শীত
পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা বাড়লেও শীতের প্রকোপ কমেনি
উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে চারদিক। সকাল থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি। হালকা হিমেল হাওয়া বইছে। তাপমাত্রা বাড়লেও শীতের প্রকোপ কমেনি।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে শুক্রবার সকাল ৯টায় ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়ছে।
বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা ছিল ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই দিন সকাল থেকেই হালকা কুয়াশার সঙ্গে আকাশ মেঘে ঢাকা ছিল। সন্ধ্যায় এক পশলা বৃষ্টি হয়েছে। এরপর রাত থেকে এখন পর্যন্ত ঘনকুয়াশায় ঢেকে পড়েছে চারপাশ।
আরও পড়ুন: আবারও দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ে
এদিকে, মেঘলা আকাশের পাশাপাশি টিপ টিপ কুয়াশা ঝড়ছে। তবে বৃহস্পতিবারে তুলনায় শুক্রবার তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও শীতের প্রকোপ কমেনি। ৩ থেকে ৫ নটিকেল মাইল বেগে বয়ে যাচ্ছে বাতাস।
অপরদিকে, শীতজনিত কারণে হাসপাতালগুলোতে বয়স্ক ও শিশু রোগীদের সংখ্যা বাড়ছে। জেলা প্রশাসন শীতবস্ত্র বিতরণ করলেও শীতার্তদের একটি বিরাট অংশ এখন পর্যন্ত শীতবস্ত্রের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
আরও পড়ুন: টানা ৩ দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ে
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক জীতেন্দ্রনাথ রায় জানান, বৃষ্টির পর ঘনকুয়াশা হচ্ছে। আবারও শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। আকাশ পরিষ্কার হলে তাপমাত্রা আরও কমার আশঙ্কা রয়েছে। তবে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়তে পারে।
কুড়িগ্রামে আবারও বেড়েছে শীতের দাপট
কুড়িগ্রামে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গত দু’দিনের বৃষ্টির পর কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসের দাপট বেড়েছে। তবে বৃষ্টি বন্ধ হলেও আকাশে মেঘাচ্ছন্ন দেখা যাচ্ছে।
রবিবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আরও পড়ুন: পঞ্চগড়ে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা
এদিকে, তীব্র ঠান্ডা বাতাসের কারণে বাইরে লোক চলাচল কমে গেছে। হাট-বাজারগুলোতেও লোক সমাগম নেই বলেই চলে। তবে কর্মমুখী মানুষদের ঠান্ডা উপেক্ষা করে কর্মক্ষেত্রে বের হতে হচ্ছে। এছাড়া শীতের তীব্রতার কারণে দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষরা দুর্ভোগে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: সূর্যের দেখা মিলছে না, পঞ্চগড়ে শৈত্যপ্রবাহ
কুড়িগ্রাম রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান জানান, গত দু’দিনের গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে যাবে। রবিবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর শনিবার ছিল ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
উত্তরাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা
দেশের উত্তরাঞ্চলে আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা না থাকলেও শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
শনিবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. শাহিনুল ইসলাম ইউএনবিকে বলেন, আজ সিলেট, রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগ ছাড়া দেশের বাকি অংশে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
তিনি বলেন, ‘দেশের উত্তরাঞ্চলে ভারী কুয়াশা পড়তে পারে ও সারাদেশের রাতের তাপমাত্রা কমতে এবং দিনের বেলায় তা বাড়তে পারে।’
আরও পড়ুন: ঢাকা আবারও বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায়
এদিকে সকাল ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় খুলনায় সর্বোচ্চ ৬৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়ার অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়, তেঁতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাঙামাটিতে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা যায়, রংপুর, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি এবং বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এতে আরও বলা হয়েছে, দেশের অন্যত্র আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
আরও পড়ুন: ঢাকা আবারও বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং মাঝরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের বাকি অংশে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পড়তে পারে।
সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা (২-৪) ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং দিনের তাপমাত্রা (১-২) ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে বলেও জানানো হয়েছে।
তীব্র শীতের মধ্যে বৃষ্টির পূর্বাভাস
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি) এক বুলেটিনে জানিয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং খুলনা ও ঢাকা বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেই সঙ্গে দেশের অন্যান্য অংশে আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এছাড়া দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নদী তীরবর্তী অংশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং বাকি অংশ মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত হালকা কুয়াশাচ্ছন্ন থাকতে পারে।
বুলেটিনে বলা হয়েছে, সারাদেশে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। নিম্নচাপটি বর্তমানে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে এবং মৌসুমের স্বাভাবিক নিম্নচাপটি দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
এতে জানানো হয়েছে, তেতুলিয়ায় দেশের সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে পারে: আবহাওয়া অধিদপ্তর
আগামী ২৪ ঘণ্টায় আরও বৃষ্টি হতে পারে: আবহাওয়া অধিদপ্তর
সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে
পঞ্চগড়ে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা
পঞ্চগড়ে টানা তিনদিন থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ায় তাপমাত্রা ক্রমশ কমছে।রবিবার সকাল ৯টায় ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যা এ মৌসুমে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। শনিবার জেলায় ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।এদিকে, শৈত্যপ্রবাহ আর ঘন কুয়াশায় জনজীবন স্থবির হয়ে গেছে। তীব্র ঠান্ডায় কাজে বের হতে পারছেন না শ্রমজীবী মানুষ, কৃষি ও শ্রমিকরা। এছাড়া ঠান্ডার প্রকোপে সর্দি-কাশিসহ শীতজনিত নানা রোগব্যাধি দেখা দিয়েছেরবিবার ভোর থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে চারদিক। উত্তরের হিমেল বাতাসে মাঘের কনকনে হাঁড় কাপানো ঠান্ডায় কাবু হয়েছে পঞ্চগড়বাসী। মাঘের এই কনকনে শীতে অসহায় দরিদ্র আর ছিন্নমূল মানুষ কষ্টে আছে। শীতের প্রকোপে শিশু আর বৃদ্ধরা বেশি কষ্ট পাচ্ছেন। মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশুও পড়েছে শীতকষ্টে।আরও পড়ুন: সূর্যের দেখা মিলছে না, পঞ্চগড়ে শৈত্যপ্রবাহজেলা শহরের রিকশা চালক মোমিনুল জানান, ঠান্ডায় হাত-পা অবশ হয়ে যাচ্ছে। গাড়ি চালাতে পারছি না। সকালে গাড়ি নিয়ে বসে আছি। ভাড়াও মিলছে না।
সূর্যের দেখা মিলছে না, পঞ্চগড়ে শৈত্যপ্রবাহ
হিমালয়ের হিমেল বাতাসে পঞ্চগড় জেলায় হিমেল বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় শীতের প্রকোপ কমছে না। রবিবার সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। গোটা জেলা মেঘাচ্ছন্ন হয়ে আছে। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।
রবিবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ১৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শনিবার এখানে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
এদিকে পেটের তাগিদে শীত উপেক্ষা করে কাজে গেলেও অনেকেই কাজ না পেয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
আরও পড়ুন: আবারও দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ে
এছাড়া একটানা শীতের প্রকোপে বাড়ছে শীত ও শীতজনিত রোগ বালাই। হাসপাতালগুলোতে ধারণ ক্ষমতার বেশি রোগী ভর্তি হয়েছেন। বেড না পেয়ে অনেক রোগীকে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। হাসপাতালগুলোর বহিঃবিভাগেও রোগীর চাপ বেড়েছে। স্বল্প জনবল নিয়ে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
শীতে মাগুরায় পিঠা খাওয়ার ধুম
মাগুরায় শীতের ঠাণ্ডা হাওয়ায় ভেসে বেড়ানো ভাপা, চিতই পিঠাসহ নানা ধরনের পিঠার ঘ্রাণ সর্বত্র বয়ে যাচ্ছে। সকালের কুয়াশা ভেদ করে মিষ্টি রোদের ছোঁয়া পাশাপাশি এই সব পিঠা মানবকুলে বৈচিত্র আনে।
শীতকালে মুখরোচক খাদ্য হিসেবে পিঠা বাঙালির ঐতিহ্যের অংশ। এই সময় প্রতিটি ঘরে নানা রকমের পিঠা তৈরি করা হয়। তবে ভাপা পিঠা বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী পিঠা, যা প্রধানত শীতকালে খাওয়া হয়ে থাকে। আর এ শীতকালকে ঘিরেই মাগুরায় বিভিন্ন বাজারে অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী পিঠা, গরম কাপড়সহ নানা ধরনের ব্যবসাও করে থাকেন।
আরও পড়ুন: ধোঁয়া-ওঠা গরম গরম পিঠা খাওয়ার ধুম পড়েছে খুলনায়
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শীতের শুরুতেই জেলার অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রাস্তার পাশে স্কুল-কলেজের মাঠে এমনকি ফাস্টফুডের দোকানগুলোতে ভাপা পিঠা বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রধানত চালের গুঁড়ার মধ্যে কিছু খেজুরের অথবা আখের গুড় দিয়ে তার ওপর আবার চালের গুঁড়া দিয়ে গরম পানির ভাপে তৈরি করা হয় এ মজাদার পিঠা। স্বাদ বাড়ানোর জন্য দেয়া হয় নারিকেল।
সারা দিনের কর্মব্যস্ততা কাটিয়ে ফুটপাথে গড়ে তোলা পিঠাপুলির দোকানে এসে ভিড় জমান জেলার বিভিন্ন শ্রেণির ক্রেতা। ক্রেতাদের জন্য দোকানে দুই পাশে রাখা হয়েছে লম্বা বেঞ্চ। দোকানে বেচাকেনা হয় ভালো, যা আজকাল পিঠা উৎসবে পরিণত হয়েছে।
পিঠা তৈরি করে সংসার চালাচ্ছে অনেক নারী ও পুরুষ বিক্রেতারা। তাদেরই একজন মো. আবদুল আলিম (৩৫)। চার সন্তানের বাবা আলিম পিঠার ব্যবসা করেই সন্তানদের লেখাপড়া ও সংসারের খরচ বহন করছেন। তবে তার এ ব্যবসায় পুরোপুরি সহযোগিতা করছেন তার স্ত্রী।
আলিম বলেন, ‘পিঠা বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে আমার সংসার চলে। দুই ছেলে, দুই মেয়ে নিয়ে আমার সংসারে তেমন অভাব নেই।’
আরও পড়ুন: পাহাড়ে চলছে নবান্নের প্রস্তুতি
তিনি জানান, শীত এলেই তিনি পিঠা বিক্রি করেন। কারণ এ সময় পিঠার ব্যবসা ভালো হয়। ভাপা পিঠা তৈরিতে খরচ ও সময় দুটোই কম লাগে। সব সময় ভিড় থাকে দোকানে। প্রতিদিন পিঠা বিক্রি করেই ৪০০ টাকা আয় হয় বলে জানান তিনি।’
এদিকে ফুটপাথে এই পিঠা ব্যবসাকে ঘিরে সারা দিনই চলে লোকজনের আসা-যাওয়া। এক কথায়, হরহামেশা ভিড় লেগে থাকে জেলার এসব দোকানে। সর্বস্তরের মানুষ ফুটপাথে তৈরি করা এ পিঠা ক্রয় করে ফুটপাথে বসেই খান। অনেকেই আবার পরিবারের জন্য পার্সেল করে নিয়ে যান। এতে করে এক শ্রেণির দরিদ্র মানুষ এই পিঠার ব্যবসা করে সংসার নির্বাহ করছে।
মাঘের শুরুতে তাপমাত্রা কমছে পঞ্চগড়ে
মাঘ মাসের শুরু থেকে পঞ্চগড়ে ক্রমান্বয়ে তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। সোমবার সকাল ৯টায় ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আজও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। শীতে নিম্ন আয়ের মানুষদের দুর্ভোগ বেড়েছে।
কথায় আছে মাঘের শীতে বাঘও কাঁপে। তবে এই মাসেই শীতের তীব্রতা কমবে বলে মনে করছেন আবহাওয়া পর্যবেক্ষকরাও।
এদিকে, রবিবার (১৬ জানুয়ারি) ও শনিবার (১৫ জানুয়ারি) এখানে ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে
রাতের বেলা বয়ে যাওয়া শৈত্যপ্রবাহে এখানকার মানুষ বিপাকে পড়েছে। রবিবার সকালে সূর্য্যের মুখ দেখা গেছে। তবে মাঝে মধ্যেই মেঘের আড়ালে লুকিয়েছে। শৈত্যপ্রবাহের কারণে হিমেল বাতাসে দিনের বেলাও মানুষকে গরম কাপড় পড়ে বের হতে হচ্ছে। এছাড়া শীতে নিম্ন আয়ের মানুষদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। একদিকে তাদের আয় রোজগার কমে যাওয়ায় সংসারের ব্যয়ভার বহন করা মুশকিল হয়েছে। অন্যদিকে শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে গরম কাপড়ের সন্ধানেও ছুটতে হচ্ছে।
জেলার বোদা উপজেলার বোদা পৌরসভার সাতখামার গ্রামের দিনমজুর ফারুক হোসেন বলেন,‘ভাঙা চাটির বেড়ার ঘরে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করি। লেপ তোষক নেই। খড় ও চটের বিছানায় থাকি। রাতের বেলা বাতাস একদিক দিয়ে ঢুকে অন্য দিক দিয়ে বের হয়ে যায়। আমাদের কষ্ট কেউ বুঝে না।’
একই এলাকার আবুল হোসেন বলেন, ‘দিন আনে দিন খাই। কাজ না পেলে খাবার কোন উপায় নেই। আমরা না পেলাম কম্বল না পেলাম ঘরবাড়ি। কাজ খুঁজবো না মানুষের দ্বারে দ্বারে ধর্ণা দিব। আমাদের কেউ নেই আল্লাহ আছে।’
জেলার সাড়ে তিন লক্ষাধিক শীতার্ত মানুষের মধ্যে জেলা প্রশাসন প্রায় ৩৪ হাজার শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো সাহায্যে এগিয়ে এসেছে।
আরও পড়ুন: টানা ৩ দিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ে
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের সিনিয়র পর্যবেক্ষক জীতেন্দ্রনাথ রায় জানান, সোমবার সকাল ৯ টায় ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এটিই দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। শৈত্যপ্রবাহ থাকায় ঠান্ডা বেড়েছে। আগামী চার দিন তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে আবার কমতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।
সাগরে নিম্নচাপ, লঘু চাপের কারণে আকাশে মেঘ জমছে। মেঘের কারণে বৃষ্টি হচ্ছে মেঘের কারণে তাপমাত্রা বাড়ছে। আবার মেঘ যখন কেটে যাচ্ছে তখনই তাপমাত্রা কমছে। একারণেই তাপমাত্রা উঠানামা করছে বলে জানান এই আবহাওয়াবিদ।
দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর সোমবার জানিয়েছে, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, চুয়াডাঙ্গা ও মৌলভীবাজার জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
আবহাওয়া অফিসের বুলেটিনে বলা হয়েছে, ‘সোমবার কিছু জায়গায় শৈত্যপ্রবাহ কমতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।।
আরও পড়ুন: একিউআই: ঢাকার অবস্থান তৃতীয়
এছাড়া অস্থায়ীভাবে আংশিক আকাশ মেঘাচ্ছন্নসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।
সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, রবিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রংপুর বিভাগের তেতুলিয়ায় ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কক্সবাজার জেলার টেকনাফে ৩০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আরও পড়ুন: দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষে ঢাকা
দেশের বিভিন্ন জায়গায় হালকা বৃষ্টি ও কুয়াশা পড়তে পারে
দেশের বিভিন্ন জায়গায় আগামী দু-তিন দিন হালকা বৃষ্টি ও কুয়াশা পড়তে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর ফলে চলতি জানুয়ারি মাসে শীত আরও বাড়তে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ‘রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’ এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।’
আরও পড়ুন: ৬ বিভাগে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা বলেন, ‘১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত কিছু কিছু জায়গায় হালকা বৃষ্টি হতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত কিছু কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।’
এছাড়া সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রাও দুই থেকে তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে।
আরও পড়ুন: সিলেট ও ময়মনসিংহে হালকা ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে: আবহাওয়া অধিদপ্তর