেব হালদার সহকর্মীদের নিয়ে নদীতে মাছ ধরতে যান। রাত শেষের দিকে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের প্রায় তিন কিলোমিটার ভাটিতে চর করনেশনা এলাকায় জাল ফেলেন তারা। ভোরের দিকে জাল গুটিয়ে নৌকায় তোলার সময় দেখতে পান বড় একটি কাতল মাছ ধরা পড়েছে। মাছটি নৌকায় তুলেই দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট টার্মিনাল সংলগ্ন মাছ বাজারে নিয়ে এসে ওজন দিয়ে দেখেন ১৮ কেজি ২০০ গ্রাম। পরে বিক্রির জন্য প্রকাশ্য নিলামে তোলেন। এসময় সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরি ঘাট সংলগ্ন চাঁদনি-আরিফা মৎস্য আড়তের স্বত্বাধিকারী মো. চান্দু মোল্লা কিনে নেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে কুশিয়ারায় ১৫০ কেজি ওজনের বাগাড় মাছ!
মাছটির ক্রেতা চান্দু মোল্লা বলেন, শনিবার সকাল ৬টার দিকে প্রকাশ্য নিলামি উঠলে ১৪০০ টাকা কেজি দরে ২৫ হাজার ৪০০ টাকায় কাতল মাছটি কিনে নেই। মাছটি বর্তমানে দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরি ঘাটের পন্টুনের সাথে রশি দিয়ে বেধে রাখা হয়েছে। বিক্রির জন্য ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানের পরিচিতদের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
তিনি আশা করছেন কাতলটি ১৪৫০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: মহিপুরে ধরা পড়ল এক থেকে দেড় মণ ওজনের ৮টি পাখি মাছ
উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মৎস্য কর্মকর্তা মো. রেজাউল শরীফ জানান, এই অঞ্চলে ইলিশের দেখা তেমন একটা না মিললেও মাঝে মধ্যে বড় বড় কাতল, বোয়াল, পাঙ্গাশ, বাগাড় মাছ ধরা পড়ছে। এসব মাছ এই অঞ্চলের মানুষের জন্য আর্শীবাদ স্বরূপ। পদ্মা নদীর পানি আরও কমলে আরও অনেক ভালো মাছ পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
গোয়ালন্দে পদ্মার ভাঙনে মসজিদসহ ৫ পরিবারের বসতভিটা বিলীন
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ৪ নম্বর ফেরিঘাট সিদ্দিক কাজী পাড়ায় সোমবার সকালে দুই ঘণ্টার ভাঙনে একটি মসজিদ, ইমাম থাকার ঘরসহ গ্রামের পাঁচটি পরিবারের বসতভিটা বিলীন হয়ে গেছে।
ভাঙন আতঙ্কে যার নামে গ্রামের নামকরণ সিদ্দিক কাজীরসহ পাঁচটি পরিবারের বসতভিটা বিলীন হয়। আতঙ্কে আরও ১৭টি পরিবার তাৎক্ষণিক অন্যত্র সরে যায়। এখনও ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে গ্রামের প্রায় ২০০ পরিবার।
দৌলতদিয়ার ৪ নম্বর ফেরিঘাট সিদ্দিক কাজী পাড়া মসজিদের ইমাম হাফেজ জোবায়ের হোসেন বলেন, সকাল ৮টার দিকে মসজিদের পিছনে সিদ্দিক কাজীর বাড়ির বসতভিটার পাশে পানি বুদ বুদ করতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যে বসতভিটার কিছু অংশ দেবে তলিয়ে যায়। পরে পানি ঘুরপাক খেয়ে মসজিদের টিউবওয়েল, পাকা শৌচাগার, ওজুখানা বিলীন হয়ে যায়।
সিদ্দিক কাজী বলেন, বাপ-দাদার নিজস্ব জমিতে দীর্ঘদিন বসবাস করছি। বাবার ১৬ শতাংশ জায়গার ওপর নির্মিত প্রায় ১৫-১৬ বছর আগের পাকা মসজিদটি চোখের সামনে বিলীন হয়ে গেল। পাশে ইমামের থাকার পাকা ঘরসহ আরও স্থাপনা বিলীন হয়েছে। কয়েক দিন ধরে পানির তীব্র স্রোতের ঘূর্ণিপাকে ভাঙতে থাকে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে সাড়ে ১৫ হাজার হেক্টর ফসল পানির নিচে
তিনি বলেন, যেখানে জিওব্যাগ ফেলা প্রয়োজন সেখানে ফেলছে না। এনিয়ে কিছু বললে আমাদের কথা গ্রাহ্য করে না।
আবেগ আপ্লুত হয়ে সিদ্দিক কাজী বলেন, ‘ঘরের চালাসহ জিনিসপত্র নিয়ে পাশে পাকা সড়কে ফেলছি। এতদিন তো বাপ-দাদার ভিটায় ছিলাম। এখন কোথায় যাব কোন ঠিকানা পাচ্ছি না।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য আশরাফুল ইসলাম জানান, সকালে ফোন পেয়ে তিনি ছুটে আসেন। তার সামনেই সব ভাঙতে থাকে। তিনি দ্রুত বিআইডব্লিউটিএকে জিওব্যাগ ফেলার অনুরোধ করেন। সবাইকে খবর জানাতে থাকা অবস্থায় সিদ্দিক কাজী পাড়ার ৫-৬টি পরিবাররে বসতভিটা বিলীন হয়ে যায়।
দৌলতদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান বলেন, প্রায় ৮ কিলোমিটার এলাকায় ভাঙনে প্রতি বছর প্রায় ২০০ পরিবার বসতভিটা হারায়। দৌলতদিয়ার মানুষ প্রধানমন্ত্রীর কাছে কিছুই চায় না। প্রতি বছর শত শত পরিবার, মসজিদ, কবরস্থান সব বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এসব পরিবার আমাদের কাছে আসে, আমরা কিছুই করতে পারছিনা। দ্রুত ভাঙন ঠেকানোর ব্যবস্থার দাবি জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জের যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, নিম্নাঞ্চল বন্যাকবলিত
বিআইডব্লিউটিএ আরিচা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মকবুল হোসেন বলেন, ভাঙন প্রতিরোধে লঞ্চ ঘাট এলাকায় নিয়মিত কাজ করছি। ৪ নম্বর ফেরি ঘাট এলাকায় ভাঙনের তেমন লক্ষণ না পাওয়ায় এখানে কোন কাজ হয়নি। সকালে হঠাৎ ভাঙনের খবর পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দ্রুত জিওব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করি।
তিনি বলেন, তীব্র স্রোত থাকায় দুই সপ্তাহ ধরে ৪ নম্বর ঘাটে ফেরি ভিড়তে পারছে না। ভাঙন দেখা দেয়ায় ঘাট বন্ধ করে কর্তৃপক্ষ স্থানান্তরের চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (মেরিন) আব্দুস সাত্তার বলেন, ভাঙন এবং তীব্র স্রোতের কারণে এখানে ঘাটের পন্টুন রাখার কোন বাস্তবতা নেই। তাই ঘাট বন্ধ করে পন্টুনটি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। ভাঙনে ৩ নম্বর ফেরি ঘাট ঝুঁকিপূর্ণ বলে তিনি জানান।